#The_murderous_mafia
#লেখকঃরবিউল_হাসান।
#পর্বঃ২২(শেষ)

আরো পাঁচ মিনিট গাড়ি চলার পর আমার শরীরটা কেমন যেন অবশ হয়ে আসছে। একটু পর পর মাথাটা ঘুরতেছে…..

যতই সামনের দিকে যাচ্ছি ততই আমার শরীরে ক্লান্তি চলে আসতেছে। হঠাৎ আমাদের গাড়ির উপর কিছু একটা পড়ে গাড়ি থেমে গেল।আমার মাথা কেমন যেন অনেক ব্যাথা উঠে গেল। আমি মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লাম।মাহমুদ গাড়ির দরজা খুলতেই দেখে পিকাসো সামনে দাঁড়িয়ে আছে।

মাহমুদ ভয় পেয়ে গেল। গাড়িটা বুলেট প্রুফ ছিল কারণ পিকাসো নিজের থেকে গুলি করতে পারে তাই এই ব্যবস্থা নেওয়া হল।মাহমুদ দরজা বন্ধ করতে না করতেই পিকাসো শুট করা শুরু করলো। আমার বুঝতে বাকি নেই অবস্থা খুবই খারাপ হতে চলেছে এখন পিকাসোর সামনে গেলেই বুলেটের আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে।

কিন্তু পিকাসোর সামনে না গেলে আরো বেশি বিপদ বাংলা। হয়তো এই শহরের সবাইকে মেরে দিবে। অবস্থা খুবই ভয়ানক তাই আমি মাহমুদ এবং রাশেদের হাতে হাত রেখে বললাম আমার আপুর খেয়াল রাখতে আর দলকে ঠিক ভাবে পরিচালনা করতে। হয়তো আমার অনেক কিছু হয়ে যেতে পারে পিকাসোর সামনে গেলে। এমন কি মৃত্যুও হতে পারে।

তাঁরা আমাকে কথা দিলে টিমকে কখনো ভুল ভাবে পরিচালনা করবে না।আর আপুর দায়িত্ব ওরা দুজনেই নিবে। আমি আবারো তাদের বললাম নিজেদের দিকে খেয়াল রাখতে।আর দেশে মাফয়া অনেক বেড়ে গেছে হয়তো বাংলাদেশ আরও অনেক মাফিয়া লুকিয়ে আছে এগুলোকে ধ্বংস করতে হবে। আর সব পাচার নারী পাচার থেকে দেশের সম্পদ পাচার থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। মাহমুদা রাশেদ আমাকে কথা দিলে তার আবার সব কথা পালন করবে।

পিকাসো আমাদের পেছনেই আছে, তাই আমি গাড়ির সামনের গ্লাচ ভেঙে ফেললাম।বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পড়ে গাড়ির সামনের গ্লাচ ভেঙে বের হলাম।পিকাসো পেছনে আছে।আমি আস্তে ধীরে এক পা দু’পা করে পিকাসোর কাছে যাচ্ছি। হঠাৎ পিকাসো আমার দিকে তাকাতে আমি অজ্ঞান হয়ে গেলাম।মাটিতে পড়ে গেলাম।

রাশেদ আমার মুখে পানি দিলে আমার জ্ঞান ফিরে আসে।জ্ঞান ফিরতে দেখি পিকাসো পড়ে আছে নিচে।আমি মাহমুদ কে জিজ্ঞেস করলাম পিকাসো পড়ে আছে কেন?

