#Real_Love♥
#Oniya_Chowdhury
Part:27+28
.
.
বিকেলের দিকে ইফাজ আমাদের বাসায় এসে সব কাজিনদের নিয়ে ঘুরতে বের হলো!বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে রাতে রেস্টুরেন্টে ডিনার করে নয়টার দিকে বাসায় ফিরলাম। ফ্রেশ হয়ে আগে একটু ঘুমিয়ে নিলাম।প্রচুর টায়ার্ড লাগছে।আজ আমি উনাকে একটুও কাছে পাই নি।সারাক্ষণ ইফাজ ওদের সাথেই ছিলো।
.
রাত তিনটার সময় ফোনের ভাইব্রেশনে ঘুম ভাঙ্গলো!আমি বালিশের এপাশ ওপাশ হাতিয়ে কোনোরকমে ফোনটা কানের উপর রেখে বললাম,
– হ্যালো!
– ……
কেউ কোনো কথা বলছে না।আমি ফোনটা সামনে ধরে স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখলাম ইফাজ ফোন করেছে!আমি তাড়াতাড়ি উঠে বললাম,
– চুপ কেনো….কথা বলছেন না কেনো?
– উম্মম…..চলো আজ পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে ফেলি!
হঠাৎ উনার এরকম কথা শুনে আমি থ্ হয়ে গেলাম!এতোরাতে ফোন দিয়ে হঠাৎ এসব কথা কেনো বলছেন?পাগল টাগল হয়ে গেলেন নাকি?
আমি কিছুটা বিব্রত হয়ে বললাম,
– রাত তিনটা বাঁজে….না ঘুমিয়ে এসব কি বলছেন?
– ঘুমিয়ে ছিলাম!একটু আগে তোমাকে নিয়ে খুব সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখে উঠে পরলাম!
আমি অবাক হয়ে বললাম,
– আমাকে নিয়ে?
– হুম!
– কি দেখেছেন?
– বলবো?
– হুম!
– স্বপ্নে দেখেছি আমাদের একসাথে চারটা বেবি হয়েছে।হঠাৎ করে বাবুদের তিনবছর হয়ে গেলো!তুমি বাবুদের খুব মারছো…আমার তো দেখে খুব রাগ হলো!আমি যেই তোমাকে থামাতে গেলাম সাথে সাথেই আমাকেও মারতে শুরু করলে!আর চিৎকার করে বলতে লাগলে “সবগুলো হয়েছে বাপের মতো!জ্বালিয়ে খেলো আমাকে!আমার কষ্টটা বোঝার ক্ষমতা কারোর নেই।পেটে ধরলাম আমি!জন্ম দিলাম আমি!লালন পালন করলাম আমি!সেই তোরাই কিনা বাপের কথা শুনিস!”আরো অনেক অনেক বোকা দিলে!
উফ্!তোমাকে এভাবে যে কবে লাইভ দেখতে পাবো!ভাবতেই অবাক লাগে!কি সুন্দর দেখাবে তোমাকে ওই অবস্থায়!
.
উনার কথাগুলো শুনে প্রথমে একটু অবাক হয়ে পরে নিজের অজান্তেই হেসে দিলাম!
.
সত্যিই কি মা হলে আমি ওরকম করবো?উনার গায়ে হাত তোলার সাহস হবে আমার?ভুল করে তুলেও যদি ফেলি উনি কি উল্টো আমার গায়ে হাত তুলবেন নাকি আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে থামানোর চেষ্টা করবেন?উনি বাবা হলে কেমন দেখাবে উনাকে?ইশ্!খুব দেখতে ইচ্ছে করছে!
আমি বুকে হাত দিয়ে অনেক সাহস নিয়ে বলে ফেললাম,
– আপনাকে আমার খুব বাবুদের বাবা হিসেবে দেখতে ইচ্ছে করে!খুব….
কথাটা বলেই আমি সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেললাম!এইমুহূর্তে আমি উনার সামনে থাকলে নিশ্চিত আমাকে খেয়ে ফেলতো!
উনি অনেকটা জোরে বলে উঠলেন,
– এটা তুমি কি বললে টিয়াপাখি!পুরো বারোটা বাজিয়ে দিলে আমার!
.
আমি কিছুই বলতে পারলাম না!হাত-পা ভয়ানকভাবে কাপঁছে!
অনেক্ষণ উনি চুপচাপ থেকে বললেন,
– নেক্সট ইয়ারে আমাকে বাবা হওয়ার সুযোগ দাও না,টিয়াপাখি!আঙ্কেলকে রাজি করিয়ে চলে আসো না আমার কাছে।
উনার কথাটা শুনে আমি অবাক হয়ে বললাম,
– আমি এখনও অনেক পিচ্চি!বাচ্চাকাচ্চা সামলানোর বয়স এখনো হয় নি আমার!
