#The_murderous_mafia
#লেখকঃরবিউল_হাসান।
#পর্বঃ১৩

এই ছিল ওদের কথা আমি ফোনের রেকর্ড শুনে অবাক।আমি আর রাশেদ যদি আন্ডার কভার এজেন্ট তাহলে আমাদের ব্যাচ কোথায়।আর আমার এসব মনে নাই কেন?কি হয়েছিল আমার?আহ আর ভাবতে পারছি না।কি হচ্ছে এসব আমার সাথে কেন হচ্ছে। কিছুই মনে পড়ছে না কেন আমার?
মাথা আবারো ধরে আসছে।আর কিছু চোখে দেখি নি।অনুভুতিও হারিয়ে ফেলছি।শুধু এই টুকু শুনালাম কিছু পড়ে গেছে।

চোখ খুলে দেখি আপু পাশে বসে আছে আর আমি শুয়ে।আপু আমার মুখে পানি দিয়ে আমার জ্ঞান ফেরালো।
আপুঃতুই এত কি চিন্তা করিস?
আমিঃক..ক..কই কি..কি..কিছু না তো।
আপুঃতা তো তোর জ্ঞান হারানোতে বোঝা যাচ্ছে।
আমিঃআমি জানি না কিছু যাও এখান থেকে।

না যাইতে বললে আপু একটার উপর একটা প্রশ্ন করতেই থাকবে তাই যেতে বললাম।কিন্তু বললেই তো আর যাবে না।বোনটা আমার, খুব ভালো করে চেনা….
আপুঃবল কি নিয়ে আবার চিন্তা করলি?
আমিঃঐ লোক গুলোকে আমি হয়তো চিনি।কিন্তু মনে করতে পারছি না।(কথা ঘুরানোর জন্য বললাম)
আপুঃওসব নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।ঐ লোক গুলোও হয়তো কোনো সন্ত্রাসী হবে বাদ এসব নিয়ে চিন্তা করিস না তো।
আমিঃহুম। (আমাকে সবটা জানতেই হবে।কি হয়েছিল আমার আর কেন আমার সবটা মনে নেই)

আমি আপুকে আবার বলললাম,এক গ্লাস পানি দিতে।আপু ওঠে আমাকে পানি দিল।আমি জানি আপু আমাকে নিয়ে অনেক চিন্তা করে, কিন্তু আপুর সামনেই আমাকে বিভিন্ন চিন্তা করতে হয়।

আপুঃআচ্ছা এই রুমে আমি ছাড়া অন্য কারো আসা নিষেধ কেন বলতো?
আমিঃকেউ তো আর মরতে চাইবে না নিজের ইচ্ছেতে।
আপুঃসেটাইতো বলছি।তোর পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনে আমরা তিনজন দৌড়ে এলাম।তোকে বিছানায় তুলল রাশেদ আর মাহমুদ। আর দশ সেকেন্ডে হতে না হতে ওরা শ্বাস নিতে পারতেছিল না কিন্তু আমি তো স্বাভাবিক আছি।ওরা শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছিল কেন?
আমিঃওটাও আমার মতো একটা সিক্রেট ব্যাপার।

আপুঃতোর মতো সিক্রেট মানে?
আমিঃনা বলছি এই ব্যাপারটা আমার মতে সিক্রেট।

(যদিও আপুকে আমি আগের কথায় আন্ডার কভার এজেন্টের কথা বুঝাতে চেয়েছি পরে কথা ঘুরিয়ে নিলাম)

আপুঃবল এই রুমে এমন হয় কেন?
আমিঃকারণ এটা অদৃশ্য একটা সিকিউরিটি সিস্টেমের মধ্যে আবদ্ধ এই রুম।কেউ ভুলেও এই রুমে আসলে অক্সিজেন মাস্ক পড়ে আসতে হবে শুধু মাত্র তুমি ছাড়া।

আপুঃতাইতো বলি ওরা শ্বাস নিতে পারে নি কেন!
আমিঃএই রুমটা সব থেকে বেশি স্পেশাল। তাইতো তোমাকে বলি যখন আমি বাসায় থাকি না তুমি এই রুমে চলে আসবে।তোমার সিকিউরিটি নিয়েও আমাকে ভাবতে হয়।জান এই রুমের কাচ গুলো সব বুলেট প্রুফ। আরো অবাক করা বিষয় হলো এই রুমে কেউ গুলি করলে কাচ গুলো ডাবল হয়ে যাবে।ওয়েট দেখাচ্ছি।

