গল্পঃ হৃদয়ের বন্ধন।
পর্বঃ৩৯।
লেখাঃ#মেহের।

মারুফ মনে মনে ঠিক করে, আজকে দোকানে থেকে এসেই এ বিষয়ে কথা বলবে ওঁর দাদুর সাথে।
মারুফ যখন এসব চিন্তা ভাবনা করতে ব্যস্ত সে সময়ে মারুফের ফোনে একটা কল আসে ।
ফোন রিসিভ করে সালাম দিয়ে শুধু কি বললো!

মারুফের মুখে হঠাৎ কি শুনে মায়া বেগম ছেলের দিকে অবাক হয়ে তাকায়!
মারুফকে তো কখনও ফোনে জোরে আওয়াজ করে কথা বলতে শুনেনি।
তাহলে আজকে ফোন আসায় জোরে কি বলে থেমে গেল! তারপর থেকে এমন চিন্তিত মনে হচ্ছে কোনো?

আর ফোনের ওপর পাশেই বা কে আছে?
ওপর পাশের লোক কি বলছে তা মায়া বেগম বুঝতে পারল না।
তবে মনে হচ্ছে জরুরি কোন বিষয়ে কথা হচ্ছে।

এরমধ্যে মারুফ ফোনে আসছি বলে কল কেটে দিল।

মায়া বেগম মারুফকে বলল,কি হয়েছে তোকে এমন চিন্তিত লাগছে কেন?
মারুফ ওর মায়ের কথা শুনে বলল, কিছুনা ,
মা আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে আমি এখন যায়।
কথাটা বলে মারুফ তাড়াহুড়ো করে বাহিরে চলে গেল।

মারুফের মা ভেবেছে তার ছেলে দোকানে গেছে।
হয়তো ফোনটা দোকানে থেকেই এসেছিলো।
তাই তিনি আর মারুফকে পিছু ডাকেনি।

এদিকে জেসিকা আরও আগেই সবাইকে সকালের নাস্তা দেওয়ার পর নিজে হালকা কিছু খেয়ে ওর রুমে চলে যায়।

মারুফ তখন রাশেদের সাথে রাশেদের পড়াশোনার ব্যাপারে কথা বলছিল।
জেসিকা ভেবেছে মারুফ দোকানে যাওয়ার আগে তো ওর সাথে দেখা করেই যাবে।
সেজন্য রুমে এসে আর বের হয়নি।
কিন্তু মারুফের দেরি দেখে জেসিকা বুঝতে পারে মারুফ হয়তো এতক্ষণে দোকানে চলে গেছে।

আজকে সকালে থেকে শরীর বেশি খারাপ লাগছে।
নাস্তা করার পরে থেকে দুইবার বমি হয়েছে।
সেজন্য শরীরের মধ্যে কোন শক্তি পাচ্ছে না।
কিন্তু দুপুর দুইটার মধ্যে খাবার তৈরি করতে না পারলে রেশমা আপু ও চাচীর বকা খেতে হবে।

তা ভেবে জেসিকা রুমে থেকে বাহিরে যেতে নিলে হঠাৎ করে মাথা চক্কর দিয়ে উঠলো।
মাথায় চক্কর দেওয়াতে জেসিকা দরজা ধরে আছাড় খাওয়া থেকে বাঁচে।

অন্যদিকে মারুফ দোকানে যাওয়ার পর মায়া বেগম ড্রইং রুমেই বসে ছিলো।

জেসিকাকে রুমে থেকে ঢুলতে ঢুলতে বের হতে দেখে মায়া বেগম ওর কাছে গিয়ে বলল,মা’রে কি হয়েছে তোর?
এমন করে পরে যাচ্ছিস কেন?
জেসিকা শ্বাশুড়ির কথা শুনে বলল,আম্মু শরীর খারাপ লাগছে।
আর সব কিছুতেই কেমন গন্ধ গন্ধ লাগে সেজন্য বমি ভাব হয়।
দুই একবার বমি হয়েও যায়।

