‘সত্য পিঞ্জর’
পর্ব ১৮.
তাবিনা মাহনূর
__________
নাজিফা বাইরের রাস্তার দিকে চেয়ে আছেন একমনে। এই তিনদিন ধরে ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত তিনি বাড়ির বাইরে তাকিয়ে থাকেন। যখনই সময় পান, তখনই বারান্দায় ছুটে এসে দেখেন, ছেলেটা ফিরছে কিনা। বাড়ির বাইরে গাড়ির আওয়াজ, বাইক আসার শব্দ, কেউ মা বলে উঁচু কণ্ঠে ডেকে উঠলে- অবচেতন মনে নাজিফা ছুটে আসেন বারান্দায়। যখন লুকমানের ডাক পড়ে তখন তার হুঁশ ফিরে, ছেলেটা নিখোঁজ।
এখনো দাঁড়িয়ে আছেন বারান্দার প্রাচীর ধরে। সকালের নাস্তার সময় হয়ে গিয়েছে। ফাতিহা গর্ভবতী হওয়া সত্ত্বেও গত দুদিন ধরে সামলে যাচ্ছে। আজও ভোরে উঠে সালাত পড়েই কাজে নেমেছে। রিশতা অবশ্য একটু করে সাহায্য করে তাকে। আনিকা পারে না সতর্কতার কারণে। জামিল এসেছে কাল। যতদিন না আরশের খোঁজ পাওয়া যায় ততদিন সে থাকবে। স্ত্রীর যত্নে সবসময় খেয়াল রাখে সে। তাই স্ত্রীকে যেকোনো কাজের চাপ কিংবা মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে বলেছে।
– মা!
চমকে পেছনে ফিরে তাকালেন নাজিফা। রিশতা শুকনো মুখে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটাকে দেখে কেউ বলবে না তার স্বামীর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। স্বাভাবিক চলনভঙ্গি, কিন্তু অস্বাভাবিক ঠান্ডা আচরণ করছে সে। ঠিক যন্ত্রের মতো। কোনো খারাপ কথা শুনলেই দৌড়ে ঘরে গিয়ে মাথা চেপে বসে থাকে রিশতা। নিজেকে শান্ত করে, বিড়বিড় করে কি যেন বলে। বাকিটা সময় সে চুপচাপ কাজ করে।
নাজিফাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে রিশতা বললো, ‘খাবেন না?’
– তুমি খেয়েছো?
– না।
নাজিফা অদ্ভুত প্রশ্ন করলেন, ‘তোমার জীবনে কেন আমার ছেলেকে জড়ালে মা? তুমি যে আবার নিঃস্ব হয়ে গেলে।’
রিশতা নির্বিকার। নাজিফা বললেন, ‘আমার ছেলেটা কেন বিয়ে করতে চাইতো না এখন বুঝি।’
– মা, এখন কোনো দ্বীনদারের জীবনই আশংকামুক্ত নয়। সবার দাড়ি রাখাটা এখন জীবন সংকটের বিষয়। তাই ইফতিখার ছাড়াও বাকি দ্বীনদার লোকগুলোর বেঁচে থাকা কঠিন। তা প্রশাসনিক কাজ হোক, কিংবা সাধারণ দিনমজুরি হোক।
রিশতার কথা শুনে নাজিফা বললেন, ‘তাহলে আমরা বেঁচে থাকবো কি করে?’
– ধৈর্য হারানো মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয় মা। তাওয়াক্কুল হারানো মুমিনের ভূষণ নয়।
অশ্রু ঝড়ালেন নাজিফা। আরশ হারানোর পর মেয়েটাকে দেখলেই তার মায়া কাজ করে। আজ মায়ার পাশাপাশি ভালোবাসা বেড়ে গেল। তিনি চোখ মুছে রিশতার হাত ধরে বললেন, ‘আজ না খেয়ে থেকো না। দুদিন ধরে শুধু পানি খেয়ে চলছো।’
– উনি যদি না খেয়ে থাকেন?
