গল্প হৃদয়ের বন্ধন।
পর্বঃ ২২।
লেখাঃ #মেহের।

জেসিকার এই কথা শুনে মারুফের কিছুটা খারাপ লাগছিল।
তবুও জেসিকার কথা পাত্তা না দিয়ে মুচকি হেসে বলল, তুমি হচ্ছো আমার প্রিয়সী তোমাকে বলবো না তো কাকে বলবো ।

জেসিকা মারুফের কথা শুনে বলল,তা হঠাৎ করে আমার প্রতি এতো দয়া এলো কোথায় থেকে?
গতকাল পর্যন্ত তো আমাকে দেখলে রাগে আপনার চোখ মুখ লাল হয়ে যেত।
আর আজ আমার মত খারাপ মেয়েকে বলছেন কিনা আপনার প্রিয়সী!
বাহ্ দারুন কথা!

মারুফ জেসিকার কথা শুনে মুচকি হেসে জেসিকার কপালে চুমু দিয়ে বলল, রাতে তোমার ভালবাসার ভাইরাসে পেয়েছে গো বৌ।
সেই ভাইরাস এসে আমাকে কানে কানে ফিসফিস করে বলছে, মারুফ আগে তোর বৌ তুই ঘুমিয়ে থাকলে সেই সুযোগ নিয়ে আদর ভালবাসা দিতো।
সে একটা মেয়ে হয়েও কত সাহসী দেখ!
আর তুই কিনা তাকে এ পর্যন্ত আদর ভালবাসা কিছুই দিস না এটাতো ঠিক না।

ভাইরাস এর কথা শুনে মনে হলো আসলেই তো আমি ভুল করছি।
তাই আমি ভেবেছি বৌ যেহেতু আমার ঘুমের সুযোগ নিয়েছে কিন্তু আমি তো তার মত ঘুমের সুযোগ নিবো না।
সেজন্যই ঠিক করেছি বৌ যখন জেগে থাকবে তখন বৌকে আদর ভালোবাসা দিয়ে পুষিয়ে দিব।

জেসিকা মারুফের কথা শুনে ঢোক গিলল।
এই লোক টের পেলো কি করে ওঁ সেদিন কি করেছে!
ওনি তো ঘুমে বিভোর ছিল কিন্তু সত্যিই সে কি ঘুমে ছিল?
নাকি আমার সাথে ঘুমের নাটক করছে।
থাক সে যা হক এখন এইসব নিয়ে ভাবতে চায় না।

মারুফ জেসিকার অবস্থা দেখে আর দুষ্টুমি করল না।
জেসিকার থেকে বিদায় নিয়ে রুমে বাহিরে চলে গেল।

মারুফ বাহিরে এসে দেখে ওঁর ছোট ভাই রাশেদ এসে পড়েছে।

ভার্সিটি বন্ধ হওয়াতে রাশেদ কিছু দিনের জন্য বেড়াতে গিয়েছিল।

মারুফ রাশেদকে দেখে বলে, ছোট কেমন আছিস?
আর তুইতো ভার্সিটিতে ভর্তি হতে না হতেই ফাঁকিবাজ হয়েছিস।
রাশেদ মারুফের কথা শুনে বলল, আলহামদুলিল্লাহ ভালো ,
আমাকে তুমি অযথা ফাঁকিবাজ বলছো এটা কি ঠিক!

রাশেদের কথা শুনে মারুফ বলল,ঠিক মত ক্লাস করছিস না এখানে ওখানে বেড়াতে চলে যাচ্ছিস এভাবে চললে হবে!
আবার এসব করার পরেও তোকে ফাঁকিবাজ বললে দোষের হবে কেন?

রাশেদ বড় ভাইয়ের কথা শুনে বলল, ভাইয়া আমি তো তোমাকে বলে গিয়েছি।
আর এখন থেকে আর ক্লাস মিস করবো না।
তোমার সব কথা শুনব তবুও ফাঁকিবাজ বলো না।
শুনতে লজ্জা করে।

রাশেদের কথা শুনে মারুফ হেসে দিল।
এরপর বলল, আর কখনো ক্লাস মিস করবি না মনে থাকে যেনো।
যা রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে মা ও দাদুর সাথে দেখা করিস।

তুই এই কয়দিন বাসায় ছিলি না তাই মা ও দাদু তোর জন্য চিন্তায় ছিলো।
আর শুন আমি দোকানে যাচ্ছি এসে তোর গল্প শুনবো এখন আমার দেরি হয়ে গেছে।
তুই ভিতরে যা।

