এক_কাপ_ঠান্ডা_কফি
#পর্ব_৯
লেখা_ সাইফুল_ইসলাম
রামিশা যখন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে ঠিক তখনই রাব্বি তার কাছাকাছি এসে দাঁড়ায়। ডানে বামে তাকিয়ে হঠাৎ করেই একটা বাস হোটেলের পার্কিং এ ঢুকতে দেখে। বাসটা সাইড দেবার জন্য তাদের দুজনকেই একটু সরতে হয়েছে। রাব্বি সেই সুযোগটাই গ্রহণ করেছে। ক্লোরোফর্ম মাখানো রুমালটা পকেট থেকে বের করে হাতে নিয়ে সাইড দেবার অভিনয় করে ধাক্কা মানে রামিশাকে।
রাস্তার পাশে পড়ে গেল রামিশা, তাকে তুলতে যাবার ভান করে এক হাত দিয়ে রামিশার মুখের মাস্কটা খুলে অন্য হাত দিয়ে রুমালটা চেপে ধরে তার নাকমুখে। আশেপাশের মানুষেরা ছুটে আসার আগেই ক্লোরোফর্মের কাজ শুরু হয়ে গেছে। মাত্র ১০/১৫ সেকেন্ডের ব্যাপার, রামিশা স্পষ্ট করে কিছুই দেখতে পেল না। অজ্ঞান হবার আগে অস্ফুটে কিছু বললো, কিন্তু রাস্তার প্রচুর গাড়ির শব্দে সেটা বোঝা গেল না।
হোটেলের দুজন সিকিউরিটির সাহায্য নিয়ে একটা মাইক্রো ভাড়া করতে পারলো রাব্বি। সেই মাইক্রোবাসে তুলে অজ্ঞান রামিশাকে নিয়ে ঢাকায় রওনা দিল সে। যদিও সবাই বলেছিল কাছেই একটা ক্লিনিকে নিয়ে যাবার জন্য। কিন্তু রাব্বি বললো যে ” সে আমার স্ত্রী, আর এমনিতেই ও একটু ভয় পেলেই অজ্ঞান হয়ে যায়। যেহেতু তেমন কোনো আঘাত লাগেনি তাই কোনো সমস্যা হবে না। ঢাকায় যেতে যেতে জ্ঞান ফিরে আসবে। ”
মাইক্রোতে বসে বসে রাব্বি প্রথমে ভাবলো যে সাজু ভাইকে কল দিয়ে জানিয়ে দেবে রামিশা তার হাতে বন্দী। কিন্তু একটু ভেবে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ফেললো, আগে ঢাকার যেতে হবে। তারপর নির্দিষ্ট একটা স্থানে একে রেখে ঠাণ্ডা মাথায় সাজু কে মারার প্ল্যান করবে।
অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকা রামিশার দিকে একবার তাকিয়ে মুচকি হাসলো রাব্বি।
★ ★ ★
ঝিনাইদহ পার হবার পরে রামিশার নাম্বারে বেশ কয়েকবার কল দিল সাজু। কিন্তু বারবার রিং হয়ে কেটে যাচ্ছে কেউ রিসিভ করছে না।
এমন সময় দারোগা সাহেব কল দিয়ে জানালো যে আব্দুল কাদেরকে বাগেরহাট থেকে কেউ গুলি করে হত্যা করতে চেয়েছে। গুরতর অবস্থায় তাকে খুলনা মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে।
খবরটা শুনে সাজু আরও টেনশনে পড়ে গেল। এই মামলার সবকিছুই এলোমেলো হয়ে গেছে, একেক স্থানে একেক ধরনের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু রামিশা কেমন আছে এটা বুঝতে পারছে না। রামিশাকে সতর্ক হবার কথা সে বলেছিল শুধুমাত্র সন্দেহের কারণে। যেহেতু পুতুল মেয়েটা বারবার তাকে অনুসরণ করছে তাই রামিশার উপর কোনো আক্রমণ হতে পারে বলেই সাজু ভেবেছিল। কিন্তু এখন মনে হয় কাজটা বেশি বোকামি হয়ে গেছে। রামিশা হয়তো তার কথা শুনে ঘাবড়ে গেছে, তারপর কি থেকে কি করতে গেছে আল্লাহ ভালো জানে।