জেসিকার কথা শুনে ওর শ্বাশুড়ি ওকে ধরে নিয়ে ওর রুমের বিছানায় শুয়ে দেয়।

জেসিকাকে শুয়ে দিয়ে মায়া বেগম ওর চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।

জেসিকার চুলে ওর শ্বাশুড়ি হাত বুলিয়ে দেওয়াতে, জেসিকা আরাম পাচ্ছিল কিন্তু রান্নার কথা মনে হতেই বিছানায় থেকে উঠতে নেয়।

তা দেখে মায়া বেগম জেসিকাকে ধমকে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে বললো।
জেসিকা ওর শ্বাশুড়িকে বলল,আম্মু রান্না করতে হবে তো।

জেসিকা এবং ওর শ্বাশুড়ির সম্পর্ক এতদিনে মা ও মেয়ের মতো হয়ে গেছে।
জেসিকা শাশুড়িকে তুমি বলে আর ওর শাশুড়ি ওকে তুই বলে ডাকে ।

মায়া বেগম জেসিকার কথা শুনে বলল,একটু পরে উঠে রান্না করিস মা।
তোর শরীর অনেক দূর্বল দেখাচ্ছে ।
একটু বিশ্রাম নিয়ে নে তাহলে ভালো লাগবে।

জেসিকা ওর শ্বাশুড়ির কথা শুনে চুপচাপ বিছানায় শুয়ে আছে।

মায়া জেসিকার দিকে তাকিয়ে বলল,আচ্ছা মা তোর কি এমাসে পিরিয়ড হয়েছে?
আমার না তোর অবস্থা দেখে মনে সন্দেহ হচ্ছে আমাদের বাসায় নতুন অতিথি আসছে!

জেসিকা ওর শ্বাশুড়ির কথায় লজ্জা পেয়ে চোখ বুজে আছে।

মায়া বেগম জেসিকার লজ্জা রাঙ্গা মুখ দেখে বলল,আরে পাগল মেয়ে মায়ের কাছে লজ্জা পেতে আছে?

বল না মা এ মাসে তোর পিরিয়ড হয়েছে কিনা?

জেসিকা ওর শ্বাশুড়ির কথা শুনে বলল আম্মা সাতদিন আগেই তো হয়েছিল।

মায়া বেগম জেসিকার কথা শুনে বলল, ওহ্ , তাহলে তোর এতো বমি হচ্ছে কেন?
আবার অন্যকিছু হলো না তো?

শ্বাশুড়ির কিসের কথা বলছে জেসিকা বুঝতে পারলো না।
তবে এই মুহূর্তে কথা বলতে ভালো লাগছে না।
শ্বাশুড়ি চুলে হাত বুলিয়ে দেওয়াতে আরামে দুচোখে ঘুম চলে আসছে ।
একসময় জেসিকা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে যায়।

মায়া বেগম জেসিকাকে ঘুমে দেখে শব্দ না করে ওখানে থেকে আস্তে আস্তে রুমের বাহিরে আসে।
বাহিরে এসে আসে পাশে তাকিয়ে কেউ আছে কিনা তা লক্ষ্য করে দেখলো কেউই নেয়।
বিশেষ করে দোলা, রেশমা কেউই নেয়।

এই সুযোগে মায়া বেগম রান্না ঘরে ঢুকে দুপুরে জন্য যা রান্না হবে সব কেটে ধুয়ে রাখেন।

