সূচনা পর্ব
গল্পের গা থেকে কি একটা বিয়ে বিয়ে গন্ধ পাচ্ছেন? না পেলে কল্পনা করুন। আমরা এখন একটা বিয়ে বাড়িতে আছি। বরের নাম অম্লান, কনে নীলাক্ষী। নীলাক্ষীর ডাক নাম নীলা, চোখে একটা আকাশ আকাশ ভাব আছে। শুকনো মুখে দুটো ডাগর ডাগর নীল চোখ দেখলে মনে হবে যেন আকাশী রঙের সমুদ্র ভুল করে তার অক্ষিকোটরে ঢুকে গেছে। নীলার প্রিয় রঙ হচ্ছে বাদামখোসা রঙ। কাজু বাদামের খোসায় যে রং থাকে সেই রঙ। কিন্তু অম্লানের পরিবার তার জন্য নীল বেনারশি কিনেছে। ফলস্বরূপ বিয়েতেও একটা নীল নীল ভাব চলে এসেছে। নীল যে সবসময় কষ্টের রঙ হয় সেটা ভুল প্রমাণিত করে দিয়েছে এই বর কনে। অম্লানকে কেউ যদি এইমুহুর্তে জিজ্ঞেস করে ‘প্রেমের রং কি?’ সে চোখ বন্ধ করে উত্তর দেবে, ‘প্রেমের রং নীল।’

বাদামী সংসার – মিশু মনি
পর্ব ১

বিয়ে বিদায়ের মুহুর্ত। নীলাক্ষীর বাবা আমজাদ সাহেবের চোখ ভেজা, চিবুক বেয়ে নোনা জলের রেখা গড়িয়ে পড়ছে। তিনি নীলাক্ষীকে বুকে চেপে ধরে চোয়াল শক্ত করে রেখেছেন। এত লোকের ভীড়ে কান্নাটাকে সামলে রাখার বৃথা প্রচেষ্টা। প্রিয় মেয়ে যখন বাবার বুকে মাথা রেখে হাউমাউ করে কাঁদে, কোনো বাবার পক্ষে স্থির থাকা সম্ভব নয়।

আমজাদ সাহেব নীলাক্ষীর মাথায় হাত বুলাচ্ছেন। বারবার ‘আমার মা, আমার মা’ বলে সম্বোধন করছেন। একজন বাবার বুক ছিঁড়ে বেরিয়ে আসা আর্তনাদ হয়তো কেউই শুনতে পারছে না। কিন্তু বাবার বুকে মাথা রেখে মেয়েটা ঠিকই অনুভব করছে, বাবাকে ছেড়ে যেতে তার যেমন কষ্ট হচ্ছে, বাবারও ঠিক সেরকম ই কষ্ট হচ্ছে মেয়েটাকে অন্যের হাতে তুলে দিতে।
একজন বাবার জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যথাতুর মুহুর্ত মেয়ে সম্প্রদান। আজ থেকে মেয়ের দায়িত্ব আর তাঁর কাধে থাকবে না। এই দায়িত্ব তিনি নিজ হাতে অন্যকে সোপর্দ করে দিয়েছেন। মেয়েটা জন্মের পর থেকে ওর প্রত্যেকটা আবদার পূরণ করতে বাবা কতই না পরিশ্রম করেছেন। মেয়ে যখন যা চেয়েছে তাই এনে দিয়েছেন। আজ থেকে আর সেই দায়িত্ব থাকবে না। ঈদে জামা নিয়ে দিতে হবে না, মেয়েটা মোবাইল কিনে চাইবে না, যখন তখন এসে বলবে না আব্বু আমার এটা লাগবে ওটা লাগবে। বারবার চোখের সামনে ঘুরঘুর করবে না, ভাত খাওয়ার সময় পাশে বসে থাকবে না, পানি এনে দেবে না। মাঝরাতে বাবা কার রুমে গিয়ে উঁকি দিয়ে দেখবে, ‘মেয়েটা মশারি টাঙিয়েছে কি না?’
কথাগুলো ভেবে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন বাবা। নীলাক্ষীর বাহু ধরে শব্দ করে বললেন, ‘আমি বাসায় এসে কাকে বলবো আম্মু এক কাপ চা দে? কাকে বলবো মা আমার চুলগুলো একটু টেনে দে?’

