যখন এসেছিলে অন্ধকারে
১৭।।

ইমরানকে নিয়মিত অফিস করতে দেখে সাইদা ভেবেছিলেন, তার কথায় কাজ হয়েছে। অনির ভুত তার ভূত নিয়ে ইমরানের মাথা থেকে নেমে গেছে। নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন তিনি।

অনিকে নিতে তার কোনো আপত্তিই ছিলো না। আপত্তি থাকত না।

ইমরান জাপান চলে যাওয়ার পরে, ডিভোর্সের গল্প শুনেও, তিনি নিজেই উপযাচক হয়ে অনির মা সুমনার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছিলেন। ইমরান দেশে ফিরলে তিনি ওকে বুঝিয়ে শুনিয়ে আবার অনিকে ঘরে নেবেন, এমনই ভেবেছিলেন প্রথম প্রথম। পরে আস্তে আস্তে এদিক সেদিক দিয়ে শুনলেন, তালাক হলে, তিনমাসের ভেতর ফয়সালা না হলে একই স্ত্রীকে পুনরায় বিয়ে করা যায় না। তবে ইসলামি আইন আর রাষ্ট্রীয় আইনের মাঝে কিছু ফাঁকা জায়গাও আছে। সেখানে কিছু করা যায় কীনা সেসব খোঁজেও আগ্রহী ছিলেন।

অনি সাইদার পছন্দের বউ ছিলো, জটিলতা ঘোঁট পাকালেও অনিকে নিয়েই ভাবনার ঘনঘটা ছিলো। তখন অনির পা হড়কানোর সংবাদে দিশেহারা বোধ করেছিলেন। প্রথমে শুনলেন, নাটকে নামার কথা। তারপর একে একে এই নায়ক, ওই পরিচালকের সাথে অনিকে জড়িয়ে নানারকম মুখরোচক গালগল্পও কানে আসতে লাগল। কেউ কেউ তো এককাঠি বেড়ে ছবি তুলে তুলে ইকরামের মোবাইলে পাঠাতে লাগল। সেসব ছবি দেখে প্রথমে স্তম্ভিত হয়ে পড়েছিলেন সাইদা। পরে ধীরে ধীরে স্থিরতা ফিরে পান। ইমরানই যখন অস্বীকার করেছে, এটাই নিয়তি ভেবে তিনিও অনিকে নিয়ে ভাবনাচিন্তা মুছে ফেলেছেন। বাপের বাড়ির সাথে মনোমালিন্য দূর করতে সীমার সাথে ইকরামের বিয়ে দিয়েছেন। বেলায়েত শিকদারের পরিবারের সাথে আবার সুসম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হয়েছে। অনির রসাতলে যাওয়ার সংবাদ আরও ভালোভাবে কর্নগোচর হয়েছে।

ইমরানের যে কাজে আগে রাগ হয়েছিল, পরে মনে হয়েছে, এটাই ভালো হয়েছে। এত চঞ্চল মেয়ে, কখনোই ভালো বউ হতে পারত না। আর যেসব গল্প ভেসে আসে সেসবের সামান্য অংশ সত্যি হলেও ওই মেয়ে আর কারো ঘরের বউ হওয়ার যোগ্য নেই। নাটকের নায়িকাদের সুখ দুঃখ দেখে চোখের পানি ফেলা যায়, দূর হতে অপলক তাকিয়ে চোখে ধাঁধা লাগানো যায়, কিন্তু ঝলসানো চোখ নিয়ে ঘরকন্যা করা যায় না। ওদের নাম তারকা, ওরা আকাশেই সুন্দর – মাটির পৃথিবীতে ওরা নিজেরাও বেমানান, সংসারধর্মেও নিতান্তই অপ্রয়োজনীয়।

