#মেঘের_আড়ালে_মেঘ”৩৭”
#জেরিন_আক্তার_নিপা

ইরফান তার স্টাডি রুমে জানালার কাছে দাঁড়িয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে ছিল। মেহরীন তার জন্য চা নিয়ে ভেতরে ঢুকে। আজ কত বছর পর যেন সে নিজের হাতে ইরফানকে চা করে দিচ্ছে। অথচ মাত্র তিনটা দিনের কথা। তিনটা দিনই যেন তিন যুগ মনে হচ্ছে। ইরফান মেহরীনের উপস্থিতি টের পেয়ে একবার পেছন ঘুরে দেখল। মেহরীন ওর হাতে চায়ের কাপ দিয়ে চুপ করে ইরফানের পাশে দাঁড়িয়ে রইল। ইরফান ভীষণ তৃপ্তি করে চায়ের কাপে ঠোঁট ছোঁয়াল। দু’জনের কেউই কোন কথা বলছে না। কী বলবে খুঁজে পাচ্ছে না যেন। ইরফান মেহরীনের অস্বস্তি বুঝতে পারছে। মেহরীন ইতস্তত করছে। ইরফান নিজে থেকেই জিজ্ঞেস করল,

“আয়াম ঘুমোচ্ছে? ”

“হুম।”

মেহরীন মাথা নিচু করে হাতের নখ খুঁটছে। ইরফান আড়চোখে ওকে দেখল। একটা রাতে যেন মেহরীনের উপর দিয়ে কত ধকল গেছে। চোখ মুখ কেমন নিস্তেজ লাগছে। মেয়েটা ভয় পেয়েছে অনেক। অনন্ত হঠাৎ এমন কিছু করবে তা ইরফানও ভাবেনি।
এভাবে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়তো মেহরীনেরও অস্বস্তি লাগছে। যেন হঠাৎ করে কোন কাজের কথা মনে পড়ে গেছে এমন ব্যস্ত গলায় বলল,

“আমি যাই। আয়াম ঘরে একা আছে। ঘুম ভেঙে গেলে আমাকে না দেখে ভয় পাবে।”

মেহরীন চলে আসতে নিলে ইরফান পেছন থেকে ওর হাত ধরে ফেলল। মেহরীনের হাত ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে এসে বলল,

“আমার থেকে পালানো হচ্ছে! ”

মেহরীন নিচের দিকে মুখ করে আছে। ইরফান ওর দুই হাত নিজের হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরে বলল,

“আমার দিকে তাকাও। কই ফিরো আমার দিকে। মেহরীন, তুমি কি এখনও আমার উপর রাগ করে আছো? আমি তো সরি বলেছি…

ইরফান কথা শেষ করার আগেই মেহরীন ছলছল নয়নে ওর চোখের দিকে তাকাল। মেহরীনের চোখের কোণে জল। এক্ষুনি হয়তো কেঁদে ফেলবে। ইরফান অবাক হয়ে বলল,

” এই কাঁদছো কেন? দেখো তো, আমি কান্না করার মত কী বললাম! আমি কি তোমাকে বকেছি?”

এবার সত্যি সত্যিই মেহরীন কেঁদে ফেলল। তার গাল বেয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। কান্না জড়িত গলায় হেঁচকি তুলতে তুলতে মেহরীন বলল,

“আমাকে আপনি ক্ষমা করে দিবেন। অতটা রাগ করা আমার উচিত হয়নি। আমি বাড়ি ছেড়ে না গেলে এসব কিছুই হতো না। আর আমার জন্য আপনারাও অতটা কষ্ট পেতেন না।”

