#তোমাতে_মাতোয়ারা ১০ম পর্ব
_আরশিয়া জান্নাত
ভালোবাসা বোধহয় রংধনুর মতো।জীবনে যখনই আসে সাত রঙে রঙিন করে দেয়।মনের মাঝে অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে,প্রিয় মানুষটাকে দেখার তৃষ্ণা, একটু কথা বলার জন্য মরিয়া হয়ে উঠা এই সবই বুঝি তখন খুব সাধারণ বিষয়।
ঐন্দ্রিলা আর নিরবের দিন কাটছে সেই ম্যাজিক্যাল ঘোরে।
বিয়ের এক সপ্তাহ আগে ঐন্দ্রিলা দৌলতপুর চলে যাবে।তাই এরমাঝে বিয়ের শপিং সেরে নিয়েছে তাঁরা।নিরব আলাদা দেখা করতে চাইলেও ঐন্দ্রিলা সায় দেয়নি।বিয়ের পর তো ওর সাথেই ঘুরবে,সারাক্ষণ থাকবে।এখন ফ্যামিলিকে সময় দেওয়াটাই ঐন্দ্রিলার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।নিরব ও ঐন্দ্রিলার মনের খবর জেনে জোর করেনি।সারাদিনে একবার ই কথা হয় তাঁদের।এতে অবশ্য ভালোবাসাটা বাড়ছে,ঐন্দ্রিলার প্রতি আকর্ষণ কমছে না একবিন্দুও।
নিরব— ঐন্দ্রিলা একটা কথা বলি রাখবে?
ঐন্দ্রিলা–বলুন।
— আমি কিন্তু সেদিন এমনি এমনি বলিনি তোমার গান কেবল আমি শুনবো।
—আমি গান গাই না।
—যদি বলি বিয়ের রাতে আমার প্রথম আবদার হবে তোমার গান শোনার,তবে কি পূরণ করবেনা?
—আপনি এতো ভালো সিঙ্গার কোথায় আপনি সেদিন গান শোনাবেন তা না রানু মন্ডলের গান শোনার আবদার রাখছেন!
নিরব কিছুক্ষণ সময় নিলো কথাটা বুঝতে।যখন বুঝলো ঐন্দ্রিলা নিজেকে রানু মন্ডল বলেছে ও হেসে ফেললো।
ঐন্দ্রিলা খুব আস্তে করে বললো,আপনি কি জানেন আপনার হাসিটা কোথায় গিয়ে লাগে?একদম হাসবেন না আপনি,,,
নিরব—তাই বুঝি?
ঐন্দ্রিলা জিভ কেটে বললো–কি কান রে বাবা সব শুনে ফেলে।
—তোমার কোনো কথা এড়িয়ে যেতে চাইনা,তাই মনোযোগটা বেশি থাকে।
—হুহ ঢং!
—কিসের ঢং হুম?
—কিছু না।
—ঐন্দ্রিলা,,
—হুম?
—ভালোবাসি।
—আচ্ছা।
—কি আচ্ছা!ভালোবাসি বললে কেউ আচ্ছা বলে?
—ফোনটা রাখি?পরে কথা হবে,
নিরব ফোন রেখে দেয়।আজ পর্যন্ত যতোবার ঐন্দ্রিলাকে সে এই কথা বলেছে প্রতিবার ও নানা বাহানায় ফোন রেখে দিয়েছে।
আচ্ছা নিরব কি কখনও জানবে তাঁর “ভালোবাসি” শব্দটা শোনার পর ঐন্দ্রিলা মনে মনে কতবার এর উত্তর দেয়?কিংবা তাঁর হৃদপিন্ড কতটা জোরে কম্পিত হয়?ফোন রেখে না দিলে যদি শুনে ফেলতো গলা অবধি কান্না আটকে আছে?
“”মানুষটা এতো কেন ভালোবাসে?”