মাহমুদঃপিকাসো তোর চোখের দিলে তাকালে পিকাসোর মেমোরি লস হয়ে যায়।
আমিঃকিহ তাহলে এখন কী হবে?
মাহমুদঃ কিছু করার নেই।পিকাসো এখন তোর বলা কথা গুলো শুনবে রোবটের মতো কাজ করবে।এর বাইরে পিকাসোর নিজস্ব কিছু করার ক্ষমতা নেই।
আমিঃচেক করেছিস পিকাসোকে?
মাহমুদঃহ্যাঁ করেছি।পিকাসো এখন কোনো ক্ষতি করবে না।শুধু মনে রাখতে হবে যদি তোর সৃতি ফিরে আসে তাহলে পিকাসো নিজের থেকে আবারো সব কিছু করতে পারবে।আর না আসলে এমনই রয়ে যাবে।

আমিঃতাহলে পিকাসোকে আবার নতুন করে বানাতে হবে।
মাহমুদঃপাগল হলি নাকি এটা কোনো সাধারণ কিছু নয় পিকাসো যার পেছনে পড়ে ছিল পুরো বিশ্ব।একে নতুন করে তৈরি করা এত সোজা নয়।
আমিঃসেটা সময় বলে দিবে আগে চেষ্টা করতে হবে।
রাশেদঃঠিক পিকাসোর মতো আরেকটা তৈরি করতে কম করে হলেও ৫ বছর সময় লাগবে।কিন্তু পিকাসোকে নকল করতে এক মাসে হয়ে যাবে।

আমিঃদুইটায় করব আগে পিকাসোর নকল করব তারপর সেটাকে নতুন রুপে নতুন শক্তি তে সকলের সামনে আনব।আচ্ছা পিকাসো কেন সৃতি হারালো চেক করছিস?
মাহমুদঃতার একটাই মাত্র কারণ।সেটা হচ্ছে তোর মস্তিষ্কের সঙ্গে পিকাসোর মেমোরি মিলে করা।তুই যেমন এখন আগের মতো স্বাভাবিক কিছু সহজে করতে পারছিস না পিকাসোও তেমনি পারবে না।

আমিঃওকে তাহলে এখন পিকাসোকে নিয়ে বাংলাদেশে চল সেখানে তার বাকি কাজ করব।
মাহমুদঃতার আগে পিকাসোকে এখানে চালু করতে হবে নয়তো সমস্যা হতে পারে।তোর কি কি সিস্টেম বানানো ছিল এই পিকাসো তৈরির পেছনে তা তুই ভালো জানিস।

আমিঃওকে ঠিক কর তবে সাবধানে আবারো বিপদ হতে পারে।
মাহমুদঃওকে আমি সব ঠিক করে রাখছি শুধু একটি মাত্র কাজ বাকি,আর সেটা তোকে করতে হবে পিকাসোর কোড় দিয়ে তাঁকে এক্টিভ করতে হবে।জানিস কোড় কি?

আমিঃআমার তো মনে পড়ছে না কোড় কি।তবে আমি চেষ্টা করতে পারি।
মাহমুদঃসাবধানে তিন বার ভুল পাসওয়ার্ড দিলে পিকাসো নিজের থেকে এক্টিভ হয়ে যাবে আর সামনে যাকে পায় তাকেই মেরে দিবে।

আমিঃওকে দেখছি।
আমি পিকাসোর পেছনে থাকা বাটন গুলো ভালো করে দেখতে লাগলাম।অনেকক্ষণ দেখেও আমার কোড মনে পড়ছে না।মাহমুদ কে বললাম পিকাসোকে কম্পিউটার দিয়ে এখন এক্টিভ করা পসিবল কি না।কিন্তু সে সোজা বলে দিল যতক্ষণ আমার সৃতি ফিরে না আসে ততক্ষণ পিকাসোকে ভুল কিছু করা যাবে না।আর এই সময় পিকাসোকে কম্পিউটার দিয়ে কনট্রোল করাও যাবে না।

আমি পিকাসোর কাছে গেলাম চারপাশ ঘুরে দেখতে লগলাম।পিকাসোকে অচল অবস্থায় বাংলাদেশে নেওয়া যাবে না তাই ভেবে চিন্তে কিছু করতে হবে।আপুকে ফোন দিতে বললাম।রাশেদ আপুকে ফোন দিয়ে আমাকে ধরিয়ে দিল।

আপুঃহ্যাঁ রাশেদ বল তোরা পিকাসোর কন্ট্রোল নিতে পারলি তো?(ফোন রাশেদের ছিল তাই রাশেদের নাম বলল)
আমিঃআমি বলছি আপু।আসলে পিকাসোর কিছু ক্ষতি হয়েছে এখনো আমরা পিকাসোর কনট্রোল নিতে পারি নি।কারণ পিকাসো এখন অচল হয়ে গেছে।আচ্ছা আপু তুমি কি পিকাসোর কোড কি ছিল তা জান?

