#Real_Love♥
#Oniya_Chowdhury
#Part_38+39
.
.
উনি এঁটো হাত দিয়েই শক্ত করে কোমড় জড়িয়ে ধরলেন!
– উফ্…মরে গেলাম!আস্তে ধরুন!
– ইশ্!টিয়াপাখি…এইমুহূর্তে তোমাকে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে!
– অসম্ভব!!!দেখি…ছাড়ুন!
– উহু!
– আহ্!দম নিতে পারছি না!
– তুমি আবার শাড়িতে এইসব সুঁই লাগিয়েছো?কালরাতেই না মানা করেছি এইসব সুঁইপিন না লাগাতে!রাতে দেখলে না এইসব হাঁবিজাঁবি খুলতেই আমার একঘন্টা লেগে গিয়েছিলো!
– আপনি এখন পিন খোলার জন্য কেনো উঁঠেপড়ে লেগেছেন?আমি নিচে যাবো!ছাড়ুননন….
– হুশ্!
বলেই উনি শাড়ির পিনটা খুলেই জোর করে আমার ঠোঁটজোড়া নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিলেন!
.
.
সাড়ে বারোটার দিকে রুম থেকে বেরিয়ে নিচে নামতেই দেখলাম রিলেটিভস্ সবাই এসে গেছে!আমার দিকে সবার নজর পরতেই কাজিনগুলো এসে একে একে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– বাব্বাহ্!আপির তো দেখি একদিনেই গ্ল্যামার একশোগুন বেড়ে গিয়েছে!উম্মম… সব ভাইয়ার কাঁরসাজি,রাইট?
– মুখে লাগাম লাগা অসভ্যগুলো!
.
নাফিসা ওদের কথায় কোনো পাত্তা না দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরেই কান্না করে দিলো!আমি নাফিসার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললাম,
– কাঁদছিস কেনো?
– রাতে একা একা শুঁতে হয় আমাকে!গল্প করতে পারি না!শত শত কথা পেটের ভেতর আটকে রাখি!তুমি জানোই তো আমার পেট কত পাতলা!আজ বাসায় যেয়ে আমার সাথে ঘুমাবে,হুম!
– পাগলি!উনাকে রাজি করাতে পারলে আমার কোনো আপত্তি নেই!
– ভাইয়া কই?সেই কখন দেখেছিলাম!একবার দেখা করেই লে পাত্তা!
.
নাফিসার কথা শুনে আমি একটু কেঁশে বললাম,
– এতক্ষণ ঘুমাচ্ছিলো!মাত্রই উঠে রেডি হচ্ছে!চল তোরা….বসে কথা বলি!
মিম বললো,
– আপু!চাচ্চু তোমাকে আর ভাইয়াকে আজ তোমাদের বাংলোতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে!কিন্তু আমরা চাই তুমি আজ রাতে ভাইয়াকে নিয়ে দাদুর ফ্লাটে থাকো!তাহলে আমরা একটু গল্প করতে পারবো!ফ্লাটটা পুরো ফাঁকা পড়ে আছে!আমরা অন্নেক সুন্দর করে পুরো ফ্লাট সাঁজিয়েছি!শুধুমাত্র তোমাদের জন্য!প্লিজ….তুমি একটু চাচ্চুকে বুঝিয়ে বলো!
– আচ্ছা!ঠিক আছে!
.
আমি ওদের বসিয়ে রেখে কিচেনে আসলাম!মনি ছাড়া আর কাউকে দেখতে পেলাম না!
– মনি,আন্টি কোথায়?
– মাত্রই রুমে গেলো!এতক্ষণ আপনেরে খুজতেছিলো!আমাকে ডাকতে পাঠাইছিলো,যহন দেখলাম ভাইয়ের রুমের দরজা লাগানো অমনি চইলা আইছি!
মনির কথা শুনে আমি দ্রুত কিচেন থেকে বের হলাম।ভাবলেশহীনভাবে একনাগাড়ে কথাগুলো বলছিলো!কোথায় কি বলতে হয় কিচ্ছু জানেনা!
.
