শেষটা_সুন্দর পর্ব___২২
#অজান্তা_অহি (ছদ্মনাম)
পরীক্ষা শেষ করে তরী যখন হল থেকে বের হলো ততক্ষণে বৃষ্টি থেমে গেছে। আকাশ মেঘমুক্ত পরিষ্কার। তবে রাস্তাঘাটে প্রচুর কাঁদা। জায়গায় জায়গায় পানি জমে আছে। সে কাঁদা মাড়িয়ে ভীড়ের মধ্যে এগিয়ে চলল। এত মানুষের মধ্যে নির্ঝরকে খুঁজে বের করা কিছুটা কঠিন মনে হচ্ছে তার কাছে।
গেটের কাছে পৌঁছানোর আগেই তার নাম ধরে কেউ ডেকে উঠলো। পরপর কয়েকবার ডাকলো। মেয়েলি সুর। তরী দাঁড়িয়ে পড়লো। পেছন ঘুরে চারপাশে খুঁজলো। হঠাৎ একটা মেয়েকে দেখে তার মুখে হাসি ফুটে উঠলো। প্রায় দৌঁড়ে গিয়ে মেয়েটার হাত চেপে ধরলো সে। উচ্ছ্বাস নিয়ে প্রশ্ন করলো,
‘মৌ তুই? কেমন আছিস রে? কতদিন পর দেখলাম তোকে।’
মৌ নামের মেয়েটাকেও বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা গেল। মৌ তার কলেজের সবচেয়ে ভালো বন্ধু। তবে তাদের গ্রুপ আলাদা। সে কমার্সে আর মৌ আর্টসে। তাদের বন্ধুত্ব অদ্ভুত ভাবে সৃষ্টি হয়েছিল। ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে তারা যোগাযোগ করতো। একে অপরকে না বলা কথার ঝুলি খুলে বসতো। আজও মৌ হাসিমুখে বলল,
‘আমি ভালো। তোর কথা বল এবার তরী। শুনলাম বিয়ে করে শহরে পাড়ি জমিয়েছিস?’
তরী লজ্জামিশ্রিত মুখে মাথা নাড়লো। বলল,
‘আলহামদুলিল্লাহ! আমি অনেক ভালো আছি। বিয়েটা হুট করে হয়ে গেছে। কাউকে জানানোর সময় পাইনি রে।’
‘আজকের পরীক্ষা কেমন হলো সেটা বল।’
‘বুঝতে পারছি না। ভালোই হয়েছে বোধ হয়। তোর?’
‘আমারও মোটামুটি হয়েছে।’
মৌ থেমে গেল। কিন্তু তার মুখ দেখে মনে হচ্ছে কিছু জিজ্ঞেস করতে চায়। তরী সময় দিল তাকে। আশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকাতে মৌ আড়ষ্ট নিয়ে বলল,
‘আশিক ভাইয়ার সাথে সেদিন কথা হলো আমার।’
তরী তেমন আগ্রহ পেল না। ছোট্ট করে বলল,
‘অহ!’
‘তোর কথা জিগ্যেস করলো।’
‘তাই নাকি!’
‘হুম। আমাকে জিগ্যেস করলো যে তোর বর্তমানে কি অবস্থা? তুই ঢাকার কোথায় থাকিস ইত্যাদি। আমি বললাম যোগাযোগ হয় না। তবে পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগে তোর বাবার ফোনে ফোন দিয়েছিলাম। রিসিভ করেনি।’
‘আশিক ফাসিকের কথা বাদ দে। এরপর তুই কোথায় ভর্তি হবি সেটা বল।’
‘কোথায় আর ভর্তি হবো! সিলেট ছেড়ে কোথাও যা-ওয়া হবে না। কোনো একটা সাবজেক্ট নিয়ে এখানেই অনার্সে ভর্তি হয়ে যাব। তুই?’
