গল্পঃ হৃদয়ের বন্ধন।
পর্বঃ ৪২
লেখাঃ#মেহের।
মারুফ মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এখন থেকে আগে নিজের পরিবার দিকে নজর দিবে তারপর অন্য সবদিকে।
এসব ভেবে জেসিকার মুখের দিকে ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে মারুফ নিজের ওষ্ঠ ধারা জেসিকার গোলাপী ঠোঁটে উষ্ণ স্পর্শ একেঁ দিলো।
মারুফের স্পর্শ পেয়ে জেসিকা কেঁপে উঠে বিরবির করে কি সব যেনো বলেছে!

মারুফ জেসিকা বিরবির করে কি বলছে তা বুঝতে পারছে না তাই জেসিকা কি বলছে তা শুনতে ওর মুখের কাছে কান এগিয়ে নিলো।
মারুফ তখন আপু আমাকে মেরো না ,
আমি কিছু করিনি ।
কথাটা শুনতে পেলো ।

জেসিকার বিরবির করে বলা কথাটা শুনে মারুফ জেসিকাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলল,এই বৌ কি হয়েছে ভয় পাচ্ছো কেন?

চোখ খুলে দেখো আমি ছাড়া তোমার আশেপাশের আর কেউই নেই।
মারুফ ফিসফিস করে জেসিকার কানের কাছে কথাটা কয়েকবার বলল।
মারুফের আওয়াজ শুনে জেসিকা ঘুম ঘুম চোখে মারুফের দিকে তাকিয়ে আছে।

মারুফ জেসিকার কপালে উষ্ণ স্পর্শ দিয়ে বলল, রেশমাকে ভয় পাওয়ার কি আছে!
আর সোনা তুমি এভাবে ভয় পেলে আমাদের বাবুর জন্য সমস্যা হবে।
মারুফের কথা শুনে জেসিকা মারুফকে দুহাত দিয়ে শক্ত করে জরিয়ে ধরে বলল, আচ্ছা খবরটা শুনে তুমি খুশি হয়েছো?

মারুফ জেসিকার কথা শুনে বলল, সোনা এমন খবরে খুশি না হয়ে থাকা যায় তুমিই বলো?

জেসিকা মারুফের কথা শুনে মাথা ঝাঁকিয়ে না বুঝায়।
মানে খুশি না হয়ে থাকা যায় না।

মারুফ জেসিকার কপালে ভালোবাসার স্পর্শ দিয়ে বলল,আল্লাহর রহমতে তোমার উছিলায় বাবা হওয়ার সুখ পেতে যাচ্ছি ।
আমার যে কি খুশি লাগছে তোমাকে বুঝাতে পারবো না সোনা।
যানো এই খুশিতে এই মুহূর্তে তোমাকে নিজের সাথে পিষে ফেলতে ইচ্ছে করছে।

মারুফের কথা শুনে জেসিকা লজ্জা পেয়ে মারুফের বুকে মুখ লুকিয়ে ফেলল।

মারুফ জেসিকার মাথায় চাঁদিতে চুমু দিয়ে বলল,বৌ এখন উঠো।
কিছুক্ষণ পর মাগরিবের আজান দিবে।
এ সময় শুয়ে থাকতে নেয়।
আর এখন থেকে প্রতিদিন ভোরে নামাজের পর দু’জনে একসঙ্গে কুরআন তেলাওয়াত করবো।
যাতে আল্লাহ রাব্বুল আল- আমিন খুশি হয়ে আমাদের ঘরে একজন নেক সন্তান দান করেন।

জেসিকা মারুফের কথা শুনে বলল,আমীন।
আল্লাহ আপনার মনের বাসনা পূর্ণ করুন।
জেসিকার কথা শুনে মারুফও আমীন বলল।
মারুফ জেসিকাকে বলল,বৌ সব সময় ভালো ভালো চিন্তা করবে।
এই সময়ে বেশি হাদীস ও কুরআন পড়বে।
খারাপ কিছু দেখবেও না খারাপ কিছু শুনবে না।
বেশি বেশি তওবা করবে।
আল্লাহ্ সহায় হলে এতে আমাদের সন্তানের ওপরে ভালো প্রভাব ফেলবে।

