মোনালিসা
লেখা-ইসরাত জাহান তানজিলা
পর্ব-১৫+১৬
মোনা রুমের সামনে এসে কলিংবেল চাপে।নিশান দরজা খুলে দেয়। মোনা রাজ্যের বিস্ময় নিয়ে তাকায়।দরজা নিশান খুলেনি,দরজা খুলেছে লিলি বেগম। লিলি বেগমের চোখে মুখে অভিমানের ছাপ। মোনা নিচু গলায় বলে,
-“খালা তুমি?”
লিলি বেগম অনিমেষ দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। প্রচণ্ড রোষপূর্ণ সে চাহনি। মোনা অপরাধীর ন্যায় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল।
-“কোন দায়িত্বজ্ঞান নেই তোর?কেন চলে এসেছিস পালিয়ে?”
লিলি বেগমের কন্ঠে রাগ বিদ্যমান।মোনা দরজার সামনে থেকে রুমের ভিতরে ঢুকে। খাটের কাছে বসে পা দুটো দোলাতে দোলাতে সহজ গলায় বলে,
-“বলে আসলে আমাদের আসতে দিতে না। আমাদের জন্য খালু তোমার সাথে খারাপ আচরণ করত, চেঁচামেচি করত। তোমাদের সাথে খালুর সম্পর্কের অবনতি ঘটছিলো তাই চলে আসছি খালা।”
মোনার কথায় তিক্ত হচ্ছে লিলি বেগম। মুখে ক্রোধের আগুন জ্বলছে যেন। আক্ষেপ করে বলে,
-“যে সম্পর্ক কখনো উন্নত ছিলো না,সে সম্পর্ক অবনতি হওয়ার কথা আসছে কোত্থেকে?”
মোনা এই অনুষঙ্গ উপেক্ষা করে যেতে চায়। মোনা কখনো চায় নি ও’কে কেউ খুঁজে পাক। মোনা প্রসঙ্গ পাল্টাতে বলে,
-“বাদ দেও না খালা এসব।”
এরপর মোনা এগিয়ে গিয়ে ঘনিষ্ঠ হয়ে লিলি বেগমের পাশে বসে বলে,
-“প্রিয়ম ভাই আমার বাসার এড্রেস,ফোন নম্বর পেলো কোত্থেকে?”
লিলি বেগম উত্তর দেয় না। মোনার কর্মকাণ্ডে নির্বাক হয়ে থাকে। বিরক্ত’তে চোখ মুখ কুঁচকে রাখে। মোনা পুনর্বার জিজ্ঞেস করে,
-“আমাদের জন্য এত উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা তোমার?”
লিলি বেগমের মুখ কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে যায়।মোনা খুব গোপনে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে। বাসা থেকে কেন এসেছে পালিয়ে এ কথা কখনো বলতে পারবে না। মোনার করা প্রশ্নের জবাবে ভারি গলায় লিলি বেগম বলে,
-“না কিছু নেই।”
-“আহা খালা! অভিমান করছ কেন? আমি চাইনি তোমাদের ঝামেলা বাড়াতে।”
-“ভালো করছিস।”
লিলি বেগম তীব্র অভিমানে মুখ ফিরিয়ে থাকে। মোনা কিচেনে যেতে যেতে বলে,
-“এক কাপ কড়া মিষ্টিওয়ালা কফি খাওয়ালেই রাগ চলে যাবে।”
লিলি বেগম মোনার নির্বাকার ভাব দেখে লিলি বেগম আরো ক্ষুব্ধ হয় যেনো। মোনার ওভাবে চলে আসা একদম বেখাপ্পা লাগছে। মোনার কথার উত্তর দিলো না। কিছুক্ষণ পর
নিশানের তাকিয়ে অনুযোগের সুরে বলে,
-“অমানুষ তুই একটা! ছেলেটা কে বাসায় এভাবে রেখে যাস। এইটুকু মানুষ কিভাবে একা থাকে?”
লিলি বেগমের চিৎকার কিচেন পর্যন্ত যায়। মোনা ম্লান হাসে। কফি বানিয়ে রুমে আসতেই দেখে দরজা দিয়ে হন্তদন্ত হয়ে প্রিয়ম ঢুকছে। মোনা বিস্ফোরিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। প্রিয়ম মোনার হাত থেকে এক কাপ কফি নিয়ে কফিতে চুমুক দিতে দিতে বলল,
-“ওভাবে তাকিয়ে আছো কেন? আমার নীল চোখ তোমার পছন্দ তা তো আমি জানি। এজন্য ওভাবে তাকিয়ে থাকতে হবে?”