নিজের ল্যাপটপ টা নিয়ে একটা ভিডিও ওপেন করলাম,
কাচ গুলো স্বাভাবিক আছে বাহির থেকে একজন গুলি করলো সাথে সাথে কাচের মধ্যে দাগ লেগে গেল।ঠিক সেই মুহুর্তে দেয়ালের পাশ থেকে অটো গুলি বের হয়ে এলো আর যে দিক থেকে গুলিটা করা হয়েছে সে দিকে শুট করা শুরু করল।কিন্তু কোনো আওয়াজ হচ্ছে না।প্রায় চারটা শুট করার পর গুলিটা আবারো দেয়ালের মধ্যে লুকিয়ে গেল।আর কাচের দাগটা অটো ভাবে মুছে গেল।এবং নিচ থেকে আরো একটা কাচ উপরে উঠতে ওঠতে আগেরটার সাথে মিলে গেল।

এই ছিল ভিডিও…..
আপু ভিডিও দেখে অবাক এত্ত সিকিউরিটি তো মানুষ টাকা পয়সা কিংবা সোনা দানা কেও করে রাখে না।আর আমি……

আমিঃঅবাক হওয়ার কিছু নেই এটাতো সামান্য আরো অনেক কিছু আছে এই ঘরের মধ্যে….
আপু আমার কথা শুনে আবারো অবাক এত সিকিউরিটি আছে আর উপর অন্য কিছুও আছে?

আপুঃআরো কি আছে?
আমিঃওটা তোমার জন্ম দিনের সারপ্রাইজ হিসেবে রইল।
আপুঃজন্মদিত তো অনেক দেরি কখন ২৭ ডিসেম্বর।
আমিঃতো কি হয়ছে মাত্র দু’মাস ই তো।
আপুঃওকে।

আমিঃহুম ঐ সময় দেখবে।
আপুঃআচ্ছা।আর শুন এত চিন্তা করিস না।
আমিঃহুম।

তারপর আপুর সাথে সাথে আমিও বের হয়ে এলাম।রাশেদ আর মাহমুদ বসে আছে আমি যাওয়াতে আমার দিকে রাগী চোখে তাকাচ্ছে দুই জন।আমি জানি কেন এরা এভাবে তাকাচ্ছে, তাও না বুঝার ভান করে বললাম

আমিঃকিরে এভাবে তাকিয়ে কি দেখিস?
মাহমুদঃসময়টা বিশ সেকেন্ড করে দিস।
আমিঃকপাল….
রাশেদঃআরেকটু হলে মরতে বসছিলাম।
আমিঃওকে দেখি করা যায় কি না।
মাহমুদঃতোর রুমে এটা কিসের সিকিউরিটি? দেখলে তো একদম নরমাল ঘরের মতোই মনে হয়। কিন্তু ভেতরে গিয়ে তো দম বন্ধ হয়ে আসে।
আমিঃতেমন কিছু না নরমাল সিকিউরিটি।
রাশেদঃআহা নরমাল বুঝলাম, এত নরমাল যে আমরা দুই জন উপরে যাচ্ছিলাম আরেকটু হলেই…

আমিঃহা হা আচ্ছা বাদ দেয়।কাল বিকালে তোর বাসায় আসব থাকিস তো।
আমার কথা শুনে মাহমুদ, রাশেদ আর আপু একে অপরের দিকে তাকালো।
আমি বুঝলাম এরা সবাই খুব গভীর চিন্তা করতেছে, আমি কি করব গিয়ে বা কি করতে পারি,এসব নিয়ে একটু চিন্তা করতেছে বুঝলাম।

আমি সবাইকে স্বাভাবিক করতে বললাম…
আমিঃকিরে কপি খাবি তোরা?
রাশেদঃহুম খেতে পারি।

আমিঃআবার বলতো!
কথাটা আমি আগেও বুঝলে আবার জিজ্ঞেস করলাম।কারণ রাশেদ কপি খাওয়া কথা কেমন যেন পর পর করে বলল।
রাশেদঃনা মানে খাব।

মাহমুদ তো আমার কথা শুনে হাসা শুরু।আপু গিয়ে আমাদের জন্য কপি বানিয়ে আনলো।তারপর সবাই মিলে কপি খেতে খেতে কিছু সময় আড্ডায় মেতে উঠলাম।কিছু সময় পর রাশেদের ফোন আসলে সে কথা বলল।কথা শেষ করে বলল…
রাশেদঃতাহলে আজ আসা যাক আরো একটা কাজ পড়ে গেছে।
আমিঃওকে সাবধানে যাস আর কিছু কাজ এখনো কিন্তু আমাদের করা বাকি আছে সেগুলোর দিকে নজর রাখিস।
রাশেদঃওকে এসব নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
মাহমুদঃআমিও যায় আমারো বাসায় কাজ আছে।
আমিঃওকে বাসায় পৌছে ফোন দিস।আর কালকে বিকালের দিকে রাশেদের বাসায় চলে আসিস কথা আছে।
রাশেদঃএখন বললে তো হয় কি কথা?
আমিঃনা এখন বললে ভুল হবে।সময় আর পরিস্থিতি বুঝে বলতে হবে।
আপুঃকি সময় আর কি পরিস্থিতি এখানে বললেই তো পারিস।
আমিঃআন্দাজে কিছু বললে হয়তো ভুল হবে।তাই এখন বলছি না।বিকাল হলে বলব।
রাশেদঃওকে চলে আসিস।আমরা যাচ্ছি।