মারুফের কথা শুনে জেসিকা বলল, আমি চেষ্টা করবো আপনার কথামত চলতে।
কথাটা বলে জেসিকা খাটে থেকে নিচে নামে বিছানা গুছাবে সেজন্য।
বিছানা গুছাতে নিবে সেই মূহূর্তে মারুফ ওকে বাঁধা দেয়।

মারুফ জেসিকাকে চেয়ারে বসিয়ে তারপর নিজেই বিছানা ঝেড়ে পরিষ্কার করে ।

জেসিকা মারুফকে কাজ করতে দেখে মন খারাপ করে বলল, আমি থাকতে আপনি এসব করছেন আমার কাছে খারাপ লাগছে।

জেসিকার কথা শুনে মারুফ মুচকি হেসে বলল, এই সামান্য কারণে মন খারাপ করলে চলবে।
আগে নিজের শরীরের দিকে নজর দিতে হবে তো বৌ।
আল্লাহর রহমতে তুমি সুস্থ্য থাকলেই আমাদের বাচ্চাও সুস্থ্য থাকবে
আর আগে তো তুমিই সবকিছু করেছো।
আমি ব্যস্ত থাকায় তোমাকে সাহায্য করতে পারিনি।

জেসিকা মারুফের কথার প্রতিবাদ করে বলে, আপনি আমাকে সবসময় ছোট বড় বিষয়ে সাহায্য করেছেন।

মারুফ জেসিকার কথা শুনে বলল,তাই।আর বৌ এখন থেকে সব সময় হাসিখুশি থাকতে চেষ্টা করবে।
জানো বৌ একজন মেয়ের জন্য মা হতে পারা আল্লাহর বিশেষ নেয়ামত।
এই সময়ে তোমাদেরকে কতটা কষ্ট করতে হয়।
ঠিক মত খেতে পারো না , ঘুমাতে পারো‌ না।
আস্তে আস্তে পেট যখন বড় হতে থাকে তখন চলাফেরা করতে সমস্যা হয়।
ঠিক মতো উঠতে কষ্ট হয়, বসতে কষ্ট হয়।
কিন্তু তোমরা মায়েরা সন্তানের জন্য সব কষ্ট হাসি মুখে মেনে নেও।

আল্লাহ তোমাদেরকে সব ব্যথা সহ্য করার মারাত্মক ক্ষমতা দিয়েছে।
এজন্যই মুরুব্বীরা বলে, মায়ের জাতটাই দোর্য্যোশীল ।
তবে আমরা পুরুষরা কঠোর পরিশ্রমী হলেও তোমাদের মতো দোর্য্যো আমাদের নেয়।
কিন্তু তাই বলে এটা ভেবো না তুমি সকল কষ্ট সহ্য করবে আর আমি আরাম করে বসে থাকব। তা তো আমাকে দিয়ে হবে না ।
তোমার শরীরের কষ্টের ভাগ নিতে না পারি।
কিন্তু তোমাকে কাজে সাহায্য করতে পারবো তো।
তুমি যেমন মা হচ্ছো আমিও বাবা হবো।
আমারও তো একটা দায়িত্ব আছে তাইনা।
তাই এখন থেকে তোমার এবং আমাদের বাচ্চার খেয়াল রাখা আমার কর্তব্য ।

জেসিকা মারুফের কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনছে।

মারুফের কথা শুনে জেসিকা নিজেকে ভাগ্যবতী মনে হয় এমন একজনকে জীবন সঙ্গী রূপে পেয়ে।
মারুফ একজন ভালো ছেলে,ভাই, নাতি ,স্বামী এবং আল্লাহর রহমতে ভবিষ্যৎ এ একজন ভালো বাবাও হবে।
জেসিকার বাবা ওর জন্য সঠিক জীবন সঙ্গী খুঁজে বের করছে।
আর সে কিনা তখন রাহুলের মোহে অন্ধ হয়ে এই মানুষটির সাথে খারাপ আচরণ করেছে।
তাইতো এই পাপ কাজের জন্য সব সময় আল্লাহর কাছে তওবা করে করে
আর মারুফের মত একজন দায়িত্ববান মানুষকে আপন করে পাওয়াতে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে।
জেসিকা বুঝতে পারছে সন্তানের জন্য মা বাবার নেওয়া সিদ্ধান্তেই লুকিয়ে থাকে সন্তানের জন্য নেয়ামত।
হ্যাঁ তবে তারাও তো মানুষ তাই কিছু ক্ষেত্রে ভুল ত্রুটি হতেই পারে।
সেটা ধরে থাকলে চলবে না।