‘জানি না! উনি যেখানে ভর্তি করে।’
তরীর মুখে লজ্জার ছাপ পড়লো। মৌ কিছুক্ষণ তার মুখের দিকে চেয়ে রইলো। হঠাৎ কৌতূহল নিয়ে প্রশ্ন করলো,
‘তরী তুই আর আশিক ভাইয়া রিলেশনে ছিলি না? তাহলে বিয়েটা কেন অন্য একজনকে করলি?’
তরী আগে থেকে অনুমান করেছিল মৌ তার পুরনো ভুল ক্ষতটা টেনে আনবে। সে মৃদু হেসে বলল,
‘রিলেশনের সময় একটা জুনিয়র মেয়ে আমায় লুকিয়ে আশিকের ব্যাপারে অনেককিছু বলেছিল। আশিক মেয়েবাজ, চিটার, চরিত্রহীন একটা ছেলে। কিন্তু তখন এতটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম যে এসব কিছুই মাথায় ঢুকতো না। প্রেম বিষয়ে অনেক কৌতূহল ছিল, তার থেকে আশিকের সাথে কথা বলা। ভাগ্যিস শেষ মুহুর্তে আমার চোখের কালো পট্টি সরে গেছে। প্রেম আর সত্যিকার ভালোবাসার তফাৎ বুঝতে শিখেছি। অনেক কাছে থেকে একটা সুন্দর মনের পরিচয় পেয়েছি। মৌ জানিস, যে মানুষটার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে সে ফুলের মতো পবিত্র আর সুন্দর। আমার কি পরিমাণ খেয়াল রাখে তুই জাস্ট ধারণা করতে পারবি না।’
‘দারুণ! নাম কি ভাইয়ার?’
‘নির্ঝর! নির্ঝর শাহরিয়ার।’
তরীর মুখে আবার লজ্জার ছাপ স্পষ্ট হলো। মৌ হাত ঝাঁকিয়ে বলল,
‘বাহ! অনেক সুখী হ! কিছুদিন আগে কলেজ গিয়েছিলাম একটা প্রয়োজনে। তখন তোর ফুপির সাথে দেখা হয়েছিল। উনিই বললেন তোর বিয়ের কথা। আচ্ছা ভালো থাক, সাবধানে থাকিস।’
‘তুইও!’
মৌ হাত নেড়ে গেটের দিকে এগিয়ে গেল। তরী কিছুক্ষণ ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো। এতক্ষণে ভীড় মোটামুটি কমে গেছে। সে মুচকি হেসে আবার হাঁটা শুরু করলো।
গেট থেকে কিছুদূর এসে তরী দাঁড়িয়ে পড়লো। নির্ঝরের গাড়ি সকালে যেখানে ছিল সেখানটায় এখন অন্য গাড়ি। আশপাশে তাকিয়ে পরিচিত গাড়িটা খুঁজলো। কিন্তু নির্ঝরের কালো রঙের গাড়িটা নজরে পড়লো না। এমনকি একটা কালো গাড়িও নেই আশপাশে। তরী চিন্তিত মুখে নির্ঝরের মুখটা খুঁজে চলল।
আবার হাঁটা শুরু করলো সে। কয়েক পা এগোতে ভীড়ের মাঝে ডান হাতে টান পড়লো। তরী অন্যমনস্ক ছিল বলে ভীষণ ভয় পেয়ে গেল। চমকে বলে উঠলো,
‘কে?’
নির্ঝর পেছন থেকে তরীর সামনে এলো। তরীর ভয়ার্ত মুখের দিকে চেয়ে ফিক করে হেসে দিল। ভ্রু নাচিয়ে বলল,
‘আমি ছাড়া তোমার হাত ধরার সাহস কেউ রাখে নাকি?’
‘ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন আপনি। আমি ভেবেছিলাম…..’