রাশেদ আর মাহমুদ চলে গেল।বসে বসে অনেক বোরিং হয়ে গেছি।তাই বিশ্বজগতকে একটু ঘুরে দেখা দরকার।ল্যাপটপ নিয়ে কিছু পোলাপানের সাথে কথা বললাম।পোলাপান বলতে বন্ধুদের সাথে।ভার্সিটিতে যায় না সে কখন থেকে তাই একটু কথা বললাম ওদের সাথে।আর বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা কিছু গোপন বাহিনীর সাথে কথা বলে নিলাম।বিশ্বে এখন উত্তেজনা মূলক অবস্থা। সব দেশেই কিডন্যাপিং, ছিনতায়,ধর্ষণ বেড়ে গেছে।

কথা শেষ করে ল্যাপটপ অপ করে দিয়ে, বেলকনিতে গিয়ে দাড়ি বাইরের পরিবেশে টা দেখছি।খুব সুন্দর মনোমুগ্ধকর পরিবেশ।পাখির ডানা ছেড়ে দিয়ে শুন্য আকাশে ভেসে থাকা আর কিচিরমিচির শব্দ আহ্ কি মন কেড়ে নেওয়া সুর।

পেছনে কারো উপস্থিত বুঝতে পেরে ফিরে তাকালাম। আপু পেছনে দাড়িয়ে আছে। আর আমি চোখ বন্ধ করে বলতে পারি এই রুমে কারো উপস্থিত মানে সেটা আপু।

আপুঃকি ভাবছিস এতো মনোযোগ দিয়ে?
আমিঃতেমন কিছু না, আকাশ টা দেখছি সাথে পাখির উড়াউড়ি।
আপুঃআহারে মনে হচ্ছে রোমান্টিকতার ছোঁয়া..
আমিঃআপুওওওও….
আপুঃনা মানে আমার মনে হল আরকি।ব্যাপার কি?
আমিঃকটকটি সামনে থাকলে কারো মনে রোমান্টিকতা আসতে পারবে বলে আমার মনে হয় না।
আপুঃথাক তুই গেলাম আমি।(আপু রেগে বের হয়ে গেল)

আমি আপুর চলে যাওয়া দেখে মনে মনে হাসতে লাগলাম।এমনিতে একটু রাগ করে আপু কিন্তু মনটা খুব ভালো। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আপু আমার।হয়তো সবার কাছেই তার আপু শ্রেষ্ঠ…….

বিকাল হতেই মাহমুদ ফোন দিয়ে বলল রাশেদের বাসায় যাচ্ছি কি না।আমি বললাম তাঁকে চলে যেতে আর আমি দশ মিনিটের মধ্যে আসছি।সে ফোন কেটে দিয়ে রাশেদের বাসায় চলে গেল…..

আমিও রেড়ি প্রিয় বাইকটা নিয়ে রাশেদের বাসায় চলে গেলাম।তিনজন সামনা-সামনি বসলাম।
রাশেদঃবল কি এত জরুরি তলব?
আমিঃআগে বল যা বলব তা সত্যি বলবি।
রাশেদঃতোর কাছে আবার লোকানোর মত কিছু আছি নাকি,বল কি জানতে চাস?
আমিঃআমার কি হয়েছিল,কিছু মনে নাই কেন আমার?
মাহমুদঃআরে কি বলিস তোর সবই তো মনে আছে।
আমিঃদেখ তোরা কথা ঘুরাবি না।কি হয়েছিল আমার বল?
রাশেদঃআরে তোর কিছু হয় নি তো।
আমিঃওকে ফাইন,ঐ লোক গুলো কারা যাদের আমি চিনি মনে হল?
রাশেদঃকোন লোক?(না বুঝার ভান করে)
আমিঃবোমাসহ যাদের ধরেছিল রনি।যদের পরিচয় কোথাও নেই।যদের আমি চিনি মনে হল।
রাশেদঃহয়তো হবে কোনো ক্রিমিনাল। আমিও জানি না।
আমিঃআর কত মিথ্যা বলবি তোরা জানিস আমি না মিথ্যা বলি না সহ্য করতে পারি।বল কারা ছিল?
মাহমুদঃআরে তুই এত সন্দেহ করছিস কেন?
আমিঃসন্দেহ নয় বিশ্বাস করি তোরা তাদের চিনিস।
মাহমুদঃতুই কি আবার এটা মনে করছিস, বোমা হামলা আমরা করাতে চেয়েছি?
আমিঃএটা না।শুধু এটা জানি লোক গুলোকে আমিও চিনি।এবং তোদের মধ্যেও কেউ চিনিস।
রাশেদঃনা জানি না কিছু।