_____________
ইরফাজ সাহেব বাড়ি ফিরেই লোক লাগিয়ে সবকিছু ক্লিন করাতে লেগে গেছেন।সামনেই বিয়ে হাতে সময় বেশি নেই,পুবের বাংলোটাও পরিষ্কার করানো হলো।ইরফাজ সাহেব কাঠমিস্ত্রিকে খবর দিয়ে পালকি বানানোর অর্ডার দিলেন।নাতনিকে দৌলতপুর থেকে বিয়ে দেওয়ার মেইন রিজন ছিল এটা।সে চেয়েছিল পালকিতে করে ঐন্দ্রিলা বিদায় হবে আগের দিনকার মতো।এখান থেকে পুবের বাংলো পর্যন্ত পালকি যেতে পনেরো মিনিটের রাস্তা।এরপর গাড়িতে করে ঢাকায় যাবে।
মনোয়ারা বেগম স্বামীর এই শখের কথা অনেক আগে থেকেই জানেন।ছোটবেলায় ঐন্দ্রিলাকে যখন মেলা থেকে কাঠের পালকি কিনে দিয়েছিল ঐন্দ্রিলা বললো,দাদাই এটা দিয়ে কি করে?
ইরফাজ সাহেব বললেন,এটা দিয়ে বিয়ের পর নয়া বৌ শ্বশুরবাড়ি যায়।
ঐন্দ্রিলা বেশ কিছুক্ষণ ভেবে বললো,কিন্তু ছোট ফুপী তো কারে করে গেল?এটাতো দেখিনি?
—এখন তো পালকির চল নাই দাদুভাই।এখন সবাই গাড়িতে করে যায়।
—দাদাই আমি শ্বশুরবাড়িতে এই পালকিতে করে যাবো।আমি এটা যত্ন করে রেখে দিবো।
ইরফাজ সাহেব সেই থেকে ঠিক করেছেন নাতনিকে পালকিতে চড়িয়ে বিদায় দেবেন।
ইরফাজ সাহেবের চোখ ভরে আসলো।মনোয়ারা বেগম স্বামীর মনের অবস্থা বুঝে পাশে এসে বসলেন।ভারাক্রান্ত গলায় বললেন,
–মনুরাণী আমাগো নাতনি কত বড় হইয়া গেছে,এহন সে পরের বাড়ির বৌ হইবো।সেইদিন না ওরে লইয়া মেলায় গেছিলাম,দোলনায় চইড়া কি খলখলাইয়া হাসতো?
—এমন কইরা কইও না।আল্লাহর কাছে দোআ করো আল্লাহ যেন ওরে সুখি করে,স্বামীসোহাগী হয়।
—সেই দোআ তো করিই।কিন্তু মনডা মানেনা গো।দুই মাইয়ারে বিদায় দিয়া কলিজায় আর শক্তি নাই।
–আহা এমন করলে হইবো?শান্ত হও তো।নইলে আমি কিন্তু চান্নিরে ফোন কইরা কমু,হে শুনলে বিয়াই করতোনা।
ইরফাজ সাহেব চোখ মুছে বললেন,না না কইও না কিছু।নিরব বড় ভালা পোলা,চান্নিরে অনেক যত্নে রাখবো দেইখো।
–ইনশাআল্লাহ।
।
নাহার রোজ নিয়ম করে ঐন্দ্রিলার জন্য ফেইস প্যাক বানিয়ে হাজির হন।মেয়েটা নিজের স্কিনের প্রতি একটুও যত্নশীল না।বিয়ের আগে মেয়েরা কত কি মাখে,তাঁর মেয়ে ঠিকঠাক ক্রিমটাও রেগুলার মাখেনা।কোনো অকেশন হলে যা একটু সাজে এছাড়া সারাবছর কোনো খবর নাই।
মায়ের এসব কান্ডে ঐন্দ্রিলা বিরক্ত হলেও মুখে কিছু বলেনা।শুধু একদিন বলেছিল,যতো ঘষামাজাই করো তাঁর পাশে দাঁড়ালে আমাকেই কালো লাগবে।
নাহার রেগে বললো,তোকে ফর্সা করতে এসব দিচ্ছি?যদি সেই ইচ্ছে থাকতো ফেয়ারনেস ক্রিম সাজেস্ট করতাম।এসব দিচ্ছি যাতে ময়লা কেটে তোর আসল রংটা ফিরে।
—ঐ তো একই কথা।