লিলি বেগম উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও প্রিয়মে এমন কথায় মোনা ভিতরে ভিতরে অস্বস্তি বোধ করলেও বাহিরে বিরক্ত ভাব নিয়ে মুখ পাণ্ডুবর্ণ হয়ে যায়।‌‌‌‌‌কোন প্রত্যুত্তর করলো না।
মোনা তাকায় না প্রিয়মের দিকে। প্রিয়মের হঠাৎ এমন পরিবর্তন মোনা সহজ ভাবে নিচ্ছে না, কোন রকম পাত্তাও দিচ্ছে না। মুহূর্তে মুহূর্তে পরিবর্তন হওয়া মানুষ দের পাত্তা না দেওয়াই শ্রেয়। মোনা অন্যদিকে ফিরে থাকে!প্রিয়মের দিকে তাকাতে প্রচন্ড বিরক্ত বোধ করছে।
ধীরে ধীরে লিলি বেগমের রাগ কমতে থাকে। প্রিয়ম মোনার থেকে একটু দূরে বসে আছে।মোনা কোন দিকে তাকাচ্ছে না সে দিকে। প্রচণ্ড অসহ্য লাগছে প্রিয়ম’কে।
লিলি বেগমের চেহেরা দেখে মনে হয় মোনার প্রতি সকল আক্রোশ, ক্রোধ কমে এসেছে। লিলি বেগমের ধারণা মোনা প্রিয়মের অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ কিংবা লিলি বেগম আর হাবিব সাহেবের ঝগড়ার কারণে বাসা ছেড়েছে। লিলি বেগম একটা ক্ষীণ নিঃশ্বাস ফেলে মোনা’কে হাত ধরে আড়ালে নিলো। ফিসফিস করে বলল,
-“মোনা তোর তো টাকা পয়সায় অনেক সমস্যা হবে তাই না?তুই কোন চিন্তা করবি না।যত ডলার লাগবে আমি দিবো।”
মোনা আড়ালে নিয়ে আসার কারণ বুঝতে পারল। এগুলো তো আড়ালে বলারই কথা। মোনা জোর গলায় বলল,
-“না খালা, আমি একটা জব নিবো। ডলারের দরকার নেই।”
লিলি বেগম ধমকিয়ে বলে,
-“কিসের জব করবি তুই?তোর সব খরচ আমি দিবো।”
-“আরে খালা বাদ দেও না এসব। পরে দেখা যাবে।”
প্রিয়ম রুমের ভিতর থেকে ডাকে। বলে,
-“আম্মু তুমি কি যাবে? আমার যেতে হবে জরুরী কাজ আছে।”
লিলি বেগম বার বার জিজ্ঞেস করছে মোনা’কে কেন এভাবে চলে এসেছে? মোনা তেমন কোন উত্তর দেয়নি। প্রিয়মের গাড়ি’তে এসেছে লিলি বেগম।প্রিয়মের জরুরি কাজ পড়েছে তাই তড়িঘড়ি করে চলে গেলো লিলি বেগম। মোনার প্রতি আক্ষেপের সীমা নেই। প্রিয়ম চলে যাওয়ার আগে মোনার দিকে তাকিয়ে রহস্যময় ভঙ্গিতে হাসছে। শুধু লিলি বেগমের জন্য কিছু বলেনি প্রিয়ম’কে। মোনা বুঝতে পারছে প্রিয়ম ওর পিছু ছাড়ছে না। মোনা হতাশ ভঙ্গিতে বসে থাকে। মোনার পেইন মনে হচ্ছে এসবে। রাত-বিরাতে ফোন দিয়ে বলে দেখতে ইচ্ছে করছে, ভীষণ মিস করছে এসবের মানে কি? প্রিয়ম কি ওঁর সাথে মজা নিচ্ছে? প্রিয়মের মত বাজে ছেলেকে লাই দিবে! নোংরা মানসিকতার, সস্তা চিন্তা ভাবনাওয়ালা মানুষ। একদম নর্দমার কীট মনে হয় মোনার কাছে।
মোনা বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবছে প্রিন্সেস’কে দেখতে যাওয়া উচিত। জ্যাক খুব ব্যস্ত ব্যবসার কাজে, ফোন দিয়ে বলেছে। ওঁদের ঠিকঠাক খোঁজ নিতে পারছে না তাই দুঃখিত বলল। মোনা নিশান কে নিয়ে বেড়িয়ে গেলো জ্যাকের বাসার উদ্দেশ্যে। এ বাসার সব কাজের লোক, কেয়ারটেকার সবাই ই চিনে মোনা কে। মোনা কে দেখে ভাব বিনিময় করল।
আর বলল জ্যাক বাসায়ই আছে। মোনা জ্যাকের রুমের কাছে গিয়ে রুমের ভিতরে উঁকি দিলো। জ্যাক শুয়ে আছে,পাশে প্রিন্সেস। মোনা বলল,
-“আসব?”
