🌸🌸”অনার্স” ১ম বর্ষ পরীক্ষা মাত্র শেষ হলো। সব মিলিয়ে এক মাসের একটা জমপেশ ছুটি পেলাম। মনটা ফুরফুরে লাগছে। সাথে অনেক উত্তেজিতও লাগছে নিজেকে৷ এসব কিছুর একটা কারণ অবশ্যই আছে। তা হলো, দিনাজপুরে যাবো। আমি সেই কলেজ থেকেই ঢাকাতে পড়াশোনা করি। ঢাকার প্রায় ৭০% আমার চিনা হয়ে গিয়েছে। এ শহরের মানুষগুলো বড্ড স্বার্থপর। তারা নিজের স্বার্থ ছাড়া এক পা সামনে এগোও না। এ শহরটা সবসময় রুটি ভাজা তাওয়ার মতো গরম থাকে। ফলে নিঃশ্বাসে যে অক্সিজেনটা নি সেটাও কেমন জানি গরম আর বিষাক্ত লাগে।

“তাই এই “যান্ত্রিক” শহরটাকে কদিনের জন্য বিদায় দিয়ে নাড়ির টানে ছুটে যাবো পরিবারের কাছে। দিনাজপুরে আমার পরিবার থাকে। বাবা সেখানে ব্যবসা করেন। আমার একটা ছোট বোন আছে। ক্লাস নাইনে পড়ে আপাতত। আর মা, সেতো গৃহিনী। সবসময় রান্না বান্না নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আমাদের পরিবার যে বেশ ধনী তা কিন্তু নয়। তবে মাঝামাঝি। মানে মধ্যবিত্ত পরিবার। আমাদের গ্রামে আমাদের বেশ প্রভাব রয়েছে। কারণ আমার দাদা একজন সম্মানিত ব্যক্তি৷ সবাই তাকে সম্মান এবং শ্রদ্ধা করেন। শালিসিতে দাদা ভাইকে অবশ্যই উপস্থিত রাখা হয়। তাকে ছাড়া কোনো শালিসিই হয় না।

এবার প্ল্যান করেছি সবাইকে সারপ্রাইজ দিব। বিশেষ করে মা আর বোনটা আমার জন্য বড্ড পাগল। বোন অপেক্ষায় থাকে ঢাকা থেকে ওর জন্য কি নিয়ে আসবো। আর মা, সে অপেক্ষায় থাকে তার সন্তানের মুখখানা কখন দেখবে। আমার মা আর বাবা দুজনই শিক্ষিত। তাই তাদের কাছে সন্তানের লেখাপড়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে তারা মনে করেন। সেই ক্ষেত্রে বাবার দৃঢ় ইচ্ছার কারণে আমাকে দিনাজপুরে না পড়িয়ে এই যান্ত্রিক শহর ঢাকাতে পাঠিয়ে দেন। মায়ের চোখে পানিতে তলিয়ে যাচ্ছিলো কিন্তু তিনি একবারও বলেন নি, খোকা যাস না। বরং তিনি বলেছেন, খোকা মানুষ হতে পাঠাচ্ছি, অমানুষ হয়ে ফিরিস না। মায়ের কথাটা সেদিন টাইটানিক জাহাজের থেকেও বেশি ভারী আর বড় মনে হয়েছিল। তাই মায়ের কথাটাকে মাথায় রেখে পড়ালেখা আমি মন দিয়েই করেছি। আচ্ছা আমি কে তাই তো বলা হলো না।

আমি আদ্রিত নাজমুল। ভার্সিটিতে BBA তে পড়ছি। আর কিছু বছর পরই পড়া শেষ হয়ে যাবে। তার পর শুরু হবে চাকরি যুদ্ধ। যে যুদ্ধে কেউ জিতে। আবার কেউ হেরে যায়।

যাই হোক ব্যাগটা এবার গুছানো যাক। আমি ব্যাগ গুছাচ্ছি। হঠাৎ,

নিলয়ঃ কিরে কই যাছ ম্মামা??

