শিশির_কণাশামসুল ইসলাম
(পর্বঃ-১০)

মুখটা নিমিষে বিবর্ণ হয়ে গেলো আমার। আম্মুর মুখের কথা শুনে আর কিছু বলার ইচ্ছে হলোনা অকপটে মেনে নেওয়া ছাড়া।
টুকটাক করে নিকট আত্মীয়দের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। নাগাত দুপুরের পুর্বেই আত্মীয়দের দ্বারা বাসা সমাগম হয়ে উঠলো। ছাদের উপরে সামিয়ানা টানিয়ে অতিথি আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হলো।
দুপুর গড়িয়ে সন্ধে হলো, মাগরিবের পরপরই ছেলোপক্ষ চলে আসলেন। যতো সময় গড়াচ্ছে ততো আমার ভিতরে ধুকধুক করছে।
এখানো পর্যন্ত কারো কাছেই শুনিনি আর ছেলে কে বা কি করেন। সবাই যারযার কাছে মহাব্যস্ত, কারন বুঝতেই পারছেন বিয়ে বলে কথা।
মণি এসে বললো-
-” আপু ছেলেপক্ষের লোকজন চলে এসেছেন, দ্রুতবেগে তুমি শুধু ওযু করে নাও ছেলে দেখবে তোমায়। কোনো প্রসাধনী মাখতে হবেনা, তুমি যেমন আছো মাসআল্লাহ অনেক ভালো আছো। কারন আল্লাহপাক প্রতিটা মানুষকে সুন্দর অবয়বে সৃষ্টি করেছেন, তাই এতসব প্রসাধনী ব্যবহারের চেয়ে ওযুর পানিতে তোমার চেহারার নুর চমকাবে।”
চুপচাপ টয়লেট থেকে ওযু করে আসলাম, মণি আমাকে একটা নতুন পোশাক পরিয়ে বড়ো একটা ওর্না জড়িয়ে দিল আমার গায়ে।
আমাকে বললো-
-” কিছুক্ষণ অপেক্ষা করো, এখুনি তোমার রাজপুত্রকে হাজির করছি।”
আমার গা হাতপা হিম হয়ে আসছে, অনেক ভয় পাচ্ছি সাথে দুশ্চিন্তায় মাথা হেঁড হয়ে যাচ্ছে। যদি গত জীবনে ঘটে যাওয়ার মতো কোনো কাহিনী হয়!
এসব ভাবতে ভাবতে সালামের ধ্বনি শুনতে পেলাম, দরজার দিকে একপলক তাকাতেই আমার মোনটা অনেক খারাপ হয়ে গেলো!
আম্মু আর মণি আমার জন্য এই কাজটা করতে পারলো!
ভাবতেই কাঁন্নাপাচ্ছে, তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে সালামের উত্তর দিলাম। নানুভাই সাথে আসছেন আর কেউ নেই, আমরা তিনজন।
নানুভাই বললেন-
-” ভাই এইডা আমার বোইন, যা দেখার যা শুনার শুনে নেউ কোনো আপত্তি নেই আমাগের।”
আমাকে জিজ্ঞেস করলো-
-” কেমন আছেন?”
-” আলহামদুলিল্লাহ।”
-” নাম কি আপনার?”
-” সামিমা আক্তার কণা।”
আমার ভিতরে কাঁপাকাঁপি শুরু হয়েছে,কেনো এতো ভয় পাচ্ছি তা নিজেও জানিনা। সেদিন এই হুজুরকে মুরগী বানিয়েছিলাম, আজ সুযোগে মনেহচ্ছে আমাকে মুরগী বানাবে।
অনেকক্ষণ চুপকরে বসে থাকলাম, কালো লোকটি জিজ্ঞেস করলেন-
-” কিছু শুনার নেই আমার সম্পর্কে?”
পাশ থেকে নানুভাই বলে উঠলেন-
-” নানা ভাই আমার বোইন খুব লাজুক হয়তো লজ্জা করছে কতা কইতে।”
-” জ্বি নানাভাই আপনার বোন কতোটা লাজুক তা আমি জানি?”
