গল্পঃ:-শান্তির খোঁজে
পর্ব:-০৩
Writer:-Hassab bin Ahmed.
আমি তখন হায়ার সেকেন্ডারী তে পড়ি । আমি তখন এই যুগের ছেলেদের মতোই ছিলাম মুভি দেখতেম , নেশা করতাম , ( আমার চোখ দিয়ে পানি পড়া শুরু করেছে অপরাধ গুলো র কথা মনে পড়ে । ভেজা গলায় ই বললাম) তখন আমার মনে হয়েছিল যে আমি হয়তো সব থেকে সুখী। কিন্তু আসলে সুখ হলো সৃষ্টিকর্তার ইবাদত করাতে । তো যাইহোক আমি একদিন একটি বোই দেখতে পেলেম বোই টার নাম ছিলো প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ । বই টা যিহেতু আমার নামের সঙ্গে মিল আছে তাই বই টি পড়ার ইচ্ছা হলো । তাঁর পর বই টি সংগ্রহ করে পড়তে বসলাম । এই বই টা আমাকে কোতোটা মুগ্ধ করেছে তা তোমাকে কোন ভাষায় বুঝাতে পারবো না। বই টা পড়ে আমার কুরআন পড়ার ইচ্ছা জাগলো। তাঁর পর বাংলা কুরআন পরতে শুরু করলা । তার পর একটি প্রশ্ন আমার মাথায় আসলো আমাদের কেনো সৃষ্টি করা হলো । উত্তর টা কুরআনেই পেয়ে গেলাম যে ” সৃষ্টিকর্তা যা করতে বলছে তা করা আর যা করতে নিষেধ করেছে তা থেকে বিরতো থাকা । তাহলে আল্লাহ আমাদের প্রথমে কি করতে বলেছেন এই প্রশ্ন টা চলে আসে। পবিত্র কুরআনের সর্ব প্রথম যে আয়াত টা নাজিল হয়েছে তা হলো পড়া। তাহলে আল্লাহ আমাদের প্রথমে পড়তে বলছেন । তাঁর পর থেকে আমি ইসলামীক বই পরতে থাকলাম আর সবাইকে ইসলামের পথে আহবান করা আরম্ভ করলাম। আমি যখন থেকে ইসলাম প্রচার করা আরম্ভ করলাম আমার কাছের মানুষ, বন্ধু রা আমার কাছ থেকে দূরে সরে যেতে আরম্ভ করলো এখন আমার কিছু বন্ধু আমার সংগে কথা বলতে চায় না কারণ আমি তাদের কে নামাজ পড়তে বলি। তো যখন হাদীস কুরআন পরতে আরম্ভ করলাম তখন দেখলাম বহুত মিথ্যা কথা কে আমরা হাদীস বলে থাকি। আমি যখন হাদীস গুলেকে মিথ্যা বললাম তখন কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করলো। এমন কি আমাকে খৃস্টানদের দালাও বলা শুরু করে দিয়েছিলো । কথাটি তোমাকে এক লাইনে বলে ফেললাম কিন্তু আমার আল্লাহ জানে আমার কতো কস্ট হয়েছিল সেই সময়। যখন তোমাকে তুমারি নিজের গ্ৰামে তুমাকে অপমান করে , তোমাকে খৃস্টানদের দালাল বলে, তোমাকে কাফের বলে, তোমার নামে তোমার বাবা মার কাছে অভিযোগ করে যে ছেলেকে যদি এই সব করতে বাধা দিতে না পারো তাহলে এক ঘরিয়া করে দিব , যখন তোমার বন্ধু তোমার সঙ্গে কথা না বলে । ভাবতে পারো সেই পরিস্থিতি কতটা কস্টের হয়। এই সব ঘটনা আমার সংগে হয়েছিল। ( আমি কেঁদে কেঁদে ই কথা গুলো বলছি আর হুমাইরা একা মনে কথা গুলো শুনছে ওর মনটাও দেখি খারাপ হয়ে গেছে) । এই দিন গুলো আমার সব থেকে কস্টের দিন ছিল অবশ্য এই কস্ট গুলোর থেকে আরও একটি কস্টের দিন আমার আছে । তারপরও যখন আমি ইসলাম প্রচার করা বন্ধ করি নি। আরো একটি কথা বলে রাখি আমি একটি সংগঠন ও বানিয়ে ছিলাম irsf