#The_murderous_mafia
#লেখকঃরবিউল_হাসান।
#পর্বঃ২০
আমরা রাফায়েল স্যারের বাড়িতে যেতে অনেক পুলিশ সিকিউরিটি দেখলাম।প্রথমে আমাদের ঢুকতে দিচ্ছে না।পরে আমাদের ভালো করে চেক করলো আর আমাদের গ্রেফতার করা পুলিশ অফিসার থেকে গুলি নিয়ে ভেতরে আমাদের তিন জনকে যেতে দিল।এত হার্ড সিকিউরিটি করে রাখা।
আমরা গিয়ে ওয়েটিং রুমে বসে আছি।স্যার পাঁচ মিনিট পর এলো স্যার আমাদের খেয়াল করে নি। তাই স্যার গিয়ে বসে পড়ল।কিন্তু যখই স্যারের চোখ আমাদের দিকে পড়ল স্যার এক সেকেন্ডে দাঁড়িয়ে গেল আর আমাদের দুই জনকে জড়িয়ে ধরল। প্রায় কেঁদে দেওয়ার মতো অবস্থা স্যারের।
—কোথায় ছিলে তোমরা এত দিন?
আমিঃস্যার আমরা এই বিষয়ে একটু পর কথা বলছি আগে একটা সমস্যা সমাধান করতে হবে। আমরা আপনার সাথে দেখা করতে আসছিলাম।পথে কেউ আমাদের গাড়িতে ড্রাগস দিয়ে আমাদের ফাসিয়েছে। এই অফিসার আমাদের কথা বিশ্বাস করছে না তাই আপনার কাছে অফিসারকে সহ নিয়ে এলাম।
স্যারঃচাইলে তো নিজের পরিচয় দিয়ে তোমরা বের হতে পারতে।
রাশেদঃনা স্যার পরিচয় দিলে হয়তো অন্য কোনো ঝামেলা হবে তাই আপনার কাছে নিয়ে এলাম।
স্যার এবার পুলিশ অফিসার কে বলল আমাদের ছেড়ে দিতে।তারপর অফিসার আমাদের ফোন গুলো আমাদের দিয়ে দিল। তারপর সে চলে গেল।আমরা তিনজন বসে পড়লাম।পাশে থাকা সব গার্ডকে স্যার চলে যেতে বললে একজন বলে ওঠে স্যারের সিকিরিটির জন্য তারা এখানে যাবে না।
স্যার ওদের বলল আমি সিকিউরিটি সিস্টেমের মধ্যে আছি।তোমরা যাও।
–স্যার এই দুই জন যদি আপনার…. (আমাদের দুই জনকে ইশারা করে)
ওদের আর কথা বলতে না দিয়ে বলল এই দুই জন আমার জন্য নিজের জীবন দিতে পারে।তারা এমন কিছু করবে না যাও তোমরা।
তারপর ওরা যেতে বাধ্য হল।পুরো রুমে আমরা তিন জন বসে আছি।
স্যারঃতা বল কেন আস নি এত দিন কি হয়ছিল?
আমিঃস্যার আসলে….
আমাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে রাশেদ বলা শুরু করল।
রাশেদঃআমরা মিশন শেষ করে বাংলাদেশে যাচ্ছিলাম আর পথের মধ্যে একটা ব্রীজে আমাদের উপর বোমা হামলা হয় সে দিন রবি নদীতে পড়ে যায় আর সৃতি হারায়। তাই আমরা এত দিন ফিরতে পারি নি।
স্যারঃআমাকে জানাতে পারতে তোমরা।তোমাদের জন্য আমি অনেক চিন্তা করেছি।
আমিঃস্যার আসলে আমরা দেশে কাজ করেছি। কয়েক দিন আগে আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় র এজেন্ট সহ আরো কিছু জঙ্গি গোষ্ঠী মিলে বোমা হামলা করতে চেয়েছিল কিন্তু আমরা সেটা হতে দিয় নাই।
রাশেদঃস্যার সেখানে আমাদের আন্ডার কভার এজেন্টও ছিল তিন জন।
স্যারঃতিন জন নই ওরা চারজন ছিল।
আমিঃস্যার আপনিও জানেন এসব?
স্যারঃহুম জানি ওরা চারজন আমাদের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে।
রাশেদঃস্যার ঐ চার জনের ছবি কি দেখতে পারি?
স্যারঃহুম দেখতে পার।তবে চার জনকেই তোমরা মেরে দিয়েছ।
আমিঃওহহ তাহলে তো আর দেখার দরকার নেই।কিন্তু আমার একটা প্রশ্ন ছিল স্যার।
স্যারঃহ্যা বল কি প্রশ্ন?