আমি ভিষন লজ্জা পেলাম নাজানি সেদিনের কথা নানুভাইকে বলে না দেন।
কালো হুজুর বলতে শুরু করলেন-
-” তাহলে আমিই বলি, আমি শিশির মাহমুদ। নিজস্ব ছোটখাটো একটা ব্যবসা আছে, যা আপনি জানেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা তেমন নেই, এবার ফাজিল শেষ বর্ষে পড়ছি।
আপনাকে দুইটা প্রশ্ন করবো, তাছাড়া আর কিছুই জানার ইচ্ছে নেই।
প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে এ বিয়েতে আপনার পরিস্কার মতামোত চাচ্ছি?”
আমার ইচ্ছে করছে মুখের ওপর না করে দিই, কিন্তু আম্মুর দিকে চেয়ে কিছুই বলতে পারছিনা।
-” আলহামদুলিল্লাহ, চুপ থাতা সম্মতির লক্ষন। আমার দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে কোরআনুল কারিমের যে কোনো একটা সুরার কয়েক আয়াত তেলায়ত করে শুনাবেন।”

খাইছে আমার! এ হুজুর বলে কি? আমি কারো সামনে ঠিকমতো কথায় বলতে পারিনা, আর তিনি তেলায়ত শুনতে চাই!
গা হাতপা কাঁপতে থাকলো, তবুও ঝুঁকি নিয়ে সুরা ফাতিহা তেলায়ত করার ইচ্ছা পোষন করলাম।
আউ’য়ুযুবিল্লাহ বলে শুরু করলাম, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, বলেই ভুলে ” মালিকি ইয়াওমিদ্দিন………
তেলায়ত করার সাথেসাথে নানুভাই সহ শিশির হোহো করে হেসে উঠলো। আমার গা হাতপা ঘেমে একাকার হয়ে যাচ্ছে।
শিশির বললেন-
-” নানুভাই, আপনার বোন প্রকাশ্যে যতো সাহসী তার থেকে প্রকৃত ততো ভীতু।”
সালাম দিয়ে বললেন- অতিশীঘ্র আমাদের আবার দেখা হবে, কথাটি বলেই বের হয়ে গেলেন।
তাঁরা বের হবার পর আম্মু আর মণি রুমে প্রবেশ করলেন। আমি তাঁদের দেখে কেঁদে ফেললাম, আম্মু বললেন-
-” মানুষকে কালো বলে ঘৃনা করতে নেই, দেখিস একদিন এই কালো ছেলেটিই তোর জীবনের আলো হয়ে থাকবে।”
আমি কোনো কথা বলছি না, আমার মটেই পছন্দ না শিশিরকে। গত দুই শিশির আমার ভিতরে ওলোটপালট করে দিয়ে গেছে, আর এখন আরেক কালো শিশিরের সাথে সারাজীবন সংসার করতে হবে!!
