হৃদমোহিনী
পর্ব ২৬
মিশু মনি
.
৩২.
মিশুকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছেনা মেঘালয়। মেয়েটা কয়েক মিনিটের মধ্যেই কোথায় উধাও হয়ে গেলো বোঝা যাচ্ছেনা। কিছুক্ষণ সমুদ্রের পাড়ে এদিক সেদিক তাকিয়ে কোথাও না পেয়ে রাস্তায় এসে হন্যে হয়ে খুঁজতে লাগলো। গাড়ির ড্রাইভারও দেখেনি ওকে। এইটুকু সময়ের মধ্যেই উধাও হওয়ার ব্যাপারটাকে রহস্যময় লাগছে মেঘালয়ের কাছে। মিশু ঠিক আছে তো? কোনো বিপদ হলো কিনা কে জানে!
কয়েক মুহুর্ত রাস্তাতেই খুঁজে খুঁজে কাটলো। রাস্তা একদম ফাঁকা। সামনে বিশাল পাহাড় স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ উধাও হয়ে যাবেই বা কোথায়? যেদিকে যাবে অবশ্যই চোখে পড়বে। অবশ্য বিপদের সময় কোনোদিকেই নজরে আসেনা। এসব ভেবে ভেবে মাথাটা খারাপ হতে শুরু করেছে এমন সময় ফোনটা বেজে উঠলো। মেঘালয় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখলো মিশুর বাবা ফোন দিয়েছেন। কি বলবে বুঝতে না পেরে প্রথমে রিসিভ করতে চাইলো না। দ্বিতীয়বার রিং হওয়ার পর কানে ধরে হ্যালো বলার আগেই উনি বললেন, ‘বাবা তুমি কোথায়? মিশু আর্মিদের ক্যাম্পের কাছে আছে তারাতারি ওর কাছে যাও।’
মেঘালয় অবাক হয়ে বললো, ‘কোথায়?’
– ‘তোমার নাম্বার ওর কাছে নেই তাই আমাকে ফোন দিয়ে বললো তোমাকে জানাতে। দ্রুত মিশুর কাছে যাও।’
আর কিছু জিজ্ঞেস না করে মেঘালয় ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করলো, ‘আশেপাশে আর্মিদের ক্যাম্প ট্যাম্প কিছু আছে?’
– ‘হ্যা, সামনেই একটা আছে।’
– ‘দ্রুত চলুন তো।’
গাড়ি ছেড়ে দিলে মেঘালয় ফোন রেখে দিলো। বেশিক্ষণ লাগলো না পৌঁছাতে। গাড়ি থেকেই দেখতে পেলো রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে দুজন আর্মির সাথে কথা বলছে মিশু। এখানে কিভাবে আসলো ভাবতে ভাবতে দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে আসলো মেঘালয়।
আর্মিদের কাছে আসার পর একবার মিশুর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আর্মিদের দিকে তাকালো। দুজনের মধ্যে বেশি বয়স্ক লোকটি বললেন, ‘আপনি ওনার হাজব্যান্ড?’
কথাটা বলেই উনি হ্যান্ডশেক করার জন্য হাত বাড়ালেন। ওনার মুখে প্রসন্ন হাসি দেখে চিন্তা থেকে স্বস্তি পেলো মেঘালয়। তারমানে কোনো বিপদের আশংকা নেই! কাহিনী পরে শোনা যাবে, আপাতত দুশ্চিন্তা নেই ভেবে হাফ ছেড়ে বাঁচলো মেঘালয়। হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করলো লোকটির সাথে। বললো, ‘মেঘালয় আহমেদ’
লোকটি বললেন, ‘আমি আবদুল কালাম। আপনি বোধহয় টেনশনে পড়ে গিয়েছিলেন?’
– ‘হ্যা সেটাই স্বাভাবিক। হঠাৎ ওকে দেখতে না পেয়ে প্রচন্ড টেনশন হচ্ছিলো।’
– ‘উনি আমাদের হেল্প করেছেন। যদিও এখানে পুরো রাস্তায় গার্ড আছে, সেরকম বিপদের সম্ভাবনা নেই। তবুও রিস্কি জোন তো, ভয় একটু থাকবেই।’
মেঘালয় একবার মিশুর দিকে তাকিয়ে বললো, ‘হেল্প বলতে?’
– ‘এক আসামি পালাচ্ছিলো, ওকে ধরতে সাহায্য করেছেন আমাদের।’
মেঘালয় ভ্রু কুঁচকে তাকালো মিশুর দিকে। বিস্ময়ে চোখ কপালে উঠে গেলো ওর! মিশু আসামি ধরতে সাহায্য করেছে? এটা কিভাবে সম্ভব?