আন্টির রুমে ঢুকেই দেখলাম আন্টি টাওয়াল দিয়ে চুল মুচছেন!মাত্রই শাওয়ার নিয়ে বের হলো মনে হয়।আঙ্কেল আলমারিতে কিছু একটা খুঁজছেন।
আন্টি আমাকে দেখতে পেয়েই বললেন,
– ওইতো হিয়া মা এসে গেছে।তুমি যেনো কি বলতে চেয়েছিলে,বলো।
আঙ্কেল আলমারি লাগিয়ে আমাকে বেডে বসিয়ে নিজে পাশে বসে বললেন,
– কথাগুলো পরেও বলা যেতো।কিন্তু সময় বলেও একটা ব্যাপার আছে!আমি খুবই ব্যস্ত মানুষ!বাড়িতে থাকার সময়টুকুও পাই না!আসলে ডেকেছিলাম…তোমার স্টাডির ব্যাপারে কিছু কথা বলবো বলে!
.
আঙ্কেলের কথাটা শুনেই আমার মাথায় বাঁজ পরলো!এখানেও পড়াশোনা!আঙ্কেল আবার আব্বুর মতোই পড়াশোনার ব্যাপারে স্ট্রিক্ট নয়তো!ওহ্ মাই গড!!!
.
আঙ্কেল আমার মাথায় হাত রেখে বললেন,
– আমি যেমন ভালো মানুষ তেমনি কিন্তু খুব রাগী!স্টাডি নিয়ে ফাঁকি দেওয়া আমি একদম সহ্য করবো না!আমার স্বপ্ন আমার দুইছেলের বউ-ই হায়ার এডুকেটেড হবে!ইয়াশের অত্যাচারে আমরা প্রায় বিরক্ত হয়ে পরেছিলাম যার জন্য এতো তাড়াতাড়ি তোমাকে এ-বাড়িতে নিয়ে আসা!এরমানে এই নয় যে তুমি ফ্রিলি স্টাডি অফ দিয়ে ঘুরে বেরাবে!আমি…..
ইয়াশ ভাবি বলে ডাকতে ডাকতে রুমে ঢুকে পরলো!আঙ্কেল আর কিছু বলতে পারলেন না!আন্টি বললেন,
– আসছে….তোমার ছোট ছেলে!
আঙ্কেল আর কিছু না বলে মাথা চুলকাতে চুলকাতে চুপচাপ উঠে রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন!আন্টি রুম থেকে চলে যেতে যেতে বললেন,
– সামলাও এখন একে!
.
ইয়াশ তিনটা চিপস্ এর প্যাকেট বুকের সাথে চেঁপে ধরে আছে!আমি চিপস্ গুলো পাশে রেখে ইয়াশের দুইহাত ধরে টেনে কাছে এনে বললাম,
– কি হয়েছে সোনাটার?
ইয়াশ আমার গলা জড়িয়ে ধরে বললো,
– সিঁড়ি দিয়ে যখন উঠছিলাম ভাইয়া তখন নিচে নামছিলো!আমাকে দেখেই ভাইয়া আমার থেকে একটা চিপস্ নিয়ে সাথে সাথেই ছিঁড়ে খেতে শুরু করলো!আর নিচের ওই আপুগুলো আমাকে দেখেলেই শুধু বলে ওঠে “ইয়াশ! আমি তোমাকে বিয়ে করবো!”
.
ইয়াশের কথা শুনে আমার প্রচুর হাসি পেলো!কিন্তু হাসলাম না!হাসি আটকে রেখে বললাম,
– আপুগুলো তো খুব পঁচা!ছিঃ ছিঃ…..এতো পিচ্চি একটা ছেলেকে বিয়ে করতে চায়!
ইয়াশ একটা চিপস্ পাশ থেকে নিয়ে বললো,
– খুলে দাও!
আমি চিপস্ এর প্যাকেটটা খুলে দিয়ে বললাম,
– ইয়াশ,আজ আমার সাথে একটা জায়গায় যাবে?
– কোথায়?
– আমাদের বাসায়!
– হুম যাবো!হা করো…
ইয়াশ একটা চিপস্ আমাকে খাইয়ে দিলো!
.
হঠাৎ উনি রুমে ঢুকলেন!নেভি-ব্লু কালার শার্ট ইন করে পরেছেন!একেবারেই ফরমাল লুক!
শার্টের হাতার বোতাম লাগাতে লাগাতে বললেন,
– রিপন এক্সিডেন্ট করেছে!হসপিটালে এডমিট!আমি দেখতে যাচ্ছি!তুমি ওদের সাথে চলে যেয়ো!আমি হসপিটাল থেকে সরাসরি তোমাদের বাসায় চলে যাবো!
