গল্পঃ:-শান্তির খোঁজে
পর্ব:-০৫
Writer:-Hassab bin Ahmed.
আমি:- আমি আবার কি করলাম? বিশ্বাস করো আমি কিচ্ছু করিনি?☹️
হুমাইরা:- তো আমি এইখানে কেনো?😡
আমি:- আপনি আমার বুকের উপর শুয়ে আছেন । আমি তো আর আপনার বুকে শুই নি? আপনি উঠে গেলেই তো হয়।
হুমাইরা:- আমি উঠতে পারলে কি আর আপনার মতো মানুষের উপর শুয়ে আছি 😏। আমার কাপড় আপনি জরিয়ে নিয়েছেন। কাপড় ছেড়ে দেন ভালোই ভালোই না হলে কিন্তু খুব খারাপ হবে.😡
(ওওও এই ব্যাপার তাই তো বলি ।)
আমি:- ঠিক আছে আপনার যা ইচ্ছা তাই করেন আমি কাপড় দিবো না 😌। দেখি আপনি কি করতে পারেন? আর আমার কিন্তু ভালোই লাগছে 😌।
(কিছু সময় নিজেই সারাতে চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না কি ভাবে পারবে আমি তো একেবারে পেচিয়ে গেছি। )
হুমাইরা:- দেন না প্লিজ । এরকম করেন কেনো?☹️
আমি:- আচ্ছা ঠিক আছে দিতে পারি এক শর্তে? আমি তোমাকে যা বলবো তুমি আমাকে তাই বলবে?
হুমাইরা:- আচ্ছা ঠিক আছে বলেন.
আমি:- আই লাভ ইউ ♥️।
হুমাইরা কিছু্ই না বলে আমার বুকে ভালো করে শুয়ে পড়ল। বলি কি আর হয় কি 😕
আমি:- কি হলো বলবেন না?
হুমায়রা:- জানিনা।
(এই দিকে আবার জামায়াতের শুময় হয়ে যাচ্ছে। )
আমি:- বলবেই না?
হুমায়র:- আমার লজ্জা করেনা বুঝি? আর কিছু কিছু কথা বুঝে নিতে হয়।
আমি:- আচ্ছা ঠিক আছে বুঝেই নিলাম।
সুধু নামাজের সময় হয়ে গেছে তাই ছেড়ে দিলাম না হলে তোমার লজ্জা কে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিতাম 😡।
( এই বলে কাপড় ছাড়িয়ে দিয়ে আমি অজু করে নামাজ পড়তে গেলাম। রুমে ফিরে দেখি হুমাইরা নেই হয়তো রান্না ঘরে আছে। আজ প্রায় এক সপ্তাহ পর কলেজে যাবো তাই কিতাব গুলো দেখতে বসলাম । এমন সময় হুমাইরা রুমে ঢুকল )
হুমাইরা:- আপনি এসেছেন? আমি চা করে আনছি?
(আমি কিছু বললাম না।)
হুমায়রা:- এই আপনার চা।
(বলে যেতে আরম্ভ করলো তখনি হাত ধরে ফেলেলাম )
হুমাইরা:- ছাড়েন প্লিজ কি আরম্ভ করলেন সকাল সকাল.
আমি:- কেনো আমি কি করছি?
(হুমাইরা আম্মা বলে চিৎকার করলো ভাবলাম সত্যি সত্যি আম্মু এসেছে তাই ছেড়ে দিলাম । কিন্তু আম্মু আসে নাই । হুমাইরা তো এক দৌড়ে রুমে চলে গেছে । আমাকে এভাবে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে 😭। মানবতা আজ কোথায় 😂। কিছু সময় পর তানিশা এসে বললো)
তানিশা:- ভাইয়া মা খাবার টেবিলে যেতে বল্লো।
(তানিশা আমার ছোট বোন । আমরা দুই ভাই বোন।)
আমি:- আচ্ছা ঠিক আছে আসছি।
(যাই কিছু খেয়ে কলেজে যাই। আমি গিয়ে আব্বুর পাশে বসলাম হুমাইরা আমার একেবারে সামনে । খাওয়া শেষে আমি বললাম )
আমি:- আম্মু আজকের সবজি কিন্তু অসাধারণ হয়েছে।
তানিশা:- হবেই বৌ বলে কথা 😂।
আমি:- মানে?