দারোগা সাহেবের কাছ থেকে খুলনা মেডিকেলে আব্দুল কাদেরের সঙ্গে থাকা ইন্সপেক্টরের নাম্বার নিল সাজু ভাই। তারপর তার কাছে কল দিয়ে জানতে পারলো প্রচুর রক্তের দরকার। গুলির কারণে শরীরের রক্ত একদম শেষ, কিন্তু এতো দ্রুত রক্ত সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্নভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে, তবে কমপক্ষে ৪/৫ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে রাখতে বলা হয়েছে।
সাজু দ্রুত কল দিল তার পুরনো ক্যাম্পাসে। তাদের একটা খুব পুরনো গ্রুপ আছে রক্ত সংগ্রহ করার। একটা সময় রকি শফিক সজীবকে নিয়ে সাজু যখন খুলনায় থাকতো তখন থেকেই এটা তারা পরিচালনা করতো। সেখানে একটা ছেলেকে রক্তের কথা বলে দিল, ছেলেটা খুব দ্রুত জানাবে বলে কল কেটে দিল।
|
সাজুর বাস এখন মাগুরা জেলা পার হয়ে গেছে। খুলনা থেকে একটু আগে খবর এসেছে রক্তের ব্যবস্থা হয়েছে। বিএল কলেজের এক ছাত্র এসে এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে গেছে।
কিন্তু রামিশার সঙ্গে এখনো যোগাযোগ করতে পারছে না। ৩০০ বারের বেশি কল করা হয়েছে কোনো রেসপন্স পাওয়া যায়নি। সাজুর মনের মধ্যে অজানা আশঙ্কায় মনটা খারাপ করে দিল, তাহলে কি রামিশার সত্যিই কিছু হয়ে গেল?
পুতুল মেয়েটা একটু আগে তার পাশে এসে বসেছে এটা আরেকটা অস্বস্তিকর বিষয়। হুট করে সে এসে সাজুর পাশের লোকটাকে সামনে গিয়ে বসার জন্য বলে দিল।
– আপনার কি মন খারাপ সাজু ভাই?
– কেন?
– বাস ছাড়ার পর থেকে আমি বারবার পিছনে তাকিয়ে দেখতে পাচ্ছি আপনি অস্থির হয়ে কেমন যেন করছেন।
– সত্যি করে বলেন তো আপনি কে?
– গতকাল কিন্তু আপনার কাছে আমি আমার নাম বলেছিলাম, মিথিলা ইসলাম পুতুল।
– আমার কাছে কি চান?
– এটা কিন্তু একজন গোয়েন্দা মানুষের প্রশ্ন হতে পারে না সাজু ভাই।
– দেখুন আপনার সবকিছু আমার কাছে একটা রহস্যময় মনে হচ্ছে। আমি বেশ কিছু বিপদের মধ্যে পড়েছি তার সবগুলোর মধ্যে আপনার একটা যোগসূত্র আছে।
অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল পুতুল। চোখের পলক ফেলতে ভুলে গেল সে, বিশ্বাস করতে পারছে না সাজু ভাই কি বলছে তাকে।
– সাজু ভাই…?
– বলেন।
– আপনার কি ধারণা যে আমি আপনার ক্ষতি করার চেষ্টা করছি?
– দেখুন আমি আমার সবকিছু ভেবেই আপনাকে বলছি, আপনার আগমন ও আচরণ কোনটাই স্বাভাবিক নয়।
– আমি আপনাকে সম্মান করি, এটা ঠিক যে আপনার সঙ্গে দেখা হয়েছে কাকতালীয়। কিন্তু তাই বলে আমি আপনার ক্ষতি করবো এমনটা আপনি কেন ভাবছেন?