আমিঃআপনি মন্ত্রী পদে দাড়লেন কেন?এত কিছু এক সাথে কিভাবে সামলাবেন?
স্যারঃএটা একটা মিশন।তোমরা এসে ভালোই করছ এখন এই মিশনে তোমরাও থাকতে পারবে।
রাশেদঃস্যার মিশন টা কি?
স্যারঃকয়েক জন মাফিয়া মিলে পুরো বিশ্বে আতঙ্ক ছড়াতে চাই।তাই এদের কে নিঃশেষ করে দিতে মিশনে নেমেছি।
আমিঃস্যার আরো একটা কথা আমরা এখানে আসার সময় কেউ আমাদের অবস্থানরত গাড়িকে লক্ষ্য করে বোমা হামলা করেছে।
স্যারঃকিহ তোমরা কি করেলে তাহলে?
আমিঃস্যার আপনি জানেন আমরা দুই জনও মাফিয়া। কিন্তু খারাপের দিকে আমরা নেই। খারাপ মাফিয়াদের বিরুদ্ধে যেকোনো মিশনে যাওয়ার জন্য আমাদের কিছু লোক তাদের মধ্যে ঢুকে গেছে।ওখান থেকে একজন বোমার ব্যাপারে জানালে আমরা বের হয়ে আসি গাড়ি থেকে।
স্যারঃওহহহ খুব ভালো হল না হলে আজ কি যে হতো।
স্যারের সাথে কথা বলছিলাম তখনই মাহমুদ ফোন দিল।স্যারের সামনে ছিলাম তাই ফোন না ধরে কেটে দিলাম।কিন্তু মাহমুদ আবারো ফোন দেওয়ায় স্যার ফোন ধরতে বলল।তাই ফোন ধরে কানে দিলাম তখন মাহমুদ বলে ওঠল….
—কিরে তুই ঠিক আছিস তো?
আমিঃহ্যা আমরা ঠিক আছি।কেন কি হয়েছে?
—তোদের উপর তো বোমা হামলা হল তাই বললাম।
আমিঃকোনো ব্যাপার না আমরা ঠিক আছি।আচ্ছা একটু পর কথা বলছি।
তারপর ফোন কেটে দিলাম। স্যার বললো কে ছিল
আমিঃস্যার আমার ফ্রেন্ড বোমা হামলা হল আমাদের উপর তাই ফোন দিল।
রাশেদঃস্যার আরো একটা ব্যাপার আছে।যে আমাদের ড্রাগস দিয়ে ফাঁসিয়েছে সে আমাদের ফোন করে হুমকিও দিয়েছে।
স্যারঃআমাকেও হুমকি দিচ্ছে একজন, আমার মেয়ে তার থার্গেটে আছে।
তখনই স্যারের ফোনটা বেজে ওঠল আর স্যার ফোন ধরে মুখটা একটু কালো করে ফেললো। স্যারের কথা বলা শেষ হতেই….
আমিঃস্যার কি হয়ছে আপনি কিছু নিয়ে চিন্তায় আছেন মনে হচ্ছে।
স্যারঃঐ মাফিয়া আবারো ফোন দিয়ে হুমকি দিল।
আমিঃস্যার ওর কন্ঠ কেন যেন আমার চেনা মনে হল।ওর নাম্বার টা কি দেখতে পারি?