– তুমি পিচ্চি বাট তোমার হাজবেন্ড তো পিচ্চি না!সে একাই একশ!নিজের বাচ্চাকাচ্চাদের সাথে তার বাচ্চা বউটাকেও সামলাতে পারবে!কালই আঙ্কেলকে বলে চলে আসো তো!ভালো লাগছে না আর এভাবে দিন কাটাতে!
উনার কথা শুনে আমি মজা করে বললাম,
– একটা কলবালিশ কিনে আনুন!ভালো লাগবে!
– অলরেডি তিনটে কলবালিশ আমার বেডে একা একাই গড়াগড়ি খায়!আর কয়টা লাগবে!এখন একটা ব…..
– শুনুন!
আমি আর উনাকে কথা বাড়াতে দিলাম না!
– কি?
– আন্টি আঙ্কেল কেমন আছেন?ইয়াশটা কি করে?ঘুমোচ্ছে?
– বউ….কথা ঘুরাচ্ছো কেনো?
এভাবেই পুরো রাতটা কথা বলে কাটিয়ে দিলেন!একটুও ঘুমোতে দেন নি।
ভোর পাচঁটার সময় উনি ফোন রেখে দিলেন।
.
এভাবেই আরো দুইদিন চলে গেলো।নাফিসা আর আমার ছুটি একেবারে শেষের দিকে।আজই চিটাগাং রওনা দিবো!সন্ধ্যেই ট্রেন!সকাল থেকেই মনমরা হয়ে বসে ছিলাম! কিচ্ছু ভালো লাগছিলো না।আমার সব কাজিনরা এখানে পড়াশোনা করে।আমাদের দুইবোনকেও এখানে ভর্তি করে দিতো।বিরক্ত লাগে কিছুদিনের জন্য ঢাকায় এসে চিটাগাং যাওয়া।মনে হয় কারোর বাসায় ঘুরতে আসি কিছুদিনের জন্য!
দুপুর তিনটার দিকে আমি ড্রইংরুমে বসে চিনির পানির মধ্যে মুড়ি ভিজিয়ে খাচ্ছিলাম আর টিভি দেখছিলাম।হঠাৎ কলিংবেলের শব্দে আমি বাটিটা সেন্টার টেবিলে রেখে মেইনডোর খুলতেই পুরো অবাক হয়ে গেলাম!
ইফাজ আর ইয়াশ সামনে দাড়িয়ে!ইয়াশ ধাক্কা দিয়ে মেইনডোর পুরোটুকু খুলে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– সারপ্রাইজ!
আমি ইয়াশের মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম,
– একটু পর চলে যাবো আর তুমি এখন এসেছো সাত্বনা দিতে?
– উহুম…তোমার সাথে আমিও যাবো!
ইয়াশের কথা শুনে আমি অবাক হয়ে ইফাজের দিকে তাকাতেই ইফাজ বললো,
– আজ তুমি চিটাগাং চলে যাচ্ছো কালরাতে কথাটা আম্মুকে বলছিলাম!ইয়াশ আম্মুর কাছেই বসে ছিলো!কথাটা শোনার পর তুমি যাওয়ার আগে তোমার সাথে দেখা করার জন্য জেদ করছিলো,তাই নিয়ে এলাম!
.
ইফাজের কথা শুনে আমি ইয়াশের দিকে তাকাতেই ইয়াশ মিষ্টি করে একটা হাসি দিলো।আমি ইয়াশের সামনে বসে ইয়াশের ঠোঁটের সাইডে একটা চুমো দিলাম!তখনই ইফাজ বলে উঠলো,
– পাওনা রইলো!
উনার কথাটা শুনে আমি ভ্রু কুচঁকে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
– কি?
উনি উনার একটা আঙ্গুল নিজের ঠোটেঁ রেখে বললো “এইটা!”
লজ্জায় আমি চোখ ফিরিয়ে ইয়াশের দিকে তাকালাম!ইয়াশকে সোফায় বসিয়ে উনাকেও বসতে বললাম!
.
আমি আম্মুকে ডাকতে আম্মুর রুমে আসলাম।আম্মু বসে বসে ফোনে গেইম খেলছিলো।আম্মুর এই জিনিসটা আমার খুব ভালো লাগে।পিচ্চিদের মতো টাইম পেলেই গেইম খেলে।আব্বু রুমে নেই!একটু আগেই বাহিরে গিয়েছে।আম্মুর ফোনটা আমি হাত থেকে নিয়ে বললাম,
– জামাই এসেছে!
আমার কথা শুনে আম্মু অবাক হয়ে বললো,
– কার জামাই?
– তোমাদের মেয়েজামাই!
আমার কথা শুনে আম্মু দ্রুত বিছানা ছেড়ে উঠে শাড়ীর আচঁল মাথায় দিয়ে ড্রইংরুমে চলে গেলো।পেছন পেছন আমিও গেলাম।ইয়াশ টিভিতে কার্টুন দেখছিলো।আর ইফাজ ফোন দেখছিলো!