ইরফান স্নেহভরে মেহরীনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিল। মেহরীন ইরফানের বুকে মুখ গুঁজে কাঁদতে লাগল। ইরফান তাকে বাধা দিল না। থামানোও চেষ্টা করল না। কাঁদুক, আজই মেহরীনের শেষ কান্নার দিন। আজকের পর ইরফান আর কখনও ওর চোখে পানি আসতে দেবে না।
.
পরের দিন সকালে। আজ ছুটির দিন। ইরফান আয়াম সবাই বাড়িতেই আছে। মেহরীন আজ কতদিন পর নিজের রান্নাঘরে পরিবারের সবার জন্য খাবার বানাচ্ছে। মাঝের কয়টা দিনের কথা মনে পড়লেই তার বুক কেঁপে উঠে। অজানা এক ভয়ে হাত পা অবশ হয়ে আসে। মেহরীন অন্যমনস্ক হয়ে কাজ করছে কখন যে ইরফান এসে ওর পেছনে দাঁড়াল মেহরীন খেয়ালই করেনি। ইরফান কতক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে মেহরীনকে দেখল। না, বউটা এত বেখেয়ালি কেন? তার উপস্থিতি টেরই পাচ্ছে না। হঠাৎ ইরফান পেছন থেকে মেহরীনের কোমর জড়িয়ে ধরলে, মেহরীন কারো স্পর্শে ভয় পেয়ে ঝট করে পেছন ফিরে উঠে। এতে মেহরীনের আটা মাখানো হাত ইরফানের মুখে লেগে গিয়ে ইরফানের মুখেও আটা লেগে যায়। তা দেখে মেহরীন খিলখিল করে হেসে ফেলে। হাসতে হাসতে ভেঙে পড়ে সে। ইরফান মুগ্ধ নয়নে তাকে দেখে।

“উচিত হয়েছে। একদম ঠিক বিচার হয়েছে। বাবাহ! কী ভয়টাই না পাইয়ে দিয়েছিলেন! এভাবে ভূতের মত এসে পেছন থেকে ভয় দেখালে এমনই হবে। আটা ভূত… হি হি

মেহরীনের প্রাণখোলা হাসি দেখে ইরফানও মৃদু হাসল। হুট করে মেহরীনের দুই হাত কোমরের পিছনে নিয়ে আটকে ধরে ওকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বলল,

” খুব হাসি পাচ্ছে, না? আমি কি তোমাকে ভয় পাওয়ানোর জন্য পেছন থেকে জড়িয়ে ধরেছিলাম? তুমি না বুঝে শুধু শুধু ভয় পেলে আমার কী দোষ হুম!”

মেহরীনের মুখ থেকে হাসি চলে গেল। হাসির বদলে লজ্জায় লাল নীল হতে থাকল সে।
এর আগে ইরফান কখনও মেহরীনের এতটা কাছে আসেনি। আজ হঠাৎ ইরফানের এতটা খোলামেলা আচরণে মেহরীন হকচকিয়ে গেল। এই মুহূর্তে কী বলবে বা কী করবে ভেবে পাচ্ছে না সে। মেহরীনের মুখের ভাব দেখে মনের অবস্থা ঠিকই বুঝতে পারছে ইরফান। তবুও আগের মত করেই বলল,

“কী হলো, কথা বলছো না কেন? ”

ড্যাবড্যাব চোখে রোবটের মত মেহরীন উচ্চারণ করল,

“কী বলব?”

“কী বলবে মানে? আমাকে যে আটা ভূত বানিয়ে দিলে… এর জন্য কী শাস্তি দেব তোমাকে?”

মেহরীন ভয় পেয়ে ঢোঁক গিলে বলল,

“শাস্তি! ”

“হুম শাস্তি। বলো তো তোমাকে কী শাস্তি দেওয়া যায়।”

এতক্ষণ মেহরীন শান্ত মেয়ের মত ইরফানের বাঁধনে আটকে দাঁড়িয়ে থাকলেও শাস্তির কথা শুনে ছোটার জন্য ছটফট করতে লাগল। ইরফান চোখ পাকিয়ে শাসানোর ভঙ্গিতে বলল,

“এ্যাই… এরকম চিংড়ি মাছের মত ছিট পারছ কেন? ভদ্র মেয়ের মত দাঁড়াও। নইলে শাস্তির মাত্রা বেড়ে যাবে।”

“না, না। আমাকে ছাড়ুন প্লিজ।”

“কেন? ”

“কেউ এসে পড়বে।”

“আসুক।”

“আসুক! বাবা বা আয়াম এসে আমাদের এভাবে দেখে ফেললে!”

