#জীবনসঙ্গী _১৩
#Chhamina_Begam

কাল রাতের ঘটনাটা হজম করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে আদিলাকে। ‌ কি হচ্ছে না হচ্ছে বুঝতে বুঝতেই টের পেল বাঁ হাতের অনামিকায় হীরে বসানো সোনার আংটিটি জ্বলজ্বল করে শোভা বর্ধন করে নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে । সকালের স্নিগ্ধ নরম আলো আংটিটির ওপর পড়ে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটে চোখ ধাধিয়ে দিচ্ছে । নিঃসন্দেহে এটি একটি সুন্দর মুহূর্ত । প্রত‍্যেক প্রেয়সীর কাছে প্রেমিকের নিকট হতে প্রাপ্ত এই অঙ্গুরীয় ভালোবাসার পরিনতির স্বীকৃতি বহন করে । কিন্তু এই অঙ্গুরীয় আদিলার কাছে ওর জীবনের সবথেকে বড়ো ভুল বলে মনে হচ্ছে । যার ভার এতটাই ভারী হয়ে ওর ওপর চেপে বসে আছে যে দম বন্ধ হয়ে আসতে চাইছে ওর । এই সব সাতপাঁচ ভেবে অনেক রাত অব্দি চোখে ঘুমের দেখা মেলেনি । যাও বা একটু ঘুমিয়ে ছিল দুঃস্বপ্ন এমনভাবে তাড়া করে বেরিয়েছে ঘুম বাবাজী ভয়েই পালিয়ে গেছে । বিছানায় শুয়ে এপাশ ওপাশ করতে করতেই মোয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনিতে চারপাশটা মুখরিত হয়ে উঠেছিল । বাধ্য হয়ে আরামের শয্যা ত‍্যাগ করে হয়েছে ।

ফজরের নামাজ পড়ে আর ঘুমাতে ইচ্ছে করেনি আদিলার । নিজের ঘর লাগোয়া বারান্দায় পিলারে হেলান দিয়ে নিজের ছোট বাগানটিকে দেখছে সে ‌ । রঙবেরঙের ফুল শোভা পাচ্ছে সেখানে । সূর্যের সোনালী আলোয় মনে হচ্ছে ওরা হাসছে আদিলাকে দেখে । বসন্তের আগমন ঘটেছে চারিদিকে । শীতের রুক্ষ্মতার চাদর সরে গিয়ে সবুজ কচি পাতারা উকি দিচ্ছে গাছের ডালে ডালে ,পাখির কলতানে ভরে গেছে ওদের ‘ বরকত ভিলা ‘, মনো মুগ্ধকর পরিবেশ । দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায় । আদিলা কতক্ষণ নির্নিমেষ চেয়ে ছিল জানা নেই , ধ‍্যান ভাঙল দরজা খোলার শব্দে ।আব্বু বাজারের ব‍্যাগ হাতে বাইরে যাচ্ছে । সেদিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আদিলার চোখে জল ভরে এল । দিন দিন এই মানুষটাকে অসহ্য লাগতে শুরু করেছে ওর । অথচ বছর পাঁচেক আগেও বাপের দুলালী ছিল সে । ওর এক একটা আবদার পূরণ করতে আব্বু বাড়ি মাথায় তুলতেন । আঘাত লাগার ভয়ে পারলে মেয়েকে তুলোর আসনে বসিয়ে রাখেন আরাফাত সাহেব । আর এখন সেই মেয়েকেই কারণে অকারণে দু চারটে কটুকথা শোনাতে দুবার ভাবেন না তিনি । মাঝে মাঝে আদিলার মনে হয় ও বুঝি ওর বাবার চক্ষুশূল হয়ে গেছে । নাহলে এমন আচরণ কেন করেন তিনি যাতে আদিলা কষ্ট পায় ! অনেক বার ইচ্ছে হয়েছে জোরজবরদস্তি ওদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত গুলোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে , নিজের দৃঢ় মতামত জানাবে । যেমনটা আর সব জায়গায় ও করে থাকে অনায়াসে। অথচ এই মানুষটিকে সে কিছুই বলতে পারে না । এই একটা জায়গায় নিজেকে বড়ো দূর্বল মনে হয় । ওর দৃঢ় ব‍্যক্তিত্ব এখানে এসে ফ‍্যাকাশে , রঙ হীন হয়ে পড়ে । জোর দিয়ে কিছু বলতে ইচ্ছে করে না । যদি মানুষটা কষ্ট পায় । পুরোনো রঙিন আদুরে দিন গুলোর কথা মনের আয়নার ভীড় করে । তখন থেমে যেতে হয় । আপনজনদের দেওয়া কষ্ট যে বড়ো অপূরণীয় ক্ষত সৃষ্টি করে হৃদয়ে । সেখানে হাজার মলম লাগালেও দগদগে ঘা কখনো শুকায় না । শুধু মাত্র একটুকরো শীতল পরশ পড়ে ক্ষণিকের জন্য । আদিলা চায় না কোনো দূর্বল মুহূর্তে বলা ওর কোনো কথা ঐ রকম কোনো অপূরণীয় ক্ষত সৃষ্টি করুক এই মানুষটার হৃদয়ে ।