আম্মু বললেন-
-” ছেলেটা খুব ভালো, অনেক খোঁজখবর নিয়েছি আমি আর তোর খালামণি। তাঁরা দুইভাই, বাবা মারা গেছেন বছর চারেক মতো। বর্তমান মা তাঁদের গুরুজন, তুই তাঁদের সংসারে রাজরানীর মতো থাকতে পারবি। এমন ছেলে কয়টা হয় বল? কোনো কিছুই দাবিদাওয়া নেই তাদের, যা মোহরানা ধার্য হবে নগত বিয়ের আসরেই পরিশোধ করে দিবেন তারা।”
মণি পাশ থেকে বললো-
-” কণাপু, আমাকে ভুল বুঝোনা, দেখবা একদিন বলবে মণি তুই অনেক ভালো মানুষকে আমার জীবনে এনে দিয়েছিস।”

আমার মটেই শুনতে ইচ্ছা করছে না তাঁদের বকবকানি, আমি চুপ করে মাথা নিচু করে চোখের পানি ফেলতে থাকলাম।

★★★
খুব অনাড়ম্বরের মাধ্য দিয়ে আমার বিয়েটা অবশেষে হয়ে গেলো। তাঁরা মাত্র গুটিকয়েক জন মানুষ এসেছিলেন, আর বাকী আত্মীয়স্বজন সব আমাদের প্রায়।
শিশিরের বাসাটা কাছেই, ২০-২৫ মিনিটের পথ। এতোটুকু পথে আমাকে গাড়িতে করেই নিয়ে যান তারা।
তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে অবাক হয়, মনেহচ্ছে একটা ভুতুড়ে বাড়ি। এবাড়িতে আজ যে বিয়ে হলো তার ছিটেফোঁটা পর্যন্ত লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি না। সাথে আমার নানুভাই এসেছেন, আমি চুপচাপ শাশুড়ির সাথে বাড়িতে প্রবেশ করলাম।
শাশুড়ি মা বললেন-
-” মা আজ থেকে এটা তোমার বাড়ি, তুমি আমার মেয়ে আমি তোমার মা। একসাথে থাকলে টুকটাক মনোমালিন্য হতেই পারে তারজন্য মোন খারাপ করবেনা। বরং আমাকে ভালোবাসা দিয়ে জয় করে নিবে, তেমনটা আমিও করবো। পৃথিবীতে শিশির আর শাকিল ছাড়া আমার আর কেউ নেই। আজ থেকে তুমিও আমার সন্তান মা, সুতারাং এ মায়ের ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিয়ে নিজের মায়ের মতো গ্রহন করো আমায়।”
আমি আম্মু মণিকে ছেড়ে এসেছি অনেক ব্যাথা নিয়ে কষ্ট নিয়ে, কিন্তু আমার সব দুঃখকষ্ট মনে হচ্ছে শাশুড়ির কথায় উবে গেলো।
আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন-
-” আমাকেও তোর আম্মুর মতো আম্মু বলে ডাকিস তাহলে আমার অন্তরাত্মা পর্যন্ত ঠান্ডা হয়ে যাবে।”
আমি মনের অজান্তেই বললাম-
-” আচ্ছা আম্মু।”
আমার মুখে আম্মু ডাক শুনে শাশুড়ি মুচকি একটা হাসি দিয়ে বললেন-
-” এই তো আমার মেয়ে আমাকে আম্মু ডেকেছে তাতেই আমি মহাখুশি।”
আমার কেন জানি খুব কান্না পাচ্ছে, আমি কেঁদে দিলাম। শাশুড়ি বললেন-
-” কাণ্ড দেখো পাগল মেয়ের! কান্না করছো কেনো?”
-” আম্মু আর মণির কথা খুব মনে পড়ছে।”
-” ধুর পাগলি মেয়ে!! সকালেই তাঁরা আসবেন আমাদের বাসাই। চল অনেক রাত হলো, তোকে শিশিরের রুমে দিয়ে আসি?”
শিশিরের রুমে যাওয়ার কথা শুনে আমার গা হাতপায়ে কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে যাই। আমি খুব চুপসে গেছি, বিষয়টা শাশুড়ি খেয়াল করলেন, তিনি আমাকে বললেন-
-” মারে ভয় পাসনে, আমার ছেলেটা সোনার মানুষ। নিজের সন্তান বলে বলছি না, সংসার শুরু কর দেখবি তার কতো সহনশীলতা ধৈর্য। দোয়াকরি তোরা অনেক সুখি হবি ইনশাআল্লাহ্‌।”
রাত প্রায় একটা বাজে, আমাকে শিশিরের রুমে দিয়ে আসলেন আমার শাশুড়ি। অনেকক্ষণ বসে আছি শিশিরের আনাগোনা পাচ্ছি না। একাএকা নতুন পরিবেশে ভয় করছে, নানুভাইর সাথে গল্প করবো তা হলোনা তিনি ঘুমিয়ে পড়েছেন।

অনেকক্ষণ বসে থাকার পর বিরক্তিকর লাগছে নিজের ভিতরে, রুমের ভিতরে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছি। হঠাৎ শোকেসের ভিতরে অনেকগুলো কাছের চুরি দেখতে পেলাম, রকমারি চুরিগুলো দেখতে অনিন্দ্য সুন্দর। নিশ্চয় কোনো মেয়ের পছন্দ করা চুরি হয়তো, কিন্তু এ চুরিগুলো এখানে কেনো?