আম্মুকে দেখেই ইফাজ উঠে সালাম দিলো।ইফাজের দেখাদেখি ইয়াশও উঠে সালাম দিলো।ইয়াশের কান্ড দেখে আম্মু ইয়াশকে টান দিয়ে কোলে তুলে গালে একটা চুমো দিয়ে বললো,
– কেমন আছো?
– ভালো!আপনি?
– ওরে বাবা…..আম্মু ইয়াশের গালে আরেকটা চুমো দিয়ে বললো,
– খুব ভালো আছি!তোমার আব্বু আম্মু কেমন আছে?
– ভালো!
আম্মু কিছুক্ষণ ইফাজের সাথে কথা বলে ইয়াশকে নামিয়ে দিয়ে বললো,
– তোমরা একটু বসো!আমি আসছি!
আম্মু কিচেনে চলে গেলো।আমি যেয়ে ইয়াশের পাশে বসে ইয়াশকে জড়িয়ে ধরে একসাথে কার্টুন দেখছি!হঠাৎ সামনে মুড়ির বাটির দিকে চোখ পরতেই জিভে কামড় দিলাম।ইফাজ দেখেছে নাকি আল্লাহই জানে!নিশ্চয় দেখেনি!দেখলে তো এতক্ষণে আমাকে মেরে ফেলতো!এমনিতেই শরীরের এই অবস্থা তার উপর বসে বসে মুড়ি খাচ্ছি!
.
আমি যেই মুড়ির বাটিটা হাতে নিতে যাবো সেই মুহূর্তে ইয়াশ বলে উঠলো,
– ভাবী এটা কি?
ইয়াশের কথাটা শুনে ইফাজ বাটির দিকে তাকালো!আমি শেষ!!!
ইফাজ বাটিটা হাতে নিয়ে বললো,
– পানির মধ্যে মুড়ি!কে খাচ্ছিলো?
আমি মাথা নিচু করে আছি!উনি জিঙ্গেস করলেন,
– নাফিসা কোথায়?
উনার প্রশ্নটা শুনে হাফ ছেড়ে বাচলাম!প্রসঙ্গ পালটেছে!আমি খুশিমনে বললাম,
– ঘুমোচ্ছে!
ইফাজ আবার বললো,
– আন্টি এতক্ষণ কি করছিলো?
– রুমে বসে বসে গেইম খেলছিলো!
– আর আঙ্কেল?
– আব্বু তো চাচ্চুর সাথে বাহিরে গিয়েছে!
– তুমি কি করছিলে এতক্ষণ?
– বসে বসে টিভি দেখ…….সাথে সাথেই মুখ চেপে ধরলাম!
.
উনি বলে উঠলেন,
– বসে বসে মুড়ির পানি খাচ্ছিলে,তাই না?
– ……
– হিয়া…তুমি কি আয়নায় নিজেকে কখনো দেখো না?
আমি আস্তে করে বললাম,
– হুম,দেখি তো!
– তোমার যে স্বাস্থ্য আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে সেটা কি একবারও চোখে পরে না?
– …..
আমি কিছুই বলতে পারলাম না!আম্মুও এই একই কথা বলে আমার নাকি স্বাস্থ্য দিন দিন কমে যাচ্ছে!
উনি বাটিটা রেখে বললেন,
– বসে বসে এইসব মুড়ি না খেয়ে একপ্লেট ভাত খেলেও তো কিছুটা উন্নতি হয়!
ইয়াশ আমার হাত ধরে ঝাঁকি দিয়ে বললো,
– ভাবী,এটা খেতে কেমন লাগে?
– খুব ভা…..খারাপ!
আম্মু চলে আসলো নাস্তা নিয়ে!ইয়াশ আমাকে টেনে নিচু করে আমার কানে কানে বললো,
– ভাবি,এই পানিমুড়ি আমি একটু টেস্ট করতে চাই!ভাইয়াকে বলিও না,বোকা দিবে কিন্তু!
ইয়াশের কথা শুনে আমি অবাক হয়ে ইয়াশের দিকে তাকাতেই ও নিজের ঠোটেঁ আঙ্গুল লাগিয়ে ইশারায় আমাকে চুপ থাকতে বললো!
.
আম্মু নাস্তা সার্ভ করছিলো আর ইফাজের সাথে টুকটাক কথা বলছিলো।এই ফাকেঁ আমি বাটিটা একহাতে নিয়ে ইয়াশকে আরেকহাতে ধরে আমার রুমে নিয়ে আসলাম!নাফিসা অঘোরে ঘুমোচ্ছে!আমি আর ইয়াশ সোফায় বসে চামচ দিয়ে ইয়াশকে ঐতিহাসিক খাবারটা খাওয়াতে শুরু করলাম!ইয়াশ খেতে খেতে বললো,
– অনেক মজা!মিষ্টি মিষ্টি লাগে!
– সোনা,এর ভেতর চিনিও আছে!পানির ভেতর চিনি দিয়ে গুলিয়ে তারমধ্যে মুড়ি ভিজানো!তাই মিষ্টি লাগছে খেতে!
