#এলোমেলো_হাওয়া
#পর্ব_১২
লেখনীতে- #অলিন্দ্রিয়া_রুহি

রাত আটটা বাজতে এখনো কুড়ি মিনিট বাকী। ইতিমধ্যেই তারা বেগমের নাক ডাকার শব্দ শোনা যাচ্ছে। গ্রাম অঞ্চলে সন্ধ্যে সাতটায় ডিনার এবং রাত আটটার ভেতর ঘুমিয়ে পড়ার প্রবণতা সবচাইতে বেশি। অবশ্য এরা শহুরে লোকজনদের ন্যায় সকাল ন’টায় উঠে না,বরং ফজরের আযান কানে যাওয়ার আগেই উঠে পড়ে। উনুন জ্বালায়, সকালের রান্না করে মাঠে নেমে পড়ে কাজ করতে। আদ্র অলস ভঙ্গিতে টিভি দেখছে। এক পা অন্য পায়ের উপর তুলে আয়েশী কায়দায় বসে রয়েছে সে। মৃদু ভাবে পা-ও নাচাচ্ছে। তীহাও এতক্ষণ টিভির দিকে তাকিয়ে ছিল,কিন্তু এখন হাই তুলল। আদ্র সেটা লক্ষ্য করে ভ্যাবাচ্যাকা কণ্ঠে বলল, “তোমার ঘুম পাইছে!”

তীহা ঠোঁট ফুলিয়ে মাথা নাড়ালো। তারপর বলল, “শুধু ঘুম না,বলুন হেব্বি ঘুম পাইছে।”

“বাড়ি থাকতে রাত বারোটায়ও চোখের পাতা এক হতো না,আর এখানে রাত আটটায়…”

তীহা কথার মাঝে শুধরে দিলো, “রাত আটটা না,আটটা বাজতে এখনো অনেক সময় আছে।”

আদ্র হেসে বলল, “গ্রামের বাতাস ধরেছে। আচ্ছা ঘুমাও তাহলে।”

“আর আপনি?”

“আমার এতদ্রুত ঘুম আসবে না,অসম্ভব! তুমি ঘুমাও।
আমি টিভি দেখি।”

“আচ্ছা।” বলে তীহা সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়ল এবং মিনিট না গড়াতেই ঘুমের দেশে তলিয়ে গেল।

আদ্র মিটিমিটি হাসলো। পুনরায় টিভি দেখায় মনোযোগ দিলো। একটা তামিল মুভি চলছে। এতক্ষণ বেশ মনোযোগী সহকারে মুভিটি দেখলেও এখন কেন যেন মন বসছে না আর। দশ মিনিটের ন্যায় টিভিতে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা চালালো আদ্র। কিন্তু পারল না,তাই টিভি অফ করে তীহার দিকে তাকাল। তীহা গভীর ঘুমে তলিয়ে গেছে। কী সতেজ ও জীবন্ত তবুও! নিষ্পাপ লাগছে মুখখানা। বেশি সুন্দর দেখাচ্ছে মুদে থাকা পাপড়িদ্বয়।
আদ্র’র ভীষণ ইচ্ছে করল আলতো হাতে তা ছুঁয়ে দিতে। অন্যসময় নিজেকে আঁটকে রাখলেও আজ কেন যেন আঁটকেও রাখতে ইচ্ছে করছে না। হয়তো স্থান পরিবর্তন হয়েছে বিধায় মন আরও ফুরফুরে হয়েছে। তাই অবাধ্য ইচ্ছেগুলোর শক্তি বেড়েছে। আদ্র আনমনে কথাগুলো ভেবে মুচকি হাসে। তীহা যদি জেগে থাকত,এতক্ষণে নির্ঘাত উল্টোপাল্টা একটা কথা বলে আদ্র’র মাথাটা ধরিয়ে দিতো। মেয়েটা তো শুধু আলতু ফালতু কথা বলতেই পারদর্শী, এছাড়া কোন ঘোড়ার ডিমটা পারে সে! ভাবতেই আদ্র হা হা করে হেসে উঠল। ঘুমন্ত তীহা নড়েচড়ে উঠল। দু’হাত মুখে চাপা দিয়ে নিজের হাসি নিয়ন্ত্রণ করল আদ্র। চোখ খিঁচে তাকিয়ে রইলো ভয়ে ভয়ে। নাহ,তীহা উঠল। সামান্য নড়েচড়ে পুনরায় ঘুমে নিমজ্জিত হলো। আদ্র’র বুক চিঁড়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস বেরোয়। সরে বসে সে। টিভি ছাড়ে, কতক্ষণ দেখার চেষ্টা করে টিভি অফ করে দিলো। আবার তাকাল তীহার দিকে। তীহা যেন হাতছানি দিয়ে তাকে ডাকছে। তাকে একবার ছুঁয়ে দেওয়ার জন্য হাতগুলো নিশপিশ করছে। আদ্র থাকতে পারছে না। বিবেক ভুলে,সমাজ ভুলে আজ শুধু অন্যায় করতে ইচ্ছে হচ্ছে। আচ্ছা,নিজের বউকে ছুঁলে তা কী অন্যায় হবে? হবেই তো,তীহা তো চায় না কোনো স্পর্শ। তীহা তো মন থেকে তাকে স্বামীর মর্যাদাটাও দেয়নি। বিয়েটা শুধু মুখে মুখেই হয়েছে। দুই অন্তর তো এখনো মেলেনি। নিমিষেই মনটা বিষন্নতায় ভরে গেল।

