ভালোবাসার_রোজ[পর্ব -০১]
আফরোজা_আনজুম

বন্ধুদের সাথে ঘুরতে এসে এভাবে ধরা পড়ে যাবে ভাবিনি। ভয়ে মুখের ফুচকা না গিলতে পারছি, না ফেলতে পারছি। সামনে জম দাঁড়িয়ে আছে। এর আজকেই আসতে হলো! সামি আর রানার দিকে তাকিয়ে দেখলাম দুজনের মুখে ভয় স্পষ্ট। ভয় পাওয়ারই কথা। নিঠুল ভাইয়ের মার খেয়েছে বেশিদিন হয় নি। মার খাওয়ার মতো অন্যায় করেছিল সামি। সে একটু দুষ্টু প্রকৃতির। কিন্তু মাঝে মাঝে সীমা ছাড়িয়ে ফেলে নিজেও বিপাকে পড়ে, অন্যকেও ফেলে।এইতো কিছুদিন আগে ফেসবুকে কোনো এক ছেলের সাথে প্রেম করছিল মেয়ে সেজে।প্রেমের একপর্যায়ে ছেলেটি ছবি চায় সামির।সামি আগপিছ না ভেবেই তার মোবাইলে থাকা আমার একটা ছবি দিয়ে দেয়। বেশ কিছুদিন পর যখনই দেখলো ছেলেটা সিরিয়াস পর্যায়ে চলে গেছে তখনই সামি যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এইসব কিছু আমার অজানা ছিল। সমস্যা শুরু হয় তারপর থেকে। ছেলেটা প্রেমের টানে চলে আসে আমাদের কলেজে।হন্য হয়ে খুঁজতে থাকে আমার ছবি দেখিয়ে। আমাকে দেখতে পেয়ে পাগলের মতো আচরণ শুরু করে। কিছু না জানা আমি এসব অস্বীকার করলে সে সামির ফেইক আইডি থেকে করা সব চ্যাট সবাইকে দেখায়।স্যারদের,এমনকি আমার পরিবারেও জানাজানি হয়ে যায় এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি।প্রচুর ভোগতে হয়েছে এর জন্য আমায়।বিনা দোষে আম্মুর হাতের জুটেছিলো পিঠে। নিঠুল ভাই খবর নিয়ে জানতে পারে এসব সামির কাজ।প্রচন্ড ক্ষেপে সামির সাথে থাকা রানাকেও মারে প্রচুর আর কলেজে ছেলেটাকে সহ ডেকে সমস্যাটির সমাধান করে। আমাকেও কড়াভাবে নিষেধ করে যাতে তাদের সাথে না মিশি। তাদের সাথেই দেখে নিঠুল ভাই ক্ষেপে আছে নিশ্চিত। সামি তার কাজের জন্য অনুতপ্ত। এতোদিন আমার পিছু পিছু ঘুরে ক্ষমা প্রার্থনা করলেও আমি পাত্তা দিই নি। আজ তার চোখের পানি দেখে বাধ্য হয়ে কোচিং থেকে তাদের সাথে এখানে এসেছি। আর আজকেই নিঠুল ভাইকে আসতে হলো। ভয়ে আমার কান্না আসছে। ইতোমধ্যে সামি, রানা চেয়ার থেকে ব্যাগ নিয়ে ভোঁ দৌড়। আশেপাশের কয়েকজন বিস্ময় দৃষ্টিতে লক্ষ্য করছে কান্ডটি।
নিঠুল ভাই আমার দিকে তেড়ে এসে রাগী গলায় বললো, ” এই, তোর শিক্ষা হয় নি একবার হয়রানি হয়ে? চলে এসেছিস এই বেয়াদবগুলোর সাথে ফুসকা খেতে! তোর মা’কে যদি না বলেছি..”