ইয়াশ অনেক আনন্দ নিয়ে বললো,
– বাসায় যেয়ে আমিও বানাবো!
ইয়াশের কথা শুনে আমি চোখ বড় বড় করে বললাম,
– খবরদার!এটা করতে যেয়ো না!তোমার ভাইয়া জানতে পারলে মেরে ফেলবে আমাকে!তোমার ভাইয়ার সাথে বিয়ে হওয়ার পর আমি যখন তোমার কাছে চলে আসবো তখন আমরা লুকিয়ে লুকিয়ে এটা বানিয়ে খাবো!তুমি একা একা করতে গেলে ধরা খাবে!
ইয়াশ খেতে খেতে বললো,
– আচ্ছা!
.
ইয়াশ অনেক মজা করে পুরোটুকু শেষ করলো!আমার তো ভীষন ভালো লাগলো এই ভেবে যে ইয়াশটাও আমার মতোই!ইয়াশ সোফা থেকে উঠে ঘুমন্ত নাফিসার কাছে গেলো।নাফিসা কম্বল দিয়ে মুখ ঢেকে ঘুমোচ্ছিলো।ইয়াশ টান দিয়ে কম্বলটা সরাতেই নাফিসা জেগে উঠলো!চোখ খুলে হঠাৎ এভাবে ইয়াশকে দেখতে পেয়েই নাফিসা জোরে বলে উঠলো,
– ইয়াশশশ……..সাথে সাথেই জড়িয়ে ধরে কপালে একটা চুমো দিয়ে ইয়াশকে নিয়েই শুয়ে পরলো!
আম্মু ইয়াশকে ডাকতে ডাকতে আমার রুমেই আসছিলো!আম্মুর কন্ঠ শুনে ইয়াশ দ্রুত কম্বলটা টেনে লুকিয়ে পরলো!
ইয়াশের কান্ড দেখে আমি নাফিসা দুজনই অবাক!
আম্মু রুমে ঢুকে ইয়াশকে দেখতে না পেয়ে আমাকে বললো,
– ইয়াশ কই?
আমি হেসে হাত দিয়ে ইশারায় ইয়াশকে দেখিয়ে দিলাম!ইয়াশের কান্ড দেখে আম্মুও হেসে দিলো!আম্মু পা টিপেটিপে ইয়াশের কাছে যেয়ে কম্বলটা একটানে সরিয়ে বললো,
– দেখে ফেলেছি ইয়াশকে!
সাথে সাথেই ইয়াশ খিলখিল করে হেসে উঠলো!
.
আব্বু পাচঁটার দিকে বাসায় আসলো!এসেই আমাদের রেডি হওয়ার জন্য তাড়া দেওয়া শুরু করলো!নাফিসা আর আমি এতক্ষণ বসে বসে ইয়াশের সাথে খেলছিলাম!ইয়াশ আমাদের সাথে কমলাপুর পর্যন্ত যাবে!তার আগে আমাকে ছাড়বে না!
ইফাজ ইয়াশকে আমার কাছে রেখে অনিম ভাইয়ার সাথে এ্যাপার্টমেন্টের নিচে দুইবন্ধু মিলে হাটাহাটি করছে আর গল্প করছে!
নাফিসা আর আমি দুজনই ড্রেস চেঞ্জ করে রেডি হচ্ছি!ইয়াশ আমার ফোনে বসে বসে গেইম খেলছে!
.
পাচঁটা পঞ্চাশের দিকে সবকিছু গুছিয়ে রেখে ইয়াশকে নিয়ে বাসা থেকে বের হলাম!আব্বু লাগেজগুলো লিফ্টের সামনে রেখে আসলো।আম্মু বাসায় তালা দিয়ে সবার সাথে দেখা করলো!সব চাচ্চু চাচিরা আমাদের সাথে এ্যাপার্টমেন্টের গ্রাউন্ড ফ্লোর পর্যন্ত আসলো!কাজিনগুলো গেইট পর্যন্ত এসে আমাদের বিদায় দিলো!ইফাজ আর অনিম ভাইয়া গেইটেই দাড়িয়ে ছিলো!
.
আব্বু,আম্মু আর নাফিসা আমাদের গাড়ীতে উঠলো!আমি ইয়াশের সাথে ইফাজের গাড়ীতে উঠলাম!ইফাজ গাড়িতে উঠে অনিম ভাইয়াকে বিদায় দিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলেন।
ইয়াশ আমার হাতদুটো নিয়ে খেলছে!মাঝে মাঝে টুকটাক কথা বলছে!কিছুক্ষণ পর ইয়াশ শার্টের উপরের দুটো বোতাম খুলে দিতে বললো!আমি দুটোর বদলে তিনটা খুলে দিলাম!ও আমার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিলো!হঠাৎ ইয়াশ আমার কোল থেকে নেমে আমার দিকে ঘুরে আমার গলা জড়িয়ে ধরে অনেক্ষণ ওভাবেই আমার কাধে মাথা রেখে শুয়ে থাকলো!ঠিক সেই মুহূর্তে ইফাজ আমার গাল টেনে দিয়ে একটা চুমো খেলো আর ফোন বের করে আমার আর ইয়াশের একটা পিক তুলে নিলো!
