#জলছবি
#৮ম_পার্ট
#কাজী_সানজিদা_আফরিন_মারজিয়া
.
আকাশের বিশাল চন্দ্রাবতীর এক চিলতে আলো এসে ছুঁয়ে গেলো নোলকের নাক, মুখ, ঠোঁট এবং সবশেষে টলমলে চোখ দুটো।
আদ্র’র নিঃশ্বাস ভারী হয়ে এলো। কুঞ্চিত চোখ দুটোতে প্রগাঢ় মায়া এসে ভর করলো এই চঞ্চলাবতীর জন্য। এ-মায়া, এমন-মায়া এর আগে কারো জন্য তৈরি হয়েছিলো বলে মনে করতে পারলো না। আদ্র’র দরদমাখা কন্ঠে বলতে ইচ্ছে হলো,”মন খারাপ করবেন না!”
কিন্তু বলতে পারলো না। ভাবনায় চলে এলো, এটাও কি করুণার মাঝে পড়ে যায়?
প্রচন্ড বই পড়ুয়া ছেলেটাও বুঝে উঠতে পারছেনা তা। কিছু সময় হয় না? দ্বিধাদন্দে পড়ে যেতে হয় ‘কি বলা উচিত, কি বলা উচিত নয়’ ভেবে! আদ্র’রও হলো সেই দশা।
নোলক নিজের গলায়, গালে একবার হাত বুলালো। ভয়ানক খারাপ লাগছে তার। শরীর খারাপটা ক্রমশ বাড়ছে। মনে হচ্ছে এক্ষুনি পড়ে যাবে। বোধ হলো, তার এই স্থান ত্যাগ করা প্রয়োজন। এই মূহুর্তে এই অত্যান্ত খারাপ, নিষ্ঠুর মানুষটার থেকে কোনো প্রকার সাহায্যও নিতে চাচ্ছে না সে। টালমাটাল ভাবে এক পা ফেলতেই আদ্রর ডাক পড়লো,
“শুনুন!”
শুন্যতায় ভরা ক্লান্ত চাহনিতে চাইলো নোলক। এক হাত অন্য হাতের বাহু জড়িয়ে ধরে নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চালালো। সুঠাম গড়নের প্রখর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ছেলেটা উল্টো ঘুরে ঠিক নোলকের দিকে চাইলো। প্যান্টের পকেটে দু’হাত গুঁজে দিয়ে এক পা এগুলো। শান্ত তবে তীক্ষ্ণ কন্ঠে বলল,
“না থাকার যেই কষ্ট, তার চাইতে বহুগুণ কষ্টের হয় থেকেও না থাকা! এই ব্যথায় বুদ হয়ে থেকে গোটা একটা জীবনের প্রায় অনেকখানি পার করে আসা কতটা যে বিষাদময়! আপনি তা জানেন না নোলক! আপনাকে কি করুনা করবো? আমার তো মাঝে-মধ্যে নিজের উপর-ই কি ভীষণ করুণা হয়! তবুও আমি সুখি! তীব্র ব্যথাময় অসুখ নিয়েই সুখি!”
এইটুকু বলেই হাসে। চাঁদের আলোয় স্পষ্ট দৃশ্যমান হয় সেই রহস্যময় হাসি। নোলক তার দুর্বল চাহনি দিয়েই হালকা ঘাড় কাত করে চেয়ে থাকে। আদ্র’র কথার অর্থদ্বার করার মতো বোধশক্তি তার নেই! আদ্র বুক ফুলিয়ে দীর্ঘ এক শ্বাস ছেড়ে বলে,
“অসুখে যে সুখ খুঁজে নিতে পারে, পৃথীবির কোনো অসুখ-ই তাকে ঘায়েল করতে পারে না। কাতরতায় ডুবে থেকেও সুখ সুখ লাগে। দুুঃখ এসে ঝাপটে ধরলেও পৈচাশিক হেসে বলতে ইচ্ছে করে,’আই ডোন্ট কেয়ার!’ অসুখে সুখ খুঁজে নিন, নোলক।”
আদ্র’র শেষের কথাগুলোকে খুব আপন করে নিতে ইচ্ছে করে নোলকের। এতদিন বিরক্তি বলে আখ্যায়িত করা মানুষটাকেও খুব বেশি আপন লাগে। সেই আকস্মিক টান থেকেই বোধহয় হুট করে বলে বসে,
“আমাকে একটু নিচে নিয়ে যাবেন? খুব পা..পানি খেতে ইচ্ছে করছে। এ..একটু ধরবেন?”