ইমরান আত্মীয় স্বজন সবাইকে বিয়ের কার্ডের সাথে চকোলেট আর মিষ্টি পাঠাতে ভুললেন না।ইশতিয়াক আর তিনি নিজে গিয়ে সবাইকে ইনভাইট করেছে।যদিও সবকিছু ঢাকায় হলেই বেশি সুবিধা হতো কিন্তু বাবার ইচ্ছেকে মর্যাদা দিতে এতোটুকু স্যাক্রিফাইস তিনি অনায়াসে করতে পারেন।
ওদিকে নিরব তাঁর রুমের ডেকোরেশন বদলে ফেলেছে,ঐন্দ্রিলার পছন্দসই করে ডিজাইন করিয়েছে,ইনডোর প্ল্যান্ট দিয়ে বেলকনী সাজিয়েছে।বাকি ডেকোরেশন ঐন্দ্রিলা এসে করবে।
______
বিকাল থেকেই ঐন্দ্রিলার মাইগ্রেনের ব্যথাটা বেড়েছে।ঘরের সবকটা পর্দা টানিয়ে অন্ধকার ঘরে মাথার উপরে বালিশ দিয়ে শুয়ে আছে সে।কাল সকালেই তাঁরা দৌলতপুরের উদ্দেশে রওয়ানা হবে।ঐন্দ্রিলার ছোট মামা,খালামণি আর নানুরা গতকাল এসেছেন।কাল সবাই একসঙ্গে বের হবে।
সন্ধ্যায় নিরব আর দিয়া ওদের বাসায় এসেছে।নাহার ওদের ফোন করে আসতে বলেছেন,ঐন্দ্রিলার মামার বাড়ির লোকেরা আসার পর থেকেই নিরবকে দেখার জন্য বলছেন,ঐন্দ্রিলার অ্যাঙ্গেজমেন্টে তাঁরা উপস্থিত থাকতে পারেন নি,এ নিয়ে আফসোসের অন্ত নেই।
নিরব এসে সবাইকে সালাম করে কুশল বিনিময় করলো।ঐন্দ্রিলার নান্নান নূরজাহান বললেন,মাশাআল্লাহ নাতজামাই তো আমার বেশ পছন্দ হয়েছে।
তারপর ব্যাগ থেকে তিন হাজার এক টাকা দিয়ে বললো,নাও নানুভাই এটা রাখো।
নিরব নিতে না চাইলে নাহার বললো,বাবা আমাদের বাড়ির নিয়ম এটা,রাখো।মা ভালোবেসে দিয়েছেন,মানা করোনা।
নিরব— নানু দোআ করুন এতেই আমি খুশি।এসবের কোনো দরকার নেই আসলে।
নূরজাহান—দোআ তো আছেই,তবুও রাখো এটা।হ্যাঁরে ঐন্দ্রিলা কই?এরা আসছে যে খবর পায় নাই?
কাজের মেয়ে শায়লা বললত–নানীজান আপামনির মাথা কাম্বোড় উঠছে।সেজন্য রুমে ঘুমায়।
দিয়া—তাহলে থাক ঐন্দ্রিলা ভাবীকে ডাকতে হবেনা।উনি রেস্ট নিক।
নিরব মন খারাপ করে ফেলায় নূরজাহান বললো,শায়লা তুই বরং নিরবরে ওর ঘরে নিয়ে যা,অনেকক্ষণ তো ঘুমাইছে।চোখের দেখা দেখুক অন্তত।
নিরব নানুর দিকে তাকিয়ে হাসি দিলো।তখন নূরজাহান নিরবের কানে কানে বললো,এই হাসি দিয়াই বুঝি বেয়াইনরে বশ করছো ভাই?
নিরব মাথা চুলকে বললো,আপনিও বশ হয়েছেন বুঝি??
–আমরা বশ হয়ে লাভ কি যারে করার দরকার তাঁরেই করো।যাও দেইখা আসো কি হালে আছে।ওর এই মাথাব্যথার ব্যমো টা সাড়লো না।
নিরব কিছুটা চিন্তিত ভঙ্গিতে ঐন্দ্রিলার রুমে গেল।
শায়লা আগে ঢুকে ঐন্দ্রিলাকে ডেকে দিলো,ঐন্দ্রিলা উড়না টেনে হাঁটু ভাজ করে বসলো।আলোটা একটুও সহ্য হচ্ছেনা তাঁর।তবুও নিরবকে দেখার সুযোগটা মিস করতে চায়নি।
শায়লা নিরবকে রুমে ঢুকতে বলে চলে গেল।
নিরব ভেতরে গিয়ে ঐন্দ্রিলাকে দেখলো,সদ্য ঘুম ভেঙে উঠায় চুলগুলো এলোমেলো হয়ে ছড়িয়ে আছে,চোখেমুখে ফোলাভাব,মুখজুড়ে ভর করেছে অপার স্নিগ্ধতা।
—ঐন্দ্রিলা ব্যথা কমেছে?মেডিসিন কিছু নিয়েছ?