“দেখুক। আমার নিজের বউ। অন্য মানুষের বউয়ের সাথে আছি নাকি? আজব!”

“আমার লজ্জা লাগবে। ছাড়ুন প্লিজ।”

“লজ্জা কিসের? আমি তোমার স্বামী না! বাবাও আমাদের বয়সে নিজের বউকে জড়িয়ে ধরেছে। আয়ামও এই বয়সে নিজের বউকে জড়িয়ে ধরবে। আমরা কি ওদের বাধা দিয়েছি? তাহলে ওরা কেন আমাদের বাধা দিবে! বউকে জড়িয়ে ধরার সবার স্বাধীনতা আছে।”

ইরফানের এসব কথা শুনে মেহরীন আরও লজ্জা পাচ্ছে। লোকটার আজ হলোটা কী হ্যাঁ! মেহরীনের লজ্জায় মরে যাওয়ার দশা এটা কি উনি বুঝতে পারছেন না! সকাল সকাল এমন করছে কেন?

“আপনি আসলেই অসহ্য। কেউ এসে দেখে ফেললে আমি কিন্তু লজ্জায় ওদের সামনে পড়তে পারব না। তার থেকে ভাল আপনি আমাকে ছাড়ুন।”

“না। ছাড়ব না। আমার বউ। আমি কাউকে লজ্জা পাব কেন? আমার ইচ্ছে হয়েছে বউকে জড়িয়ে ধরার। আমি এখনই ধরে থাকব। কেউ এসে দেখে ফেললে ওটা তার সমস্যা।”

“আয়াম কী চাই বাবা?”

মেহরীন দরজার দিকে তাকিয়ে কথাটা বললে, ইরফান ঝট করে মেহরীনকে ছেড়ে দিয়ে দু’হাত দূরে সরে দাঁড়াল। এই ফাঁকে মেহরীন দৌড়ে বেরিয়ে গেল। ইরফান বোকার মত হা করে দাঁড়িয়ে রইল। মেহরীন তাকে এভাবে বোকা বানিয়েছে! দরজার সামনে দাঁড়িয়ে হাসতে হাসতে মেহরীন বলল,

“খুব তো বলছিলেন, আমি কাউকে লজ্জা পাই না। বাবা আসুক, আয়াম আসুক। আমাদের এভাবে দেখুক। সব চাপা! এখন ছেলের নাম শুনেই হাওয়া ফুঁস!”

“তবে রে, দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা।”

ইরফান ছুটলে মেহরীনও বাবাগো বলে এক ছুট দিল।
.
সময় কাটতে লাগল। দেখতে দেখতে কয়েক সপ্তাহ পার হয়ে গেল। ইরফান আর মেহরীনের মাঝে সব ঠিকঠাক চলছে। মেহরীন তার স্বামী, সন্তান, শ্বশুর, সংসার সবকিছু নিয়ে ভালোই আছে। দিব্যি তার দিন গুলো সুখে, শান্তিতে, হাসিখুশি ভরে কেটে যাচ্ছে। ইরফান অফিস করে। আয়াম স্কুলে থাকে। মেহরীন বাসায় বাবার সাথে সময় কাটায়। এখন আর নাচের স্কুলে যায়না সে। মাঝে মাঝে হুমায়রা এসে তার সাথে আড্ডা দিয়ে যায়। মেহরীন বাড়ি থেকে তেমন একটা বের হয়না। সে জানে অনন্ত এখন জেলে। অনন্ত চাইলেও এখন আর ওর কিছুই করতে পারবে না। তবুও মনের ভয় দূর হয়না। তার বারবারই মনে হয়, বাড়ি থেকে বের হলে এই বুঝি অনন্ত এসে পথ আটকে সামনে দাঁড়াবে। তাকে সবার থেকে দূরে নিয়ে যেতে চাইবে। মেহরীন নিজেও বুঝে তার এই ভয়ের কোন মানে নেই। অনন্ত নামের কালো অধ্যায় তাদের জীবন থেকে পুরোপুরি মুছে গেছে। তবুও মেহরীন ভয় পায়। ভীষণ ভয় পায়। অনন্তর নাম সে মুখে নেয় না। সেই অভিশপ্ত দিনগুলোর কথা যত ভুলে থাকা যায় ততই ভালো। ওসব কথা মনে পড়লে আজও ভয়ে তার গায়ের লোম দাঁড়িয়ে ওঠে। অনন্তর কথা জানতে চায়না সে। সত্যিই কি অনন্ত শেষমেশ পাগল হয়ে গিয়েছিল! না, না। অনন্ত নামের কেউ কখনও তার জীবনে আসেনি। সবই দুঃস্বপ্ন। বর্তমান নিয়ে ভাববে সে। ছেলে, স্বামী নিয়ে নিজের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা ভাবতে চায়।
.
এক মাস পর,
মেহরীন দরজা খুলে হাসি মুখে বলল,

