#The_murderous_mafia
#লেখকঃরবিউল_হাসান।
#পর্বঃ১৮
আমিঃআরে ভাই পথটা ছাড়েন গাড়ি যাবে পেছনে সাংবাদিক।
–ঐ সাংবাদিককে মারার জন্য তো এত ঝামেলা।নিজের জীবন বাঁচাতে চাইলে যা এখান থেকে।
আমিঃকেন সাংবাদিককে কেন মারবেন কি করছে সে?
–ঐ তোকে এত কথা বলতে যাব কেন রে যা এখান থেকে।
আমার বুঝতে বাকি নেই এরা সোজা কথায় পথ ছাড়বে না।আমি বাইক ঘুরিয়ে আপুর গাড়ির চতুর্দিকে একটা চক্কর দিলাম।আর ওদের সবাইকে বললাম কেউ যদি এই বৃত্তের ভেতরে আসতে পারিস তাহলে বুঝব তুই অনেক কিছু করতে পারবি।আর যদি সামনে আসতে গিয়ে বৃত্তের কাছাকাছি এসে পড়ে যাস তাহলে লাশটা তোদের বাসায় পৌঁছে যাবে।
প্রায় বিশ জন লোক চারপাশে। তাদের মধ্যে একজনকে দেখে আমি কিছু টা অবাক হলাম কারণ সেও আপুর সাথে কাজ করে মানে সেও সাংবাদিক। তার মানে তারা আপুর কাছে থাকা ফাইলটা নিতে এই সব করছে?
–কিরো তোরা দাঁড়িয়ে কি দেখছিস যা ঐ সাংবাদিকের হাত থেকে ফাইলটা নিয়ে আয়।দরকার পড়লে মেরে দিবি।
আপু হাসতে লাগল তাদের কথা শুনে সাথে আমিও হাসছি।এই হাসির মানে আপু ঠিক বুঝলেও আপুর গাড়ির ড্রাইভার ভয়ে চুপ করে আছে।
ওদের মধ্যে তিনজন দৌড়ে আপুর কাছে আসতে গিয়ে বৃত্ত বরাবর আসতে তিনজনই হঠাৎ মাটিতে পড়ে গেল।পড়ে যাওয়া থেকে আর উঠে নি।তাদের এই অবস্থা দেখে সেখানে থাকা বাকিরা ভয় পেয়ে গেল। কি হল এটা দুই জনকে মারতে গিয়ে বৃত্তবরাবরও যেতে পারল না তার আগে তিনজনই মাটিতে পড়ে গেল!সবার চোখ কপালে ওঠে গেল।
এবার সাহস করে সাংবাদিক আর আরো এক লোক সামনে আসতে দেখে পড়ে থাকা লোক গুলোর নিচে রক্তে মাটি ভিজে গিয়ে লাল হয়ে গেছে।সাংবাদিক টা আরেক পা সামনে আসতেই সেও পড়ে গেল।অপরজন ভয়ে দৌড়ে পেছনে যেতে গিয়ে সেও মাটিতে পড়ে গেল।পাঁচ জন লোক নিমিষেই নিজের প্রাণ হারালো সেখানে।
বাকি পনেরো জন ভয়ে ঠাঁই দাড়িয়ে রইল।আর চারপাশে দেখছে কোথায় থেকে শুট হচ্ছে তাদের লোকের উপর। সবাই পালাতে চাইলে তাদের চারপাশে প্রায় পঞ্চাশ জন লোক সবাই এক রকম।জোতা,প্যান্ট থেকে চশমা পর্যন্ত সব গুলো একই, এমন কি হাতে থাকা গুলিও এক রকম।এবার ওখানে থাকা পনেরো জন লোক ভয় কাঁপতে শুরু করল।
এক পোশাকধারী লোক গুলোর মাঝ থেকে বেরিয়ে এলো রাশেদ। রাশেদ কে দেখে কয়েক জনের প্যান্ট ইতোমধ্যে ভিজে গেল।সবাই ভয়ে বসে পড়ল মাটিতে।কিছু সবার সামনে একজন দাঁড়িয়ে রইল।যে এই বিশ জনকে কনট্রোল করছিল।সেও ভয়ে মাথ নিচু করে ফেললো।
রাশেদ তার সামনে এসেই দিল কানের নিচে একটা বসিয়ে।আমি বাইকে বসে ওদের এসব কাজ দেখতে লাগলাম।রাশেদকে ইশারায় কিছু বলে আপুকে নিয়ে বাসায় চলে এলাম।আপু এমন ঘটনা আগে কখনো দেখে নি।তাই একটু ভয়ও পেল।বাসায় এসেই আপু আমার হাতে ফাইলটা ধরিয়ে দিয়ে নিজের রুমে চলে গেল।
আমি ফাইলটা খুলে দেখি অনেক বড় বড় মানুষের নাম রয়েছে।এবার বুঝতে বাকি নেই কেন অপুর বস এই কাজের জন্য আপুকে বলল।সত্যি এই নাম গুলো বলার মতো সাহস আর কারো কাছে নেই।আমি ফাইল দেখে লিস্ট বানিয়ে মাহমুদকে পাঠিয়ে দিলাম।এর সত্যতা কতটুকু তা তো জানতে হবে নাকি?
