#ক্ষ্যাত যখন মাফিয়া
#পার্টঃ০২
#লেখকঃরবিউল_হাসান

সিকদারঃতোমার কাজটা আমি করব তাই হাত ধরলাম।
মারিয়াঃতুদের দুই জনের অনেক বুলি ফুটছে আজ তুদের অবস্থা এমন করব যেন আর কেউ আমার চুঃখে চুঃখ রেখে কথা বলতে না পারে।

তারপর মারিয়া আমাকে আর সিকদারকে কলার ধরে মাঠে নিয়ে গেল……….

তারপর আমাদের দুইজনকে মাঠে ধাক্কা মেরে পেলে দিল।

মারিয়াঃএদের দুই জনের এমন অবস্থা করবি যাতে বাবার নাম ভুলে যাই। (তার গুন্ডি বান্ধবীদের বলল)
তারাঃওকে।তুই শুধু দেখতে থাক।

তারপর তারা হকিস্টিক, ক্রিকেট ব্যট, স্টাম্প নিয়ে আসল……

তারপর আর কি,ইচ্ছা মত মারল আমাদের।সিকদার সে কি কান্না যেন ছেড়ে দেয়। কিন্তু কে শুনে কার কথা সবাই আমাদের ইচ্ছে মত মারল।কিন্তু একটা মেয়ে না মেরে সোজা দাঁড়িয়ে আছে।

মারিয়াঃকি হল সিনতিয়া?তুই মারছিস না কেন?
সিনতিয়াঃআমার শরীর টা ভালো নেই রে তাই কিছু ভালো লাগছে না।
মারিয়াঃতাহলে তুর কাজটা আমি করছি।

বলে মারিয়া সিনতিয়ার হাত থেকে স্টাম্পটা নিয়ে নিল।ঐ স্টাম্প দিয়ে মারিয়া আমার পায়ে মারল…..

সাথে সাথে আমি চিৎকার করে উঠলাম।

মারিয়া আমার অপর পায়ে আবারো মারল।
আমি আবারো চিৎকার করে উঠলাম। তারপর মারিয়া ঘাড়ে মারল, তারপর মাথায়…. …..
আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসছে…….
আর কিছু মনে নাই………
চোখ খুলতে নিজেকে একি জায়গায় আবিষ্কার করলাম।কি কপালরে ভাই কেউ একটু হসপিটালেও নিয়ে গেল না।

সিকদারও আমার সাথে পড়ে আছে।আমার পায়ে অনেক ব্যাথা করছে তাও সিকদারের কাছে গেলাম।তাকে ডাকলাম কিন্তু জ্ঞান ফিরল না।আরেকটু কষ্ট করে পানি নিয়ে আসলাম।পানি ছিটানোর পর সিকদারের জ্ঞান ফিরল।

কলেজে কেউ নেই।শুধু পড়ে আছি আমি আর সিকদার।সাগরকেও দেখতে পাচ্ছি না।

কোনোরকম সিকদারকে নিয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে আসলাম।বাইরে এসে একটা টেক্সি নিয়ে হসপিটালে গেলাম।

ট্রিটমেন্ট করিয়ে আমরা যার যার বাসায় চলে এলাম। রাতে আমার ভাঙা বস্তিতে বসে আছি আর ভাবতে লাগলাম।আজ যদি আপু আমাকে এই লাইফে নামিয়ে না দিত তাহলে বুঝতামই না গরীবের লাইফটা কতটা কঠিন।

সত্যি আপু অনেক কঠিন রে এই লাইফ, যার একটু ক্ষমতা আছে সে অপরকে বিড়াল মনে করে।ধন্যবাদ আপু তুমি আমাকে বুঝার সুযোগ করে দিয়েছ, গরীব লাইফটা।

এসব ভাবছিলাম আর চোখের জল পেলছিলাম।আমার কলেজে ২ টা বন্ধু তার থেকে একজন কোথায় চলে গেল একটু হেল্প করতেও আসল না।

সকালে ঘুম থেকে ওঠে গোসল করে কলেজে গেলাম।আবারে দারোয়ানের ঝামেলা। বেটা আবারো ডুকতে দিতে চাচ্ছে না।পকেট থেকে ২০ টাকা বের করে দিয়ে ডুকে গেলাম। বেটা ঘুষ নিছে।

ক্লাস হতে আরো অনেকটা সময় আছে, যদিও শরীর ভালো না তাও ক্লাসতো করতেই হবে।তাই চলে এলাম।

গিয়ে একপাশে বসলাম।সিকদারের শরীর ভালো না তাই সে কলেজে আসে নি।দেখি সাগর আসে কিনা….

