#তোমাতে_মাতোয়ারা ৬ষ্ঠ পর্ব

_আরশিয়া জান্নাত

“ঐন্দ্রিলা ছোটবেলা থেকেই বেশ শান্তশিষ্ট।চাপা স্বভাবের জন্য ঠিকঠাক মনের খবর জানা যেত না,এমনো গেছে সে ক্ষুধা লাগলে পর্যন্ত বলতো না কাউকে।স্কুল ফাংশনে প্রথম যখন টিচাররা ওকে পার্টিসিপেট করতে বলে ও খুব জড়তার সাথে এড়িয়ে যেতে চায় কিন্তু আন্টি তাঁর মেয়ের প্রতিভা বিকাশে প্রতিটি ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করিয়েছেন।স্কুলের গানের টিচারের সাহায্যে ঐন্দ্রিলা প্রথম গান গায় স্বাধীনতা দিবসে।সেই থেকে গানের প্রতি তাঁর ঝোঁক শুরু, প্রতিটি ফাংশনে তাঁর ডাক পড়ে এবং সে বেশ সাবলীলভাবেই গান গাইতে শুরু করে।এই একটা দিকে ঐন্দ্রিলা ছিল স্বতন্ত্র।কোনোপ্রকার আড়ষ্টতা ছাড়াই হারিয়ে যেত গানের জগতে।ইন্টারে কলেজে ভর্তি হবার পর জেলা পর্যায়ে গানের একটা প্রতিযোগিতা হয়।কিন্তু ঐন্দ্রিলা সেখানে পার্টিসিপেট করেনা।শখের বশে গান করে এটা কলেজ ফাংশন অবধিই সীমাবদ্ধ রাখতেই এই সিদ্ধান্ত।””
কথাগুলো বলে কিছুক্ষণ থামে পুষ্পি।
নিরব জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে পুষ্পির দিকে চেয়ে থাকে।
—সে না হয় বুঝলাম তবে গানটা ছাড়লো কেন হঠাৎ?আর ফরহাদ যে বলেছিল প্যানিক এট্যাক হয় সেটাই বা কেন??
পুষ্পি দম নিয়ে ফের বলতে শুরু করে
—-কলেজে ভর্তি হবার পর লাস্ট ইয়ারের জুনায়েদ নামের এক ছেলে ঐন্দ্রিলাকে প্রপোজ করে।সহজাতভাবেই ঐন্দ্রিলা রিজেক্ট করে দেয়।সেই ছেলে রোজ ওর জন্য চিরকুট,ফুল, চকোলেট নিয়ে আসতো।আমরা খুব মজা নিতাম এসবে।ঐন্দ্রিলার নাম করে বিভিন্ন ফ্যাসিলিটিস নিতাম,কলেজের নেতা ছিল কি না!!তাছাড়া ফ্রিতে ফুচকা খেতাম,কেএফসিতে যেতাম,,
ফরহাদ রেগে বললো, তোদের শুধু খাওয়ার চিন্তা।খানাটাই সব তোদের জন্য।
নিরব বিরক্ত হয়ে বললো,আহা বকিস না তো শেষ করতে দে।
পুষ্পি মিনমিনে গলায় বললো,তখন কি জানতাম নাকি ছেলেটা এতো খারাপ।
–খারাপ কেন?ভালোবাসা প্রকাশ করা খারাপ নাকি?
–ভালোবাসা প্রকাশ করা খারাপ না ভাইয়া।প্রকাশ করার যেমন অধিকার আছে অপরজনের রিজেক্ট করারও অধিকার আছে তাইনা?
–হুম তা অবশ্যই।তো এরপর কি হলো??
