#ফুচকাওয়ালা যখন স্পেশাল অফিসার
#পর্বঃ০৫
#লেখকঃরবিউল_হাসান
আমিঃএটা তেমন কিছু না আন্টি…..(আর কিছু বলতে দিল না)
আন্টিঃআমি কি তোমাকে যেতে বলছি?বলছি যাবে না তো যাবে না।ব্যাস…..
আমিঃআচ্ছা রাগ করতে হবে না। ওকে যাব না।
আন্টিঃএই তো ভালো ছেলে।এবার খেয়ে নাও।
আমিঃহুম।
আন্টি চলে গেল।আমিও খেয়ে নিলাম।তার কিছুক্ষণ পর রিমি কলেজ থেকে আসল।
আমি খেয়ে আবার শুয়ে পড়লাম।
রিমি, আমি যে রুমে আছি সে রুমে আসল।
রিমিঃতা এখন কেমন লাগছে আপনার?
আমিঃজ্বী ভালো আগের থেকে।
রিমিঃওকে আপনি বিশ্রাম নেন আমার একটু কাজ আছে।
আমিঃহুম আপনি আপনার কাজ কইরেন।
রিমিঃহুম (বলে চলে গেল)
রিমিকে যত দেখি তত ভালো লাগে।
বিকাল টাইমে করে আমি রাশেদকে ফোন দিলাম।
রাশেদঃহুম বল…..
আমিঃকি করিস?
রাশেদঃকিছু না কম্পিউটার থেকে কলেজের ম্যাপটা ভালো করে দেখছিলাম।
আমিঃএটাও তো কাজ।কিছু না বললি কেন?
রাশেদঃআরে এটা আর তেমন কি কাজ?
আমিঃআচ্ছা শুন, আজ কলেজে যে মেয়েটাকে খুন করার কথা বলছে সে মেয়েটা কে?কোথায় থাকে এসব কিছু জানিস?
রাশেদঃনা তেমন কিছু তো জানি না, তবে এতটুকু জানি, মেয়েটার সাথে খারাপ কিছু হয়েছে।
আমিঃ ওহ ওটা একটু জানা যায় কিনা দেখ।মেয়েটা কে?
রাশেদঃঅনেক ট্রাই করছি কিন্তু পারি নাই।
আমিঃআচ্ছা ঠিক আছে, খুনটা কখন করবে সেটা জানিস?
রাশেদঃহুম আজ রাত ৩ টার পরে।
আমিঃওকে রেড়ি থাকিস।তুইও যাবি আমার সাথে।
রাশেদঃওকে।
ফোন কেটে দিয়ে অপেক্ষা করতে থাকলাম,রাতের জন্য।এমনিতে সব পিপারেশন নিয়ে নিছি।শুধু রাশেদ আসবে স্পেশাল পোশাক পড়ব, এতটুকু।আর রাশেদ আসার সময় বাইক তো আনবেই।
এখন রাত ১০ টা, হঠাৎ একজনের ফোন আসল।আমি নাম্বার দেখে অবাক।ইনি আবার অসময়ে বিরক্ত করে কেন।এমনিতে আছি চিন্তায় তার উপর ইনি আবার ফোন দিছে।
রিসিভ করলাম।
আমিঃআসসালামু আলাইকুম, ম্যাম।
ম্যামঃওয়ালাইকুম আসসালাম।কেমন আছেন রবিউল হাসান।
আমিঃজ্বী আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি ম্যাম।আপনি?
ম্যামঃআলহামদুলিল্লাহ ভালো।তা আপনার কাজ কতটুকু হল?