তরী তার বাক্য সম্পূর্ণ করলো না। তাতে নির্ঝরের বুঝতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হলো না। তরীর অবচেতন মন যে আশিকের ভয়ে তটস্থ হয়ে আছে তা সে স্পষ্ট জানে। সেজন্যই সে অতিরিক্ত সতর্ক হয়ে রয়েছে। আশিক ছেলেটা অনেক ধূর্ত। দূর থেকে তাকে দেখেছে সে। সামনা-সামনি কখনো আলাপ হয়নি। কিন্তু আশিকের অনৈতিক সব কর্মকান্ড সম্পর্কে সে অবগত।
তরীর মন ঘুরানোর জন্য সে বলল,
‘নৌকারানির পরীক্ষা কেমন হলো? পাস মার্ক উঠবে তো? আশা রাখতে পারি?’
নির্ঝরের কথা বলার ভঙ্গিতে তরী শব্দ করে হেসে ফেলল। চারপাশে মানুষ দেখে হঠাৎ করে সচকিত হয়ে গেল। চোখ দুটো ছোট ছোট করে বলল,
‘আপনি এতক্ষণ কোথায় ছিলেন? সেই কখন থেকে খুঁজছি।’
‘মেয়ে দেখছিলাম। একেকটা যেন হুরপরী।’
তরীর হাস্যোজ্জ্বল মুখটা থমথমে হয়ে গেল। এক ঝামটা দিয়ে নির্ঝরের হাতটা ছেড়ে দিল। এগিয়ে চলল সামনের দিকে। তরীর হঠাৎ পরিবর্তনে নির্ঝর বোকা বনে গেল। পা চালিয়ে তরীর পেছন পেছন যেতে যেতে বলল,
‘ নৌকা হঠাৎ বেসামাল হয়ে গেল কেন? যখন তখন ডুবে যাবে যে!’
‘আমার পেছন পেছন আসবেন না।’
‘হাউ ফানি! আমি তো তোমার পেছন পেছন আসছি না। পাশাপাশি আসছি।’
‘আমার থেকে দূরে থাকুন।’
‘কেন? তুমি এটম বোম নাকি যে যখন তখন বিস্ফোরণ ঘটে যাবে?’
‘বললাম না দূরে থাকুন?’
তরীর রাগী কন্ঠের তেজ দেখে নির্ঝর নিরবে হেসে চলল। তরীর রাগান্বিত চেহারা তার বেশ ভালো লাগছে। তার কাছ ঘেঁষে হাঁটতে হাঁটতে বলল,
‘দূরে থাকুন বাক্যের অন্তর্নিহিত অর্থ হলো কাছে আসুন। আরো কাছে আসবো?’
তরী দাঁড়িয়ে পড়লো। বাম হাতের আঙুল উঁচিয়ে নির্ঝরকে কড়া কিছু কথা বলতে নিল। কিন্তু গলার কাছে এসে সব শব্দ যেন আটকে গেল। নির্ঝরের ফর্সা মুখটা রোদে লাল হয়ে গেছে। তার পরীক্ষার সময়টা বোধ হয় আশপাশে ছিল। ঘোরাঘুরি করেছে রোদে। বাড়ি যায়নি। অথচ সে বার বার বলেছিল মাঝের সময়টুকু বাড়ি গিয়ে জিরিয়ে নেয় যেন।
আস্তে আস্তে সে আঙুলটা নামিয়ে নিল। বুঝতে সক্ষম হলো যে নীল শার্ট পরিহিত রক্তিম ঠোঁটের, স্বচ্ছ চোখের এই মানুষটির প্রতি সে ভীষণ দূর্বল হয়ে পড়েছে। এতটা দূর্বল যে এই শার্টের অধিকারীকে পাশে না পেলে তার শরীর অক্সিজেন গ্রহণ করবে না। সে দম বন্ধ হয়ে মারা যাবে। তাকে বেঁচে থাকতে হলে, প্রতিটা সেকেন্ড শুধু এই মানুষটাকে প্রয়োজন। হ্যাঁ, কাছে প্রয়োজন। যতটা কাছে হলে আর হারানোর ভয় না থাকে।