আমিঃ আরে ম্মামা, বাড়িতে যাই। আব্বা আম্মারে একটা সারপ্রাইজ দিয়া আহি। মজা করে।

নিলয়ঃ বেটা দিনাজপুরের হয়া দিনাজপুরে ভাছায় কথা কবি। ঢাকায়া কস ক্যা??

আমিঃ কিঞ্চিত ভাবে হেসে উঠলাম আররে ম্মামা, তুমাকে একটু ছঙ্গ দেওয়া লাগে না বুঝনা।

নিলয়ঃ হ হ হইছে। ছব বুঝবার পারচি। এহন জলদি ক আবি কবে??

আমিঃ দোস্ত, ভালোই তো একটা বন্ধ পাইছি দেখলি তো। তাই এই বন্ধটা এবার বাবা-মা আর বোনটার সাথেই কাটাবো।

নিলয়ঃ “পুররা” বন্ধ গ্রামে কাটাবি?? অবাক হয়ে।

আমিঃ হ্যাঁ দোস্ত।

নিলয়ঃ আচ্ছা কাটা। ছমছ্যা নাইক্কা। তয় আবার ভুইলা যাইছ না কিন্তু। ফোন দিছ মাঝে মাঝে।

আমিঃ আরে বেটা কি যে কছ না। তোরে ফোন না দিলে আর কারে দিমু বল। অবশ্যই দিবো ফোন। তুই ঠিক মতো থাকিস।

নিলয়ঃ রওনা দিবি কহন??

আমিঃ আজ রাতেই বাসে।

নিলয়ঃ আচ্ছা ছাবধানে যাইছ। আর কোনো ছমছ্যা হইলে এই বন্ধুরে মনে করিছ। তোর লইগা জান বি হাজির।

আমিঃ এখন কি কাঁদাবি নাকি??

নিলয়ঃ শা** ন্যাকামি করবি না। বুকে আয় বেটা।

নিলয়ের সাথে কোলাকুলি করে ওকে বিদায় দি। ও আমার সেই কলেজ লাইফের বন্ধু। একমাত্র আমার জন্য ও আমার সাথে থাকে। আমি ওকে পড়াশোনায় অনেক সাহায্য করি। তাই বলে চিটিং না। ওকে পড়া বুঝিয়ে দি। ও আগে পড়াশোনা নিয়ে তেমন একটা সিরিয়াস ছিলনা। কিন্তু যখন আমার সাথে বন্ধুত্ব হলো, তখন আমাকে ফলো করতে লাগলো। এরপর ওরই নাকি আমার মতো ভালো রেজাল্ট করতে ইচ্ছা করলো। আসলে বন্ধুত্বের চেয়ে আমরা আপন ভাইয়ের মতোই বেশি চলি।

যাক ব্যাগ গোছানো শেষ করে মাকে ফোন দিয়ে একটু খোঁজ খবর নিলাম। যাতে আবার তাদের কোনো সমস্যা না হয় আমার যাওয়াতে। সব যখন ক্লিয়ার দেখলাম আল্লাহ তায়ালার নাম নিয়ে রওনা দিলাম দিনাজপুর । রাত ১১ টার দিকে বাস ছাড়ে। দীর্ঘ ৮ ঘন্টার জার্নি। অবশ্য বেশ ভালোই লাগে। সবাই একে একে বাস থেকে নেমে যাচ্ছে৷ আমি এতো সকালে যাবো না। সূর্য মামাকে আগে ভালো করে একটু দেখি তারপর বের হব। এরপর সকাল ৭ টা নাগাদ বের হয়ে রওনা দি আমাদের গ্রামের উদ্দেশ্য। আধা ঘণ্টার পথ। বাসে করে পৌঁছে গেলাম।

