#আজও_তোমার_অপেক্ষায়
#পর্ব:০৩
#shahriar_shoaib_ss

তারপর ঘরোয়া ভাবেই বিয়ে টা সম্পন্ন হলো। আজকের রাত টা সবার জন্য অনেক স্পেশাল হলেও আমার জন্য না। আম্মু আমাকে রুমে দিয়ে গেল। দেখি রিতু বসে আছে বিছানায়। খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে রুম টা। আমি কাছে গেলাম,
আমি: আম্মু কে সব বলা কী খুব দরকার ছিল। তোর টাকার দরকার আমাকে বলতি তাহলেই হতো।
রিতু: এভাবে কেন বলতিছ।
আমি: এভাবে বলব না তো কি আদর করে বলব। এখান থেকে শর। আমি ঘুমাব।
রিতু কিছু না বলেই সোফায় চলে গেল।
ভোর বেলা মনে হলো কেও ডাকতেছে,
রিতু: এই উঠো। নামাজ পড়তে যাও।
আমি উঠেই রিতু কে একটা থাপ্পড় দিলাম।
আমি: আমি উঠব, নাকি কি করব আমার বিষয়। তুই কে রে।
রিতু কাদঁতেছে। তারপর কী মনে করে উঠে নামাজ পরে নিলাম। না হলে আবার আম্মুর কাছে মারার কথা বল্লে আমি শেষ।
সকালে কলেজে যাওয়ার জন্য বের হচ্ছি,
আম্মু: কি রে, কই যাশ।
আমি: কলেজে।
আম্মু: নতুন বউ রেখে কলেজ মানে। আজকে যাওয়ার দরকার নাই।
আমি: আম্মু একটু পরেই চলে আসব।
এই কথা বলেই বের হয়ে গেলাম গাড়ি নিয়ে। কলেজে গিয়ে দেখি নুহা দাড়ায় আছে গেটের একটু সাইডে,
নুহা: বউ পেয়ে সব ভুলে গেছ, তাই না। আমি আবার কে তোমার।
আমি: বেবি আজকে তোমাকে নিয়ে সারাদিন ঘুরব, চল।
তারপর কলেজ থেকে নুহাকে নিয়ে সারাদিন অনেক জাগায় ঘুরলাম। রাতে ক্লাব থেকে বের হতেই দেখি আব্বু দাড়ায় আছে,
আব্বু: তোকে কি আমি এগুলা করার জন্য টাকা দেই। কে এই মেয়ে। ঘরে বউ রেখে……
এই কথা বলেই অনেক গুলা থাপ্পড় দিল আব্বু।
আব্বু: বাসায় চল আজকে। তোর মতো নোংরা ছেলের দরকার নাই আমার।
আব্বুর সাথে বাসায় গেলাম। অনেক নেশা করায় হাটতেও পারতিছি না। রিতু রুমে নিয়ে গেল আমাকে।
আমি: রিতু তুই না অনেক সুন্দর রে। একটু এদিকে আসবি।[নেশার ঘোরে]
রিতু কাছে আসতেই রিতু কে বুকে জড়িয়ে নিলাম। তারপর সারা রাত রিতুর সাথে কাটানোর পর সকালে রিতু গোসল করে বের হইছে নামাজ এর জন্য। আমাকেও ডাকতেছে,
রিতু: এই উঠো। গোসল করে নামাজ পড় তাড়াতাড়ি। নামাজ এর সময় শেষ হয়ে আসতেছে।
আমি: রিতু মাফ করে দিও কালকে রাতের জন্য। আমি ইচ্ছা করে করি নি কিছু।
রিতু: মাফ চাওয়ার কি আছে। তুমি তো আমার স্বামী। যার জন্য আমার সব কিছু।
এই কথা বলতেই রিতু কে আরো জোড়ে থাপ্পড় দিলাম একটা।
আমি: স্বামী মানে। আমি তোর কেও না। অধিকার দেখাতে আসবি না।
রিতু অনেক কাদঁতেছে দেখলাম। কাদুঁক তো আমার কি। আমি ঘুমায় পড়লাম আবার।
সকালে ঘুম থেকে উঠলাম অনেক দেরি করে। রিতুর গালে থাপ্পড় এর দাগ হয়ে গেছে।
রিতু বল্লো আব্বু ডাকতেছে। গেলাম আব্বুর কাছে,
আব্বু: তোর আর পড়া লেখার দরকার নাই। আমার দুবাই এর প্রজেক্ট টা তুই দেখবি। আর তিন দিন বাদেই তোর ফ্লাইট।
আমি: হুম।
আব্বু: এই তিন দিন বাড়ির বাইরে যাওয়া নিষেধ তোর। বৌমা যেটা বলবে ওটাই শুনবি। এটা মনে রাখিশ, তোর আম্মুর কথায় বাসায় রাখছি এখনো তোকে।
আমি: হুম।
ভয় শুধু একটা মানুষ কেই পাই আর সেটা হলো আব্বু। তারপর নাস্তা করে রুমে আসলাম।
রিতু: বাবা কি বলছে, শুনছ। মারার কথা কিন্তু বলি নি এখনো।
আমি: জ্বী বলেন, এখন কী করতে হবে।
রিতু: এই তিন দিন নিয়মিত নামাজ পড়তে হবে। আমার সাথে ভালো মতো কথা বলতে হবে। রুমে না হলেও আব্বু আম্মুর সামনে।
আমি: আর কিছু।
রিতু: না।