.
কথাটা বলেই উনি আমার আর ইয়াশের কপালে একটা করে চুমো দিয়ে বেরিয়ে গেলেন!
ইয়াশ বললো,
– ভাবি…
– হুম!
– রিপন কে?
– তোমার ভাইয়ার ফ্রেন্ড হবে হয়তো!
– ওহ্!
.
.
পাঁচটার দিকে আমরা রওনা দিলাম আমাদের বাসার উদ্দেশ্যে!বাহির
ে মাগরিবের আজান দিচ্ছে!
বাসায় পৌছতে প্রায় আধাঘন্টা লেগে গেলো!এ্যাপার্টমেন্টের একেবারে সামনে মাইক্রো থামানো হলো!ইয়াশকে নিয়ে নেমে আমি আগে আগে হাঁটতে লাগলাম!আব্বু বোনদের নিয়ে পেছন পেছন আসছে!
.
বাসার সামনে এসে কলিংবেল চাঁপতে হলো না!মেইনডোর হাট করে খোলা!মেইনডোর ভেদ করে বাসার ড্রইংরুমে ঢুকতেই দেখলাম আম্মু তিনচাচির সাথে গল্প জুড়ে দিয়েছে!আমাদের দিকে আম্মুর নজর পরতেই আম্মু একপ্রকার দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো!
কিছুক্ষণ ওভাবে থাকার পর ছেড়ে দিয়ে বললো,
– কত্ত বড় হয়ে গেছিস মা!
– এ্যাহ্…..বললেই হলো!একদিনে মানুষ কখনো বড় হয় নাকি?
আমার কথা শুনে আম্মু হেসে আমার থুতনীতে চুমো খেয়ে বললো,
– ইফাজ কই?
– উনি সাতটা-আটটার দিকে আসবেন!উনার এক ফ্রেন্ড হসপিটালে ভর্তি!তাকে দেখতে হসপিটালে গেছেন!
– ওহ্!
ছোট চাচি কাছে এসেই ইয়াশকে কোলে তুলে নিলো!একে একে সবাই আমাকে জড়িয়ে ধরে ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করলো!
.
আমি সোফায় বসতেই ইয়াশ জোর করে ছোট চাচির কোল থেকে নেমে আমার পাশে এসে একদম ঘেষে বসলো!
মেজো চাচি জিজ্ঞেস করলেন,
– হিয়া,ওরা সব কই?
– আসছে!লিফ্টে মনে হয়!
– ওহ্।
কিছুক্ষণের মধ্যেই আব্বু,চাচ্চু,ফু
প্পি,কাজিনগুলো সবাই একসাথে বাসায় ঢুকলো!আমি আর ইয়াশ আস্তে করে কেটে পরলাম!এখন এখানে মাছের বাজার বসবে!
.
.
আমি রুমে এসে ইয়াশকে বেডের উপর বসিয়ে বললাম,
– আমি একটু ওয়াশরুম থেকে আসছি,হুম?
– আচ্ছা!
আমি ইয়াশকে আমার ফোনটা দিয়ে আলমারি থেকে একটা লং-কামিজ বের করে ওয়াশরুমে ঢুকলাম!
.
শাড়িটা চেঞ্জ করে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়েই দেখলাম বেডের উপর ইয়াশকে ঘিরে কাজিনগুলো বসে আছে!আপু ইয়াশকে কোলে নিয়ে আছে!আমি শাড়ি সোফায় রেখে ওদেরকে সরিয়ে বেডের একদম মাঝখানে বসে পরলাম!ইয়াশ লাফ দিয়ে এসে আমার কোলে বসলো!
আমি আঙ্গুল দেখিয়ে সবগুলোকে রুম থেকে বের হতে বললাম!সাথে এও বলে দিলাম “তিনঘন্টার ভেতর যেনো আমাকে কেউ ডিস্টার্ব করতে না আসে!আমি এখন ঘুমাবো!”
আমার কথা শুনে আপু বলে উঠলো,
– তোর তো এই রুমে থাকা চলবে না!আমরা সবাই মিলে কি সুন্দর করে ওই ফ্লাটটা সাজালাম!চল…চল…এখানে আর এক মুহূর্তও না!