ফুলের গাছে জল দিতে দিতে কখন টব উছলে জল নিচে গড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে সেদিকে কোনো খেয়াল নেই আদিলার । বাড়ি ফিরে এই একটা কাজ রোজ দায়িত্ব নিয়ে করছে সে ।

-” ইসস , পুরো মেঝে ভেসে যাচ্ছে তো ।এত জল দিও না । গাছ গুলো মরে যাবে তো ! আদিলা ?এই আদিলা , শুনছো ?”

ঘাড়ে কারো স্পর্শ পেতেই চকিতে ঘাড় ঘুরিয়ে ফারিহাকে দেখে মৃদু হাসে আদিলা ।
-“ওহ , ভাবি তুমি ! কখন এলে? ”

-“যখন তুমি জল দিয়ে পুরো বারান্দার মেঝে ভাসিয়ে দিচ্ছিলে !”

-“ওফ হো !আমি একদম খেয়াল করিনি । ” বলেই জ্বিব কাটাল আদিলা । জলের পাত্রটা সরিয়ে রাখল সে।

-” দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে । চলো খাবে । আম্মু ডাকছে তোমায় । ”
-“আমার ক্ষিদে পায়নি ভাবি । তোমরা খেয়ে নাও । ”

-” তা বললে তো হয় না । সকালেও ঠিক মতো খেলে না । এখন আবার বলছো ক্ষিদে নেই । হবু জামাইয়ের চিন্তায় পেট শুকালে চলবে ? কাল যে তোমায় সবার চেয়ে সুন্দর দেখাতে হবে । চলো, চলো । ”

-“না ভাবি । সত্যি বলছি আমার ক্ষিদে পায়নি । পেলে আমি খেয়ে নেব । প্রমিজ । তুমি যাও , ”

ফারিহা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে লক্ষ্য করে আদিলার লাল হয়ে যাওয়া চোখ জোড়া । চোখের নিচে বসে যাওয়া কালচে ভাব স্পষ্ট সাক্ষ্য দিচ্ছে একটা ঘুমহীন রাত অতিবাহিত করার ।

-” কি হয়েছে আদিলা ? তোমায় এমন ফ‍্যাকাশে দেখাচ্ছে কেন ? ঘুমাওনি রাতে ?”

ফারিহার কন্ঠে স্পষ্ট চিন্তা ফুটে ওঠে । আদিলা মুচকি হাসে । সেই হাসি সুখের নয় , আনন্দের নয় । একঝাঁক মলিনতা মিশে আছে তাতে । ফারিহার বুকটা ধক্ করে ওঠে । তাহলে কি ভুল হয়ে গেল ? কিন্তু তা কি করে হবে ? ফাহিম ভাই তো বললো আদিলা আর রাহাত একে অপরকে পছন্দ করে । তাই তো সাকিব আর কোনো প্রশ্ন তোলেনি । বাবার কথায় দ্বিরুক্তি করেনি ।