ক্লাস শুরু হতে আরো দেরি,তাই বসে বসে সাগরের অপেক্ষায় আছি,যদি সে আসে তাহলে ভালো না আসলেও নিজে ক্লাস করব।

কিছু সময় পর সাগর আসল।আমাকে না দেখে অন্য দিকে চলে যাচ্ছিল।তাই আমি ডাক দিলাম।

সাগর আমার কাছে আসল।

আমিঃকাল কোথায় গিয়েছিলি?আমাদের এভাবে রেখে?
সাগরঃতাহলে কালকের ঘটনা শুন…..

তুদের যখন টেনে মাঠে নিয়ে আসল তখন আমার কাছে আমার বোন ফোন দেয়,বলে মায়ের শরীর ভালো না, হসপিটালে নিয়ে যাচ্ছি তুই তাড়াতাড়ি চলে আয়।আমি তবুও একটু পরে যায়।
আমি অপেক্ষা করছিলাম যখন মারিয়া তুদের ছেড়ে দেবে তখন তুদের নিয়ে একসাথে যাব।
কিন্তু মারিয়া তুদের মারার পর সবাইকে কি বলছে জানিস?

আমিঃকি বলছে?

সাগরঃমারিয়া বলছে যদি তুদের কেউ হসপিটালে নিয়ে যায় বা বাসায় যেতে কেউ সাহায্য করে তাহলে তার লাশ পেলে দিবে।
বুঝতেই পারছিস মাফিয়ার বোন কারো সাহস নেই তার কথা অমান্য করার। আমি তখন বাসায় চলে যায়।আর তোর নাম্বার না থাকায় ফোন দিতেও পারিনি।
এখন তুর নাম্বার টা দেয়।

আমিঃওকে নেয় আমার নাম্বার, 018747405**
সাগরঃওকে আমি কল দিচ্ছি আমার নাম্বারটাও সেইভ করে রাখ।

সাগর কল দিল আমি নাম্বারটা সেইভ করে রাখলাম।

কিছুক্ষণ পর ক্লাসের দিকে যাচ্ছিলাম।তখনই মারিয়ার ডাক……

কথায় আছে,যেখানে বাঘের ভয়,সেখানে সন্ধ্যা হয়।আমিও মারিয়াকে ভয় পেয়ে পেয়ে আসছিলাম।মনে মনে চাচ্ছিলাম যাতে মারিয়ার সাথে দেখা না হয় কিন্তু দেখা হয়ে গেল।

মারিয়ঃঐ ছেমরা এইদিকে আয়।
আমি না শুনার ভান করে চলে যাচ্ছিলাম।আবার ডাক দিল।এবার না গেলে আবারো মারতে পারে তাই এবার মারিয়ার কাছে গেলাম।

মারিয়ার কাছে যেতেই……

ঠাশ….ঠাশ….করে দুইটা চড় দিল আমায়।

আমি কিছু বলছি না। গালে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছি।

মারিয়াঃএই বস্তির ছেলে তুকে না বলছি আমি ডাকলে আসবি।
আমিঃজ্বী আসলাম তো…..
মারিয়াঃআগে কেন আসিস নাই।তুকে কতবার ডাকতে হবে?
আমিঃআমি প্রথমে বুঝতে পারি নি আপনি কাকে ডাকছেন পরে যখন বুঝলাম তখন আসছি।
মারিয়াঃনা তুই ইচ্ছে করে প্রথমে আসিস নাই।এখন তুর শাস্তি পেতে হবে।
আমিঃআমি সত্যি বুঝতে পারি নি।🥺
মারিয়াঃতা আমি জানি না।এখন তুর শাস্তি কি দেওয়া যায়…..ওমমমম
তোরা বল তার শাস্তি কি দিব(মারিয়ারর ফ্রেন্ডদের বলল)

তাদের থেকে সিনতিয়া বলল, আজকে ছেড়ে দেয় হয়তো ভুল করছে।
আবার আরেকজন বলে উঠল না না ছেড়ে দেওয়া যাবে না।যদি আমরা ছেড়ে দিয় তাহলে কলেজের বাকি ছেলে-মেয়ে মনে করবে আমরা দূর্বল।শাস্তি তো দিতেই হবে।

নিশাঃহুম কি শাস্তি দিবি তাই বল।
মারিয়াঃপেয়েছি একটা…..
শিমিঃকি..?
মারিয়াঃএখন এই ক্ষেতটা আমাদের জন্য ফুচকা নিয়ে আসবে।
সিনতিয়াঃকিন্তু এখন তো ওর ক্লাস দেখ মারিয়া ওকে ক্লাস গুলো করতে দেয় পরে না হয় শাস্তি দিবি।
মারিয়াঃআমি না বুঝলাম না আমার হয়ে ওর সাপাই কেন গাচ্ছিস?
সিনতিয়াঃতেমন কিছু না।