.
সবগুলো জোর করে দাদুর ফ্লাটে নিয়ে এলো!আমি পুরো ফ্লাটে একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম!কোনো ফার্নিচার নেই!ড্রইংরুমে শুধু সোফা রাখা!চারপাশে ডিফারেন্ট কালারের গোলাপ লাইন করে ঝুলিয়ে রাখা!ফ্লোরে গোলাপের পাঁপড়ি ছড়িয়ে আছে!বেডরুমে ঢুকেও সেই একই সাঁজ দেখতে পেলাম!
.
.
ওরা আমাকে রুমে রেখে চলে গেলো!আমি ইয়াশকে বেডের উপর শুইয়ে দিয়ে পাশে আমি শুয়ে পরলাম!ইয়াশের মাথায় হাত বুলাতে লাগলাম!ইয়াশ আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– ভাবি…
– হুম!
– জানো,কয়েকদিন পর আমাদের বাড়িতে নতুন বাবু আসবে!
– মানে?
– তুমি আসার আগেরদিন রাতে আমি ভাইয়ার কাছে শুয়ে ছিলাম!ভাইয়া ওইদিন বলেছিলো আমাদের বাড়িতে নাকি কয়েকদিন পর মাহিনের মতো আরেকটা বাবু আসবে!
ইয়াশের কথা শুনে আমি চঁমকে উঠলাম!
ইয়াশ আবার বলতে শুরু করলো,
– ভাইয়া ওইদিন আমাকে অনেক আদর করেছিলো!তোমার মতো মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছিলো!
ইয়াশের কথাগুলো শুনে আমি ইয়াশের কঁপালে দুটো চুমো দিয়ে ডিভলি জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করলাম!
.
.
(চলবে)
Real_Love♥
Oniya_Chowdhury
Part: 39
.
.
রাত নয়টার দিকে ঘুম ভেঙ্গে গেলো!ইয়াশের দিকে তাকাতেই দেখলাম ও গভীরভাবে ঘুমিয়ে আছে!আমি কোমড় থেকে ইয়াশের হাতটা সরিয়ে উঠে বসলাম!সাথে সাথেই আমার চোখ সামনের সোফায় পড়লো!উনি বসে বসে ফোন স্ক্রল করছেন!আমি চুলগুলো হাতখোঁপা করতে করতে বললাম,
– কখন এসেছেন?
উনি আমার দিকে তাকানোর সাথে সাথেই বলে উঠলেন,
– স্টেচু!
আমি হা হয়ে উনার দিকে তাকালাম!উনি সাথে সাথেই একটা পিক তুলে নিলেন!তারপর বললেন,
– হুম ডান!একঘন্টা হলো এসেছি!এতক্ষণ জামাইআদর করলো সবাই মিলে!সাতদিনের খাবার একদিনে খেয়ে শেষ করলাম!
কথাটা বলেই উনি আমার দিকে ফোনের স্ক্রিনটা ধরে বললেন,
– দেখো তো কেমন লাগছে আমার জানটাকে?
আমি ফোনের দিকে তাকাতেই দেখলাম কিছুক্ষণ আগের তোলা পিকটা!আমি ভ্রু কুঁচকে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
– এটা কোনো পিক হলো?
– হুম!আমার কাছে এগুলোই পিক!সুন্দর লাগছিলো যখন খোঁপা করছিলে!ওয়েট….
কিছুক্ষণ পর উনি আমার আর ইয়াশের ঘুমন্ত কয়েকটা পিক দেখিয়ে বললেন,
– দেখো তো এগুলো কেমন হয়েছে?
পিকগুলো একটু আগের তোলা!আমি পিকগুলোর দিকে তাকিয়ে উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বললাম,
– বাহ্!অনেক সুন্দর লাগছে তো আমাদের দু’জনকে!
– হুম!বুঝতে হবে তো পিকটা কে তুলেছে!
– হয়েছে…ঢং!রিপন ভাইয়া এখন কেমন আছেন?
উনি সোফার সাথে হেলান দিয়ে বললেন,
– বেশি ভালো না!কাধের দিকের একটা হাড় ভেঙ্গেছে!হিরোদের মতো করে ট্রেনের গতিতে বাইক চালাচ্ছিলো!উল্টোপাশ থেকে গাড়ি এসে দিলো ধাক্কা,ব্যস!