পেশাগত জীবন আর ব্যক্তিগত জীবনকে আলাদা করে রাখাটা অনেকে ধর্মের মতো লালন করে। ইমরান হলো সেই জাতের লোক। মন অশান্ত হলেও কাজের জায়গায় বিন্দুমাত্র ফাঁকি দেওয়া ওর স্বভাবে নেই। ও যখন ছাত্র ছিলো, খুব মন দিয়ে পড়াশোনা করেছে, পরিবার বা ব্যাক্তিগত সম্পর্ক সেখানে জায়গা পায়নি। দুটোর ভেতর ব্যালেন্স করে চলার অপারগতা আছে ইমরানের, কিন্তু সেসম্পর্কে ও ওয়াকিবহাল নয়। পেশা আর সম্পর্ক, দুটোকেই যে সমান যত্ন করতে হয়, সেটা জানেই না ও। একটা শেষ করে আরেকটাকে কাছে টানতে চাইলে, জীবন দ্বিতীয় সুযোগ নাও দিতে পারে। পড়াশোনা শেষ করতে করতে প্রেম করার সময় যেমন থাকে না, শুধু প্রেম করলে পড়াশোনাটাও হয়ে ওঠে না। সবকিছুই একসাথে একইতালে করতে পারা চাই।

নিজের কাজটুকু গুছিয়ে নিতে নিতে ইমরান হঠাৎ আবিষ্কার করেছে, কেউই ওর অপেক্ষায় নেই। না পরিবার, না অনি। নিজেকে, নিজের বানানো একলার পৃথিবীটার বাইরে ওর জন্য কেউ অপেক্ষায় নেই এটা ইমরানকে একটা বড়সড় ধাক্কা দিয়েছে কিন্তু যার যা ধর্ম তা থেকে বেরিয়ে আসাটাও কষ্টসাধ্য। অনির কাছে আসার জন্য ও ছুটির দিনটা পর্যন্ত ধৈর্য রেখেছে। কাজ রেখে ছুটে আসেনি।

সাইদার ভাবনাচিন্তা তার সাথেই থাকল, পরের সপ্তাহে ছুটির দিনটাতে ইমরানকে দেখা গেল অনিদের বাসায়।
অফিসে যেসব ডকুমেন্টস ছিলো অনির, সেগুলোতে এই বাসার ঠিকানাই বর্তমান ঠিকানা হিসেবে লেখা ছিলো। যদিও ইকরামের কাছ থেকে খুব সহজেই নেওয়া যেত কিন্তু ভাইয়ের সাথেও তো সম্পর্কটা স্বাভাবিক নয় ওর। ফোন নম্বরও দেওয়া ছিলো অনির, নির্দিষ্ট কাগজগুলোতে। ইমরানের সাহস হয়নি সেই নম্বরে ডায়াল করার। সরাসরি দেখা করে মুখোমুখি ডিল করাটাই বেস্ট অপশন মনে হয়েছে মার্কেটিং টপার ইমরানের কাছে।

অনির মা সুমনা, ইমরানকে দেখে অবাক হয়েছেন। তিনি জানতেন ইমরান দেশে এসেছে। কিন্তু সে যে এই বাসায় অনির খোঁজে আসবে সেটা ওনার ভাবনার বাইরে। আর ইমরান কথাও তেমন বলছে না, শুধু অনিকে ডেকে দিতে বলছে। অনি আজ চার বছর বাইরে একা থাকে, বাসায় আসে না, এই কথাটা কীভাবে ইমরানকে বলবেন ভেবে পাচ্ছেন না। যাহোক মন নরম হয়েছিল অনির প্রতি, আজ আবার ওকে গালমন্দ করতে ইচ্ছে করছে। উত্তেজনায় পরশকে ফোন করে ফেলেছেন। কাজটা ঠিক হয়নি। পরশ কেমন ব্যবহার করবে ইমরানের সাথে কে জানে!