নামে এখন এই সংগঠনে ২০ জন কাজ করছে। তখন আমার বিরুদ্ধে গ্ৰামে সবাই একত্রিত হলো। গ্ৰামের প্রধান বলা শুরু করলো তুমি ইছলাম বিরোধী কথা বলো। যদি তুমি এই সব বন্ধ না করো তাহলে তোমাকে গ্ৰাম থেকে বের করে দেওয়া হবে । তুমি কি কিছু বলতে চাউ – আমি তখন বললাম” আমি একজন মানুষ আমার ভুল হতেই পারে । কাউকে শাস্তি দেয়ার আগে ভুল টা প্রমান করতে হয় তা তো নিশ্চয় জানেন । আমার লেখা বা বলার মাঝে একটা যদি ইছলাম বিরোধী কথা দেখাতে পারেন তাহলে এই গ্ৰাম থেকে চলে যাব। আমি মানুষ আমার ভুল হতেই পারে কিন্তু আল্লাহর রহমতে কেও সেই দিন আমার একটা ভুলো ধরতে পারে নি। কিছু কিছু মানুষ একজন বাচ্চা ছেলের কাছে এভাবে হেরে যাওয়া মনে নিত পারে নি। তাই তাঁরা পরর্বতী তে আমার নামে কিছু অভিযোগ প্রচার করতে থাকে । সব থেকে বেশি যে অভিযোগ যেটা আমার নামে করতো না হলো তুমি মাদ্রাসা বা ইছলামিক লাইনে পড়া শুনা করো নাই তোমাকে ইসলাম প্রচার করার অনুমতি কে নিলো?
এর উত্তর টা খুবই সোজা :- আমাকে ইসলাম প্রচার করতে আল্লা অনুমতি দিয়েছে।
১.সূরা আল ইমরান ৩ নং অধ্যয় ১১০ আয়াতে বলা হয়েছে” তোমরা ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে, আর আল্লাহর প্রতি ঈমান পোষণ করবে।
২. সূরা গাশিয়াহ আয়াত নং ১১ বলা হয়েছে যে”
অতএব তুমি উপদেশ দাও, তুমি তো একজন উপদেশদাতা মাত্র।
৩.সূরা আল ইমরান সূরা নং:-০৩ আয়াত নং:-১০৪ বলা হয়েছে”
তোমাদের মধ্যে এরূপ এক সম্প্রদায় হওয়া উচিত যারা কল্যাণের দিকে আহবান করে এবং সৎ কাজে আদেশ করে ও অসৎ কাজে নিষেধ করে, আর তারাই সুফল প্রাপ্ত হবে।
৪.সূরা তাহরিম সূরা নং:-৬৬ আয়াত নং-৬ বলা হয়েছে”
তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার পরিজনকে রক্ষা কর অগুন হতে, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর।
আরু একটি হাদিসে বর্ণিত আছে:- মাত্র একটি আয়াত জানলেও তুমি তা প্রচার করো ।
আমি তো তাই করছি যা আল্লাহ আর রাসুল সাঃ আমাকে করতে বলেছে।
যদি আমি ভুল কথা বলি তখন আপনি বলেন যে হাছাব এই টা ভুল। যদি আপনি প্রমান করতে পারেন আমিও মেনে নিব।
সে ভাবেই চলছে । আর আমরা মনে করি আমাদের মুছলিম পরিবারে জন্ম হয়েছে তাই আমরা মুসলিম আর তাই আমরা জান্নাতে যাবো। কিন্তু বিষয় টা অতোটাও সহজ না ।
তুমি চাউ কি না আমি জানিনা কিন্তু আমি চাই ১. আমি তোমাকে মাঝে মাঝে বলবো ভালোবাসি ২. আমরা একে অপরকে ভালোবাসবো ও সন্মান করবো এবং সব সময় গুরুত্ব দিবো। ৩ . আমি চাই মাঝে মাঝে তুমার কোলে মাথা রেখে গল্প করবো। ৪ . আমি চাই আমরা এক সংগে জান্নাতে যাবে যেখানে শুধু আমি আর তুমি সবসময় এক সংগে থাকবো। ৫. আমি তোমাকে জান্নাতে ও চাই কারণ আমি তোমাকে ভালোবাসি। দুঃখিত বহুত কথা বলে ফেললাম ।
হুমাইরা:- একটা জিনিস চাইবো দিবেন?
