#Real_Love♥
#Oniya_Chowdhury
Part:23+24
.
.
ভোর সাড়ে চারটার সময় ঘুম ভাঙ্গলো। উঠেই ফ্রেশ হয়ে ইফাজের রুমে যাওয়ার সময় দেখলাম আম্মু ডাইনিং টেবিল পরিষ্কার করছে।মানে ইফাজের খাওয়া কমপ্লিট।ইশ্!আর একটু আগে উঠলেই পারতাম!
.
ইফাজের রুমের দরজা খোলা ছিলো।আমি যেয়ে দরজায় দাড়ালাম।উনি রেডি হচ্ছিলেন।একটা ফুলহাতা হোয়াইট ফরমাল শার্ট ইন করে পরা!ক্যাজুয়াল সু!চুলগুলো স্পাইক করা!উফ্,অসম্ভব সুন্দর লাগছে দেখতে!
.
বেডের উপর উনার ব্যাগ রাখা ছিলো!ব্যাগের উপর চোখ পরতেই নিমিষেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো!একটু পরই চলে যাবেন!কান্না পাচ্ছে কেনো জানি!
.
দরজায় আমাকে দেখতে পেয়ে উনি বললেন,
– দাড়িয়ে আছো কেনো?ভেতরে এসো!
আমি চুপচাপ রুমে ঢুকে বেডের উপর বসে পা দুলাতে লাগলাম।উনি আমার সামনে দাড়িয়ে শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে বললেন,
– দেখো তো পারফেক্ট লাগছে নাকি?
আমি উনার দিকে একবার তাকিয়ে আগের ন্যায় আবার ফ্লোরের দিকে তাকালাম।
উনি জিঙ্গেস করলেন,
– কি হলো?মন খারাপ?
– উহুম!
– তাহলে?
– …….
ইফাজ আমার সামনে হাটুগেড়ে বসে আমার দুইহাত ধরে বললেন,
– তাকাও একটু!
– ……
– আরে বাবা……এই পাগলি……
ইফাজ হাত বাড়িয়ে টিস্যুবক্স থেকে টিস্যু বের করে আমার চোখের পানি মুছে দিলো!আমার দুইগাল ধরে বললেন,
– আর একবার কান্না করলে মাইর দিবো কিন্তু!
– স্যরি!
– হুম…….বলেই আমার সামনের চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে জড়িয়ে ধরলেন!আমিও শক্ত করে উনাকে জড়িয়ে ধরলাম!
.
অনেক্ষণ ওভাবেই ছিলাম!এই মুহূর্তে হয়তোবা উনি ভাবছেন উনি নিজে থেকে আমাকে না ছাড়লে আমি কখনোই ছাড়বো না!
আমাকে আস্তে করে ছেড়ে দিয়ে আমাকে দাড় করিয়ে বললেন,
– সাড়ে পাচঁটায় ট্রেন!সো এখনই বের হতে হবে!
– আজ সন্ধ্যের দিকে একটা ট্রেন ছিলো ওটাতে গেলেই পারতেন!
– ট্রেন তো কাল সকালের দিকেও আছে!তোমার মতো ভাবতে গেলে তো কোনোদিনও আমার যাওয়া হবে না।
– যেতে বলেছে কে?
– তোমাকে এখানে থাকতে বলেছে কে?চলো আমার সাথে!
– আমি যেতে পারলে তো যেতামই!এমনিতেই কাল কলেজে যাই নি।আজ নির্ঘাত আপনি যাওয়ার পর আব্বু জোর করে কলেজে পাঠাবে!কিচ্ছু ভালো লাগে না!
– তোমার ভালো লাগে টা কি?
– বলি?
– কি?
– আমার কি ভালো লাগে!
– বলো…শুনি!
– আপনাকে!!!
আমার কথা শুনে উনি কিউট একটা হাসি দিয়ে জড়িয়ে ধরলেন!সাথে সাথেই ছেড়ে দিলেন!
.
.
আম্মু,নাফিসা, আমার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে উনি আব্বুর সাথে বেরিয়ে গেলেন।
.
