তুমি_আমারই_রবে
পর্ব_১০
#Nishat_Jahan_Raat (ছদ্মনাম)
–“সবসময় এভাবে হাসি খুশি থাকবে রূপা। হাসলে তোমাকে খুব বেশি সুন্দর দেখায়।”
হাসি থামিয়ে আমি মলিন হেসে বললাম,,,
–“হাসি খুশি থাকার জন্য ও খুশ নসিব লাগে হিমু। সেই নসিবটা আমার নেই।”
হিমু মাথা নিচু করে বলল,,,
–“একদিন তোমার সেই খুশ নসিবটা হবে রূপা। আমি মন থেকে তোমার জন্য অনেক দো’আ করব।”
–“দো’আ? হুম করতেই পারেন। তবে কিছুদিন পর হয়তো এই রূপাকে আপনি ভুলেই যাবেন। তখন আমার জন্য আর দো’য়া ও আসবে না।
–“কিভাবে ভুলব রূপা? তুমি তো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।”
–“আমাদের এই ফ্রেন্ডশিপটা মাএ কয়েকটা দিনের জন্য। কয়েক দিন পর আমাদের রাস্তা আলাদা হয়ে যাবে। বন্ধুত্বের সম্পর্কটা ও নষ্ট হয়ে যাবে।”
কিছু বললেন না উনি। শুধু চোখ তুলে আমার দিকে তাকালেন। উনার দুচোখে গভীর অনুতপ্ততা দেখতে পারছি। কথা ঘুড়ানোর জন্য আমি জোর পূর্বক হেসে বললাম,,
–“এসব কথা বাদ দিন না হিমু। কথায় কথা বাড়ে। এরচে ভালো আপনি উঠুন। ফ্রেশ হয়ে নাশতা করে মেডিসিন নিয়ে নিজে নিজে একটু হাঁটার চেষ্টা করুন।”
হিমু গাঁ থেকে কাঁথা সরিয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়ানের চেষ্টা করল। তবে পায়ের ব্যাথায় সঠিকভাবে উঠে দাঁড়াতে পারল না। আমি এগিয়ে গিয়ে উনাকে দুহাতের বাহু ডোরে আবদ্ধ করে নিলাম। তারপর উনাকে নিয়ে আস্তে ধীরে হেঁটে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলাম। ওয়াশরুমের দরজা আটকে আমি উনার জন্য বাইর কিছুক্ষন অপেক্ষা করলাম। ফ্রেশ হয়ে উনি আমার নাম ধরে ডাক দিলো। আমি ও দৌঁড়ে গিয়ে উনাকে নিয়ে আস্তে ধীরে হেঁটে আবার বিছানায় উনাকে বসিয়ে দিলাম। সকালের নাশতা খাইয়ে উনাকে মেডিসিন দিয়ে আমি রুম থেকে বের হয়ে এলাম। রান্নাঘরে কিছুক্ষন টুকটাক কাজ করে আমি আবার রুমে ফিরে গেলাম। উনাকে নিয়ে পুরোটা রুমে কিছুক্ষন হাঁটাহাঁটি করলাম। দুপুরের দিকে উনাকে গাঁ মুছিয়ে আবার ঔষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিলাম।
এভাবেই কেটে গেলো প্রায় এক মাস। এই এক মাসে আমার অক্লান্ত পরিশ্রমে হিমু একটু একটু করে সুস্থ হয়ে উঠল। অনেকবার হাতে, পায়ে প্লাস্টার ও করানো হয়েছে। প্রতিবারই ডক্টর আমাদের বাড়িতে এসে হিমুর প্লাস্টার করে গেছেন। এখন উনি অনেকটাই সুস্থ আছেন। নিজে নিজে হাঁটা চলা করতে পারেন। মাঝে মাঝে দৌঁড়ানোর ও চেষ্টা করেন। তবে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে নামতে খানিক সমস্যা হয় উনার। এই এক মাসে আমাদের ফ্রেন্ডশিপটা অনেকটাই গাঢ় হয়ে গেছে। উনার মুখে সারাক্ষন রূপা নামটা লেগেই থাকে। রূপা এটা করো, রূপা ওটা করো, রূপা এটা করে দাও, রূপা ওটা করে দাও। মানে সারাক্ষণ শুধু রূপা আর রূপা। আমি পাগল হয়ে যেতাম উনার ডাকাডাকি শুনতে শুনতে। তবে এই এক মাসে দুজন দুজনকে অনেকটাই বুঝতে শিখে গেছি। যতোই হিমু আমার উপরের খোলসটা বুঝুক ভেতরের খোলসটা আজ ও পর্যন্ত বুঝতে পারে নি!