আর ভাত ও ডাল রান্না বসিয়ে দিল যাতে জেসিকার রান্না ই দেরি বা কষ্ট না হয়।

মায়া বেগম সব কাজ সেরে মনে মনে বলল, একমাস পুর্ণ হতে আরও ১৫ দিন বাকি আছে।
মেয়েটার শরীরের যে অবস্থা তাতে এভাবে খাটলে তো মরেই যাবে।
তবে এবার আমাকে একটু শক্ত হতে হবে।
জেসিকার শাস্তির এক মাস শেষ হলেই দোলাকে রান্না বান্নার কাজে দিবো।
অনেক বছর গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরেছে।
জেসিকা ও আমাকে অপদস্থ করতে ওর মুখ তো ভালোই চলে।
তাহলে সংসারের দায়িত্ব পালন করতে পারবে না কেন?
আর এই বাড়িতে তো শুধু জেসিকা এবং আমিই বউ না ।
দোলাও তো এই বাড়ির বউ।
আমরা খেটে মরবো আর সে বসে বসে আমাদের উপরে হুকুম চালাবে তা আর হবেনা।

দোলা শুধু হুকুম চালালে মেনে নেওয়া যেতো কিন্তু জেসিকার উপরে রিতিমত অত্যাচার চালাচ্ছে।
তা মা হয়ে আমি মানবো কিভাবে?
দোলার ঘরেও যে দুইটা মেয়ে আছে তা ভুলেই গেছে।
আর রেশমাকে কোলে পিঠে বড় করলাম আমি আজকে সেই রেশমা আমাকেই অপমান করে এমন দিন দেখতে হবে কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি।
বিয়ের পর থেকে এ পর্যন্ত নিজের শরীরের দিকে না তাকিয়ে ওদের সবাইকে আগলে রেখেছি।
মারুফ, রাশেদ ও কোমলের থেকে ওদের কম ভালোবাসা দেয়নি।
সব সময় ওদেরকে আপন ছাড়া পর ভাবিনি।
তবুও এই বয়সে এসে দোলার কাছে শুনতে হচ্ছে আমি আপন পর ভেদাভেদ করি।
তাই এখন থেকে শুধু আমার ছেলে মেয়েরাই আমার সব।
বাকি সবার কথা আর ভেবে কষ্ট পাবো না।

জেসিকা ঘুম থেকে উঠে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে বারোটা বেজে গেছে।
তাড়াহুড়ো করে বিছানায় থেকে নেমে ফ্রেস হতে ওয়াশরুমে যায়।
তাড়াহুড়ো করে দুই মিনিটের মধ্যেই ফ্রেস হয়ে বের হয়ে দৌড়ে রান্না ঘরের দিকে যাচ্ছে আর বিরবির করে বলছে,ইস আজকে দেরি হয়ে গেছে।
এখন আমি এতো জলদি করে কাজ সারবো কিভাবে ।
রান্না বান্নার জন্য তো কিছুই কেটে বেছে রাখা হয়নি।

কথাগুলো ভেবে জেসিকা রান্না ঘরে ঢুকে দেখে ওর শ্বাশুড়ির মা ডাল রান্না করে চুলায় থেকে নামিয়ে রাখছে।
আর ভাতের রান্না করে রেখেছে।
এবং আজকের রান্নার জন্য যা লাগবে তা কেটে বেছে রাখছে।
জেসিকা তা দেখে মনে মনে সুস্থির নিঃশ্বাস ছাড়লো।
তবে এগুলো করতে শ্বাশুড়ি মায়ের কষ্ট হয়েছে তা ভেবে
জেসিকা তার শ্বাশুড়িকে কপট রাগ দেখিয়ে বললো,আম্মু তুমি বিকাল হলে পা ব্যথায় হাঁটতে বা পা নড়াচড়া করতে পারো না।
তারপরও আমাকেও না ডেকে একা একা তুমি সব কাজ করছে কেন?
মায়া বেগম জেসিকার কথা শুনে হেসে বলল,পাগলি মেয়ে অসুস্থ্য সন্তানের জন্য মা কি সব কাজ ফেলে রাখতে পারে।
আর শুন আমার কথায় যদি এই বাড়িতে সব হতো না তাহলে কিছুতেই আমার মেয়ের এই অসুস্থ্য শরীর নিয়ে তাকে কোন কাজ করতে দিতাম না।
কিন্তু মা’রে আমি যে নিরুপায়।
মা হয়েও মেয়েকে সাহায্য করতে পারি না।