আমিঃআন্ডার কভার এজেন্ট না তুই?(রাশেদের দিকে তাকিয়ে)

আমার কথা শুনে রাশেদ আর মাহমুদ দুই জন চুপসে গেল।যেন তারা অদ্ভুত কিছু দেখছে আমার মাঝে।

আমি তাদের চুপ থাকা দেখে আবার বললাম….
আমিঃকি হল বল আমি কে তাহলে?
রাশেদঃআসলে…..(আর কিছু বলতে না দিয়ে)
আমিঃকথা না ঘুরিয়ে সোজাসাপটা বল কে আমি?
রাশেদঃতুই আগে বল এসব কখন মনে পড়ল তোর?
আমিঃকাল মনে পড়ল।আমি তোদের বলছিলাম আদালত, ভুল বুঝাবুঝি, আমি কাউকে শুট করলাম এসব তোরা জানিস। কি হয়েছিল ওই সময়।কিন্তু তোরা আমাকে কিছু বলছিস না।কিন্তু কেন????

রাশেদঃতুই অসুস্থ যে কোনো সময় বড় এক্সিডেন্টে হয়ে যেতে পারে।তাই বলি নি।
আমিঃনা বল তোরা আমার কিছু হবে না।
রাশেদ বলতে যাবে কিন্তু মাহমুদ হাত চেপে ধরতে রাশেদ আবারো চুপ হয়ে গেল।এটা দেখে আমার রাগ ওঠে গেল।

আমি চিৎকার করে বললাম”আমি কে?যদি তোরা না বলিস তাহলে আমি এই শহর ছেড়ে চলে যা”কথাটি বলে আমি নিজ থেকে দাঁড়িয়ে গেলাম।আমার কথা শুনে তারা চুপসে গেল।

রাশেদ আমার গায়ে হাত দিয়ে টেনে আমাকে আবার বসিয়ে দিল।আর বললো…
রাশেদঃআরে শান্ত হয়ে যা আগে।বলছি সব..
আমি বসতে বসতে রাশেদকে বলতে বললাম।
রাশেদঃএই সময় এসব জানা তোর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
আমিঃলাভ ক্ষতির কথা এই মূহুর্তে আমি ভাবছি না।
মাহমুদঃদাড়া আপুকে আসতে বলি।
আমিঃনা আপুকে কেন আসতে বলবি, আপুকে এসবে একদম জড়াবি না।
রাশেদঃএই মূহুর্তে তোর যদি কিছু হয় তাহলে তুই রোবটের মত আচরণ করবি।এমন কি আমাদের উপর হামলাও করতে পারি।তোর দূর্বলতা হচ্ছে আপু।যদি এমন কিছু করিস যাতে তোকে কেউ থামাতে পারে না তখন কি হবে?শুধু আপু তোকে ঐ সময় থামাতে পারবে।তাই আপুকে না আনলে এসব কিছু বলা পসিবল নয়।

আমিঃনা বললাম তো আপুকে টানবি না এসবে।আর চিন্তা করিস না আমার কিছু হবে না।

তাও রাশেদ আপুকে ছাড়া বলতে কিছু বলতে চাচ্ছে না।আমার জোরাজোরি তে শেষে মুখ খুলতে বাধ্য হল।কিন্তু আমার কাছে থাকা গুলি নিয়ে নিল।যদি যদি ভারসাম্য ঠিক রাখতে না পেরে ওদের ওপর হামলা করি,সে ভয়ে।

আমিও গুলি সামনে থাকা টেবিলে রেখে দিলাম।তারপর এক গ্লাস পানি খেয়ে নিলাম।শান্ত থাকতে হবে যতটা পারি।তারপর রাশেদ বলা শুরু করল…….

#To_be_continue……
#গল্পটা_কেমন_হল_জানাবেন।
#ভালো_লাগলে_শেয়ার_করবেন।
#সবাই_নিয়মিত_নামাজ_আদায়_করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here