আম্মুকে বলবে! আম্মু জানলে আমার আস্ত রাখবে না। করুণ চোখে তাকালাম তার দিকে। আমার এই করুণ চাহনি দিয়ে আমি টিচারদেরও কাবু করতে পারি। পড়া না শিখলে বা ভুল কিছু হলে এই চাহনি দিই। ঐ মুহূর্তে আমাকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অসহায় নারী ভেবে ক্ষমা করে দেন। মুখে হাজারো কিছু আসলেও বলতে পারেন না। সবাই বলে তুই পাক্কা অভিনেত্রি। সবকিছুতেই পার পেয়ে যাস।কিন্তু না। আমার আম্মু আর এই মানুষটাকে কাবু করতে পারি না আমি। এইবারও তা হবে হয়তো। আমাকে পাত্তা না দিয়ে নিঠুল ভাই রিকশা দাঁড় করায়। রিকশায় উঠে বসতেই ফুসকাওয়ালা মামা দৌঁড়ে এসে চোর ধরার মতো করে হেসে বলে, ” টাকা না দিয়া কই যান আপা?”

নিঠুল ভাইয়ের দিকে আড়চোখে তাকাই। রেগে আছে প্রচন্ড। শ্যাম বর্ণের মুখটা রোদের উত্তাপে আরো কালচে দেখাচ্ছে। কপাল কুঁচকে ভ্রুযুগল বাঁকিয়ে রেখেছে। এতেই তার ব্যাপক রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে। ব্যাগ থেকে টাকা বের করে দিই। বাকি টাকা নিতে না দিয়েই গাড়ি চালাতে নির্দেশ দেয়। কিছু বলতে চেয়েও বললাম না। আজকের দিনটাই মাটি আমার। পথে একবার মিনমিনিয়ে নিজের সাফাই গাওয়ার চেষ্টা করলেও পারলাম না। বিপরীতে রাগী লুক দিয়ে আমার ভয়টা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিল।
.
.

বড় চাচা আর নিজাম আঙ্কেলের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক।নিজাম আঙ্কেলের চাকরি হয় আমাদের এলাকার একটা স্কুলে। বিয়ের পর গর্ভবতী রেবা আন্টিকেও নিয়ে আসেন। বড় দাদারা সপরিবারে বিদেশে থাকতো বিধায় তাদের ঘরটা ফাঁকা ছিল। ঘরটা নিজাম আঙ্কেল ভাড়া নেন।একসময় শিক্ষকতা ছেড়ে ব্যবসায়িক কাজে জড়ালেও আর নিজ গ্রামে ফিরে যান নি। বহিরাগত হলেও এই এলাকার মানুষের সাথে নিবিড় সম্পর্ক হয়ে যায়। সেই থেকে দীর্ঘ ২৬ বছর এখানেই কাটান। নিলয় ভাই,নিলু আপা,নিঠুল ভাই তিনজনের জন্ম এবং বড় হওয়াও এখানে। আমাদের পরিবারের প্রতিটি সদস্যের সাথে নিবিড় সম্পর্ক তাদের। যেন রক্তের সম্পর্কের কেউ তারা। নিলয় ভাইয়ের সাথে বড় চাচার মেয়ে রিনি আপুর বিয়ে দিয়ে সম্পর্কটা আরো গাঢ় করেন। আমাদের পরিবার,এলাকার সবচেয়ে পছন্দনীয় ব্যক্তি হচহচ্ছে নিঠুল ভাই। আব্বুর যেকোনো বিষয়ে, সিদ্ধান্তে নিঠুল ভাইয়ের পরামর্শ চাই -ই চাই। আমাদের কাজিন গ্রুপের সবাইও নিঠুল ভাইদের বলতে পাগল। সবাইকে যেমন হাসি-ঠাট্টা,আড্ডায় মেতে রাখে তেমনই সবার সমস্যা সমাধান করতে এগিয়ে আসে। সবার ভীষণ প্রিয় ব্যক্তি হলেও তার সাথে আমার খুব একটা বনে না। সবসময় আমাকে ক্ষেপাতে থাকে।আমারও সহ্য হয় না তাকে। বর্তমানে তারা শহরে থাকে। বড় দাদার বাড়িটা ভেঙে ফেলায় গত বছর নিজাম আঙ্কেলরা শহরে চলে যায়। সেদিন সকলের সে কী কান্না! তবে নিঠুল ভাইয়ের এই বাড়িতে আসার কোনো সময় অসময় নেই। প্রায়শই আসবে এখানে। আজকেও এসেছে আন্টি আর রিনি আপুকে নিয়ে।
.
.
দুপুরে ছাদে গিয়ে দেখি গুনগুনিয়ে গান গাইতে গাইতে কাপড় শুকাতে দিচ্ছে নিঠুল ভাই। মাত্রই গোসল করেছে বোধহয়। কমলা টিশার্টের সাথে থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট। গলায় সাদা তোয়ালে ঝুলছে।পায়ের স্যান্ডেল জোড়াতে ফসফস আওয়াজ হচ্ছে হাঁটার সময়।ভয়ে ভয়ে তার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমার উপস্থিতি টের পেয়েও তাকালো না। উল্টো গানের গলার আওয়াজ বাড়িয়ে দিল।
‘ চুপিচুপি বলো কেউ জেনে যাবে,জেনে যাবে কেউ জেনে যাবে।’

