#তুমি শুধু আমার
#লেখিকাঃমোনালিসা
#পর্বঃ৪
মেঘ;;হুম,এইবার বলো কি যেনো বলতে ছিলে তুমি?
বৃষ্টি;;আপনার সাহস হলো কি করে আমাকে স্পর্শ করার,কোন অধিকারে আপনি আমাকে স্পর্শ করেছেন?
মেঘ;;কেনো জানেমান, স্বামীর অধিকারে,,,,
বৃষ্টি;;আপনাকে আর কতো বার বলবো,,আপনাকে আমি স্বামী হিসেবে মানি না?
মেঘ;;তাই নাই কি? এইটা বলে মেঘ বৃষ্টির দিকে এক পা এক পা করে এগিয়ে যায়।
বৃষ্টি;;কি,,,কি,,,কি করছেন কি আপনি, আমার দিকে এভাবে এগিয়ে আসছেন কেনো আর এক পাও আমার দিকে এগুবেন না।
মেঘ;;আমি এগিয়ে আসাতে তুমি কেনো পিছিয়ে যাচ্ছো জানেমান, এই বলেই মেঘ বৃষ্টির হাত ধরে নিজের আরও কাছে টেনে এনে হাত দিয়ে চুলের খোপাটা খুলে দিয়ে বৃষ্টি কানের পিছনে চুল গুজে দিয়ে ফিসফিস করে মেঘ বলে উঠে।
—-তুমি নিজেই আমাকে একদিন সেই অধিকার দিবে,যেই অধিকার একজন স্বামীর কাছে থাকে বুঝলে জানেমান এই বলেই মেঘ বাকাঁ হাসি দিয়ে
বৃষ্টির কাছ থেকে সরে এসে হাতে টাওয়াল নিয়ে মেঘ ওয়াশরুমে চলে যায় আর এই দিকে বৃষ্টি মেঘের এমন কথা শুনে রাগে সাপের মতো ফুসছে থাকে।
বৃষ্টি;;মেঘ আহমেদ চৌধুরী আমি আর আপনাকে ভয় পাই না আপনি আমার জীবন টা ধ্বংস করে দিয়েছেন।খুব শখ না আমাকে আপনার বউ করার,আপনার বউ বানানোর স্বপ্ন যদি আমি না গুজিয়েছি তাহলে আমার নাম ও সুমাইয়া রহমান বৃষ্টি না। এই কথা বলেই বৃষ্টি নিচে বসে পরে।
—-মেঘ ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে, বৃষ্টি আগের জায়গায় বসে আছে।মেঘ বৃষ্টির কাছে গিয়ে দুহাত বুকের সামনে বাজ করে বলে,আমাকে যদি বকা দেয়া শেষ হয়ে থাকে তাহলে ফ্রেশ হয়ে এসে ঘুমিয়ে পড়ো,অনেক রাত হয়েছে।
বৃষ্টি মেঘের কথা শুনে, মেঘের দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে থাকে।
মেঘ;;কি হলো, আমার দিকে এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো,,এই ভাবে তাকিয়ে থাকলে তো তুমি আমার প্রেমে পড়ে যাবে।
বৃষ্টি;;আমার কোনো শখ নেই, আপনার মতো একজন মাফিয়ার প্রেমে পরবো(বিরবির করে বলে) এইটা বলেই বৃষ্টি টাওয়াল হাতে নিয়ে ওয়াশ রুমে চলে যায়।
—-বৃষ্টি ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে মেঘ বেডে শুনে আছে,, এই টা দেখেই বৃষ্টি পরে যায় দুটানায়,,সেই এখন কোথায় ঘুমাবে,মেঘ বৃষ্টি কে এইভাবে দাড়িয়ে থাকতে থেকে বলে?
মেঘ;;এইভাবে দাড়িয়ে আছো কেনো?দাড়িয়ে থেকে ঘুমানোর অভ্যাস আছে না কি,বেডে এসে শুনে পরো।
বৃষ্টি;;না,,,,কখনই না?আমি আপনার সাথে এক বেডে ঘুমাবো না, আমি সোফায় শুয়ে পড়বো এই বলেই বৃষ্টি সোফায় শুয়ে পরে।এইটা দেখা মাএই মেঘ রেগে গিয়ে বৃষ্টির সামনে গিয়ে দাড়ায়।বৃষ্টি তার সামনে মেঘ কে দাড়িয়ে থাকতে দেখে বলে?