আপুঃনা আমি কেন পিকাসোর কোড জানব, পিকাসোর কোড় তো একমাত্র তুই জানিস।
আমিঃ হ্যাঁ আমি জানি। কিন্তু আমি বলতে চাচ্ছি যে আমি কোড় টা ভুলে গেছি। তো এখন কি কোড় কোথাও লিখে রাখছিলাম বা তোমাকে বলছিলাম কিনা এটা জানতে চাচ্ছি। খুব দরকার একটু মনে করে দেখ তো।

আপুঃ এসব মনে করতে হলে এখন বাংলাদেশে যেতে হবে দেখতে হবে। আরে ডায়েরি চেক করে দেখতে হবে।
আমিঃ তাহলে এক্ষুণি তুমি দেশে চলে যাও।
আপুঃনা তোকে রেখে আমি যাব না।
আমিঃপাগলামি কর না যা বলছি কর।

আপু যেতে না চাইলেও অনেক জোরাজোরিতে রাজী হয়ে গেল।থাইল্যান্ডের একজন নাম করা পাইলট এনে আপু আর নিশাতকে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে গেল।ততক্ষণে পিকাসোর আশে পাশে লোক জমা হতে শুরু করলো।অবস্থা খারাপ দেখে পিকাসোকে গাড়িতে তুলে আমাদের ভাড়া করা বাসায় নিয়ে আসলাম।

তারপর অপেক্ষা করতে লাগলাম আপু কখন বাসায় যাবে তার জন্য। এই সময়ের মধ্যে আমরা খাওয়া দাওয়াও সেরে নিলাম।তারপর অপেক্ষা করতে লাগলাম।দীর্ঘ অপেক্ষার পর আপু আর নিশাত বাংলাদেশে পৌঁছায়। সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে এক ঘন্টা যেতে হবে তার পর বাসা।

আপু পৌঁছে গিয়ে ডায়েরি খুঁজে আমাকে ফোন দিল। আমার পার্সোনাল ডাইরিতে অনেক গুলো কোড লেখা আছে।সেখানে কোন কোড টি পিকাসোর তা বোঝা যাচ্ছে না তাই আপুর ছবি তুলে আমার ফোনে সেন্ট করে দিল।

আমি ছবিগুলো দেখতেসি আর কোন কোড টি পিকাসোর হতে পারে তা চিন্তা করতেছি। অনেক সময় ধরে দেখার পরেও পিকাসোর আসল কোড টি বের করতে পারলাম না। তবে তিনটা কোড সিলেক্ট করলাম তার মধ্যে যেকোনো একটা হতে পারে। আমি পিকাসোর পিছনে থাকা স্ক্রিনে হাত দিলাম। আর তিনটা থেকে একটা কোড ডায়াল করলাম। কিন্তু সাথে সাথে বেধ গেল নতুন ঝামেলা।
পিকাসোর সিস্টেম পুরোটাই ভিন্ন। পিকাসোর কোড নিজে নিজে পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে যাকে বলা হয় সিজার সাইফার কোড।কেউ একবার সঠিক পাসওয়ার্ড কিংবা ভুল পাসওয়ার্ড দিলে সেই কোডটা পাল্টে তিনগুন পিছনে চলে যায়। যদি আসল কোড হয় RKOM90S, সিজার সাইফারের কারণে কোডটা পাল্টে হয়ে যাবে UNRP23V।