জ্যাক কে খুব ক্লান্ত লাগছে। ক্লান্ত শরীর নিয়ে উঠে বসার চেষ্টা করে। ঠোঁটের কোণে হাসি টেনে বলে অবাক হয়ে বলে,
-“আরে মোনালিসা আপনি? আসুন আসুন।”
জ্যাক রুমে ঢুকে জ্যাকের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলো। জ্যাকের ছোট আকৃতির চোখ গুলো জবা ফুলের মত লাল রঙ ধারণ করছে। মোনা প্রিন্সেস’কে কোলে নিয়ে চুমু খেলো। জ্যাকের দিকে তাকিয়ে বলল,
-“জ্যাক আপনি অসুস্থ?”
মোনা প্রিন্সেস’কে নিয়ে জ্যাকের শয্যার পাশে বসল।
-“ভীষণ মাথা ধরেছে।”
জ্যাকের মাথার রকগুলো দপদপ করছে । ছিঁড়ে যাবে যেন।একজন কাজের লোক মেডিসিন নিয়ে আসলো, জ্যাকের মাথা টিপে দিলো। কিছুক্ষণ পর জ্যাক সুস্থ বোধ করতেই শোয়া থেকে উঠে বসল। জ্যাক কাজের লোকদের ইঙ্গিত করল নাস্তা দিয়ে যাওয়ার জন্য। মোনা বলল,
-“এখন কেমন বোধ করছেন? বেটার ফিল হচ্ছে?”
-“হ্যাঁ একটু।”
অনেকদিন পর মোনা কে দেখে প্রিন্সেস উচ্ছ্বাসিত হয়ে গেল যেন।‌ মোনার মুখের দিকে তাকিয়ে হাসছে। হাসি যেন প্রশান্ত মহাসাগরীয় ঢেউ। জ্যাক তাকিয়ে থাকে সেদিকে।
-“আপনাকে পেলেই প্রিন্সেস উচ্ছ্বাসিত হয়ে পড়ে।”
মোনা হাসলো। কিছুক্ষণ বসে থেকে ওঁরা বের হলো। সাথে জ্যাক আর প্রিন্সেসও।
-“আপনার জবের ব্যবস্থা হয়েছে। ভার্সিটির পর থেকে। ভার্সিটি জব সব মিলিয়ে ঝামেলা হয়ে গেলো না?”
-“না ঝামেলা হয়নি কোন। ভালো হয়েছে। আমি তাহলে কাল থেকেই জয়েন করছি।”
-“আপনি ইচ্ছা করলে আজ থেকেও জয়েন করতে পারেন।”
মোনা হঠাৎ ইমোশনাল হয়ে পড়ে।বলে,
-“আপনি না থাকলে আমার বাংলাদেশ ফিরে যেতে হত।”
জ্যাক প্রত্ত্যুতরে হাসলো শুধু। মোনা বাসায় ফিরে যায়। প্রিয়ম কল দিয়েই যাচ্ছে মোনার ফোনে। মোনা ফোনটা সুইচ অফ করে গোসল সেরে নিলো। নিশান বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে শুয়ে আঁকিবুঁকি করছে। কিছু কিছু গুন থাকে আল্লাহ প্রদত্ত। নিশান এইটুকু বয়সে কোন অনুশীলন ছাড়াই খুব সুন্দর আর্ট পারে। নিশান কে আর্ট শিখালে মন্দ হয়না।
মোনা ভার্সিটি যায় নিশাক কে ওঁর স্কুলে পৌঁছে দিয়ে। নিশান কান্নাকাটি করে অস্থির। আস্তে আস্তে সব মানিয়ে যাবে। মোনার চিন্তা হচ্ছে নিশানের জন্য। একদিক থেকে ভালই হয়েছে স্কুলটা বাসার কাছেই। নিশান একাই বাসায় ফিরতে পারবে।‌ প্রথম প্রথম খুব অসুবিধা হবে ,আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। সব সুবিধা- অসুবিধার সাথে মানিয়ে নিতে হবে নিজেদের।
মোনা ক্যাম্পাসে ঢুকতেই পিছন থেকে ডাক দেয় শ্রুতি।মোনা পিছনে ফিরে তাকায়। সৌজন্যমূলক হাসে। শ্রুতি খুব উচ্ছ্বাসিত গলায় বলে,
-“এ্যাই মোনালিসা, যাবে এক জায়গায়?”