— বসন্ত জয়ন্তির অনুষ্ঠানের জন্য ক্লাস শেষে ঐন্দ্রিলা গানের রেওয়াজের জন্য থেকে যেতো।সাথে চৈতিও থাকতো নাচের জন্য।সেদিন চৈতি অসুস্থ হয়ে পড়ায় প্র্যাকটিস না করে চলে যায়।ঐন্দ্রিলা একা হয়ে যাবে বলে রাকিব রয়ে গিয়েছিল।গানের প্র্যাকটিস শেষ করার আগে এক ছেলে এসে রাকিবকে বলে বেলাল স্যার ওকে ডাকছে।রাকিব ও অতো কিছু না ভেবে স্যারের রুমে চলে যায়।ঐন্দ্রিলা ক্লাস থেকে বেরিয়ে রাকিবকে খুঁজতে থাকে ততোক্ষণে সবাই চলে যায়।যে ক্লাসটায় রাকিব অপেক্ষা করতো সেখানে ঢুকতেই কে যেন দরজা লক করে দেয়।ঐন্দ্রিলা ভাবলো দপ্তরি আঙ্কেল ওকে দেখেনি বলে দরজায় তালা দিচ্ছে।ও দরজা নক করতে থাকে আর আঙ্কেলকে ডাকতে থাকে।
–ওর কাছে ফোন ছিল না?ফোন করে রাকিবকে ডাকলেই পারতো?
–ও তো শুরুতে বুঝেনি সব পরিকল্পিত।অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পর যখন সাড়া পেলো না ও ফোন করলো রাকিবকে।অনেকবার কল করার পরো রিসিভ হয়নি।ও বাসায় কল ডায়াল করতেই দরজা খুলে দিলো কেউ।স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে তাকিয়ে দেখে জুনায়েদ দাঁড়ানো।জুনায়েদ এসে প্রথমে ওকে ফের ভালোবাসার কথা জানায়।ওকে ছাড়া ও বাঁচবেনা,ঐন্দ্রিলাকেই ওর চাই ইত্যাদি এমন অনেক রকম কথা বলে।ঐন্দ্রিলার রেসপন্স না পেয়ে সে ওকে জড়িয়ে ধরে উদভ্রান্তের মতো আচারণ শুরু করে।একটা সময় হাসতে হাসতে বলে,তুমি আমার ভালোবাসা প্রত্যাখ্যান করছো?কিন্তু যদি আমি তোমায় কলঙ্কিত করি আমায় ছাড়া কাউকে তো বিয়ে করতে পারবেনা তাইনা??
সোজা আঙুলে যখন ঘি উঠেনি তবে আঙুল ত্যাড়াই করি?ডোন্ট ওরি আমি তোমায়ই বিয়ে করবো,তোমাকে আমি কতোটা ভালোবাসি তোমার কল্পনায় ও নেই তবে আমি অন্য প্রেমিকদের মতো তুমিহীনা বিরহে বাঁচতে পারবোনা।তুমি শুধুই আমার হবা।
ঐন্দ্রিলা অবস্থা বেগতিক দেখে দৌড়ে পালাতে চায়,কিন্তু পারেনা।তারপর ওকে রেইপ করার চেষ্টা করে,,,,

নিরবের চোয়াল শক্ত হয়ে আসে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে রাগ দমানোর চেষ্টা করে।ঐ জুনায়েদকে এখন হাতের কাছে পেলে নিশ্চিত নাক ফাটিয়ে দিতো।

–থ্যাঙ্কফুলি তখন বাসায় কলটা গিয়েছিল, আন্টি ঐন্দ্রিলার ফোন রিসিভ করে এবং সবটা শুনে ফেলে।কল না কেটেই ইশতিয়াক ভাইকে নিয়ে দ্রুত কলেজে আসে।ঐন্দ্রিলা জুনায়েদ এর এসব শুনেই ভয়ে চুপসে যায়,মেন্টালি প্রেশারটা নিতে না পেরে সেন্সলেস হয়ে যায়।ঘটনার আকস্মিকতায়
জুনায়েদ ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়।আন্টি আর ইশতিয়াক ভাইয়া পুরো কলেজ ঐন্দ্রিলাকে খুঁজতে থাকে।শেষে ঐন্দ্রিলাকে সেন্সলেস অবস্থায় পেয়ে হসপিটালে ভর্তি করে।
এই ঘটনার কথা পুরো কলেজে ছড়িয়ে যায় কিন্তু বিকৃতভাবে।জুনায়েদের ভয়ে বা টাকা খেয়ে দপ্তরি বানোয়াট গল্প সাজিয়ে বলে।সে বলে তিনি ঐন্দ্রিলাকে তাঁর প্রেমিকের সাথে সেই রুমে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে,তাকে দেখে ঐন্দ্রিলা ভয়ে সেন্সলেস হয়ে যায় আর ঐ ছেলে দৌড়ে পালায়।ছেলেটাকে ধাওয়া করতে গিয়ে সে গেইট পর্যন্ত গিয়েছিল।
–ঐন্দ্রিলার ফ্যামিলি এ ব্যাপারে কিছু বলেনি?
