গল্প:-মনের মহারাণী
লেখিকা:-Sohani_Simu
পর্ব:-০৬
শপিং থেকে এসেই সব ব্যাগ গুলো ড্রইংরুমে ফেলে রুমে এসে দরজা বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে পরলাম।উমান ভাইয়ার উপর খুব রেগে আছি আমি।শপিংয়ে গিয়ে কোচিং এর দুটো ছেলে ফ্রেন্ডের সাথে দেখা হয়েছিল।আমি ওদের সাথে হ্যান্ডশেইক করে একটু কথা বলেছি সেজন্য উমান ভাইয়া আমাকে সবার সামনে থাপ্পড় মেরেছেন।এখন উনি দরজা ধাক্কাচ্ছেন আর রাগী কন্ঠে বলছেন,
‘মিতি দরজা খোল।দরজা কেন বন্ধ করেছিস?বাহিরে আয় কথা আছে তোর সাথে।মিতি?মিতি?দরজা খোল।আমি কিন্তু রেগে যাচ্ছি।মিতি?কি করছিস?কথা কানে যাচ্ছে না?দরজা খোল বেয়াদব!’
আমি বেডসাইড টেবিল থেকে এলার্ম ঘড়িটা নিয়ে দরজায় ছুড়ে মেরে চেঁচিয়ে বললাম,
‘খুলবোনা দরজা।ঘুম পাচ্ছে আমার,ডোন্ট ডিস্টার্ব।’
উনি আরও জোরে দরজা ধাক্কিয়ে বললেন,
‘খোল দরজা,আমি তিন পর্যন্ত গুনবো এর মধ্যে না খুললে তোকে আজ পুতে ফেলবো।খোল বলছি।মিতি?’
উনার একটা ধাক্কাতে দরজা সহ পুরো ঘর কেঁপে উঠছে।আমি একটু ভয় পেয়ে গেলাম।দরজা না খুললে উনি দরজা ভেঙ্গে ফেলবেন আর দরজা ভেঙ্গে ভেতরে এসে নিশ্চয় আবার আমাকে মারবেন।আমি একটা শুকনো ঢোক গিলে দ্রুত গিয়ে দরজা খুলে দিলাম।সাথে সাথে উমান ভাইয়া আমার দিকে তেড়ে আসলেন।আমার গলা চেপে ধরে আমাকে দেয়ালের সাথে দাঁড় করিয়ে বললেন,
‘আমাকে ভয় দেখাস?আমার ইমোশন নিয়ে মজা করিস?হাউ ডেয়ার ইউ?খুন করে ফেলব তোকে।’
আমি উনার হাতের উপর হাত রেখে ভীত চোখে উনার দিকে তাকালাম।রাগে উনার মুখ লাল হয়ে গিয়েছে।মাথার চুল গুলোও কেমন এলোমেলো দেখাচ্ছে।উনাকে খুব অস্থির দেখাচ্ছে।ঘেমে পুরো শার্ট ভিজিয়ে ফেলেছেন।উনি আমার গলা আরও জোরে চেপে ধরলেন ফলে আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হতে লাগলো।আমি অস্থির হয়ে উনার হাত সরানোর চেষ্টা করতে লাগলাম কিন্তু পারছিনা।উনি দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,
‘আমার কোন দূর্বল সাইড নেই।আমি একা,কেউ নেই আমার।তোকে বিয়ে করেছি দেখে ভাবিসনা আমি তোর প্রতি দূর্বল।তোকে মেরে পুতে ফেলতে দুমিনিটও লাগবেনা আমার।বুঝেছিস তুই?’
