#আজও_তোমার_অপেক্ষায়
#পর্ব:০১
#shahriar_shoaib_ss
বড় আপুর বিয়ে আজকে। বাড়িতে অনেক মেহমান আসছে। খুশির একটা আমেজ চলতেছে কিন্তু আমার মন ভালো না, কারণ খুব কাছের বলতে আপুই ছিল একজন, সেও আজকে চলে যাবে। আব্বু আম্মু কে তো আর সব বলা যায় না।
সকাল থেকে রুমেই আছি, বের হইনি এখনো। হঠাৎ মনে হলো কেও আসছে,
রিতু: হাই। কেমন আছো অন্তর।
আমি: হুম ভালো। তুমি।
রিতু: আমিও ভালো। রুমে কি কর, কখন থেকে খুজতেছি তোমাকে। পরে আন্টি বল্লো রুমে দেখতে।
আমি: হু
রিতু: সকাল থেকে খাইছ কিছু।
আমি: না। খাওয়ার ইচ্ছা নাই।
রিতু: আচ্ছা, আমি খাবার আনতেছি।
এটা বলে রিতু চলে গেল।
এখন পরিচয় টা দেই, আমি অন্তর বড়লোক বাপের ছেলে। এবার ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষে উঠছি। আজকে যার বিয়ে হচ্ছে ও আমার বড় বোন। আর এখন যার সাথে কথা হলো, ও আম্মুর বান্ধবীর মেয়ে রিতু, আমার ক্লাসমেট ও। মেয়ে টা অনেক ভদ্র, মাঝে মধ্যে আম্মু কে কাজে অনেক সাহায্যেও করে।
এর মধ্যে রিতু খাবার নিয়ে আসছে,
রিতু: এই নাও।
আমি: খেতে মন চাচ্ছে না। কেন আনলা এগুলা।
রিতু: বেশি কথা বলে, খেয়ে নাও তো।
রিতু চলে গেল।
আমি খেয়ে, রেডি হয়ে নিচে গেলাম, দশটা বেজে গেছে। বর আসতে নাকি দেরি হবে।
অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর দুই টার দিকে বর আসল। সবাই বর দেখা নিয়ে ব্যস্ত। যাইহোক বিয়ের কার্যক্রম শেষ হলো সন্ধ্যার দিকে। আপু কে বিদায় দিয়ে রুমে চলে আসলাম। অনেক কাদঁছি আজকে। চোখ দুটোও ভারি হয়ে আছে। ফোন টা বের করে দেখি, নুহা ফোন দিয়েছিল, ছয় টা কল উঠে আছে। নুহা আমার ক্লাসমেট। ও আমাকে ভালোবাসে কিন্তু আমি না, কারণ বড়লোক বাপের মেয়ে, ড্রেস যে টুকু পড়ে তাও ছেড়া। তবুও কথা বলি কারণ দুইজন ই টাকা ওয়ালা বাপের ছেলে মেয়ে।
কল দিলাম নুহাকে,
আমি: হাই। নুহা কি কর।
নুহা: রিতু কে পেয়ে সব ভুলে গেছ তাই না। ও একটা ডায়নি।
আমি: না, ভুলি নি। আর ভুলে গেলেই বা কী। ও তো ভালো মেয়ে।
নুহা: হুম জানি তো অনেক ভালো মেয়ে ও। ফোন ধরনি কেন।
আমি: ব্যস্ত ছিলাম। আপুর বিয়ে হলো যানই তো।
নুহা: হুম। প্লিজ অন্তর একবার সুযোগ দাও। সত্যি বলতেছি অনেক ভালোবাসবো তোমাকে।
আমি: আচ্ছা নুহা। কালকে কথা হবে। বাই
এটা বলে ফোন কেটে দিলাম। এই মেয়ে সবসময় জালায়। কতবার যে অপমান করছি, লজ্জা নাই বল্লেই চলে। কথা বলতে বলতে কখন যে বারান্দায় চলে গেছি, খেয়াল ই করি নি। বারান্দা থেকে এসে দেখি রিতু আসছে ,
রিতু: অন্তর যাই।
আমি: আজকে থাক। কালকে কলেজ থেকে আমি দিয়ে আসব নি।
রিতু: না থাক। বাসায় একটু কাজ আছে।
আমি: হুম
রিতু: ওহ আচ্ছা। মাগরিব এর নামাজ পড়ছিলা।
আমি: না। তুমি তো দেখলাই কাদঁছিলাম অনেক। তাই পড়তে পারি নি।
রিতু: আর কত বাহানা বানাবা। এশার নামাজের সময় হয়ে গেছে, এশা আর মাগরিব একসাথে পড়বা। ঠিক আছে।
আমি: হুম।
রিতু: আল্লাহ্ হাফেয।
আমি: আল্লাহ্ হাফেয।
রিতু চলে গেল। মেয়ে টা অনেক ভদ্র। আম্মু ওকে অনেক পছন্দ করে। এখানে আসলে আমার অনেক খেয়াল রাখে। কিন্তু ওরা এতো বেশি সচ্ছল না। ওর আব্বুও অল্প বেতনের চাকরি করে। যে কারণে বেশি গুরুত্ব দেই না রিতু কে।
রাতে আপুর কথা অনেক মনে পড়ছিল। এখন কোনো সমস্যা হলে কার কাছে বলব। আপু তো তার সংসার নিয়েই ব্যস্ত থাকবে। এগুলা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম।
সকালে আম্মুর ডাকে ঘুম ভাঙ্গল। কলেজের সময় হয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি নাস্তা খেয়ে কলেজের উদ্দেশে রওনা হলাম। আমাকে নামায় দিয়ে, ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে চলে গেল। কলেজে ঢুকে দেখি একটু দূরেই নুহা আর ওর বান্ধবীরা রিতু কে কী যেন বলতেছে।
#চলবে