আবদুল কালাম নিজে থেকেই বললেন, ‘আসামি বাবা পাঁচার করছিলো। মেয়েটি ভদ্র মেয়ের মতো যাচ্ছিলো। আপনার ওয়াইফ কিভাবে বুঝতে পেরেছে জানিনা, মেয়েটাকে সরাসরি গিয়ে ধরে ফেলেছে।’
মেঘালয় এখনও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। ভাবছে, মেয়েরাও ইয়াবার ব্যবসা করছে! তাকে আবার ধরে ফেলেছে আরেক মেয়ে। বাহ! মিশু দেখছি ডিটেকটিভ হয়ে গেছে! মিশুর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো, ‘কিভাবে বুঝলে তুমি?’
মিশু বললো, ‘মেয়েটা হয়ত কোথাও যাচ্ছিলো। আমাকে খেয়াল করেনি। রাস্তা থেকে নেমে এক ছুটে সমুদ্রে নেমে হাত পা ধুচ্ছিলো। হঠাৎ কি যেন পড়ে গেলো ওর জামার ভিতর থেকে। চোখের পলকে মেয়েটা সেটা লুকিয়েও ফেললো। কিন্তু ততক্ষণে আমি বুজে গেছি সেটা ইয়াবা। দ্রুত গিয়ে আলাপ জমাতে চেষ্টা করলাম। মেয়েটা এড়িয়ে যাচ্ছিলো। কথা বলতে বলতে একহাতে ওর ওড়নাটা দিয়েই ওর গলা পেঁচিয়ে ধরে হেচকা টান দিয়ে আটকে ফেলেছিলাম। যখনি তোমাকে ডাকতে যাবো তার আগেই দেখি ওনারা আসছেন।’
মেঘালয় হেসে বললো, ‘বাহ! ডিটেকটিভ মিশু হয়ে গেছো দেখছি। গ্রেট!’
মিশু বললো, ‘মেয়েটা আমার হাত থেকেও পালাতে চেষ্টা করছিলো। ওনাদের সাথে আমিও পিছনে ধাওয়া করি, তারপর গাড়িতে করে এখানে চলে এলাম।’
মেঘালয় মুখে হাত দিয়ে হাসলো। পাশেই একটা টিনের ঘর থেকে আরেকজন লোক বেড়িয়ে এসে মেঘালয়ের সাথে হ্যান্ডশেক করলেন। এরপর চেয়ার নিয়ে এসে বসতে বললো মেঘালয় মিশুকে। বসে দুকাপ চা খেয়ে টুকটাক গল্প ও করে নিলো দুজনে। মেঘালয় বারবার আড়চোখে তাকাচ্ছিলো মিশুর দিকে। মিশুকে হঠাৎ একটু বেশিই সুন্দর লাগছে ওর কাছে। রহস্যটা কি?
চা খাওয়া শেষ করে সৌজন্যতা বিনিময় করে মেঘালয় ও মিশু এসে আবারও গাড়িতে উঠলো৷ গাড়ি ছুটলো হিমছড়ির উদ্দেশ্যে।
৩৩.
মেঘালয় বললো, ‘অয়ন্তিকা আমার ফ্রেন্ড। মেয়েটার সাথে একটা ভালো ফ্রেন্ডশিপ আছে। ও আমার অনেক কেয়ার করে, ওই সবসময় ফোন টোন দেয়। রিসিভ করে টুকটাক কথা বলতাম, এতটুকুই।’
মিশু মুচকি হেসে বললো, ‘আমি কি জানতে চেয়েছি?’
চোখাচোখি হয়ে গেলো মেঘালয়ের সাথে। মিশুর চোখেমুখে হাসির ঝিলিক। আর্মিদের কাছে সম্মানিত হবার কারণে অনেক আনন্দ হচ্ছে। মেঘালয় চোখে চোখ রেখেই বললো, ‘জানানোটা আমার দায়িত্ব। আমার স্ত্রী যেন কখনো ভূল না বোঝে।’
– ‘সে আপনার প্রেমিকা হলেও আমার কিছু যায় আসেনা।’
– ‘তাই নাকি? যদি প্রেমিকা হতো?’