আমিঃম্যাম আমার কাজ প্রায় শেষ অল্প একটু বাকি।
ম্যামঃগুড় কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করেন।আর মাত্র ১৫ দিন আছে, এই সময়ের মধ্যে আবর্জনা সব পরিষ্কার দেখতে চায়।
আমিঃজ্বী ম্যাম ইনশাআল্লাহ এই সময়ের মধ্যে আবর্জনা রাখার জায়গাও রাখব না।
ম্যামঃআমি জানি আপনি পারবেন।
আমিঃইনশাআল্লাহ, দোয়া করবেন ম্যাম।
ম্যামঃদোয়া আছে আপনার প্রতি।নিজের খেয়াল রাখবেন।রাখলাম।
আমিঃYes ম্যাম, আসসালামু আলাইকুম।
(যে ফোন দিছে সে আর কেউ না স্বয়ং CM,তিনিই আমাকে এই স্পেশাল টিমের হেড বানিয়েছেন।এই সমাজ থেকে নোংরা আবর্জনা গুলো পরিষ্কার করার জন্য।আমাকে কারো অনুমতি ছাড়া ইনকাউন্টার করার পাওয়ার দেওয়া হয়েছে।আমার কাজ নিয়ে শুধু কেবল শুধু মাত্র CM ই জিজ্ঞেস করতে পারেন।আর কারো কাছে বলতে আমি বাধ্য নয়।)
ফোন কেটে দিল। ঘড়িতে থাকিয়ে দেখি ১১ টা বাজে প্রায়।
রাশেদের ফোন আসল।নিচে থাকিয়ে দেখি সে দাড়িয়ে আছে তাই আমি বের হতে যাব ঠিক তখনই মনে হল দরজা দিয়ে গেলে কেউ দেখে পেলবে।জানালা দিয়ে যেতে হবে।
দরজার পাশে গিয়ে ভালো করে দেখলাম।কেউ আছে কিনা?
কিন্তু কেউ নাই সবাই ঘুমাচ্ছে
(সবাই বলতে এখানে রিমি আর রিমির আম্মু ছাড়া কেউ নেই।রিমিই একমাত্র মেয়ে। রিমির বাবা মারা গেছে প্রায় ৫ বছর আগে)
তারপর আমি জানালার কাছে আসলাম, নিচে থাকিয়ে দেখলাম রাশেদ ছাড়া আর কেউ আছে কিনা?
সেখানেও রাশেদ ছাড়া কেউ নেই।
দু-তালার উপর থেকে জানালা দিয়ে লাফ দিলাম।
(এটা আবার তেমন কোনো ব্যাপারই না আমার স্পেশাল টিমের প্রতিটি সদস্যের কাছে।সবাই প্রায় ৬ টা দেশের ট্রেনিং প্রাপ্ত আমাদের লাফানোর সম ২০ তলা থেকেও লাফাতে হয়ছে। এভাবে লাফাতে লাফাতে আর ভয় করে না কিছু কে।)
লাফ দিয়ে নেমে রাশেদের কাছে গেলাম।
রাশেদঃঠিক আছিস তো?
আমিঃএটা আবার নতুন কি?(পেছনে থাকালাম হঠাৎ জানালার পাশ থেকে কেউ একজন নড়ে গেল মনে হল)
তেমন গুরুত্ব দেয় নি, বিড়ালও হতে পারে।
রাশেকে নিয়ে বাইক নিয়ে চলে গেলাম কলেজের কাছে।
আমরা দু-জনেই পোশাক পড়ে নিছি।
আমার স্পেশাল পোশাক আমি পড়ছি।রাশেদেরটা রাশেদ।
কলেজে গিয়ে বাইক টা কলেজের গাড়ি রাখার রুমে ডুকিয়ে রাখলম।
তারপর কলেজের পেছনে চলে গেলাম।
কলেজের পিছনে আমি আর রাশেদ ছাড়া আর কেউ নেই।
আমিঃদুটা বাজলে রেড়ি হয়ে যাবি।এখন তো ১ টা বাজে।আর হ্যা কানে ব্লুটুথ লাগিয়ে নেই।
জানিনা তারা কতজন থাকবে।আর এটাও জানি না মেয়েটা কে?
