#ফিরে_আসা
#ফারজানা
#পর্ব_৭
স্বপ্ন ও আর কোনো প্রশ্ন না করে রাদের সাথে চলতে লাগলো…..
রাদ ড্রাইভ করছে স্বপ্ন অনেক জিজ্ঞাসা করছে ওরা কোথায় যাচ্ছে বাট রাদ একবারও বললো না কোথাও যাচ্ছে অবশেষে রাদ একটা বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামালো স্বপ্ন বাড়িটা দেখে বললো…..
____এইটা তো যতদূর সম্ভব দীবাদের বাসা
__হুম এইটা দীবাদের বাসা
___তুই এইখানে কেনো আসলি?
___আমার সাথে ভিতরে চল পরে বুঝতে পারবি
___রাদ তুই কি পাগল হয়েছিস আমরা বাসার ভিতরে গেলে দীবার কি হবে ওর পরিবার কি ভাববে
__আমার উপর ছেড়ে দে ভাই চল এখন
___আমি যাবো না তুই যা। আমি চাই না আমার বা আমাদের জন্য কোনো মেয়ে বা মানুষ অপদস্ত হোক
___তোকে তো যেতেই হবে আমার সাথে
কথাটা বলে রাদ স্বপ্ন কে এক প্রকার জোর করেই নিয়ে গেলো দীবাদের বাসায়…….
আপু আমি প্রথম মজা করবো ভেবে রাদের সাথে কথা বলেছি বাট ওর সাথে কথা বলতে বলতে এখন আমি রাদ কে ভালোবাসি আপু
আদিবা দীবাকে বলছে আর দীবার চোখ রাগে লাল হয়ে আছে….
আদিবা তুই কি ভুলে গেছিস তোর বয়স কত এর মাত্র ক্লাস ৮ এ পড়িস আর এখনি এইগুলো করছিস এখন যদি এইসব আব্বু শুনে তাহলে কি হবে বুঝতে পারছিস তুই
____আমি কিছু জানি না আপু আমার শুধু রাদকে চাই ব্যাস
এই কথা শুনে দীবার আম্মু আদিবা কে ঠাস করে একটা থাপ্পর মারে
____বেয়াইয়া নিলজ্য মেয়ে এখনো দুধের দাঁত পড়ে নাই আর ও নাকি ভালোবাসে ওই তুই কি বুঝিস ভালোবাসার হুম এখনো নাক টিপলে দুধ বের হবে আগেই বলে দিচ্ছি এইসব ভালোবাসার ভুত মাথা থেকে ঝেড়ে ফেল।
___আম্মু তুমি না আপু কে আর আমাকে সব সময় বলতে আমরা যাকে পছন্দ করি তার সাথেই আমাদের বিয়ে দিবে তাহলে আজ এইসব বলছো কেনো?.
___বলছি কারন তুই এখনো ছোটো নিজের ভালো এখনো বুঝতে শিখিস নাই বড় হো তখন যদি কাওকে পছন্দ করিস তাহলে ছেলে ভালো হলে ওর সাথেই বিয়ে দিবো এখন মনোযোগ দিয়ে পড়ালিখা কর
___আমি রাদকেই বিয়ে করবো আমি অকে খুব ভালোবাসি
আদিবা এক প্রকার জেদ করেই যাচ্ছে তখন ওর মা অকে আরেকটা থাপ্পড় মারতে যায় ঠিক তখন দীবা ওর মাকে আটখায়
___অফফফফ আম্মু অকে মেরে লাভ নাই এই ছোটো বয়সে ও আবেগী হয়ে গেছে তাই অকে আদর ভালোবাসা দিয়ে এইসব থেকে দূরে আনতে হবে
তখনি রাদ বলে উঠলো….
___হুম ঠিক বলেছো দীবা। আমি তোমার সাথে একমত
পিছনে কারো কণ্ঠ শুনে দীবা আদিবা ও ওর আম্মু তাকিয়ে দেখে দুইটা ছেলে দাড়িয়ে আছে
দীবার তো চোখে কপালে ও ভাবতেও পারে নাই রাদ এইখানে চলে আসবে আর আদিবা তো রাদ কে দেখে খুশিতে গদগদ হয়ে গেল ও নিজেকে ঠিক না রাখতে পেরে রাদ কে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো….
___তুমি এসেছো নীল চোখ দেখো আম্মু আর আপ্পি আমায় বকছে আমায় কেউ আর ভালোবাসে না শুধু তুমি ছাড়া আমাকে এইখান থেকে নিয়ে যাও নীল চোখ
আদিবার মা তো রাগে গজগজ করে উঠলো মেয়ের কথায় তাই তিনি আবারও মারতে নিলে তখন রাদ বলে….
___আন্টি আদিবা কে মেরে লাভ নেই ওতো বাচ্চা আর দেখবেন কিছুদিন পর ও ওর ভুল বুঝতে পারবে এখন আর মারবেন না
___এ এ এ তুমি ও খুব পঁচা যাও তুমি ও আমায় ভালোবাসো না
এই কথা বলে আদিবা দৌড়ে ওইখান থেকে ওর রুমে কান্না করতে করতে চলে গেলো
তখন দীবা এসে বললো….