– যথেষ্ট কারণ আছে তাই ভেবেছি, তবে একটা কথা বলি মিস পুতুল। আমাকে বিপদে ফেলতে গিয়ে নিজেকে বাঁচাতে পারবেন কিনা সেটা একটু বিবেচনায় রাখবেন।
সাজুর কথা শুনে পুতুলের চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেল। এই প্রথম সাজু ভাই পুতুলের দিকে ভালো করে তাকালো। সুন্দরী, বেশ মুগ্ধকর তার চেহারার তরুণী, চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গাল বেয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে। চোখের মনি জোড়া সবার মতো কালো নয়, হালকা সাদা। চোখের কারণে তার সৌন্দর্য অনেকগুণ বেশী বেড়ে গেছে।
– কাঁদছেন কেন?
– আপনি আমাকে কেন সন্দেহ করছেন? আমি গতকাল শুধু আপনার সঙ্গে একটু দেখা করলাম। আর দুবার কল করেছিলাম কিন্তু তাই বলে আমি কেন আপনাকে কেন বিপদে ফেলবো?
অনেকটা কান্নার সুরে কথাগুলো বলে দিল পুতুল নামের মেয়েটা। বাসের দু একজন যাত্রীর কানে সেই কান্না পৌঁছে গেল। কৌতূহল কিছু চোখ দিয়ে কেউ কেউ তাকিয়ে রইল তাদের দিকে। সাজুর মনে ভাবনা চলতেই লাগলো। মেয়েটা যদি সত্যি সত্যি তেমন কেউ নাহয় তাহলে এতকিছুর সঙ্গে সে জড়িয়ে যাচ্ছে কেন। না না, তাকে মোটেই ছোট করে দেখা যাবে না কারণ মাহিশার যার সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছিল সেই ছেলের এবং তার পুরো পরিবারের বসবাস হচ্ছে খুলনায়। আর যেহেতু এই মেয়ের বাসাও খুলনাতে তাই নিশ্চয়ই কিছুটা কানেকশন অবশ্যই আছে।
হয়তো পাত্রের পরিচিতদের মধ্যে কেউ এমনটা করছে তাই সে চাইছে না সাজু ভাই মামলার মধ্যে যাক।
কিন্তু আব্দুল কাদেরের কথা যদি সত্যি হয় তাহলে তার পিছনেও শত্রু আছে। সাজু ভালো করে বুঝতে পারছে এই মামলায় তাকে প্রচুর ভুগতে হবে। মাস খানিক আগে মারা যাওয়া বন্ধু সজীব আর বিদেশে চলে যাওয়া রকির কথা বারবার মনে পড়তে লাগলো। এমন পরিস্থিতিতে তাদের কোনো একজনকে খুব দরকার ছিল।
সাজু ভাই চলন্ত বাসের জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে রইল। তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মনে মনে বললো ” এভাবে এক এক করে সবাই আমাকে রেখে চলে গেলি তোরা। আমার যে একা একা খুব খারাপ লাগে বন্ধু, ফিরে আসবি প্লিজ? আবার একসঙ্গে গভীর রাতে বসে বসে গল্প করতাম। ”
সারারাত ঘুম হয়নি, প্রচুর মানসিক চাপ আর বাসের ঝাঁকুনিতে মাথা ব্যথা শুরু করেছে। একটু পড়ে অনিচ্ছা সত্ত্বেও ঘুমিয়ে গেল সাজু ভাই। চোখ মেলে যখন তাকালো বাস তখন দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে এসে ফেরিতে উঠে গেছে। হঠাৎ করে তার খেয়াল হলো পুতুল নামের মেয়েটাও তার কাঁধে মাথা রেখে গভীর ঘুমে নিমগ্ন।
★ ★ ★
রামিশাকে নিয়ে রাব্বি এখন নারায়ণগঞ্জের এক বাসাতে আছে। তারই পরিচিত এক ভাইয়ের বাসা এটা, আপাতত এখানে থাকাটাই নিজের কাছে নিরাপদ মনে হয়েছে। যদিও সে চেয়েছিল পুরান ঢাকার এক গোপন বাসায় নিয়ে যেতে কিন্তু একটু আগে পাওয়া একটা কলের কারণে তার সবটা এলোমেলো হয়ে গেছে।
যে অজ্ঞাত মানুষটার কথাতে সে সাজুকে খুন করতে চায় সেই লোকটা কল করেছিল। রাব্বি রিসিভ করে বলেছিল,
– মেয়েটা আমার হাতে এসে গেছে।
– লোকটা বললো, যেভাবেই হোক আজকের মধ্যে সাজুকে খুন করতে হবে। তুমি সাজুর সঙ্গে কথা বলে তাকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করো।
– এতো তাড়াহুড়ো কেন?