ঐন্দ্রিলা ঘুমঘুম গলায় আধো চোখ মেলে বললো,মাথাব্যথার মেডিসিন খাওয়া ভালো না।পরে অভ্যাস হয়ে যাবে।কিছুক্ষণ রেস্ট করলে এটা এমনিতেই সেরে যাবে।
নিরবের কাছে ঐন্দ্রিলার এই রূপটা বড্ড আদুরে লাগলো,ইচ্ছে হলো বাচ্চাদের মতো গালদুটো টেনে দিতে।সেই ইচ্ছে দমিয়ে বললো,তোমার নাকি অনেক আগে থেকেই এই সমস্যা ডাক্তার দেখিয়েছিলে?
ঐন্দ্রিলা প্রসঙ্গ এড়িয়ে বললো,কখন এসেছেন?সাথে আর কেউ আসেনি?কিছু খেয়েছেন?নান্নানের সঙ্গে দেখা হলো?তিনি তো আসার পর থেকেই আপনাকে দেখার জন্য উতলা হয়ে গেছেন।
–হুম দিয়া এসেছে,উনার সঙ্গে দেখা করেই এসেছি।তিনিই তো এখানে পাঠালেন।একটা জিনিস খেয়াল করেছ তোমার নানী দাদী দুজনেই এই বয়সেও খুব রোমান্টিক।অথচ তুমি তাঁদের নাতনী হয়ে এতো আনরোমান্টিক কিভাবে!
ঐন্দ্রিলা চুল ঝেড়ে হাত খোঁপা করতে করতে বললো,একটু কথা বলেই বুঝে ফেললেন তাঁরা খুব রোমান্টিক?
—কে কতোটা রোমান্টিক তা বুঝতে বছর লাগেনা।
—আপনিতো বুঝবেন ই রোমান্টিকতায় পিএইচডি করেছেন কি না!
আপনি একটু বসুন আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
—না উঠতে হবেনা তুমি বরং আরেকটু ঘুমাও।আমি একটু পর চলে যাবো।মাথা ব্যথা কমেছে?
ঐন্দ্রিলা উঠে ওয়াশরুমের ভেসিনে মুখটা ধুয়ে এলো।টাওয়েল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বললো,দুই মিনিট চোখের আড়াল হবো ভেবে এই কথা বললেন তাইনা?
নিরব হেসে বললো,বাহ অনেক কিছুই বুঝে ফেলেছ দেখছি!তবে তোমাকে ওভাবে দেখতেই ভালো লাগছিল।
ঐন্দ্রিলা ইন্টারকমে ফোন করে শায়লাকে বললো কফি নিয়ে আসতে।
—কাল কখন যাবে?
—সকালেই।আপনারা কবে আসবেন?
—হলুদের আগেরদিন।
—আচ্ছা।
—ব্যস্ত হয়ে যেওনা যেন,রাতে অন্তত ফোনটা পাশে রেখো।
—রাত ছাড়া ফোন দিবেন না কিন্তু,ভাবীরা সবাই মজা করবে।কালকে কল করেছিলেন যখন ইতুরা কত কি যে বললো।
–আমিতো ভেবেছিলাম আমার কোনো শালিকা নেই।আজ দেখলাম তিনজন আছে।যাক আফসোস রইলোনা।
—এতোদিন বুঝি খুব ছিল?আচ্ছা দিয়াকে নীচে একা বসিয়ে এসেছেন?কেউ আছে ওর সঙ্গে?
—তোমার বোনেদের সাথে গল্পে মেতেছে।ওর মানুষ পেলেই চলে অল্পতে ভাব করে ফেলে।
ঐন্দ্রিলার টেবিলে তাঁদের অ্যাঙ্গেজমেন্টের ছবির
ফ্রেম হাতে নিয়ে নিরব বললো,আমাদের ফাস্ট কাপল ফটো!