কেউ ভুল পাসওয়ার্ড কিংবা সঠিক পাসওয়ার্ড যেটাই দিক না কেন সঠিক পাসওয়ার্ড থেকে তিনগুণ পেছনে পাল্টে যাবে। যেটা আমাদের জন্য নতুন ধরনের একটা বিপদ। দীর্ঘ সময় আমরা তিনজন গবেষণা করার পরেই জানতে পারলাম আসল কোড কোনটা।কোডটা ডায়াল করার সাথে সাথে পিকাসো নিজের থেকে একটিভ হয়ে গেল।আমি পিকাসোর সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম তাই পিকাসো একটিভ হওয়ার সাথে সাথে আমাকে দেখতে পাই।সাথে সাথে পিকাসো আমাকে বলে ওঠে…..
—হ্যালো বস মিস্টার RK.
আমিঃহ্যালো পিকাসো।কেমন আছ তুমি?
—আমি ভালো আছি তুমি কেমন আছ?
আমিঃহুম ভালো।তুমি এত দিন পালিয়েছিলে কেন আমার কাছ থেকে?
—কেউ আমাকে দিয়ে বোমা বিস্ফুরণ করাতে চেয়েছিল তার লোকেশন বের করে তাঁকে মেরে ফেলেছি।এখন পুলিশ আমায় খুঁজছে তাই পালিয়েছি।
আমিঃকে বোমা বিস্ফুরণ করাতে চেয়েছিল তোমাকে দিয়ে?
—ভরতের এক জন র এজেন্ট যার নাম শিমুল চট্টোপাধ্যায়।
আমিঃকিহ সে তো নাম করা এক মাফিয়া ছিল।
—হ্যাঁ আমি তাঁকে এবং তার সব লোককে মেরে ফেলছি।এখন আমি ওদের কাছে অপরাধী।
আমিঃসেটা আমি বুঝে নিব।চলো বাংলাদেশে যায়।

যারা এখনো বুঝেন নি তাদের বলছি পিকাসো একটা রোবটের মতো যন্ত্র যেটা নিজে নিজে সব করতে পারে যে কোনো সিন্ধান্ত নিতে পারে মানুষের মতো।যাকে বানিয়েছি আমি।আমার সব টুকু দিয়ে পিকাসোকে এমন ভাবে তৈরি করেছি যে কোনো মানুষ পর্দার আড়ালে পিকাসোর সাথে কথা বললে পিকাসোকে তারা মানুষ মনপ করে।পিকাসোর মধ্যে অনেক কিছু সিস্টেম করা আছে।হাজার রকমের ভয়েসে কথা বলতে পারে।প্রয়োজন অনুযায়ী হাত দুইটি কে গুলি কিংবা পাকা বানিয়ে উড়তে পারে।

রাফায়েল স্যারের থেকে বিদায় নিয়ে বাংলাদেশে চলে এলাম।অবশ্য আসতে রাত হয়ে গেছে।পিকাসোকে একটা রুমে রেখে দিলাম।আমি আমার রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।

সকালে ঘুম থেকে ওঠে নাস্তা করে নিলাম।রাশেদ আর মাহমুদকে ডেকে পিকাসো কে তাদের হাতে তুলে দিলাম। উদ্দেশ্য হচ্ছে একটাই তা হচ্ছে পিকাসোর মতো আরো দুইটা নকল তৈরি করা। আর সেগুলো কে আমি কোডিং এর মাধ্যমে পিকাসোর থেকে আরো ভয়ানক করে তুলব।

রাশেদ আর মাহমুদ পিকাসো কে নিয়ে চলে গেল। আর আমি বসে আছি। নিজের বাসায় বসে বসে টিভি দেখছি ঠিক তখনি আপু কে কেউ ফোন দিলো। আপুর ফোন রিসিভ করে কথা বলতে শুরু করল তাও আবার হেঁসে হেঁসে। আমি একটু অবাক হলাম কারণ আপু কখনো কারো সাথে ফোনে হেসে কথা বলে না কিন্তু আজ বলছি ব্যাপারটা মোটেও স্বাভাবিক নয়।