-“ডাকলাম কতবার !কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলে ? আংটি টা খুব সুন্দর তাই না ? তোমার হাতে বেশ মানিয়েছে !উমম…..বুঝলাম,এবার প্রকৃতির সাথে সাথে আমার ননদিনীর মনেও বসন্তের ছোয়া লেগেছে মনে হয় ।তা ননদিনী, হবু বরের কথাই ভাবছ বুঝি ? ”

ফারিহা হালকা রসিকতা করার চেষ্টা করে । বোঝার চেষ্টা করে আদিলার মনে কি চলছে ? ওর কথায় আদিলা হাসে, শ্লেষ মেশানো হাসি ,দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ে নেয় । এবার আর ফারিহা শান্ত হয়ে থাকতে পারে না । উদ্বিগ্ন হয়ে প্রশ্ন করে বসে ,
-” কি হয়েছে আদিলা ? কোনো সমস্যা ? আমাকে বলতে পারো ? …..আচ্ছা , রাহাতকে কি তোমার পছন্দ নয় ? আমার তো ভালোই মনে হল সবদিক থেকে । তোমাকেও পছন্দ হয়েছে সবার । ওর মা টা তো বেশ হাসিখুশি দেখলাম । খারাপ তো মনে হয়নি !”

-“ও খারাপ নয় ভাবি । বরং একটু বেশিই ভালো । ও এতটাই পারফেক্ট যে ওর পাশে নিজেকে বড়ো বেমানান মনে হয় । এতটা ভালো কাউকে কখনোই চাইনি আমি ।আমি যেমন সাধারণ তেমনি খুব সাধারণ কাউকে চেয়েছিলাম জীবনে । যার সঙ্গে পথ চলতে গেলে কখনোই নিজেকে ছোট মনে হবে না । কখনোই মনে হবে না এই মানুষটা আমার হবার কথা ছিল না । ভাগ‍্যগুনে তাকে আমি পেয়ে গেছি । এই ভয়টা কাল থেকে আমাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে ভাবি । আমি কি করব বুঝতে পারছি না । আমার নিজেকে ভীষণ অসহায় মনে হচ্ছে ।আমি ঘুমাতে পারছি না । পাগল পাগল লাগছে আমার । বিয়ে , বর নিয়ে সবার কত কত ফ‍্যান্টাসি থাকে অথচ আমার মন বলছে এই বিয়ে আমার জন্য শেকলের শক্ত বন্ধনী হতে যাচ্ছে । যার ভারে আমি পিষ্ট হতে যাচ্ছি আজীবন । ”

শেষের কথা গুলো বলতে বলতেই গাল বেয়ে কয়েক ফোটা নোনা জল গড়িয়ে পড়ে । ফারিহা বিস্মিত হয়ে দেখে ক্রন্দনরতা আদিলাকে । এভাবেও কেউ ভাবে ! বুকের ভেতরটা হুহু করে ওঠে ওর । সাকিবের আদরের বানিকে সবসময় নিজের বোনের মতোই দেখে এসেছে সে । আজ বুঝতে পারল কতটা আত্মসচেতন , আবেগী এই মেয়েটি । কতটা গভীর ভাবে হৃদয় দিয়ে প্রতিটি ঘটনাকে বিশ্লেষণ করে সে ! ফারিহা জড়িয়ে ধরে আদিলাকে । মাথায় হাত বুলিয়ে কোমল স্বরে বলে ওঠে ,

-” এমন কিচ্ছু হবে না দেখো । তুমি বেশিই ভাবছ আদি ।শান্ত হও ।”

কিছুক্ষণ পর নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চোখ মুছে বাগানের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে আদিলা ,

-“ওই গোলাপ গাছটাকে দেখছ ভাবি ..”

