শেষটা_সুন্দর পর্ব____৪০ (অন্তিম অধ্যায়-১ম খন্ড)
#অজান্তা_অহি (ছদ্মনাম)
তরী প্রতিক্রিয়া করার আগেই তাকে পাঁজাকোল করে রুমে ঢুকলো নির্ঝর। রুমের মাঝামাঝি এনে দাঁড় করাল। তরী ছুটে পালানোর জন্য ছটফট করছে। নির্ঝর তার কোমড় চেপে ধরে গতিরোধ করলো। বাহু বন্ধনীর মধ্যে কিছুক্ষণ নড়াচড়া করে তরী ক্লান্ত হয়ে গেল। নির্ঝরের শক্তির কাছে পরাজয় স্বীকার করে শান্ত হয়ে এলো। তবুও তার চোখ-মুখ থেকে ছটফটানি ভাব দূর হলো না। চেহারা থেকে রক্তিম আভা বিচ্ছুরিত হচ্ছে। দৃষ্টি এলোমেলো ভাবে এপাশ ওপাশ ঘুরপাক খাচ্ছে। নির্ঝর ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ তরীর মুখের দিকে চেয়ে রইলো। তারপর হাতের বাঁধন আর একটু শক্ত করে বলল,
‘সমস্যা কি?’
তরী হাঁসফাঁস করতে লাগলো। সত্যি তো। সমস্যা কি তার? নির্ঝরের থেকে পালাই পালাই করছে কেন? কিন্তু নির্ঝরের সামনে পড়ার থেকে তার এই মুহূর্তে ছাদ থেকে লাফ দেওয়া সহজ মনে হচ্ছে। ছি! নির্ঝরের চোখে চোখ রাখবে কি করে? অতিরিক্ত লজ্জায় হার্ট অ্যাটাকের মতো অ্যাটাক করে মরে যায় না কেন মানুষ? তাহলে এতক্ষণে সে দিব্যি মরে যেতো। নির্ঝরের মুখোমুখি হতে হতো না।
সে অস্থির হয়ে দাঁত দিয়ে নখ কামড়ানো শুরু করলো। তরীর অবস্থা দেখে ভেতরে ভেতরে নির্ঝর হাসিতে ফেটে পড়ছে। তবুও মুখে গাম্ভীর্য ধরে রয়েছে। আজব তো! মেয়েটা এত লজ্জা কেন পাচ্ছে? তারা তো স্বামী-স্ত্রী! তাও আবার দুদিন ধরে নয়! কতগুলো মাস কেটে গেছে। সে কপাল কুঁচকে ধমকের সুরে বলল,
‘সমস্যা কি তোমার মেয়ে? ইগনোর কেন করছো?’
তরীর হাত পা কাঁপছে। বুকের ভেতর ভূমিকম্প হচ্ছে। ইশ! কি দম বন্ধ করা অনুভূতি! দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না সে। শরীরের ভর ছেড়ে দিতে নির্ঝর তাকে আগলে নিল। এক হাতে তরীর চিবুক স্পর্শ করলো। তরীর মুখটা উঁচু করে মুচকি হেসে বলল,
‘দেখি আমার দিকে তাকাও তো ডিঙিরানী। তোমার চাঁদ মুখখানা দেখি।’
নির্ঝর তরীর মুখ উঁচু করতে তরী লজ্জায় তার বুকে মুখ গুঁজলো। নির্ঝর টেনেও তুলতে পারলো না। হাল ছেড়ে দিল সে। ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছাড়লো। হেসে বলল,
‘হাউ ফানি! তুমি এত লজ্জা পাচ্ছো কেন তরী? কি করেছি আমি? তুমিই তো ………’
তরী ধুম করে নির্ঝরের বুকে কিল বসিয়ে দিল। নির্ঝর অস্ফুট শব্দ করতে তরী ভ্রু কুঁচকে নির্ঝরের মুখের দিকে তাকালো। রাগী কন্ঠে বলল,
‘মজা করছেন কেন আমাকে নিয়ে?’
‘একদমই মজা করছি না!’
‘তাহলে দাঁত কেলিয়ে হাসাহাসির মানে কি?’