আজ সকাল থেকেই হিমু খুব এক্সাইটেড। কারণ, আজ আমরা নাবিলার সাথে দেখা করতে যাবো। ঘুম থেকে উঠেই উনি খুব তড়িঘড়ি করে রেডি হচ্ছে। আর আমাকে ও রেডি হওয়ার জন্য তাড়া দিচ্ছে। সকালের নাশতা রেডি করে আমি শ্বাশুড়ী মা, শ্বশুড় আব্বু আর হিমুকে ডেকে দিলাম। হিমু একেবারে রেডি হয়ে নাশতার টেবিলে চলে এলো। ব্ল্যাক কালার শার্টে হিমুকে দারুন লাগছে। উনি যখন হাতা ফোল্ড করে শার্টের প্রথম দুটো বাটন খোলা রাখে না তখন উনাকে দেখতে দারুন লাগে। উনার থেকে চোখ ফেরানো ও তখন দায় হয়ে পড়ে।
কিছুক্ষন উনার দিকে তাকিয়ে থেকে আমি কাজে মনযোগ দিলাম। সবার প্লেইটে গরম গরম পরোটা আর ওমলেট সার্ভ করে দিলাম। আমার শ্বাশুড়ী মা আর শ্বশুড় আব্বু বেশ কৌতুহলী দৃষ্টিতে হিমুর দিকে তাকাচ্ছে। উনারা আসলে বুঝতে পারছেন না হিমুর এমন মান্জ্ঞা দেওয়ার কারণ কি। হিমু হেসে হেসে দিব্যি পরোটা আর ওমলেট খাচ্ছে। একবারের জন্য ও এদিক সেদিক তাকাচ্ছে না। শ্বাশুড়ী মায়ের পাশের চেয়ারটায় টেনে আমি বসে পড়লাম। তখনই শ্বাশুড়ী মা ভ্রু কুঁচকে হিমুকে বলল,,,
–“কিরে আজ এতো সেজে গুজে আছিস যে। কোথাও যাবি নাকি?”
হিমু বেশ ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলল,,,
–“হুম। অফিসে যাবো।”
–“মানে? এই অসুস্থ শরীর নিয়ে তুই অফিসে যাবি?”
–“হুম যাবো৷ অুসস্থতার দোহাই দিয়ে অনেক অফিস কামিয়েছি। আর একদিনের বেশি অফিস কামালে বস আমার চাকরীটাই খেয়ে নিবে। তাই আমি রিস্ক নিতে চাইছি না।”
–“একা একা পারবি তো যেতে?”
–“রূপা আমার সাথে যাবে।”
–“রূপা তোর সাথে যাবে মানে?”
–“রূপা পাশে থাকলে আমি ভরসা পাবো, বিপদমুক্ত থাকব।”
শ্বাশুড়ী মা হালকা হেসে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,,
–“কি রে রূপা। হিমু কি সত্যি বলছে? তুই সত্যিই হিমুর সাথে অফিসে যাবি?”