–উনারা তখন ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে বিজি।কলেজে কি ঘটছে তা জানবে কি করে!আর দপ্তরি যে এমন জঘন্য গুজব ছড়াবে তাঁরা তো কল্পনাই করেনি।এসব ঘটনা শুনে আমরা তো বিস্ময়ের চরম সীমায় চলে গিয়েছিলাম।ঐন্দ্রিলাকে বা তাঁর ফ্যামিলিকে এই বিষয়ে কিছু জানানোর মতো অবস্থায় ছিল না বলে কিছু বলিনি।পনেরো দিন পর ঐন্দ্রিলা যখন কলেজে আসে সবাই ওর দিকে ঘৃণার দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে,আর সেই কালপ্রিট জুনায়েদ!সে নিজেও কম কুৎসা ছড়ায়নি।আমাদের এসে বলতো,তোমাদের বান্ধবী আমাকে রিজেক্ট করেছে প্রেম ভালোবাসা হারাম বলে।অথচ দেখছো গোপনে কি সব করে বেড়ায়!!
বসন্ত জয়ন্তীতে ঐন্দ্রিলা যখন গান গাইতে স্টেজে উঠে সবাই ওকে কাগজের বল ছুড়ে মারতে শুরু করে।”Shame on Oindrila” বলে চিৎকার করতে থাকে।এমন ভরা মজলিশে সকলের ঘৃণা আর তিরস্কার ঐন্দ্রিলার সহ্য হয়নাই।আমরা গিয়ে ওকে ধরে নিয়ে আসি।সেই ইনসিডেন্ট এ ঐন্দ্রিলা প্যানিকড হয়ে যায়, নিজেকে একদম গুটিয়ে ফেলে।
পরে অবশ্য আসল ঘটনাটা সবার সামনে এসেছিল।কলেজ প্রাঙ্গণে স্যারের সাহায্যে সকলের সামনে আন্টি সেদিনের রেকর্ডিং অন করেন এবং আসল ঘটনা বলেন।পুলিশ এসে দপ্তরিকে জেলে নেওয়ার হুমকি দিতেই সে সব স্বীকার করে।কিন্তু জুনায়েদ এর নাম উল্লেখ করেনা।
রেকর্ডিং শুনে আমাদের বুঝতে বাকি থাকেনা গলাটা কার।কলেজে তাঁর অনেক পাওয়ার ছিল,ব্যাকগ্রাউন্ডে উপচার্য ছিল।তাই আমরা আর এই বিষয়ে ঘাটিনি।বিচার সালিশ করেই বা কি হতো পরে যদি মিটমাটের নামে ঐন্দ্রিলাকে বিয়ে করতে বলে! সেই জন্য আন্টিরা আর এ বিষয়ে কিছু করেনি।
নিরব কিছুক্ষণ থম মেরে বসে থাকে।এতোকিছু ঘটেছে ঐন্দ্রিলার জীবনে সে তো ভাবতেই পারেনি।ভালোবাসার মানুষের নামে কিভাবে বদনাম ছড়ায় মানুষ!!ওর এই জঘন্য কাজের জন্যই ঐন্দ্রিলা তাঁকে এতো এড়িয়ে যেত।অতীতের বিষাক্ত অভিজ্ঞতা ঐন্দ্রিলাকে না জানি কত পিষে মারছে!!
–তা জুনায়েদ পিছু ছাড়লো কিভাবে?পরবর্তীতে আর আসেনি ভালোবাসার জয়গান নিয়ে?
— হাহাহা,,,কেউ না জানুক সে তো জানে ঐন্দ্রিলার চোখে তাঁর অবস্থান কি!তাছাড়া ঐন্দ্রিলার দাদাই ইরফাজ সরওয়ার ব্যাপারটা খুব স্মার্টলি হ্যান্ডেল করেছেন।রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে হুমকির মুখে ফেলে জুনায়েদ আর ঐন্দ্রিলাকে ডিস্টার্ব করতে আসেনি।তবে,,,
–তবে?