সুমনার বড়ভাসুর, বেলায়েত শিকদারকে ফোন করাটা সঠিক হতো। তার বুদ্ধি আর বিবেচনার উপর সুমনার অগাধ আস্থা। তিনিও পরিবারের যেকোনো সিদ্ধান্তে সুমনাকে গুরুত্ব দেন। সীমার সাথে ইকরামের বিয়েতে বেলায়েত শিকদারের আপত্তি ছিলো। সুমনার অনুরোধেই তিনি এই আত্মিয়তা মেনে নেন। সুমনার ধারণা ছিলো, এতে করে দুই পরিবারের সম্পর্কের উন্নতি হলে অনির ভবিষ্যতে ইমরানকে মিলিয়ে দেওয়া যাবে। মনে মনে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন তিনি, এই ক’বছর ধরে নামাজের পাটিতে বসে আর তো কিছুই চাননি তিনি, অনির গতি ছাড়া।

ইমরানের কোলের উপর নিজের ল্যাপটপ। কাজ করার সময় অসময় নেই ওর। তবে এখন কাজ করছে না, অফিস থেকে অনির ছবিগুলো নিজের ল্যাপটপ, মোবাইলে ট্রান্সফার করে নিয়ে এসেছে, সেগুলোই দেখছে। এখন এটাই ওর কাজ। আর যে কাজটাই ও করে খুব মন দিয়ে করে। এখন ওর একমাত্র কাজ, একমাত্র লক্ষ্য অনি। লক্ষ্যভেদে ইমরান অর্জুনের মতো।
দ্রৌপদীর স্বয়ম্বরসভায় শর্ত ছিলো মাছের চোখে তীরবিদ্ধ করার। সেই মাছটা আবার চক্রের মতো ঘুরে ঘুরে জায়গাবদল করছিল। অন্য সব প্রতিযোগী যখন ব্যর্থ, অর্জুন নির্ভুল লক্ষ্যভেদ করে। মাছের চোখ ভেদ করে চলে যায় অর্জুনের তীর। অর্জুনের অস্ত্রশিক্ষক দ্রোনাচার্য তাকে শিখিয়েছিলেন, যেকোনো লক্ষ্যভেদ করতে চাইলে দৃষ্টি পুরোপুরি লক্ষ্যতেই স্থির থাকতে হয়। মাছের চোখ ভেদ করতে চাইলে, দৃষ্টি আশেপাশের কোথাও থাকলে চলবে না, মাছের স্থানবদল কীংবা সভার হর্ষধ্বনি কোথাও মনোযোগ দেওয়া যাবে না।
আজকের ইমরান যেন সেদিনের সেই অর্জুন। যখন পড়াশোনা করেছে, মন দিয়ে শুধু তাই করে গেছে, আজ যখন অনিকে পেতে চাইছে, সমগ্র চিন্তাচেতনা দিয়ে অনিকেই চাইছে।

কিন্তু সময়ও থেমে নেই ইমরানের শুভবোধ জাগ্রত হওয়ার অপেক্ষায়, অনিও এগিয়ে গিয়েছে অনেকখানি। অন্তত অনির এই ছবিগুলো সেই কথাই বলছে। এই অনি ওর চেনা নয়। অন্যরকম। নতুন। একেবারে অচেনারকম নতুন। সেই বুনো সরলতা নেই, টানা সিঁথিপাটি অদৃশ্য। গেঁয়ো কায়দায় সিঁথি ঢেকে রাখার সেই ঘোমটাটাও নেই। তার জায়গা দখল করে নিয়েছে অফ শোল্ডার টপস কিংবা শরীর দৃশ্যমান শিফন শাড়ি।

সাদা শার্টের সাথে মাথায় চড়ানো কাউবয় হ্যাট আর নগ্ন উরুতে সাহসী পোজ। সাথে চড়া লাল লিপস্টিকে রাঙানো ঠোঁটের এককোণা দাঁতে চেপে আবেদনময়ী ভঙ্গিমা। সাজানো চোখেই খুন হওয়ার দশা ইমরানের।

একটা ছবি থেকে যেন চোখই নড়ছে না ইমরানের। কালো লেদার প্যান্টের উপর স্লিভলেস ট্যাঙ্কটপ, লেদারের জ্যাকেটটা অবহেলায় কাঁধের দুপাশ দিয়ে ফেলে রাখা, ইটের দেয়ালে হেলান দিয়ে আনমনা দৃষ্টি ঢেকে কালো গগলস চোখে। সেই চড়া লাল লিপস্টিক! লাল রঙটা কি খুব বেশি এট্রাকটিভ নাকি অনিকেই এত বেশি আকর্ষণীয় লাগছে জানে না ইমরান। ও শুধু ক্ষণে ক্ষণে রোমাঞ্চিত হচ্ছে। সেদিনের অনি কল্পনা ছিলো না, সেদিনের স্পর্শটুকু মিথ্যে ছিলো না, সেই চুমুটাও সত্যি ছিলো – ভাবতেই গুজবাম্প এসে যাচ্ছে বারবার!