– ভাইয়ার বাবা-মা জানেন?
– হুম!এতো বড় একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে না জানিয়ে থাকতে পারবে নাকি!
.
আমি আর কথা না বাড়িয়ে রুম থেকে বেরুতেই উনি দরজা ধরে পথ আটকে বললেন,
– কোথায় যাওয়া হচ্ছে?
– আম্মুর কাছে যাবো!
– পরে….এখন না!
আমি উনার কথার গুরুত্ব না দিয়ে উনাকে ক্রস করে আসতে নিলেই উনি হাত টান দিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
– তোমাকে বলেছিলাম না এইসব কামিজ না পরতে!শাড়ি আনো নি?
– উহুম!আপনি খুব শক্ত করে ধরেন!ব্যাথা লাগে….ছাড়ুন!
– একটু ব্যাথা লাগলে কিছু হয় না!
– আমার হয়….ছাড়ুনন!
– কি হয়…বেবি?
উনার কথাটা শুনে উনার হাতে মারতে মারতে বললাম,
– অসভ্য কোথাকার!
– আমি এমন-ই!আমি ইউএসএ যাওয়ার আগে যেই শাড়িগুলো দিয়েছিলাম যাও তো ওগুলো নিয়ে আসো!
– কেনো?
– প্রশ্ন না করে যেটা বলেছি সেটা করো!
বলেই উনি ছেড়ে দিলেন!
আমি ঠাঁই দাড়িয়ে থেকে বললাম,
– আমি শাড়ি পরবো না!
– তোমাকে শাড়ি পরতে বলেছে কে?
– তাহলে আনতে বলছেন কেনো?
– আমি দেখবো…হয়েছে?যাও এখন নিয়ে আসো!
আমি আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ আমাদের বাসায় চলে এলাম!
.
আব্বু-আম্মুর সাথে কিছুক্ষণ ভালোমন্দ কথা বলে আমি আমার রুমে চলে এলাম।নাফিসা কার সাথে যেনো ফোনে কথা বলছিলো।আমি আলমারি থেকে উনার দেওয়া চারটা শাড়ি বের করে রুম থেকে বেরিয়ে দাদুর ফ্লাটে চলে এলাম।
.
ড্রইংরুম থেকে ডাইনিং-এর সাইডটা পুরোটুকু দেখা যায়!ড্রইংরুমে পা রাখতেই ডাইনিং-এ চোখ পরলো!দেখলাম উনি দাড়িয়ে দাড়িয়ে গ্লাসে পানি ঢেলে পানি খাচ্ছেন!আমি উনার কাছে যেয়ে ডাইনিং টেবিলের উপর শাড়িগুলো রেখে ইয়াশের কাছে চলে এলাম!
.
কিছুক্ষণ পর নাফিসা রুমে ঢুকলো!নাফিসাকে দেখে আমি প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,
– এখানে কেনো?
– ভাইয়া যে ফোন করে আসতে বললো!
– কেনো?
– ইয়াশের কাছে থাকার জন্য!
– মানে?আজ ওর কাছে আমি থাকবো!
– হবে না!ভাইয়ার আদেশ আজ রাতে ইয়াশের কাছে আমি থাকবো!
– বাসা থেকে বের হ্!আমি ওকে তোর কাছে রাখার জন্য এনেছি?
নাফিসা রেগে গিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে কিছুক্ষণ পর উনাকে নিয়ে রুমে ঢুকলো!আমি ততক্ষণে শুয়ে পরেছিলাম!উনি আমার কাছে এসে জোর করে আমাকে উঠিয়ে নাফিসাকে ইয়াশের পাশে শুঁতে বললো!
আমি রেগে গিয়ে উনাকে বললাম,
– ইয়াশ উঠে আমাকে পাশে না পেলে কেলেঙ্কারী বাঁধিয়ে দিবে!আমি আজ ওর কাছেই শুঁবো!
উনি আমাকে টেনে রুম থেকে বের করে
নাফিসাকে দরজা ভেতর থেকে লক করতে বললেন!আমাকে টানতে টানতে অন্যরুমে নিয়ে এসে বললেন,
– ইয়াশ একবার ঘুমিয়ে গেলে অতি সহজে জাগে না!আর ঘুমের ঘোরে ইয়াশ টেরও পায়না কে ওর পাশে শুঁয়ে আছে!বেডের উপর যেই শাড়িটা রেখেছি ওটা পরে নাও!ততক্ষণে অনিমের সাথে একটু দেখা করে আসি!
