#ফিরে_আসা_সিক্রেট_মাফিয়া (Politics_02)
#লেখকঃরবিউল_হাসান।
#পর্বঃ০৪

বিকালের দিকে অজয়ের বাসায় সবার থেকে বিদায় নিয়ে নিলো রবি।কারণ কালকে বলা কথা মতো মাফিয়া রাফসান সাকিবের জায়গায় রবি বসবে।যে কোনো সময় তার মৃত্যুও হতে পারে।

অজয় বার বারবার ভেবে দেখতে বলছে।কারণ রবির জন্য অজয়ের সম্মান এত দিন অজয়ের বাসায় থাকার মায়া কোনো ভাবে অজয় মানতে পারছে না।সবথেকে বেশি চিন্তা করছে সাইফা। বলা যায় সাইফা রবিকে অনেক পছন্দ করে ফেলেছে।

সাইফার চোখের কোনায় পানি চলে আসছে।কিন্তু রবিরও কিছু করার নেই। রবি এখানে থাকলে সাইফা তার প্রতি আরো বেশি আসক্ত হয়ে যাবে।আন্টি মানে অজয়ের মায়ের মুখও কালো।তিনিও চাই রবি না যাক।কিন্তু রবির তো যেতেই হবে….!

সবার থেকে বিদায় নিয়ে বের হলো।রবি বাসার বাইরে এসে বাসাটার দিকে আবার ফিরে তাকালো।সাইফা দরজার বাহিরে এসে রবি চলে যাওয়া দেখছিল।রবি ফিরে তাকাতে সাইফা নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না।দৌড়ে রবির কাছে চলে আসে আর রবিকে জড়িয়ে ধরে। পাশে অজয় দাঁড়িয়ে আছে। তার মা দরজার পাশে দাঁড়িয়ে আছে।সাইফার সে দিকে কোনো খেয়াল নেই।

রবি বার বার সাইফাকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলো কিন্তু সাইফা এত জোরে রবিকে জড়িয়ে ধরল রবি প্রতিবার সাইফাকে ছাড়াতে ব্যর্থ হল।সাইফা কান্না ভেজা কন্ঠে বলল…
–ফিরবেন কবে?
রবিঃওপর ওয়ালা চাই যবে…
–খুব কষ্ট হবে আমার।
রবিঃমায়া কাটাতে শেখ সব ঠিক হয়ে যাবে।
–তাড়াতাড়ি ফিরবেন তো?
রবিঃইমোশন চলে গেলে আমাকে আর খুঁজবে না কখনো।
–সে যাই বলুন তাড়াতাড়ি ফিরবেন যেখানে যান।
রবিঃতুমি তো জান এই মুখটা আমার আসল নয়।এর পেছনে আরো একজন আছে।
–ওই পেছনের মানুষ টাই তো আসল।

রবিঃসবাই দেখছে ছাড়ো এখন।
–বলুন না ফিরবেন কখন?
রবিঃঐ যল বললাম যদি উপর ওয়ালা চাই তাহলে যে কোনো সময় ফিরতে পারি।
–দেখতে আসবেন মাঝে মধ্যে?
রবিঃহুম চেষ্টা করব।

সাইফা আরো কিছু বলতে চাচ্ছিল কিন্তু রবি তাকে ছাড়িয়ে নিলো।সাইফা আর কিছু না বলে কাঁদতে কাঁদতে চলে গেল।অজয় আর তার মা ভালোই বুঝতে পারছে সাইফা রবিকে ভালোবেসে ফেলছে।কিন্তু রবি সাইফাকে কোনো ভাবে সেভাবে কল্পনা করতে পারে না।পিচ্চি একটা মেয়ে কিভাবে কল্পনা করবে।

রবি অজয়কে নিয়ে সেখানে গেল যেখানে মাফিয়াদের সাথে দেখা হয়েছিল।তারা আজ রবিকে ওরফে রাফসাকে নিতে আসবে।রবি খুব ভালো প্ল্যান করে যাতে পুরো রাফসানের দল খুব সহজে কনট্রোল করতে পারে।

রবি পাশে থাকা বসায় জায়গায় রাফসানের মতো করে বসল।এমন অদ্ভুত ভাবে বসায় অজয় জিজ্ঞেস করল এভাবে বসছে কেন?তখন রবি অজয়কে বলে এভাবে রাফসান বসতো।তার চলার স্টাইল সমন্ধে আমি অনেক কিছু জানি।