ঐন্দ্রিলা হেসে বললো,হুম।
এমন সময় দিয়া,ইতু,তারিন,টয়া দরজা নক করে বললো,এহেম এহেম আসতে পারি?
ঐন্দ্রিলা—আয় তোরা।আমিও তো বলি এতোক্ষণ না এসে কিভাবে আছে।
ইতু– আমরা তো সেই কখন ই চলে আসতাম।তোমার ননদীনি আসতে দিলোনা।তাঁর ভাই নাকি সহজে ভাবীর দেখা পায়না।তাই স্পেস দিচ্ছিল।
দিয়া–ঠিকই তো বলেছি।ভালো আছ ভাবী?মাথা ব্যথা কমলো তোমার?
ঐন্দ্রিলা দিয়াকে জড়িয়ে ধরে বললো,হ্যাঁ ভালো আছি।তুমি ভালো?আন্টি আঙ্কেল সবাই ভালো আছে?
–হুম সবাই ভালো আছে।চটজলদি বাসায় চলে আসো তো,একা একা ওখানে আর ভালো লাগছেনা।তোমরা সবাই কত মজা করছো!
টয়া– তুমিও চলো আমাদের সঙ্গে?বড়রা সবাই হলুদের আগেরদিন যাবে,তুমি আমাদের সাথে এখনই চলো???
দিয়া— পারলে তো এখনই চলে যেতাম,কিন্তু,,,,
তারিন— নিরব ভাইয়া ম্যানেজ করতে পারবেন না??
নিরব— বাসায় কথা বলে জানাবো।আচ্ছা আমরা বরং নীচে যাই,ঐন্দ্রিলা রেস্ট করুক।
ইতু—ওহো কত্ত কেয়ারিং।
ঐন্দ্রিলা–তুই ও না বেশি একদম।
ইতু— আচ্ছা আমরা নীচে যাচ্ছি,দুলাভাই তাড়াতাড়ি আসবেন কিন্তু আটকে পড়বেন না যেন?
ওরা চলে যাওয়ার পর নিরব বলল,আচ্ছা যাই তাহলে,কেয়ারফুলি থেকো।
–এমনভাবে বলছেন যেন এই প্রথম যাচ্ছি,আর কথা হবেনা!
–তুমি আসলেই,,,,,,
–হুহ।আমি কি আসলেই?
–কিছুনা।শুনো এটা তোমার জন্য,দেখো তো পছন্দ হয় কিনা?
ঐন্দ্রিলা বক্স খুলে দেখলো খুব সুন্দর সীতহার স্টাইলের পেন্ডেন্ট।প্রথম চেইনে প্রজাপতি,দ্বিতীয় চেইনে দুটো লাভ শেইপ এ O আর N অক্ষর ডিজাইন করা।
—ওয়াও অনেক সুন্দর!
তারপর সে গলায় পড়ে বললো,কেমন লাগছে?
নিরব বললো,তাকাবোনা।
ঐন্দ্রিলা অবাক হয়ে বললো,কেন?না তাকালে বুঝবেন কিভাবে??
নিরব অভিমানী গলায় বললো,তুমি কি একটুও রোমান্টিক হতে পারলেনা ঐন্দ্রিলা?নাটক মুভির মতো চেইন আটকাতে না পারার অভিনয় করলে কি হতো?আমি পড়িয়ে দিতাম!আর এখন তাকাতে বলছো যে??তোমার গলার পাশের তিলটা দেখেছ কখনো!মাথা খারাপ করে ফেলে জাস্ট,,,,
এসব বলেই নিরব চলে গেল।
ঐন্দ্রিলা হা করে নিরবের চলে যাওয়া দেখলো।নিরব কি বলে গেল এসব!!!
তারপর আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে তিলটার দিকে তাকিয়ে লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেললো,ছেলেটার চোখ কত ডেঞ্জারাস!কত কি খেয়াল করে ফেলে।
কি মিষ্টি অভিমান-অভিযোগ তাঁর!
“”আমাদের জুটিতে আপনিই রোমান্টিক থাকুন।আপনার রঙে আমি কেবল রাঙা হবো।আমার জীবনটা কানায় কানায় রাঙিয়ে দেবেন তো??””
চলবে,,,,