মারুফের কথা শুনে রাশেদ আচ্ছা ভাইয়া বলে ভিতরে চলে যায়।

রাশেদ ফ্রেস হয়ে মায়ের কাছে গেল।
মায়া বেগম ছোট ছেলেকে দেখে বলল, কোথাও গেলে বুঝি আমাদের কথা মনে পড়ে না।
বাসায় যে আপনার মা আছে সে খবর থাকে।
রাশেদ মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে বলল, মা তোমাকে আমি কত ভালোবাসি আর তুমি এই কথা বলছো !
যেখানেই থাকি না কেন সব সময় ফোন করে তোমার এবং বাসার সবার খোঁজ খবর ভাইয়ার কাছে থেকে নিয়েছি।

বিশ্বাস না হলে ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করে দেখো।

তোমাদের সবাইকে ছেড়ে এবারেই প্রথম বেশিদিন বাড়ির বাহিরে আমার থাকা হয়েছে ।
তোমার এবং ভাইয়ার কথায় মনে হচ্ছে কত যুগ পরে এসেছি।
এস দেখে কিন্তু আমার খারাপ হয়ে যাচ্ছে ।

মায়া বেগম ছেলের কথা শুনে বলল,থাক হয়েছে মন খারাপ করতে হবে না,
এখন খেতে চল বাপ।

মায়ের কথা শুনে রাশেদ বলল, খুব ক্ষিধে পেয়েছে যলদি খেতে দেও তো।

ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে মায়া বেগম বললেন,আচ্ছা বাবা যেখানে বেড়াতে গিয়েছিল সেখানে তোদের ঠিক মত খেতে পেয়েছিস?

রাশেদ মায়ের কথা শুনে গলা ছেড়ে বলল, খেতে পাব না কেন?
আমাদের যখন যা ইচ্ছে তাইতো খেয়েছি।

রাশেদের কথা শুনে মায়া বেগম বলে, তাহলে তোর মুখ শুকনো লাগছে কেন?
রাশেদ মায়ের কথা শুনে হেসে বলল, ছেলে মেয়ে কোথাও থেকে এলে মায়ের চোখে শুকনোই লাগে মা।

মায়া বেগম রাশেদের কথা শুনে বলল,হ্যাঁ তুই তো পন্ডিত সব জানা হয়েছে তো এখন খেতে চল।
মায়া বেগম খাবার টেবিলে দেওয়ার আগে বলল,বাবা যা তো তোর দাদুর সাথে দেখা করে আয়।
ততোক্ষণে আমি টেবিলে খাবার দেয়।
রাশেদ দাদুর কাছে গিয়ে বলল,ও বৌ তোমার স্বামী বাহিরে থেকে এসেছে তাকে খেতে না দিয়ে তুমি দিন দুপুরে এভাবে শুয়ে আছো কেন?

রাশেদকে দেখে চাঁদনী বানু বলে,ওরে কে কোথায় আছিস দেখে যা। আমার সওমী কি বলে!
এমন স্বামীর কপালে ঝাটার বারি দেওয়া দরকার।

রাশেদ দাদুকে জড়িয়ে ধরে বলল,বৌ তুমি এমন ক্ষ্যাপলা কেন?
কতদিন পরে বাড়িতে এসেছি একটু খাতির যত্ন করবা তা না করে ঝাটার বারি দিতে চাও?

চাঁদনী বানু রাশেদের কথা শুনে বলল,ওহ্ বৌ এদিকে মরতে বসেছিলো স্বামীর কোন খবর নেই তাহলে ঝাটা বারি ছাড়া তো আর জুটার কথা না।

রাশেদ ওঁর দাদুর কথা শুনে, দাদুর দিকে ভালো মত তাকিয়ে দেখে বলল, দাদু তোমার কি হয়েছিলো?
তোমাকে এমন অসুস্থ্য লাগছে কেন?
চাঁদনী বানু রাশেদকে বলল,দাদু শান্ত হও এখন আমি সুস্থ্যই আছি।
এলার্জির সমস্যার কারণে একটু অসুস্থ্য হয়েছিলাম তা এখন ঠিক হয়ে গেছে।
দাদু ভাই তুমি কত দূরে থিকা আইছো ।
না জানি কত ক্লান্ত তাই রুমে গিয়ে ঘুম দেও।