বাবার মুখে কথাগুলো শুনতে শুনতে ব্যথায় হৃদয় ভারী হয়ে উঠছে নীলাক্ষীর। মস্তিষ্কের স্নায়ুগুলো যেন ধীরেধীরে অবশ হতে শুরু করেছে। তারা প্রত্যেকটা শিরা উপশিরায় সংকেত পাঠিয়ে পুরো শরীরকে স্তিমিত করে দিতে চাইছে। নীলাক্ষীর মনে হচ্ছে এই বুঝি সে মাথা ঘুরে পড়ে যাবে। বাবার পাঞ্জাবির বুকে খামচি দিয়ে ধরে বলতে থাকে, ‘আব্বু আমি তোমাকে ছেড়ে যাবো না। আমাকে পাঠাইয়ো না। আমি যাবো না..’

সেই সময়ে মা এসে নীলাক্ষীকে চেপে ধরেন। তারও যে আত্মা ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘মা রে, তোর সাথে অনেক চিল্লাচিল্লি করছি। সারাদিন তোর সাথে না চিল্লাইলে আমার ভাত হজম হইতো না। আমি থাকবো কিভাবে বল তো?’
নীলাক্ষী মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে থাকে। কান্নার বাঁধ ভেঙেছে। বিশাল নদীর বাঁধ ভাঙা স্রোত যেমন ভয়াবহ প্লাবন ঘনিয়ে আনে, তেমনই এক বিশাল স্রোতে নীলাক্ষীর বুকের ভেতরটা তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে। আজ এই মুহুর্তটা না আসলে ও কখনোই বুঝতে পারতো না বাবা মাকে ঠিক কতটা ভালোবাসে। সকাল হতে মায়ের বকবকানি না শুনলে ওরও কি একটা দিন ভালো কাটবে? বাড়িতে ঢোকার সাথে সাথে মা, মা বলে ডাকার অভ্যাসটা যে ওর সেই ছোটবেলা থেকে।

আজ থেকে কোথাও গেলে ফেরার সময় রাস্তা বদলে যাবে। এই বাড়িতে আর ফেরা হবে না। এখানকার ছোট ছোট ফুলের টব, ঘরের প্রত্যেকটা কোণ, জানালার গ্রিল, বিছানার চাদরের সবকটা ফুল সবকিছুই তো নীলাক্ষীর চির পরিচিত। সবই আজ থেকে বদলে যাচ্ছে। বুকের ভেতর কি যে এক শুন্যতা এসে ভর করেছে। মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে সেই শুন্যতাকেই অনুভব করছিলো নীলাক্ষী। মায়ের শরীরের এই ঘ্রাণ, এই আদর, এই কোলটায় আর যখন তখন হামলে পড়া হবে না।

ধীরেধীরে পুরো বাড়ি যেন কান্নায় ভেঙে পড়ে। নীলাক্ষী যেদিকে তাকায়, ওর মনে হতে থাকে সবকিছুই কাঁদছে। ওকে সারাজীবনের জন্য বিদায় জানিয়ে দিচ্ছে। আজ থেকে ওর ঠিকানা অন্য কোথাও। বাবা মা ও আত্মীয় স্বজনের স্নেহের চাদরে নিজেকে জড়িয়ে শেষবারের মত সবার আদরটুকু শুষে নেয় নীলাক্ষী।