শ্রুতির সাথে ওইদিন দেখা হয়েছে পথে, টুকটাক কথা হয়েছে। স্বল্প পরিচয়ের এই মেয়েটা এমন ভাবে কথা বলছে যেন মোনালিসা কে কতদিন ধরে চিনে। এমন নিঃসংকোচ আবেদন। মোনা ইতস্তত বোধ করে বলে,
-“ক্লাস শুরু হবে তো।”
মোনার হাত ধরে জোর গলায় বলে,
-“আরে কিছু হবেনা তুমি আসো তো।”
মোনা এমন আবেদন এড়িয়ে যেতে পারে নি। শ্রুতি কে বলল,
-“আমরা কোথায় যাচ্ছি শ্রুতি?”
-“আপতত রেস্টুরেন্ট যাচ্ছি। এই মেয়ে তুমি এত ভীতু স্বভাবের কেন বলো তো? আমরা ক্লাস শুরু হওয়ার আগে আগে ফিরবো।”
এত চটপটে স্বভাবের মেয়ে মোনা আর দেখেনি। মোনা কে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে বসলো। শ্রুতির মুখোমুখি একজন ভদ্রলোক বসে আছে,আর মোনা শ্রুতির পাশে বসে আছে। শ্রুতি মোনার দিকে তাকিয়ে মুখোমুখি বসে থাকা ভদ্রলোক কে দেখিয়ে বলল,
-“আমার হবু হাজবেন্ড। সমীর। সমীরও ইন্ডিয়ান।”
সমীর হাত নাড়িয়ে হায় জানালো। শ্রুতি দেখতে কুচকুচে কালো,আর ছেলেটা দেখতে খুব বেশী ফর্সা। শ্রুতি যতটা কুৎসিত, ছেলেটা যেন ততই সুন্দর। ভালোবাসার আসলেই নির্দিষ্ট সজ্ঞা নেই। বর্ণ বিবাদের ঊর্ধ্বে। মোনার মনে মনে রাগ হচ্ছে। এই শ্রুতি মেয়েটা ওঁদের মাঝে মোনা কে থার্ড পারসন বানাতে নিয়ে আসলো?
সমীর শ্রুতির মত চটপটে স্বভাবের না। পুরোই গম্ভীর। মোনা কে মেন্যু কার্ড দেখে অর্ডার দিতে বলে। খাবার আসতে দেরি হবে তাই ড্রিংকস দিয়ে গেলো। এর ভিতর সমীরের সাথে ঝগড়া বাঁধিয়ে দিলো শ্রুতি। ঝগড়ার বিষয় বস্তু ফোন ব্যস্ত কেন ছিলো? সমীর কোমল নমনীয় গলায় বলে,
-“শ্রুতি এটা রেস্টুরেন্ট সিন ক্রিয়েট করো না। আমি তো জব করি, কত জায়গা থেকে ফোন আসে।”
সমীর যতই নরম গলায় কথা বলে শ্রুতি ততই কর্কশ গলায় চেঁচামেচি করছে। সমীরের মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে শ্রুতি কে খুব ভয় পায়। মোনার হাসি পাচ্ছে। সমীর ঝগড়া সামনের দিকে বাড়াতে চাচ্ছে না বোধ হয় তাই চুপ থাকে। সমীরের এই চুপ থাকা যেন শ্রুতির আরো রাগের কারণ হয়ে উঠলো। একা একা ঝগড়া তো বেশিদূর এগিয়ে নেওয়া যায়না। শ্রুতি দমে গেলো। সম্পর্কে এই জিনিসটা খুব দরকার, একজন রেগে গেলে অন্যজনের চুপ থাকা। আজ যদি সমীরও রাগ দেখাতো, এখানে মহাপ্রলয় হয়ে যেত। সমীর মোনার দিকে তাকিয়ে অনুতপ্ত গলা বলল,
-“মোনালিসা প্লীজ আপনি কিছু মনে করেন না।” শ্রুতির দিকে তাকিয়ে আবার বলল,
-“শ্রুতি একটু রাগী।”
শ্রুতির মুখের গম্ভীর ভাব এখনো যায়নি। মোনার দিকে তাকিয়ে বলল,
-“মোনা আবার কি মনে করবে? ও আমার ফ্রেন্ড। কিছুই মনে করবে না।”
-“হ্যাঁ,হ্যাঁ আমি কিছু মনে করিনি।”
মোনা চুপচাপ খাচ্ছে। শ্রুতি আর সমীর মোনার প্রতি বেশ মনোযোগী। তাই মোনার খুব বেশী অস্বস্তি লাগছে না।
-“মোনা তুমি এখানে? ভার্সিটি রেখে এখানে কি করছো?”