– আব্দুল কাদের মরেনি এখনো। তাকে খুলনা মেডিকেল ভর্তি করা হয়েছে, আর সে যদি এখন বেঁচে থাকে তাহলে অনেক বিপদ। তার মাধ্যমে সাজু এবং পুলিশ প্রশাসন তোমাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবে। তুমি তখন বিপদে পড়বে তাই আমি চাই না তোমার বিপদ হোক।
– আপনি কি সত্যিই আমার বিপদের কথা ভাবেন নাকি আপনার নিজের বিপদের কথা?
– মানে?
– মানে সাজু বেঁচে থাকলে আমার চেয়ে আপনার বিপদ বেশি হবে তাই না? কিন্তু আমার কথা হচ্ছে আপনি আমার লোককে কেন খুন করার চেষ্টা করছেন?
– তুমি বুঝতে পারছো না রাব্বি, আব্দুল কাদের বেঁচে থাকলে সবাই ফেঁসে যাবো।
– সেটা নাহয় আমি বুঝতাম। কিন্তু তাই বলে আপনি কেন আমার লোককে মারবেন? তাকে মারতে হলে আমি ব্যবস্থা করতাম, যেমনটা করেছিলাম ওই মেয়েটাকে আনার সময় বাগান বাড়ির মধ্যে। নিজের সেই সহচরকে খুন করতে হয়েছে কারণ তাকে বিপদ মনে হয়েছিল।
– এটাও একটা বিপদ, শোনো তুমি দ্রুত সাজুকে শেষ করার ব্যবস্থা করো। তারপর তোমার বাকি টাকা আমি তোমাকে দিয়ে দেবো।
– আব্দুল কাদেরকে আমার চাই।
– ওই সাজু যদি রক্তের ব্যবস্থা না করতো তাহলে এতক্ষণে রক্তের অভাবে মনে হয় মৃত্যু হতো। শালার নিজের মরনের সময় ঘনিয়ে আসছে আর সে অন্যকে বাঁচানোর জন্য রক্ত সংগ্রহ করে।
– আব্দুল কাদেরের জন্য রক্তের ব্যবস্থা কে করে দিয়েছে?
– ওই সাজু হারাম…দা, ওর জন্য আমার সকল পরিকল্পনা নষ্ট হচ্ছে।
– একটা কথা বলি ভাই সাহেব?
– হুম বলো।
– সাজুকে মারার জন্য আপনার সঙ্গে আমার কত টাকা চুক্তি হয়েছে ?
– পাঁচ লাখ।
– আমি আপনার কাজটা করবো না, আপনার সঙ্গে আমার চুক্তি বাতিল করলাম।
– মানে কি রাব্বি? তুমি কিন্তু এমনটা করতে পারো না আমার সঙ্গে।
– আমি সবকিছুই করতে পারি। ভালো থাকবেন আপনি।
– আচ্ছা ঠিক আছে, একটু মাস্তান হলেই কিন্তু নিজেকে বুদ্ধিমান ভাবা ঠিক না। তোমাদের মতো পোলাপান আমরা তৈরী করি, আর সবসময় একটা করে ব্যাকআপ রাখি।
– মানে?