স্যারঃহ্যা….বলে স্যার আমাকে নিজের ফেনটা এগিয়ে দিল।
আমি নাম্বার দেখে অবাক কারণ এটা সে নাম্বার যেটা দিয়ে আমাকে ফোন দিয়েছিল আর ড্রাগস দিয়ে ফাঁসিয়ে ছিল আমাদের।আমি স্যারকে বললাম এই বিষয় টা।স্যার বলল তিন দিনের মধ্যে মিশন হবে।
স্যারের সাথে কথা শেষ করে আমি আর রাশেদ বের হয়ে গেলাম। তিন দিনে যখন মিশন হবে সেখানে আমাদের দুই জনকেও থাকতে হবে তাই পাশে একটা বাসা নিলাম।
রাতে রাশেদ আর আমি চিন্তা করলাম মিশনে তো অনেক কিছু হতে পারে তার আগে যারা আমাদের ফাসিয়েছে তাদের শেষ করতে হবে।সিন্ধান্ত নিলাম আজই তো আসলাম কাল ওদের শেষ করব।
যা ভাবা তাই কাজ আমাদের লোক সব গুলোকে রাতে এক জায়গায় নিয়ে এলাম।থাইল্যান্ডে প্রায় এক হাজার লোক আছে আমাদের। সব গুলোকে রাতে এক জায়গায় এনে মিশন হবে বলে সবাইরে রেডি হতে বললাম।সবাই রেডি হয়ে গেল।
পর দিন সকালে ওঠে সবার সাথে দেখা করে কিছু টেকনিক সবাইকে বলে দিলাম।কোন সময় মিশন হবে তাও বলে দিলাম।কিন্তু কোথায় হবে তা বলি নি।সবাই রেডি হয়ে গেল।বিকালে রাশেদ আর আমি ফ্রেশ হয়ে খেয়ে রেডি হয়ে নিলাম।
রাত একটু হতেই সবাইকে বলে দিলাম কোথায় মিশন হবে আর কার উপর হবে।সবাইকে সাথে নিয়ে রওনা দিলাম।সবাই নিজের পজিশন নিয়ে নিল।ভেতরে দেখলাম শত্রু পক্ষের সবাই আছে।
রাশেদকে বললাম ভেতরে প্রবেশ করতে।কিন্তু ভেতর থেকে আমাদের লোক বের হয়ে এলো।আগেই বলেছিলাম এখানে আমাদের লোকও তাদের টিমে আছে।
জোসেফ বের হয়ে আমাদের সামনে এলো জোসেফকে শুট করতে যাবে তার আগে আমি শুট না করার ইশারা করলাম।কারণ আমার লোকে গুলো শুট করে দিবে।
জোসেফ আমার সামনে এলো আমাকে জড়িয়ে ধরল আর বললো….
জোসেফঃভাই এখানের বস আজ রাত বসবে।মনে হয় পথে আছে এখনো।আরেকটু অপেক্ষা করেন আসবে।
আমিঃঠিক আছে তুমি ভেতরে যাও আর এই ঘড়িটা পড়ে নাও।ভুলেও এই ঘড়ি খুলবে না।কারণ এই ঘড়ি দিয়ে ভেতরে কি কথা হচ্ছে শুনতে পাব আর এই গড়ি থাকলে আমাদের লোক তোমাকে শুট করবে না।
আর ভেতরে আমাদের আরো চারজন লোক আছে সবাইকে এই ঘড়ি পড়িয়ে দিবে।
জোসেফকে চারটা ঘড়ি দিলাম।সেগুলো নিয়ে জোসেফ ভেতরে চলে গেল।আমরা অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন ওদের বস আসবে।
প্রায় বিশ মিনিট পর চারটা গাড়ি আসল। ওরা ভেতরে চলে গেল।সবাই ভেতরে গিয়ে কথা বলা শুধু করল।তাদের প্ল্যান কি তা আমরা শুনতে পাচ্ছি…
–ভাই RK থাইল্যান্ডে আসছে।সাথে তার ডানহাত রাশেদও আছে।আমরা ড্রাগস দিয়ে তাদের ফাঁসিয়ে দিছিলাম কিন্তু মন্ত্রী তিশফ ছিফাসু তাদের ছাড়িয়ে নিছে।এখন তারা এক হলে আমাদের বড় সমস্যা হবে।
~~হ্যাঁ ভাই, রাশেদ আর RK এখানে আসলেও তার আরেক হাত মাহমুদ বাংলাদেশে আছে।আর বাসায় তার আপু একা আছে।আমরা RK এর বোনকে যদি কিডন্যাপ করি তাহলে সে আমাদের কাছে ধরা দিবে।
বসঃনা সে এত বোকা নয়।তোমরা কেউ জান না মাহমুদ RK এর বাম হাত।ওরা যতটুকু ক্ষমতা আছে তার মাত্র এক পার্সেন্ট ব্যবহার করে।মাহমুদ একাই আন্ডার ওয়ার্ল্ড চালাতে পারে।ওখানে হামলা করা খুব কঠিন হবে
—না বস এই সময় যদি সবার অগোচরে আমরা মাহমুদের ডান হাতকে দিয়ে RK এর বোনকে কিডন্যাপ করাতে পারি তাহলে কাজ করতে সুবিধা হবে।
বসঃতাহলে এখন ফোন দিয়ে মাহমুদের ডান হাতকে বল RK এর আপুকে কিডন্যাপ করে আমাদের আস্তানায় নিয়ে আসতে আর কালকে RK কে এখানে শেষ করে দিব সবাই রেডি থেকো।
আমি ওদের কথা শুনে তাড়াতাড়ি মাহমুদকে ফেন দিলাম।বাংলাদেশে অনেক রাত এখন তাই দুই বার রিং হওয়ার পরও মাহমুদ ফোন ধরল না।আবার ফোন দিলাম।তখন মাহমুদ ফোন ধরল….