আমি আপুকে জিজ্ঞেস করলাম কে ফোন দিয়েছে। আপু বলল অহনা ফোন দিয়েছে।আমি কথাটা শুনে অবাক।কারণ অহনা তো সে মেয়ে যে আপুর মাথায় গুলি ধরেছিল কিন্তু আপু কেন তার সাথে কথস বলছে?
আমিঃআপু তুমি তার সাথে কি কথা বলছ?
আপুঃঠিক আছে না ঘুরিয়ে সোজাসাপটা বলে দিয় কি বলিস?
আমিঃহ্যাঁ বল।
আপুঃমেয়েটাকে আমার খুব ভালো লেগেছে।
আমিঃওকে ভালো লাগতেই পারে আচ্ছা কাজের মেয়ে বানাতে হবে তো?ওকে এক্ষুনি রাশেদকে বলে ওঠিয়ে আনছি।
আপুঃকানের নিচে বসিয়ে দেব একটা।
আমিঃকেন আবার কি করলাম?
আপুঃকাজের মেয়ে করে নই।তোর বউ করে বাসায় আনতে চাই।

আপুর কথা শুনে আমি হাসতে শুরু করলাম।কারণ আপু এখনো বিয়েই করে নি আর আমি নাকি তার আগে বিয়ে করতাম।আপু আমাকে হাসতে দেখে রেগে গিয়ে বলল…

—তুই বিয়ে করবি আর তা ঐ অহনাকে।
আমিঃআগে তুমি বিয়েটা করো তারপর দেখা যাক।
–আমি তো বিয়ে করব তবে আরেকটু সময় পর।
আমিঃসে সময় টা কখন আসবে শুনি?
—যখন তুই একদম ভালো হয়ে যাবি।
আমিঃওকে দেখা যাক।
–না মেয়েটার সাথে আজ থেকে কথা বলবি।
আমিঃপারব না।
—সেটা আমি দেখব।তোর ফোন দেয়…

আমি আপুকে ফোন দিলাম আর আপু অহনার নাম্বার সেইভ করে দিল।আর আমার ফোন থেকে অহনাকে ফোন দিলো।আর বলল নাম্বার টা আমার নোট করে রাখতে।

আপুর মাথায় মাঝে মধ্যে পোকা ঢুকে যায় কখন কি করে বসে বুঝি না।প্রায় দশ দিন হলো অহনা আমাকে ফোন দিয়ে জ্বালিয়ে মারে।আমিও তার মায়ায় পড়ে গেছি।বলা যায় ভালোবেসে ফেলছি।

অনেক দিন ধরে ভার্সিটিতে যাওয়ার হয় না তাই ভাবলাম আজ একটু ঘুরে আসি।নিত্য দিনের মতো সাধারণ ভাবে ভার্সিটিতে গেলাম।ক্লাস শেষ করে বের হতেই দেখি সে মেয়ে গুলো দাঁড়িয়ে আছে যাদের আমি থ্রেড দিয়েছিলাম।আজকে ভার্সিটিতে শেষ বারের মতো এলাম তার মধ্যে এই মেয়ে গুলোর সাথে দেখা হবে ভাবি নি।ওদের দলের লিডার আমাকে ডাক দিল।আমি গেলাম ওদের কাছে।

–কিরে ঐ দিন থেকে তো তোকে ভার্সিটিতে খুঁজেও পায় না।ভয়ে ভার্সিটিতে আসা বন্ধ করে দিলি?
আমিঃনা আমি জরুরি কাজে গেছিলাম তাই ভার্সিটিতে আসা হয় নি।
—আজকে তোর জরুরি কাজ সব বের করব সে দিন তোকে মারব বলে খুজতেছে কিন্তু তুই ভয়ে আসিস নি।তবে আজ আর ছাড়ছি না।ঐ তোরা কি আমার কথা শুননি সাদিব কে ফোন দিয়ে পোলাপান নিয়ে আসতে বল আজকে এই ছেলের হাটার মতো অবস্থা রাখবো না।