—-আ,,,আপনি এখানে,,,মেঘ আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে বৃষ্টিকে পাজা কোলে তুলে নিয়ে বেডে শুয়ে দেয়।তখনই বৃষ্টি চিৎকার করে বলে।
বৃষ্টি;;আপনার সমস্যা কি? কথায় কথায় আমাকে স্পর্শ করেন কেনো, আমি আপনার সাথে এক বিছানায় ঘুমাবো না।বৃষ্টির মুখে এই কথা শুনা মাএই মেঘ রেগে গিয়ে বলে?
মেঘ;;চুপ,একদম চুপ,আর একটা কথাও বলবেনা তুমি, এখন যদি আমার সাথে না ঘুমাও, তাহলে তোমার সাথে যা হবে তার জন্য তুমি নিজেই দায়ি থাকবে।ভালোই ভালোই বলছি আমার পাশে ঘুমিয়ে পরো,,,
বৃষ্টি ;;না,,,আমি আপনার পাশে ঘুমাবো না,আমি সোফায় গিয়ে ঘুমাবো।কি করবেন আপনি?
মেঘ;;আর একবার বলো যে তুমি আমার পাশে ঘুমাবে না।
বৃষ্টি;;না না না না না, যেই না বৃষ্টি আবার চিৎকার করতে যাবে সেই সময় মেঘ সাথে সাথেই বৃষ্টির গোলাপী ঠোঁটে নিজের ঠোটঁ বিলিয়ে দেয়,সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টির চোখদুটো রসোগোল্লার মতো বড় হয়ে যায়,সেই সময় বৃষ্টি সাথে সাথেই মেঘ কে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়ে বৃষ্টি তার হাত দিয়ে নিজের ঠোটঁ মুজতে থাকে।
বৃষ্টির এমন কান্ড দেখে মেঘ মুচকি মুচকি হাসে।
—-বৃষ্টি,আপনার সাহস হলো কি করে আমাকে কি,,কিস করার?
মেঘ;;বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে।আমি আবার কি করলাম তোমাকে?আমি তো কিছুই করি নাই তোমার সাথে,এই কথা বলেই মেঘ বাকাঁ হাসি দেয়।
বৃষ্টি ;;মেঘের মুখে এমন কথা শুনা মাএই বৃষ্টির রাগ আরও বেড়ে যায়।
—আপনি কিছুই করেন নি, এই মাএই তো আপনি আমাকে কি,,,,
মেঘ;;বৃষ্টির দিকে ঝুকে বাকাঁ হেসে বলে,কি করেছি আমি তোমার সাথে বলো?
বৃষ্টি;;কেনো আপনি জানে না এই মাএ আপনি আমার সাথে কি করেছেন?
—-মেঘ,না তো আমি জানি না কি করেছি?
বৃষ্টি, আর কোনো কিছু না বলেই চুপচাপ ওপাশ হয়ে ঘুমিয়ে পরে।
✨✨✨
সকালের স্নিগ্ধ আলোয় ঘুম ভাঙলো বৃষ্টির।বৃষ্টি ওপাশে ঘুরেই দেখে তারপাশে মেঘ নেই,,এইটা দেখা মাএই সস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে বৃষ্টি মনে মনে ভাবতে লাগলো, এতো সকাল সকাল গেলো কোথায় মাফিয়াটা,বৃষ্টির ভাবনার মাঝে তখনই মেঘ ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসে গায়ে শুধু টাওয়াল ঝরানো।এইটা দেখা মাএ বৃষ্টি চোখ বন্ধ করে যেই না চিৎকার করবে সাথে সাথেই মেঘ বৃষ্টি মুখ চেপে ধরে।
মেঘ;;কি করছো কি,, চিৎকার করছো কেনো?