– মানে তুমি ছাড়াও আরো তিনজনের সঙ্গে আমার একই চুক্তি হয়েছে। তাদের সঙ্গেও সাজুকে খুন করার জন্য কন্ট্রাক্ট আমার। আমি কোনো রিস্ক নিতে চাই না। সাজু যেখানে আছে সেখানে তার সঙ্গেই আমার দ্বিতীয় ভাড়া করা লোক আছে। সাজুকে তোমার মারতে হবে না, মাহিশাকে মারার টাকা তুমি পেয়ে যাবে।
– মাহিশা? কিন্তু সেটা তো আরেকজনের সঙ্গে চুক্তি ছিল আমার।
– হাহাহা হাহাহা, বললাম তো তোমার মতো পোলাপান আমরা তৈরী করি। দুটো কাজই আমি করাচ্ছি তবে ভিন্ন ভাবে তোমার সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। যাইহোক, ভালো থেকো। আর আব্দুল কাদেরকে বাঁচানোর কথা ভুলে গিয়ে নিজের মতো থাকো।
কলটা কেটে গেল। রাব্বি কিছুক্ষণ ভেবে কিছু একটা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পকেট থেকে পুরনো একটি সিম বের করে সেটা মোবাইলে সেট করে নিল। তারপর ডায়াল করলো সাজুর নাম্বারে,
রিং হতেই রিসিভ করলো সাজু ভাই।
– হ্যালো কে বলছেন?
– সাজু সাহেব, আমি রাব্বি।
– সারপ্রাইজ?
– জ্বি অনেকটাই। আপনার রামিশাকে আমি চাইলে এতক্ষণে না ফেরার দেশে পাঠিয়ে দিতে পারতাম। কিন্তু আমি কারো কাছে কখনো ঋণী হয়ে থাকতে চাই না। যে আমার উপকার করে আমি তার উপকার করে সেটা শোধ করে দেই।
– মানে?
– আব্দুল কাদেরকে রক্ত সংগ্রহ করে দিয়ে তার জীবন বাঁচানোর সাহায্য করেছেন। আমিও তাই আপনার রামিশার রক্তটা আর ঝড়ালাম না। রক্তের বদলে রক্ত দিয়ে পরিশোধ।
– রামিশা এখন কোথায়?
– সে একটা অপরিচিত ছেলের হেফাজতে আছে, ছেলেটা সম্ভবত খুব ভালো। অজ্ঞান রামিশাকে নিজ দায়িত্ব নিয়ে ঢাকায় নিয়ে গেছে।
– আমি আপনাকে ছাড়বো না।
– আমি আপনাকে ছেড়ে দিচ্ছি কিন্তু যে আমার সঙ্গে চুক্তি করেছে সে ছাড়বে না। আপনার কাছে মানে আশেপাশে তার লোক আছে। যেকোনো সময় আক্রমণ করতে পারে, সাবধানে থাকবেন।
★★★
ফেরির দ্বিতীয় তলায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সাজুর দিকে নজর দিচ্ছে একটা লোক। তার কাছে মাত্র দুই মিনিট আগে মেসেজ এসেছে সাজুকে মেরে দিতে হবে। যেকোন সময়, যেকোনো মুহূর্তে।
সাজু ভাই দাঁড়িয়ে আছে ফেরির সামনের দিকে একটা উঁচু স্থানে। পুতুল দাঁড়িয়ে আছে নিচে, তার হাতে ঝালমুড়ি। হঠাৎ করে একটা সাজুর ছোট্ট একটা চিৎকার শুনতে পেলো পুতুল। মুখ তুলে তাকিয়ে দেখে রক্তাক্ত অবস্থায় বসে পড়েছে সাজু ভাই।
সাইলেন্সার লাগানো পিস্তলটা কোমড়ে গুঁজেই দোতলা থেকে দ্রুত নিচে নেমে গেল খুনি। কেউ বুঝতে পারলো।
চলবে…