আমি চোখ বড় বড় করে হিমুর দিকে তাকিয়ে আছি। কিভাবে এতো বড় মিথ্যেটা বলব তাই ভাবছি। হিমু ইশারা দিয়ে কাতর স্বরে আমাকে রিকুয়েস্ট করছে, উনি যা বলেছে তাই স্বীকার করে নিতে। নিরুপায় হয়ে আমি মায়ের দিকে তাকিয়ে বললাম,,,
–“হ্যাঁহ্যাঁহ্যাঁ মা। আমি ও হিমুর সাথে অফিসে যাবো।”
মা কিছু বললেন না। শুধু সন্দেহের দৃষ্টিতে আমাদের দিকে তাকালেন। দুজনই জোর পূর্বক হাসি টেনে মায়ের দিকে তাকালাম। ঐ দিকে আমার শ্বশুড় আব্বু মনযোগ দিয়ে খেয়েই চলছেন। কোনো দিকে তাকানোর সময় নেই উনার। কিছুক্ষনের মধ্যে খাওয়া দাওয়া শেষ করে হিমু আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,
–“রূপা তাড়াতাড়ি রুমে এসো। তুমি তো এখনো রেডি ই হতে পারলে না। ঐ দিকে আমার অফিসের দেরি হয়ে যাচ্ছে।”
খাবার ছেড়ে উঠে আমি উনাকে বললাম,,
–“আপনি রুমে যান। আমি টেবিলটা গুছিয়ে আসছি।”
মা হঠাৎ ই বলে উঠলেন,,
–“তুই যা রূপা। টেবিল আমি গুছিয়ে নিবো।”
হিমু দাঁত বের করে হেসে আমার দিকে তাকালো। আর ধীর পায়ে হেঁটে আমার হাতটা খপ করে ধরে আমাকে নিয়ে আমাদের রুমে চলে এলো। রুমের দরজা আটকে উনি কাবার্ড থেকে কয়েকটা শাড়ি বের করে বেডের উপর ছুড়ে মেরে বলল,,,
–“নাও রূপা। যেকোনো একটা শাড়ি পড়ে নাও।”
কোঁমড়ে হাত গুজে উনি শাড়ি গুলোর দিকে তাকাচ্ছে আর ভাবুক ভঙ্গিতে বলছে,,,
–“উমমম। কোন শাড়িটা তোমাকে মানাবে। বলো তো রূপা?”
আমি অবাক হয়ে উনাকে দেখছি। নাবিলাকে দেখতে যাবে বলে উনি কতোটা এক্সাইটেড হয়ে আছে। আমাকে তাড়াহুড়ো করে রেডি করানোর জন্য নিজেই সব এরেন্জ্ঞ করছে। এই মুহূর্তে লোকটা আর নিজের মধ্যে নেই। উনার চাল চলনে বেশ বুঝা যাচ্ছে। উনি এবার আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,,
–“তোমার প্রিয় রং কি?”
–“নীল।”
বেডের উপর থেকে নীল রঙ্গের শাড়িটা নিয়ে উনি মৃদ্যু হেসে আমার কাছে এগিয়ে এসে বলল,,,
–“নীল রঙ্গ আমারো প্রিয়। দুজনের পছন্দই মিলে গেলো।”
জোরপূর্বক হেসে আমি উনার দিকে তাকালাম। উনি শাড়িটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,,,
–“নাও নাও। তাড়াতাড়ি শাড়িটা পড়ে এসো। আমাদের দেরি হয়ে যাচ্ছে।”
আমাকে ঠেলতে ঠেলতে উনি ওয়াশরুমে ঢুকিয়ে দিলো। দরজাটা বাহির থেকে আটকে বলল,,,
–“দশ মিনিট সময় দিচ্ছি রূপা৷ দশ মিনিটের মধ্যে বের হয়ে এসো।”
শাড়িটা হাতে নিয়ে চোখের জল ছাড়ছি আমি। ভাগ্য কতোটা নির্মম হলে নিজের স্বামীকে পর নারীর জন্য এতোটা উদগ্রীব দেখতে হয়। এতোটা পাগল দেখতে হয়। হিমু দরজা ধাক্কিয়ে খুব তাড়া দিচ্ছিলো। তাই কান্না থামিয়ে আমি শাড়িটা কোনো রকমে পেঁচিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে এলাম। ওয়াশরুম থেকে বের হতেই হিমু আমাকে টেনে নিয়ে আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে দিলো। চিরুনি হাতে নিয়ে উনি খুব যত্ন করে আমার মাথাটা আঁচড়ে বলল,,,