আমি:- আপনি কি চান সেটা জানি।
কালকে সেটা পেয়ে যাবেন।
(আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস
ফেলে বললাম)
হুমাইরা:- আমি কি চাই সেটা জানেন? (আনন্দ
দৃষ্টি তার চোঁখে)
আমি:- উকিলের সাথে কথা বলে কালকেই
সেটা পেয়ে যাবেন।
হুমাইরা- বারে যেটা চাই সেটা দেওয়ার
জন্য উকিলের কাছে যেতে হবে কেন?
আমি:- অাইনের বিষয় তাই উকিলের কাছে
যেতে হবে।
হুমাইরা:- আপনি কি বলতে চাইছেন সেটা
আমি বুঝতে পারছি না।
আমি:- আপনিতো আমার কাছে থেকে
ডির্ভোস চান তাই না? তাই উকিলের
কাছে যাবো কাগজপত্র ঠিক করতে।
হুমাইরা:- কে বলেছে এইসব?
আমি:- কেন আপনি ডির্ভোস পেলেতো মুক্ত
হয়ে যাবেন। আর আপনি তো বাসর রাতেই তো বলেছিলেন।
হুমাইরা:- এতে আপনার খারাপ লাগবে না?
আমি:- কাওকে হারানোর কষ্ট আমার চেয়ে
ভালো আর কে বা জানে। সত্যি বলতে আমার বাবা মা ও আমাকে ছাপর্ট করে নাই। তবে
আপনার খুশির জন্য সবকিছুই করতে পারি। কারণ আমি আপনাকে সত্যিই অনেক ভালো বাসি।
এরপর যা হলো সেটা কোনদিন
কল্পনাও করি নি। হ্যাঁ, হুমাইরা আমাকে
জড়িয়ে ধরেছে। এই প্রথম সে আমার
এতো কাছে শুধু আসে নি আমাকে
প্রথমবারের মতো জড়িয়ে ধরেছে।
হুমাইরা:- ঔ বদ, স্টুপিড এত্তোসোজা আমাকে
আপনার কাছ থেকে আলাদা করা।
আমিও আমার উদ্ভিদ বিজ্ঞান কে ভালোবেসে ফেলেছি।অবাক হয়নি সেদিন। খুব খুশি
হয়েছিলাম। আমিও জড়িয়ে
ধরেছিলাম। এই প্রথম কোনো মেয়েকে এভাবে জরিয়ে ধরা এই অনুভূতি টা বুঝানো সম্ভব না।
আমি:- আমি উদ্ভিদ বিজ্ঞান তাই না ( অভিমান করে)
হুমাইরা:- জি আপনি আমার উদ্ভিদ বিজ্ঞান ( হাঁসি দিয়ে)
কি সুন্দর সে হাসি এই হাসি মুখ দেখার জন্য তো আমি সব কিছুই করতে পারি।
আমি:- আসলে এভাবে এখন আমি তোমাকে ধরতে পারি না এটা ঠিক না এটা অন্যায়।
হুমাইরা:- মনে কি বলছো তুমি? (অবাক হয়ে)
চলবে………….