রাশেদ ওঁর দাদুর কথা শুনে হেসে বলল, বৌকে দেখে সব ক্লান্তি ফুরুৎ হয়ে উরে গেছে।
রাশেদ ওঁর দাদুর সাথে আরও কিছুক্ষণ গল্প করল।
এরপর দাদুকে বিশ্রাম নিতে বলে চলে এল।
রুমের বাহিরে এসে দেখে ওঁর মা টেবিলে খাবার সাজিয়ে বসে আছে।
রাশেদ এসে মায়ের পাশে বসে খেতে বসল।
খাওয়া শেষ হলে নিজের রুমে চলে গেল।

দুপুরের পরে কোমল ও ঝর্না বাসায় আসে।
কোমল বাসায় এসে শুনে রাশেদ বাসায় আসছে ।
কোমল হাত মুখ ধুয়ে ভাইয়ের কাছে গেল।
রাশেদ ওকে দেখে বলল,আরে পেত্নী তুই এতক্ষণ কোথায় ছিল?

কোমল রাশেদের কথা শুনে, রাশেদের কাছে গিয়ে চুল ধরে ঝাঁকুনী দিয়ে বলল, আমি পেত্নী না।
ভাইয়া তুই পেত্নী ,তোর বৌ পেত্নী ,তোর শালী পেত্নী।

আরে বইন থাম থাম।
আজকেই সব চুল ছিঁড়ে ফেলবি নাকি?
আমাকে পেত্নী বললি কেন?
তাই তোর চুল ছিঁড়ে তারপর বড় ভাইয়ার কাছে আজকে বিচার দিবো।

রাশেদ ওঁর ছোট বোনের কথা শুনে বলল, আমি পেত্নী বলেছি সেজন্য চুল ছিঁড়ে মনে হয় টাক বানিয়ে দিলি , এখন আবার আমার নামে ভাইয়ার কাছে বিচার দেওয়ার কথাও বললি।
আশ্চর্য এটা কিছু হলো!

রাশেদের কথা শুনে কোমল হেসে বলল,এটাই ঠিক হবে।
আমাকে পেত্নী বলার শাস্তি তো পেতেই হবে ভাইয়া।

বোনের কথা শুনে রাশেদ বলে,তা আপনি মহামান্য কোমল খান যে আমাকে আর আমার পরীর মত বৌকে এবং শালীকে পেত্নী বলেছেন তার বেলায় কি?

একথা শুনে কোমল বলল ,ছিঃ ছিঃ ভাইয়া তুমি এমন কান্ড কি করে করেছো?

রাশেদ বোনের কথা শুনে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে আমি আবার কি করলাম?

কোমল রেগে গিয়ে বলল,বাসার কাউকে না বলে বিয়ে করেছো কেন?

কোমলের কথা শুনে রাশেদ বলে,কি যা তা বলছিস?
এই ছুটকি তোর মাথা খারাপ হয়নি তো!
আমি আবার কখন বিয়ে করলাম!

রাশেদের কথা শুনে কোমল বলল, কেন তুমি একটু আগেই না বললে তোমার বৌ আর শালী নাকি পরী!

কোমলের কথা শুনে রাশেদ হাহাহা করে হেসে বলল,আরে বোকা বোন আমার।
চাঁদনী বানুইতো আমার পরীর মত বৌ ।
আর তাঁর বোনও তো পরীর মতোই।

ভাইয়ের কথা শুনে কোমল দুষ্টুমি করে বলল, তোমার বৌ পরী না তো ডাইনি এবং একটা দজ্জাল বুড়ি।

রাশেদ কোমলের কথা শুনে বলল,যদিও আমার বৌ একটু রাগী তাওতো বড় ভাবীর থেকে আমার বৌ কতো ভালো
আমার বৌয়ের তুলনায় বড় ভাবী বেশি দজ্জাল ।

কোমল রাশেদের কথা শুনে বলল,কী?