‘কোনো মানে নেই। কিন্তু তোমার লজ্জা পাওয়া দেখে হাসি থামাতে পারছি না। সিরিয়াসলি? এভাবে কেউ লজ্জা পায়?’
তরী মুখ ফুলিয়ে তাকাতে নির্ঝর ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ হয়ে গেল। বলল,
‘আচ্ছা, স্যরি বউ। আর হাসবো না! তুমি ফাইনালি আই কনট্যাক্ট করেছ এতেই খুশি!’
তরী আবার লজ্জায় মুখ নিচু করলো। ঠোঁট টিপে হাসলো সে। হুট করে নির্ঝরকে ধাক্কা দিয়ে দৌঁড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল। ভেতর থেকে ওয়াশরুমের ছিটকিনি লাগাতে নির্ঝর শব্দ করে হেসে ফেলল। হাসতে হাসতে মাথার ঘন চুলে একবার আঙুল চালাল সে। সরে গিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়ালো। আয়নায় বিভিন্ন এঙ্গেল থেকে নিজেকে কিছুক্ষণ দেখলো। আয়নায় সৃষ্ট প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি ঝলমলে হয়ে এলো তার। এত সুখ তার জীবনে কেমন বিশ্বাস হতে চায় না। মাঝে মধ্যে মনে হয়, সে বুঝি দীর্ঘ মেয়াদি কোনো স্বপ্ন দেখছে। যখন বুঝতে পারে সে স্বপ্ন দেখছে না, তার বাস্তবতাই স্বপ্নের মতো অনিন্দ্য সুন্দর তখন পরম করুণাময়ের প্রতি কৃতজ্ঞতায় মন ভরে উঠে।
কিছুক্ষণ পর ওয়াশরুমের দিকে তাকালো সে। তরী এখনো বের হচ্ছে না দেখে এগিয়ে গেল। দরজায় মৃদু টোকা দিয়ে বলল,
‘নৌকারানী! দরজা খুলো।’
ভেতর থেকে তরী অস্ফুট স্বরে উত্তর দিল,
‘আপনি বেহায়া। দরজা খুলবো না আমি।’
‘হাউ ফানি! বেহায়া হয়ে কি করেছি আমি? কে আগে শুরু করেছিল? এই রুমের প্রতিটা দেয়াল, ইট, বালি, সিমেন্ট সবাই সাক্ষী। তুমি আগে চুমু টুমু খেয়ে ….. ‘
‘চুপ!’
এবারও ধমক দিয়ে তরী থামিয়ে দিল। কয়েক সেকেন্ড পর খট করে ছিটকিনি খোলার শব্দ কানে এলো নির্ঝরের। মুচকি হাসলো সে। অপেক্ষা করলো তরীর বের হওয়ার। দীর্ঘক্ষণ পর তরী হাতের আঙুলে ওড়না পেঁচাতে পেঁচাতে দরজার সামনে এলো। মাথা নিচু করে নির্ঝরের সামনে দাঁড়িয়ে রইলো। নির্ঝর আলতো করে তাকে কাছে টেনে নিল। জড়িয়ে ধরে বলল,
‘এটা কিন্তু একদম ঠিক নয় তরী। আমার কাছে এত লজ্জা কিসের? স্বামী হচ্ছে মেয়েদের সবচেয়ে আপন। তাদের কাছে লজ্জা করে থাকতে নেই। বুঝতে পেরেছ?’
তরী লজ্জা রাঙানো মুখটা নির্ঝরের বুকে লুকালো। বাহু বন্ধনী শক্ত করে বলল,
‘হুঁ!’