জেসিকা যখন এসব ভাবছিল সে সময়ে মারুফ জেসিকার মুখের সামনে ঝুঁকে ফুঁ দেয়।

মারুফ হঠাৎ মুখের সামনে ফুঁ দেওয়াতে জেসিকার চোখে বাতাস লাগে সেজন্য জেসিকা চোখ বন্ধ করে বলল, চোখে মুখে ফুঁ দিচ্ছো কেন?

মারুফ ঝটপট জেসিকাকে কোলে নিয়ে বলল, বৌ আমার ধ্যানে মগ্ন হয়ে ছিলো।
আজান দিয়েছে নামায পড়তে হবে তাই তার ধ্যান ভঙ্গ করলাম।

জেসিকা দুই হাত দিয়ে মারুফের গলা জড়িয়ে ধরে বলল,এই পরে যাবো তো নামিয়ে দাও।
মারুফ জেসিকাকে আরেকটু ওপরে তুলে মারুফ নাক দিয়ে জেসিকার না ঘষতে ঘষতে বলল, পড়তে দিলে তো!

এরপর মারুফ জেসিকাকে কোলে তুলে ওয়াশরুমের দরজার সামনে এসে নামিয়ে দিয়ে বলল,বৌ তাড়াতাড়ি ওযু করে এসো।
তুমি বাহিরে আসলে আমি নামাজের জন্য মসজিদে যাব।

জেসিকা মারুফের কথা শুনে সময় নষ্ট না করে ওযু করে বের হয়েছে।
জেসিকা বের হয়ে নামাজে দাঁড়ায়।
আর মারুফ মসজিদে চলে যায়।
এদিকে ইসহাক দোলাকে বলল,তোমরা মা মেয়ে মিলে কী করেছো?
আজকে মারুফ হঠাৎ করে কিছু না বলেই আলাদা হয়ে গেলো।

দোলা ইসহাকের কথা শুনে বলল, আমার সাথে আজাইরা প্যাঁচাল পারতে আসবে না।
তোমার ভাতিজা আমাদের সাথে থাকলে বৌয়ের গোলামী করতে পারবে না।
তাই আলাদা হয়ে গেছে।

ইসহাক দোলার কথা শুনে বলল, ছিঃ তুমি এসব কি ধরনের বাজে কথা বলছো!

ইসহাকের কথা শুনে দোলা বলল, আমি এবং আমার মেয়েরা তো সব সময় বাজে কথাই বলি।
তোমার ভাবী আর তার ছেলে মেয়েরা সব ভালো ভালো কথা বলে।

ইসহাক দোলার কথা শুনে এ বিষয়ে আর কথা বাড়ালো না।
নাহলে ঝগড়া ঝাঁটি শুরু হতে পারে।
তাই এই বিষয়ে না গিয়ে ঝর্নার ব্যাপারে বলল, আচ্ছা এখন ঝর্নার ব্যাপারে কি করবো ?

দোলা ইসহাকের কথা শুনে বলল, ঝর্নাকে নিয়ে আবার তোমার কি হলো?

দোলার কথা শুনে ইসহাক বলল, ঝর্নার স্বামীর সম্পর্কে মারুফের কাছে যা শুনলাম তাতে এমন ছেলের কাছে রেখে মেয়েটাকে সারাজীবন না কষ্ট করতে হয়।
দোলা স্বামী কথা শুনে বলল, তুমি এতো বোকা কেন?
মারুফ যা বলছে তাই সত্যি ভাবছো।
ইসহাক দোলার কথা শুনে বলল, মারুফ মিথ্যা বলে না এটা তুমিও জানো আমিও জানি।

মারুফ রিফাত ছেলেটা সমন্ধে যা বলেছে তোমার বিশ্বাস না হলে আমি অবিশ্বাস করতে পারছি না।

ইসহাকের কথা শুনে দোলা রেগে গিয়ে বলল,এই তোমার বুদ্ধি সুদ্ধি কোন জনমে হবে !