নোলকের এই অস্বাভাবিক আচরণের কারন হুট করে ধরতে না পারলেও এইটুকু বুঝতে পারে মেয়েটা ঠিক নেই। কাছে এগিয়ে বলে,
“আপনি ঠিক আছেন নোলক? অসুস্থ মনে হচ্ছে।”
নোলকের সামনেটা ঘোলা হয়ে আসে। সামনে দাঁড়ানো আদ্র, আদ্র’র আত্মবিশ্বাসী কন্ঠস্বর অস্পষ্ট, অদৃশ্য হয়ে যায় নিমিষেই!
নোলক পড়ে যেতে লাগলে আদ্র একহাতে আগলে নেয়। বার’কয়েক ডাকে,”নোলক? শুনছেন? এই যে!”
কোনো প্রকার সারাশব্দ না পেয়ে দ্রুত ইশানকে কল লাগায়। ইশান ফোন ধরতেই ব্যস্ত কন্ঠে বলে,
“দোস্ত নোলক অসুস্থ হয়ে গিয়েছে। জলদি ছাদে আয়, প্লিজ।”
ইশান অবিশ্বাসে সুরে বলে উঠে,
“কিহ! অগ্নিশর্মা!”
ইশানের বজ্রকন্ঠে বাকিরাও উৎকন্ঠিত হয়ে উঠে। ইশান ফোন রেখেই উঠে দাঁড়ায়। অস্থির কন্ঠে বলে, “ছাদে, ছাদে…”
পুরো কথা শেষ করতে পারে না ইশান। বেশি অস্থির হয়ে গেলে এমনটাই হয় ইশানের। না পারতে, কিছু না বলেই ছাদের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে যায় রুম থেকে। কিছু একটা গন্ডগোল যে হয়েছে তা বুঝতে বাকি রয়নি কারো। শায়ন আর শ্রীতমা ছিলো না। যার ফলে তারা এর কিছুই টের পায়নি। বন্ধুমহলের বাকিরা ইশানের সাথেই পা মিলায় সমতালে।
.
রাতের তিনটা পেরিয়ে চারটার দোরগোড়ায়। কিন্তু কারো চোখে ঘুম নেই। সবার চোখে মুখে চিন্তার ছাপ। হঠাৎ কি হলো মেয়েটার! অনেক কষ্টে এই মাঝ রাতে ডাক্তার ম্যানেজ করে এনেছে দ্বীপ আর ইশান গিয়ে।
বেশ অনেক্ষণ পর চেইক-আপ করে ডক্টর জানালেন, সারাদিন না খেয়ে থাকার ফলে শরীর ক্লান্ত ও দূর্বল হয়েই এমনটা হয়েছে, প্রেশার বেড়ে গিয়েছে।
এ কথা শোনার পর সবাই ভয়ানক চটে গেলো। ‘বিয়ে বাড়িতে না খেয়ে একজন অসুস্থ হয়ে গিয়েছে!’ এ কথা কি মানা যায়?
সবাই যে এবার তার উপর ক্ষেপে যাবে তা বেশ ভালো মতো অনুধাবন করতে পারলো নোলক। চুপিচুপি সবার দিকে তাকালো।স্যালাইন-ট্যালাইন দেয়ার পর কিছুটা স্বাভাবিক হয়। বন্ধুরা সবাই পারে না তাকে এক্ষুনি মাইর লাগায়। শ্রীতমার মা আর বাবা লজ্জায় পড়ে যাওয়ার মতন করে বলে,
“ছিঃছিঃ মা! এ কেমেন লজ্জাজনক কান্ড! বিয়ে বাড়িতে এসে কেউ না খেয়ে থেকে এমন অঘটন বাঁধায়? তোমার বাড়ির লোক জানতে পারলে কেমন লজ্জায় পড়বো বল দেখি?”