নাজিফা বললেন, ‘তুমিও না খেয়ে থাকবে? আরশ শুনলে কষ্ট পাবে। তোমাকে চলতে হবে না? লড়াই করতে হবে না? এভাবে না চলে ভেবে দেখো কি করা যায় মা।’
নাজিফা জোর করে খাইয়ে দিলেন রিশতাকে। রিশতা দুদিন পর খাবার খাওয়ায় বমি চলে এলো তার। খাওয়া শেষে ঘরে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো সে। চিন্তার রাজ্যে নাজিফার বলা কথাগুলো নিয়ে কিছুক্ষণ নগর গড়লো সে। আমান ভাই ইতিমধ্যে ধানমন্ডি থানায় জিডি করেছেন। সাংবাদিক মাধ্যমের কেউ জানে না। নাকি জেনেও প্রচার করছে না? বিচ্ছিন্ন ভাবনায় রিশতার মাথা ব্যথা করে উঠলো। আরশের সাংবাদিক বন্ধু উসমানের কথা মনে পড়লো তার। কিন্তু জানাতে ভয় করছে। যদি উল্টোটা হয়?
তখনই ম্যাসেজ এলো তার ফোনে। ধীরে ধীরে উঠে বসলো সে। টেবিলের দিকে হাত বাড়িয়ে ফোন হাতে নিয়ে দেখলো, অচেনা নম্বর থেকে ম্যাসেজ এসেছে। যেটা ওপেন করে পড়লো সে, ‘আরশকে অক্ষত দেখতে চাইলে এই ব্যাপারে কাউকে জানাবেন না। কিছুদিন পর তাকে ছেড়ে দেয়া হবে। জানালে আরশের লাশটাও ফিরে পাবেন না। প্রমাণের কাগজগুলো খুঁজে আমাদের হাতে তুলে দিন।’
ওই নম্বরে ফোন করলো রিশতা। বন্ধ বলছে। তারমানে ম্যাসেজ দিয়েই ফোন বন্ধ করে দিয়েছে লোকটা। আরশকে ধরে রাখার কারণ বুঝতে পারলো রিশতা। সে আশি ভাগ নিশ্চিত, আরশ বেঁচে আছে। আরশের মুখ থেকে স্বীকারোক্তি না নেয়া অব্দি তারা তাকে মারবে না।
রিশতার অচেতন অবস্থা নিমিষেই স্বাভাবিক হলো। উত্তেজিত হয়ে সে আমানের ঘরের দিকে এগিয়ে গেল। পরক্ষণেই ঘরে ফিরে এসে পায়চারি শুরু করলো। সে কি করবে বুঝতে পারছে না। মাথা ব্যাথাটা বাড়ছে। মাথা চেপে সে বাথরুমে গেল। ওযু করে দুই রাকআত নফল সালাত আদায় করলো।
সালাত আদায়ের পর মন শান্ত হয়েছে। নিবিষ্ট মনে সে ভাবছে, উসমানকে সব জানাবে। কিন্তু মিডিয়ায় যেন তা প্রচার না হয়, এই প্রতিশ্রুতি রাখবে। ভাবনা অনুযায়ী ফোন করলো সে।
ফোন ধরতেই ভেসে এলো উসমানের কন্ঠস্বর, ‘আসসালামু আলাইকুম ভাবি।’
আরশের নম্বর থেকে ফোন আসা সত্ত্বেও উসমান বুঝে গিয়েছে এটা আরশ নয়। ভ্রু কুঁচকে রিশতা বললো, ‘ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আপনি কীভাবে জানলেন?’
– ভাবি, সংবাদ মাধ্যমে কোনো খবরই গোপন থাকে না। আপনারা সূর্যের যেই আলো এখন দেখছেন, আমরা সেটা আট মিনিট আগেই দেখে ফেলি।
– তাহলে চুপ করে আছেন কেন?