রাশেদ বোনের মুখে কী শুনে বলল জী ,আর তুই এখানে দাঁড়িয়ে থাক আমি আমার বৌকে একটু বলে আশি তুই তাকে বুড়ি ও দজ্জাল বলেছিস।
একথা শুনে কোমল ভয় পেয়ে দাদুকে ডাকতে নিষেধ করে।

এদিকে রাশেদ জেসিকাকে দজ্জাল বলায় কোমল
রাশেদকে বলল ভাইয়া তোর সাথে আমার কথা আছে।

রাশেদ বোনের কথা শুনে বোনের দিকে তাকিয়ে দেখে ওঁর বোন গম্ভীর মুখ করে আছে।

রাশেদ ভেবেছে ওঁর কোন কথায় কোমল কষ্ট পেয়েছে তাই কোমল হাত ধরে টেনে কাছে বসিয়ে বলল,কি হয়েছে ছুটকি?
আমি তো এতক্ষন দুষ্টুমি করেছি‌ আমার কোনো কথা শুনে তুই কষ্ট পেয়েছিস?
তাহলে ভাইয়া তার জন্য সরি।

কোমল রাশেদকে বলল, ওহ্ ভাইয়া তুমি অযথা অস্থির হচ্ছো কেন?
শুনো ভাইয়া বড় ভাবী না দজ্জাল না।
এরপর কোমল রাশেদকে জেসিকার সাথে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা এক এক করে বলল।

সব শুনে রাশেদ বলল,কি বলছিস বড় ভাবী এত ভালো হয়ে গেছে!
ইস্ কথাটা শুনেই শান্তি লাগছে।
কিন্তু ভাইয়া কাজটি মোটেও ঠিক করেনি।
আলো বাহিরের লোক ওঁর কথা শুনে ভাবীকে আঘাত করা ঠিক হয়নি।
বেচারিকে বিনা দোষে আঙ্কেল এবং ভাইয়ার হাতে পিটানি খেতে হয়েছে।
কোমল রাশেদের কথা শুনে মন খারাপ করে হম বলল।

তা দেখে রাশেদ বলে,শুন ছুটকি তুই সব সময় ভাবীর আশেপাশেই থাকবি যখন যা দরকার হয় করে দিবে।
আর ভাবী সুস্থ্য হলেও তার সাথে সংসারে কাজে তুই, আমি এবং ঝর্না তাকে কাজে সাহায্য করবো।
কোমল রাশেদের কথা শুনে বলল, ঠিক আছে ভাইয়া।

এরপর রাশেদ বলে,শুন ছুটকি ভাবী যেহেতু নিজেকে এতটা পরিবর্তন করেছে তাই আমাদেরও উচিত তাকে সাপোর্ট করা।

ঝর্না বাহিরে থেকে কোমল ও রাশেদের কথা শুনে ভিতরে এসে বলল,হ্যাঁ ভাইয়া তুমি ঠিক বলেছো।
এখন থেকে আমরা সবাই ভাবীকে সাহায্য করব তুমি শুধু তোমার বৌকে সামলে রেখো।
আমরা তো তার ভয়েই ভাবীর কাছে ঘেঁষতে পারি না।

রাশেদ ঝর্নার কথা শুনে বলল, আচ্ছা তোরা দুজনে আমার বৌয়ের এত বদনাম করে কি মজা পাস একটু বলতো!
ঝর্না একথা শুনে বলল, ভাইয়া আমাদের ঘাড়ে কয়টা মাথা যে তোমার বৌয়ের বদনাম করে নিজের মাথা কাটতে চায়বো!
একথা শুনে রাশেদ হো হো করে হেসে উঠল।
রাশেদকে হাসতে দেখে ঝর্না ও কোমল হেসে দেয়।
এরপর ভাই বোনেরা খুনসুটি মেতে উঠে।

বিকেলে

মারুফ দুপুরে বাসায় আসতে দেরি হয়ে যায়।
প্রায় তিনটা বাজে বাসায় আসে।
এসে দেখে সবার খাওয়া শেষ মায়া বেগম খাবার নিয়ে জেসিকা রুমে যাচ্ছে।
মারুফ মা’কে খাবার নিয়ে ওদের রুমে যেতে দেখে বলল,মা জেসিকা এখনো খায়নি।
ছেলের আওয়াজ শুনে মায়া বেগম পিছনে ঘুরে মারুফকে দেখে বলল, ওহ্ তুই ।
আর বলিস না জেসিকা সেই যে যোহরের নামাজের পর ঘুমিয়ে গেছে সে থেকে এখনো ঘুমাচ্ছে।
তাই আর ডাকিনি।
কিন্তু এখন দেখছি বিকাল হয়ে গেছে ওঁর শরীর মুছা ও খাওয়া হয়নি।
এজন্য খাবার নিয়ে ওকে উঠাতে যাচ্ছি।