গ্রামের মাটিতে পা দিতেই একটা মিষ্টি ঘ্রাণ নাকে এসে লাগলো। সত্যি বাংলায় কি আছে না আছে অত জানি না। তবে এই বাংলায় আছে গ্রাম বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য্য। এতোটা পথ পাড় হয়ে আসাতে ক্লান্ত লাগছিয়। কিন্তু যেই না।নিঃশ্বাসে এই ফ্রেশ অক্সিজেন ভিতরে গেলো, মুহূর্তেই সব ক্লান্ত উধাও। এখন কি যে ভালো লাগছে তা বলার বাইরে। চোখ যতদূর যায় সব সবুজ। ঢাকার শহরে চোখ যতদূর যাবে সব পাষাণ মানুষ আর বড় অট্টালিকা। কিন্তু গ্রাম বাংলা আপনাকে সবুজের মাঝে হারিয়ে দিবে। গ্রাম বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য্য দেখতে দেখতে একটা রিকশা নিয়ে মেঠোপথ ধরে সোজা আমার বাসার সামনে চলে আসলাম। রিকশাওয়ালা মনে হয় আমাদের পরিচিত। আমাকে দেখেই বলল, “তুমি শরীফ চাচার নাতি না??” আমি বললাম, “জ্বি।” সে বলল,” হ্যাঁ দেখেই চিনছি। আসো আসো, তোমাকে দিয়ে আসি।” আমিতো পুরোই বোকা হয়ে গিয়েছিলাম। যাই হোক বাসায় ঢুকে প্রথমেই মাকে কয়েকবার ডাক দিলাম জোরে জোরে,

আমিঃ মা…ও মা…দেখো কে এসেছে।

হঠাৎই ঘর থেকে একটা মেয়ে দ্রুত বের হয়ে আমার দিকে তেড়ে এসে রাগী ভাবে বলল,”আপনার সমস্যাটা কি?? এরকম সাত সকালে কাকের মতো ডাকছেন কেন??”

আমি মেয়েটাকে কি বলব বুঝতে পারছি না। কারণ আমিতো তাকে দেখে পুরো হারিয়ে গিয়েছি ভীনদেশে। সে দেখতে অল্প বয়সের একটা মেয়ে। আনুমানিক ১৬/১৭ হবে৷ তার মুখের গঠন বেশ সুন্দর আর নিখুঁত। সে বেশি ফর্সাও না আবার কালোও না। মাঝামাঝি। আহামরি সুন্দরী সে না। তবে যতটুকু আছে, তা যে কাউকে পাগল করে দিবে। তার নয়নজোড়া আপনাকে তলিয়ে নিয়ে যাবে অতল সমুদ্রের গভীরে। কারণ তার চঞ্চল চোখদ্বয়ে আছে শুধু মায়া আর মায়া। তার সুন্দর পাপড়িগুলো তার চোখের সৌন্দর্য্য আরো কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। নাকটা তার খাড়া খাড়া। তাই হয়তো সব জায়গায় একটু নাক গলায়। তার ঠোঁটদুটো বেশ আকর্ষনীয়। কারণ গোলাপি রঙের ঠোঁটদুটো বেশ মিষ্টি লাগছে। উচ্চতা এবং শরীরের গঠন সব মিলিয়ে সে একজন গ্রাম বাংলার রূপসী মেয়ে। তাকে দেখে যে কেউ তার পথ ভুলিতে পারে। তবে আমি নিজেকে সংযত করিয়া তাহাকে ধমক দিতে যাব সেই মুহূর্তে তার পিছন থেকে আমার আদুরে বোনটা আমার পানে দৌড়ে এসে চিৎকার করে বলল,

ইশাঃ ভাইয়া তুমি!!!

মেয়েটাঃ ভাইয়া!!!

আমিঃ হ্যাঁ রে আমিই। কেন বিশ্বাস হচ্ছে না?? ছুঁয়ে দেখ। মজা করে।

ইশাঃ ধুর। হঠাৎ করে কিভাবে এলে?? অবাক হয়ে।

আমিঃ কেন বাসে করে হাহা। মজা করে।

ইশাঃ অাহহা তুমিও না।

আমিঃ মা-বাবা কই খুকি??