– উপর মহলের নিষেধ। কেউ যদি ঘটনাটা ছড়ায় তাহলে চ্যানেলের মালিক সহ চৌদ্দ গুষ্টির অবস্থা টাইট করে ফেলবে। পত্রিকার ক্ষেত্রেও একই সিস্টেম।
উপহাস করে বললো রিশতা, ‘আপনিও!’
দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো উসমান, ‘আমাকে এমন মনে হলো ভাবি?’
চুপ করে আছে রিশতা। পরপুরুষের সাথে কথা বলতে খুবই অস্বস্তি হচ্ছে তার। কিন্তু প্রয়োজনেই বলতে হচ্ছে। আমান এখন অফিসে। যা করার দ্রুত করতে হবে।
– কাজের কথায় আসুন। আপনি কেন প্রচার করছেন না?
– আমার বন্ধুর জীবন জড়িত এখানে। ভাবি, সে বেঁচে আছি।
– জানি।
– কীভাবে?
রিশতা ম্যাসেজের কথা বললো। উসমান বললো, ‘সর্বনাশ! সব প্রমাণ তো…’
– চুপ! একদম প্রমাণের কথা উচ্চারণ করবেন না। আমাকে তারা নজরে রেখেছে। কল রেকর্ড এর হিস্ট্রি বের করে সব জেনে যেতে পারে।
– তাহলে এখন?
– ডুব দিন। দ্রুত!
উসমান হতভম্ব হয়ে বললো, ‘কোথায়?’
রাগ চড়ে গেল রিশতার, ‘এটাও যদি আমি বলে দিই তাহলে ওরা সব জেনে যাবে না?’
– ঠিকাছে ঠিকাছে। আমি দেখছি কি করা যায়।
– কোনোভাবেই ‘প্রমাণ’ শব্দটা কারো কাছে উচ্চারণ করবেন না। আমার মনে হচ্ছে, প্রমাণ পেলেও ইফতিখারকে ওরা ছাড়বে না। ওদের ক্ষোভ আমি এতদিনে চিনে গিয়েছি।
– আপনি যা ভাবছেন তাই ভাবি।
– আপনিও যেহেতু বুঝতে পারছেন, তাই এখন শত্রুর কাজ অনুযায়ী পরিকল্পনা আগান।
– জি।
– আমি আর ফোন করবো না আপনাকে।
– করলেও পাবেন না।
কথা শেষ। রিশতা স্বস্তির শ্বাস ফেললো। এখন সে নিশ্চিত হতে পারছে আরশ বেঁচে আছে। তবে উসমানের প্রাণ সংকটে। কেননা, প্রমাণ এখন উসমানের হাতে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সে বাংলাদেশের বাইরে চলে যাবে খুব শীঘ্রই। তা নাহলে একবার যদি শত্রু পক্ষের কানে সব পৌঁছে যায়, তবে আরশ আর তাকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।
রিশতা এখন অন্য চিন্তায়। কার সাহায্য চাইবে সে? কাকে সে বিশ্বাস করবে?
_____
– মুখ হা কর বেয়াদব!
তারিকের ধমক কমে না। কথার শুরু ও শেষ হয় অশ্লীল গালি দিয়ে। আরশ অবাক হয় এমন মুনাফিকদের দেখে। তারিক মাদ্রাসা থেকে পাশ করেছে। আরশের ধারণা, ছেলেটা ক্বুরআনের অর্থ পড়েনি কখনো অথবা গভীরভাবে উপলব্ধি করেনি। অর্থ ও তাফসির পড়ার পরও কেউ কীভাবে অন্যায়ে জড়াতে পারে?
লিটন নামের ছেলেটা ভাত হাতে নিয়ে বসে আছে। চামচে করে আরশকে একবার করে খাইয়ে দিচ্ছে সে। তারিক ঘর থেকে বের হলো। ঘরে শুধু লিটন আর আরশ। পনেরো ষোল বছর বয়সী ছেলেটার চোখ দেখে মায়া কাজ করে আরশের। সে প্রশ্ন করলো, ‘নোংরা কাজে নেমেছো কেন ভাই?’