“আমার বাবাটা চলে এসেছে।”

আয়াম মেহরীনের দিকে না তাকিয়ে কাঁধ থেকে ব্যাগ ফেলে গোমড়া মুখে ভেতরে ঢুকল। মেহরীন ছেলের গোমড়া মুখ দেখে বুঝল আয়াম রাগ করেছে।

” রাগ করেছ বাবু? মাম্মীর সাথে কথা বলবে না আয়াম? আমি তোমার দাদুকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। তাই তোমাকে আনতে যেতে পারিনি।”

আয়াম কোন কথার উত্তর দিল না৷ সে সোজা ঘরে গিয়ে ঢুকল। মেহরীনও পেছন পেছন গেল।

“ও আয়াম, কী হয়েছে? স্কুলে বন্ধুদের সাথে ঝগড়া হয়েছে? কেউ কিছু বলেছে তোমাকে? মেরেছে?”

“উঁহু।”

মেহরীন স্বস্তির শ্বাস নিল। জিজ্ঞেস করল,

“তাহলে? ”

আয়াম চুপ করে থাকল। মেহরীন নানা ভাবে তার পেট থেকে কথা বের করতে চাইছে।

“কিছুই হয়নি? বন্ধুদের সাথে ঝগড়া হয়নি। ম্যামরা বকেনি। কেউ মারেনি। তাহলে এরকম মুখ গোমড়া করে আছো কেন?”

“মাম্মী…

” হুম বাবু বলো।”

“মাম্মী জানো, আজ না, স্কুলে না…

” হ্যাঁ, আজ স্কুলে কী? বলো।”

“আজ স্কুলে রিজভীর আম্মু ওর বোনকে নিয়ে এসেছিল। আমি রিজভীর কাছে ওর বোনকে একটু কোলে নিতে চেয়েছি, রিজভী আমাকে দেয়নি। ও বলে, আমি নাকি ওর বোনকে ফেলে দেব। তুমিই বলো মাম্মী, আমি কি ওর বোনকে ফেলে দিতাম? আমি কি এখনও ছোট? আমি বড় হয়েছি না? তবুও রিজভী এমন বলেছে।”

আয়ামের কষ্টের আসল কারণ এটা! মেহরীন ছেলের বাচ্চামি দেখে হেসে ফেলল।

“আমি আর রিজভীর বোনকে কোলে নেব না। তুমি আমাকে একটা বোন এনে দিবে৷ সেই বোনকে আমি কোলে নেব৷ ওর সাথে খেলব। আমার সব টয় ওকে দিয়ে দেব। বলো মাম্মী আমাকে একটা বোন এনে দিবে।”

মেহরীন হাসছে। কী বলবে ভেবে পাচ্ছে না সে। আয়াম যা জেদি! এখন হ্যাঁ বললে যতক্ষণ না বোন এনে দিবে ততক্ষণ জেদই করে যাবে। আর না বললেও মন খারাপ করে থাকবে।

“এই কারণে তোমার মন খারাপ?”