তানহাঃওকে ঐ যা এবার ফুচকা নিয়ে আয়।

আমি মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছি। এই সময় আমার ক্লাস করার কথা কিন্তু এরা যা শুরু করছে জানিনা এভাবে বস্তির ছেলে সেজে কত দিন থাকতে পারি।

মারিয়াঃকি হল কথা কানে যায় না, যা গিয়ে ফুচকা নিয়ে আয়।
আমিঃএখানে তো ফুচকা আসে না।যদি ফুচকা আনতে যায় তাহলে বাজারে যেতে হবে।আর বাজারে গেলে আমার ক্লাস করা হবে না।🥺
মারিয়াঃএত কিছু জানিনা গিয়ে এখন ফুচকা নিয়ে আসবি।
আমিঃআমার কাছে টাকা নাই।(যদিও টাকা আছে মিথ্যা বললাম যাতে আমাকে ছেড়ে দেয়।)

অবশ্য সারগ দূর থেকে এসব দেখছে।আমার সাথে মারিয়ার কাছে সেও আসতে চেয়েছিল আমি তাকে আসতে বারণ করলাম তাই দূর থেকে দেখছে।

মারিয়াঃজানতাম তো ক্ষেতের কাছে টাকা থাকবে না।এই নে ৫০০৳ গিয়ে আমাদের সবার জন্য ফুচকা নিয়ে আয়।

আমিঃএখন আমার গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস আছে, এই ক্লাসটা করে আমি ফুচকা নিয়ে আসি…….

মারিয়াঃকিহ আবার মুখে মুখে কথা।আজ তো তুকে মেরেই পেলব।

আমিঃনা না আমাকে মারবেন না আমি যাচ্ছি ফুচকা আনতে।
মারিয়াঃগুড় তাড়াতাড়ি নিয়ে আসবি।

আমি কিছু না বলে ফুচকা আনতে বাজারে চলে গেলাম।যাওয়ার সময় কোনো ঝামেলা হয়নি কিন্তু আসার সময় আটকে গেলাম জ্যামে।আসতে প্রায় ১ ঘন্টা লাগল।

জ্যামের মধ্যে কেউ একজন আমাকে খেয়াল করছে,যেটা আমার অজানা।সে আবার আমাকে ফলো করতে করতে আমার কলেজেও এসে গেছে।যেটা ছিল আমার অগোচরে।

আমি কলেজে ফুচকা নিয়ে ডুকতে যাব আবারো দারোয়ান বেটা আটকাল।এমনিতে দেরি হয়ে গেছে তার উপর এই বেটার অত্যাচার মাথা গেল গরম হয়ে।দিলাম জায়গা মত একটা কিক।বেটা মাগো বলে বসে গেল। আমি তাড়াতাড়ি মারিয়ার কাছে গেলাম।তাদের একটাই কাজ সারাদিন ছেলেদের বিরক্ত করা।
মারিয়া আর তার দল একপাশে বসে আছে।আমি ওখানে গিয়ে তাদের ফুচকা দিলাম।

মারিয়াঃতুকে কখন পাঠইছি আর আসলি এখন😡
আমিঃআমি তো দেরি করতে চায় নি।জ্যামে পড়ে গেছিলাম।তাই দেরি হয়ে গেল।
মারিয়াঃমিথ্যা বলবি না একদম আমার সাথে।
আমিঃসত্যি বলছি আমি।আর আসতে দারোয়ান আমাকে ডুকতে দিচ্ছিল না তাই আরেকটু বেশি দেরি হল।
মারিয়াঃকিহ তুই বলিস নি তুই আমার কাজে গেছিস?
আমিঃবলছি তো,সে আরো আপনার নাম বলায় আমাকে ঝাড়ি দিছে(যদিও তেমনটা হয়নি দারোয়ান বেটা বার বার আমার সাথে ঝামেলা করে তার হাত থেকে বাঁচতে এই কথা বললাম)
মারিয়াঃকিহ ঐ ব্যাটার এত বড় সাহস আমার নাম শুনে তুকে আরো ঝাড়ি দিছে, আজ তো তাকে আমি দেখে নিব😡😡
আমিঃহুম আপনার নাম না বললে আমাকে আরো ৫ মিনিট আগে আসতে দিত।আপনার নাম বলায় আরো ৫ মিনিট দাড় করিয়ে রাখল।(বেটাকে শিক্ষা দিতে কিছুটা বানিয়ে বলা আর কি😁)

মারিয়াঃওকে তুই যা আমি দারোয়ানের বাচ্চা কে দেখছি😡

আমিঃওকে আমি আসি।

আমি চলে আসলাম।আসার সময় মারিয়ার দিকে ফিরে একবার দেখে নিলাম তার দারোয়ান বেটার উপর কেমন রাগ হয় দেখার জন্য।