ইশাঃ বাবাতো কাজে আর মা পাশের বাসায় গেছে। দাঁড়াও আমি এক মিনিটে ডেকে নিয়ে আসছি।

আমিঃ আররে দাঁড়…

আমি কিছু বলার আগেই বোন এক দৌড়ে চলে গেল। এবার আমি সেই রূপসী কন্যার দিকে তাকালাম। তার চোখে চোখ পরতেই বুঝলাম সে প্রচন্ড লজ্জা পাচ্ছে। আমি কিছু বলতে যাবো ওমনি সেও ভিতরে চলে গেল। কি ব্যাপার সবাই খালি পালিয়ে যাচ্ছে কেন! আমি উঠানে গিয়ে বসলাম। পাশে ব্যাগটা রাখা মাত্রই মা জোরে বলল,

মাঃ বাবা আদ্রিয়ান নাজমুল!!

আমি পাশে তাকিয়ে দেখি মা। আজ প্রায় ৬/৭ মাস পর মায়ের পবিত্র মুখখানা দেখছি। মায়ের মুখখানা দেখে যেন প্রাণে শান্তি লাগছে। সত্যি এটাই মা। আমি তাড়াতাড়ি উঠে মায়ের কাছে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরি। আমি একটু স্বভাবতই বেশি ইমোশনাল। তাই খুশীতে চোখের জল আটকে রাখতে পারলাম না। মা আর বোনের চোখতো সেই কবে থেকেই ভিজা।

মাঃ কেমন আছিস বাবা?? আজ কতদিন পর দেখলাম তোকে। বলে আসিস নি ক্যান?? কান্নাসিক্ত কণ্ঠে।

আমিঃ ভালো আছি মা। আর বলে আসলে বুঝি তোমাদের এভাবে সারপ্রাইজ দিতে পারলাম?? এই যে তোমাদের চোখে মুখে অমূল্য খুশীখানা কি আর দেখতে পেতাম। তাই বলি নাই। ভাবলাম একটা সারপ্রাইজ দিয়েই দি।

ইশাঃ খুব ভালো করছ ভাইয়া। তোমাকে খুব মিস করছিলাম।

আমিঃ এহহ আসছে। সব বুঝি সব বুঝি। আমাকে না বল, ঢাকা থেকে তোর জন্য আনা গিফটকে মিস করছিলি। মজা করে।

কথাটা বলা মাত্রই মায়ের সাথে পিছন থেকে কার যেন মিষ্টি হাসির শব্দ কানে ভেসে আসলো। পিছনে তাকিয়ে দেখি সেই রূপসী। আমি তাকাতেই সে লজ্জায় বোধহয় আড়ালে চলে গেল।

ইশাঃ দেখছ মা ভাইয়া কি বলে। অভিমানী কণ্ঠে।

মাঃ আহরে তোরা এখনই শুরু করলি! নাজমুল আয় বাবা ভিতরে আয়। ফ্রেশ হয়ে নে।

আমাদের বাসাটা একতলা বিল্ডিং। বাবা নিজ অর্থে তৈরি করেছেন। আমি মা আর বোনের সাথে ভিতরে গেলাম। কিন্তু আমার চোখ যাকে খুঁজছে তার আর কোনো খোঁজ পেলাম না। আমি আমার রুমে গেলাম। সাথে বোনটাও আসলো।

আমিঃ বস এখানে।

ইশাঃ ভাইয়া আমার গিফট??

আমিঃ ক্যান তুই না আমাকে মিস করছিল?? তাহলে গিফট কেন হুম??

ইশাঃ আহহা ভাইয়া প্লিজ দেও তো। অসহায় ভাবে।

আমিঃ আচ্ছা দিব। তবে আগে আমাকে একজনের সম্পর্কে কিছু বলতে হবে।

ইশা অবাক হয়ে বলে,

ইশাঃ কার ভাইয়া??

আমিঃ ওই যে তখন একটা মেয়েকে দেখলাম না ওর সম্পর্কে। ও কে?? আমাদের বাড়িতে ক্যান??