জেসিকা শ্বাশুড়িকে জরিয়ে ধরে বলল,আম্মু তোমাকে কিছুই বলতে হবে না আমি সব জানি তো।
আর সবার চোখে ফাঁকি দিয়ে যতটা পারো আমাকে সাহায্য করছো।
আর তোমার এই মেয়ের কাজ করতে এখন তেমন কষ্ট হয় না।
তাই তুমি এ নিয়ে মনে চাপ রেখো না।
কথাটা বলে মায়া বেগমকে রান্না ঘরে থেকে বের করে
বিশ্রাম নিতে পাঠিয়ে দিয়ে।
তারপর দ্রুত রান্নার কাজ শুরু করে দিয়েছে।

দের ঘন্টা পর
জেসিকা রান্না করা শেষ হলে টেবিলে খাবার সাজিয়ে গোসল করতে গেলো।
যাওয়ার আগে দাদুকে বলল, দাদু আপনাদের খাবার এখন কি দিয়ে দিবো ?
না আমি গোসল নামায শেষ হলে এসে দিবো?

চাঁদনী বানু জেসিকার দিকে তাকিয়ে বলল, তোমার নামায শেষ হলেই খেতে দিয়ো।

জেসিকা দাদুর সাথে কথা বলে নিজের রুমের দিকে গেল।

নামায শেষ হলে জেসিকা সবাইকে খাবার দেওয়ার জন্য আসে।
রাশেদ জেসিকাকে বলল, ভাবী তোমার শরীর এখন কেমন ?

জেসিকা রাশেদের কথা শুনে বলল, জী, ভাইয়া ভালো।
সবাই টেবিলে খেতে বসেছে ।
চাঁদনী বানুর আজকাল জেসিকার মুখের দিকে তাকালে খারাপ লাগে।
নাত বৌয়ের সাথে সে মনে হয় বেশিই কড়াকড়ি করে ফেলেছে ।
জেসিকার অসুস্থতা চাঁদনী
বানুকে ভাবাচ্ছে।
আর জেসিকার প্রতি দোলার আচরণে চাঁদনী বানু চরম বিরক্ত।
দোলাকে সাইজ করা তার জন্য বড় ব্যাপার না।
তবে তার ছেলে এই বয়সে এসেও দোলা বলতে পাগল তাই কিছু বলতে পারছে না।

এমনিতেই মৃত্যু এক ছেলেকে তার কাছে থেকে সারাজীবনের জন্য দূরে নিয়ে গেছে ।
সে হাহাকার আজও বুকে দানা বেঁধে আছে।
আর ছোট ছেলেও যদি বৌয়ের জন্য নিজের থেকে দূরে চলে যায় সে ভয়ে দোলাকে শাসন করতে পারে না।
তবে নিজের স্বার্থে বড় ছেলের পরিবারের সাথে অন্যায় করেছেন তিনি।
তার মৃত্যুর পর ছেলে ও স্বামীর কাছে গিয়ে কী জবাব দিবেন?
তা আজকাল তাকে ভাবাচ্ছে।
এসব চিন্তা ভাবনা করে চাঁদনী বানু জেসিকাকে তাদের সাথে খেতে বসতে বলল।
জেসিকা চাঁদনী বানুর কথা শুনে বলল, দাদু আমি আপনার নাতি আসলে খাবো।

এদিকে মারুফ এখনও বাসায় আসেনি।
এ সময় সে বাসায় থাকে ।

জেসিকার কথা শুনে বলল, দাদু ভাইয়ের আসতে দেরি হতে পারে।
তুমি অসুস্থ্য শরীরে এতক্ষণ না খেয়ে থাকা ঠিক হবে?

