#ফিরে_আসা_সিক্রেট_মাফিয়া (Politics_02)
#লেখকঃরবিউল_হাসান।
#পর্বঃ০৭

হঠাৎ রাশেদ আর রাহী বাইরে কারো পায়ের আওয়াজ শোনতে পাই।রাহী চুপচাপ জানালার পাশে এসে বাইরে তাকিয়ে দেখে প্রায় পনেরো জন মতো মুখে কাপড় দিয়ে গুলি হাতে নিয়ে আস্তে আস্তে ভেতরে আসছে।

রাহী একজনের চুল দেখে বুঝতে পারে ওরা এমপির লোক।রাহী তাড়াতাড়ি করে আবার সোফায় এসে বসে পড়লো।ফোন বের করে কাকে যেন ফোন দিয়ে বলল ‘রাশেদের বাসা এমপির লোকেরা ঘিরে রেখেছে আমরাও এখন ভেতরে আছি’ ওপাশ থেকে বলল ভয় না পেয়ে চুপচাপ ভেতরে বসে থাকতে।

তারপর রাহী সবাইকে বললো সবাই নিরাপদ জায়গায় চলে যাও।বাইরে এমপির লোকেরা ঘিরে রেখেছে সবার হাতে গুলি আছে। কথা বলতে বলতে রাহী নিজের কোমর থেকে গুলিটা বের করল।রাহী গুলি বের করছে দেখে সিকদার বুঝতে পারে ঘটনা হতে যাচ্ছে। সিকদারও নিজের গুলি বের করে।রাশেদ এখনো বুঝতে পারছে না ওরা কি করতে যাচ্ছে।
রাশেদঃতোরা তো এমপির হয়ে কাজ করিস এখন ওদের বিরুদ্ধে লড়াই করবি?
রাহীঃকথা কম বল তুই একটা কাজ কর সবাইকে নিয়ে সেইফ থাকতে পারবি এমন কোনো রুমে চলে যা।
রাশেদঃতোদের এখানে রেখে যাব না।
রাহীঃবেশি ন্যাকামি না করে সর এখান থেকে।

রাশেদ তাও যাবে না বললে এবার রাহী ধমক দিয়ে বলে ঠিক আছে চল দরজা খুল গিয়ে ওখানে যারা আছে সবাই শুট করবে তখন বুঝবি কত ধানে কত চাল।

রাশেদঃআরে তুই কখন বন্ধু কখব শত্রু বুঝতেই পারি না।
রাহীঃআমি তোর চোখে সারাক্ষণই শত্রু হয়ে থাকব।

ওরা ভেতরে তর্ক করছে হঠাৎ পুরো বাড়ি অন্ধকার হয়ে গেল।বাইরেও অন্ধকার হয়ে গেল।রাহী ভেতরের সবাইকে নিয়ে একটা রুমে চলে গেল আর ফোনের লাইট জালিয়ে দিল।কিন্তু ঐ রোমটা কার রাহী জানত না।ভেতরে গিয়ে দেখে কাজের মেয়েটা সে চিৎকার দিতে যাবে তখনই রাহী ওর মুখ চেপে ধরে বলে চিৎকার করিও না।বাইরে অনেক লোক গুলি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে চিৎকার করলে সমস্যা হবে।
রাহীর আর কিছু বলার দরকার হয় নি।রাহীর হাতের গুলিটা দেখে মেয়েটা অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল।রাহী রাশেদকে বলল সে রুম থেকে বের না হতে।রাহী আর সিকদার গুলি নিয়ে সামনে এগিয়ে এলো।দরজার দুই পাশে দুই জন দাঁড়িয়ে আছে।হঠাৎ দরজার বাইরের লোক গুলো একদম কাছে চলে আসে।কিন্তু ওদের চমকে দিয়ে খুব দ্রুত কি যেন চলে যায়।
দুই সেকেন্ড হতে রাশেদ বাড়ির কাছে চলে আসা পাঁচ জন মাটিতে পড়ে যায়। আর তাদের গলা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। রাহী এটা দেখে প্রথমে কিছুটা ঘাবড়ে যায়।আর এমপির লোক গুলোও অনেক ঘাবড়ে যায়।তারা ভয়ে কিছু টা পেছনে চলে যায়। কিন্তু তাতেও বিপদ একদম পেছনে দুই জন গেছিলো তাদের গলাও কেটে গেল।