দুইজন বসে কথা বলছিল তখন-ই রাশেদ কোথাথেকে চলে এলো।রাশেদ অজয়কে দেখে থেমে গেলো।অজয়ের পাশে এসে দাঁড়ালো। রবির দিকে তাকিয়ে অজয়কে বলল….
–কে ওটা?
অজয়ঃও হচ্ছে রাফসান। যাকে আপনি রক্ত দিছিলেন সে দিন।
–ও আচ্ছা ইনি তাহলে সে। যার একসাথে চার ব্যাগ রক্ত দিতে হয়ছে।
অজয়ঃহ্যাঁ আমি এক ব্যাগ দিছিলাম বাকি তিন ব্যাগ আপনি আর আপনার লোকেরা দিছিল।

রাশেদ রবির মাথায় হাত দিয়ে বললো…
–ঠিক আছেন তো আপনি এখন?
রবিঃমাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল।

কথা বললে হয়তো রাশেদ বুঝে যেত এটা রবির গলা তাই এমনটা করল।তারপর রাশেদ চলে গেল।রবি বসে আছে মাফিয়া লোক গুলো আসার জন্য। কিছু সময় পর ছয়টা গাড়ি একসাথে এলো।তার মধ্যে প্রথম টাতে গিয়ে রবি ওঠে পড়ল।অজয়কে ইশারায় কিছু বলে চলে গেল।

রবিকে রাশেদ দেখেও চিনতে না পারার কারণ রবি মাস্ক পড়া ছিল।আর কোনো কথা না বলে ইশারায় বলছিল।

অজয় মন খারাপ করে বাসায় ফিরে আসলো।দেখে সবাই মন খারাপ করে আছে।বিশেষ করে অজয়ের ছোট বোন মন খারাপ করে আছে।রবির চলে যাওয়া সে মেনে নিতে পারছে না বললেই চলে।

এইদিকে রবিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রবি জানে না তাঁকে কোথায় নিয়ে যাবে।রবি কিছু না বলে চুপচাপ বসে আছে।হঠাৎ মনে হচ্ছে কিছু বলা দরকার….

–তা কাজ কেমন চলে এখন?

পাশ থেকে একজন বলে ওঠল ভালো না। কেউ তাদের পথের বাঁধা হচ্ছে নাকি।রবি ভেবে বললো….
–আচ্ছা সবাই শোন আজ থেকে আমি সবার সাথে নতুন ভাবে পরিচিত হব।মানে একদম সাধারণ ভাবে।

রবির কথা শোনে সবাই কিছু টা অবাক হল।রবি কি বলছে বুঝতে পারছে না।তারপর সবাই চুপচাপ চলে গেল।রবিকে একটা বড় বাসার সামনে নিয়ে যাওয়া হলো।রবি সেখানে গিয়ে দেখে এটা পুরো একটা রাজপ্রাসাদের মতো।রবি সবাইকে বললো কালকে সবার সাথে পরিচিত হবে নতুন ভাবে আর কাজও হবে নতুন ভাবে।পুরোনো কাজ বাদ যাবে।
রবির কথায় সবাই আড় চোখে তাকাচ্ছে। কিন্তু কারো কিছু বলার সাহস নেই।সবাই রবির কথা শোনে নিজের মতো করে চলে যেতে লাগলো।তাদের মধ্যে যে লিডার সেও চলে যেতে চাইবে তখনই রবির পেছন থেকে ডেকে বলল….

–আমার দুইটা লোক লাগবে পাঠিয়ে দিও।
রবির কথা শোনে সে বলল আগে থেকে যে দুইজন থাকতো তাদের পাঠাবে নাকি?তখন রবি বলল হ্যা তাদের পাঠিয়ে দাও।
তারপর সে চলে গেল।রবি পুরো ঘরটা দেখছে ভালো করে ক্যামরা লাগানো।আছে রুমের বাইরে। বাসার বাইরেও দুইটা ক্যামরা লাগানো আছে।

রবি দরজা লাগিয়ে দিয়ে আসছিল। একটু পর কলিং বেল বেজে ওঠলে রবি গিয়ে দরজা খুলে দিল। বাইরে দুই জন দাঁড়িয়ে আছে। দুই জনের হাতে গুলি।