উনি চলে যাওয়ার পর সেই যে রুমে ঢুকে চুপচাপ শুয়ে আছি একবারও উঠি নি।নাফিসা ব্রেকফাস্ট করার সময় আমাকে ডাকতে এসেছিলো!আমি খাবো না বলে মানা করে দিয়েছি!ইফাজ ট্রেনে উঠে আম্মুর ফোনে কল দিয়ে আমার সাথে একবার কথা বলেছিলো!
.
প্রায় একঘন্টার মতো আমি ওভাবেই শুয়ে ছিলাম।
.
হঠাৎ আব্বুর কন্ঠ শুনতে পেয়ে তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে উঠে ব্রেকফাস্ট করে কলেজ ড্রেস পরে কলেজে চলে গেলাম!একটার পর একটা বোরিং ক্লাস চলতেই থাকলো!
কলেজ থেকে বাসায় ফিরে ড্রেস না খুলেই বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম!
.
তারপর থেকেই শুরু হলো সেই একঘেয়েমি লাইফ!প্রতিদিনকার রুটিন ঘুম থেকে উঠো!ব্রেকফাস্ট করো!কলেজ যাও!কলেজ থেকে বাসায় আসো!পড়াশোনা করো!রাতে ঘুমাও!আবার সকালে উঠে আগের দিনের সেইম কাজগুলো করো!উফ্;একেবারে অসহ্য লাইফ!
আব্বু নতুন ফোন কিনে দিয়েছিলো।সেটা দিয়েই ইফাজের সাথে টুকটাক কথা বলা!ম্যাসেজ করা!ভিডিও কল দেওয়া!এভাবেই দিনগুলো চলছিলো।
.
চারমাস পর রোজা শুরু হলো।ছাব্বিশ রোজার দিন ঈদের ছুটিতে ঢাকায় আসলাম।আগের দিন রাতে উনাকে ফোন দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিলাম আজ যে ঢাকায় আসছি!সকাল নয়টার দিকে ঢাকায় পৌছালাম।আসার সাথে সাথেই লম্বা একটা ঘুম দিলাম।উঠলাম বিকেল চারটায়!
.
আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠে আধশোয়া অবস্থায় বসলাম!ইফাজের তিনটার দিকে আসার কথা ছিলো!এখন বাজেঁ চারটা! ভাবলাম ঘুম থেকে উঠেই উনাকে দেখবো!বিছানা থেকে নেমে ড্রেসিংটেবিলের সামনে যেয়ে চুলগুলো ক্লিপ দিয়ে আটকালাম।বিছানার উপর বসে মোবাইলটা নিয়ে উনাকে একটা কল দিলাম!সাথে সাথেই রিসিভ করলেন।
আমি রেগে গিয়ে বললাম,
– আপনার না তিনটার দিকে আসার কথা ছিলো।এখনো আসেন নি কেনো?
– কি করছিলে এতক্ষণ?
– আমি যেটা জিঙ্গেস করলাম সেটার উত্তর আগে দিন!
– টাইম পাই নি!এখন বলো কি করছিলে?
– বাহ্!টাইম পাই নি!এতোদিন পর একটু দেখবো আপনাকে!সেখানেও আপনার….আমার সাথে দেখা করার কোনো ইন্ট্রেস্ট নেই আপনার,তাই না?
– আছে তো!ছয়টার পর আসছি দেখা করতে!
– …..
– রাগ করো না,প্লিজ!একটু বিজি আছি!
– আপনার আসার দরকার নেই।
– আরে,রাগ করছো কেনো?
আমি কোনো উত্তর না দিয়ে রেগে ফোনটা বিছানায় ঠিল মেরে ডাইনিং এ পানি খেতে আসলাম!
.
মাত্রই পানি খাওয়া শুরু করেছি তখনই পেছন থেকে কেউ বলে উঠলেন,
– আরেব্বাস্!রোজার দিনে পানি খাওয়া হচ্ছে?
কথাটা শোনার সাথে সাথেই ভয়ে পেছন ফিরে দেখলাম ইফাজ দাড়িয়ে!ঠোটেঁ দুষ্টু হাসির রেখা টেনে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন!
.