দোলার কথা শুনে ইসহাক ভ্যাবাচেকা খেয়ে বলল,কেন কী হয়েছে?
দোলা বলল,শুনো মারুফের শ্বশুর হচ্ছে উকিল।
আর উকিলেরা অন্যকে বিপদে ফেলে উদ্ধার করার অভিনয় করে নিজের লাভের আশায়।

ইসহাক দোলার কথা শুনে বলল, রেশমার মা তোমার কথা আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।

ইসহাকের কথা শুনে দোলা বলল,সাধেই কি তোমার বুদ্ধি নেয় তা বলি!
আরে রেশমার বাবা তুমি বুঝতে পারছ না কেন!
মারুফ ও মারুফের শ্বশুর প্লান করে ঝর্নার জামাইকে আমাদের চোখে খারাপ বানাতে চায়।
কারণ তারা তো জানেই রেশমার স্বামীর অবস্থা খারাপ না।
মোটামুটি ভালো আছে তাই সে জামাই কখনো তোমার ব্যবসার ধারের কাছেও আসবে না।
আর ঝর্নার স্বামী যেহুতু গরীব তাই এই জামাই তোমাকে ব্যাবসায় হাত লাগিয়ে তোমার সাহায্য করতে আসতে পারে।

তাই আগেই ঝর্নার জামাইকে আমাদের চোখে খারাপ বানাতে উঠে পড়ে লেগেছে।

ইসহাক দোলার কথা শুনে বলল, এতে তাদের লাভটা কী?

দোলা রেগে বলল, এখনো বুঝতে পারছ না।
তোমার মেয়ের জামাইরা যদি এসব থেকে দূরে থাকে তাহলে সব দেখাশোনা মারুফ করবে।
এক সময় তোমার সব কিছু ওর দখলে চলে যাবে।
সেজন্য রিফাতকে আমাদের কাছে খারাপ বানাতে চায়।
আমরা কেনো তাদের পাতা ফাঁদে পা দিবো!

একটা কথা ভাবো আমাদের তো কোনো ছেলে নেই তাই ঝর্নার জামাইকে ছেলে হিসেবে আমাদের কাছে রাখতে পারলে মারুফের শ্বশুর সফল হতে পারবে না।
আর জামাই একটা ভবিষ্যৎ হবে।

ইসহাক দোলার কথা শুনে বলল, রেশমার মা তোমার কত বুদ্ধি।
তাহলে চলো আমরা ঝর্নাকে কালকে সাথে নিয়ে রিফা কে এ বাড়িতে নিয়ে আসি।

দোলা বলল, ঠিক আছে তবে যাওয়ার আগে কাউকে বলা যাবে না।

দোলা ভুলে গেছে সবাইকে নিজ নিজ কর্মফল ভোগ করতে হবে ‌।
কিছুদিন আগে বা পরে।

৬,মাস পরে।
এখন বাজে মাত্র রাত নয়টা ।
এতো জলদি ঘুম আসবে না।
কিন্তু মারুফ জেসিকাকে রাতে খাবার পর আর বিছানা থেকে নামতে দেয় না।
বিশ্রাম নিতে বলে।
আজকাল জেসিকার সারাক্ষণ শুয়ে বসে শুয়ে থাকতে আর ভালো লাগছে না।
মারুফ যতক্ষণ বাসায় থাকবে ওকে কোনো কাজ করতে দেয় না।
এদিকে আম্মু রাশেদ, কোমল সারাদিন ওর পিছনে খাবার নিয়ে ঘুরে।
কোনো কাজ করতে গেলেই বলবে রেষ্ট করতে।
একটা মানুষ কতটা রেষ্ট নিতে পারে।
আমার সামনে তারা সবাই কাজ করে আর আমি বসে বসে দেখি এসব ভালো লাগে!
জেসিকা এসব ভাবছে এরমধ্যে মারুফ রুমে এসে বলল, বৌ কি হয়েছে তোমার মুখ ভার কেন?