পায়ের ব্যথাটা বেড়েছে, টাটানো ব্যথা একবার জানান দিয়ে উঠতেই একা একা হেসে ফেলল ইমরান। অনির সাথে দেখা হওয়ার আগের অপেক্ষাটা লম্বা হলেও ওর ভালো লাগছে। এই অপেক্ষাটাও আনন্দময় হয়ে উঠেছে। অনির হয়তো অভিমান, রাগ সব পাহাড়সমান হয়ে জমে আছে। এই নতুন অনিকে ওর অর্জন করে নিতে হবে। খুব সহজ হবে না, কিন্তু সবকিছু করার জন্যই ইমরান প্রস্তুত। অনি যা চাইবে, যেভাবে চাইবে সেভাবেই হবে সব। ইমরানের অপরাধের বোঝা যে একেবারে কম নয়, বেড়ে বেড়ে কোন আকাশে ঠেকেছে, খুব ভালো করে টের পাচ্ছে ও। তবুও অনির ক্ষমা আদায় করে নেবে ও। জয় করে নেবেই ওকে।

কলবেল বাজতেই ইমরান তড়াক করে উঠল। খুব গুছিয়েই এখানে এসেছে ও। কী বলতে হবে, কী করতে হবে, কীভাবে লাইন বাই লাইন এপ্রোচ করতে হবে, সবকিছু নোট করে মুখস্থ করে করে অনেকবার রিহার্সাল করাও হয়েছে। টেবিলে ঠান্ডা পানির গ্লাস রেখে গিয়েছিল অনির মা, সেই গ্লাসে একটা চুমুক দিয়ে শুকনো গলাটা ভিজিয়ে নিয়ে প্রস্তুত হয়ে নিলো। আসুক এবার অনি। যুদ্ধযাত্রার দামাদোল বাজতে থাকল ইমরানের কানের কাছে!

না, অনি না। আবারও ভুল হলো৷ অনি আসেনি। পুরুষকণ্ঠ শুনতে পেলো ইমরান। বেশ রাগী চিৎকার ‘কোথায়?’

অনির মা চাপাকণ্ঠে কী উত্তর দিলেন ইমরান শুনতে পেলো না। পুরুষকন্ঠের চিৎকার আবার উঁচুতে উঠল ‘ও কেন এসেছে এখানে?’

‘আহ পরশ, আস্তে, শুনতে পাবে।’

‘সে শুনুক, কেন এসেছে?’

‘কিছু বলেনি। অনি কোথায় সেটা জানতে চেয়েছে শুধু।’

‘মানে? এতদিন পরে অনির খোঁজ কেন?’

‘পরশ, বাবা আমার। মাথা গরম কইরো না। শান্ত হয়ে শোনো কী বলতে চায়।’

‘রাখো তোমার মাথা ঠান্ডা!’

ঝড়ের মতো এসে পরশ ঢুকল আর কোনো কথার ধার না ধেরে সোজাসাপটা ইমরানের উপর চড়াও হলো। প্রথমে কলার ধরে টেনে ওঠালো, তারপরে চড় কষল গোটাদশেক, এরপরে এলোপাথাড়ি ঘুষি। সুমনা পরশকে জাপটে ধরে সরাতে চাইলেন কিন্তু পরশের গায়ে অসুরের শক্তি আজ। ও ইমরানকে মারছে আর চিৎকার করে চলেছে ‘হারামজাদার সাহস কতবড়! অনির জীবন শেষ করে ওর হয়নি। ও এখন মাটিচাপা দেওয়ার কাজটাও করতে এসেছে। আমি পণ করেছিলাম, খুন ওকে আমি করবই। আজকে তোর শেষদিন। নিজে বাড়ি বয়ে এসেছিস মরতে। বলে না, পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে। তোরও পাখা গজিয়েছে। তাই উড়ে উড়ে মরতে এসেছিস!’