মারুফ ওঁর মায়ের কথা শুনে বলল,মা ওঁর ওষুধের মধ্যে ঘুমের ওষুধ আছে।
তাই এত ঘুমাচ্ছে।
তুমি জেসিকা এবং আমার খাবার একসাথে দিয়ে দেও।
আমি খাওয়াবো নে।

মারুফ ওঁর মায়ের সাথে কথা বলে ওদের রুমে চলে যায়।

মারুফ রুমে গিয়ে দেখে জেসিকা গভীর ঘুমে ।
জেসিকাকে ঘুমে দেখে মারুফ প্রথমে ওয়াশরুমে গিয়ে নিজে ফ্রেশ হয়ে নেয়।
এরপর ছোট বালতিতে করে পানি নিয়ে রুমে আসে।
বৌয়ের শরীর মুছে দিতে।

জেসিকার শরীরে তিন চারবার মলম দেওয়া হয় সেজন্য শরীর দুই তিনবার না মুছে দিলে আঠা আঠা হয়ে থাকে।

মারুফ পানি নিয়ে এসে দেখে মায়া বেগম ওদের খাবার টি টেবিলের ওপরে ঢেকে রেখে গেছে।

মারুফ রুমে এসে খাটের সাইডে বালতি রেখে রুমের দরজা বন্ধ করে জেসিকার মাথায় কাছে বসে ওঁর বৌকে আস্তে আস্তে ডেকে তুললো।

জেসিকা ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে মারুফকে দেখে বলল,কি হয়েছে ঘুমাতে দিচ্ছেন না কেন?
মারুফ জেসিকার দিকে ঝুঁকে বলল, অনেক ঘুমিয়েছো আর ঘুমানো লাগবে না উঠো।

জেসিকা মারুফের কথা শুনেও ওভাবে শুয়ে আছে।
মারুফ তার দেখে জেসিকার দিকে আরেকটু ঝুঁকে ওকে হালকা করে ধরে বসিয়ে দিল।

জেসিকা মারুফের এমন আচরণে অভ্যস্ত না়।
সে বুঝতে পারছে না মারুফ তার এতো সেবা যত্ন করছে কেন!
কিছুক্ষণ চিন্তা করার পরে চাঁদনী বানুর কথা মনে পরল, চাঁদনী বানু তো মারুফকে ওঁর সেবা করার দ্বায়িত্ব দিয়েছে তাই হয়তো বিপদে পড়ে সেই দ্বায়িত্ব পালন করছে।

মারুফ জেসিকার শরীর মুছে দিয়ে জামা পড়িয়ে দেয়।
জেসিকার শরীর মুছা হলে সে খাটের সাথে হেলান দিয়ে বসলো।
তা দেখে মারুফ জেসিকার গলায় মুখ গুঁজে দিল।
জেসিকা মারুফের এমন আচরণে আরও শক্ত হয়ে রইলো।
মারুফ জেসিকার গলায় এবং তার আশপাশে ছোট ছোট চুমু দিচ্ছে আবার কখনো নাক দিয়ে ঘষাঘষি করছে।
কিন্তু জেসিকা বোধহয় হয় মনে মনে পণ করেছে মারুফের এমন আদরে নিজের থেকে সামন্য সাড়াও দিবে না।

মারুফের বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না জেসিকা ইচ্ছে করেই এমন শক্ত হয়ে আছে।
মারুফের বৌ ভুলেও মারুফকে একটু ছুঁয়ে দেখে না।
জেসিকার এমন আচরণে মারুফের কষ্ট হচ্ছে।
কিন্তু কিছু বলতেও পারছে না।
জেসিকার এতো কাছে এসেও বৌয়ের সাথে নিজেকে মিশিয়ে একাকার হতে পারছে না। একেতো জেসিকা অসুস্থ্য
দ্বিতীয় তো জেসিকার আচরণে বোঝা যায় সে মারুফের কাছে আসাটা পছন্দ করেছে না।
সেজন্য জেসিকা নিজেকে এভাবে গুটিয়ে রাখছে।

কিছু কিছু সময় তো মারুফের নিজেকে অসহায় মনে হয়।
তার করা অন্যায় গুলো জেসিকা ভুলতেই চাইছে না।
এসব চিন্তা ভাবনা করে মারুফ মনে মনে বলল,বৌ তুমি সুস্থ্য হলে এর শোধ ঠিকই তুলব।
তখন দেখবো আমার ডাকে সাড়া না দিয়ে থাকো কি….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here