মোনা তাকিয়ে দেখে প্রিয়ম। মোনা অবাক হয়ে যায়। শ্রুতি জিজ্ঞেস করে,
-“কে বয়ফ্রেন্ড?”
-“না কাজিন।”
প্রিয়ম হেসে শ্রুতির দিকে তাকিয়ে বলল,
-“মোনা মানুষের সামনে আমায় বয়ফ্রেন্ড পরিচয় করিয়ে দিতে লজ্জা পায়।”
মোনা বিস্ফোরিত চোখে তাকালো প্রিয়মের দিকে। ক্ষুব্ধ গলায় বলল,
-“প্রিয়ম ভাই প্লীজ আপনি এখান থেকে যান।”
সমীর হাসলো। প্রিয়মের দিকে তাকিয়ে বলল,
-“এই ব্রাদার বসো তো।”
শ্রুতি বলল,
-“মোনা এসব কি? বয়ফ্রেন্ড কে অস্বীকার করছো?”
মোনা বিহ্বল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। রাগে মোনার চিৎকার দিতে ইচ্ছে করছে। মোনা রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে যায় এক মুহূর্ত না বসে। এত রসিকতা মোনার ভালোলাগে না।
(চলবে)

মোনালিসা
লেখা- ইসরাত জাহান তানজিলা
পর্ব-১৬
মোনা ক্লাসে গিয়ে গম্ভীর মুখো হয়ে বসে থাকে। কিছুক্ষণ পর শ্রুতি এসে বেশ শব্দ করে বসে মোনার পাশে। উদগ্রীব হয়ে বলে,
-“মোনালিসা এমনটা করলে কেন? ওভাবে চলে আসলে কেন? ঝগড়া হয়েছে তোমাদের মাঝে?”
-“আহা শ্রুতি আমার কথা বিশ্বাস করো, ছেলেটা আমার কাজিন। অন্য কোন সম্পর্ক নেই।”
মোনার কথা যেন শ্রুতির কান অবধি পৌঁছে না। শ্রুতি উৎফুল্ল হয়ে বলে,
-“ছেলেটার ব্লু আই,কি হ্যান্ডসাম,কি লুক! কাজিন হলে কি?তোমায় লাইক করে, বয়ফ্রেন্ড বানিয়ে নেও।”
মোনা অহেতুক কথা বাড়ালো না। শ্রুতি কোন কথাই বুঝার চেষ্টা করবে না। নিজের মত বলেই যাবে, নিজের মত বুঝেই যাবে।
-“মোনালিসা, নীল রঙা চোখের ছেলে! কত মেয়েরা পাগল। আর তুমি কিনা পাত্তা দিচ্ছো। অদ্ভুত মেয়ে তো তুমি!”
-” শ্রুতি প্লীজ স্টপ। আমার মাথা ধরেছে। সমীর ও’র থেকেও সুন্দর।”
শ্রুতি আহত গলায় বলল,
-“সমীর হ্যান্ডসাম ঠিক আছে। কিন্তু চোখ তো নীল না।”
মোনালিসা উত্তর দিলো না। কিন্তু শ্রুতি তাতে মোটেও দমলো না। বলল,
-“প্রেম’টা হয়ে গেলে আমাকে আর সমীর’কে ট্রিট দিতে হবে কিন্তু।”
মোনা আপাতত এসব প্যাঁচাল থেকে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে। ঠোঁটের কোণে জোরপূর্বক হাসি টেনে শ্রুতির দিকে এগিয়ে খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে বসে বলল,
-“প্রেম হলে তোমাদের ট্রিট দিবো, চারজন মিলে লং ড্রাইভে যাবো। সারারাত ঘুরবো, পুরো আমেরিকা ঘুরে বেড়াবো। রোমাঞ্চকর না ব্যাপার’টা?”
শ্রুতি দ্বিগুণ আনন্দিত হয়ে মোনা’কে জড়িয়ে ধরে বলে,
-“উফ মোনালিসা! কি রোমাঞ্চকর ব্যাপার। আমি ভাবতেই পারছি না। কিন্তু আমেরিকা তো অনেক বড়, পুরোটা ঘুরবো কিভাবে?”
