#আজও_তোমার_অপেক্ষায়
#পর্ব:০২
#shahriar_shoaib_ss

সকালে আম্মুর ডাকে ঘুম থেকে উঠলাম। কলেজের সময় হয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি নাস্তা খেয়ে কলেজের উদ্দেশে রওনা হলাম। আমাকে নামায় দিয়ে, ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে চলে গেল। কলেজে ঢুকে দেখি একটু দূরেই নুহা আর ওর বান্ধবীরা রিতু কে, কী যেন বলতেছে। দেরি না করে ওদের ওখানে গেলাম,
আমি: রিতু কী হইছে।
রিতু কিছু একটা বলতে গিয়ে থেমে গেল।
নুহা: হাই বেবি। কেমন আছো। কিছু হয়নি চল ক্লাসে যাই।
নুহা একপ্রকার জোড় করেই নিয়ে গেল আমাকে। ক্লাসে আর মন বসল না। রিতুর জন্য কেমন যেন লাগতেছে। ভাবলাম ক্লাস শেষে কথা বলে সব ঠিক করে নিব। এদিকে নুহা অনেক্ষণ হলো জালাচ্ছে।
অনেক অপেক্ষার পর ক্লাস শেষ হলো। ক্লাস শেষ হলে, অন্য দিন রিতু দেখা করে যায়, আজকে আর তার দেখা পাওয়া গেল না। আমি সোজা বাসায় চলে আসলাম। দুপুরে খেয়ে রিতুর কাছে ফোন দিলাম। একবার রিং হতেই ফোন রিসিভ করল,
আমি: হাই রিতু। কি কর।
রিতু: আসসালামুয়ালাইকুম।
আমি: ওয়ালাইকুমআসসালাম।
রিতু: শুয়ে আছি। তুমি।
আমি: আমিও। আচ্ছা আজকে নুহা কি বল্লো তোমাকে। তুমি মাথা নিচু করে কেন দাড়ায় ছিলা।
রিতু: না। কই কিছু বলে নি তো।
আমি: দেখলাম কি যেন বলতেছে। আচ্ছা বল্লে সমস্যা টা কী।
রিতু: এতো রেগে যাচ্ছ কেন। বাদ দাও না।
আমি: ওকে বাই
রিতু: খাইছ দুপুরে।
আমি: হুম, তুমি
রিতু: হুম।
আমি: আচ্ছা পরে কথা হবে। বাই
রিতু: হুম। আর নামাজ কিন্তু ঠিক মতো পড়বা। আল্লাহ্ হাফেয।
ফোন টা কেটে দিলাম আমি। মনে হলো রিতু আরো কথা বলতে চাচ্ছে। কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে, ওর সাথে কথা বলে তেমন কোনো কাজ নাই।
ঘুমানোর চেষ্টা করতেছি একটু।
কিছুক্ষণ পর আবার নুহা ফোন দিছে। প্রতিদিন জালায় এই সময় টা তে। ফোন রিসিভ করলাম,
নুহা: বেবি কি কর।
আমি: ঘুমানোর চেষ্টা করতেছি।
নুহা: আমি আসব। তোমাকে ঘুম পাড়ায় দিতে।
আমি: না। তার কী দরকার। আমিই পাড়ব।
নুহা: বিকেলে একটু দেখা করতে পাড়বা। প্লিজ বেবি, আর কখনো বলব না। শুধু আজকেই।
আমি: আচ্ছা। শুধু আজকেই কিন্তু, আর কখনো না।
নুহা: ওকে, বেবি।
নুহা ঠিকানা বলে দিল। তারপর বিকেলে গাড়ি নিয়ে বের হলাম, নুহার দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী। পৌঁছাতে বেশিক্ষণ সময় লাগল না। দেখি নুহা দাঁড়িয়ে আছে। গাড়ি টা সাইড করে ওর কাছে যেতেই নুহা জড়িয়ে ধরল। শুরু তে খারাপ লাগলেও এখন কিছুটা ভালো লাগতেছে।
নুহা: বেবি আমি যেখানে নিয়ে যেতে বলব। ওখানে যাবা, ওকে। শুধু আজকেই আর কখনো বলব না প্লিজ। আমি: ওকে ডিয়ার।

তারপর গাড়ি তে উঠলাম দুইজন।
নুহা: বেবি তুমি রিতুর সাথে কেন এতো কথা বল। রিতুর সাথে কি তোমার যায় বল।
আমি: হুম। কিন্তু ও অনেক ভালো মেয়ে।
নুহা: ও তোমার টাকা দেখে তোমার কাছে আসতে চায়। তুমি এটা বুঝতেই চাও না।
এর মধ্যে নুহা যেদিকে যেতে বল্লো ওদিকেই গেলাম। একটা ক্লাব এর সামনে আসলাম মনে হচ্ছে।
আমি: নুহা, এটা তো ক্লাব এখানে কেন আনলা।
নুহা: বেবি, শুধু আজকেই তো আর কখনো না। প্লিজ বেবি।
আমি: হুম।