রবিকে দেখে তারা দুই জন ভয়ে কাঁপতে শুরু করল।রবি দরজা লাগিয়ে দিতে ওরা দুইজন রবির পায়ে পড়ে গেল।রবিকে বার বার বলছে ভাই মাফ করে দেন অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি।

রবি খুব ভালো জানে এরা দুইজন কেন এমন করে কথা বলছে।এরাও রবিকে চিনতে পারে নি। মুখে সার্জারি করে রাফসান সাকিবের চেহারা বসিয়েছ বলে তারা দুইজন রবিকে রাফসান মনে করছে।রবি ওদের ছোট করে বলল…

রবিঃআরে এত উত্তেজিত হওয়ার কিছু নেই।সোফায় বস কথা আছে তোদের সাথে।

রবির কথা শোনে তারা একজন আরেক জনের দিকে তাকাচ্ছে। তাদের মধ্যে একজন বলে ওঠল…

–এই কন্ঠ তো রাফসান ভাইয়ের না?
রবিঃওওওওও আচ্ছা তাহলে এই গলা কার?

রবির এমন কথা শোনে দুই জনই অবাক।আবার তাদের মুখে মিষ্টি হাসি।অপর জন বলে ওঠল…..
–রবি ভাই?
রবিঃনা না আজ থেকে আমি রাফসান ভাই।
—তার মানে রবি ভাই আপনি?
রবিঃএখনো ভাই ডাকিস কেন…

দুই জনই খুশিতে রবিকে জড়িয়ে ধরল।কি পাঠকরা কিছু বুঝতেছেন না তো?চলুন বুঝিয়ে বলছি….
এই দুইজন হচ্ছে রাহী আর সিকদার। দুইজনই রাফসানের খুব কাছের লোক।কিন্তু ওরা দুই জনই রবির ফ্রেন্ড। রবি ওদের দুই জনকে রাফসানের কাছে পাঠিয়েছিল।যাতে রাফসানের সব খবর তারা পেতে পারে।আর রবি বলেছিল রাফসানকে এভাবে থামাতে পারবে না কেউ।তার থেকে ভালো রাহী আর সিকদার ওরা দুইজন সুযোগ আর সময় বুঝে রাফসানকে মেরে দিক।ঠিক প্ল্যান মতো সময় করে রাহী রাফসানকে শুট করছিল।আর সিকদার এসে আরো আঘাত করছিল ফলে রাফসান সেখানেই মরে যায়।

এই ছিল প্ল্যান তিনজন বসে আছে। রাহী বলল….
–তুই এত দিন কই ছিলি?
রবিঃআরে আর বলিস না।রাধিকার কথা বলছিলাম না তোদের ও আমার সাথে প্রেমের অভিনয় করে এমপির থেকে আমাকে মারার কনট্রাক্ট নিছিল।আর একদিন সন্ধ্যা করে নদীর পাড়ে নিয়ে গিয়ে এমপির লোকের সাথে আমাকে একটা গোড়াউনে নিয়ে যায় রাধিকা আমাকে তিনটা গুলি করে।তারপর নদীতে ফেলে দেয়। আমাদের ভার্সিটির ছোট ভাই অজয় আমাকে নদীতে পাই আর সে আমাকে হসপিটালে নিয়ে আমি।আমি পুরো একবছর কমায় ছিলাম।সেখান থেকে ফিরে পুরো ছয় মাস মতো সৃতিহীন ছিলাম।

রাহীঃবলিস কি?তারপর কিভাবে সুস্থ হলি আর রাধিকা এখন কোথায় এমপিকে বা কেন মেরে দিলি না?
রবিঃপলিটিক্স তার নিয়মে খেলতে হয়।আর কয়েক মাস পরে তো নির্বাচন। নির্বাচনের সময় সব নেতা কিছু টা দূর্বল থাকে।আর ঐ সময় আমি রাধিকা আর এমপির বিষয় দেখব।

–তো তুই একদম পুরোপুরি সুস্থ হলি কখন?
রবিঃকাল তোদের লোক একটা আকাশে গুলি চালিয়ে ছিল আমি অজ্ঞান হয়ে যায় এর পর আমার সব সৃতি ফিরে পায়।

তিনজনে কথা বলছিল তখনই দরজায় কারো দাঁড়িয়ে থেকে লুকিয়ে তাদের কথা শোনে।মানে তিনজনের সব কথা শুনে ফেলে।

#To_be_continue…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here