ছোট ভাই নির্ঝরকে কোথাও দেখতে না পেয়ে নীলাক্ষী ওর ঘরের দিকে ছুটে যায়। নির্ঝরের বয়স ঊনিশ। সবেমাত্র অনার্সে ভর্তি হয়েছে। স্বভাবতই আপুর সাথে সারাদিন খুনসুটিতে মেতে থাকা ভাইটা আজ সারাদিন একবারও নীলাক্ষীর কাছে আসে নি। দিনে একবারও এসে ঝগড়া করে নি, কিছু আবদার করে নি। নীলাক্ষী দ্রুতবেগে ছুটে যায় ওর ঘরে। দরজা ঠেলে ঢুকতেই দেখে নির্ঝর বিছানায় গুটিশুটি মেরে শুয়ে কাঁদছে। এই প্রথম ছোট ভাইকে এভাবে কাঁদতে দেখে নীলাক্ষীর কলিজায় যেন একটা শীতল স্রোত বয়ে গেলো। পুরো শরীর ঝনঝন করে উঠলো। ও ছুটে গিয়ে নির্ঝরকে তুলে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলে, ‘আমার ভাই, আমার কলিজাটা। আমার সোনা জাদু, তুই আমার কাছে আসিস নি কেন সারাদিন? তুই আমাকে বিদায় দিতে যাস নি কেন? ভাই আমার?’

নির্ঝর হাতের পিঠ দিয়ে চোখ মুছে বলে, ‘আপু রে। তুই কাঁদলে আমি সহ্য করতে পারি না। তুই একদম কাঁদবি না।’

নীলাক্ষীর কলিজা ঠান্ডা হয়ে আসে। ভাইয়ের কপালে চুমু খেয়ে বলে, ‘তুই কিন্তু প্রতিদিন আমার বাসায় যাবি। তুই আমাকে না জ্বালালে আমার কি ভালো লাগবে? তুই সবসময় আমাকে জ্বালাতে যাবি।’
– ‘হ্যাঁ যাবো। আমি কি তোকে ডিস্টার্ব না করে ঘুমাতে পারবো আপু?’

নির্ঝর বাচ্চাদের মত কেঁদে ফেলে। কোনো অলৌকিক একটা মায়া যেন দুজনকে একত্রে আষ্ঠেপৃষ্ঠে রেখেছে। ভাইবোনের সম্পর্ক গুলো টম এন্ড জেরির মত হলেও উভয়েই যেন উভয়কে ছাড়া অচল। ছোট ভাইটাকে না দেখে কি করে থাকবে সেই ভাবনায় অস্থির হয়ে উঠলো নীলাক্ষী।

নির্ঝর বললো, ‘আপু। তুই আমার জন্য সবসময় ফ্রিজে দুধ আর ডিম রাখবি। আমি গেলেই আমাকে পুডিং বানিয়ে খাওয়াবি।’

বলতে বলতে নির্ঝর পাঞ্জাবির হাতায় চোখ মোছে। ওরও যে কষ্টে কলিজা ছিঁড়ে যাচ্ছে। আজ সারাদিন ও একটুও খাবার মুখে দেয় নি। কেউ জানেও না সেটা। জানার কথাও না। গায়ে হলুদে অনেক নাচানাচি করলেও আজ পাত্রপক্ষ আসার পর থেকে কেমন ঝিম মেরে গেছে নির্ঝর। পাত্র এসেছে আপুকে নিয়ে যেতে। ওর আপন বোনটা এখন অন্য কারো স্ত্রী হয়ে যাবে। আপন মানুষটা এখন অন্যকারো আপন হয়ে যাবে। আর মনে রাখবে না এই ভাইটার কথা।

নীলাক্ষীর শাশুড়ী রুমে এসে ওকে বুঝিয়ে বললেন , ‘মা তুমি দুদিন পরপরই বাসায় আসবা। যখন মন চাইবে তখনই আসবা। তোমাকে কেউ কিচ্ছু বলবে না। চলো মা। রাত অনেক হয়েছে।’

শাশুড়ীর হাত ধরে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে নীলাক্ষী। ওর দম বন্ধ হয়ে আসতে চায়। কাউকে বলতে পারে না। শাড়ি, গয়না সবকিছুকে মনেহয় পাথর। যেন পাথর ঠেলে হাঁটছে ও।