.
.
(চলবে)
#Real_Love♥
#Oniya_Chowdhury
Part:28
.
.
ইফাজ গাড়ি থামিয়ে গাড়ি থেকে নেমে আমাদের দুজনকে নামালো!আমাদের গাড়ির সামনেই আব্বুর গাড়িটা থামানো হলো!সবাই নেমে আব্বু আর নাফিসা দুজন দুটো লাগেজ নিয়ে হাটা শুরু করলো!আম্মু আমাদের ইশারায় আগাতে বললো!প্লাটফর্মে প্রচুর ভীড়!ঈদের পর দেখেই হয়তোবা!
.
আমি ইফাজের ডানহাতের কনুইয়ের নিচটুকু শক্ত করে ধরে আছি!ইফাজ অন্যহাতে ইয়াশকে ধরে আছে!ইয়াশ লাফানোর মতো করে হাটঁছে!
.
ট্রেন অলরেডি এসে গেছে!আব্বু,নাফিসা উঠে গেছে!আম্মু একটু পেছনে ছিলো!আম্মুও উঠে পরলো!আমি ইফাজের হাতের উপর শুয়ে শুয়ে হাটছিলাম!ট্রেনের একেবারে কাছে এসে ছেড়ে দিলাম!ইয়াশকে নিয়ে আমি ট্রেনে উঠতে যাচ্ছিলাম মাত্রই পা দেবো সেইমুহূর্তে ইফাজ টান দিয়ে ওর দিকে ঘুরিয়ে কপালে একটা চুমো খেলো!উনার কান্ড দেখে আমি চোখ বড় বড় করে আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম!সবাই সবার মতো ব্যস্ত!অনেকেই হয়তোবা দেখেছে বাট আমার চোখে পরছে না!আমি পেছন ঘুরে ইয়াশের দিকে তাকাতেই দেখি ইয়াশ হা করে তাকিয়ে আছে!
ইফাজ দ্রুত বলে উঠলো,
– ইয়াশ,ভাবি চলে যাচ্ছে না?একটা কিস করো ভাবির কপালে!নাহয় ভাবি রাগ করবে!আমি করেছি তুমিও করো!
ইফাজের কথা শুনে ইয়াশ আমাকে কাছে টেনে নিয়ে আমার কপালে শব্দ করে একটা চুমো খেলো!আমিও ইয়াশের কপালে আর গালে চুমো খেলাম!
.
আমরা ট্রেনে উঠে আমি ইয়াশের দুইকাধে হাত রেখে ইয়াশকে নিয়ে সামনে আগাচ্ছি!ইফাজ আমার পেছনে!
হঠাৎ ইফাজ আস্তে আস্তে আমার কানের কাছে বলে উঠলো,
– আন্টি আঙ্কেলের সামনে তো আর চুমোটা দিতে পারতাম না!তাই যাওয়ার আগের আদরটা ওখানেই সেড়ে ফেললাম!
উনার কথাটা শুনে আমি কনুই দিয়ে উনার পেটে একটা গুঁতো দিলাম!
আব্বু দেখলাম দাড়িয়ে আছে!আম্মু আর নাফিসা বসে ছিলো!নাফিসা ইয়াশকে টান দিয়ে ওর কোলে বসিয়ে অনেকগুলো চুমো খেলো!আম্মুও কিছুক্ষণ আদর করলো!তারপর ইয়াশ একাই আমার কাছে চলে এলো!আমার কোলে বসিয়ে আমি আর ইয়াশ প্লাটফর্মের দিকে তাকিয়ে কথা বলছি!
.
আব্বু ইফাজের সাথে কি যেনো কথা বলছে!কিছুক্ষণ পর দুজন হ্যান্ডশ্যাক করে কোলাকুলি করলো!
আব্বু আমাদের রেখে কোথায় যেনো গেলো!ইফাজ ইয়াশকে নেওয়ার জন্য আমার দিকে এগিয়ে আসতেই আমি চোখের ইশারায় বুঝালাম “আর আগাবেন না,প্লিজ!”ইফাজ আমাকে পাত্তা না দিয়ে ইয়াশকে নিয়ে আম্মু-নাফিসার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো!
যাওয়ার সময় ইয়াশ আমার হাত শক্ত করে ধরে ছিলো!আমিও ধরেছিলাম!ছাড়ছিলাম না দেখে ইফাজ আমার হাত চাপ দিয়ে ধরলো সাথে সাথেই আমি ছেড়ে দিলাম!
.
.
শেষরাতের দিকে আমরা চিটাগাং পৌছালাম!আমি পুরো রাস্তা ঘুমিয়ে ছিলাম!