আমি উনার হাত ছেড়ে দিলাম। ছলছল চোখে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।কি বলছেন উনি?তাহলে কেন বিয়ে করেছেন উনি আমাকে?উনি কি আমাকে ভালোবাসেন না?ধূর আমিও না, কি সব ভাবছি।উনি কেন আমাকে ভালোবাসবেন?উনি নিশ্চয় টাকার জন্য আমাকে বিয়ে করেছেন।উনি আমাকে একটুও ভালোবাসেন না।ভাবতেই আমার খুব কান্না পাচ্ছে।উনার কথা শুনে খুব কষ্ট হচ্ছে।
উনি আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আমার গলা ছেড়ে দিলেন।আমার গালে হাত বুলিয়ে আমার দিকে ঝুকে নরম কন্ঠে বললেন,
‘ব্যথা করছে এখানে?আমি খুব সরি।ছেলেদের সাথে তোর এত কি হ্যা?খবরদার বলছি আর কখনও ছেলেদের হাত ধরবিনা।’
উনি আবার রেগে যাচ্ছেন।আমি মাথা নিচু করে বললাম,
‘মিনিকে এখানে নিয়ে আসুন।আমরা সিলেটে খালামুনির কাছে চলে যাব।’
উনি মুচকি হেসে বললেন,
‘মহারাণীর দেখছি খুব অভিমান হয়েছে।’
আমি মুখ কালো করে মাথা নিচু করেই থাকলাম।হঠাৎ উমান ভাইয়া আমাকে জড়িয়ে ধরে নরম কন্ঠে বললেন,
‘সরি আর বকা দিব না।’
আমার কি হল আমি জানিনা,উনাকে জড়িয়ে ধরে উনার পিঠের শার্ট দুইহাতে খামচে ধরে হুহু করে কান্না করে দিলাম।উনার কাছে একটু সহানুভূতি পেয়েই সব রাগ অভিমান ভুলে গিয়েছি।হঠাৎই উনাকে খুব আপন মনে হতে লাগলো।উমান ভাইয়া আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
‘স্টপ ক্রাইং।চল তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নে,বাইরে তো কিছুই খেলিনা,এখন আবার খাবি।
আমি উনাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে হেঁচকি তুলতে লাগলাম।এভাবে থাকতেই ভাল লাগছে।উনার হৃদস্পন্দন শুনতে পাচ্ছি।উনার বুকের ভিতরে অদ্ভুতভাবে ঢিপ ঢিপ করছে।চোখবন্ধ করে কান পেতে গভীর মনোযোগের সাথে শুনতে লাগলাম সেই সুরেলা ছন্দ।
যখন চোখ খুললাম দেখি আমি বিছানায় একপাশ হয়ে শুয়ে আছি।রুমে ডিম লাইট জ্বালানো আছে।জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি বাহিরে অন্ধকার।তারমানে রাত হয়ে গিয়েছে।আমি শোয়া থেকে উঠে বসলাম।আড়মোরা ভেঙ্গে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।এখন নিজেকে অনেক হালকা আর ফুরফুরে লাগছে।অনেকদিন পর এত ভাল একটা ঘুম দিয়েছি।উমান ভাইয়ার কথা মনে পরতেই দরজার দিকে তাকালাম।ড্রইংরুম অন্ধকার কিন্তু সাদা দরজায় লাল-নীল সরু আলোর রেখা এসে পরেছে।আমি ভ্রু কুচকে বিছানা থেকে নেমে দরজায় গিয়ে দাঁড়ালাম।সামনে তাকিয়ে রং-বেরং এর ঝকমকে আলো দেখেই চোখের উপর হাত দিয়ে আতংকিত হয়ে বললাম,
‘উফ্ বাবা!এসব কি?এত আলো কিসের?আমার চোখ।’
উমান ভাইয়ার কন্ঠ শুনতে পেলাম।উনি উত্তেজিত হয়ে বললেন,
‘মিতি?চোখ বন্ধ কর,তাকাস না।রুমে ঢোক।’
বলতে বলতে উনি আমার কাছে চলে এসেছেন।আমাকে ধরে রুমে এনে রুমের দরজা লাগিয়ে দিলেন।লাইট অন করে আমার গালে হাত দিয়ে বললেন,
‘দেখি তাকা আমার দিকে।দেখতে পাচ্ছিস?’