আরে জানেমান,এই ভাবে আমাকে দেখে চিৎকার দেয়ার কি আছে,তোমার বর কে তো তুমি খালি গায়ে দেখছো আর কাউকে তো দেখেনি।
বৃষ্টি মনে মনে ভাবে, কি বেশরম রে বাবা মুখে কিছুই আটকায় না।
মেঘ;;কি হলো জানেমান এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো,,কথা বলো?না কি তোমার স্বামী কে এইভাবে দেখতেই তোমার খুব ভালো লাগছে কোন টা এই বলেই মেঘ চোখ টিপ মারে।মেঘের এমন কথা শুনাতে বৃষ্টি রাগ লজ্জা দুইটাই হচ্ছে ।বৃষ্টি মেঘের কাছ থেকে ছুটার জন্য শুধু উম উম শব্দ করছে আর বার বার চোখ দিয়ে ইশারা করছে তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য।
—মেঘ বুঝতে পেরে সাথে সাথেই বৃষ্টির মুখ থেকে হাত সরিয়ে নেয়।
মেঘের দিকে তাকিয়ে মুখ ভেঙ্গচি কেটে বৃষ্টি ওয়াশরুমে চলে যায়।ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে বৃষ্টি দেখে পুরো রুম ফাঁকা,,তার মানে মাফিয়াটা নিচে চলে গেছে এই বলেই বৃষ্টি ড্রেস পরে নিচে চলে যায়।
বৃষ্টি;;নিচে নেমে এসে দেখে মেঘ তার দাদির সাথে কথা বলছে।
এলিনা খান;;গুড মনিং বৃষ্টি
বৃষ্টি;;গুড মনিং দাদি
-অনেক দেরি করে ফেলেছি তাই না দাদি,আমি এখনি নাস্তা বানিয়ে আনছি,একটু সময় দেও, এইটা বলেই যেই না বৃষ্টি রান্না ঘরে যাবে তখনই মেঘ বৃষ্টি কে না বলে দেয়।
মেঘ;;তুমি রান্না করে যাবে না,,,
বৃষ্টি;;কেনো?কেনো আমি রান্না ঘরে যাবো না?
মেঘ;;বাড়িতে অনেক সার্ভেন্ট আছে, তারাই রান্না করে, তোমাকে রান্না ঘরে যেতে হবে না।
বৃষ্টি;;বাড়ির সার্ভেন্টরা যদি রান্না ঘরে যেতে পারে,তাহলে আমি কেনো রান্না ঘরে যেতে পারবো কেনো না,আমি তো এই বাড়ির বউ?
মেঘ;;ও হো তাই না কি?বউ হয়েছো বলেই কি তোমাকে রান্না ঘরে যেতে হবে না।
বৃষ্টি;;বউ হয়েছো বলেই কি তোমাকে রান্না ঘরে যেতে হবে,(বিরবির করে বলে)
সার্ভেন্টরা, সকালে নাস্তা টেবিলে সাজিয়ে দিলে, বৃষ্টি, দাদি আর মেঘ দুইজন কেই খাবার বেরে দেয়।মেঘ নাস্তা শেষ করে অফিসের উদ্দেশ্য বের হয়ে যায়।
(চৌধুরী গ্রুপ ইন্ডাস্ট্রি)
মেঘ নিজের কেবিনে বসে কিছু ফাইল চেক করছে এমন সময় মেঘের বন্ধু আকাশ মাহামুদ এসে হাজির হয়।
আকাশ;;may i come in sir,
মেঘ;; yes,come in.
আকাশ,কেমন আছিস মেঘ?মেঘ ফাইলে দিকে মুখ গুজে ছিলো কিন্তুু খুব পরিচিত কারও কন্ঠ শুনে মেঘ আকাশের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায়।
মেঘ;;আকাশ তুই,এই বলেই ছুটে এসে আকাশ কে জড়িয়ে ধরে।কেমন আছিস তুই?
আকাশ;;খুব ভালো আছি। এই বার তুই বল,তুই কেমন আছিস? শুনলাম বিয়ে ও না কি করে ফেলেছিস।
মেঘ;;হুম,খুব ভালো আছি।কিন্তু তুই কার কাছ থেকে শুনলি আমি বিয়ে করেছি?
আকাশ;;কেনো রনির কাছ থেকে?তুই বিয়ে করলি আর আমাকে বললি না।
মেঘ;;সেই এক লম্বা কাহিনী?কোন এক সময় বলবো।
আকাশ;;আচ্ছা এসব ছাড়,তুই এইবার বল, আমার বউমনি দেখতে কেমন?
মেঘ;;তোর বউমনি দেখে পরীর মতো
আকাশ;;ও তাই না কি?
মেঘ;;হুম,,,আচ্ছা এইসব বাদ দে,এই দিকের খবর কি?এই দিকের সব কিছু ঠিক আছে তো।
আকাশ;;হুম সব ঠিক আছে, কিন্তুু,,,
মেঘ;;কিন্তুু কি?
—আকাশ,কিন্তুু কেউ তো আছে আমাদের উপর নজর রাখছে,, আর সেই হলো শফিক শেখ।
শফিক শেখ এর নাম শুনা মাএই মেঘ প্রচুর রেগে যায়।
#চলবে,,,,
লেখায় ভুল হলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।।