ইশান মায়া মায়া মুখ করে বলে,
“এখন কেমন লাগছে অগ্নিশর্মা? কত ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম সবাই!”
নোলক ফ্যাকাসে হাসে। কাজটা যে ঠিক করেনি তা বুঝতে পেরে অনুতাপ অনুভব করে।
নিষাদ বলে,
“মাইয়া কেমন ফাজিল! ওরে আমি জিজ্ঞেস করছি খেয়েছি কিনা, সে বলে, সে নাকি সারাদিনই খাচ্ছে! কি সাংঘাতিক মিথ্যা কথা!”
শ্রেয়া বলে, “আমাকেও সেইম কথা বলেছে।”

অনুপমা দেবী চটজলদি প্লেটে করে খাবার নিয়ে আসে।
আদ্র কটাক্ষ করে বলে,
“তার খাবারের প্রয়োজন নেই তো কাকিমা! সারাদিন লম্ফঝম্প করেই তো পেট ভরে যায়। খাওয়া-দাওয়ার কি প্রয়োজন? এসবের কোনোই প্রয়োজন নেই। খাওয়া-দাওয়া হচ্ছে স্বাভাবিক মানুষদের জন্য। তার মতো অস্বাভাবিক মানুষ না খেয়ে থাকলে বিশেষ অসুবিধে নেই। কি? ঠিক বললাম না, মিস.তুরতুরি?”
আদ্রর রসাত্মক কটাক্ষে সবাই মুখ টিপে হাসে।
শ্রেয়া ফিসফিসিয়ে লুবনাকে জিজ্ঞেস করে,
“দোস্ত? তুরতুরি কী রে?”
পাশ থেকে নিষাদ বলে,
“এটা তোর জামাইর আরেকটা মাথা।”
শ্রেয়া কটমটিয়ে তাকায়। নিষাদ অন্যদিকে ফিরে কিছুই করেনি টাইপ ভাব নিয়ে মুখ টিপে হাসে।
এইদিকে আদ্রর জ্বালাময় কথায় নোলক ফুঁসে উঠে বলে,
“দেখুন, রেগে যাচ্ছি কিন্তু!”
আদ্র বাকা হেসে বলে,
“তো? ভয় পাই নাকি? রাগুন, রেগে আরো দু-তিনটে অঘটন ঘটান। সবাই আপনার উদ্ভট কর্মকান্ডে ইউজটু হয়ে গিয়ে অলরেডি।”
নোলক না পেরে দ্বীপের দিকে তাকায়। দ্বীপ হেসে বলে,
“এই আদ্র!”
আদ্র ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে যেতে বিড়বিড় করে বলে,
“দিনে কম করে একটা অঘটন না ঘটালে যেন তার চলেই না! অঘটনের সর্দারনী! তুরতুরি একটা।”
.
সকালে শ্রীতমার বিদায় পালা। সবার দুঃখি দুঃখি মুখ। শায়ন চুপিচুপি তার বউকে শান্তনাও দিলো। তবে তাতে বিশেষ কাজ হলো না। সবার চোখে অশ্রুকণা টলমল করছে।
ঠিক হলো শ্রীতমার সব ফ্রেন্ড যাবে ওর সাথে। নোলক অসুস্থ থাকায় ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও যেতে বারন করা হলো। আদ্র আগে থেকে যাবে না বলেছে। ইশান প্রথমে যাবে বললেও পরে জানালো সে-ও যাবে না। কেন যাবে না, তার কারন স্পষ্ট নয়।
বিদায়ের পর পুরো বাড়ি খালি হয়ে গেলো। কিছু গুরুজন, শ্রীতমার মা-বাবা, দ্বীপ, আদ্র, ইশান আর নোলক রইলো কেবল।