আম্মু:- আজকে আমি রান্না করি নাই আমার মা রান্না করছে.
আমি:- তোমার মা মানে?
তানিশা:- তোর বউ এর কথা বলছে বুঝেও না বুঝার ভাউ ধরিস তাই না?
আমি:- দেখেছো আম্মু তোমার মেয়েকে কিছু বলবে না? থাকো তোমরা আমি গেলাম ।
( হুমাইরা আর আব্বু বসে বসে আমাদের দেখতেছে আর আর হাসতেছে। আমি রুমে এসে কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি হয়েছি হুমাইরা রুমে ঢুকল।)
হুমাইরা:- কখনো আসবেন?
আমি:- কেনো । আর আমি আসলেই কি আর না আসলে কি?
হুমাইরা:- ওভাবে বলেন কেনো ?☹️
আমি:- একটু এগিয়ে আসবেন?
হুমাইরা:- জি বলুন কি বলবেন?
(আমি হুমাইরা দিকে চেয়ে আছে কিছুই বলছি না)
হুমাইরা:- হা করে তাকিয়ে আছেন কেনো কি বলবেন বলুন?
আমি:- না মানে কলেজে গেলে বাড়ি আসার আগ পর্যন্ত তো আর তোমাকে দেখতে পারবো না তাই ভালো করে দেখে নিচ্ছিলাম 🤗।
(হুমাইরা লজ্জায় লাল হয়ে মাথা নিচু করে নিলো এই মুখ দেখে কি আর নিজেকে ধরে রাখা যায় তাই একটা আদর বসিয়ে দিলাম কপালে।😊 আর হুমাইরা আমার বুকে মুখ লুকালো। আপনারা ভাবতে পারেন এই প্রথম কোনো মেয়েকে এই ভাবে চুমু দেওয়ার অনুভূতি কি রকম হতে পারে? ☺️ তো যাই হোক কলেজের সামনে চলে আসলাম। সবাই দেখি আমাকে ঘিরে ধরলো )
নাছির:- বাহ্ বর সাহেব তাহলে অবশেষে কলেজে আসলো?
ছাইদুর:- ভাবির কি খবর?
মামুন:- সাজিদ শুন আজথেকে আমাদের ক্লাছ ১২ টা থেকে আরম্ভ হবে তাই এখন সাজিদ আমাদের সবাইকে খাওয়াবে ।
তাঁর পর হোটেলে গিয়ে খাওয়া শেষ করলাম বহুত কথা হলো অনেক দিন পর এরকম আড্ডা ভালোই লাগে 🤩। এখন বাজে ১১ টা আরো এক ঘন্টা হাতে আছে তাই ভাবলাম হুমাইরার সংগে একটু কথা বলি কিন্তু হুমাইরার কন্টাক্ট নম্বর ই তো নেই নি এখনো 😭। পৃথিবীতে আমি মনে হয় এক মাত্র স্বামী যে তার স্ত্রীর ফোন নং জানিনা। তাই ভাবলাম আম্মু র মোবাইলে কল করি । এর মাঝে নাছির বলে উঠলো
নাছির:- কি রে সাজিদ কি ভাবছিস ক্লাছে যাবি না ?
আমি:- তোরা যা আমি আসছি।
(ওরা চলে গেল আর আমি আম্মু কে কল করলাম।)
আম্মু:- হা সাজিদ বল কি বলবি?
(এখন আম্মু কে কি করে বলি তোমার ছেলে তো বোউ এর সংগে কথা বলার জন্য পাগল হয়ে গেছে☺️ )
আমি:- না এমনি কল করলাম। কি করো?
আম্মু:-এমনি বসে আছি.ক্লাছ নেই ?
আমি:- আছে ১২ টায়। তানিশা কোথায় ইস্কুলে?
আম্মু:- না ইস্কুলে যাইনি আজকে?
আমি:- কেনো ? ওকে দেও তো ফোন টা.