গাড়ির হর্ণের শব্দে তরীর ঘোর কাটে। নির্ঝরের থেকে চোখ সরিয়ে উল্টোপথে হাঁটা ধরলো। নির্ঝর চেঁচিয়ে বলে উঠলো,
‘ওদিকে কোথায় যাচ্ছো ডিঙি? গাড়ি তো এদিকে পার্ক করে রেখেছি।’
তরী কোনো প্রতিত্তর করলো না। পেছন ঘুরে শুধু নির্ঝরকে অনুসরণ করলো। মাথা নিচু রাখলেও তার বেহায়া, অবাধ্য চোখ দুটো ফাঁকে ফাঁকে সুদর্শন নীল মানবকে দেখে চলেছে।
গাড়ির কাছে পৌঁছাতে নির্ঝর দরজা খুলে দিল। তরী ভেতরে ঢুকতে দরজা বন্ধ করলো। বুকপকেটের সানগ্লাসে একবার হাত বুলিয়ে সে চারপাশে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে নজর বুলাল। অসংলগ্ন কিছু চোখে পড়লো না। কিছুক্ষণ পর ঘুরে ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসলো। নিজের সিটবেল্ট লাগিয়ে তরীর দিকে তাকালো। তরীর সিটবেল্ট বাঁধা শেষ।
গাড়ি স্টার্ট দিতে গিয়ে থেমে গেল নির্ঝর। সরাসরি তরীর দিকে তাকালো। তরীর মনের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করছে সে। অন্য মেয়েদের দিকে তাকানোর কথা শুনার পর থেকে কেমন আগ্নেয়গিরির লাভার মতো রূপ ধারণ করেছে। এখন শুধু ফেটে পড়ার অপেক্ষা। সে মুখটা নিচু করে বলল,
‘বুঝলে তরী, মেয়েদের এই এক সমস্যা। নিজেও পাত্তা দিবে না, আবার বর যেইমাত্র অন্য মেয়েদের দিকে একটু নজর দিবে ওমনি তারা খন্ডযুদ্ধের রূপ ধারণ করবে! তাদের এই অদ্ভুত বিহেভিয়ারের পেছনের রহস্য আমার বড্ড জানতে ইচ্ছে করে। তুমি জানো নাকি?”
‘গাড়ি স্টার্ট দিন।’
‘আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দাও তো।’
‘গাড়ি ছাড়বেন নাকি নেমে যাব?’
তরী চিবিয়ে চিবিয়ে বলল। নির্ঝর তার কন্ঠ শুনে স্মিত হাসলো। আস্তে করে নিজের সিটবেল্ট খুলে ফেলল। সাবধানে এগিয়ে গিয়ে মুখটা তরীর কানের কাছে নিল। ফিসফিস করে বলল,
‘ডিঙিরানি পরীক্ষা কেমন হয়েছে?’
তরী কেমন কেঁপে উঠলো। মাথাটা একটু ডানদিকে সরিয়ে বলল,
‘ভালো হয়েছে। দূরে যান!’
নির্ঝর দূরে গেল না। তরীর দিকে আরো একটু এগিয়ে বলল,
‘কতটুকু ভালো? আগে পড়ে কোনো শব্দ নেই?’
‘অনেক ভালো হয়েছে! খুশি?’
নির্ঝর মুচকি হেসে সরে এলো। গাড়ির পেছন থেকে এক ব্যাগ শুকনো খাবার আর পানির বোতল এনে তরীর পাশে রাখলো। বলল,
‘এগুলো খেতে থাকো। ক্ষুধা লাগেনি?’