এর ভিতর ক্লাসে স্যার আসে। মোনা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো, স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। ক্লাস শেষে আজ থেকে জব। নতুন চাকরি, মোনার এ বিষয়ে কোন অভিজ্ঞতা নেই। জ্যাক অনেক ভালো ভালো জবের অফার করেছে। কিন্তু মোনা রাজি হয়নি। কোন এক্সপেরিয়েন্স নেই, এডুকেশনাল স্কিল বলতে শুধু এইচএসসি পাস। জ্যাকের সুপারিশ চাকরি হতো কিন্তু পরে তো ঝামেলায় পড়তে হতো।
মোনা ভার্সিটি থেকে বের হয়ে কিছুদূর আসার পর দেখলো প্রিয়ম দাঁড়িয়ে আছে গাড়ি নিয়ে। মোনা ভেবেছিল প্রিয়ম এগিয়ে আসবে কথা বলতে। কিন্তু না, আসে নি। দূর থেকে তাকিয়ে আছে। প্রিয়মের সাথে ওর দুই’টা বন্ধুও আছে। প্রিয়মের উদ্দেশ্য কি? মোনা বুঝতে পারছে না। এখানকার ওপেন মাইন্ডেড মেয়েদের রেখে হঠাৎ মোনার প্রতি আকৃষ্ট হলো কেন? মোনা অবচেতন মনে এসব ভাবছে। প্রিয়ম কে যতই অবজ্ঞা করুক না কেন মাঝে মাঝে প্রিয়মের বিষয়টা খুব ভাবায়।
মোনা যেতেই একটা ছেলে এগিয়ে আসলো। ছেলেটার নাম লরি। আমেরিকা এসেছে লেখাপড়া করতে। লরিও পার্ট টাইম জব করে। সেই সুবাধেই লরি মোনার প্রতি একটু বেশি যত্নশীল হলো। সব কাজ বুঝিয়ে দিলো। ছেলেটা অনার্গল হিন্দি বলছে। মোনা বলল,
-“আমি হিন্দি বুঝি না।”
ছেলেটা হাসলো। ইংরেজি তে বলল,
-“এতক্ষণ যা বললাম সব বৃথা তাহলে?”
মোনা কাজের প্রতি মনোযোগী হলো। লরি আর মোনা এক ভার্সিটিই পড়ে। লরি দুই ব্যাচ সিনিয়র। এখানকার সবার চেহারা মোনার একই রকম মনে হয়, মোনা মনে রাখতে পারেনা। মোনার শুধু মনে হয় জ্যাকের চেহেরা একটু অন্যরকম। বাঙালিদের চেহেরায় আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে, এখানকার মানুষের চেহেরায় কোন আলাদা বৈশিষ্ট্য খুঁজে পায়না মোনা। এক ধাঁচের চেহেরা মনে হয়।
মোনার বাসায় ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে রাত হয়।নিশানের জন্য মনের মধ্যে সব সময় দুশ্চিন্তা বিরাজ করে। এখন নিজের হাতে খাওয়া শিখছে নিশান, খাবার প্লেটের চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে। মোনার শরীরে ক্লান্তি ভর করেছে খুব। নিশান মোনা’কে দেখে অভিমানে গাল ফুলিয়ে থাকে। নিশানের বড় বড় চোখ দুটো’তে হালকা লালচেভাব ফুটে উঠে। মোনা রাগি স্বরে বলে,
-“নিশান তুমি আবার কেঁদেছো? বলেছি না কাঁদলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিবো।”
নিশানের কান্না বেড়িয়ে আসতে চায়। নিশান জোরপূর্বক কান্না থামাতে চাওয়ার ফলে ঠোঁট দুটো কাঁপছে, দিঘির অতল জলে মৃদু হিমেল হাওয়া লাগলে যেরকম ভাবে কাঁপে ঠিক সেরকমই। মোনা নিশানের গালে, কপালে চুমু খেয়ে বলল,
-“তোকে সারাজীবন আমার কাছে রাখবো, আমার শ্বশুর বাড়ি তোকে নিয়ে যাবো। কান্নাকাটি বন্ধ কর এখন,খুশি?”