(যাক তাও একটা লাইন পাওয়া গেলো😀
আম্মু তানিশা কে ফোন দিলো।)
তানিশা:- কি বলবি বল তাঁরা তারি আমার কাম আছে?
আমি:- না মানে আমি তো অল্প পর বাসায় যাবো তোর কিছু লাগবে কি ? চকলেট নিয়ে যাবো?
তানিশা:- ঘটনা কি রে তুই আমার জন্য চকলেট আনবি । কিছু একটা তো আছে?
আমি:- কেনো আমি কি তোর জন্য কিছু নেই না?
তানিশা:- রাখ তোর নাটক । কি করতে হবে তাই বল.
আমি:- তোর ভাবি কে ফোনটা দে না অল্প প্লিজ।
তানিশা:- ও এই কথা তাই তো বলি আমার জন্য তুই এমনি এমনি চকলেট আনবি। ঠিক আছে দিতেছি।
…….
হুমাইরা:- জি বলুন কি বলবেন?
(হুমাইরার কথা শুনেই অন্তর ঠান্ডা হয়ে গেল । এটাই মনে হয় স্বামী স্ত্রীর পবিত্র ভালবাসা)
আমি:- কি বলবো আমি কি আমার বউ র সঙ্গে কথা বলতে পারবো না 😟।
হুমাইরা:- তা তো অবশ্যই পারবেন। কি করেন?
আমি:- আমার প্রিওতমার সঙ্গে কথা বলি. আপনি কি করেন?
হুমাইরা:- আমিও।
আমি:- আমিও কি?
হুমাইরা:- জানিনা।
আমি:- শুনোনা তোমার কাছে কিন্তু আমি একটা আদর পাই।
হুমাইরা:- কিভাবে?
আমি:- মনে নেই সকালেই তো তোমাকে একটা আদর দিলাম।
হুমাইরা:- আমি কি দিতে বলছিলাম ? আপনি নিজে ইচ্ছায় দিয়েছেন তাই ফেরত দিতে পারবো না।
আমি :- মানে কি. আমি এতো কিছু জানিনা তুমি আমার আদর নিয়েছো তাই তুমি আমার আদর ফিরিয়ে দিবে .
( এভাবে কথা বলতে বলতে ১২টা ১০ বেজে গেছে তাই ফোন রেখে ক্লাছে গেলাম)
আমি:- ছার আসতে পারি?
ছার:- আরে সাজিদ আসো । শুনলাম বিয়ে করেছো?
আমি:- জি ছার দুয়া করবেন.
(বাড়ি ফিরতে ৪ টা বেজে গেলো। এসে দেখি হুমাইরা আসরের নামাজ পড়ছে। আমিও ফ্রেস হয়ে নামাজ আদায় করলাম। তাঁর পর অল্প ফেসবুকে ডুকলাম রুমে শুয়ে আছি এখন রাত ৭ টা বাজে এর ভিতরে একবারো হুমাইরা আমার পাশে আসলো না । কিছু সময় পর হুমাইরা আসলো)
হুমাইরা:- আম্মা ভাত খেয়ে আসতে বলছে?
(আমিও কোনো কথা বললাম না খাওয়া শেষ করে ছাঁদে উঠে বসে আছি গরমের সময় ছাদেই ভালো লাগে)
হুমাইরা:- বসতে পারি?
আমি :- অবশ্যই আপনার জা ইচ্ছে তাই করতে পারেন?
হুমাইরা:- কি হয়েছে ? আমি কি কিছু ভুল করেছি?
আমি:- আমি কলেজ থেকে আসার পর থেকে খাওয়া পর্যন্ত একটি বারের জন্যেও কি আসার পাশে এসেছিলেন?
হুমাইরা:- ও আচ্ছা সরি আসলে তানিশার সংগে ছিলেন। ও আসতে দিলোনা তাই । আর কখনো এরকম হবে না।
আমি:- আচ্ছা ঠিক আছে।
হুমাইরা:- সারাদিন কিরকম কাটলো ?
আমি:-ভালো? আপনার?
হুমাইরা:- আমারো ভালো? আর আপনি আমাকে তুমি করেই বলবেন। আর আপনি তো মাঝে মাঝে গুলিয়ে ফেলেন কখনো তুমি বলেন আবার কখনো আপনি বলেন?