বাসায় এসেই ফ্রেশ হয়ে রুমের লাইট অফ করে ইফাজকে ফোন দিলাম!সাথে সাথেই রিসিভ করে বললো,
– বাসায় পৌছেছো?
– হুম!ঘুমোচ্ছিলেন?
– হুম!তোমার জন্য আজ ইয়াশ আমার উপর প্রচুর অত্যাচার করেছে! হাত পা সব ব্যাথা করছে!এইটুকু মানুষের শক্তি কি!বাপরে বাপ!
এতক্ষণ মন খারাপ ছিলো উনার কথা শুনে হেসে ফেললাম!
উনি আবার বললেন,
– জানো,ইয়াশ আজ আমার কত্ত বড় একটা উপকার করেছে?
– কি করেছে?
– আজ তোমাকে রেখে বাসায় আসার পরপরই ও কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছিলো!আর চিৎকার করে করে বলছিলো ভাবিকে আমাদের বাসায় নিয়ে আসো!আমি ভাবির সাথে থাকবো!আব্বু,আম্মু অনেক চেষ্টা করেও যখন থামাতে পারলো না তখন ইয়াশকে একপ্রকারে কথাই দিয়ে ফেললো “ওকে,নেক্সট টাইম যখন তোমার ভাবি ঢাকায় আসবে তখনই ওদের বিয়ে দিয়ে তোমার ভাবিকে এখানে নিয়ে আসবো!”জানি,কথাটা যাষ্ট ইয়াশকে শান্তনা দেওয়ার জন্য বলেছে তারপরও কেনো যেনো মনে হচ্ছে নেক্সট টাইম তুমি ঢাকা আসলে কিছু একটা হয়ে যাবে!কারন ইয়াশের জেদ অনেক বেশি!একবার যদি ইয়াশ জানতে পারে তুমি আবার ঢাকায় এসেছো,বুঝতে পারছো তো কি হবে?
আমি অবাক হয়ে বললাম,
– কি হবে?
– আমার লাইনটা একদম ক্লিয়ার হয়ে যাবে টিয়াপাখি!
– আব্বু এইকাজ কখনোই করবে না!
– করতে বাধ্য!
– আব্বুকে চেনেন না আপনি!আব্বু অনেক স্ট্রিক্ট!
– সেটা সবার বাবা-মা’ই হয়!তোমার শ্বশুর-শ্বাশুরিও ওরকম!ভবিষ্যতে আমিও ওরকম বাবা হয়ে যাবো!
উনার কথা শুনে আমি হেসে বললাম,
– আপনি কখনোই ওরকম হতে পারবেন না!বাচ্চাদের মাথায় তুলে রাখবেন আপনি!
– চিনে ফেলেছো দেখছি আমাকে!
– হুম!খুব ভালোভাবেই চিনেছি আপনাকে!আপনি কতটা বাচ্চাপাগল সেটা বুঝতে আর বাকি নেই!
আমার কথা শুনে উনি শব্দ করে হাসলেন!
হাসি থামিয়ে বললেন,
– একটা কথা এখন সিরিয়াসলি বলবো!মন দিয়ে শুনবে!
– কি?
– এখন থেকে বেশি বেশি খাওয়ার প্রেকটিস করো!তোমার এই শরীরের জন্য ভবিষ্যতে অনেক প্রবলেম হতে পারে,সেটা কি বুঝতে পারছো?
– ……
– কি হলো?
– আমার একদম খেতে ইচ্ছে করে না!
– উফ্!কবে যে বিয়েটা হবে?বিয়ের পর দেখবা দিনে পাঁচওয়াক্ত কিভাবে খেতে হয়!এমনভাবে খাওয়াবো,তোমাকে তো গুল্লুগুল্লু বানাবোই সাথে আমার বেবিগুলোকেও!দেখে নিও!
.
উফ্!আবার সেই খাওয়া!বিয়ের আগে খাওয়া নিয়ে আম্মুর অত্যাচার চলছে!বিয়ের পর উনার অত্যাচার শুরু হবে!
.
প্রায় একঘন্টার মতো উনি আমাকে এইসব লেকচার শুনিয়ে ফোন কেটে দিয়ে আমাকে ঘুমোতে বললেন!
.
.
আমার আবার সেই কষ্টের জীবন শুরু হলো!আব্বু এবার আমাদের পড়ালেখা নিয়ে বেশি কেয়ারফুল হয়ে গেছে!কারন সামনে আমার এইচএসসি পরীক্ষা আর নাফিসার এসএসসি!বাসায় দুটো টিচার রাখা হয়েছে,সাথে কোচিং,বাহিরে আরো তিনটা প্রাইভেট!সবমিলিয়ে মানসিক অত্যাচার শুরু হয়েছে! নাফিসা আর আমার দুজনের ফোন নেওয়া হলো!ওয়াইফাই কানেকশন কেটে দেওয়া হলো!পুরো একটা বন্ধী জীবন!আব্বুর একটাই চাওয়া গোল্ডেন!
.