মাহমুদ সব কিছু চেক করে বলল সবাই কোনো না কোনো ধর্ষণের সাথে জড়িত কিন্তু দুই জন কোনো ধর্ষণের সাথে জড়িত আছে এমন তথ্য পাওয়া যায় নি।আর তারা দুইটাই অনেক বড় মানের।এমনও হতে পারে এদের দুই জনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এদের মারতে চাই আবার হতেও পারে অনেক বড় মানের মানুষ এরা দুই জন তাই ওদের বিরুদ্ধে কোনো তথ্য কারো কাছে নেই।
আমি সকালে নাস্তা করতে পারি নি।তাই নিশাত এসে আমাকে নাস্তা দিল।আপু নিজের রুমে বসে ল্যাপটপে কি যেন করছে।আমি নিশাতকে বললাম….
আমিঃকিরে তুই আগে কেন বলিস নি আপু আমাকে অফিসে যেতে বলল?
—মনে ছিল না।আর খবর দেখছিলাম তাই ভুলে গেছি। (মন খারাপ করে)
আমিঃহয়ছে আর মন খারাপ করিস না।শুধু মাথায় রাখবি আপু আমাকে কিছু বলতে বললে তা যেন সঠিক সময়ে আমি জানতে পারি।না হলে পরে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।
—হুম মনে করে বলব এর পর থেকে।
আমিঃহুম গুড।বস তুইও কিছু নাস্তা করে নেয়।
—না পরে করব এখন খিদে নেই।
আমিঃকি খিদে নেই?যা আপুকে নাস্তার জন্য ডেকে আয় সাথে তুইও বসে যা।এই কথা আর কত বার বলতে হবে আল্লাহ জানে।
—আচ্ছা আপুকে ডাকছি।পরে আমি খাব।
আমিঃওকে যা।
আপুকে ডাকতে গেল নিশাত কিন্তু আপু নাকি পরে খাবে তাই সে চলে এলো।আমি নাস্তা করে রুমে গিয়ে রাশেদ সাথে কথা বললাম।বিকালে রাশেদের সাথে বের হব।যারা আপুর উপর আক্রমণ করতে আসছিল সবার খোঁজ নিতে হবে কেন তারা আপুর উপর আক্রমণ করতে চেয়েছিল জানতে হবে।
বিকাল হতে কিছু সময় বাকি আপুকে ডাকতে বললাম নিশাত গিয়ে আপুকে ডেকে আনল।
আমার বাসায় যখন কোনো গুরুত্বপূর্ণ কথা বলি তখন নিশাত আমাদের কাছ থেকে দূরে তার রুমে চলে যায়।রাশেদ আর মাহমুদকে সে অনেক বার দেখেছে। নিশাত জানে তারা দুইজন মাফিয়া। কিন্তু আমাদের বন্ধুত্বটা এত জোরালো যে নিশাত মনে করে বন্ধু বলে তারা আমার সাথে দেখা করতে আসে।অবশ্য মাঝে মধ্যে নিশাত ভয় পাই ওদের আসতে দেখে।কিন্তু এখন আর তেমন ভয় পাই না।
আমি আপুকে জিজ্ঞেস করলাম,
আমিঃকারা লোক গুলো আর কেন তোমার উপর আক্রমণ করতে আসছিল?
—বাদ দেয় না।কামাকা মাথ গরম করে কি লাভ বল?
আমিঃতোমার জীবনের উপর হামলা হচ্ছিল তাও বলছ মাথা ঠান্ডা করতে?কারা ছিল ওরা?
—ওরা কে ছিল তা জানি না কিন্তু কে তাদের পাঠিয়েছে তা জানি।
আমিঃকে পাঠিয়েছে?