খুব সাবধানে থাকবি।আমার ইশারা পাওয়ার সাথে সাথে হাটুর নিচে গুলি করবি।এদেরকে মেরে পেলা যাবে না।এদের দিয়ে আরো অনেক কিছু বের করতে হবে।
রাশেদঃওকে।
2টা বাজতে আর ১০ মিনিট বাকি।দেখলাম একটা কারে করে কিছু ছেলে সহ একটা মেয়ে আসছে।মেয়েটার চেহারা ভালো করে দেখা যাচ্ছে না।
যখন একদম কাছে চলে আসল তখন দেখলাম মেয়েটা আর কেউ নয় আরোহী,আরোহী কে দেখে তো আমার মাথায় রক্ত উঠে গেল।
আমি রাশেদকে সংকেত দিলাম একদম রেডি হতে।
ছেলে ৫ জন মত আছে সাথে আরোহী।
সবাই যখন কলেজের পিছনে আসল, তখন আমি আর রাশেদ গাছের পিছনে লুকালাম।
তাদের মধ্যে আরো একজন কে দেখে তো আমি আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারি নি।
সে আর কেউ নয়, আরেকটা ধর্ষক যাকে ২ মাস যাবৎ খুজতেছি।এভাবে পাব ভাবি নি।
তাদের কথা শুনে যতটুকু বুঝলাম তারা আরোহী কে মেরে তার গায়ে R.K লিখে দিবে।তারপর সব বদনাম R.K এর হবে।
রাশেদ কে সংকেত দিলাম গুলি করার জন্য। সংকেত দিতে দেরি শুট করতে দেরি নয়।
একে একে সবাইকে শুট করে দিলাম।আরোহী তো হতভম্ব হয়ে গেছে।
সবাইকে শুট করার পর।আমি আর রাশেদ বের হলাম।
আরোহী আমাকে দেখে কিছু টা চিন্তা মুক্ত হল।
আমিঃআপনাকে খুন করার কথা ছিল তাহলে?
আরোহীঃহুম, আপনি এসে বাচালেন।
আমিঃআচ্ছা ঠিক আছে, দেখি এদের কি অবস্থা।
দেখলাম সবাই অজ্ঞান হয়ে গেছে। তারপর সবাই কে গাছের সাথে বেধে নিলাম।
পানি দিয়ে একজনকে জ্ঞানে ফিরালাম।যাকে মেরে পেলব তাকে।তার নাম তাবিব।
আমিঃকি রে তুই এত দিন কই ছিলি।তুকে তো অনেক খুজেছি?
তাবিবঃকেরে তুই, তুর এতবড় সাহস?আমাকে বেধে রাখছিস
আমিঃশান্ত হয়ে যা, তুই হলি ধর্ষক, সোজা কথা তুকে এখন মরতে হবে।
তাবিবঃকে রে তুই যে আমাকে মারবি?
আমিঃআমি কে জেনে কেন নিজের প্যান্টটা নষ্ট করতে চাস বলত?
তাবিবঃতুকে তো…..
আমিঃআমাকে কি রে?
তাবিবঃতুকে আমি এখানেই মেরে দিব, জানিস আমি কে?
আমিঃহুম জানি তো, এম পির ডান হাত, মানে বড় চামচা,আর হলি ধর্ষক, তুকে মারতে এর থেকে বেশি কিছু আমার দরকার নাই।
তাবিবঃকে রে তুই যে আমাকে মারবি?
আমিঃশুনবি তাহলে আমি কে?
তাবিবঃবল তুই কে?
আমিঃR.K (কানে কানে)
(দেখলাম তাবিব চোখ বড় বড় করে পেলেছে)
তাবিবঃভাই মাফ করে দেন ভুল হয়ে গেছে।
আমিঃসময় কম আর মাফ শব্দের সাথে আমি খুব কমই পরিচিত।
শেষ কি কোনো ইচ্ছে আছে?
তাবিবঃআপনার চেহারা টা দেখতে চায়।
আমিঃওকে দেখ তাহলে(বলে মাস্কটা সরালাম)
তাবিবঃতুই…..