___সরি রাদ আমি বুঝতে পারি নাই আর ঐভাবে তোমাকে চড় মারাটা আমার ঠিক হয় নি প্লিজ ক্ষমা করো
___ক্ষমা করতে পারি বাট একটা শর্তে
__কি?
___তোমার হাতের গরম চা বানিয়ে খাওয়ালে
___ওহ আচ্ছা আমি বানিয়ে আনছি আপনারা বসেন
দীবা চলে গেলো ওদের জন্য চা বানাতে তখন দীবার আম্মু রাদ ও স্বপ্ন সোফায় গিয়ে বসলো তখন দীবার আম্মু বললো….
___বাবা দেখো আমার ছোটো মেয়েটার কি একটা অবস্থা প্লিজ তুমি ওর আচরণের জন্য কষ্ট পেও না বাচ্চা মেয়ে না বুঝে এইসব করেছে
___আন্টি প্লীজ আপনি এইভাবে বলবেন না কষ্ট লাগে। আর আদিবা তো আমার বোন বোনের দোষ কি ভাই মনে কিছু করে আর চিন্তা করবেন না আমি আছিতো সব ঠিক করে দিবো
দীবা তখন চা বিস্কিট নিয়ে হাজির আর তখন দীবার চোখ যায় স্বপ্নের দিকে আর তখন দীবা রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে স্বপ্নের দিকে আর বেচারা স্বপ্ন তো এক রাশ ভয় নিয়ে দীবাকে দেখে
___ওই ফাজিল ছেলে আপনি এইখানে কেনো
__ এ আমি রাদ রাদ আমি(ভয়ে তুতলিয়ে)
রাদ দীবা আর স্বপ্নের আচরণ দেখে হাসতে লাগলো আর বললো….
___দীবা শুনো এইখানে স্বপ্নের কোনো দোষ নাই আমি বলছি সব
তখন রাদ সব কথা বলে আর বেচারি দীবা তো লজ্জায় মুখ নিচু করে ফেললো
তখন স্বপ্ন বললো….
____লজ্জা পেতে হবে না এইখানে আমার আর রাদের ও দোষ আছে আর বাই দা ওয়ে চা টা খুব ভালো হয়েছে
___ধন্যবাদ
এইভাবে অনেক দিন চলে যায় রাদ স্বপ্নের দীবাদের বাড়িতে প্রায় আসে আদিবা কে বুঝানোর জন্য বাট ও কিছুতেই মানতে রাজি না। আর দীবা তো রাদের প্রতি অনেক আগে থেকে দুর্বল আর এখন তো রাদ কে ভালবেসে ফেলে একদিন ও রাদের প্রপজালে রাজি হয়ে যায় কিন্তু স্বপ্ন ও এই কয়দিন দীবাকে আরো অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলে ও এখন রাদ দীবাকে একসাথে দেখতে পারে না
একদিন তো নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে সবার সামনে দীবাকে প্রপোজ করে বসে….
জানি তুমি অন্যকারো তাও এই বেহাইয়া মনটা তা মানতে নারাজ। জানি তুমি কোনোদিন এইটাও ভাবতেও পারো নাই কিন্তু কি করবো নিজেকে ধরে রাখা দায়। তোমাকে অন্য কারো হতে দেখতে পারবো না। তোমাকে যে বড্ড ভালোবেসে ফেলেছি দীবা খুব বেশি।
কথাটা বলতে দেরি বাট স্বপ্নের গালে চড় পড়তে দেরি হলো না স্বপ্ন জানে যে ওর সাথে এমন কিছুই হবে তাও নিজেকে ধরে রেখে সামনে তাকিয়ে দেখে দীবা রাগী চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে আর রাদ হাত মুষ্টি করে দাড়িয়ে আছে । স্বপ্ন অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে
রাদ স্বপ্নের শার্টের কলার চেপে ধরে বললো
____তুই যে এইটা খারাপ আমি জানতাম না। তোকে ভাই+ বন্ধু ভাবতাম আর তুই কিনা আমার পিছনে এসে এইভাবে ছুরি মারবি বুঝতেও পারি নাই। তুই তো ভাই+ বন্ধু নামের কলং
রাদ আরো বাজে বাজে গালি দিতে লাগলো স্বপ্ন কে আর অনেক মারতেও লাগলো
আর স্বপ্ন ও মারতে লাগলো রাদ কে তখন দীবা এসে দুইজন কে সামলায় আর রাদকে নিয়ে চলে যায়…..
রাতে….
দীবার বাসায়
দীবার আব্বু হটাৎ করেই এসে দীবা কে সজোরে একটা থাপ্পড় দেয়
দীবা থাপ্পড় খেয়ে হুমরি খেয়ে নিচে পরে যায় আর তখন দীবার আম্মু দীবাকে ধরে…..
___এই কি হয়েছে তোমার? তুমি হটাৎ করেই দীবাকে মারছো কেনো? পাগল হলে নাকি?
চলবে….
হটাৎ করে কি হলো দীবার আব্বুর আর এমন ভাবে মারলো কেনো দীবাকে ?
কিছুই তো মাথায় ঢুকছে না কোথা থেকে কি হয়ে গেলো আবার 🤯নিয়মিত গল্প পেতে আমাদের সাথে থাকুন🥰