__________
ফোনটা হাতে নিয়ে তরী রুমে পায়চারি করছে। তাকে অস্থির দেখাচ্ছে। হেঁটে একবার বেলকনি যাচ্ছে, তো একবার রুমে ঢুকছে। থেকে থেকে আবার ফোন চেক করছে৷ হঠাৎ পায়চারি থামিয়ে সে বিছানায় বসে পড়লো। ভীষণ অস্থির লাগছে। আজ রেজাল্ট বের হবে তার। চিন্তায় গলা শুকিয়ে আসছে। সবাই কত আশা নিয়ে বসে আছে। না জানি কি ফল করবে সে। নির্ঝরের কথা ভেবে তার মনটা আরেক ধাপ খারাপ হয়ে গেল । তার পরীক্ষার জন্য কি না করেছে মানুষটা। প্রতিদানে একটু ভালো রেজাল্ট উপহার দিতে না পারলে সে মুখ দেখবে কি করে?সে আবার উঠে দাঁড়ালো।
বেলকনির গ্রিল চেপে গেটের দিকে তাকালো। উদ্দেশ্য নির্ঝর আসছে কি না দেখা! ঘন্টা দুয়েক আগে নির্ঝর বের হয়েছে। যাওয়ার আগে তাকে বলেছে রেজাল্ট জানার সঙ্গে সঙ্গে বাসায় ফিরবে। অথবা তাকে ফোন করে জানাবে। তরী পঞ্চম বারের মতো নির্ঝরকে ফোন করলো। নির্ঝর এবারও ফোন তুলল না।
রাগে, দুঃখে তার কান্না পেয়ে গেল। নিজের রেজাল্ট নিজে দেখার চেষ্টা করবে সে সাহসটুকু তার নেই। সে পুনরায় রুমে ঢুকে হাত পা ছড়িয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো। গোল্লায় যাক রেজাল্ট। আর একটু চিন্তা করলে তার মাথা ফেটে যাবে। হাতের ফোনের দিকে আরেক নজর তাকাল সে। বারোটার বেশি বাজে। তার মানে এতক্ষণ রেজাল্ট পাবলিশ হয়ে গেছে। সে ফোনটা একেবারে বন্ধ করে চোখ বন্ধ করলো।
তরীর ঘুম ভাঙলো বিকেল বেলা। আপনা-আপনি! কারো ডাকে নয়। অভ্যাসবশত বিছানা হাতড়ালো। খালি দেখে দ্রুত চোখ খুলল। সারা রুমে নজর বুলিয়ে বুঝতে পারলো নির্ঝর এখনো ফেরেনি। দেয়ালঘড়িতে সময় দেখলো সে। বিকেল চারটা বাজে। কপাল কুঁচকে গেল তার। এখনো নির্ঝর ফেরেনি? তাকে কেউ ডেকে দেয়নি কেন? তবে কি সে ফেইল করেছে? কিন্তু ফেইল করার মতো পরীক্ষা তো দেয়নি।
তীব্র মন খারাপ নিয়ে উঠে ওয়াশরুমে ঢুকলো। হাতে মুখে পানি দিয়ে বের হলো। ড্রয়িং রুম থেকে হৈ হুল্লোড়ের আওয়াজ আসতে অবাক হলো সে। কৌতূহল দমাতে না পেরে আধ ভেজা টাওয়াল বিছানায় ছুঁড়ে মেরে সে রুম থেকে বের হলো। ড্রয়িং রুমে ঢুকতে তরী ছোটখাটো শক খেল। অবাক হয়ে চেয়ে রইলো কিয়ৎক্ষণ! চোখ ঝাপসা হয়ে এলো তার। ঠোঁটের কোণে খুশির হাসি ফুটে উঠলো। তার বাবা-মা, ভাই, ফুপি সবাই সোফায় বসে আছে। সে ধীর পায়ে এগিয়ে যেতে তাফসি এসে জড়িয়ে ধরলো। খুশি মনে বলল,
‘আপু তোমার রেজাল্ট শুনেছ? তুমি পাস করেছ। তুমি 4.91 পেয়েছ!’
তরী খুশিতে কেঁদে দিয়েছে প্রায়। রেজাল্টের খুশির চেয়ে আপাতত সে বেশি খুশি যে সবাই তাকে দেখতে এসেছে। কতগুলো দিন পর সবাইকে দেখলো। সে তাফসিকে ছাড়িয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। বলল,
‘কখন এলি রে তোরা?’