শিশিরের কি আগে কোনো বউ ছিলো নাকি? তাহলে কি শিশির বিবাহিত?
হাইরে কপাল আমার, সবাই যুক্তি করে আমাকে একটা বিবাহিত পুরুষের সাথে বিয়ে দিলো?
এমনভাবে আমাকে ঠাকাতে পারলো!!
এসব ভেবেচিন্তে আমার অনেক কান্নাপাচ্ছে, হঠাৎ সালামের শব্দে দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি শিশির।
হাতে করে এক প্লেট খাবার নিয়ে এসে আমাকে বললেন-
-” খাবারটা খেয়ে নিন, সারাদিন কিছু খাননি দেখেই বুঝা যাচ্ছে।”
আসলেই খাইনি, অনেক ঝড়ঝাপটা গেছে মাথার ওপর দিয়ে তাই আর খাওয়াদাওয়া হয়নি।
কিন্তু মোন আমার পড়ে আছে শোকেসের চুরির ভিতরে, একটা কালো মানুষ তারপরে বিবাহিত ছিলো। নাহ্!! আমি এছেলের সাথে সংসার করবো না।
আমি বললাম-
-” খাবো না, ক্ষুধা নেই।”
-” তাহলে আমারও খাওয়া হলোনা।”
-” আপনি খান?”
-” আমি বুঝতে পারছি আমাকে আপনার পছন্দ নই, আমি কালো বেটে এটাই অপছন্দ আপনার।”
আমার রাগ হয়ে গেলো, ঝনাৎ করে বললাম-
-” এতোই যখন বুঝেন তাহলে আমাকে বিয়ে করে আমার জীবনটা নষ্ট করলেন কেনো?”
লোকটি আর একটা কথাও না বলে বেলকুনিতে চলে গেলো। আরো কিছু বলতে মোন চাচ্ছে, কিন্তু সে সামনে নেই তাই বলা হলো না।
আটদশ মিনিট পর শিশির ফিরে এসে বললো-
-” দেখুন আমরা পরস্পর বৈধ স্বামী স্ত্রী, এরাতে ইসলামে কিছু নীতিমালা তৈরি করে দিয়েছে যা আমি পালন করতে চাই।”
-” রাখুন আপনার নীতিমালা, আগে বলুন আমার জীবন কেনো নষ্ট করলেন?”
অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে চেয়ে-
-” বিয়ে করা ছাড়া আর কিভাবে নষ্ট করলাম?”
-” শুধুই কি বিয়ে! আপনার আগে বউ ছিলো, সেটা গোপন রেখেই আমাকে বিয়ে করেছেন কেনো?”
বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলো বেচারা, আমি এই সুযোগে আরো কয়েকটি কটুবাক্য শুনিয়ে দিয়ে প্যানপ্যান করে কাঁদছি। শিশির মুখে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললো-
-” আচ্ছা আমার যে আগে বউ ছিলো তো আপনি কিভাবে জানলেন?”

-” শুনুন আমাকে বোকা ভাববেননা, যথেষ্ট বুদ্ধিমতী আমি।”
হাসতে হাসতে বললো-
-” তা তো জানি আপনার বুদ্ধির গভীরতা কতোটুক, তো বলুন কিভাবে বুঝলেন আমার বউ ছিলো?”
-” বউ না থাকলে এতো রকমারি কাছের চুরি থাকে কিভাবে শোকেসের ভিতরে?”