‘কিছু খাব না।’
নির্ঝর হঠাৎ উঁচু স্বরে বলল,
‘তরী, তোমার পাশ দিয়ে দেখো কি সুন্দর একটা মেয়ে যায়। এক্কেরে পরীর বাচ্চা।’
তরী চিন্তিত মুখে জানালার কাচ দিয়ে বাইরে তাকাল। সামনে যতদূর চোখ যায়, পরীর বাচ্চার মতো কোনো মেয়ে চোখে পড়লো না। মূলত কোনো মানুষ মেয়েও নেই। পাশ থেকে নির্ঝরের হাসির শব্দ কানে আসতে তার ভ্রু কুঁচকে গেল। অবশেষে বুঝতে পারলো, তাকে জ্বালানোর জন্য নির্ঝর এতক্ষণ মিথ্যে বলেছে। তার রাগ উঠে গেল। নির্ঝরের দিকে এক পলক চেয়ে আচমকা তার ডান হাত টেনে নিল। মুখের কাছে নিয়ে কব্জির একটু উপরে বসিয়ে দিল এক কামড়।
নির্ঝর ভূত দেখার মতো চমকে উঠলো। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ব্যথায় চাপা আর্তনাদ করে উঠলো। তরী হাত ছেড়ে দিয়ে পানির বোতল হাতে নিল। ছিপি খুলে কয়েক ঢোক পানি খেয়ে বলল,
‘আমার দাদাভাই ছোটবেলায় বলতো। যারা মিথ্যা বলে তাদের কামড়ে দিতে হয়।’
নির্ঝর একবার রক্তচক্ষু নিয়ে তরীর দিকে তাকালো। বোতল কেড়ে নিয়ে হাতের কামড়ের জায়গা পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিল। ব্যঙ্গ সুরে বলল,
‘ভাগ্যিস তুমি পরীক্ষার্থী। না হলে তোমার যে কি অবস্থা করতাম।’
তরী নির্ঝরের কথা কানে তুলল না। অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে কেকের প্যাকেট ছিঁড়ে মুখে পুড়লো। তরীকে সহজ ভঙ্গিতে খেতে দেখে নির্ঝরের ঠোঁটের কোণে পুনরায় হাসি ফুটে উঠলো। হাতের লাল হয়ে যাওয়া জায়গাটা কনুইয়ে ভাঁজ করে রাখা হাতা নামিয়ে ঢেকে ফেলল। সিটবেল্ট লাগিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিল।
__________
রাতের বেলা বিছানায় শুয়ে আছে নির্ঝর। তার চোখের সামনে ডান হাত মেলে রাখা। দৃষ্টি লাল ছোপ হয়ে যাওয়া জায়গাতে আটকে আছে। তরীর নিজ থেকে দেওয়া প্রথম স্পর্শ। সে মুচকি হেসে জায়গাটাতে চুমু খেল।দরজায় মৃদু শব্দ হতে সে ভয়ানক চমকে গেল। একটানে ফতুয়ার লম্বা হাতা দিয়ে হাত ঢেকে ফেলল। ঘাড় উঁচু করে দেখলো অন্য কেউ নয়, তরী। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল সে।
তরীর কাল পরীক্ষা নেই। পরশুদিন পরীক্ষা। সে এক পলক নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে টেবিলের কাছে এগিয়ে গেল। প্রয়োজনীয় বই খাতা গুছাতে লাগলো। নির্ঝর তাকে দীর্ঘক্ষণ পরখ করে বলল,
‘হাউ ফানি! তুমি কি আজকেও অন্য রুমে ঘুমানোর প্লান করছো?’
‘হুঁ!’
‘খবরদার! কেলেঙ্কারি ঘটিয়ে দিবো কিন্তু। সব ভেঙে চূড়ে তছনছ করে দিবো।’
নির্ঝরের উত্তেজিত কন্ঠ শুনে তরী চমকে তার দিকে তাকাল। কেমন কঠোর দৃষ্টিতে নির্ঝর তাকিয়ে আছে। অবাক হয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো সে। তারপর দ্রুত চোখ নামিয়ে বই খাতা হাতে নির্ঝরের পাশে বিছানায় বসে পড়লো। নির্ঝর এতক্ষণে দম ফেলার প্রয়োজনবোধ করলো। লম্বা করে শ্বাস নিল। তরীর হাত থেকে একটা বই নিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলল,
‘ভেরি গুড! বিকেলে কতটুকু পড়া শেষ করেছ?’
(চলবে……)