আমিঃহুম আমি।
বলে আর কথা না বাড়িয়ে গুলি করে দিলাম।
মরার পর পিটে লিখে দিলাম R.K
(তারপর একজনকে ফোন দিয়ে জানালাম ব্রেকিং নিউজ করতে)
তারপর, আমি রাশেদ আর আরোহী চলে আসলাম।
এম পির পোলাপাইনদের গাছে বেধে রাখছি।
তারপর চলে আসলাম।বাইকের কাছে,বাইকে করে আরোহী আর রাশেদ , অন্য বাইকে আমি।
আমিঃরাশেদ আরোহী কে তার বাসায় দিয়ে আয়।
আর আসার সময় ফোন দিয়ে কাউকে ডেকে নিবি যাতে আমার বাইকটাও নিয়ে যেতে পারে।
রাশেদঃওকে এখন যাচ্ছি তাহলে,আর শুন তোর কোনো সমস্যা হলে আমাকে বলবি।
আমিঃওকে, যা এখন বাই।
(আরোহীর বাসা D.C রিমির বাসার বিপরীতে তাই দুই দিকে চলে গেলাম)
আমি রিমির বাসার বাহিরে এসে গাছ বেয়ে আবারো রুমে ডুকে গেলাম।
রুমে ডুকে সবচেয়ে বড় শকড খেলাম।কারণ রুমে আন্টি বসে আছে।
আন্টিঃকোথায় গিয়েছিলে এত রাতে?
আমিঃআন্টি আসলে একটা জরুরি কাজে গিয়েছিলাম,সকালে বলব এখন গিয়ে ঘুমান(রাত ৩:২০ এখন)
আন্টিঃনা এখন বল কোথায় গিয়েছিলে?
আমিঃআন্টি প্লিজ সকালে বলব।
আন্টিঃসত্যি বলবে তো?
আমিঃহুম।
আন্টিঃওকে, তুমি ঘুমাও এখন।
আমিঃজ্বী আন্টি, একটা অনুরোধ ছিল!
আন্টিঃজানি কি বলবে,যদি সকালে না বল তাহলে কিন্তু খারাপ হবে,আর তুমি বলবে এই যে তুমি মাঝ রাতে বাইরে গেছ এটা না বলতে বলবে তাই তো?
আমিঃজ্বী আন্টি।
আন্টিঃঠিক আছে বলব না, এখন ঘুমাও।
আমিঃওকে আন্টি, Good night
(আন্টি বড় করে থাকাল কিন্তু কিছু বলল না,আমি আবার কি করলাম এভাবে থাকাল কেন?)
তারপর আন্টি চলে গেল,আমিও ঘুম দিলাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আন্টি আমার রুমে আসতেছে।
আমিঃআন্টি আসলে কালকের জন্য ক্ষমা করবেন, একটা জরুরি কাজ ছিল তাই আপনাদের না বলে চলে গেলাম।
আন্টিঃআমি সেটা শুনতে আসি নি,এখন ফ্রেশ হয়ে নিচে আস খাবার খাবে,তারপর বাকি কথা হবে।
আমিঃওকে আন্টি আপনি যান আমি আসতেছি।
১০ মিনিট পর রেড়ি হয়ে নিচে গেলাম।দেখছি রিমি আর আন্টি টেবিলে বসে আমার জন্য ওয়েট করতেছে।
রিমিঃতা এখন আপনার শরীর কেমন?
আমিঃমুই এহন পুরাই ভালো।(রিমির সামনে গ্রামের বাসায় কথা বলতে হবে নয়তো অনেক কিছু ভেবে নিবে,শত হলেও D.C বলে কথা)
রিমিঃতাহলে তো ভালোই,বসেন খাবার খেয়ে নিন
আমিঃহুম(বলে বসে গেলাম,জানিনা আমার মত ভাগ্য আর কারো আছে কিনা,বিয়ের আগে বউয়ের সাথে এক টেবিলে খাবার খাইতেছি)
আন্টিঃকথা কি এখানে বলব নাকি পরে বলব?(আমাকে বলল)
আমিঃপরে কইলে হবে।
আন্টিঃঠিক আছে এখন খেয়ে নাও।
আমঃহুম।
(তারপর সবাই খেয়ে নিলাম)
To_be_continue…….