নোলকের মন খারাপ হলো ভীষণ। এতো বড় বাড়িটায় সে এখন কেবলই একা। সঙ্গী কেউ নেই। যদিও ফয়সাল আর লুবনা থেকে যেতে চেয়েছিলো। নোলকই জোর করে পাঠিয়েছে। ওর কারনে ওদের মজাটাও নষ্ট হোক তা চায়নি। নোলকের মনে পড়লো সে পুরো বাড়ি এবং বাড়িটার আশপাশ ঘুরে দেখেনি। যেই ভাবা সেই কাজ। চোখে মোটা করে কাজল দিয়ে বেড়িয়ে পড়লো। অনুপমা দেবীকে বলে বাড়ির পেছন দিকটায় গেলো। কেমন যেন গা ছমছমে পরিবেশ। পাখির কিচিরমিচির ডাক কানে আসে। একটু একটু ভয় কাজ করলেও ভালো লাগে না নোলকের। শরীরে নকশি করা ওড়নাটা জড়িয়ে নিয়ে ধীর পায়ে এগিয়ে যায় বট গাছের মতো দেখতে বিশাল গাছটার দিকে। এটা কি গাছ কে জানে! শ্রীতমার থেকে জেনে নিতে হবে। গাছটার কাছে যেতেই ক্লিক করে মৃদু আওয়াজ হলো। নোলক পেছন ফিরতেই আবারও সেই আওয়াজ। ভালো করে আশেপাশে তাকাতেই ইশানকে দেখতে পায়। স্বস্তির হাসি হাসে নোলক। পরপর বেশ কয়েকটা ক্লিক করার পর ক্যামেরা সহিত নোলকের সামনে এসে দাঁড়ায় ইশান। ধরা পড়ে যাওয়া টাইপ হাসি দিয়ে বলে,
“হাই, অগ্নিশর্মা! কেমন আছো?”
নোলক দুই কদম এগিয়ে এসে বলে,
“লুকিয়ে লুকিয়ে ছবি তোলেন কেন? আরো কয়েকবার লক্ষ্য করেছি! ফটোগ্রাফাররা কি সবসময়-ই লুকিয়ে-চুরিয়ে ছবি তোলে? নাকি আপনি-ই ব্যতিক্রম?”
ইশান উচ্চস্বর হাসে। পাখির কিচিরমিচির এর সাথে সেই ছন্দময় হাসি মিলিয়ে যায়। নোলক চোখ ছোট করে তাকায়। যেন এই হাসির কারন ঠিক ধরতে পারছে না। ইশান ক্যামেরাটা নোলকের সামনে ধরে বলে,
“দেখো, কি সুন্দর ন্যাচারাল রিফ্লেকশন এসেছে। যদি তোমায় বলে-কয়ে তুলতাম তবে কি এমন স্বচ্ছ-সুন্দর হতো? এতো ন্যাচারাল হতো? হতো না।”
নোলক ছবিগুলো দেখে ঠোঁট উল্টালো। প্রশংশা করার মতো করে বলল,
“হুম। দারুন ছবি তোলেন। জীবন্ত মনে হয়।”
ইশান তৃপ্তিময় হাসে। ক্যামেরা নাড়াচাড়া করতে করতে বলে,
“তোমার সবগুলো ছবি দিয়ে একটা এলবাম বানাবো। এলবামের টাইটেল কি হবে জানো?”
নোলক জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায়। ইশান চোখেমুখে হাসি ফুটিয়ে বলে,
“অগ্নিশর্মা।”
নোলক হেসে ফেলে। কি কোমল, স্নিগ্ধ, সতেজতায় ভরপুর সেই হাসি। ইশানের চোখে কিছু একটা পড়ায় বলে,
“তুমি এখানেই থাকো, আমি জাস্ট দু মিনিটে একটা ক্লিক মেরে আসছি। কোথাও যেও না।” বলেই চলে গেলো।
কিন্তু নোলক কি স্থির থাকার মেয়ে? সে হাঁটে। হাঁটতে হাঁটতে কিছু দূর যেতেই দেখতে পেলো গাম্ভীর্যে ভরপুর ছেলেটাকে। মেরুন টি-শার্ট আর ছাই রঙের টাউজারেও গভীর পুরুষালি ভাব ফুটে উঠেছে। রাতের কথাগুলোর বেশিরভাগই সে বোঝে নি। তবে এতটুকু বুঝতে পেরেছে, মা-বাবার প্রতি নিরব রাগ তার। কিন্তু কেন? কিসের জন্য এত তীব্র রাগ?