—এমপি গ্রামে থাকলেও তার কিছু লোক জেনে গেছে আমি RK. এর কাছে যেতে পারি।মানে আমি RK. এর কাছে এই ফাইল নিয়ে গেলে তাদের মৃত্যু অনিবার্য। তাই এই ফাইলটা আমার থেকে নিতে ওদের পাঠিয়েছে।
আমিঃওকে আজকে তাহলে কয়েকটা লাশ পড়বে এই শহরে।আমি গেলাম।
আপু কিছু বলতে চেয়েও পারে নি।কারণ আমি আপু কিছু বলার আগে ওঠে নিজের রুমে চলে এলাম।তারপর রেডি হয়ে চলে গেলাম রাশেদের কাছে।আপুকে মারতে আসা সব লোককে রাশেদ নিজের আস্তানায় বেঁধে রেখেছে।আমি রাশেদকে নিয়ে সেই আস্তানায় চলে গেলাম।
ওদের অবস্থা দেখেই বুঝা যাচ্ছে খুব মার খেয়েছে।বেশি সময় নেই অনেক কাজ বাকি তাই সবাইকে বললাম…
আমিঃযে বা যারা আপুর দিকে চোখ তুলে তাকায় তাদের চোখ আমার হাতে চলে আসে।আর সেখানে তোরা আপুকে মারার প্ল্যান করছিস।তোদের কলিজা অনেক বড়।ফাইলটা তোরা বা তোদের বাব এমপি কেউ পাবে না।পেলেও বা কিছু করতে পারবে না।জানিস তোরা কার উপর হামলা করতে গিয়েছিলি?
—সাংবাদিক ছিল এর থেকে আমরা বেশি কিছু জানি না।
আমিঃশুধু সাংবাদিক নয়।রাশেদ মাহমুদ আর RK এর বোন ওটা।যার উপর তোরা হামলা করতে গিয়েছিলি।তোদের চাইলে এখানে মেরে মাটিতে পুঁতে দিতে পারি।কেউ জানতেও পারবে না।শুরু এটা মনে রাখিস তোরা যার উপর হামলা করেছিস সে বলল তোদের ছেড়ে দিতে।তাই তোদের ছেড়ে দিচ্ছি।যদি ভুলেও তোরা বা কেউ আবার আপুর দিকে চোখ তুলে তাকাস তাহলে আগে যে বললাম,”তোদের চোখ দুটো আমার হাতে” চলে আসবে।
রাশেদ কে বললাম ওদের ছেড়ে দিতে।কারণ আপু নিজে ওদের ছেড়ে দিতে বলল।আর না হলে এখানে আবারো কিছু লাশ পড়ে যেত।রাশেদ সবার চোখ বেঁধে দিয়ে শহরের মাঝ পথে ফেলে দিল সবাইকে।সবাই যেন মরতে গিয়ে বেঁচে ওঠল।
আমি বাসায় চলে এলাম।রাশেদও নিজের বাসায় চলে গেল।রাতে বের হতে হবে আজকে সাকিবের অপর বন্ধুকে উপরে পাঠাতে হবে।রাতে কিছু টা প্ল্যান করলাম।কারণ আমি জানি সাকিবের এই বন্ধু অনেক সতর্ক হয়ে থাকবে। রাতে খেয়ে হালকা ঘুম দিলাম।রাত বারোটা হতে রেডি হয়ে প্রিয় বাইক নিয়ে বেরিয়ে গেলাম।বাইকের সাউন্ড এতটাই কমিয়ে দিলাম যে কারো পাশ দিয়ে গেলেও যাতে বুঝতে না পারে কোনো গাড়ি চলে গেল।
সাকিবের দ্বিতীয় বন্ধুর বাসা একটু দূরে তাই যেতে একটা ঘন্টা চলে গেল।মাহমুদ ল্যাপটপ নিয়ে বাসে পড়লে আমার ফোন পেয়ে। রাশেদও পোলাপান রেডি করে রাখল।যদি কেউ আমার দিকে ভুলেও আসে তাহলে শুট করা হবে।
গিয়ে দাড়লাম দরজার পাশে কিন্তু দারোয়ান চাচা এখনো জেগে আছে।তাই দারোয়ানের চোখ ফাঁকি দিতে পেছনের দিকে চলে গেলাম।
দেয়াল টপকিয়ে পেছনের দিকে ভেতরে যাওয়া সম্ভব নয়।কিন্তু আমার কাছে অসম্ভব বলে কিছু নেই।একটা না একটা উপায় বের করে অসাধ্য কে সাধন করতেই হবে।পাশে রাখা ফুচকার ভেন গাড়ি থেকে চারপাশের দঁড়ি খুলে নিলাম।তারপর একটা গিট বানিয়ে দেয়ালের ওপাশের গাছে ছুটে মারতে দঁড়ি আঁটকে গেল।আমি দড়ি বেয়ে চলে গেলাম ওপাশে।দরজার কাছে গেলে দারোয়ান দেখবে তাই জানালা দিয়ে ভেতরে অবস্থা জানতে উঁকি দিলাম।