–ঐন্দ্রিলা জুনায়েদকে খুব ভয় পায়।তাঁকে দেখলেই প্যানিক হয়ে যায়।
–স্বাভাবিক!
–এবার সব জানলি তো শান্তি?
পাশ থেকে বলে উঠলো ফরহাদ।
–জুনায়েদ কে পাইলে,,,,,
পুষ্পি মুচকি হাসি দিয়ে বললো,ভাইয়া আপনি ঐন্দ্রিলাকে এতোদিন ধরে ভালোবাসেন বা প্রপোজ করেছিলেন ঐন্দ্রিলা কখনওই বলেনি আমাদেরকে।আমিতো আজকে আপনার কাছ থেকে শুনে আকাশ থেকে পড়েছি।আমি ঐন্দ্রিলার ছোটবেলার বন্ধু অথচ দেখুন আমাকে পর্যন্ত শেয়ার করেনি,এই হচ্ছে ঐন্দ্রিলা!! তবে সেদিন আপনি সবার সামনে ওকে অপমান করে মোটেও ঠিক করেন নি।আমি কিন্তু সানিয়া আপুর থেকে সব শুনেছি।
— মনের ঝাঁঝ মেটাতে বলেছে,ইগো বেশি কিনা!!
নিরব ফরহাদের পিঠে কিল বসিয়ে বললো,মোটেও না।ইগো বেশি মানছি আমি তবে ইগো হটিয়ে মনের কথা আমিই বলেছিলাম কিন্তু,আর হ্যাঁ ঝাঁঝ মিটাতে বলেছি এটা সত্যি।পরবর্তীতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট ও আমিই পেয়েছিলাম।
–ওরে মামা ভালোবাসা তো জইমা ক্ষীর।
–কিন্তু ভালোবেসে বিশেষ লাভ হবেনা!ওর ভালোবাসা পেতে চাইলে ওর দাদা দাদীকে হাত করতে হবে।হাহাহা
–যাক একটা ভরসা ওর মনে কেউ নেই,সিট এখনো ফাঁকা।ওর মনে আমার প্রতি ভালোবাসা জন্মানোর জন্য আমি সব করতে রাজী।তবে সেজন্য তোমার হেল্প লাগবে ।
–অবশ্যই!তবে ঐন্দ্রিলা যেন কখনো না জানে।নাহয় আমারে কাঁচা খেয়ে ফেলবে।
–ডোন্ট ওরি!ফরহাদ শালা তোরে এবার সত্যি সত্যিই শালা বানামু।
–ভুলে যাইস না আমি ওর বড় ভাই।সো নো শালা।সম্মান দিয়া কথা কইবি।
সবাই হেসে উঠলো।পুষ্পি মনে মনে বললো,নিরব ভাইয়া মানুষ হিসেবে খারাপ না।আশা করি ঐন্দ্রিলার পাস্ট ভুলিয়ে ভালোবাসার যে সুন্দরতম অংশ আছে তা তাঁকে দেখাবে।ভালোবাসার রঙে রাঙিয়ে তুলবে ঐন্দ্রিলাকে।
।।
দুইদিন ধরে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে বসে আছে দিয়া।দুইদিন আগে ইশতিয়াককে ফোন করে দেখা করতে চেয়েছিল সে,কিন্তু ইশতিয়াক দেখা করলোনা বরং বললো আর কখনোই যাতে ফোন না করে।সেই থেকে দরজা লক করে নাওয়া খাওয়া ছেড়ে বসে আছে সে।বাড়িতে সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত বিধায় কারোই নোটিসে পড়েনি।কাজের মেয়ে ময়না নাঈমা রশিদের সামনে কাচুমাচু হয়ে দাড়িয়ে আছে।নাঈমাকে সে ভীষণ ভয় পায়,যদিও তিনি কখনো একটা ধমক তো দূর উঁচু গলায় কথা পর্যন্ত বলেনি।নাঈমা ফাইল থেকে মুখ উঠিয়ে বললো,কিছু বলবে ময়না?