‘কিছুক্ষণ হলো। তোমায় চমকে দিবো বলে না জানিয়ে এসেছি।’
তরী এগিয়ে গিয়ে একে একে সবাইকে জড়িয়ে ধরলো। কুশলাদি জিগ্যেস করলো। কি যে খুশি লাগছে তার! সে জানে তাকে এভাবে চমকে দেওয়ার পেছনের মানুষটা আর কেউ নয়। স্বয়ং নির্ঝর! এই মানুষটা সবসময় চেষ্টা করে, কি করলে সে ভালোর থেকেও আরো ভালো থাকবে। খুশির থেকেও আরো বেশি খুশি হবে। এই মানুষটাকে পেয়ে সে পরিপূর্ণ হয়েছে। মাঝে মধ্যে এটা ভেবে বুক কেঁপে উঠে যে, মানুষটা যদি তার জীবনে না থাকতো তাহলে কি হতো তার!
মায়ের সাথে কথা বলার ফাঁকে ফাঁকে সে আড়চোখে পুরো ড্রয়িং রুমে নজর বুলাল। পরিশেষে দেখলো, ডাইনিং এ নির্ঝর তার দিকে মুখ করে আসে। কিন্তু দৃষ্টি খাবারের দিকে। গভীর মনোযোগ দিয়ে সে ভাত মেখে খাচ্ছে। তাকে এতবড় সারপ্রাইজ দিয়েও কেমন নির্বিকার রয়েছে। তরী মুচকি হাসলো। সাথে কিছুটা মনঃক্ষুণ্ন হলো এটা ভেবে যে নির্ঝর তাকে রেজাল্টের জন্য অভিনন্দন জানায়নি। সে খুশি হয়নি?
___________
রাত বারোটার দিকে তরী ফ্রি হলো। সবাই যে যার মতো শুয়ে পড়ার পর সে ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে পড়লো। নির্ঝরের সাথে এ বেলা তার কোনো কথা হয়নি। পুরোটা সময় সে মা, শ্বাশুড়ি মা আর ফুপির সাথে ছিল। নির্ঝরও তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেনি। বিকেলভর কেমন লুকিয়ে লুকিয়ে ছিল যে তার দেখা মেলেনি। ডিনারের সময় শুধু দেখেছিল। আর চোখে পড়েনি। তরী উঠে দাঁড়াতে মমতাজ বেগমকে চোখে পড়লো। এদিকেই আসছিল। সে এগিয়ে গিয়ে বলল,
‘ঘুমাওনি ফুপি? কিছু লাগবে তোমার?’
মমতাজ বেগম মৃদু হাসলেন। বললেন,
‘মাথা ভার ভার লাগছে। এক কাপ চা কর তো তরী।’
‘করছি। তুমি রুমে যাও। আমি নিয়ে আসছি।’
তরী রান্নাঘরে ঢুকলো। ডেকচিতে গরম পানি দিয়ে দুধ, চিনি বের করলো। মমতাজ বেগম পেছন থেকে তরীকে লক্ষ্য করলো। পেছন থেকে তরীকে অবিকল তার ছোট বোন মিনুর মতো লাগছে। চোখ ঝাপসা হয়ে এলো তার। কিছুক্ষণ পর নিজেকে সামলে কাছে এগিয়ে আসলো। বলল,
‘নির্ঝরের সাথে তুই ভালো আছিস তরী?’
তরী কিছুটা চমকালো ফুপিকে দেখে। পরমুহূর্তে ফুপির প্রশ্ন ভাবতে লজ্জা পেল। নির্ঝরকে পাশে পাওয়ার জন্য তার ফুপির অবদান সবচেয়ে বেশি। সে এগিয়ে এসে ফুপিকে জড়িয়ে ধরলো। লজ্জা মিশ্রিত হেসে বলল,
‘তোমার ছেলে এত বেশি ভালো কেন ফুপি? তার নিজের চেয়ে বেশি আমার খেয়াল রাখে। আমার চেয়ে আমাকে বেশি ভালোবাসে। এরকম একটা মানুষের সাথে ভালো না থেকে পারা যায়?’
‘তোকে বলেছিলাম না? নির্ঝরের মতো ভালো তোকে কেউ রাখতে পারবে না! মিলল তো?’
‘হুঁ!’