আমরাও যথাসাধ্য চেষ্টা করলাম আব্বুর আশাটা পূরণ করতে!পড়াশোনার উপরেই থাকলাম!বিকেলের দিকে সময় কাটানোর জন্য আমাদের হাতে সবচেয়ে দামী জিনিস ফোন তুলে দেওয়া হতো!তখনই উনার সাথে কথা বলতাম!উনিও আব্বুর মতো একই কথা শোনায় প্রতিদিন “আর মাত্র কয়েকমাস মন দিয়ে পড়াশোনা করো!এক্সামের পর তো একেবারে ঢাকায় আসছো,তখন ইচ্ছামতো সময় কাটানো যাবে।”
.
সবার কথা ভেবে আমিও পড়ায় আরো বেশি মনোযোগী হলাম!নাফিসার পরীক্ষা দুদিন পর থেকে!ওর অলরেডি সব কমপ্লিট!আব্বু বইয়ের যেখান থেকে পড়া ধরে নাফিসা গড়গড় করে সব বলে দেয়!নাফিসা হঠাৎ এরকম ব্রিলিয়ান্ট হয়ে ওঠা,ব্যাপারটা আমি নিতে পারলাম না!
.
দেখতে দেখতে নাফিসার সবগুলো পরীক্ষা শেষ হলো!কয়েকদিন পর আমার পরীক্ষা শুরু!সবগুলো বই আমি একেবারে ভাঁজা ভাঁজা করে ফেলেছি!নাফিসার থেকে আমি কম ব্রিলিয়ান্ট নাকি?প্রতিটা পরীক্ষার আগে আব্বু আমাকেও বইয়ের এই মাথা থেকে ওইমাথা পর্যন্ত পড়া ধরতো!আমিও নাফিসার মতো গড়গড় করে সব বলে দিতাম!তারপরও আব্বুর শান্তি লাগতো না!ওয়াইফাই কানেকশন এনে নেট থেকে বিভিন্ন ধরনের টপিক্স বের করে সেখান থেকে পড়া ধরতো!মোটামোটি ওগুলোর উত্তরও ভালোভাবে বলতে পারতাম!
দেখতে দেখতে আমারো পরীক্ষা শেষ হলো!আমার পরীক্ষা শেষে আব্বু আমাদের দুইবোনকে আর আম্মুকে মিষ্টি খাইয়েছে!আব্বুর নাকি বিশ্বাস ছিলো আমরা গোল্ডেন পাবো!পরীক্ষা শেষে আমি,নাফিসা আর আম্মু ঢাকায় চলে এলাম!ইয়াশকে বলা হয়নি আমি যে ঢাকা এসেছি!
নাফিসার রেজাল্ট যেদিন দিবে সেদিন বেচারী কি কান্নাকাটি-ই না করেছিলো!কিন্তু রেজাল্ট বের হওয়ার পর আলহামদুলিল্লাহ্ সে গোল্ডেন পেলো!ওর আনন্দ দেখে কে?কিন্তু এইদিকে আমি দুশ্চিন্তায় মরে যাচ্ছিলাম!আমি যদি গোল্ডেন না পাই আমাকে একেবারে বাসা থেকে বের করে দিবে!ইফাজকে ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করে যখনই এই কথাটা বলি,ও সাথে সাথেই বলে ওঠে “নো প্রবলেম,টিয়াপাখি! আমি আছি না!আমরা বিয়ে করে সুখে শান্তিতে সংসার করবো!”
ওর এই কথা শুনেই আমি হেসে ফেলতাম!
.
দেখতে দেখতে আমারও রেজাল্টের দিন এসে গেলো!যেদিন রেজাল্ট দিবে তার আগেরদিন রাতে ইফাজকে ফোন দিয়ে এমন কান্নাকাটি-ই করেছি যে কথা বলার সময় উনাকে “তুমি” সম্বোধন করে কথা বলেছি!তখনই উনি বলে উঠলেন,
– আমি সবসময় এটাই চেয়েছিলাম যে তুমি নিজে থেকে আমাকে তুমি বলে সম্বোধন করো!আজ আমার আশাটা পূরণ হয়েছে!এখন থেকে আমাকে আর কখনো যেনো “আপনি” বলতে না শুনি!
তারপর থেকে এই “তুমি” বলা নিয়ে উনার কাছে কত বোকাই যে খেয়েছি হিসাব নেই!
.
দুপুরের দিকে রেজাল্ট হাতে পেলাম!হিস্ট্রিতে খারাপ করাতে গোল্ডেন পাওয়া হলো না।কিন্তু A+ পেয়েছি!গোল্ডেন পায়নি বলে আব্বুর কোনো আফসোস ছিলো না।আব্বুও আমার রেজাল্টে খুব খুশি হয়েছে!
ইফাজ আমার রেজাল্ট জানার সাথে সাথেই আমাদের বাসায় মিষ্টি নিয়ে হাজির!সাথে একটা শপিং ব্যাগও ছিলো!ব্যাগটা আমার হাতে দিয়ে সবাইকে নিজের হাতে মিষ্টি খাইয়ে দিলো আর বললো “আমার বউ ভালো রেজাল্ট করেছে,এটা তার মিষ্টি!”