বাজ পাখির মতো কিছু একটা সামনে দিয়ে বিদ্যুৎ চমকানোর গতিতে চলে যায় আর পরে তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।এমপির সব লোকের মধ্যে ভয় ঢুকে যায়।যে যেদিকে পারে দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করে কিন্তু তাতেও লাভ হয় না।পেছন থেকে কেউ শুট করে দিচ্ছে। এভাবে সবাই শেষ মাত্র একজন বাকি।ওকে মারতে যাওয়ার আগেই চারপাশে আলো জ্বলে ওঠে।রাশেদের বাসায় কারেন্টের লাইন কায়েম কেটে দিছিল রবির কথায়।কিন্তু রবি কিছু বলার আগে কায়েম লাইনটা লাগিয়ে দেয়।তাই চারপাশের আলো রবির মুখে এসে পড়ে।রবি দেরি না করে এমপির শেষ লোকটাকেও শুট করে দেয়।

এই দিকে কারেন্ট চলে আসছে দেখে রাশেদ, সিকদার দুইজনই জানালার ফাঁক দিয়ে বাইরের অবস্থা দেখে ফেলে।সিকদার রাহীর সাথে প্রথমে দরজার পাশে এসেছিল কিন্তু যখন দেখলো বাইরে কেউ এমপির লোকদের মেরে দিচ্ছে তখন সিকদার রাশেদের কাছে চলে গেছিল।আর কারেন্ট আসার সাথে সাথে ওরাও চলে আসে।এইদিকে সবাইকে মারা শেষ হতে রবি দরজায় এসে দাঁড়াই মুখে মাস্ক আছে।
দরজা খুলে দিতে রবি রাহীর কানে কানে কি যেন বলে আর সে চলে যায়। রাশেদ কিছু না বলে চুপ করে আছে।রাশেদ রবির চেহারা দেখে নাই কারণ মাস্ক ছিল।রাহী রাশেদের হাতে রাহীর গুলিটা দিয়ে বলল…
–এটা রাখ যে কোনো সময় তোর উপর আবার হামলা করতে পারে।
রাশেদঃমাস্ক পড়া যে লোকটা সবাইকে মেরে দিল ও কে?
–তোর খুব কাছের কেউ তোর শুভাকাঙ্ক্ষী।
রাশেদঃকিহ এটা সে শুভাকাঙ্ক্ষী যে আমাকে বিভিন্ন ভাবে হেল্প করছে?
–হুম এই সে।ভয় নয় তোকে সাহস যুগিয়ে দিচ্ছে।

রাশেদ তাঁকে একটি বার দেখবে বলছে।কিন্তু এটা সঠিক সময় নয় তাই রাহী বলল তুই তাঁকে বহুবার দেখেছিস।কিন্তু রাশেদ কোনো ভাবে মেনে নিতে পারছে না।কখন দেখেছে তাও জানে না আর কে সে তাও জানে না।সব মিলিয়ে এক গোলকধাঁধায় পড়ে গেল রাশেদ।

রাহী রাশেদকে আর কিছু না বলে কাকে যেন ফোন দিল।সাথে সাথে প্রায় ছয়টা গাড়ি আসলো আর লাশ গুলো নিয়ে গেল।ততক্ষণ পর্যন্ত রাহী আর সিকদার রাশেদের বাসার ভেতরে ছিল।

কাজ শেষে রাহী আর সিকদার চলে এলো।রাশেদকে বলে এলো সাবধানে থাকতে আর কোনো সমস্যা হলে যেন রাহীকে জানায়।

সকালে ঘুম থেকে ওঠে রবি নাস্তা করে নিলো।রাহী আর রাশেদকে একটা প্ল্যান বুঝিয়ে দিল নির্বাচন নিয়ে।আর সে প্ল্যান টা রাশেদকে বুঝিয়ে দিতে বলল।কালকের পর পরশু নির্বাচন। এমপির পদে এমপি আছে বিপরীতে দাড়িয়েছে রাশেদের দলের একজন।

হঠাৎ একটা ভিডিও সবার নজরে আসে।যেটা কয়েক মিনিট আগে আপলোড করা হয়েছে।ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এমপি এই পর্যন্ত কতগুলো কিডন্যাপ আর ধর্ষণ করেছে তার পুরো ভিডিও সেখানে আছে।এই ভিডিও দেখে এমপির ভোট পাওয়ার আশা ৪০% এ নেমে গেছে।
কিছু সময় পর আরো একটা ভিডিও আপলোড হলো সেটাতে এমপির কাছের লোকদের কয়েকজনের আত্নীয়দের কান্নার চিৎকার শোনা যাচ্ছে। তাদের পরিবারেরও কেউ না কেউ এমপির হাতের স্বীকার হয়েছে। আর এই ভিডিও দেওয়ার পর এমপির কাছের লোক গুলোও আলাদা হতে শুরু করে।