আমি উনার দিকে তাকালাম।সবকিছু কেমন অন্ধকার অন্ধকার দেখাচ্ছে।আমি হাত দিয়ে চোখ ডলবো তখনই উমান ভাইয়া আমার হাত ধরে বললেন,
‘ওয়েট ওয়েট তাকিয়ে থাক কিছুক্ষণ।’
প্রায় একমিনিট পর আমি সবটা ক্লিয়ার দেখতে পাচ্ছি। উমান ভাইয়া এখনও আমার দুইহাত ধরে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন।আমি উনার দিকে তাকালাম।উনি চোখে গগলস পরে আছেন।হাতে গ্লাভসও দেখছি।কি করছিলেন উনি!আমি তাকাতেই উনি আমার দিকে ঝুকে বললেন,
‘এখন ঠিক লাগছে?’
আমি মাথা নাড়ালাম।উনি আমার হাত ছেড়ে দিয়ে দরজা খুলে বললেন,
‘এখানেই থাকবি,একদম বাইরে আসবিনা,উকি ঝুকিও দিবিনা।আমি ডাকলে তারপর আসবি।’
উনি আমাকে ডাকলেন রাত দশটায়।আমি ভয়ে ভয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে দেখি লাল-নীল আলো আর নেই।উমান ভাইয়া ডাইনিং টেবিলে বসে প্লেটে খাবার বারছেন।উনি মনে হয় গোসল করেছেন কারন উনার চুলগুলো সব ভেজা।আমি ধীরে ধীরে হেঁটে গিয়ে উনার পাশে চেয়ার টেনে বসলাম।উনি আমাকে ভাতের প্লেট এগিয়ে দিলেন।সেখানে একগাদা সবজি আর সামান্য ডাল দিয়ে বললেন,
‘নে শুরু কর।সব খাবি।’
আমি জীবনেও ডাল খাইনা আর সবজি তো আমার কাছে অসহ্যকর একটা খাবার।আমি অসহায় মুখ করে ভাত নাড়াচাড়া করতে লাগলাম।উমান ভাইয়া নিজের প্লেটে ডাল নিয়ে সবজি দিয়ে ভাত মাখিয়ে আচমকা আমার মুখের সামনে ধরে বললেন,
‘হা কর।’
আমি নাক ছিটকে মাথা পিছিয়ে নিয়ে বললাম,
‘খাব না,খাইনা আমি এসব।’
উনি আমার মাথার পেছনে বাম হাত দিয়ে ধরে জোর করে আমাকে খাইয়ে দিলেন।আমার নাকে আর গালে খাবার লেগে যাচ্ছে তাও কোন কথা ছাড়াই উনি আমাকে উনার প্লেটের অর্ধেকটা খাবার খাইয়ে দিয়ে বললেন,
‘খাওয়া শেষ এবার গিয়ে ব্রাশ করে চুপচাপ ঘুমিয়ে পর,আমি ল্যাবে আছি।’
আমি ধড়মড় করে চেয়ার ছেড়ে উঠে বেসিনে গিয়ে গালে লেগে থাকা খাবার ধুতে লাগলাম।উমান ভাইয়া খেতে খেতে বললেন,
‘রুমে যেয়ে আমার ফোনটা চার্জে লাগাস তো।’
আমি মুখ ভেংচিয়ে বেসিনের কল অফ করে গট গট করে হেঁটে নিজের রুমে আসলাম।উমান ভাইয়া আমাকে উনার ফোন দেওয়ার জন্য ডাকছিলেন আমি পাত্তা দিইনি।রুমে এসে দরজা সামান্য ভিরিয়ে দিয়ে বিছানায় শুয়ে পরলাম।ভয় লাগছে।রাত হলেই আমার অনেক ভয় লাগে।উমান ভাইয়া মনে হয় আজ আমার সাথে থাকবেন না।আমি একা সারারাত কিভাবে এখানে থাকবো!ভেবেই উঠে বসলাম।ব্যালকনিতে কেমন যেন শব্দ হচ্ছে।মনে হচ্ছে কেউ উপরে উঠছে আর পায়চারী করছে।পরক্ষণেই মনে হল কোনো ভয় নেই ব্যালকনিতে গ্রীল লাগানো আছে সো কেউ আসতে পারবেনা।আমি সাহস করে ব্যালকনির দরজা লাগানোর জন্য বিছানা থেকে নেমে ব্যালকনির দরজার সামনে দাঁড়াতেই আমার সামনে কালো পোষাক পরা একটা লোক এসে দাঁড়ালো।আচমকা এমন হওয়ায় আমি চোখ খিচে বন্ধ করে ‘উমান ভাইয়া’ বলে পৃথিবী কাঁপানো একটা চিৎকার দিয়েছি।লোকটার মনে হয় আমার চিৎকার দেওয়া পছন্দ হয়নি।ঠাস করে আমার গালে চড় বসিয়ে আমার মুখ চেপে ধরলো।ভয়ে আমার হাত-পা অবশ হয়ে আসছে।আমাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে আমার গলায় ছুরি ধরে আমার মুখ থেকে হাত সরিয়ে দিয়ে বলল,
‘মুখ থেকে একটা সাউন্ড বের করলে গলা কেটে দিব।’
আমি থর থর করে কাঁপতে কাঁপতে বললাম,
‘ককককে আআআপনি?’