মারুফের কথা শুনে জেসিকা বলল, ছেলে মেয়ে হয়েছ এবার খুশি।

মারুফ জেসিকার কথা শুনে মুচকি হেসে বলল, সোনা সময় হলে তো কাঁদবেই ।

জেসিকা মারুফকে দেখে ওর কথা শুনে মারুফের কাছে নিজের অভিযোগের ডালা নিয়ে বসেছে।

মারুফ মনোযোগ দিয়ে জেসিকার অভিযোগ শুনতে ব্যস্ত ।
জেসিকা বলতে শুরু করল তাকে কেন কাজ করতে দেওয়া হয় না?
তার পিছনে সারাক্ষণ খাবার নিয়ে পরে থাকা হয় কেন?
আম্মু এই বয়স কষ্ট করে রান্না করে আর সে বসে বসে আরাম করে এটা কোন কথা হলো?

মারুফ জেসিকার অভিযোগ শুনে জেসিকাকে বুকে নিয়ে আদর করে বলে,লক্ষীটি সব কিছু তোমার ভালোর জন্যেই করা হয়েছে।
তিন মাস আগেই তো বেশি নড়াচড়া করতে গিয়ে তোমার কি অবস্থা হয়েছিল।
তাছাড়া তোমার এখনো প্রতি মাসে ব্লিডিং হচ্ছে
সেজন্য তোমার রক্ত শূন্যতা দেখা দিয়েছে তাই মাথা ঘুরে যেখানে সেখানে পড়ে যাও ।
এই কারণে তোমাকে একা নড়াচড়া করতে নিষেধ করি।

আল্লাহ রহমত আছে তাই তুমি এবং আমাদের বাচ্চারা এখনো ঠিক আছো।

মারুফের কথা শুনে জেসিকা বলল, আমার এভাবে বসে থাকতে ভালো লাগে না তো।

জেসিকার কথা শুনে মারুফ বলল,লক্ষ্মীটি বাবুরা তোমার কোল জুড়ে আসতে আর মাত্র দুই মাস বাকি আছে এই কয়দিন একটু কষ্ট করো সোনা।

মারুফের কথা শুনে জেসিকা বলল, কষ্ট না হয় করলাম কিন্তু আমার আরও একটি অভিযোগ আছে।

মারুফ জেসিকার কথা শুনে বলল,কি অভিযোগ সোনা?

জেসিকা মারুফের কথা শুনে মন খারাপ করে বলল, আমি মোটা হয়ে গেছি তাই তুমি এখন আর আমাকে ভালোবাসো না।
আদর করো না।
রাতের বুকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাও না।
মাঝে বালিশ রেখে ঘুমাও।
জেসিকার কথা শুনে মারুফ হেসে ফেললো।
তা দেখে জেসিকা রেগে বলল,এই হাসবে না।
তোমার হাসি দেখে আমার রাগ উঠে যাচ্ছে।

মারুফ জেসিকাকে জরিয়ে ধরে বলল,বৌ তুমি কি জানো তোমাকে আজকাল মারাত্মক সুন্দরী লাগে।
আমারতো সব সময় তোমার মাঝে ডুবে যেতে ইচ্ছে করে কিন্তু তোমার কষ্ট হবে তাই নিজেকে কন্ট্রোল করতে হচ্ছে।
আর আমাদের মাঝে বালিশ দিয়ে শুয় কারণ ঘুমের ঘোরে তোমার উপরে আমার হাত পা তুলে দিলে বাচ্চারা ব্যথা পাবে তো!
আর এই দুষ্টু তোমাকে দোকানে থেকে এসে কিছুক্ষণ পর পর আদর করে কে আমার ভুত?