চাঁদনী বানু ও জেসিকা কথা বলছিল এর মধ্যে রেশমা বলে উঠল, জেসিকা ভাবী আজকে তোমাকে না গরুর গোশত রান্না করতে বলেছিলাম।
জেসিকা রেশমার কথা শুনে ভয়ে ভয়ে বলল,আপু আমি ভুলে গেছি।
আজকে কষ্ট করে এগুলো দিয়ে খাও কালকে গরুর গোশত রান্না করে দিবো।
রেশমা রেগে উঠে যেতে নেয়।
চাঁদনী বানু রেশমাকে বলল, এখন টেবিলে বসো যা আছে তাই চুপচাপ খাও।

জেসিকা তো বলেছেই পরে তোমার জন্য গোশত রান্না করে দিবে।
দোলা শ্বাশুড়ির কথা শুনে বলল,তা আম্মা আমার মেয়েটা বাপের বাড়িতে এসেও নিজের পছন্দের খাবার খেতে পারবে না।
তা তো মানতে পারছি না।

জেসিকা তাদের কথা শুনে বলল,চাচী আমি রাতেই রান্না করে দিবো নে।
রেশমা দাদুর কথা শুনে রেগে খেতে বসেছে ঠিকই কিন্তু জেসিকাকে জব্দ করতে মনে মনে ফন্দি ফিকির আঁকছে।

জেসিকা আজকে ইলিশ মাছের কাঁচা ভুনা করেছে ।
ইলিশ মাছের কাঁচা ভুনায় ফ্লেভারের জন্য আস্ত কাঁচা মরিচ দিয়েছিল।
রেশমা তরকারিতে কাঁচা মরিচ দেখে ফন্দি করলো জেসিকাকে হেনেস্থা করার।

রেশমা নিজের প্লেটে মাছ তুলে নেয়।
মাছের সাথে পাতে দুইটা সিদ্ধ কাঁচা মরিচ নিলো।
এরপর কাঁচা মরিচের দানা বের করে মুখে দিয়ে ঝাল ঝাল করে চিৎকার শুরু করে দেয়।

জেসিকা চিৎকার শুনে তাড়াতাড়ি করে পানি নিয়ে রেশমাকে দিয়ে বলল,আপু পানি নেও তাহলে ঝাল কমে যাবে।
এদিকে রাশেদ রেশমার চিৎকার শুনে বলল,আপু তোমার ঝাল লাগলো কি করে?
ভাবী তরকারিতে ঝাল তেমন একটা দেয়নি তো।

এদিকে জেসিকা রেশমাকে পানি দিয়ে রান্না ঘরে থেকে রেশমার জন্য চিনি আনতে গেলো।
মিষ্টি কিছু খেলে হয়তো রেশমার ঝাল কমবে তা ভেবে।

জেসিকা চিনি এনে রেশমাকে দেয় তা দেখে রেশমা রেগে গিয়ে বলল, আমার খাবারে ইচ্ছে করেই ঝাল দিয়োছো যেনো আমি খেতে না পারি। আর এখন জুতা মেরে আমাকে গরু ধান করতে এসেছো অসভ্য মেয়ে।
কথাটা বলেই রেশমা খুব জোরে জেসিকার গালে থাপ্পড় মেরে বসে।
দোলা ছাড়া সবাই রেশমার কান্ডে হতবাক হয়ে গেল।
রাশেদ তো চেঁচিয়ে বলছে, আপু তোমার সাহস হলো কী করে ভাবীর গায়ে হাত তুলার?
তুমি কি ভুলে গেছো সে আমাদের সবার বড় ভাইয়ের বউ কথাটা বলে জেসিকার দিকে তাকিয়ে দেখে সে পরে গেছে।

এদিকে হঠাৎ করে জেসিকা থাপ্পর খেয়ে তাল সামলাতে না পেরে টেবিলের কিনারায় বারি খেয়ে ফ্লোরে পরে যায়।
টেবিলের কিনারায় জোরে লাগাতে কপালে এক সাইডে অল্প কেটে রক্ত বের হচ্ছে।
এদিকে জেসিকা নিচে পরার সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে গেছে।

রাশেদ, কোমল ও মায়া বেগম তাড়াহুড়ো করে জেসিকার কাছে আসে।
চাঁদনী বানু তা দেখে রেশমাকে বলল, বুবু তুমি এটা কী করলে?