লোকটা এদিক-ওদিক তাকাতে লাগলো।পুরো রুম দেখে নিয়ে বলল,
‘সিডস গুলো কোথায় রেখেছিস?’
‘ককিসের সসসিডস?’
লোকটা আমার গলায় ছুরি বসিয়ে দিল।চামড়া কেঁটে গেছে বুঝতেই পারছি।তারপর লোকটা ছুরিতে লেগে থাকা সামান্য রক্ত আমার গালে মুছতে লাগলো।আমি পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।একটু নড়লেই গালও কেঁটে যাবে।গাল কাটার ভয়ে আমি নড়ছিনা আর বজ্জাত লোক আমার গালও কেটে দিল।বাম গালটা জ্বলে যাচ্ছে।লোকটা এবার ছুরিটা আমার পেটে ঠেসে ধরে আচড় দিতে দিতে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
‘জানিসনা কিসের সিডস?বাঁচতে চাইলে বল কোথায় রেখেছিস ওটা?’
আমার মুখ দিয়ে আর কোনও কথা বের হচ্ছেনা।পেটের কাছে হাত দিতেই ছুরি লেগে হাত কেঁটে গেল।লোকটা মনে হয় ছুরি চালানো স্পেশালিষ্ট।এমনভানে কাঁটছে যে ক্ষতগুলো বেশি গভীর হচ্ছেনা।শুধু চামরা কেটে যাচ্ছে।পেটের দিকে তাকিয়ে দেখি সাদা জামা লাল হয়ে গিয়েছে আর অনেকটা ছিড়ে গিয়েছে।আমি এখনও কিছু বলছিনা দেখে লোকটা এবার ছুরিটা আমার পেটে একটু ডেবে দিল।আমি চোখ খিচে আহ্ শব্দ করতেই দরজা থেকে উমান ভাইয়া বললেন,
‘আরে ভাইজান আপনি এসে গেছেন?এত লেইট করলেন কেন?কবে থেকে ওয়েট করছি।’
লোকটা চেঁচিয়ে বলল,
‘ওখানেই দাঁড়া,এগুবিনা।মেরে দিব কিন্তু একে।’
বলতে বলতেই লোকটা এক ঝটকায় আমাকে নিজের সামনে দাঁড় কড়ালো।একহাতে আমার মুখ চেপে ধরেছে আর অন্যহাতে আমার গলায় ছুরি ধরে উত্তেজিত হয়ে বলল,
‘ওখানেই দাঁড়া।নড়বিনা,হাত…’
উমান ভাইয়া দেয়ালে হেলান দিয়ে মেঝেতে বসে বললেন,
‘আচ্ছা নড়বো না।এই দেখুন বসলাম।আপনি শুধু মেয়েটাকে ছেড়ে দিন।বুঝেনই তো কোটি কোটি টাকার মালিক।মরে টরে গেলে আমিও কিছু পাব না আপনিও কিছু পাবেননা।ছেড়ে দিন ওকে।পাঁচবছর পর আসুন তখন নাহয় টাকা ভাগ করে নিব,ওকে?’
