“অভিশপ্ত ডায়েরী”
#পর্ব_৯_ও_শেষ_পার্ট

প্রিস্ট আব্বুকে বলল,“ফ্রেড, আমি জানি তুমি তোমার স্ত্রী এনাকে খুব ভালোবাসো।”কিন্তু হাসপাতালে এখন যে আছে সে এনা নয়।এখন যে আছে সে একটি ডাইনি যে শুধু তোমার আর আমার প্রাণ নিয়ে শান্ত হবে না সে তোমার মেয়ের এবং অনেক নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিবে।সে অনেক নিরীহ মানুষের প্রাণ নিয়েছে এবং আরও নিবে।সে এখন তোমার মেয়েকে মেরে ফেলতে চাইছে।তোমার মেয়ের জীবন এখন সংকটে।তুমি যদি আমার কথা না মানো তাহলে এনার আত্মা শয়তানের অধীনে থাকবে সে নরকে যাবে।তুমি কি এটাই চাও।তুমি যদি এনাকে আসলেই ভালবাসো তাকে এই নরক থেকে মুক্ত কর।”আমি চিৎকার করে উঠলাম,“না,আমার আম্মুকে আমি কোথাও যেতে দিব না।আব্বু,তুমি তাদের কথা মানবে না।”আমি কান্না করতে করতে বাহিরে চলে গেলাম। প্রিস্ট বলল,“যাও ফ্রেড,ইমিলিয়াকে সান্ত্বনা দাও।”আব্বু আমাকে বলল,“তুমি কি চাও যে তোমার আম্মু আজীবন সেই শয়তানের অধীনে থাকুক?আমরা যখন মারা যাব,তখন তোমার আম্মু যদি প্রশ্ন করে, আমরা কেন তাকে সেই শয়তানের নিকট ছেড়ে দিলাম?তখন আমরা তাকে কি উত্তর দেব?তাই তাকে মুক্ত করে দেয়া তোমার আর আমার কর্তব্য।”আমি আব্বুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলাম।
আমরা আম্মুকে অজ্ঞান করে বেসমেন্টে নিয়ে গেলাম।আব্বু প্রিস্টকে বলল,“আমি চাই এনার মৃত্যু কম কষ্টদায়ক হোক।এই ইনজেকশন দ্বারা এনা ঘুমন্ত অবস্থায় মারা যাবে।”প্রিস্ট বলল,“যা করতে হবে জলদি করতে হবে।আমি এই মন্ত্র দ্বারা শুধু মাত্র ১৫ মিনিট মিয়ার আত্মাকে এই বেসমেন্টে প্রবেশ করা থেকে বিরত রাখতে পারব।”আব্বু আর আমি শেষ বারের মত আম্মুকে চুমু দিলাম।আমি বললাম,“আমি তোমাকে ভীষন ভালবাসি,আম্মু।”আমি কান্নায় ভেঙে পড়লাম।আব্বু আম্মুকে বলল,আই লাভ ইউ,হানি।প্লীজ ফরগিভ মি।”আব্বু আম্মুকে ইনজেকশন দিয়ে দিল।আব্বুর চোঁখ বেয়ে পানি আম্মুর চোখে পড়ল।কিছুক্ষণ পর বেসমেন্টে খুবই জোরে বাতাস শুরু হল যেন ঘূির্ণঝড় হচ্ছে।প্রিস্ট বলল,“প্রার্থনা করতে থাকো। মিয়ার আত্মা করছে এসব,সে চায়না এনার দেহ থেকে কর্তৃত্ব হারাতে।”অন্যাদিকে আম্মুও দ্রুত নিশ্বাস ত্যাগ করতে থাকে।আব্বু আম্মুর হাত শক্ত করে ধরে রাখে।প্রায় ১০ মিনিট ঝড়ো বাতাসের তান্ডবের পর সব কিছু থেমে যায়।আম্মুর পাশে আমি যেয়ে দেখি সে পরপারে চলে গেছেন।
প্রায় ২ মাস পরের কথা আজ আমি আমার আন্টি লুনার সাথে নিউইয়র্ক যাচ্ছি।যাওয়ার আগে আমি বাসাটিকে ভালমত দেখছি।দেখছি এই সেই বাসায় যেখানে আমি আমার আম্মু,আব্বু দুজনকেই হারিয়েছি।হ্যাঁ,আমার আব্বুকেও।আম্মু মারা যাওয়ার কিছু দিন পর আমার আব্বু আত্মহত্যা করে।সে আম্মুর শুধু ইহলৌকিক নয় পরলৌকিক সাথী হতে তার নিকট চলে যায়।
আম্মু আব্বুর ছবি দেখতে গিয়ে এই বাসায় আমাদের কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত মনে পড়ে গেল।চোখের দুই ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে ছবিটার উপর পড়ে গেল।আমি ফ্রেমের উপর পানি মুছছিলাম ঠিক তখন আন্টি আমাকে ডাক দিল, “কাম কুইক,হানি।উই আর গেটিং লেট।”আমি চোঁখের পানি মুছতে মুছতে বললাম,“আসছি আন্টি”।

(সমাপ্ত)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here