#বসন্তের_এক_সন্ধ্যায়
#পর্ব_২
#Sumaiya_Sumu(লেখিকা)

“বাসায় ঢুকে পার্সেল’টা টেবিলের উপর রেখে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে খাওয়া-দাওয়া করে আমার রুমে গিয়ে পার্সেল’টা নিয়ে বসলাম। কে দিতে পারে, খুলবো কি খুলবো না এসব আকাশ-পাতাল ভাবতে ভাবতে পার্সেল’টা খুলেই ফেললাম। খুলে দেখি ভিতরে সাদা-কালো কম্বিনেশনের একটা শাড়ি, সাদা কালো দুই রঙের কাঁচের চুড়ি, একটা পায়েল, বেশি ফুলের মালা, দুইটা ডেইরি মিল্ক চকোলেট আর সাথে একটা চিরকুট। আমি অবাক হয়ে কিছুক্ষণ পার্সেল’টার দিকে তাকিয়ে রইলাম তারপর আর দেরি না করে চিরকুট’টা খুললাম, তাতে লেখা….

‘আমি এই অশান্ত, চঞ্চল মেয়েটা’কে অসম্ভব ভালোবেসে ফেলেছি। এই মেয়ে’টার চোখে যে আমি নিজের স’র্ব’না’শ দেখেছি। আমি এই মেয়ে’টাকে নিজের জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে চাই। আমি কি পাবো সেই অধিকার রোদু রানী’?
ইতি – E

এই E টা কে, আমাকে খুঁজে বের করতেই হবে, এরকম নাম দিয়ে অনেক চিঠি এর আগেও আমার কাছে এসেছে বিভিন্ন কাব্যিক কথায় কিন্তু আজকের চিঠিতে পুরো প্রপোজ করে দিলো। আগের চিঠিগুলো এতো সিরিয়াসলি নেই নি কিন্তু এখন তো মনে হচ্ছে এটা নিয়ে আমাকে গবেষণা করতে হবে দেখছি। এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ ঘড়ির দিকে চোখ পড়লো, তাকিয়ে দেখি অনেক দেরি হয়ে গেছে আমাকে তো টিউশনি করাতে যেতে হবে। তাই আর দেরি না করে জিনিসগুলো সাইডে রেখে ফ্রেশ হয়ে টিউশনিতে চলে গেলাম।

“পরেরদিন কলেজে গিয়ে আমার বেস্টফ্রেন্ডের সাথে কালকের ঘটনা’টা নিয়ে আলোচনা করছিলাম। হঠাৎ মাঠের এক কোনায় দেখি অনেক লোক জড়ো হয়ে আছে। ওখানে কি হচ্ছে দেখার জন্য অনেক কৌতূহল হলো। তাই আস্তে আস্তে সেদিকে এগিয়ে গেলাম। ভীর ঠেলে সামনে এগিয়ে দেখি ইশান সেখানে সবার সাথে নাটকের বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন। তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে ছোট ড্রেস পড়া একটি মেয়ে। মেয়েটা মনে হয় ইশানের ফ্রেন্ড কিন্তু একটু কেমন যেনো, সারাক্ষণ ইশানের সাথে চিপকে থাকে, গাঁয়ে পড়া স্বভাবের। ভীরের মধ্যে আমাকে দেখে ইশান আমার দিকে এগিয়ে আসলো, তারপর জিজ্ঞেস করলেন…

‘কি মিস, তাহলে অভিনয়’টা করে আমাকে হেল্প করছেন তো’?

‘দেখুন এটাই কিন্তু শেষ আর কখনো এমন কোনো কাজ করতে বলবেন না প্লিজ’।

‘ঠিক আছে মিস। আর থ্যাংকিউ সো মাচ আমাকে হেল্প করার জন্য’।

“এই বলে উনি আমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন”। বললেন…

‘এই যে, উনি হচ্ছে মিস রোদেলা আহমেদ। আমাদের নাটকের নায়িকা মানে উনিই আমার সাথে নায়িকার পাঠ করবেন’।

“এই কথা শুনে সবাই এসে আমার সাথে কুশল বিনিময় করলেন। হঠাৎ আমার চোখ পড়লো ওই মেয়ে’টার দিকে, সে কেমন যেনো তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে একবার আমার দিকে আরেকবার ইশানের দিকে তাকাচ্ছেন। আমি তাকে নিয়ে বেশি মাথা ঘামালাম না। এক জায়গায় চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলাম, তখনই দেখি ইশান আমার দেখি এগিয়ে আসছেন। হঠাৎ কোথা থেকে যেন সেই মেয়েটা এসে ইশানের পথ আটকে দাঁড়ালো। ইশান চোখ-মুখ কুচকে বললো…

‘কি হয়েছে এভাবে পথ আটকালে কেন’?

‘ইশান আমি তোমাকে বললাম নায়িকার পাঠ’টা আমি তোমার সাথে করছি কিন্তু তুমি আমার কথায় রাজী হলে না। কিন্তু রাস্তা থেকে একটা থার্ড ক্লাস মেয়েকে ধরে এনে বলছো ও তোমার সাথে নায়িকার পাঠ করবে? লাইক সিরিয়াসলি ইশান? ওর মধ্যে এমন কি আছে যা আমার মধ্যে নেই’?

‘ইশান রাগী চোখে তাকিয়ে বললো, ভদ্র ভাবে কথা বলো মৌ। উনি কোনো রাস্তার মেয়ে নন আর উনাকে আমি’ই রিকুয়েষ্ট করে এনেছি, উনি প্রথমে রাজী ছিলেন না৷ তুমি আমার গেস্ট’কে অ’প’মা’ন করতে পারো না। ফারদার যেন উনার সম্পর্কে কোনো খারাপ কথা না শুনি। আর উনার সাথেও কোনো ধরনের খারাপ ব্যবহার করবে না, যদি আমি এমন কিছু শুনি তাহলে কিন্তু আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। আরেকটা কথা, সবাই সব কাজের জন্য যোগ্য হয় না, কথাটা মাথায় রেখো’।

‘ইশানন’..

‘বিরক্ত করো না তো, সরো’।

“এসব বলে ইশান আমার দিকে এগিয়ে আসলেন, তারপর বললেন ‘ওর কথায় কিছু মনে করবেন না প্লিজ। ও এরকমই, কোথায় কোন কথা বলতে হয় জানে না…উনি আরও বকবক করছেন কিন্তু আমি কিছু না বলে উনার মাথা থেকে পা অবধি পর্যবেক্ষণ করছি। হঠাৎ আমার চোখ পড়লো ওনার গলার চেইন আর ছোট একটা লকেটের দিকে”। লকেটের মধ্যে…..

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here