[তিন দিন পর]
আজকে রাত দশ টার ফ্লাইট। এই তিন দিন মোটামুটি নামাজ পড়ার একটা অভ্যাস হইছে। নুহা কে অনেক বার ফোন করেও পাই নি, যানি না আব্বু কিছু বলছিল কিনা। মনে হচ্ছে কখন যে মুক্তি পাব এই মেয়ের কাছ থেকে। সন্ধ্যায় বের হয়ে গেলাম বাসা থেকে আব্বুর সাথে। আম্মুর সাথে ভালো ভাবে কথা বল্লেও রিতুর সাথে আর কথা বলিনি। মনে হলো রিতু কাদঁতেছে।

এয়ারপোর্ট এসে আব্বু সব ঠিক করে দিল। আমি একাই না, আরো দুইজন যাবে আমার সাথে। আব্বু অনেক কিছু বুঝালো আমাকে।
যাওয়ার সময় হয়ে গেছে প্রায়।
আব্বুর কাছে বিদায় নিয়ে ভিতরে চলে গেলাম।
ঠিক দশ টায় প্লেন ছাড়ল। এখন মনে হচ্ছে, কিছু টা মুক্ত আমি।
পাঁচ ঘন্টা সময় লাগল পৌছাতে। দুবাই এয়ারপোর্ট থেকে বের হতেই আব্বুর লোকজন এসে নিয়ে গেল প্রজেক্ট এর ওখানে। ওখানেই থাকার ব‍্যবস্থা আছে।
আব্বুর সাথে অনেক দেখছি এগুলা। যাইহোক কাজ সম্পর্কে ধারণা থাকার কারণে কাজ কন্টিনিও করতে বেশি সময় লাগল না।

দেখতে দেখতে প্রায় পাঁচ মাস হয়ে গেল। আব্বু আম্মুর সাথে মাঝে মাঝেই কথা হয়। রিতুর কাছে ফোন দিলেও অল্প কথা বলি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ই পরি এখন। কিন্তু কেন যেন রিতুর কথা অনেক বেশি মনে পড়ে। মাঝে মাঝে মনে হয় রিতুর কাছে যেয়ে মাফ চেয়ে নেই। নুহার সাথে কাটানো দিন গুলো যে অপরাধ ছিল তা এখন খুব ভালো করেই বুঝি। রাতে শুয়ে শুয়ে এগুলো ভাবতেছি। এর মধ্যে ফোন টা বেজে উঠল। দেখি আম্মু ফোন দিছে,
আমি: আসসালামুয়ালাইকুম আম্মু।
আম্মু: ওয়ালাইকুমআসসালাম। আব্বু কেমন আছো।
আমি: আলহামদুলিল্লাহ্ আম্মু। তুমি কেমন আছো।
আম্মু: আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো। আব্বু তোর জন্য একটা খুশির খবর আছে।
আমি: কী আম্মু
আম্মু: তোর বাবু হবে।
তারপর কিছুক্ষণ চুপ হয়ে গেলাম। ওদিকে আম্মু কাদঁতেছে এদিকে আমি। যানি না, রিতু কে কতটা কষ্ট দিছি। মাফ চাওয়ার যোগ্যও আমি না। আম্মুর সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে ফোন রেখে দিলাম।
মধ্যে রাতে আল্লাহর দরবারে, আমার করা পাপ গুলোর ক্ষমা চাইলাম। আর রিতুর জন্য ও অনেক দোয়া করলাম। ভাবলাম হয়তো সময় হইছে রিতুর কাছে ক্ষমা চাওয়ার এভাবে আর
কয় দিন। কাজের চাপ থাকার কারণে আর দেশে যাওয়া হচ্ছে না। আব্বু বলছিল কাজ ছেড়ে চলে আসতে কিন্তু ভবিষ্যতে সব কিছু তো আমাকেই দেখতে হবে। যে কারণে আর দেশে আসা হলো না।
#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here