– কি করমু কন? আমি বাসার চাকর। আমারে যা কয়, তাই করতেই বাধ্য আমি।
– কার চাকর?
– ঐযে, ওইদিন দেখলেন না? কঠিন নাম ব্যাটার।
– জাহাঙ্গীর?
– হ হ। কি কঠিন নাম বাপরে! আমি জাইঙ্গা স্যার ডাকি। আমারে আবার এইজন্য মারে…
কষ্টের মাঝেও হেসে ফেলল আরশ। সে বলে উঠলো, ‘এখন কি বাসায় যাবে?’
– হ। আপনার ভাত খাওয়া হইলে বাসায় যামু।
আরশ মুচকি হেসে বললো, ‘তোমার জাইঙ্গা স্যারকে বলে দিও, আমি মরে গেলেও স্বীকার করবো না!’
_____
চার দিন পার হয়ে গেল, আরশের আর কোনো খোঁজ পায়নি রিশতা। উসমান এখনো দেশ ছাড়তে পারেনি। দেশ ছাড়লেই সে আরশকে মুক্ত করার ব্যবস্থা করবে। তাই হাত পা গুটিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে রিশতাকে।
মাঝে মাঝে তার মনে হয়, সব বলে দিয়ে আরশকে মুক্ত করলেই শান্তি। এতে উসমানের জীবন গেলে যাবে! কিন্তু এমন বাজে চিন্তায় সে নিজেকে ধমক দেয়। এমন কাজ করলে উসমান ধরা পড়বে, কিন্তু আরশ ছাড়া পাবে না। এরকম অবস্থায় সে আরশের সাথে নিজের মনের কথাগুলো প্রকাশ করে একটা সিদ্ধান্তে আসতো। কিন্তু এখন তো আরশকেই খুঁজতে হবে, একাকী।
আরশেরও দিন কাটে নির্ঘুম। আঘাত পেতে পেতে এখন সে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে। শরীরের কোনো অংশ বাদ নেই যেখানে আঘাতের চিহ্ন নেই। পিঠে চাবুক মেরে ক্ষত করে তাতে মরিচ গুঁড়া মাখিয়েছিল তারিক। তবু সে কিছুই স্বীকার করেনি। দাঁতে দাঁত চেপে সব যন্ত্রনা সহ্য করে গিয়েছে। একদিন পানির বালতিতে পা ডুবিয়ে তাতে ইলেকট্রিক শক দিয়েছিল নরকের কীটগুলো। অসহনীয় ব্যথায় কাতরে চিৎকার করেছে সে। তবু মুখ খুলেনি।
আজ নাকি আফজাল নিজে আসবে। তারিক আর অনিরুদ্ধ অপেক্ষায় আছে। তারিক বারবার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখছে সময় হলো কিনা। আসার শব্দ পেলেই পা চাটা শুরু করবে। আরশ নিস্তেজ হয়ে শুয়ে আছে। এতটা আঘাত সে পেয়েছে যে হাত পা খোলা অবস্থায় থেকেও তার লড়াই করার শক্তি নেই।
আফজাল এলেন। খড়ম পরে হাঁটলে যেমন শব্দ হয়, তেমন খট খট শব্দে হেঁটে ঘরের সামনে দাঁড়ালেন। তারিক তার পিছে দাঁড়িয়ে আছে। পেছনে আরো দুজন যাদেরকে আরশ চিনে না। আফজাল অনিরুদ্ধকে বললেন, ‘মেরে এই হাল করেছো কেন? এখন যদি কথা না বলতে পারে?’
অনিরুদ্ধ বিরক্ত হয়ে বললো, ‘আর বলবেন না স্যার! এই বেয়াদবের মুখ থেকে কিচ্ছু বের করা যাচ্ছে না। তাই রাগের মাথায় আমি আর তারিক অনেক বেশি মেরেছি। বেয়াদবের মুখ তবু খুলে না।’
আফজাল মিথ্যে অনুভূতি দেখালেন, ‘আহারে! এভাবে মারে কেউ নির্মম হয়ে? কি বাবা? তুমি দাঁড়াতে পারবে তো সামনের জীবনে?’