উনাকে দেখার সাথে সাথেই মুখের ভেতরের পানি বের হয়ে উনার শার্টে লাগলো।আমি তাড়াতাড়ি গ্লাসটা রেখে ওড়না দিয়ে উনার শার্টের পানি মোছার ব্যর্থ চেষ্টা করলাম।
.
উনি আমার হাত ধরে স্থিরভাবে দাড় করিয়ে বললেন,
– রোজা রাখো নি?
আমি মাথা নিচু করে বললাম,
– উহুম!
– কেনো?
– জানিনা।আপনি কখন এসেছেন?একটু আগেই তো ফোনে বললেন ছয়টার আগে আসতে পারবেন না!
– প্রথমেই দেখলাম তুমি অনেক রেগে আছো তাই আরেকটু রাগানোর জন্যই আরকি ওটা বলেছি।তো রোজা রাখো নি কেনো,শুনি!
.
ইশ্!উনি কি বুঝেও না বোঝার ভান করছেন?আমি উনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম উনি হাসছেন!
.
– বলো!
– অনেকদূর থেকে জার্নি করে এসেছি তো তারজন্য আসার পরই ভেঙ্গে ফেলেছি!
– সত্যিই তো?
– উফ্!আপনি আসলেই একটা…..বুঝেও না বোঝার ভান করছেন কেনো?
– আরে রেগে যাচ্ছো কেনো?অবশ্য,এইসময় মন মেজাজ একটু খিটখিটে হয়ই!তুমি রেগে কথা বলো!আমি কিছু মনে করবো না!
উনার কথা শুনে আমি নিজেকে উনার কাছ থেকে ছাড়িয়ে রুমে চলে এলাম।পেছন পেছন উনিও আসলেন!
.
অনেকক্ষণ ধরে উনি কোনো কথা বলছেন না!চুপচাপ সোফায় বসে আছেন!
আমি বিরক্ত হয়ে জিঙ্গেস করলাম,
– কথা বলছেন না কেনো?
– জানো না কেনো?
উনার কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে জিঙ্গেস করলাম,
– না!
– এইসময় তোমার সাথে বেশি কথা না বলা ই ভালো!তুমি তো এখন কথায় কথায় রেগে যাবে।তখন যেভাবে না বলে ফোন রাখলে!উফ!ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম!বাই দা ওয়ে আমি কিন্তু তিনটার সময়ই এসেছিলাম।তুমি ঘুমিয়ে ছিলে দেখে আর ডাকি নি।অন্যসবার সাথে ড্রইংরুমে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম!
উনার কথা শুনে আমি প্রচন্ড রেগে গিয়ে বললাম,
– কিহ্?তখন আপনি ড্রইংরুম থেকেই আমার ফোন রিসিভ করেছিলেন?
– এই যে,আবার কিন্তু রেগে যাচ্ছো!
Part:24
.
ইফাজ আমাকে বসিয়ে রেখে ড্রইংরুম থেকে কিছু একটা আনতে গেলো!আমি বেডের উপর পা উঠিয়ে বসে পরলাম।ইফাজ হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে রুমে ঢুকে ব্যাগটা আমার সামনে রাখলো।আমি ব্যাগের দিকে তাকিয়ে বললাম,
– কি এটা?
উনি আমার পাশে বসে বললেন,
– খুলে দেখো!
.
আমি ব্যাগের ভেতরের সব বের করে দেখলাম একটা কালো বোরকা,সাথে হাত মোজা,পা মোজাও আছে!
.
আমি অবাক হয়ে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
– হঠাৎ এসব কেনো?হজ্জ্ব করতে যাচ্ছি নাকি আমরা?
– ইচ্ছা আছে?
– হুম!সবারই ইচ্ছা থাকে!আমারও আছে!
– সিরিয়াসলি?ওকে!জীবনে কখনো সুযোগ আসলে যাবো!
– হুম!বাট এগুলো হঠাৎ কেনো?
– কাল সকালের দিকে একটা জায়গায় যাবো।সেখানে এগুলো পড়ে যেতে হবে।আম্মু,আপুও পরবে!সাথে তুমিও পরবে!তোমার জন্যই তো যাওয়া!