কোনো কথা না বলে হোহো করে হেসে উঠলো শিশির, তা দেখে আমার শরীরে রাগে জ্বালা পোড়া শুরু হলো।
বিষয়টা শিশির বুঝতে পেরেছে আমি ভিষন রেগে যাচ্ছি, সেটা অবলোকন করেও জোরেশোরে হাসছে।
ঝনাৎ করে বললাম-
-” এতো দাঁত বের করার কি আছে, সোজাসুজি বলুন আপনার আগে বউ ছিলোনা?”
-” সত্যিই আপনার বুদ্ধির তারীফ না করে পারছিনা! আপনার বুদ্ধির গভীরতা আটলান্টিক মহাসাগরের ন্যয়।
তবে অল্প একটু সমস্যা হয়েছে, আপনার ধারনা ঠিকআছে এটা আমার বউর চুরি। তবে সেই বউটা এখন আমার সামনেই বসে আছে।”
আমি বেকুবের মতো বললাম-
-” মানে?”
-” মানে হচ্ছে, আপনি যেদিন দোকানে আমার কাছে চুরি চাইলেন সেই কথাটি মনে ছিলো। তাই যখন আপনার খালামণি আমার কাছে বিয়ের প্রস্তাব আনেন, সেদিনই ভেবেছিলাম আপনার সাথে আমার বিয়ে হলে বাসরঘরে অনেকগুলো আমার পছন্দের চুরি উপহার দিবো আপনাকে। তাই চুরিগুলো কিনে সাজিয়ে রাখছি আপনার জন্য।”

আল্লাহ! বলে কি হুজুর?
আমি তো আজ সত্যিই বেকুপ হয়ে গেলাম। আমার মুখ লজ্জাই বিবর্ণ হয়ে গেলো। সমস্ত কথা রাগ ক্ষোভ নিমিষে ম্লান হয়ে গেলো।
মাথা আর উচু করার সাহস পেলাম না, শিশির আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে। আমার কাছে তার হাসিটা বেশ ভালো লাগছে, মনের ভিতরে শান্তি অনুভব করছি। তবুও আমার হঠাৎ কুবুদ্ধি ভর কনে মাথায়, তাই তাকে বললাম-
-” আচ্ছা বলুন তো বিয়ে মানে কি বুঝি আমরা?”
-” আপাত দৃষ্টিতে আমরা বুঝি বিয়ে অর্থ দুটি মোনের মিলন, যা সারাজীবন এক সাথে চলার দৃড় প্রত্যয় নিয়ে ভবিষ্যৎ এ এগিয়ে চলে।”
-” যদি দুটি মোনের মিলন হয় তাহলে একটা কথা কানখাড়া করে শুনে রাখুন?”
-” কি কথা বলুন?”
-” আমি পারতপক্ষে এ বিয়েতে রাজি নই, শুধুই আম্মুর মুখের দিকে চেয়ে আপনাকে বিয়ে করা। আপনাকে আমি স্বামী হিসাবে গ্রহন করতে পারছি না, আমাকে সময় দিন যদি আপনাকে মোনের কোনে জাইগা দিতে পারি তাহলে তখন স্বামী হিসাবে গ্রহন করবো। তাছাড়া এর পুর্বে আমার কাছে স্বামীর অধিকার দেখাতে আসবেন না দয়াকরে।”
শিশিরের কালো মুখে হাসির রেখা নিমিষে ম্লান হয়ে গেলো, কোনো প্রশ্ন না করে বললো-
-” আপনি যেমনটা চাইবেন তাই হবে ইনশাআল্লাহ্‌।”
কথাটি বলেই আবার বেলকুনিতে রওনা করলো, পিছন থেকে বললাম-
-” এই যে শুনুন?”
ঘাড় ফিরিয়ে-
-” জ্বি বলুন?”
-” আপনি ইসলামের প্রয়োজনীয় নিয়ম কানুন পালন করুন, কিন্তু খবরদার অন্যকোন মতলব নিয়ে কাছে ঘেঁষবার চেষ্টা করবেন না।”
-” ইনশাআল্লাহ্‌, তাই হবে।”……………(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here