এতক্ষণ ধরে সবকিছু নিশ্চুপ ভাবে দেখে যাচ্ছে অম্লান। ওর খারাপ লাগছে ভীষণ। বিয়ে বিদায়ের মুহুর্তটা ইউটিউবে দেখানো বিজ্ঞাপনের মত স্কিপ করে যাওয়ার অপশন থাকলে ভালো হতো। বোধকরি প্রত্যেকটা ছেলের জীবনের সবচেয়ে বিরক্তিকর কষ্টের অধ্যায়ের নাম হচ্ছে ‘বিয়ে বিদায়’। বাকি কষ্টগুলো আনন্দের না হলেও অন্তত বিরক্তিকর নয়। বিরক্ত লাগার সবচেয়ে খারাপ কারণ হচ্ছে এখানে বরপক্ষের কেউ কান্নাকাটি করে না, কনে পক্ষরা একাই কান্নাকাটি করে। একটা পরিবারের সাথে আত্মীয়তার শুরুতেই তাদের সবার ক্রন্দনরত মুখ দেখে সম্পর্ক উদ্বোধন করতে হয়। অদ্ভুত না?

নীলাক্ষীকে আমজাদ সাহেব আরেকবার ছেলের হাতে তুলে দেন। সমস্ত আনুষ্ঠানিক কাজ শেষ করে গাড়িতে তুলে দেন বর – কনেকে। নীলাক্ষী গাড়িতে উঠতেই চাইছিলো না। সে বারবার মায়ের আঁচল টেনে ধরছিলো। কিন্তু যেতেই তো হবে। গাড়িতে ওঠার পরও জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে আমজাদ সাহেবের হাত শক্ত করে চেপে ধরে রাখে নীলাক্ষী। এমন সময় সবাইকে ঠেলে সেখানে আসে নির্ঝর। নীলাক্ষী বাবার হাত ছেড়ে নির্ঝর হাত ধরে।

নির্ঝর হাসার চেষ্টা করে বলে, ‘আপু তোর চার্জার নিবি না? কোথাও গেলেই তো আগেভাগে ব্যাগে চার্জার ঢুকিয়ে রাখতি। আজকে চার্জার নিবি না?’
নীলাক্ষীর গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে জলের বিন্দু। নির্ঝর আপুর চার্জারটা এগিয়ে দিয়ে বলে, ‘হাসবি না? যাওয়ার সময় তোর কান্না করা চেহারা দেখবো? হাস বলছি। না হাসলে চার্জার দেবো না। না হাসলে দুলাভাইয়ের গায়ে পানি ঢেলে ভিজিয়ে দেবো। সবাই বলবে তোর বর মুতছে। ভালো লাগবে শুনতে?’

ভেজা চোখেই ফিক করে হেসে ফেলে নীলাক্ষী। নির্ঝর ওকে ঠিক কতটা ভালোবাসে এটাই তার প্রমাণ। সে শেষ মুহুর্তে বোনকে হাসাতে চলে এসেছে। কলিজার টুকরো একটা ভাই। নির্ঝর নিজেও হাসিহাসি মুখে তাকিয়ে আছে। নীলাক্ষী চোখ মোছে।
অম্লান নীলাক্ষীকে ধরে একটা হাত বাড়ির দিয়ে নির্ঝরকে বলে, ‘চিন্তা কোরো না ছোট ভাই। এটাই তোমার আপুর শেষ কান্না। আমি তোমার আপুকে আর কখনোই কাঁদতে দেবো না।’