উনার কথাগুলো মাথার উপর দিয়ে চলে গেলো!আমি আস্তে করে বললাম,
– মানে?কিচ্ছু বুঝতে পারছি না!বুঝিয়ে বলুন!
উনি আমার হাত ধরে হাতের আঙ্গুলগুলো ফুটাতে ফুটাতে বললেন,
– আব্বু যেই মাদ্রাসা চালায় সেখানকার ইমাম কাল চলে যাচ্ছে!তাই আব্বু চেয়েছে যাওয়ার আগে তার বড় ছেলের বউকে একবার দেখা করিয়ে আনবে!সো বুঝতেই পারছো ওতো বড় ইমাম তার উপর আবার দুবার হজ্জ্ব করে এসেছে!তার সামনে তো আর যেমন তেমনভাবে যাওয়া যাবে না।এইকারনে এসব আনা!
– ওহ্!শুনেছিলাম আঙ্কেল দুটো মাদ্রাসাও নাকি চালায়!
– হুম!এগুলো পরতে তো তোমার কোনো অসুবিধা হবে না,তাই না?
– অসুবিধা কেনো হবে?
– না!এখনকার মেয়েদের যা অবস্থা!এসব চোখেও দেখতে পারে না!তাই বলছিলাম আরকি!
– অন্যসব মেয়েদের সাথে আপনার এই টিয়াপাখির তুলনা না করলেও চলবে!আচ্ছা কাল আপনার ভাইয়া যাবে না?
– কোন ভাইয়া?
– আপুর হাজবেন্ডের কথা বলছি!
– ওহ্!হ্যা,উনিও যাবে।বলতে গেলে ফেমিলির সবাই যাচ্ছে!
– ওহ্! তাহলে তো ভালোই হয়।এর আগেরবার দেখতে পারি নি উনাকে!মাহিনের তো পাচঁমাস চলে,তাই না?
– হুম!
ইফাজ হ্যান্ডওয়াচের দিকে তাকিয়ে বললেন,
– শোনো এখন আমাকে যেতে হবে!টাইম নেই!
– মানে!এখনই চলে যাবেন?কিছু তো খেলে…….আর বলতে পারলাম না সাথে সাথেই চুপ করে গেলাম!
উনি আমার গালদুটো টেনে দিয়ে বললেন,
– বসে বসে তুমি খাও!তোমার তো ছুটি চলে!
উনার কথা শুনে আমি কোনোরকমে কথা ঘুরিয়ে বললাম,
– কাল কখন যেতে হবে?
– নয়টার দিকে রেডি থেকো আমি নিতে আসবো!
– আচ্ছা!
.
আমি বেড থেকে নেমে উনাকে নিয়ে রুম থেকে বের হলাম!ড্রইংরুমে আম্মু সব এলোমেলো জিনিসগুলো গুছিয়ে রাখছিলো উনাকে দেখামাত্রই এগিয়ে এসে বললেন,
– এখনি চলে যাচ্ছো?
– জ্বি আন্টি!
– একটু আগেই তো আসলে!রোজার সময় খাওয়ার কথাও তো বলতে পারবো না!আর কিছুক্ষণ থাকতে!
ইশ্!ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কেনো যে উনার সামনে বারবার খাওয়ার কথা উঠছে!
.
– হিয়াকে খাওয়ান আন্টি!এমনিতেই ওর শরীরের যেই অবস্থা!আর নিতে পারছে না বেচারী!
উনার এরকম প্যাঁচানো কথা শুনে আমি চোখ বড় বড় করে উনার দিকে তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে আম্মুর দিকে তাকালাম!
আম্মুর চেহারা দেখে মনে হচ্ছে আম্মু উনার কথাটা ধরতে পারে নি।যেভাবে কথাটা বললেন মিনিং দুইদিকেই নেওয়া যায়।বাট আসলটা কেউ ধরতে পারবে না!যদি সে ঘটনাটা না জানে!
.