পরপর দুইটা ভিডিও আপলোড হওয়ার পর এমপির মুখে সবাই থুথু ফেলা শুরু করল।পুরো শহর উত্তাল হয়ে পড়ল।এমন কি এমপির কাছের লোক গুলো যাদের এতদিন খাইয়ে পোষে রেখেছে তারাও এমপির বিরুদ্ধে চলে গেল।পুরো প্রশাসন নড়ে ওঠছে।এই ভিডিও গুলো যদি সত্যি হয় তাহলে এমপির বিরুদ্ধে আইনের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয় পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তা।

পুরো শহর উত্তাল। এমপির বিরুদ্ধে সাধারণ জনতা ক্ষোভ প্রকাশ করছে।পুলিশ শত চেষ্টা করেও জনতাকে থামাতে পারছে না।ভিডিও আপলোড হওয়ার এক ঘন্টার মধ্যে এমপির বাসার সামনে সাধারণ মানুষ মিছিল করছি। পুলিশ শত চেষ্টা করেও তাদের থামাতে পারছে না।

এমপি ভেতরে বসে চিন্তা করছে কি করবে এখন।এমপি ভাবলো রাফসানকে দিয়ে ভোট কেটে নিবে।যেমন আমাদের সরকার ভোটের আগের রাতে ভোট নিয়ে ফেলে।এমপি রাফসানকে ফোন করে কিন্তু বিজি পাই।কেননা রাফসান মানে রবি তো ভিডিও গুলো আপলোড করছিল।

একটু পর এমপির কাছে একটা মেইল আসে।যেটাতে লেখা আছে “বলেছিলাম না আমার সাথে লাগলো তোর অস্তিত্বও থাকবে না?এটা কেবল শুরু হল।তুই ২% ভোটও পাবি না।কেন জানিস কারণ তোর কাছের লোক গুলোও তোকে আর ভোট দিবে না।যাদের তুই নিজের টাকায় চালাইছিস তারাও তোর বিরুদ্ধে গিয়ে ভোট করবে। এটাই আমার প্ল্যান___R.K”
এবার এমপি আরো বেশি ঘাবড়ে যায়।যদি এমপি এবার ভোট না পাই তাহলে তার এত ব্যবস্যা যার মধ্যে ৯০% বেআইনি সব তো শেষ হবে সাথে এমপিও শেষ হবে।কারণ সাধারণ জনতা যেখনে ক্ষেপে গেল সেখানে প্রশাসন আর কিছু করতে পারবে না।

এমপি বার বার ট্রাই করে রাফসানের সাথে কথা বলার।এই মুহুর্তে চাইলে রাফসান তার জন্য কিছু করতে পারে।বার বার ফোন দিয়েও রাফসান ফোন ধরছে না।বেশ কিছু সময় পর রাফসান ফোন ধরে।আর এমপির সাথে দেখা করতে বের হয়।এমপির একটাই চাওয়া যেভাবে হউক এমপিকে ভোট পেতেই হবে।যত খারাপ হউক তাতে কিছু আসে না।
এমপি রাতে ভোট নিয়ে নেওয়ার চিন্তা করলো।রাফসানের সাথে ডিল করলো।রাফসান রহস্যময় হাসি দিয়ে এমপিকে বলল চিন্তা করবেন কেউ বুঝতে পারবে না আপনার অবস্থান কোথায় থাকবে।এমপি চিন্তা যুক্ত হাসি দিয়ে বলল তুমি হলে আমার শেষ ভরসা।যাদের এতদিন খাইয়ে পড়িয়ে রেখেছি তারাও আজ আমার থেকে দূরে।

রাফসান মানে রবি এমপিকে শান্তনা দিয়ে চলে এলো।পরের দিন নির্বাচন তাই এমপির কথা মতো রাতে ভোট হয়ে যেতে হবে।এইদিকে রাশেদও খুব সতর্কতার সাথে কাজ করছে।প্রতিটি নির্বাচন কেন্দ্রের চারপাশে লোক লাগিয়ে দিছে যাতে রাতে ভোট হয়ে না যায়।

এইদিকে রবি সব ছেলেপেলেদের এক হতে বলল।রাত নয়টা হতে সব ছেলেপেলে চলে আসছে।সবাই রবির সামনে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে আছে। রবি সবার উদ্দেশ্য বলল…
–আমরা এত দিন অনেক বড় বড় অপরাধ করেছি।আর নেতাদের তেল মারতে তাদের পাশে থাকতে যে কোনো কাজ করেছি।বিনিময়ে আমরা পেয়েছি কিছু টাকা। আর ঐ এমপি বেআইনি যত বিজনেস আছে সব পরিচালনা করছে।

রবির কথার মাঝখান থেকে একজন বলে ওঠল…
–জ্বি ভাই ঐ এমপি আমাদের এরিয়ার অনেক মেয়েকে পাচার করে দিছে আবার অনেকে তার ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে।

#To_be_continue…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here