– ‘আপনার উপর ডিপেন্ড করতো সেটা। আপনি যদি বলতেন আপনি তার সাথেই থাকতে চান, আমি জায়গা ছেড়ে দিতাম।’
– ‘হা হা হা।’
হো হো করে হেসে উঠলো মেঘালয়। হাসতেই লাগলো শব্দ করে। গাড়ির ড্রাইভার একবার পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো ওর হাসি। প্রাণবন্ত হাসি হাসছে ছেলেটা। হাসি থামিয়ে বললো, ‘তোমার মধ্যে অনেক গুণ আছে দেখছি।’
– ‘থাক, আর বলতে হবেনা।’
– ‘আমি টেনশনে পড়ে গিয়েছিলাম বিশ্বাস করো।’
– ‘করলাম। একটা চুমু খাবো।’
কথাটা বলেই মিশু চোখ বন্ধ করে ঠোঁট এগিয়ে আনলো। মুচকি হেসে সেই ঠোঁট স্পর্শ করলো মেঘালয়। ঠোঁটে ঠোঁটেই শত না বলা কথা বলা হয়ে গেলো।
হিমছড়িতে পৌঁছে গাড়ি থেকে নেমে টিকেট কেটে নিলো। মিশু ঘুরেঘুরে আশেপাশের দোকানগুলো দেখছিলো। গেট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে সোজা গিয়ে সিঁড়ি দিয়ে ওঠা আরম্ভ করতে হলো৷ লম্বা লম্বা শতাধিক সিঁড়ি। সব পেড়িয়ে সোজা পাহাড়ের উপর চলে যেতে হবে। দুজনেই হাত ধরাধরি করে ওঠা শুরু করে দিলো। কিছুদূর ওঠার পর ওড়নাটা মাথায় বেঁধে ফেললো মিশু। ওড়না দিয়েই টুপি বানিয়ে আবারও ওঠা শুরু করে দিলো। ব্যাপারটা ভালো লাগলো না মেঘালয়ের। মুখটা বিকৃত করে বললো, ‘নিচে নামো, আগে ক্যাপ কিনে নিয়ে আসি তারপর উপরে উঠবো।’
মিশু বাঁধা দিয়ে বললো, ‘আরে না না। ক্যাপ লাগবে না আমার।’
– ‘প্রচন্ড রোদ আজকে। একটা হ্যাট নিয়ে আসি? তুমি দাঁড়াও।’
মেঘালয় সিঁড়ি দিয়ে নামার চেষ্টা করতেই মিশু হাত ধরে আটকালো। বললো, ‘লাগবে না। এতদূর কষ্ট করে আবার নিচে যাবেন? প্রয়োজন নেই। আজকে রোদ লাগলেও কিছু হবেনা।’
– ‘মিশু, অনেক রোদ।’
– ‘বললাম তো কিছু হবেনা।’
– ‘তাহলে ওড়নাটা মাথায় বেঁধেছো কেন?’
– ‘খারাপ লাগছে? খারাপ লাগলে খুলে ফেলি?’
– ‘ভালো লাগছে না সিরিয়াসলি। খুলে ফেলো।’
মিশু ওড়না দিয়ে বানানো টুপিটা মাথা থেকে খুলে মাথায় ওড়না দিয়ে বললো, ‘এবার ঠিক আছে?’
মেঘালয় কিছু বললো না। আবারও ওঠা শুরু করলো দুজনে। বেশ কিছুদূর ওঠার পর হঠাৎ মেঘালয় মিশুকে একটানে বুকে টেনে নিলো। আশেপাশে পাহাড়ের উপর চারিদিক একদম ফাঁকা। তবুও মিশু নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললো, ‘বাইরে কাছাকাছি না আসলেও চলবে।’
মেঘালয় হতাশ হয়ে মিশুকে ছেড়ে দিয়ে বললো, ‘তুমি বড্ড আনরোমান্টিক।’
– ‘তাই? বাইরে পাবলিক প্লেসে ঢোলাঢুলি করাটাকে রোমান্টিকতা বলে? যদি তাই হয় তবে আমি সেরকম রোমান্টিক হতে চাইনা।’
মেঘালয় হেসে মিশুকে কোলে তুলে নিলো। কাজটা এত দ্রুত আর আচমকাই করে ফেললো যে মিশু থতমত খেয়ে গেলো। বাঁধা দেয়ার সুযোগ পেলো না। মেঘালয় কোলে তুলে নিয়ে অনায়াসে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে লাগলো। মিশুর লজ্জা লাগছে প্রচন্ড। এভাবে কোলে নিয়ে উপরে উঠছে, লোকজন কি বলবে?
চারিদিক একদম ফাঁকা। পাহাড়ের উপর তরতর করে সিঁড়ি বেয়ে উঠে যাচ্ছে মেঘালয়। মিশু লজ্জায় চোখ বন্ধ করে আছে। হঠাৎ চোখ মেলে দেখলো চারিদিকে ঘন সবুজ! তারমানে পাহাড়ের চূড়ায় উঠে গেছে! এত অনায়াসে কোলে নিয়ে লোকটা কিভাবে যে উঠলো? ছোট্ট পুতুলের মত করে কোলে নিয়ে উঠে এসেছে। পারেও বটে।
মিশুকে কোল থেকে নামানোর পর মাটিতে পা রাখলে একজন আর্মি এসে বললেন, ‘ভালোই লাগছিলো দুজনকে।’
লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে মিশুর। মাথা নিচু করে তাকিয়ে রইলো পাহাড়ের দিকে। হঠাৎ মেঘালয় মিশুর চোখের উপর হাত রেখে সামনে এগিয়ে নিয়ে আসলো। এরপর চোখ থেকে হাত সরানো মাত্রই মিশুর চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়ার জোগাড়। সামনে শুধুই আসমানী রঙের মেলা! পাহাড়ের চূড়া থেকে সমুদ্র দেখতে এত ভালো লাগে আগে জানতো না মিশু। সামনে বিশাল সমুদ্র আর বিশাল আকাশ মিলেমিশে এক হয়ে গেছে। দেখেই বুকের ভেতরটা কেমন মোচড় দিয়ে উঠছে যেন।
মিশু মুগ্ধ হয়ে বললো, ‘এত্ত সুন্দর কেন! সমুদ্র আর আকাশটা আমার খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে!’