আদ্র বিছানা ছেড়ে উঠে গেল। কাঠের জানালা খুলতে গিয়ে এক ধরনের কড়কড় আওয়াজ হলো। তীহা একটু নড়ে উঠল বুঝি। স্ট্যাচুর ন্যায় কয়েক সেকেন্ড দাঁড়িয়ে রইলো আদ্র। তীহার ঘুম আবার ঘন হয়ে গেলে সে হাঁফ ছাড়ে। জানালার ভারী পাল্লা পরিপূর্ণ ভাবে মেলে দিয়ে আকাশপানে তাকাল। চাঁদ দেখা যাচ্ছে না,আকাশে মেঘ করেছে। মেঘের অন্তরালে ডুবে রয়েছে বোধহয়। যেভাবে নিজের পবিত্র অনুভূতি গুলোকে আদ্রও লুকিয়ে রেখেছে বিবেকের অন্তরালে,ঠিক সেভাবে। পকেট থেকে সিগারেট বের করে ধরালো আদ্র।সময় নিয়ে টান দিলো। নিকোটিনের ধোঁয়া গুলো আকাশে উড়িয়ে দিতেই তীহার ঘুমে ডুবে যাওয়া কণ্ঠস্বরে ধাক্কা খেল সে, “আপনি সিগারেট খাচ্ছেন!”

আদ্র ভূত দেখার ন্যায় চমকে উঠল। হাত থেকে জ্বলন্ত সিগারেটটা দূরে ছুঁড়ে মেরে থতমত কণ্ঠে বলল, “ক..কই! কই সিগারেট?”

“তাহলে সিগারেটের গন্ধ কেন এত?” নাক উঁচু করে গন্ধ নেওয়ার চেষ্টা করল তীহা। এখন আর গন্ধটা লাগছে না দেখে সে ব্যর্থ কণ্ঠে বলল, “কী জানি,আমার কাছে লাগল আপনি খাচ্ছেন। তাই চট করে ঘুমটা ভেঙে গেল। আচ্ছা,আপনি না টিভি দেখছিলেন? ওখানে কী করছেন তাহলে?”

“আ..আমি?” যুতসই উত্তর খুঁজে বেড়ালো আদ্র এবং পেয়েও গেল অতিদ্রুত, “আমি এখানে ফোন করতে এসেছিলাম একচুয়ালি। ঘরের ভেতরে নেটওয়ার্ক পাচ্ছে না ঠিকমতো।”

“ওহ! ঠিক আছে। করুন..” কপালের উপর এক হাত মেলে দিয়ে তীহা শুয়ে পড়ল। আদ্র স্বস্তি ঝাড়ে। বড় বাঁচা বেঁচেছে। সাধারণত মেয়েটা এসব সিগারেট, বিড়ি দেখতেও পারে না,সহ্যও করতে পারে না। আর যদি কোনো মেয়ের স্বামীই স্মোকার হয়,তবে সেই স্বামীর কপালেও শনি,রবি,সোম,মঙ্গল সবই উপস্থিত হয় বউয়ের বদৌলতে। আদ্র চায় না,এমনিতেই তাদের জটিল সম্পর্কটা আরও জটিল হয়ে উঠুক। জানালা লাগিয়ে সে চুপচাপ এসে বিছানার উপর বসে। তীহা তখনো ঘুমোয়নি পুরোপুরি, আধো ঘুম আধো জাগরণ। তীহা বলল, “ফোন দিলেন না যে..”

“নেট পাচ্ছে না ভালো করে। সকালেই দিবোনে।” বলে প্রসঙ্গটা কাটায় আদ্র।
তুমি ঘুমাচ্ছো না কেন?”

“এমনিই। একটা জিনিস ভাবছিলাম।” উত্তর করে তীহা।

“কী?” আদ্র’র জানার আগ্রহ জন্মে।

তীহা উল্টো পাশ ফিরে শুয়ে ছিল,এবার আদ্র’র দিকে ঘুরে তাকাল। সময় নিয়ে বলল, “আমার সম্পর্কটা খুব অন্যরকম, তাই না!”