–মেডাম ছোট আপা দুইদিন ধইরা খানা দানা ছাইড়া দরজা আটকাইয়া বইসা আছে।ডাকলেও বাইর হয়না।
–আগে বলো নি কেন?যাও ওর জন্য খাবার রেডি করো আমি দেখছি।
নাঈমা দরজায় নক করে ডাকতেই দিয়া দরজা খুলে দিলো।কেঁদেকেটে চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলেছে,ফর্সা মুখটা কেমন নেতিয়ে গেছে।এলোমেলো চুল জানান দিচ্ছে কতোটা অযত্নে রেখেছে তাঁকে।নাঈমার মনটাই খারাপ হয়ে গেল।তাঁর এই ছোট মেয়েটা সবসময় সেজেগুজে ঘুরে বেড়ায়,ডায়েট করে, স্কিনের প্রতি বেশ কেয়ারিং।তার চেহারার এই দশা কেন?দিয়া ভেতরে ঢুকে ফ্লোরে হাঁটু ভাজ করে বসে।নাঈমা বেড এ বসে মেয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,কি হয়েছে মা মন খারাপ?
দিয়ার ফ্লোরে বসেই মায়ের কোলে মুখ গুজে কাঁদতে থাকে।নাঈমার মনে কিছুটা শঙ্কা জেগে উঠে।মেয়েটা কোনো ভুল করে ফেলেনিতো??
অনেকক্ষণ কান্নার পর দিয়া বলতে থাকে,আম্মু আমি একজনকে ভালোবাসি।কিন্তু সে আমাকে ভালোবাসেনা একটুও পাত্তা দেয়না।আমি কথা বলতে চাইলেই পাশ কাটিয়ে চলে যায়।আমার মনের কথা বলার জন্য মিট করে বলেছি আর মুখের উপর না করে দিছে,বলছে আর কখনোই যেন ফোন না করি।আম্মু আমি কি দেখতে সুন্দর না?আমার স্বভাব বা বৈশিষ্ট্য কি সুন্দর না??সে কেন আমাকে ভালোবাসেনা আম্মু??
নাঈমা তাঁর মেয়ের বাচ্চামী দেখে মুচকি হাসলেন।মেয়েটা বড় হয়েছে ঠিক কিন্তু এখনো বাচ্চা!কেউ বলবে ও এখন অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ে!টিনেজের মেয়েদের মতো ও আমায় ভালোবাসে না বলে কাঁদছে।
নাঈমা মেয়ের চোখের পানি মুছে কপালে চুমু খেয়ে বললো,মামণি এভাবে কাঁদেনা সোনা।ভালোবাসা কি জোর করে হয়?সৌন্দর্য দিয়েও হয় না।কার মনে কখন যে কাকে ধরে যায় বলা যায় না।তোমার যেমন তাঁকে মনে ধরেছে তাঁর ও তো ধরতে হবে মা!কেউ রিজেক্ট করার মানে এই না তুমি দেখতে ভালো না বা তোমার স্বভাব বৈশিষ্ট্য খারাপ।এভাবে ভাববেনা কখনো।নিজেকে ভালোবাসতে হবে আগে।তুমি যদি নিজেকেই ভালো না বাসো অন্যরা ভালোবাসবে কিভাবে?
দিয়া নাক মুছে আদুরে গলায় বললো,আম্মু আমাকে উনার সাথে বিয়ে দিয়ে দাও না।সত্যি বলছি অনেক ভালো ছেলে,খুব ভদ্র।আম্মু প্লিজ ওর সাথে বিয়ে দিয়ে দাও না।
মেয়ের এহেন কান্ডে নাঈমা হাসবে নাকি কাঁদবে বুঝতে পারলোনা।তবে মেয়েটার মাথা যে একেবারেই গেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই তাঁর।কি বলে সান্ত্বনা দিবে তাও বুঝতে পারছেন না।তারপরো বললো,আচ্ছা তোমার বাবার সাথে কথা বলবো এই বিষয়ে।তবে এক শর্তে।
–কি শর্ত?
–এখুনি ফ্রেশ হয়ে খেতে বসবে।খাওয়ায় অনিয়ম করা চলবেনা।
দিয়া উঠে ওয়াশরুমে চলে গেল।নাঈমা চিন্তিতভঙ্গিতে ডাইনিং এ গেলেন।

ঐদিকে নিরব ব্যাগ গুছিয়ে চললো দৌলতপুর।

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here