আদ্র’র কাছে গিয়েই দাঁড়াল নোলক। আদ্রর হাতে বই। নোলক বিরক্তি প্রকাশ করে আকস্মিক প্রশ্ন ছুড়ে,
“এই যে বই-মানব? আপনি কি বই ছাড়া কিছু বুঝেন না? যখনই দেখি, তখনই হাতে একটা বই। মাথা ব্যথা করে না? চোখ ব্যথা করে না? এই জন্যই তো ভাবি, এত জলদি কানা হলেন কেমনে!”
আদ্র নোলকের দিকে তাকায়। নোলকের কপালের ঠিক মাঝ বরাবর সিঁথি। কানের কিনার ঘেঁষে কিছু প্যাঁচানো চুল বেড়িয়ে আছে। মেয়েটার মুখশ্রী দেখতে যতটা জলছবির মতো স্থির, সুনিপুণ কারুকার্যে আঁকা বলে বোধহয়, প্রকৃতপক্ষে সে ততটাই অস্থির, চঞ্চল! কপালে সূক্ষ্ম ভাঁজ পড়ে আদ্রর। কঠিন কথা শুনাতে ইচ্ছে হলেও তেমন কিছুই বলে না। এক হাত থেকে অন্য হাতে বইটা নিতে নিতে প্রশ্ন করে,
“শরীর কেমন এখন?”
আদ্রর এমন নরম রিয়েকশনে একটু অবাক হলেও প্রকাশ করে না। গলা খ্যাকাড়ি দিয়ে বলে,
“এজ অলওয়েজ টু গুড! আলহামদুলিল্লাহ্‌। আপনার?”
আদ্র কপালে, ঘারে হাত বুলাতে বুলাতে বলে,
“এতক্ষণ ভালোই ছিলাম। কিন্তু এখন আতংকে আছি। কেউ একজন কখন কি অঘটন ঘটিয়ে ফেলে, তা নিয়ে বেশ চিন্তিত।”
নোলকের আর বুঝতে বাকি রইলো না, কথার তীরটা কার দিকে নিক্ষেপ করে বলা হয়েছে। ভ্রু কুঁচকে ঠোঁট উল্টে বলে,
“এই যে? আপনি কি কথাটা আমাকে খোঁচা মেরে বললেন?”
আদ্র বাকা হেসে বলে,
“তাই মনে হলো নাকি? বাহ! একটু একটু বুদ্ধি আছে দেখি!”
নোলক ফুঁসে উঠে বলে,
“দেখুন আপনি কিন্তু….”
নোলক পুরো কথা শেষ করার আগেই আদ্র নোলককে টেনে নিয়ে কিছুটা পেছন সরে আসে। অস্থিরতার সহিত ফিসফিসিয়ে বলে,
“চুপ, কথা বলবেন না। সাপ!”
নোলক আদ্রর দৃষ্টি লক্ষ্য করে সামনে তাকিয়ে দেখে, ছোট একটা সাপ গাছের শেকড় পেঁচিয়ে চলে যাচ্ছে। সাপে নোলকের ভয় নেই। সে ফিক করে হেসে দিয়ে বলে,
“ইশশ! ভিতু, ভিতুর ডিম। এত্ত বড় ছেলে, সাপে ভয় পায়! হি হি!”
আদ্র’র পাল্টা শোধ নেয়ার মতো করে বলে,
“কেউ একজন যে ভুতের ভয়ে কেঁদে-কেটে সমুদ্র বানিয়ে ফেলে, আমি কি একবারও তাকে ভিতু-টিতু বলেছি?”
নোলকের রাগ হয় সঙ্গে ভীষণ লজ্জাও পায়। অন্যকে লজ্জায় ফেলতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে যায়! লজ্জা আর কপট রাগের সংমিশ্রণে গাল লাল হয়ে যায় তার। আদ্র এক নজর তা দেখে অন্যদিক ফিরে তাকায়। টাউজারের পকেটে দু’হাত গুঁজে দিয়ে মুখ টিপে হাসে। মেয়েটাকে জব্দ করতে পেরে বেশ মজা লাগছে তার!….(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here