‘অথচ তুই একটা ভুল মানুষের জন্য পাগল হয়েছিলি। আশিকের পরিণতি দেখেছিস? পাপে পাপে পরিপূর্ণ হয়ে গেলে একটা সময় গিয়ে ঠিক তার বিনাশ ঘটে। কত মেয়ের জীবন নিয়ে খেলেছে! শেষ মেষ অপঘাতে নিজের জীবন হারালো।’
তরীর মুখটা ভার হয়ে গেল। আশিকের কথা মনে পড়লে তার জেরিনের মুখটা ভেসে উঠে। জেরিন তার এক ব্যাচ জুনিয়র হলেও সাত-আট মাস একসাথে ক্লাস করেছে। মেয়েটা অকালে পৃথিবী থেকে বিদায় নিল। আশিকের পরিণতিও মনে পড়লো। আশিক মারা গেছে তাও সপ্তাহ দুই হলো।৷ তার মৃত্যু টাও স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। দুই দুই বার রিমান্ডে মারতে মারতে চেহারা পাল্টে ফেলেছিল। সহ্য করতে না পেরে লাস্ট বার আদালতের শুনানির দিন পুলিশের হাত থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিল। ধরতে না পেরে পুলিশ পেছন থেকে গুলি করে। সেই গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে সেখানেই মৃত্যু হয়েছে।
তরী ফুপিকে ছেড়ে জোর করে রুমে পাঠিয়ে দিল। ডেকচিতে পরিমাণ মতো সব দিয়ে সে দুটো কাপ ধুয়ে নিল।
ফুপির রুমে এক কাপ চা দিয়ে আরেক কাপ হাতে তরী নিজের রুমের দিকে পা বাড়াল। দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে পড়লো সে। কেমন ভয় ভয় করছে। সবাইকে নিয়ে এতটা ব্যস্ত ছিল যে রুমে আসার সময় পায়নি। সন্ধ্যার দিকে শুধু একবার এসেছিল। তখন নির্ঝর রুমে ছিল না। নির্ঝর রেগে গেছে কি না কে জানে! বুকে থুথু ছিটিয়ে সে ভেড়ানো দরজা ঠেলে রুমে ঢুকলো। ভেতরে ঢুকেই চমকে গেল সে। বিস্ফারিত নয়নে চেয়ে রইলো সামনের দিকে। অন্ধকার রুমে বেলকনির পাশের দেয়ালটা মরিচ বাতিতে জ্বল জ্বল করছে। অসংখ্য বেলুন ঝুলছে চারপাশে। দেয়ালে নীল, সাদা রঙের মরিচ বাতি দিয়ে নৌকা আঁকানো। তার মাঝে লেখা, কনগ্রাচুলেশনস ডিঙিরানী!’ তার চোখ ধাঁধিয়ে গেল।
তরী সম্মোহনীর মতো ধীর পায়ে এগিয়ে গেল। দেয়াল ঘেঁষে একটা টেবিল। সম্পূর্ণ টেবিল গোলাপের পাপড়ি দিয়ে ঢাকা। তার উপর একগুচ্ছ টকটকে লাল গোলাপ। একটা লাভ শেইপের কেক! কেকের চারপাশে মোমবাতি জ্বলছে। সে অবাক হয়ে আশপাশে উঁকিঝুঁকি দিল। এসব পাগলামি করা মানুষটা কই? দরজার ছিটকিনি লাগানোর শব্দে সে ঘাড় ঘুড়িয়ে তাকাল। নির্ঝর দরজার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হাত দুটো বুকে ভাঁজ করা। দৃষ্টি তার দিকেই নিবদ্ধ। মরিচ বাতির আবছা আলোতে তরী মুগ্ধ হয়ে চেয়ে রইলো তার দেখা পৃথিবীর সবচেয়ে সুদর্শন পুরুষটির দিকে।
(চলবে)…..
কাল দুপুরে ইনশাআল্লাহ শেষ খন্ড পোস্ট করবো। মিনুর ব্যাপারটা ধোঁয়াশা থাকবে। অন্যকিছু নিয়ে কনফিউজড থাকলে কমেন্টে জানাবেন।🥀