নির্ঝর হেসে দুলাভাইয়ের হাত চেপে ধরে। বিদায়ের পর্ব এখানেই শেষ হয়ে যায়। গাড়ি চলতে শুরু করে অম্লানের বাড়ির পথে। অম্লান ইতস্তত করতে করতে সাহস করে ধরেই ফেলে নীলাক্ষীকে। নীলাক্ষী লজ্জা পায়, সম্পূর্ণ অচেনা একজন মানুষ। অম্লান গলা খাকাড়ি দিয়ে বলে, ‘ কাঁদবেন না প্লিজ। আমার মা বাবাকে আমি আপনাকে দিয়ে দিলাম। আপনি ওনাদেরকে আব্বু আম্মু ডাকতে পারেন।’

নীলাক্ষী নিশ্চুপ হয়ে থাকে। ওর মনটা ভার। এসির শীতল হাওয়ায় এতক্ষণের ভ্যাপসা গরমটা কেটে যেতে শুরু করেছে। ধীরেধীরে সবকিছু যেন স্বাভাবিক হয়ে আসছে। মাথা নিচু করে পুষিয়ে রাখা দুঃখ গুলোকে বিদায় জানাতে চায় নীলাক্ষী। চোখের জল ধীরেধীরে শুকিয়ে আসছে। ওর কান্না থামলেও মুখে এখনো আষাঢ়ের মেঘ। তবে ভাবনা গুলো দ্রুত বদলাচ্ছে। ও জানেনা কোন বাড়িটা হবে ওর, জানে না কেমন একটা ঘরে যেতে চলেছে। সেইসাথে এও জানে না পাশের মানুষটা কেমন? বিয়ের আগে কখনোই কথা হয় নি। বাবা মায়ের পছন্দে বিয়ে। নীলাক্ষী ইচ্ছে করেই কথা বলে নি। অম্লান অন্তত কয়েকদিন ফোনে কথা বলে পরিচিত হতে চেয়েছিলো। কিন্তু নীলাক্ষীর তাতেও নিষেধ ছিলো। নীলাক্ষীর ভাবনায় সম্পূর্ণ নতুন একজন মানুষকে নতুন করে জানতেই বিয়ের সত্যিকার আনন্দ। আগেভাগে সব জানা হয়ে গেলে বিয়ের পর জানবো কি? সবটা কৌতুহল নাহয় বাসর রাতের জন্যই থাকুক।
অম্লান স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে। ভেতরে ভেতরে সেও দারুণ উত্তেজিত। কিছু একটা বলে তো কথা শুরু করতে হবে। জিজ্ঞেস করে, ‘আচ্ছা কাঁদলে কেন চোখে পানি আসে জানেন?’
নীলাক্ষী মাথা ঝাঁকিয়ে বলে, ‘হুম জানি। আমি সায়েন্সের স্টুডেন্ট ছিলাম।’
– ‘আচ্ছা তাহলে সায়েন্সের বাইরে প্রশ্ন করি। বলতে পারবেন আমাদের বিয়ের গাড়িটা কোন কোন ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে?’

নীলাক্ষী চমকে ওঠে। এ আবার কেমন প্রশ্ন? ওর মনের মেঘটা ধীরেধীরে কাটতে শুরু করে। আন্দাজ করে বলে, ‘রজনীগন্ধা আর গোলাপ?’
অম্লান মাথাটা দুদিকে ঝাঁকায়, ‘উহু হয় নি। এটা কোনো কথা হলো? আপনার বিয়ের গাড়ি আর আপনি দেখেননি? হায়দার ভাই, সামনে একটা চায়ের দোকানে গাড়ি থামাইয়ো তো। চা খেতে খেতে আমরা বিয়ের গাড়ি দেখবো।’

নীলাক্ষী মনেমনে হাসে। চোখ তুলে মানুষটাকে দেখতে ইচ্ছে করে ওর। আজ থেকে এই মানুষটাই ওর সবচেয়ে আপন। বিয়ের আগেও কয়েকবার দেখেছে। তবে চোখ বন্ধ করে নিজের স্বামীর চেহারা মনে করতে পারবে না নীলাক্ষী। হবে হয়তো শ্যামলা, জোড়া ভ্রু, লম্বা নাক ওয়ালা কেউ একজন।

চলবে..
লেখক- মিশু মনি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here