নিশানের চোখ বেয়ে অবাধ্য দুই ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল। নিশানের এই কষ্ট ভীষণভাবে যন্ত্রনা দেয় মোনা’কে। নিজের যন্ত্রনার বহিঃপ্রকাশ মোনা করে না। নিশানের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,
-“আচ্ছা নিশান চল, আমরা দুই জনে মিলে কেক বানাই।”
নিশানের কান্না অবশেষে থামলো। ফ্যাকাশে মুখ’টা তে উজ্জ্বলতার ছাপ দেখা দিলো। এই ক্লান্ত শরীরে মোনার মোটেও ইচ্ছে করছে না কিচেনে যেতে, তবুও নিশানের মন ভালো করতে যেতে হবে।
মোনা কিচেন থেকে এসে বিশ্রাম নেয়। তারপর বই নিয়ে বসে। বইয়ের ভিতর থেকে একটা রঙিন চিঠির খাম বের হয়। মোনা ভ্রু কিঞ্চিৎ কুঁচকে তাকায়। খামের ভিতর থেকে চিঠি’টা বের করে।
কৃষ্ণকলি,
তোর কুচকুচে কালো গায়ের রঙে আমি শুভ্রতা খুঁজে পাই। কে বলেছে তোকে কালো? তোর পুরো শরীর’টা কাজল রাঙা, কাজলে কি কোন মেয়ে’কে অসুন্দর লাগে বল? তোর কালো চোখের পাতায় গাঢ় করে দেওয়া কাজল আমি সূক্ষ্ম দৃষ্টি দিয়ে আবিষ্কার করবো। তোর কাজল রাঙা কপালে দেওয়া কালো টিপ আমি আমার নিখুঁত ভালোবাসার নিপুণ চাহনি দিয়ে অন্বেষণ করবো।হৃদয়ের সূর্য মন্দিরের দেবী তুই, মুগ্ধদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আমার তোর পূজা দিবো। তোর গায়ের রং নিয়ে তো অভিযোগ নেই। তোর কালো রংটা কে ই আমি ভালোবেসেছি। তুই কেন অযথা‌ মন খারাপ করিস?তোর মন খারাপে আকাশের চাঁদটা ম্লান হয়ে যায়, তুই দেখিস?তোর কান্নায় গগণের নক্ষত্র গুলো খসে পড়ে যেন। আমার কলিগরা তোকে নিয়ে উপহাস করেছে,আমি ওঁদের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছি। লোকের কথা কানে নিয়ে আমাদের সম্পর্কে আমরা কেন সমস্যা টেনে আনবো? তুই ফোন অফ করে রেখেছিস, কোন যোগাযোগ করছিস না। শ্রুতি আমি কিন্তু দম বন্ধ হয়ে মারা যাবো। আমি মারা গেলে সে দায়ভার কে নিবে?
(সমীর)
মোনার চিঠিটা পড়া শেষ হতেই শ্রুতি ফোন দিয়ে উতলা গলায় বলল,
-“এই মোনালিসা, আমার একটা বই বোধ হয় ভুলে তোমার কাছে নিয়ে চলে গেছে। বই’টা যেভাবে আছে, ওভাবেই রেখে দেও।”
মোনা অপ্রস্তুত ভাবে বলল,
-“হ্যাঁ এসেছে তো।”
উৎকণ্ঠিত হয়ে শ্রুতি বলল,
-“প্লীজ বইটা খুলো না।”
-“আচ্ছা।”
মোনা ফোন রেখে নিজের কর্মকাণ্ডের জন্য নিজেই লজ্জিত হয়। কারো চিঠি পড়া উচিত না, একদম অনুচিত কাজ। মোনা বুঝতে পারেনি এটা শ্রুতির বই। ও’র বইয়ের ভিতর চিঠি,এই ভেবে পড়তে শুরু করেছে। পড়া শেষে বুঝলো এটা শ্রুতি’কে দেওয়া সমীরের চিঠি। চিঠি’টা এতই মোহনীয় মনে হয়েছে মোনা পুরো’টা পড়ে ফেললো। মোনা চিঠি’টা যত্ন করে ভাঁজ করে খামে ঢুকিয়ে যেভাবে ছিলো সেভাবেই রেখে দিলো। মোনার শরীর জুড়ে রোমাঞ্চকর অনুভূতি উপলব্ধি হচ্ছে। কত আবেগ, অনুভূতি মিশ্রিত চিঠি।

মোনা সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিনকার অভ্যাস মতো আড়মোড়া ভেঙ্গে বসলো। তারপর এলোমেলো হয়ে থাকা চুল গুলো গোছানোর চেষ্টা করল। চোখ খুলতে ইচ্ছে হচ্ছে না, চোখ বুঁজেই বালিশের কাছে রাখা ফোনটা খুঁজলো। মোনা তাড়াতাড়ি বিছানা ছাড়ল। কিচেনে রাখা থালা দুটো ধুয়ে, ফ্রেশ হয়ে নাস্তা বানালো। কলিং বেল বাজছে, মোনা নিশান’কে দরজা খুলতে বলল। মোনা রান্নাঘর থেকে প্রিন্সের মৃদু চিৎকারের শব্দ পেলো। মোনা দ্রুত পায়ে রুমে এসে উৎফুল্ল হয়ে বলল,
-“প্রিন্সেস।”
প্রিন্সেস জ্যাকের কোল থেকে মোনার কোলে যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। মোনা বলে,
-“ওয়েট, ওয়েট হাত ধুয়ে আসছি।”
হাত ধুয়ে এসে মোনা প্রিন্সেস’কে কোলে নিয়ে জ্যাক’কে বসতে বলে। মোনা প্রিন্সেস’কে কোলে নিয়েই কফি তৈরি করে। মোনার প্রিন্সেস’কে অসম্ভব রকমের ভালোলাগে। কিছুক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পর জ্যাক বলে,
-“মোনালিসা আপনার তো ভার্সিটি তে যেতে হবে,আমরা উঠি।”
জ্যাক কৌতুক করে আবার বলল,
-“নাকি প্রিন্সেস’কে নিয়ে যাবেন ভার্সিটি তে?”