অলি এতক্ষণ সামনে আসেনি ইমরানের। অনিকে গরম খবর দিচ্ছিলো ফোনে। চিৎকার শুনে দৌড়ে এসে দেখে ইমরান মেঝেতে, তাকে সমানে লাথি মারছে পরশ। সুমনা ওকে দুইহাতে জড়িয়ে ধরেও থামাতে পারছে না। অলিও এসে পরশকে টেনে সরিয়ে নিতে হাত লাগালো।

‘এই ছাড় আমাকে, আজকে ওকে মেরেই ফেলব।’ পরশের টকটকে লাল চোখদুটো ছিঁড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে।

‘বাপ, থাম। মরে যাবে ছেলেটা। আমার ভুল হইছে। আমি ওকে সরিয়ে দিচ্ছি। থাম পরশ, আর মারিস না।’

অলিও বোঝাতে চাইল ‘ছিঃ ভাইয়া, পাগল হয়ে গেলে? এমন ব্যবহার করে কোনো ভদ্রমানুষ?’

পরশ আরো ক্ষেপে গেল ‘এই ভদ্রতা শিখাস আমাকে? আমি ওকে মেরে ফেলব। মেরে ফেলে তারপর থামব।’

সুমনা আবার কাঁদলেন ‘পরশ, ছেড়ে দে। ও চলে যাবে।’

‘কোথায় যাবে? এতদিন মনে মনে এই দিনটাই চেয়েছি আমি। আজ ওকে মেরে আমি জেলে যাব।’

অলি আর ওর মা মিলে বহুটানাহেঁচড়া করে পরশকে সরিয়ে এনে সোফায় বসিয়ে দিলো। সহজে সরাতে পারত না, পরশ নিজেই ক্লান্ত হয়ে গেছে। বসে বসে হাঁপাতে থাকল। ফুঁসতে ফুঁসতে কেঁদেই ফেলল অনির নাম নিয়ে। অনির জীবনের সবটুকু অন্ধকার ও নিজে প্রত্যক্ষ করেছে। যার জন্য দায়ী একমাত্র ইমরান। ওর দেশে আসার খবরেই ফুঁসতে শুরু করেছিল পরশ। আজ নিজের ঘরে বাগে পেয়ে সেই সমস্ত রাগ অগ্নিস্রোতে বেরিয়ে আসতে চাইছে। অনির একএকটা পতন, একএকটা ভুল, একটুএকটু করে অমানিশায় ঢেকে যাওয়া, সব চোখের সামনে ভেসে আসছে।

সুমনা ইমরানকে মেঝে থেকে তুলে দিলেন। ইমরানের ঠোঁট কেটে গেছে, মাথায়ও লেগেছে, মাথাচোখ ফুলে গেছে। শার্ট ছিঁড়ে রক্তারক্তি। নাক থেকে রক্ত পড়েছে। ভেঙেটেঙে গেছে কীনা কে জানে!

‘যাও বাবা, বাড়ি যাও। একটা ডাক্তার দেখায়ে যাও।’

ইমরান কিছু বলল না। নাক টানতে থাকল। শার্টের হাতায় নাক থেকে গড়িয়ে পড়া রক্ত মুছে নিলো।

সুমনা একটু শঙ্কিত হলেন, সাইদা কী করবে ইমরানের এই অবস্থা দেখে, সেটা ভেবে। সে এখন সীমার শাশুড়ী। এসবের আঁচ সীমার জীবনেও তো লাগবে। আবার থানাপুলিশ না হয়। চারিদিকে তাকিয়ে নিজের ছেলেমেয়েদের অবস্থা দেখে আতঙ্কিত হলেন তিনি৷ ভুলটা তার নিজের লালনপালনে নাকি ভাগ্যের, বুঝে উঠলেন না…

চলবে…

Afsana Asha

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here