কিন্তু বেটার কোনো চিন্তা নেই আরামে ফোন টিপছে। এখনো ঘুমায় নি প্রায় একটা বাজতে চলল।আমিও অপেক্ষা করতে লাগলাম বেটা কখন ঘুমাবে।হঠাৎ ফোনে কারো কল আসলো।সে ফোনটা ধরে কানে দিল।
অপর পাশে কে কি বলছে শুনতে পারছি না।কিন্তু এই বেটা কি বলছে তা ভালো করে বুঝা যাচ্ছে।
—
—আমার খুব ভয় হচ্ছে। তাসিয়ার সাথে এমন করা আমাদের ঠিক হয় নি।যদি ঐ RK আমাকেও মেরে দেয় তখন কি হবে?ঐ পুলিশও কিছু করতে পারছে না।কি করব এখন।বলছিলাম দেশে থেকে পালায়।কিন্তু তুই তো কথা শুনলি না।
—-(অপর পাশে)
–তোর বাব এমপি কিছু করতে পারে না।তাই তো তোরা গ্রামে গিয়ে লুকিয়ে আছিস।যদি এখন RK আমার কাছে চলে আসে তাহলে কি করে ওর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করব?
— (অপর পাশে)
—তুই যা ইচ্ছে কর আমি কালই চলে যাব এই শহর ছেড়ে। কোথায় যাব তা জানি না তবে নিজের জীবন বাঁচাতে যেখানে পারি চলে যাব।
— (অপর পাশে)
–ঠিক আছে তুইও সাবধানে থাকিস।পারলে দেশ থেকে বের হয়ে যা।নয়তো আজ বা কাল RK সামনে চলে আসতে পারে।
এর আগে আরো কত জনের সাথে মজা করলাম কিছু হল না কিন্তু এই তাসিয়া মেয়েটা সব ভেস্তে দিল।
এই বলে ফোন কেটে দিল।আমার বুঝতে বাকি নেই ফোনের ওপাশে সাকিব ছিল।
ফোন কেটে দিয়ে শুয়ে পড়ল।কিন্তু তার যেন ঘুম আসছে না।আর কিছু সময় হলেই ফজরের আজান হবে।ঠিক সে মুহুর্তে ঘুমিয়ে গেল সে।আমি জানালার সব লক খুলে নিয়ে জানালা দিয়ে ভেতর প্রবেশ করলাম।আমার পায়ের আওয়াজ হতেই সে ঘুম থেকে চমকে উঠে গেল।ভয়ে দাড়িয়ে গেল। একটু পর ওয়াশরুমে গেল।ওয়াশরুম থেকে বের হতেই স্প্রে করে দিলাম তার মুখ বরাবর। চেয়ারে বসালাম।মুখে কাপড় দিয়ে বেঁধে নিলাম।সময় খুব কম তাই তাড়াতাড়ি পানি দিয়ে জ্ঞান ফেরালাম।ভয়র্ত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। চোখ দেখে মনে হচ্ছে ক্ষমা চাচ্ছে। কিন্তু আমার কাছে ভুলের ক্ষমা আছে অপরাধের নয়।
শুধু তাঁকে বললাম।ধর্ষণের শাস্তি একমাত্র মৃত্যু। তাই তোকে মরতে হবে।আর কথা বলার সুযোগ না দিয়ে চাকু চালিয়ে দিলাম গলা বরাবর। গলা থেকে রক্ত বের হচ্ছে। বেচারা একটু পানি খেতে চাইলে আর না করতে পারি নি।পাশে থাকা টেবিল থেকে পানি নিয়ে তার মুখে ও গলায় দিলাম।একটু বেশি কেটে গেল তার গলা তাই মুখে পানি দিলেও গলা দিয়ে নামবে না।
হঠাৎ দরজায় কেউ যেন কড়া নাড়ল।
#To_be_continue…….
#RK9023DXWC
#অনুমতি_ছাড়া_কপি_করা_নিষেধ।
#গল্পটা_কেমন_হল_জানাবেন।
#ভালো_লাগলে_শেয়ার_করবেন।
#সবাই_নিয়মিত_নামাজ_আদায়_করবেন