মোনা হাসলো। জ্যাকের চোখ গেলো দেয়ালের দিকে। মোনার দিকে তাকিয়ে বলল,
-“আর্টও পারেন দেখছি।”
-“না আমি আর্ট পারিনা,ওসব আমায় দিয়ে হয়না। নিশান এঁকেছে।”
জ্যাক চমকে গিয়ে বলল,
-“ও মাই গড! রিয়েলি? আমরা একটা আর্ট স্কুল আছে ছোটখাট। আমার স্ত্রী আঁকতে পছন্দ করত। ওঁর সেই প্রবল আগ্রহ থেকেই স্কুল’টা খোলা হয়েছে। আপনার ভাই’কে সেখানে ভর্তি করিয়ে দিই? এইটুকু ছোট বয়সে এত ভালো আঁকে!”
মোনা মাথা নাড়ালো। মোনা ওইদিন ভেবেছিল স্কুলে ভর্তি করানোর কথা। মোনা যা ভাবে তা ই যেন জ্যাকের মাধ্যমে ম্যানেজ হয়ে যায়। মিরাকেল!
মোনা কে জ্যাক ভার্সিটি তে পৌঁছে দেয়। মোনা ভার্সিটিতেই যেতেই শ্রুতি বলে,
-“এই মোনালিসা আমার বই দেও তাড়াতাড়ি।”
মোনা বইটা দিলো। চিঠি’টা পড়ার কারণে মোনার এখন অপরাধ বোধ হচ্ছে। শ্রুতি বইটা হাতে নিয়ে পৃষ্ঠা উল্টিয়ে দেখলো চিঠি’টা আছে কিনা।
-“মোনা আজ আমি ক্লাস করব না। সমীরের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছি, ও’কে একটু টাইম দিতে হবে।”
-“হোয়াট? মাথা ফাটিয়ে দিয়েছো?”
শ্রুতি অপরাধ বোধ করছে যেন। অনুতপ্তের সুরে বলে,
-“আর বলো না, আমি রাগ কন্ট্রোল করতে পারিনা কিছুতেই। একদম আউট অফ কন্ট্রোল। আমার সাথে একটু ঝগড়া হয়েছে, ঝগড়া হয়েছে বলতে আমিই ঝগড়া করেছি। এক পর্যায়ে অনেক রেগে ওর কপালের উপর ফোন ছুঁড়ে ফেলি।”
মোনা হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল। বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে রইল শ্রুতির দিকে। শ্রুতি চলে গেলো। শ্রুতি হয়ত এই বইটার জন্যই এসেছে। ভার্সিটিতে কথা বলার মত একজন মানুষ হলো, তাও এবনরমাল। আজ আবার একা হয়ে গেলো মোনা।
ভার্সিটি শেষে কাজে গিয়েছে । পার্ট টাইম জব, ঘন্টা হিসেবে বলার। আজ লরা আসেনি। তাই নিয়ে মালিক খুব রেগে আছে। মোনা কাজ শেষে প্রতিদিনের মত ক্লান্ত বাসায় ফিরে।‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌ বাসায় ফিরেই দেখবে নিশান কেঁদে চোখ ফুলিয়ে আছে। ক্লান্ত ভর করা শরীর নিয়ে কিছু একটা করে নিশানের মন ভালো করতে হবে। মোনা বাসায় ফিরতেই নিশান ওর হাতে একটা কার্ড ধরিয়ে দেয়। মোনা নিশানের দিকে প্রশ্নবিদ্ধ দৃষ্টিতে তাকায়, নিশান ইশারায় কার্ড খুলে দেখতে বলে। প্রিয়মের বার্থ ডে কার্ড। মোনা নাক মুখ কুঁচকে জিজ্ঞেস করে,
-“কে দিয়ে গেছে খালা?”
নিশান মাথা ঝাঁকিয়ে হ্যাঁ বলে।
-” প্রিয়ম ভাই এসেছিল?”
নিশান ঘাড় বাঁকিয়ে না বলে। মোনা কার্ড’টা রেখে দেয়। মোনা আজকাল একটা বিষয় খেয়াল করেছে, প্রিয়ম মোনার দিকে দূর থেকে তাকিয়ে থাকে। মোনার সামনে এসে কথা বলে না। আবার আগের মত বাসায়ও আসে না।
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here