মেয়েটার কথা শুনে আরেকটা মেয়ে ফোন দিল। আমিও নিজের পকেটে থেকে ফোন বের করে একটা মেসেজ করলাম।তারপর ফোনটা পকেটে রেখে দিলাম। আমার ফোন বের করা দেখে সবাই হাসাহাসি শুরু করে দিল।একজন বলে ওঠল….
—কিরে কারে ফোন দিলি মনে হচ্ছে তোর খুব পাওয়ার? (হেসে হেসে)
আমিঃআমি কারো সাথে ঝামেলা করতে চাই না।যদি কেউ করে তাঁকে তাহলে তাঁকে তিন বার ক্ষমা করি চতুর্থ বার ক্ষমা নয় সোজা মার।
—কি বললি মার হা হা তুই জানিস না আমরা কারা আমাদের পেছনে কে আছে।
আমিঃসেসব আমার জেনে লাভ নেই।তোমাদের সবার বসকে আসতে বল।আমার গায়ের একটা লোমও বাঁকা করতে পারবে না।
—ভয়ে উল্টা পাল্টা বকছিস না।দাড়া এক্ষুনি সাদিব এসে যাবে।
আমিঃকে সাদিব? আচ্ছা ঐ পাতি মাস্তান টা নাকি?
—মুখ সামলে কথা বল সে আমার বয়ফ্রেন্ড। মন্ত্রীর ছেলে।আর জানিস তাদের পেছনে কে আছে?
আমিঃশুনি কে আছে?
—রাশেদ আছে ওদের পেছনে।নিশ্চিয় রাশেদকে চিনিস না এমন নয়।আজ তো তুই গেলি…..

আমি জানি এরা রাশেদর নামটা এমনি আমাকে ভয় দেখাতে বলেছে।তাও আমিও ভয় পাওয়ার মতো করে ওদের দিকে তাকালাম।ওরা আমার চেহারা দেখে হাসাহাসি শুরু করল…..
হঠাৎ ভার্সিটিতে তিনটা গাড়ি আসল।যেখানে মন্ত্রীর ছেলে সাদিব আর কিছু পোলাপান লাঠি নিয়ে আমাদের দিকে আসছে।আমাদের কাছে এসেই মেয়ে লিডারটার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো সাদিব।সাদিব মেয়েটাকে বলল…
সাদিবঃকি হয়েছে এখানে আর কাকে মারতে হবে বল কে তোমার সাথে বেয়াদবি করেছে আজ তাঁকে মাটিতে পুঁতে দেব।
—ঐ ছেলেটা আমাদের সাথে বেয়াদবি করেছে তোমাকে বলেছিলাম না কেউ আমার হাত ধরে ফেলছে এটাই সেই ছেলে (আমাকে দেখিয়ে)

আমিঃদোষটা ওর ছিল আর বিনা দোষ আমাকে মারতে আসছিল তাই আমি হাত ধরে ফেলছি। মাফ করে দেন ভাই।

—কিরে এখন ভয় পেয়ে গেলি তো।কিন্তু আপসোস তোর কোনো মাফ নেই।

সাদিবঃআজ তোকে মেরে এমন শিক্ষা দেব যাতে কেউ আর ওর দিকে তাকানোর সাহস না পাই।

আমিঃএকটু বেশি হয়ে যাচ্ছে মনে হয়।পরে আবার হিতে বিপরীত হতে পারে।

সাদিবঃকিহ তুই আমার মুখে মুখে কথা বলতে দেরি আমার মুখে চড় বসাতে দেরি নয়।সাথে সাথে আমার মাথা গেল গরম হয়ে।সাবিতের বুকে একটা সজোরে লাথি বসিয়ে দিলাম।বেটা গিয়ে পড়ল গাড়ির কাছে।লাথির জোর একটু বেশি ছিল তাই গাড়ি শুদ্ধ কেঁপে উঠল। সাদিব তার পোলাপান দের আমাকে মারতে বলল…
পোলাপান গুলো আমার দিকে দৌড়ে মারতে আসছে ঠিক আমার কাছাকাছি আসতেই ভার্সিটিতে ৫০+ গাড়ি ভার্সিটির চারটি গেইট দিয়ে ঢুকে গেল।যেটা দেখে ভার্সিটিতে থাকা সবাই অবাক।