–“মুখে কিছু মাখতে হবে না। তুমি এমনিতেই খুব সুন্দুরী।”
আমি পিছু ফিরে উনার দিকে তাকালাম। উনি হঠাৎ আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,,
–“না। চোখে একটু কাজল পড়তে হবে। না হয় নজর লেগে যাবে।”
ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে উনি কসমেটিকসের বক্স থেকে কাজল নিয়ে আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,,,
–“নাও। একটু কাজল পড়ে নাও।”
আমি টলমল চোখে উনার হাত থেকে কাজলটা হাতে নিয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে চোখে কাজল পড়ে নিলাম। চোখে জল থাকার কারণে কাজলটা চোখে লাগছে না। পানি হয়ে চোখ থেকে বের হয়ে আসছে। চোখের জলগুলোকে কোনো রকমে চোখের ভেতর ঢুকিয়ে আমি জোর পূর্বক হেসে পিছু ঘুড়ে হিমুর দিকে তাকালাম। হিমু হালকা হেসে বলল,,,
–“নাও পার্ফেক্ট।”
আলমারি থেকে পার্স বের করে উনি পার্সটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,,
–“এবার চলো। আমরা রেডি।”
পার্সটা হাতে নিয়ে আমি দরজার দিকে অগ্রসর হতেই হিমু আমার পেছনের ছেড়ে রাখা চুল গুলো আমার ঘাড়ের কাছে এনে বলল,,
–“ঘাঁড়ের তিলটা দেখা যাচ্ছে। তাই ঢেকে দিলাম।”
বালিশের তলা থেকে ওয়ালেটটা নিয়ে উনি পকেটে ঢুকিয়ে দরজা খুলে আমার আগেই রুম থেকে বের হয়ে গেলো। মাথা নিচু করে আমি উনার পিছু পিছু রুমে থেকে বের হয়ে এলাম। মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে আমরা বাড়ির মেইন গেইটের কাছে চলে এলাম। হিমু পার্কিং লট থেকে পার্ক করা বাইকটা নিয়ে বাড়ির মেইন গেইটের কাছে চলে এলো। বাইক স্টার্ট করে উনি আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,,
–“বাইকে উঠে পড়ো।”
–“এই পা নিয়ে আপনি বাইক চালাতে পারবেন তো?”
–“পারব। তবে অনেক সময় লাগবে। আস্তে ধীরে চালাতে হবে।”
–“রিস্কি হয়ে যাবে না?”
–“না রূপা। আমি পারব।”
–“এক কাজ করলে হয় না আমরা রিকশা করে যাই?”
–“বাইক থাকতে রিকশা? নো নেভার। আমরা বাইকেই যাবো।”
আমি মনমরা হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। হিমু বাইকের স্টিয়ারিং এ হাত রেখে বলল,,
–“তাড়াতাড়ি উঠো। আমাদের দেরি হয়ে যাচ্ছে।”
মনের অমতে গিয়েই আমি বাইকের ব্যাক সিটে বসে পড়লাম। বেশ জড়সড় হয়ে আমি নিজেকে গুটিয়ে বসে আছি। হিমু বাইক ছেড়ে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,
–“আমাকে ধরে বসো রূপা। সামনের রাস্তা খুব খারাপ। ধাক্কা লেগে পড়ে যেতে পারো।”