উমান ভাইয়ার কথা শুনে ঘৃণা হচ্ছে উনাকে আমার।যা ভেবেছিলাম তাই।শুধুমাত্র টাকা আর সম্পত্তির জন্য উনি আমাকে বিয়ে করেছেন।বাবা উনাকে বিশ্বাস করে আমাকে উনার কাছে পাঠিয়েছিল আর এই লোভী স্বার্থপর লোকটা আমাকে জোর করে বিয়ে করে নিল যাতে সবকিছু নিজের নামে করাতে পারে।লাইফটাই নষ্ট করে দিল আমার।আমি উমান ভাইয়ার দিকে ঘৃণার চোখে তাকালাম।উনি আমাদের দিকে সুপ্ত রাগ নিয়ে তাকিয়ে আছেন।এইদিকে এই লোকটা ছুরি চালাচ্ছে আর বলছে,
‘টাকা চাইনি আমি।ফর্মুলা দে চলে যাব।এই মেয়ে বাঁচলো কি বাঁচলোনা আই ডোন্ট কেয়ার।আই ওয়ান্ট সিডস অর ফর্মুলা।’
উমান ভাইয়া আমার পেটের দিকে তাকিয়ে চিন্তিত হয়ে দুই হাতে কপালের চুলগুলো মাথার উপর চেপে ধরলেন।জোরে জোরে শ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,
‘আমি কোথায় পাব ফর্মুলা?আমি নিজেই ওটা খুঁজছি।দেখুন আমি বিজনেসম্যান,আমি ওসব ফর্মুলা টর্মু্লা কিছু বুঝিনা।ওর বাবা মারা যাওয়ার আগে আমাকে বলেছিল ওই ফর্মুলা কিনে নিতে।আমার কাছে ওত টাকা ছিল না তাই আমি কিনতে পারিনি।পরে ওর বাবা ওটা বিদেশে বেঁচে দিয়েছে আর সব টাকা এই মেয়ের নামে করে গিয়েছে।সেজন্যই তো আমি এই মেয়ের পেছনে লেগে আছি যদি পটিয়ে পাটিয়ে বিয়ে টিয়ে করতে পারি,হোল লাইফ রাজার হালে চলে যাবে।’
বলতে বলতে উমান ভাইয়া নিজের পেছন থেকে কালো পিস্তল বের করে লোকটার দিকে ধরে বললেন,
‘ওকে ছেড়ে দে সাদ।আই নো এটা তুই।ওকে ছাড় আর চলে যা।’
লোকটা মৃদু হেসে আমার মুখ আরও শক্ত করে চেপে ধরে আমার ডানবাহুতে ছুরি চালালো।জামাসহ হাত কেঁটে গেল।আমি ছাড়া পাওয়ার জন্য ছটফট করছি কিন্তু লোকটার শক্তির সাথে পেরে উঠছিনা।লোকটা আবার ছুরিটা আমার গলায় ধরে কয়েকসেকেন্ডর মধ্যে আমার গলায়,গলার নিচে আর কাঁধে ছুড়ি চালিয়ে আমাকে ধাক্কা দিয়ে উমান ভাইয়ার দিকে ফেলে দিয়ে রুমের দরজায় গিয়ে দাঁড়িয়ে বলল,
‘চল ছেড়ে দিয়েছি,এবার ফর্মুলাটা দিয়ে দে ইয়ার।’
উমান ভাইয়া আমাকে জড়িয়ে ধরে রেগে লোকটার বুকে গুলি করে দিল কিন্তু লোকটার কিছু হল না কারন পিস্তলে গুলিই নেই।লোকটা হা হা করে হাসতে হাসতে বুকে হাত গুজে জোরে জোরে বলল,
‘নেক্সট টাইম এসে তোর বউকে তুলে নিয়ে যাব।দেখিস আমার ভয়ে আবার তোরা চাচা-ভাতিজা মিলে মেয়েটাকেও বিদেশে বেঁচে দিস না।মেয়েটাকে আমার খুব পছন্দ হয়েছে।ওকে পেলে তোদের ছেড়ে দিব..।’
লোকটা আরও কিছু বলছিল কিন্তু আমি আর কিছু বুঝতে পারলাম না।সবকিছু ঘোলা হতে হতে একসময় অন্ধকার হয়ে গেল।
চলবে………………