আমি জানি আমাকে ক্ষেপানোর জন্যই সুর পাল্টে ফেলেছে সে।একটু আগে তো আরেকটা গাইছিল।ছোট থেকেই এই গানটা আমার খুব পছন্দের। কেউ গান গাইতে বললেই এই গানটা ধরতাম।অন্যরা বিরক্ত হয়ে বলতো এটা ছাড়া আর গান জানিস না?তোর বিরক্ত লাগে না? তবুও আমি এটা গাইতাম। তাও শুধু এই দুইলাইন।আর এটা নিয়েও এই বান্দাটা আমায় ক্ষেপায়।

রাগ সংযত করে তার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে একবার ভাইয়া বলে ডাকলাম। আমার দিকে ভ্রু-কুচকে একবার তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিলো। এতো ভাব দেখে ইচ্ছে করছে গলার তোয়ালেটা দিয়েই তাকে ফাঁস দিয়ে দিই।

“আম্মুকে কিছু বলিও না ভাইয়া।”

“কোন ব্যাপারে?”

” বুঝতে পারছো না?” দাঁতে দাঁত চেপে জিজ্ঞেস করলাম।

সে অবুঝের মতো করে বললো, ” না তো। ”

রাগ উঠলেও শান্ত কণ্ঠে বললাম,

” সামিদের সাথে ঐখানে গিয়েছি সেটা বলবে না, প্লিজ।”

“তুই কে রে? তোর কথা কেন শুনবো আমি? যা এখান থেকে।বেয়াদব কোথাকার। ”

ধমক শুনে কাঁদো কাঁদো মুখ করে তাকালাম। এই নিঠুলকে আমার চেনা আছে। আম্মুকে যে বলবে তা আমি নিশ্চিত। যদি জানতে পারে তাহলে পিঠের ছাল তুলে ফেলবে। এমনিতে এত বড় হয়েও মার খেতে হয়। বকা তো আছেই। তাও ছোট বড় কাজিন, কারো সামনেই আমার ইজ্জত রাখে না। রেগে তার ভেজা কাপড়গুলো টেনে নিয়ে ছাদের ফ্লোরে ফেলে একদৌড়ে নিচে চলে গেলাম।পেছন থেকে নিঠুল ভাই চিল্লিয়ে উঠে, ” এই, এই বেয়াদব, দাঁড়া।”

উফ্! অনুরোধ করতে গিয়ে উল্টো রাগিয়ে দিলাম। একমাত্র রেবা আন্টিই বাঁচাতে পারবে। রেবা আন্টিকে সব বুঝিয়ে বললাম। এর মধ্যেই নিঠুল ভাই এসে আমার চুল টেনে ধরে তার কাপড়গুলো ধরিয়ে দিল। আন্টি বললেন, ” ওকে কেন দিচ্ছিস? কাপড়গুলোও নিজে শুকাতে দিতে পারিস না?”