বলেই উনি বাহির থেকে রুম লক করে দিয়ে চলে গেলেন!
.
আমি রাগে দাত কটমট করে বেডের উপর যেই শাড়িটা রাখা ছিলো সেটাসহ সোফার উপর রাখা বাকি তিনটা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে যেয়ে সবগুলো পানির মধ্যে ভিঁজিয়ে রেখে রুমে চলে আসলাম!লাইট অফ করে দিয়ে চুপচাপ লেপের নিচে শুঁয়ে পরলাম!জোর করে চোখ বন্ধ করে আছি!একটু আগে ঘুম থেকে উঠেছি আর ঘুম আসবে না আমার!বিরক্ত লাগছে খুব….
বালিশটা মাথার নিচ থেকে নিয়ে মাথার উপর চেঁপে ধরলাম!
.
অনেক্ষণ পর রুমের ভেতর থেকে দরজা লক করার শব্দে বুঝলাম উনি এসেছেন! আমি হাত-পা সহ পুরো শরীর শক্ত করে রাখলাম!আমি একটুও নড়বো না!
.
বেড সামান্য কেঁপে উঠলো বুঝলাম উনি মাত্র বেডে বসলেন!আমি বালিশের নিচ থেকে উঁকি দিলাম দেখার জন্য উনি কি করছেন!
শার্টটা খুলে সোফার উপর ঢিল মেরে রেখে দিলেন!উঠে দাড়ালেন!উনার দাড়ানো দেখে আমি দ্রুত চোখ বন্ধ করে আগের ন্যায় বালিশের নিচে লুকিয়ে পরলাম!
.
উনি লাইটটা অন করে বললেন,
– হিয়া….
আমি কোনো রেসপন্স করলাম না!
– হিয়া আমার কাপড়-চোপড় আনো নি?
উনার কথাটা শোনামাত্রই অপ্রস্তুতভাবে মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো “ওহ্ শীট!”
উনি আবার বলে উঠলেন,
– হিয়া….লাগেজটা কই?
.
উফ্!আর চুপ থাকতে পারলাম না।আমি বালিশের নিচ থেকেই জবাব দিলাম,
– আমাদের বাসায়।
– বালিশের নিচে মাথা কেনো তোমার?
– …..
– থাক…বলতে হবে না!যাও,দ্রুত লাগেজটা নিয়ে আসো!
– পারবো না!
– পারবে না মানে?এখন কি আমি এই আন্ডারওয়ার পরে ঘুড়ে বেরাবো?
উনার কথাটা শোনামাত্রই চোখ বন্ধ রেখেই লাফ দিয়ে উঠে বললাম,
– ছিঃ!নির্লজ্জ্ব কোথাকার!আপনাকে প্যান্ট খুলতে বলেছে কে?
– নির্লজ্জ্বের বউ….আমি এখনো প্যান্ট খুলি নি!কথার কথা বললাম আরকি!
.
উনার কথাটা শুনে আমি মিটমিট করে চোখ খুলে উনার দিকে তাকালাম!উনি সত্যি সত্যিই প্যান্ট পরে আছেন!আমি আবার আগের ন্যায় মাথায় বালিশ চেঁপে শুয়ে পরলাম!
.
অনেক্ষণ উনার কোনো সাড়াশব্দ পেলাম না!হঠাৎ ওয়াশরুম থেকে চিৎকার শুনতে পেলাম!
– শাড়িগুলো এভাবে ভিঁজিয়ে রেখেছে কে?
উনার চিৎকার শুনে আমি আস্তে করে লেপটা টেনে লেপের ভেতর গুটিশুটি মেরে শুঁয়ে পরলাম!
উনি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে রুমে ঢুকে লাইটটা অফ করে দিলেন!কিছুক্ষণ পর বেড নড়তে লাগলো আর লেপে সামান্য টান পরলো!উনি যে লেপের ভেতর ঢুকছেন সেটা ঠিক টের পাচ্ছি! হঠাৎ উনার ভেঁজা হাত আমার কোমড় স্পর্শ করতেই আমি কেঁপে উঠলাম!
.
.
(চলবে)