.
আমি রুমে এসে ব্যাগটা খুলে দেখলাম একটা গর্জিয়াস শাড়ি!শাড়িটা প্রচন্ড ভারী!শাড়ির পাড়ের দিকে ভারী ভারী স্টোন বসানো!অনেক সুন্দর বাট এটা কেরী করা আমার পক্ষে ইম্পসিবল!
ইফাজ রুমে ঢুকে আমার পাশে বসতেই আমি শাড়িটা দেখিয়ে বললাম,
– এটা পড়ে মিনিমাম একমিনিট দাড়িয়ে থাকতে পারবো!একমিনিট পরই ধপাস করে পড়ে যাবো!দেখুন প্রচুর ভারী!
.
আমি শাড়িটা উনার হাতে দিয়ে কথাটা বললাম!উনি শাড়িটা হাতে না নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
– আগেই বলেছিলাম,খেয়ে একটু স্বাস্থ্য বানাও!মোটা হও!যেহেতু এনেই ফেলেছি পরতে তো হবেই!
– ইম্পসিবল!এটা আমি পরতে পারবো না!আমার থেকে এটার ওজন বেশি!
– আমার হাতে একদম টাইম নেই!বেশি কথা না বলে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও!
.
সাথে সাথেই আম্মু রুমে এসে কিছু একটা বলার আগেই শাড়িটার দিকে চোখ পরলো!আম্মু শাড়িটা হাতে নিয়ে বললো “ওয়াও!”
ইফাজ বললো,
– আন্টি আপনার মেয়ের জন্য আনলাম!পছন্দ হয়েছে?
আম্মু ইফাজের দিকে তাকিয়ে বললো,
– হুম!ভীষন সুন্দর!
– আন্টি শাড়িটা হিয়াকে তাড়াতাড়ি একটু পরিয়ে দিতে পারবেন?
উনার কথা শুনে আমি চোখ বড় বড় করে উনার দিকে তাকিয়ে আম্মুর দিকে তাকালাম!উনার কথা শুনে আম্মু উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বললো,
– হিয়া….আয় তাড়াতাড়ি!আজ তোকে আমি খুব সুন্দর করে সাজিয়ে দিবো!
আম্মুর কথা শুনে আমি হা হয়ে কিছুক্ষণ আম্মুর দিকে তাকিয়ে থাকলাম।আম্মু আমার হাত টেনে আম্মুর রুমে নিয়ে এলো!
.
আমাকে শাড়িটা পরাতেই আম্মুর হিমশিম খেতে হলো!প্রায় পনেরো মিনিট পর শাড়িটা পরিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে দিলো!
সবকিছু কমপ্লিট করতে প্রায় আধাঘন্টার মতো সময় লাগলো!শাড়ির আচঁলটা ভীষন ভারী!
.
উনি আমার রুমে শুয়ে শুয়ে ফোন দেখছিলো!আম্মু আমাকে নিয়ে উনার সামনে দাড় করাতেই উনি অবাক হয়ে আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললেন,
– বাহ্!আন্টি,আপনি তো আপনার মেয়েকে পুরো কনে বানিয়ে নিয়ে এসেছেন!
উনার কথা শুনে আম্মু হেসে বললো,
– ইফাজ,সাবধানে রেখো কিন্তু!
আম্মুর কথা শুনে উনি হো হো করে হেসে উঠলেন!
আম্মু উনার হাতে আমাকে দিয়ে বললেন,
– সাবধানে যেয়ো!আর বেশি রাত যেনো নাহয়!
ইফাজ আম্মুকে আশ্বাস দিয়ে আম্মুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমাকে নিয়ে বেরিয়ে পরলো!
.
.
আমাকে গাড়িতে বসিয়ে নিজে যেয়ে সিটে বসে আমার ডানহাতে কয়েকটা চুমো খেয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলেন!
প্রায় দশমিনিট হলো কেউ কোনো কথা বলছি না!আমি চুপচাপ সিটের সাথে হেলান দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছি!হঠাৎ ফ্লাশের আলো চোখে পরাতে পাশফিরে উনার দিকে তাকাতেই দেখলাম উনি আমার পিক তুলছেন!হঠাৎ গাড়ি ব্রেক করলেন!তারপর আমাকে একটানে নিজের সাথে একদম জড়িয়ে নিয়ে অনেকগুলো সেলফি তুলে ফেললেন!কিছুক্ষণ পর আমাকে ছেড়ে দিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিতেই আমি বললাম,
– শুনুন না…
উনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
– হুম,বলো!
আমি আস্তে করে বললাম,
– পেটিকটের নাড়টা আস্তে আস্তে ঢিলে হয়ে যাচ্ছে,কি করবো?
আমার কথা শুনে উনি অবাক হয়ে আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলেন!
.
.
(চলবে)