আমি খুব ভালো করে জানি গাড়ি কার।আর আমার খুব পরিচিত গাড়ি।রাশেদ গাড়ি থেকে নামতে আমি সামনে থাকা মেয়েটাকে বললাম ওই যে তোমার রাশেদ চিরকুমারে সদস্য চলে আসছে যাও এবার আমার কিছু পারলে কর….
মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে আছপ তবে খুব ভালেই ভয় পাচ্ছে তা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
আমিঃকি ব্যাপার মুখে এত ভয় কেন?
–না না ভয় হবে কেন রাশেদ আসছে মানে তুই শেষ।
আমিঃআহারে আচ্ছা তোরা একটু ক্ষমতা পেলে এমন উড়িস কেন বলতো?
–কিছু না বলে চুপ করে আছে।

রাশেদ আমার কাছে এসে তার হাতে থাকা জ্যাকেট আমাকে পড়িয়ে দিল যা সবার চোখে অবিশ্বাস্য। আমি রাশেদকে বললাম…
আমিঃকিরে তুই নাকি মন্ত্রী আর এই বাজে মেয়ে গুলোর পেছনে আছিস?

—না ভাই ওরা মিথ্যা বলছে ওদর আমি চিনিও না।
আমিঃকিরে ঐ মেয়ে তুই না বললি তোদের পেছনে রাশেদ আছে এখন কি বলল?

মেয়েটি মাথা নিচু করে আছে।এই দিকে আমার রাগে মাথা থেকে ঘাম পড়া শুরু করল।আমি সাদিবের কাছে গেলাম বেটা এখনো বসেই আছে।তাঁকে তুলে দিলাম এক চড়।বেটা ঘুরে মাটিতে পড়ে গেল।মেয়েটার সামনে গিয়ে তাঁকে এক চড় দিয়ে বললাম”মেয়ে মানে মায়ের জাত আর তোর মতো কিছু মেয়ের কারণে মায়ের জাত অপমানিত হয়,যা করছিস ভালো করিস নি।ভালো হয়ে যা নয়তো পায়ে হাঁটার জন্য পা থাকবে না।”

আমি চলে আসতে যাব গিয়ে গাড়িতে ওঠলাম তখনই দেখলাম একটা ছেলে মেয়েটাকে কি যেন বলছে।আমি ছেলেটাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলাম মেয়েটা কি বলল।ছেলেটা বলল আমি কে জানতে চাইলো।

আমি একটা মুচকি হাসি দিয়ে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে। চলে আসলাম বাসায়।ঠিক তখনই অহনা ফোন দিয়ে বলল আমাদের বাসায় আসছে।কারণ জানতে চাইলে বলল বেড়াতে আসবে।আপুর থেকে এই ব্যাপারে জানতে চাইলে বলে আপুর আগে নাকি আমার বিয়ে দিবে তাই তারা আসতেছে।

হয়তো অহনাকে নিয়ে আমার থাইল্যান্ডে চলে যেতে হবে।কারণ এক মাস পর আন্ডার কভার এজেন্টের হেড আমি হতে চলেছি।

…………………..সমাপ্ত……………………..

#গল্পটা_কেমন_হল_জানাবেন।
#ভালো_লাগলে_শেয়ার_করবেন।
#সবাই_নিয়মিত_নামাজ_আদায়_করবেন।
#আল্লাহ_হাফেজ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here