ইশাঃ ওও…বুঝলাম। কিন্তু তুমি জেনে কি করবা হুম?? মজা করে।

আমিঃ বলবি নাকি গিফট কিন্তু দিব না।

ইশাঃ আচ্ছা বাবা বলছি শোনো।

আমি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিলাম ইশার দিকে।

আমিঃ হ্যাঁ বল বল।

ইশাঃ আপুর নাম হলো নাতাশা।

আমিঃ নাতাশা। বাহ কি সুন্দর নাম। মনে মনে।

ইশাঃ আপু এবার কলেজে ১ম বর্ষে পড়ে। এখন আপুর কলেজ বন্ধ তাই বাসায়।

আমিঃ ওও…ওর বাবা মা??

ইশাঃ আপুর শুধু বাবা আছে। মা গত বছর কি যেন একটা রোগে মারা গেছে। আপুর কোনো ভাই বোনও নাই। আর আপুর বাবা আমাদের আব্বুর সাথেই কাজ করে। তার সাথেই থাকে সবসময়। তাই আপু সারাদিন একা থাকে বলে আমাদের বাসায়ই থাকে। আম্মুকে কাজে সাহায্য করে। জানো ভাইয়া আপু যে কি সুন্দর রান্না করে না। খুব মজা লাগে খেতে।

আমিঃ কি বলিস আমিও খাবো।

ইশাঃ কি কিকক বললা??

আমিঃ কিছু না। তোর এই আপুটার সাথে আমাকে পরিচিত করে দিস।

ইশাঃ কেন আপুকে ভালো লাগছে বুঝি?? মজা করে।

আমিঃ তুইতো দেখি অনেক পেকে গিয়েছিস।

ইশাঃ বুঝি ভাইয়া সব বুঝি। এখন আমার গিফটটা দেও।

আমিঃ আচ্ছা দাঁড়া।

আমি উঠে ব্যাগ থেকে একটা শপিং ব্যাগ বের করে ওর হাতে দিলাম।

ইশাঃ এতে কি আছে ভাইয়া??

আমিঃ তুই খুলে দেখ না।

ইশা শপিং ব্যাগ থেকে একে একে সব বের করে পুরো অবাক। কারণ আমি ওর জন্য মেকাপ কিট, চুড়ি, লিপস্টিক আরো অনেক কিছ এনেছি। মানে সাজুগুজু করতে যা যা লাগে আর কি। ইশাতো খুশীতে আটখানা হয়ে গিয়েছে।

আমিঃ কি পছন্দ হয়েছে??

ইশাঃ অনেক অনেক বেশি পছন্দ হয়েছে ভাইয়া। থ্যাঙ্কিউ সো মাচ ভাইয়া। ইশা আমার গলা জড়িয়ে ধরে বলল।

আমিঃ আচ্ছা হইছে। এখন যা। আমি একটু রেস্ট নি।

ইশাঃ হ্যাঁ নাতাশা আপুকে এগুলো দেখিয়ে আসি। আপু অনেক হিংসা করবে হি হি।

আমিঃ হ্যাঁ হ্যাঁ যা দেখা। আর প্লিজ বইনা আমার, আমার নামে খারাপ কিছু বলিস না। ভালো বলবি। বললে তোকে আরো অনেক কিছু কিনে দিব তাহলে।

ইশাঃ সত্যি??

আমিঃ তিন সত্যি।

ইশাঃ ইয়েএএ। আচ্ছা বলব।

আমিঃ আচ্ছা যা।

ইশা চলে গেল। আমি হাসছি।

ইশার রুমে,

ইশাঃ আপু আপু দেখো ভাইয়া আমার জন্য কত্তো কিছু আনছে।

নাতাশাঃ কই কই দেখি।

ইশা একে একে নাতাশাকে সব কিছু বের করে দেখালো। নাতাশাতো দেখে অবাক। ওর অনেক হিংসা হচ্ছে। ইশা দুষ্টামি করে বলল,