কথাটা বলতে বলতে অজান্তেই মেঘালয়ের বুকের শার্ট খামচে ধরছিলো। মেঘালয় ধরে রইলো মিশুকে। পাহাড়ের উপর চারিদিকে ঘুরে ঘুরে দেখার পর বসে পড়লো মাটিতে। সমুদ্র আর পাহাড়ের সাথে মন খুলে কথা চালিয়ে যেতে লাগলো মিশু। আর মেঘালয় উপভোগ করতে লাগলো মিশুর এই মুগ্ধতাকে!
পাহাড় থেকে নেমে এসে হিমছড়ি ঝরনায় চলে গেলো দুজনে। ঝরনাকে যতটা বড় হবে ভেবেছিলো ততটা নয় দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেলো মিশুর। তবুও দুজনে কিছুক্ষণ ঝরনার নিচে বসে হিমশীতল জলে গোসল করে নিলো। গোসলের সময়ে জড়িয়ে রইলো একে অপরকে। আর বারবার হাসছিলো শব্দ করে। দুজনেই সদ্য প্রেমে পড়া দুজন প্রেমিক প্রেমিকার মতো উচ্ছ্বল হয়ে উঠছে ক্রমশই। দুজনের একজনও কল্পনাও করতে পারেনি সামনে কত দুঃসময় অপেক্ষা করছে ওদের জন্য!
৩৪.
হোটেলে ফিরে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে আছে ওরা। মেঘালয়ের বুকে মাথা রেখে শক্ত করে জাপটে ধরে রেখেছে মিশু। সূর্যাস্ত দেখতে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে মনে মনে। কিন্তু একদমই উঠতে ইচ্ছে করছে না। ইচ্ছে করছে এভাবেই একটা জীবন কাটিয়ে দিই।
মেঘালয় বললো, ‘আমাদের চব্বিশ ঘন্টার প্রোগ্রাম কার্যকর করা হবে কবে থেকে?’
মিশু মেঘালয়কে আরো জোরে জাপটে ধরে বললো, ‘এখনই? আমার লজ্জা করে।’
– ‘আহারে, বলতে লজ্জা করেনি?’
বলেই হেসে উঠলো শব্দ করে। মিশু মেঘালয়ের মুখের উপর মুখটা এনে দুহাতে ওর মাথাটা চেপে ধরলো। মুখটা একদম কাছে এগিয়ে নিয়ে এসেছে তখনই বেজে উঠলো ফোনটা।
মেঘালয় বিরক্ত হয়ে ফোনটা নিয়ে সাইলেন্ট করতে যাবে এমন সময় খেয়াল করে দেখলো বাবা ফোন করেছে। একবার মিশুর দিকে তাকিয়ে অনেকটা কৌতুহল বশত মেঘালয় ফোন রিসিভ করলো। বাবার সাথে কথা হয়না প্রায় এক সপ্তাহ। আর তাছাড়া মৌনি বিয়ের ব্যাপারে কতটুকু বলে দিয়েছে কে জানে!
মেঘালয়ের কণ্ঠ শুনেই বাবা বললেন, ‘কোথায় আছো?’
– ‘হুম আব্বু। কেমন আছো?’
বাবা অনেকটা রাগী গলায় বললেন, ‘কোথায় আছো জানতে চেয়েছি?’
– ‘কক্সবাজারে।’
– ‘ওকে। সেখানেই থাকো। আর কখনও বাসায় এসো না। ফোন করবে কি না জানিনা, তবে দয়া করে আমাকে ফোন দিও না কখনও।’
মেঘালয়কে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়েই বাবা ফোন কেটে দিলেন। কথাটা কেন বললেন আর বাবা কতটুকুই বা জেনেছেন কিছুই বুঝতে পারছে না মেঘালয়। মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো বিছানায়। কপালে সুক্ষ্ম চিন্তার ভাঁজ। দুঃসময় পিছু ছাড়তে চাইছে না কিছুতেই। আগামীতে কি হবে ভেবেই শিউরে উঠলো মিশু!
চলবে..