নিঠুল ভাই রাগী গলায় বললো, “শুকাতেই দিয়েছি। বেয়াদবটা রশি থেকে সব কাপড় ফেলে দিয়েছে।”

আমি বললাম, ” তুমি আমার কথা শুনো নি কেন? তাই ফেলে দিয়েছি।”

” তোর কথা শুনবো মানে কী? ”

আন্টির দিকে করুণ চোখে তাকিয়ে দেখলাম তিনি আমার অন্যরকম দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে চোখ দিয়ে ইশারা করলেন। আমি মুখ ফুলিয়ে ধুয়ে দিচ্ছি বলে বেরিয়ে গেলাম। আন্টির কথা নিশ্চয়ই শুনবে।

ঘুমের মধ্যেই সামনের রুম থেকে কথা শোনা যাচ্ছে। আম্মুর কণ্ঠের সাথে নিঠুল ভাইয়ের কণ্ঠও শোনা যাচ্ছে। সন্ধ্যা হয়ে গেছে। তাও শুয়ে রইলাম। খানিক পর শুনলাম আম্মু ডাকছে চেঁচিয়ে। চমকে উঠে গেলাম। ঘুম ঘুম ভাবটা এখনো রয়ে গেছে। গিয়ে দেখি সোফায় বসে আছে নিঠুল ভাই। অন্য সোফায় আম্মু। আমাকে এভাবে ডাকলো কেন? আবার কেমন লুকে তাকাচ্ছে। বলে দিয়েছে তাহলে? নিঠুল ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে দেখলাম মিটিমিটি হাসছে। আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে আবেগী গলায় বললাম, ” আম্মু, আমি যেতে চাই নি। আমাকে জোর করে নিয়ে গিয়েছে। বিশ্বাস করো।”

-” কে নিয়ে গেছে? কোথায় নিয়ে গেছে? ” আম্মু অবাক কণ্ঠে জানতে চাইলেন।

নিশ্চুপ হয়ে গেলাম। আম্মু তো জানে না মনে হয়। জানলে কথা নয় মার চলতো এতক্ষণে। নিঠুল ভাই এখনো হাসছে। নিশ্চয়ই আমাকে কনফিউজড করার জন্য। আরেকটু হলেই তো সব নিজ মুখে বলে দিতাম। আসলেই বোকা আমি।

-” কোথায় যেতে চাস নি তুই?কে নিয়ে গেছে? ”

তোতলা কণ্ঠে বললাম, “না মানে কোচিং-এ। ”

-” কী? তোর পরীক্ষা ছিলো না আজ? তুই যেতে চাস নি পরীক্ষা দিতে? শুনেছিস নিঠু? একে কী করা যায় বল!পড়ালেখায় একদম মনযোগ নেই। তার বাবা আরো বলে মেয়ে নাকি ভার্সিটিতে পড়বে তোর মতো। এতো এতো টাকা খরচ করছি। পড়ালেখার ধারেকাছেও নেই। কয়দিন পর এইচএসসির রেজাল্ট দিলে দেখবো কী হয়?এই ছোট দুইটার মতো গাধা আর একটাও নেই এই বংশতে। কার মতো হয়েছিস হ্যা?”

মিনমিন করে বললাম,” মাত্রই তো গাধা উপাধি দিলে। এখন আবার জিজ্ঞেস করছো কার মতো হয়েছি।”

” এই মিনমিন করে কী বলছিস? নিঠুকে দেখে কিছু শিখ। তোর আব্বু তো খুব বড় গলায় বলে আমার মেয়ে নিঠুর মতো ইংলিশ নিয়ে পড়বে ভার্সিটিতে।কত ভালো….”

সেখান থেকে আস্তে আস্তে কেটে পড়লাম। এরপর আম্মু কী বলবে সব মুখস্ত আমার। নিঠু ভর্তি পরীক্ষায় ৮৬তম হয়ে ইংলিশ নিয়ে পড়ছে, নিঠু ভালো ফটোগ্রাফী করতে পারে, নিঠু মায়ের বাধ্য ছেলে, সোনার টুকরো, রুপার টুকরো ইত্যাদি ইত্যাদি। পড়ালেখায় একটু পিছিয়ে বলে এত কথা শুনতে হয়। আমার চাইতে তাদের আগ্রহই বেশি আমার লেখাপড়ার বিষয়ে। এই যেমন, আব্বু ধরে নিয়েছেন আমি ইউনিভার্সিটিতে চান্স পেয়েই যাবো। অথচ আমার এইচএসসি পাশ করা নিয়েও আমি ভয়ে ভয়ে আছি।

” আজকে বেঁচে গেছিস। এরপর আর কোনোদিন যেন তাদের চোখাচোখিও না হোস।বুঝেছিস?”