ইশাঃ কি আপু এসব দেখে হিংসা হচ্ছে বুঝি?? হিহি।

নাতাশাঃ যাহ দুষ্ট। মোটেও না।

(হিংসা মানে, আমিতো শেষ হয়ে যাচ্ছি। বেটা আমার জন্য কিছু আনলো না কেন। ধুর, আমিও না। আমার জন্য আনবে কেন! আমাকেতো চিনেই না। আমিও তো ভালো মতো চিনি না।) মনে মনে বলল নাতাশা।

ইশাঃ ও তাই নাকি?? মজা করে।

নাতাশাঃ হুম তাই। অসহায় ভাবে।

ইশা নাতাশার গলা জড়িয়ে ধরে বলল,

ইশাঃ আরে কষ্ট পেয়েও না অাপু। ভাইয়া বলছে, তুমি চাইলে আমার সাথে তুমিও এগুলো ব্যাবহার করতে পারবে। আমার ভাইয়া অনেক ভালো বুঝলা।

নাতাশা অবাক হয়ে বলল,

নাতাশাঃ তোমার ভাইয়া তা বলছে??

ইশাঃ হ্যাঁ। নাহলে তো আমি তোমাকে দিতামই না। হিহি।

নাতাশাঃ নাহ লোকটা ভালো আছে তাহলে। মনে মনে বলল।

ইশাঃ কই হারালা??

নাতাশাঃ এই তো। আরে লাগবে না আমার এগুলো। তুমি সেজো তাতেই হবে।

ইশাঃ না না। তা হবে না। আমি তোমাকে সাজিয়ে দিব তুমি আমাকে সাজিয়ে দিবা। তারপর দুজন মিলে পুরো গ্রামে ঘুরে বেড়াবো। হিহি।

নাতাশাঃ হ্যাঁ। তারপর গ্রামের সবাই আমাদের বাবার কাছে এসে নালিশ দিবে।

ইশাঃ দিলে দেক। সাজুগুজু না করলে এগুলো দিয়ে কি করবো বলো??

নাতাশাঃ আচ্ছা। দুষ্ট। এখন তোমার ভাইয়ার সম্পর্কে কিছু বলো। সে কি করে??

ইশাঃ ভাইয়া BBA তে ডিপার্টমেন্ট-English নিয়ে পরছে।

নাতাশাঃ ওও..সেতো অনেক বড়।

ইশাঃ হুম। আমার ভাইয়াটা অনেক ভালো। আমাদের অনেক ভালোবাসে।

নাতাশাঃ বাহ।

এরপর ইশা আর নাতাশা অনেক কথা বলে। এদিকে আমি ফ্রেশ হয়ে এসে মায়ের কাছে যাই। আমি আসছি বলে মা জমপেশ রান্না বসিয়ে দিয়েছে। আমি মায়ের কাছে গিয়ে বসলাম। অার বললাম,

আমিঃ মা তুমি ভালো আছোতো?? তোমার শরীর ভালো আছেতো??

মা আমার দিকে তাকিয়ে বলল,

মাঃ মা যতই অসুস্থ থাক কিংবা খারাপ থাক, সন্তানের মুখে মা ডাকটা শুনলে সে এমনিই ভালো হয়ে যায় খোকা। আর তুইতো আমার মানিক। তুই আসছিস আমি ভালো না থেকে থাকতে পারি বল।

আমিঃ তুমিও না। তোমার আর বাবার জন্য কিছু এনেছি।

মাঃ তোর বাবাকে ফোন দিয়ে বলেছি তুই এসেছিস। সে খুশীতে বাজারে চলে গেছে তোর পছন্দের সব আনতে। একটু পরেই এসে পরবে নে। তখন দিস।

আমিঃ আহহা আবার বাবা এসব করছে কেন! আমি কি মেহমান নাকি??

মাঃ তা নয়তো কি?? তুইতো হলি ঢাকায়া বাবু। আমাদের সবচেয়ে বড় মেহমান। মজা করে।

আমিঃ তুমিও না কি যে বলো।

হঠাৎই নাতাশা এসে বলল,

চলবে……… [ ইনশাআল্লাহ ]🌸🌸

তুমি আমার
সূচনা পর্ব
লেখক-: আদ্রিয়ান নাজমুল চৌধুরী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here