আদিলার অঙ্গুলি নির্দেশিত পথে তাকিয়ে ফারিহা দেখতে পায় বাগানের একপাশে একটি গোলাপ চারা প্রতিটি বৃন্তে ফুলের পশরা সাজিয়ে দাড়িয়ে আছে । টকটকে লাল ফুলে ভরে গেছে গাছটি ।
আদিলা ভাবলেশহীন কন্ঠে বলে ,
-” জানো তো ভাবি , রাহাত ওই গোলাপ গাছটার মতো । সুন্দর অথচ কন্টকময় । সাধারণের মাঝে অসাধারণ । ওই গাছটাকে আমি দূরে রেখেছি কেন জানো প্রচণ্ড হাওয়াতে যখন গাছগুলো এলোপাথাড়ি দুলবে তখন যেন ওর কাটার আঘাতে বাকি ফুলগুলো নষ্ট না হয় । ফুলের রানীকে যে সবার সাথে মিশে যাওয়া মানায় না । তাহলে তার সম্ভ্রম নষ্ট হয়ে যায় । তাকে দূর থেকে দেখতে হয় । দূরে দাড়িয়ে তার সৌন্দর্য উপভোগ করতে হয় । কাছে গেলেই একটু অসতর্কতায় তুমি ক্ষতবিক্ষত হতে পারো । কিন্তু জীবনে সারাক্ষণ এত সাবধানতা অবলম্বন করে কি চলা সম্ভব ? ”

-” কিন্তু তবুও তো ওই চারাটিকে তুমি ফেলে দাওনি । বরং ওই আর দশটা ফুল গাছের থেকে ওকে আলাদা রেখে যত্ন করেছ। হোক না সে কন্টক পরিপূর্ণ । তবুও তো সে তোমার বাগানে জায়গা করে নিয়েছে । আর কতটা যত্ন পেয়েছে তা ওই গোলাপ গাছের চেহারা ছবিই কিন্তু তার প্রমান দিচ্ছে আদিলা । তোমার বাগানের শোভা বর্ধন করেছে ওই গাছটি। এই বিষয়টাকে নেগেটিভলি না নিয়ে পজিটিভলি ভেবে দেখো না । দেখবে গোলাপ চারাটির কাঁটার জন্য ওকে আর খারাপ লাগছে না ।বরং একটা সুন্দর স্নিগ্ধ অনুভূতি হবে ফুল গুলো দেখে ।”

-“কিন্তু লোকের অযাচিত কথা , চোরা দৃষ্টি উপেক্ষা করলেও একসময় তা বিষময় লাগে ভাবি । কারো শান্ত চাহনিও কখনো কখনো আমরা সহ‍্য করতে পারি না । তখন এই স্নিগ্ধ অনুভূতিও আর স্নিগ্ধ থাকবে না ।তুমি তো খুব ভালো করেই জানো এই কথাটা। এর কি ব‍্যাখ‍্যা দেবে তুমি , বলো ? ”

প্রশ্নটা শুনে কয়েক মুহূর্ত নীরব হয়ে যায় ফারিহা । পুরোনো স্মৃতিদের এক কালো অধ‍্যায় খুঁলে যায় চোখের পর্দায় । সাকিবের সঙ্গে যখন বাবা-মায়ের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ে করে আত্মীয়-স্বজন , পাড়া-প্রতিবেশী কেউ ভালো চোখে দেখেনি । পথ চলতে গেলেও বার বার মনে হয়েছে কতগুলো বুভুক্ষু চোখ গিলে ফেলতে চাইছে ওদের । সাকিব এই বিষয়টাকে বেশি পাত্তা না দিলেও ফারিহার নারী হৃদয়ে বেশ নাড়া দিয়েছিল । এমনও হয়েছে কোনো জরুরি দরকার থাকলেও বেরোতে ভয় হত । কত দিন যে লেগে গিয়েছিল সব কিছু সামলে উঠতে !

ফারিহা চুপ হতে দেখে মৃদু হাসে আদিলা ,
-” কোনো জবাব নেই তাই না !”