আমি:- হু কথাটা ঠিক । আমি তো তুমি করেই বলবো । তাহলে তোমাকেও তুমি করে বলতে হবে?
হুমাইরা:- না আমি পারবো না?
আমি:- তোমাকে পারতেই হবে?
হুমাইরা:- আচ্ছা ঠিক চেস্টা করবো।
( এই মুহূর্তে হুমাইরার হাত ধরতে খুব ইচ্ছে করছে তাই বললাম)
আমি:- আমি কি তোমার হাত টা ধরতে পারি?
( এই কথা শুনে হুমাইরার ডান হাত টা আমার দিকে এগিয়ে দিল)
হুমাইরা:- রাগ কমেছে?
আমি:- ওগো প্রিয়তোমা তোমার উপর কি রাগ করে থাকা যায়?
হুমাইরা:- আপনি তো একটা আজব মানুষ।
আমি:- কেনো 🤔?
হুমাইরা:- আপনি সকালে আদর দিতে অনুমতি নিলেন না আর হাত ধরতে অনুমতি নিচ্ছেন 😌
আমি:- কথা তো ঠিক।😕
(চাঁদের আলোয় হুমাইরার সৌন্দর্য আরো বেরে গেছে হুমাইরা মাথা নিচু করে আছে আর আমি হুমাইরার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি.)
হুমাইরা:- ওভাবে তাকিয়ে থাকেন কেনো আমার ভিসন লজ্জা লাগে.
( আমি হুমাইরা কে আরো কাছে টেনে নিয়ে বললাম তুমি কি জানো তুমি সব থেকে সুন্দর । তোমাকে দেখলে আমি আর নিজেকে সামলাতে পারি না)
হুমাইরা:- যান সব সময় দুস্টুমি আমি ওতো টাও সুন্দরী না 😔।
আমি:- আমি না হয় মিথ্যা কথা বলছি কিন্তু আল্লাহ তো মিথ্যা কথা বলবেন না।
হুমাইরা:- আল্লাহ আমাকে সুন্দর বলেছে তাই না । আপনাকে মেসেজ করেছে মনে হয় 🤩
আমি:- সত্যি আল্লাহ তোমাকে সুন্দর বলেছে। পবিত্র কুরআনের সূরা ত্বীন আয়াত নং-৪ এ আল্লাহ বলেন ” আমি মানুষ কে সুন্দর করে সৃষ্টি করেছি” । এবার বিশ্বাস হয়েছে যে আল্লাহ তুমাকে সুন্দর বলেছে।
হুমাইরা:-হুম । সত্যি কোরআন এমন একটি কিতাপ যেখানে সব বলা হয়েছে।
আমি:- হুম ।
হুমাইরা:- আচ্ছা আমি তো নতুন করে দ্বীনের পথে চলতে আরম্ভ করলাম । তাহলে একজন মুসলিম হিসেবে কোন কাজটা প্রথমে আমাদের করা উচিত।
আমি:- শুনো একজন মুসলিম হিসেবে প্রথমে আমাদের পড়তে হবে । কারণ আল্লাহ পবিত্র কুরআনের প্রথম যে শব্দটা নাজিল করেছে তা ‌হলো পড়ো তার মানে আল্লাহ প্রথমে আমাদের একটি আদেশ করেছেন তা হলো পড়ো । তাই আমাদের একজন মুসলিম হিসেবে সর্ব প্রথম পড়তে হবে।
হুমাইরা:- আচ্ছা ঠিক আছে. কিন্তু কোন কিতাব গুলো আগে পরা উচিৎ?
আমি:- আমাদের সর্ব প্রথম পড়া উচিৎ পবিত্র কুরআন ও সহীহ হাদীস। একজন লোক যদি প্রতি দিন ১০ টা করে আয়াত আর ৫ করে হাদীস পড়ে তাহলেও বহুত।
হুমাইরা:- আচ্ছা ঠিক আছে ইনশাআল্লাহ আমি কাল থেকে শুরু করবো। আর চলেন বহুত রাত হয়ে গেছে।
চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here