“যেমন?”

“এই যে দেখুন, কেমন সিরিয়াল টাইপ। মানে, আপনার জায়গায় অন্য কেউ হলে আমাকে নিশ্চয়ই গদগদ করত না এত। বরং সবসময় স্বামীর অধিকার খাটাতো। আমি কিছু বলতে গেলে বা কিছু করতে গেলে রিয়েক্ট করে বসত। এছাড়াও পারিবারিক ঝামেলা লাগাতো। তাই না,বলুন?”

আদ্র ফোঁস করে একটা শ্বাস ছাড়ে, “কিন্তু এসব করে লাভ কী বলো তো। জোর করে সবকিছু আদায় করা যায় না, আমার মতে..”

“শরীরটা চাইলেই জোর করে আদায় করা যায়। তাই তো কত রেপ হয় আমাদের দেশে!”

“কিন্তু আমি তো শুধু শরীরটাকেই আদায় করতে চাই না তীহা।”

“তাহলে কী চান?”

আদ্র থমকে গেল। নিস্তব্ধতা ঘিরে ধরল দু’জনকেই। তীহা অপলক চেয়ে উত্তরের অপেক্ষায়, ওদিকে আদ্র ভাবছে বলা ঠিক হবে কীনা! যদি তার কথা শুনে তীহা বলে বসে, মাত্র দু’দিনেই এত ভালোবাসা জন্মালো কী করে! এটা সত্যিই ভালোবাসা নাকী সাময়িক মোহ,তখন? আদ্র তো বোঝাতে পারবে না যে সাময়িক মোহ হলে সে এত ধৈর্য্য কখনোই ধরতে পারত না। ভালোবাসা বলেই ভালোবাসার মানুষটির মান-অভিমান,ইচ্ছে-অনিচ্ছের গুরুত্ব দিচ্ছে। তীহাকে কী করে বোঝাবে, ভালোবাসা একদিনের দেখাতেও হতে পারে, আবার সারাজনম একত্রে থেকেও হয় না! ভালোবাসা বড় অদ্ভুত জিনিস, এর আসল সংজ্ঞা, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ করবার সাধ্য কারো কী আছে? ভালোবাসা একেক জনের কাছে একেক রকম। মায়ের কাছে সন্তানকে লোকমা তুলে খাইয়ে দেওয়া ভালোবাসা। বাবার কাছে ছেলে-মেয়ের স্কুল ফিস দেওয়া ভালোবাসা। কর্মীর কাছে বসের মিষ্টি বুলি ভালোবাসা আবার ছাত্র’র কাছে শিক্ষকের একটু হাসি ভালোবাসা। সেরকম আদ্র’র কাছে তীহা মানেই ভালোবাসা। তীহার সবকিছুই সে ভালোবাসে। তীহা যে অনিন্য’র কথা ভেবে রাতে কাঁদে,সেই কান্নাটুকুও আদ্র ভালোবাসে। তাই তো তীহাকে হারাতে চায় না সে। আর এজন্যেই তীহার মন মতো সবকিছু করবার চেষ্টা করে। তীহাকে পর্যাপ্তের চেয়েও বেশি সময় দেয়। তবুও কোনোদিন কী তীহা বুঝবে! কোনটা নকল সোনা, আর কোনটা খাঁটি! আদ্র’র বুক চিঁড়ে বেরিয়ে আসা দীর্ঘশ্বাসের শব্দ শুনতে তীহার ভুল হয় না। সে নড়েচড়ে উঠে বসল। মৃদু কণ্ঠে বলল, “কী হলো, চুপ করে আছেন কেন? জবাব দিন।”

“কী জবাব দিব?” দায়সারা কণ্ঠস্বর।

তীহা বলল, “আমি যে প্রশ্ন করলাম।”

“ঘুমাও তীহা। তোমার সবকিছু আমি জানতে চেয়েছি? তেমন কিছু কথা একান্তই আমার ব্যক্তিগত থাকুক।”

“না,আপনি বলুন!” তীহা জোরালো কণ্ঠে বলল।

আদ্র সহাস্যে বলল, “জোর করছ দেখি!”

“হুম, করছি। বলুন এবার..”

“বললাম না,এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার।”

“স্ত্রীর কাছে কোনো ব্যক্তিগত ব্যাপারই ব্যক্তিগত না। আপনি বলুন।”

আদ্র বিব্রত কণ্ঠে বলল, “তুমি আমার স্ত্রী! স্বীকার করছ?”

তীহা হতবিহ্বল, রয়েসয়ে জবাব দেয়, “কবে অস্বীকার করেছিলাম?”