আরশ চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। বসার শক্তি নেই, দাঁড়ানোর কথা ভাবাই যায় না।
আফজাল এগিয়ে গিয়ে আরশের সামনে ঝুঁকে বললেন, ‘শেষ টোপ ফেলবো নাকি?’
আরশ নিশ্চুপ। আফজাল বললেন, ‘ঘরে সুন্দরী পাকি-স্তানি স্ত্রী। তারিকের খুব পছন্দ হয়েছে। তুলে নিয়ে আসতে এতটুকু সময় লাগবে না?’
আরশের মুখে গালি চলে এলো। তবু সে নিজেকে সংবরণ করে ক্লান্ত স্বরে বললো, ‘এসব করে পার পাবি না।’
– তুই পাবি না, তুই নিজের কথা চিন্তা কর।
আফজাল উঠে দাঁড়িয়ে হুঙ্কার দিলেন, ‘তারিক! এখনই এই বদ সিআইডির বউকে ম্যাসেজ কর। ওর বউ সব জানে। যদি প্রমাণ কোথায় আছে তা না বলে, তাহলে ওকে তুলে আনবি। কিন্তু এই কথা ওকে ম্যাসেজ করিস না। বলবি, না বললে ওর জামাইয়ের গলা ফুঁড়ে দিব একদম!’
তারিক কথা অনুযায়ী কাজ করলো। ম্যাসেজে আরশের জীবনের হুমকি লিখে রিশতাকে পাঠিয়ে দিলো। আফজাল বাঁকা হেসে বললেন, ‘তোর বউয়ের যা ছিরি করবো না! তুই ছুঁতেও ঘৃণা করবি।’
আরশের চোখের কোণে জল জমেছে। গড়াতে দিচ্ছে না নিজের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়ে যাবে বলে। চোখ বুজে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করে সে বললো, ‘কোনো কিছুতেই কোনো লাভ হবে না। আমি কিছুই বলবো না।’
_____
রিশতা চুপ করে বসে আছে। একটু আগে মর্জিনা খালা ফোন করেছিলেন। খোঁজ খবর নিলেন, কান্নাকাটি করে দুআ করলেন। তিনি সেখানে খুব ভালো আছেন। এই কৃতজ্ঞতায় যতবারই ফোন করেন, ততবারই কেঁদে কেঁদে দুআ করেন। স্বল্প কথায় আলাপ সারলো রিশতা। আরশকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, এই সম্পর্কে কিছুই বলেনি সে। মর্জিনা খালার স্বভাব তার জানা আছে। কোনো কথাই তিনি চেপে রাখতে পারেন না।
ম্যাসেজের শব্দে দ্রুত ফোন হাতে নিলো রিশতা।
‘আজকেই সব বলে দিবি। তা নাহলে তোর জামাইয়ের আঙ্গুল কেটে পার্সেল করে পাঠাবো। তবু যদি না বলিস, তাহলে মাথা কেটে পাঠাবো।’
এসব পড়ে বুক কেঁপে উঠে তার। এক মুহূর্তের জন্য তার মনে হয়েছিল, উসমানের নামটা বলে দিলে তার স্বামী মুক্তি পাবে। ‘উসমান’ শব্দটা লিখে আবার মুছে দিলো সে। হাত কাঁপার কারণে ফোন বিছানায় পরে গেল। ভয়ে তার পুরো শরীর কাঁপছে। মাথা চেপে ধরে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করলো সে। এমন ভয়াবহ ম্যাসেজ পড়ে তার ছুটে চলে যেতে ইচ্ছে করছে আরশের কাছে।
নিজেকে পজিটিভ বিষয়গুলো বুঝিয়ে ফোন হাতে নিলো সে। অচেনা নম্বরে পাল্টা ম্যাসেজ লিখলো, ‘আমার স্বামীর সাথে একটু কথা বলতে দিন।’
__________
(চলবে ইন শা আল্লাহ)