নাস্তা করছিলাম ডাইনিংয়ে বসে।এরমধ্যেই নিঠুল ভাইয়ের কথাটা শুনে তার দিকে তাকালাম। ছোট চাচার মেয়ে তিশার সাথে দুষ্টুমি করছে। আমি সাহস করে বললাম,” একসাথে পড়ি। একটু চোখাচোখি তো হবেই।”

নিঠুল ভাই আমার দিকে তেড়ে এসে বললো,” হাঁসের আন্ডার মতো চোখ দুটো খুলে নিয়ে ফেললে কীভাবে চোখাচোখি হয় দেখবো।”

রেগে গেলাম আমি। মানলাম আমার চোখ বড়। তাই বলে কী হাসের আন্ডার সাথে তুলনা দিবে! অন্যরা বলে তোর এই ডাগর ডাগর চোখদুটোই সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় আর সে বলে হাঁসের আন্ডার মতো তোর চোখ দুটো বেশি ভয়ঙ্কর।

” তুমি জানো আমার এই চোখ দেখেই কোচিং-য়ের এক ভাইয়া প্রেমে পড়েছে! আমার চোখ নিয়ে দুই তিন লাইনের কবিতা লিখে প্রেমপত্র পাঠিয়েছে। ”

আমার কথা শুনে নিঠুল ভাই নাক মুখ কুঁচকে বললো,” ওয়াক থু! কোন ভাইয়ারে সে?তার রুচি এতো খারাপ! দেখি নাম বল তো! সে ঠিক কী কারণে তোর চোখ দেখে প্রেমে পড়েছে তার ব্যাখ্যা জানতে চাইবো।”

ইশ! কী বলে ফেলেছি রাগের মাথায়। নিঠুল ভাই ঠিক কী কারণে তার নাম জানতে চায়ছে তা আমি জানি।

” কী হলো? নাম বল!”

“আমি.. আমি তো এমনিতেই বলেছি।আমার হাঁসের আন্ডার মতো চোখের প্রেমে পড়বে কে?” হাসার চেষ্টা করে বললাম।

” নাম বলতে বলেছি,” শান্ত স্বরে বললো।

রামিম ভাইয়ার নাম বলে দিলাম।কোচিং-এর রামিম ভাইয়া কিছুদিন আগে শীটের ভাজে প্রেমপত্র দিয়েছিল। সেটা পেয়ে খুব অবাক হয়েছিলাম। আমাদের পড়ালেও তার নজর যে খুব একটা ভালো না তা সকলেরই জানা। এরপর থেকেই তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। কিন্তু সে পড়া বুঝানো, এটা ওটার বাহানায় কথা বলার চেষ্টা করে।

” ঐ রামিম্মা! ওর তো সব মেয়ের চোখ দেখে প্রেমে পড়ে।দেখি প্রেমপত্রটা দে তো!”

” ওটা আমি ছিঁড়ে ফেলেছি।”

” ছিড়ে ফেলেছিস কেন হ্যা? তোর তো উচিত ছিলো সেটা বাঁধাই করে রেখে দেওয়া।কেউ একজন তোর হাঁসের আন্ডার মতো চোখের প্রশংসা করেছে, হা হা।”

” এরপর থেকে রাখবো। এতোদিন রাখলে তো আমার রুমটা এসবে পূর্ণ হয়ে যেতো। ”

” রাখিস। তোর আম্মাজানকে নিয়ে পরিদর্শন করবো রুমটা। সাথে তোর আম্মাজানের হাতে থাকবে ইয়া বড় লাঠি। সেটা দিয়েই তোকে বাহ্ বা দিবে।”

তার এমন রসিকতা দেখে আমার গা জ্বলে উঠলো। সেখান থেকে চলে আসলাম। সিদ্ধান্ত নিলাম আর কখনো এর সাথে কথা বলা তো দূর চোখ তুলেও তাকাবো না। ভুলে চোখাচোখি হলে সেটা আলাদা কথা।

_______________

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here