আমি বেশ জড়তা নিয়ে উনার কাঁধে এক হাত রাখলাম। উনি খুব আস্তে ধীরে বাইক চালাচ্ছে। আমি জানি সামান্য হলে ও উনার হাতে, পায়ে ব্যাথা করছে। তবু ও নাবিলাকে দেখতে যাওয়ার খুশিতে উনি সব ব্যাথা সহ্য করে নিচ্ছে। ভালোবাসা হয়তো এমনি হওয়া উচিত। ভালোবাসার মানুষটার জন্য অবশ্যই এক সাগর কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা রাখতে হয়। যা এই মুহূর্তে হিমু এবং আমি রাখছি।
প্রায় অনেকটা সময় পর বাইক এসে হসপিটালের সামনে থামল। বাইকটা হিমু হসপিটালের পার্কিং এরিয়ায় পার্ক করল। বাইক থেকে নেমে আমি এবং হিমু হসপিটালের ভিতরে ঢুকে পড়লাম। হিমু আমার আগেই দু তলার সিঁড়ি বেয়ে দৌঁড়ে নাবিলার কেবিনের সামনে চলে গেলো। হাঁফাতে হাঁফাতে উনি পিছু ফিরে আমার দিকে তাকালো৷ আমি মলিন হেসে উনাকে ইশারা দিয়ে বললাম,, ভিতরে ঢুকতে। আমার উৎসাহ পেয়ে উনি এক গাল হেসে কেবিনের দরজা খুলে কেবিনের ভেতর ঢুকে পড়ল। বেহায়ার মতো আমি ও উনার পিছু পিছু কেবিনের ভেতর ঢুকলাম। হিমু ধীর পায়ে হেঁটে ঘুমন্ত নাবিলার বেডের পাশে দাঁড়ালো। হাঁটু ভাজ করে উনি এক ধ্যানে নাবিলার নিষ্পাপ মুখটার দিকে তাকিয়ে আছে। হুট করেই উনার চোখ থেকে এক ফোঁটা জল নাবিলার চোখে এসে পড়ল। সাথে সাথেই নাবিলা চোখ মেলে তাকালো। হিমুকে দেখা মাএই নাবিলা হকচকিয়ে উঠে খানিক চেঁচিয়ে বলল,,,
–“তুমি এখানে কি করছ?”
হিমু কান্নাজড়িত কন্ঠে বলল,,
–“তোমাকে দেখতে এসেছি নাবিলা।”
–“আমি তোমাকে দেখতে চাই না হিমু। প্লিজ তুমি এখান থেকে চলে যাও।”
–“আজ তুমি কিছুতেই আমাকে এখান থেকে তাড়াতে পারবে না নাবিলা। জোর করে হলে ও আমি তোমার কাছে থেকে যাবো।”
–“কেনো পাগলামী করছ হিমু? তোমার বিয়ে হয়ে গেছে। বৌ আছে। তোমার বৌ জানতে পারলে খুব কষ্ট পাবে হিমু।”
নাবিলা এখনো আমাকে খেয়াল করে নি। আমি একটু এগিয়ে এসে নাবিলার সামনে দাঁড়িয়ে বললাম,,
–“হিমুর বৌ কষ্ট পাবে না নাবিলা। এসব নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না।”
নাবিলা চোখে জল নিয়ে অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,
–“কে তুমি?”
–“হিমুর বৌ।”
–“তুতুতুমিই তাহলে রূপা?”
–“হুমম। আমিই রূপা।”
–“হিমুকে আমার কাছে আসতে দিলে কেনো রূপা?”
–“দুজন ভালোবাসার মানুষকে এক করব বলে!”
আমার কথার মাঝেই হিমু নাবিলার হাত ধরে কেঁদে কেঁদে বলল,,
–“আমি আর রূপা খুব ভালো বন্ধু নাবিলা। রূপা নিজে থেকেই বলেছে আমাকে ডিভোর্স দিয়ে তোমার হাতে আমাকে তুলে দিবে!”
নাবিলা ছলছল দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,,
–“হিমু এসব কি বলছে রূপা? তুমি সত্যিই হিমুকে ডিভোর্স দিবে?”
–“হিমু যা বলছে একদম ঠিক বলছে নাবিলা। আগামী দিনই আমরা ডিভোর্স স্পেশালিষ্টের কাছে যাবো।”
–“এই পাঁচ মাসে হিমুর প্রতি তোমার কোনো ভালোবাসা জন্মায় নি?”
#চলবে,,,,?