“হ্যাঁ। ভীষণ মন খারাপ। আমি রিজভীর সাথে আর কখনও কথা বলব না৷ একটুও মিশব না।”

মেহরীন শব্দ করে হাসছে।

“তুমি তো একটু আগে বলছিলে, তুমি বড় হয়ে গেছ। বড়রা কি তোমার মন এমন রাগ করে? আমি করি? পাপাও করে না। বন্ধুদের সাথে মিলেমিশে থাকতে হয় বাবা।”

“রিজভী আমার বন্ধু না। বন্ধু থাকলে ওর বোনকে একটু দিলে কী হতো!”

“তুমি ফেলে দিলে বাচ্চাটা ব্যথা পেত। ও ওর বোনকে নিয়ে ভাবে, তাই দেয়নি। ভাইয়েরা এমনই হয় সোনা। বোনকে অনেক ভালোবাসে।”

“আমিও আমার বোনকে অনেক ভালোবাসব। তুমি আমাকে রিজভীর বোনের থেকেও সুন্দর একটা বোন এনে দিবে। কিউট গুলুমুলু পুতুলের মত একটা বোন।”
.
রাতে ইরফান যখন ঘরে ফিরল তখন মেহরীন ড্রেসিংটেবিলের সামনে বসে চুল আঁচড়াচ্ছে। আয়নায় ইরফানকে দেখল সে। মুড ভালোই আছে। ইরফান আড়চোখে মেহরীনকে দেখে বলল,

“আয়াম আজও কি বাবার সাথে ঘুমিয়েছে?”

“হুম।”

মেহরীন ভাবছে ইরফানকে কীভাবে কথাটা বলবে। ওকে অন্যমনস্ক দেখে ইরফান এগিয়ে এলো। পেছন থেকে মেহরীনের গলা জড়িয়ে ধরে ঝুঁকে বলল,

“কী হয়েছে?”

“কিছু না।”

“তাহলে মুখটা এমন দেখাচ্ছে কেন? কিছু বলবে?”

“হুম।”

ইরফান মেহরীনের চুলে নাক ঘষছে। মেহরীন ইতস্তত করে বলল,

“শোনো না।”

“শুনছি বলো।”

“আজ স্কুল থেকে ফিরে আয়াম কী বলছিল জানো।”

“না বললে জানব কীভাবে?”

মেহরীন উঠে ইরফানের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেল।

“ইশ একটু মনোযোগ দিয়ে শোনো না।”

ইরফান ওকে কাছে টেনে নিয়ে বলল,

“আমার সব মনোযোগ তো তোমার উপরই।”

“আয়াম আমার কাছে ওর জন্য একটা বোন চাইছিল।”

“কী চাইছিল?”

“বোন, বোন। সিস্টার। ও আর কতদিন একা একা খেলবে বলো৷ ওর একজন খেলার সাথী দরকার না। তোমার ছেলে বড় হয়ে যাচ্ছে। বোনের সাথে খেলনা শেয়ার করবে বলছিল৷ বোনকে নাকি অনেক আদর করবে৷ এবার আমাদের ওকে একটা বোন দেওয়া উচিত। কী বলো?”

ইরফান মেহরীনকে ছেড়ে দিল। মেহরীন এখনও ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। ইরফান দৃষ্টি সামনের দিকে রেখে গম্ভীর গলায় বলল,

“আমাদের একটা ছেলে আছে মেহরীন। আর ছেলেমেয়ের দরকার কী? আয়ামের বোন লাগবে না। ওকে বুঝিয়ে বললেই বুঝবে।”

“কিন্তু…

মেহরীনের আর কোন কথা না শুনে ইরফান ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। মেহরীন দীর্ঘশ্বাস ফেলল। ও যা ভেবেছিল তেমনই হয়েছে।

চলবে___

মায়ামহল (নিপা’র গল্প)

পাঠক হলে গ্রুপে জয়েন রিকু দিলে অবশ্যই প্রশ্নের উত্তর দিবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here