মারুফের কথা শুনে জেসিকা আমি জানি না বলে গাল ফুলিয়ে বসে আছে।

মারুফ যানে এ সময়ে গর্ভবতী মহিলাদের মুড সুইং হয়।
তাই সব সময় চেষ্টা করে জেসিকার মন মতো চলতে।
আর জেসিকার সব অভিযোগ মেনে নিতে।
আজকেও বৌয়ের সব অভিযোগ শুনে বুঝালেও বৌ গাল ফুলিয়ে মুখ ভার করে বসে আছে।

মারুফ জেসিকার গাল ফুলানো দেখে মনে মনে বলল, বৌ তুমি গাল ফুলিয়ে রাখলে এতো কিউট লাগে মনে রসগোল্লা।
আমি কাছে গিয়ে টুপ করে খেয়ে ফেলি।

মারুফের কাছে মনে হচ্ছে জেসিকা আগের থেকেও সুন্দরী হয়ে গেছে।
আজকাল জেসিকার আশেপাশের থাকলে ওকে গভীর ভাবে পাওয়ার ইচ্ছে জাগে।
যেমন এই মুহূর্তে মনে চাচ্ছে জেসিকাকে বুকে ভিতরে ঢুকিয়ে পিষে ফেলতে।
কথাটা ভেবে মারুফ জেসিকার দিকে ঝুঁকে জেসিকার গালে হালকা কামড় দিয়ে সরে যাচ্ছিল।
কিন্তু জেসিকা মারুফকে আঁকড়ে ধরে।
মারুফের গলা জড়িয়ে ধরে
নাক দিয়ে মারুফের গালে, বুকে ঘষতে থাকে।
মারুফ জেসিকার এমন দুষ্টুমিতে পাগল হয়ে যাচ্ছে।
মনে চাচ্ছে জেসিকার মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে।

এদিকে জেসিকা মারুফের বুকে কিছুক্ষণ নাক ঘষে ঘাড়ে আলতো করে চুমু দিয়ে সরে যাচ্ছিল।

মারুফ জেসিকাকে সে সুযোগ দেয় না ।
জেসিকাকে জরিয়ে ধরে ওর ওষ্ঠ দখল করে নেয়।
এরপর সারা মুখে ছোট আদর দিতে থাকে ।
জেসিকা মারুফের আদরে সারা দিলে।
একসময় দুজনের ভালোবাসার সাগরে ডুবে গেলো।

ভোরে আজানের ধ্বনি শুনে ওদের ঘুম ভেঙ্গে যায়।
মারুফ ওদের ভালোবাসা বাসির পরে পানি গরম করে জেসিকাকে নিয়ে একসাথে গোসল করে কিছুক্ষণ আগেই ঘুমাতে গিয়েছিলো ।
কিন্তু আজান দিয়েছে তাই নামাজের জন্য উঠতে তো হবেই।

আজান দিয়েছে নামায পড়তে হবে তাই ঘুম থেকে উঠে ওযু করতে যায়।
মারুফ মসজিদে যাওয়ার আগে জেসিকার কপালে চুমু দিয়ে বলল, নামাজের পর ঘুমিয়ে পরো।
তোমার ঘুমের প্রয়োজন।
কথাটা বলে মারুফ মসজিদে চলে যায়।
জেসিকা মারুফের কথা মতই নামাজ শেষে ঘুমাতে যায়।

সকালে জেসিকার ঘুম ভাঙল দোলার চেঁচামেচিতে।

মারুফের বিরক্ত লাগছে রেশমার কর্মকাণ্ড দেখে।
মেয়েটা দুইদিন পর পর শ্বশুর বাড়িতে‌ থেকে এই বাড়িতে এসে হাজির হয়।
ওরা এখনো আলাদা তাই কিছু বলতে পারছে না।
নাহলে বাড়িতে বিশৃঙ্খলার জন্য এদের সবার খবর করে দিতো।

অন্যদিকে দোলা চেঁচিয়ে বলছে, ওদের সাহস হলো কী করে আমার মেয়েটাকে এভাবে আঘাত করার।
ভাবীকে দেবর মারার সাহস হয় কি করে?
সিফাতের ভাইকে জেলের ভাত খাওয়াবো।
আমাদের তো চিনে না।
এদিকে রেশমা বলল,মা সিফাতের বোন আমাকে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here