কিন্তু একি এ তো মুখ কালো করে বসে আছে,না মানে মুখ কালো করে দাড়িয়ে আছে। কিন্তু হঠাৎ কি হল।যা হবার হউক তাতে আমার কি আমি ক্লাসের দিকে চলে গোলম।

এইদিকে মারিয়া ভাবতে লাগল……
কালকে এই ক্ষেতটাকে আর তার বন্ধুকে এত মার দিলাম তাও এই ক্ষেতটা কলেজে কিভাবে আসল।এর তো হসপিটালে বা বস্তির বেড়ে শুয়ে থাকার কথা।এর ফ্রেন্ড তো আসল না তাহলে এ কিভাবে আসল।আর মার তো এই ক্ষেতটাকে বেশি দিছি তাও ……….

শিমিঃকিরে কি ভাবছিস চল দারোয়ান কে একটু দেখে আসি।

শিমির কথায় মারিয়ার ভাবনার জগতের ইতি ঘটল।
মারিয়া হ্যা চল, দারোয়ান বেটাকে দেখে আসি।

এই দিকে আমি ক্লাসের সামনে গিয়ে দরজায় দাড়ালাম।
আমিঃcoming sir……

স্যার আমার দিকে থাকিয়ে এক গাল বিরক্তের চাপ মুখে রেখে বলল….

স্যারঃকি চাই?
আমিঃস্যার ক্লাস করতে চাই…..
স্যারঃএই দেরি হল কেন?এতক্ষণ কোথায় ছিলে ভিক্ষা করতে গেছিলা নাকি।দেখেতো মনে হয় তাই কর।কোথ থেকে যে এসব ভিখারি আসে………

স্যার যথা রীতি আমাকে অপমান করছে।তাও আমি কোনো প্রতিবাদ করছি না।মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছি।আর স্যার ঘৃণিত কথা গুলো হজম করার ট্রাই করছি।

স্যারঃকি হল কথা বলছ না কেন?
আমিঃস্যার আমি আসতে দেরি করি নি।আমি ঠিক সময়ে আসছিলাম।কিন্তু মারিয়া আমাকে ফুচকার জন্য বাজারে পাঠিয়েছে।তাই আমার আসতে দেরি হল……

স্যারঃওহ মারিয়া কোথাও পাঠিয়েছে আগে বলবে তো।আস আস ভিতরে আস।

যদিও কথা গুলো স্যার মুখ থেকে বলল,মারিয়ার কথা বলায় স্যার যথা রীতি ভয়ও পেয়েছে।

তারপর ভিতরে গিয়ে শেষ সিটে গিয়ে বসলাম।এটাই একটা নিয়ম।যার টাকা আছে ক্ষমতা আছে সে যেখানে খুশি বসতে পারে।যার টাকার পাওয়ার নেই,ক্ষমতা নেই তাকে পেছনে গিয়ে বসতে হবে।তাই আমিও পেছনে গিয়ে বসলাম।
ঐ সিটে আগে থেকে সাগর বসা ছিল।তার পাশে গিয়ে বসলাম।আজ সিকদার আসে নাই।তাই আমরা দু-জন বসে ক্লাস করছি।

একটার পর একটা ক্লাস করতে করতে সব ক্লাস শেষ করলাম।যদিও প্রথম ক্লাসটা মারিয়ার জন্য করতে পারি নি।

সব ক্লাস শেষে বাইরে আসলাম।সাগর আর আমি গেইট দিয়ে বের হতেই দারোয়ান বেটা আবারো আটকাল।

দারোয়ানঃতুই সকালে মারিয়া ম্যামকে কি বলছিস?

আমিঃআমি কই কিছু না তো…..(যদিও বলছিলাম😁)
দারোয়ানঃআচ্ছা বাদ দিলাম, কিন্তু আমাকে সকালে কি করছিস এটার শাস্তি তুকে পেতে হবে।

আমিঃদেখেন মামা সকালে মাথা গরম ছিল তাই এমন করছি।এখন যদি আর বাড়াবাড়ি করেন তাহলে সকালের থেকে বেশি দিব।
দারোয়ানঃকিহ তুই আমাকে ভয় দেখচ্ছিস?
আমিঃধরে নেয়।তুর জন্য সংকেত এটা।
দারোয়ানঃতুকে তো আমি……..

আর কিছু বলার আগে একজন স্যার আসল।তাই দারোয়ান বেটা আর কিছু বলতে পারে নাই।
আমি আর সাগর বাসায় চলে আসলাম।
বার বার মনে হচ্ছে কেউ আমায় ফলো করছে……

দৌড়াবে…….

❣️গল্পটা কেমন হল তা একটা কমেন্ট করে জানাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here