—কি ব্যাপার এত রাতে ফোন দিলি কেন?ঠিক আছিস তো?
আমিঃআমি ঠিক আছি।তুই এক্ষুনি তোর সব লোককে এক জায়গায় নিয়ে যা আর তোর ডানহাতকে মেরে দেয়।
—কেন কি হয়ছে বলবি তো?
আমিঃসে তোর লোক নয় সে অন্য কারো লোক।আর শুন আপু কিডন্যাপ হতে পারে তোর উপরও হামলা হতে পারে।তুই আপুর কাছে চলে যা।আগে বেইমানকে মেরে দেয়।
আমার কথা শেষ হতে মাহমুদ ওঠে সবাইকে আস্তানায় আসতে বলল।আর সবাইকে বলল বেইমানীর ক্ষমা নেই।যে আমাদের সাথে বেইমানি করবে তার মৃত্যু অনিবার্য। তাই এখানে এই মূহুর্তে একজন আমার হাতে মারা যাবে।
–কে ভাই সে?আমাকে বলুন আমি এক্ষুনি তাঁকে মেরে দিব।
মাহমুদঃতাহলে আগে তুই মর।
কথা হতে দেরি শুট করতে দেরি নয়।সবার শিক্ষা হয়ে গেল মাহমুদও কম নয়।বেইমানের কোনো স্থান নেই।
মাহমুদ কাজটা শেষ করে আপুর কাছে চলে গেল।কয়েক বার দরজায় কড়া নেড়েও আপু দরজা খুলে নি।তাই মাহমুদ নিজের কাছে থাকা চাবি দিয়ে দরজা খুলল।ভেতরে যেতেই দেখে আপু চেয়ারে বসে আছে আর তার দুই লোক আপুর পাশে বসে আছে দুই জন আপুর মাথায় গুলি ধরে আছে।মাহমুদ এটা দেখে আর চোখ বন্ধ করে নি।নিজের কাছে থাকা গুলি বের করে শুট করে দিল দুই জনকে। জায়গায় দুইটা লাশ হয়ে গেল পুরো ঘর রক্তে রঞ্জিত হয়ে ওঠল।এই দিকে গুলির আওয়াজ শুনে নিশাত নিজের রুম থেকে বের হয়ে দৌড়ে এলো।
দুইটা লাশ দেখে সে চিৎকার দিয়ে ওঠল।মাহমুদ সে দিকে তাকালো কিন্তু কিছু বলল না।শুধু ইশারা করে আপুর দিকে দেখাল।নিশাত দৌড়ে আপুর কাছে এলো।আর পাশে পড়ে থাকা গুলি হাতে নিয়ে মাহমুদের দিকে তাক করলো।
মাহমুদঃআরে বোন কি করছিস তুই পাগল হলি নাকি?
—তুমি আপুকে মারতে আসছ তাই না?
মাহমুদঃনারে আপুকে বাঁচাতে আসছি।
—না তুমি মিথ্যা বলছ।
মাহমুদঃতাহলে আপুর থেকে শুন আপু কি বলে।
এতক্ষণ আপুর মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধা ছিল তাই আপু কিছু বলতে পারে নি।মাহমুদের কথা শুনে নিশাত আপুর মুখ থেকে কাপড় সরিয়ে নিল।আপু একটা লম্বা শ্বাস নিল।আর নিশাতকে বললো গুলি নামাতে।কিন্তু নিশাত নামাচ্ছে না।
আপুঃআরে নিশাত তুই ভুল বুঝছিস মাহমুদ না আসলে হয়তো এই লোক গুলো আমাকে মেরে ফেলতো।মাহমুদ এসে আমাকে বাঁচিয়েছে।
এবার নিশাত গুলি নামালো আর মাহমুদলে সরি বলল।মাহমুদ আপুর কাছে গিয়ে হাতের বাঁধন খুলে দিল।
#To_be_continue…….
#RK9023DXWC
#অনুমতি_ছাড়া_কপি_করা_নিষেধ।
#গল্পটা_কেমন_হল_জানাবেন।
#ভালো_লাগলে_শেয়ার_করবেন।
#সবাই_নিয়মিত_নামাজ_আদায়_করবেন।