তারপর থেকেই শুরু হলো প্রতিদিন ক্লাবে যাওয়া। নুহা কে ছাড়া সব কেমন যেন লাগে। প্রতিদিন রাত ছাড়া বাসায় আসি না। আগে আব্বুর কাছ থেকে যেখানে এক হাজার টাকা নিতাম এখন নেই দশ হাজার টাকা। মাঝে মাঝে ক্লাস না করে, নুহা কে নিয়ে ক্লাবে যাই।
এভাবেই অনেক দিন পার হয়ে গেল। পরীক্ষার রজাল্ট ও খারাপ হইছে।
রিতু কী ভাবে যেন সব যেনে যায়। আর আম্মু কে বলে দেয়। একদিন রাতে বাসায় আসার পর,
আম্মু: কই ছিলি এতক্ষণ।
আমি: আমি ক্লাবে যাইনি আম্মু আমি গাড়ির নিচে ছিলাম। [নেশার ঘোরে কি যে বলতেছি নিজেও যানি না]
আম্মু অনেক জোরে দুইটা থাপ্পড় দিল। যে কারণে নেশা কিছু টা হলেও কেটে গেছে।
আম্মু: কালকে তোর বিয়ে। তোর আব্বুর সাথে কথা হইছে। এখান রুমে যা।
রুমে চলে আসলাম। মাথা টা ঝিম ধরে আছে। শুয়ে পড়তেই ঘুমায় গেলাম।
পরের দিন সকালে কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি। আম্মু আসল আমার রুমে,
আম্মু: কই যাশ।
আমি: কলেজে।
আম্মু: আজকে কলেজে যাবি না। আজকে তোর বিয়ে। আমি: আম্মু তুমি কি পাগল হইছো। এতো তাড়াতাড়ি কেও বিয়ে করে। আমি যানি তুমি মজা করতেছ।
আম্মু: আমার কথা কি তোর মজা মনে হচ্ছে। না, তোর আব্বু কে ডাক দিব।
আমি: এটা কোন কথা আম্মু। আমি বিয়ে করতে পারব না।
আম্মু: বিয়ের কর না হয় আমার মরা মুখ দেখবি।
এটা বলে আম্মু চলে গেল। আমি সাথে সাথে নুহার কাছে ফোন দিলাম,
আমি: হেলো নুহা।
নুহা: হুম বেবি। গুড মরনিং।
আমি: নুহা আম্মু আমাকে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে, আজকেই। নুহা: তো বিয়ে কর বেবি। বিয়ে হলেই কি আমাদের সব শেষ নাকি। বিয়ে করে একা বাসা নিবা তারপর আমরা আরো মজা করব। বুঝ না কেন।
আমি: হুম।
ফোন টা কেটে দিলাম। নুহার কথায় কিছু টা খারাপ লাগলেও। সব টা মেনে নিলাম। হয়ত তাই হবে। তারপর আম্মুর রুমে গেলাম,
আমি: আম্মু, বিয়ে করব আমি।
আম্মু: আমি জানি তো। তুই আমার কথা ফেলবি না। রিতু আমাকে সব বলছে।
[রিতুর উপর অনেক রাগ হচ্ছে খুব]
আমি: আম্মু এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে টা কি ঠিক হচ্ছে।
আম্মু: আবার এক কথা। তোর বউ কে জানিস।
আমি: ওহ আচ্ছা, কে ।
আম্মু: রিতু তোর হবু বউ।ও অনেক ভালো মেয়ে বুঝলি।
আমি: আম্মু কী বলতেছ এটা। ওদের সাথে কী আমাদের যায় বলো।
আম্মু: ও অনেক ভালো মেয়ে। তোর যা লাগবে আমি দিব। তুই ওকে কখনো কষ্ট দিস না। তোর যে অবস্থা কেও তোকে বিয়ে করবে না। তাও মেয়ে টা রাজি হইছে। মেয়ে টা তোকে অনেক ভালোবাসে।
আমি: আচ্ছা আম্মু।
তারপর ঘরোয়া ভাবেই বিয়ে সম্পন্ন হলো। আজকের রাত টা সবার জন্য অনেক স্পেশাল হলেও আমার জন্য না। আম্মু আমাকে রুমে দিয়ে গেল। দেখি রিতু বসে আছে বিছানায়। খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে রুম টা।
#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here