এদিকে মায়া বেগম জেসিকার কাছে বসে জেসিকার মাথা তার পায়ের উপরে নিয়ে মাথায় হাত বুলাচ্ছে আর বলছে,

এই মা তোর কি হয়েছে ?
চোখ খোল না মা ।
তোর কোথায় কষ্ট হচ্ছে বল আমায়।
রাশেদ তার মাকে বলল,মা ভাবী মনে হয় অজ্ঞান হয়ে গেছে।
কথাটা শুনে মায়া বেগম আঁতকে উঠে বললেন,এই কোমল তারাতাড়ি ডাক্তারকে ফোন করে বাসায় আসতে বল।

দোলা এসব দেখে বলল,আরে বুবু এই মেয়ের কিছুই হয়নি সব ঢং করছে।
আর তোমরা সবাই ওর তালে নাচতে শুরু করলে।

মায়া বেগম দোলার কথা শুনে বলল,শুন ছোটো আমাদেরটা আমরা বুঝবো তোর তা বুঝতে হবে না।

মায়া বেগম রাশেদকে বলেছে,তোর ভাবীকে ওঁর রুমে নিয়ে যাওয়া দরকার।
রাশেদ ওঁর মায়ের কথা শুনে বলল,মা কোমল আসুক তারপর আমরা তিনজন মিলে ভাবীকে রুমে নিয়ে যায়।
রাশেদ কথা বলছিলো এরমধ্যে বাসায় বেল বেজে উঠল।
কোমল দরজা খুলে মারুফকে দেখেও কিছু না বলেই জেসিকার কাছে আসছিলো।

মারুফ কোমলের মুখ দেখে বুঝে যায় বাসায় কিছু হয়েছে।
তাই পাশে ফিরে বলল, একবার ভিতরে আয় কথাটা বলে, তাড়াহুড়ো করে কোমলের পিছনে চলে এসেছে।
মায়া বেগম কোমলকে বলল,ডাক্তারকে ফোন করেছিস ?
সে কখন আসবে?

কোমল কিছু বলার আগেই মারুফ ওর মায়ের কোলে জেসিকাকে অজ্ঞান দেখে বুকের ভিতরে ধকধক করে উঠলো।
জেসিকাকে এই অবস্থায় দেখে হঠাৎ মনে হচ্ছে ওঁর শরীরে শক্তি পাচ্ছে না।
অনেক কষ্টে গলা দিয়ে আওয়াজ বের করে বলল,মা ওর কি হয়েছে?
এভাবে ওকে নিয়ে বসে আছো কেন?
মায়া বেগম মারুফকে দেখে বলল, বাবা আগে ওকে রুমে নিয়ে চল তারপর বলছি।

মারুফ আর কিছু না বলেই জেসিকাকে কোলে তুলে রুমে দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

মারুফের পিছনে রেশমা ও দোলা ছাড়া সবাই ওদের ঘরের দিকে যাচ্ছে।
রেশমা মারুফের পিছনে তাকিয়ে অবাক হয়ে বলল,মা ..ঝ .ঝ..ঝ… ঝর্না ..

আন্তরিক ভাবে দুঃখিত গতকাল গল্প দিতে পারিনি বলে।
,,,,

বিঃদ্রঃ ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
আর একটা অভিযোগ হচ্ছে গল্প পোষ্ট করার পরেই কেউ কেউ কমেন্ট করে নেক্সট তখন মনে হয় আমাকে এরা রোবট ভাবছে না তো।
কারণ এইটুকু দেখতেই আমার কয়েক ঘন্টা লাগে।

গল্প দেওয়ার সময় হলে এমনিতেই দিবো নেক্সট বলা লাগবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here