ফারিহা বুঝতে পারে আদিলা ভয় পাচ্ছে । এই ভয় দূর করা খুব জরুরি । নাহলে প্রিয় মানুষটার পাশে থেকেও সে কখনো ভালো থাকবে না । এক অনিশ্চিত উৎকণ্ঠা ওর চারপাশটা বিষিয়ে তুলবে ধীরে ধীরে । ফারিহা কিছু বলার প্রস্তুতি নেয় । আদিলার চোখের দিকে তাকিয়ে ওর একটা হাত নিজের হাতে তুলে নিয়ে প্রশ্ন করে ,
-” বাণি , আল্লাহ তায়ালা আমাদের একটা সুন্দর জীবন উপহার দিয়েছেন , এই কথাটা বিশ্বাস করো তো ?”
আদিলা মাথা নাড়িয়ে নিশ্চুপ তাকিয়ে থাকে ।
-” জীবনটা তার দেওয়া হলেও সেই জীবনটা আমরা কিভাবে কাটাবো সেই চয়েজ টা কিন্তু আমাদের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন । আমরা যে যার ইচ্ছে মতো জুতসই রাস্তাটা বেছে নেই । আমি তোমার ভাইয়াকে বেছে নিয়েছিলাম । আমার মনে কোনো দ্বিধা ছিল না আদিলা । আমি জানি আমি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি । এর জন্য আমি আল্লাহর দরবারে লাখো কোটি বার শুকরিয়া জানাই যে তিনি সাকিবের মতো একজন জীবনসঙ্গী আমার জন্য নির্ধারিত করেছেন । সাময়িক কষ্টের জন্য সারাজীবনের সুখ , শান্তি বিসর্জন দেখা বোকামি আদিলা । আর আমি জানি তুমি বোকা নও । লোকের নিকৃষ্ট চিন্তা ভাবনার কারণে আল্লাহর সিদ্ধান্তের ওপর প্রশ্ন তুলো না আদিলা । আমরা সবাই জানি ,তিনি সর্বজ্ঞানী , সর্ব শ্রেষ্ঠ পরিকল্পনাকারী । আমাদের জন্য কোনো ভালো আর কোনটা খারাপ তা তার থেকে ভালো কেউ জানে না । তিনি নিশ্চয়ই রাহাতকে তোমার জন্য সঠিক মনে করেছেন । নাহলে এত স্বল্প সময়ে এতকিছু কাকতলীয় ভাবে কখনোই ঘটে না । সব কিছুর পেছনেই একটা সুনির্দিষ্ট কারণ থাকে । আমার কথা গুলো খুব কাঠখোট্টা শোনাচ্ছে হয়তো ! তবে একটা কথা বলবো তোমার জীবনের এত বড়ো একটা ডিসিশন নিতে গিয়ে মনে কোনো দ্বিধা রেখো না । এখনো সময় আছে তোমার হাতে । ভাবো , ভেবেচিন্তে যদি তোমার মনে হয় তুমি রাজি নও তখন তোমার ভাইয়া আর আমাকে পাশে পাবে তুমি । তোমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু আমরা হতে দেবো না । আর হ‍্যাঁ , সমাজকে নিয়ে ভেবো না । সমাজ আমাদের খাওয়ায়-পরায় না । যখন লোকের কাছে খেয়ে দেয়ে কোনো কাজকর্ম থাকে না তখন লোকে সমাজের দোহাই দিয়ে অন‍্যের নিন্দেমন্দ করে , গালগপ্পো বানায় । ও সবে কান দিও না । সময় নাও । তবে যাই সিদ্ধান্ত নেবে আজকের মধ্যেই নিও । বেশি দেরি হয়ে গেলে কিন্তু আমাদের হাতেও কিছু করার থাকবে না । আর শোনো , খেতে আসো । নাকি ঘরে দিয়ে যাবো ? ”

– তুমি যাও । আমি আসছি । ”
ফারিহা বেরিয়ে যায় দরজা ভেজিয়ে । আদিলা সে পথে তাকিয়ে বিরবির করে স্বগোতক্তি করে ,
– ” আমি বুঝতে পারছি ভাবি তুমি কি বোঝাতে চাইছ । কিন্তু আমার মনটা যে বড়ো অবুঝ হয়ে আছে । সবসময় কান বন্ধ করে রাখা কি সম্ভব ? এই সমাজ আমাদের খাওয়া ,পরা না দিলেও এই সমাজেই যে আমাদের বাঁচতে হয় । ”

(চলবে )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here