“যার দিকে তাকিয়ে থাকলে আমি লুচ্চা হয়ে যাই, সে কীভাবে আমার স্ত্রী হয়! তোমাকে আর যাই হোক,স্ত্রী মানতে পারছি না। তুমি আর দশটা মেয়ের মতোই আমার কাছে সাধারণ তীহা। স্ত্রী হলে অবশ্যই তোমাকে ভালোবাসতে পারতাম! স্ত্রী কে ভালোবাসতে বাধা থাকত না।”

তীহা চুপসে গেল। যতবার আদ্র নিজে থেকে তীহার সঙ্গে স্বাভাবিক হতে চেয়েছে,ততবার তীহা ভয় পেয়ে বা বিব্রত হয়ে একটা উল্টাপাল্টা ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে। এটা আসলেও ঠিক হয়নি। আদ্র’র জায়গায় অন্য কেউ থাকলে এই সুবিধাটুকু না-ও দিতে পারত। আদ্র দিয়েছে,তাই বলে তাকে একদম পেয়ে বসাটা কী মোটেও সমীচীন? তীহা মনে মনে কিছু জিনিস সাজিয়ে নিলো। চোখের পাতায় ভেসে উঠল অতীতের সেই ঘটনাগুলো। অনিন্য’র ধোঁকা দেওয়া,তীহাকে কাঁদানো,ঘাড় ধাক্কা দিয়ে ফ্ল্যাট থেকে বের করে দেওয়া এবং এরপরও তীহার সাংসারিক জীবনে অঘটন বাধাতে চাওয়া। অথচ সে নিজে অন্য মেয়ের সঙ্গে ভালো আছে। তাহলে তীহা কেন থাকতে পারছে না। কোন ভয়ে নিজেকে এতটা গুটিয়ে নিয়েছে! একবার চেষ্টা করে দেখতে দোষ কী! হতেও তো পারে, আল্লাহ এতটুকু তুলে নিয়ে এতখানি দিয়েছে তীহাকে। তীহা কোলের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো ভাবছিল। এবার মুখ তুলে আদ্র’র দিকে তাকাল। আদ্রও তার দিকে তাকিয়ে ছিল বলে দুই জোড়া চোখ এক হয়ে গেল। আদ্রই দৃষ্টি সরিয়ে নিলো। নির্বিকার কণ্ঠে বলল, “ঘুমাও।”

সে উঠে যেতে নিলে পেছন থেকে তীহা তার এক হাত টেনে ধরল। প্রথমবারের মতো, সাহস করে… আদ্র বিস্মিত। তীহা মিনমিনে কণ্ঠস্বরটি নাড়ালো, “কোথাও যাবেন না আপনি।”

“কেন?” আদ্র’র হতবাক ভাব তখনো যায়নি।

“আপনি এখানেই থাকুন। বসুন..আমি ঘুমাবো।”

“তো ঘুমাও। আমি ঘরেই আছি।”

“না,এখানে বসুন আপনি.. বসুন। প্লিজ!” আকুতি ভরা কথা। আদ্র ফেলতে পারল না। কী হতে চলেছে তা দেখতেই বসে পড়ল। তীহা সুযোগ পেয়ে আদ্র’র কোলের উপর গুটিশুটি মেরে শুয়ে পড়ল। আদ্র অবাক, চমকিত। তীহা কী করতে চলেছে বুঝতে পারছে না৷ শুধু মনে হচ্ছে,সময়টা থমকে যাক এখানেই। অনন্তকাল ধরে শুয়ে থাকুক তীহা আদ্র’র কোলে। তীহার শিরশির লাগছে। তবুও নিজেকে ধাতস্থ রেখেছে। সরে গেলে চলবে না। সে যদি এক কদম আগায় তবেই না আদ্র আরেক কদম আগাবে। তীহা বলল, “আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিন। আমি ঘুমাবো।”

আদ্র’র চোখ ছলছল করছে। সে কিচ্ছু চায় না। তীহার সঙ্গে একটা ছোট্ট সুখের সংসার চায়। যে সংসারে ঝগড়া ঝাটি,মারামারি,লুকোচুরি কিচ্ছু থাকবে না। থাকবে শুধু ভালোবাসাময় খুনসুটি। দিন শেষে রাতে বাড়ি ফিরলে তীহার সঙ্গে সঙ্গে আরও দুটো ছেলেমেয়ে দৌড়ে আসবে বাবা, বাবা বলে। দৃষ্টিতে ভেসে উঠল ভবিষ্যতের স্বপ্ন গুলি। আদ্র আবেগে জল ফেলল। নিঃশব্দে হাত বুলিয়ে চলল তীহার মাথায়। ওদিকে তীহা থম ধরে পড়ে রইলো। ঘুমালো না বরং এই সময়টাকেই উপভোগ করে চলল।

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here