আমি উনাকে এগিয়ে দিয়ে বাসায় এসেই প্রথমে বোরকাটা পড়ে দেখলাম!হাত মোজা,পা মোজা,নেকাপ সব পরলাম!আয়নার সামনে দাড়িয়ে দেখলাম আমার চোখ ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না!পুরো হাজীর বউ বউ লাগছে!
.
.
কাজিনদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে রাত প্রায় সাড়ে এগারোটায় ঘুমিয়ে সকাল সাড়ে সাতটায় উঠলাম!ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করতে করতে আটটা বেজে গেলো!
.
আটটা চল্লিশের দিকে রেডি হয়ে উনাকে ফোন দিলাম!উনি সাথে সাথেই রিসিভ করে বললেন,
– এইতো গেটের সামনে চলে এসেছি!নামো!
– ওকে!
.
কলটা কেটে দিয়ে আব্বু আম্মুর রুমে যেয়ে তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নাফিসাকে নিয়ে লিফ্ট পর্যন্ত আসলাম!নাফিসাকে বাই বলে লিফ্টে ঢুকলাম!
.
গ্রাউন্ড ফ্লোরে আসতেই দেখলাম ইফাজ ইয়াশের হাত ধরে গাড়ির সামনে হাটাহাটি করছে!
.
দুইজনই একই ডিজাইনের কালো পান্জাবি পরেছে!দুই হিরো আজ একসাথে!কাকে রেখে কাকে দেখবো!
.
ইয়াশ আমাকে দেখতে পেয়েই দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরলো!আমি ইয়াশের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললাম,
– চিনলে কিভাবে?
– ভাইয়া বলেছে তুমিও নাকি আম্মু আর আপুর মতো ওগুলো পরবে!তাই একটু দেখেই চিনতে পেরেছি!
ইফাজ আমাদের কাছে এসে বললেন,
– চলো!
– হুম!
ইয়াশ আমাকে ছেড়ে আমার হাত ধরে হাটা শুরু করলো!
.
ইফাজ গাড়ির দরজা খুলে দিলো!আমি সিটে বসে ইয়াশকে কোলে নিলাম!ইফাজ ইয়াশকে সামনের দিকে একটু হেলিয়ে সিটবেল্টটা লাগিয়ে দিলো।তারপর নিজে সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলেন।
.
ইয়াশ আমার মোজা পরা হাতের আঙ্গুলের ফাঁকে ফাঁকে নিজের আঙ্গুল ঢুকিয়ে খেলছে!
.
ইফাজ বার বার আমার দিকে তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে আবার গাড়ি চালানোতে মনোযোগ দিচ্ছে!
আমি আস্তে করে জিঙ্গেস করলাম,
– কি হয়েছে?এভাবে বার বার তাকাচ্ছেন কেনো?
আমার কথা শুনে উনি কিউট একটা হাসি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
– তোমাকে কেনো যেনো আজ অন্যরকম সুন্দর লাগছে!এসব পরাতে তোমার কিছুই দেখতে পাচ্ছি তারপরও ওই চোখের দিকে তাকালে কেনো যেনো মনে হচ্ছে তোমার সৌন্দর্য আজ অনেকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে যেটা দেখার জন্য বারবার এভাবে তোমার দিকে তাকাতে হচ্ছে!
.
কথাগুলো উনি খুব আস্তে আস্তে বললেন!উনার কথা শুনে লজ্জায় জানালা দিয়ে বাহিরে তাকালাম!
.
হঠাৎ ইয়াশ আমার হাতজোড়ায় চুমো খেয়ে বললো,
– ভাবি?
– হুম!
– কিছু না……..বলেই ইয়াশ আমার হাতের মোজাগুলো খুলে নিজে পরে নিলো!তারপর হাতগুলো আমাকে দেখিয়ে বললো,
– ভাবি দেখো!
আমি ইয়াশকে আগের থেকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে গালে চুমো খেয়ে বললাম,
– বাহ্!সুন্দর লাগছে তো আমার ইয়াশ সোনাটাকে!
আমার সামনে থেকে হাত সড়িয়ে ইফাজের সামনে ধরে বললো,
– ভাইয়া,দেখো!
ইফাজ ইয়াশের হাতের দিকে তাকিয়ে বললেন,
– হুম!খুব সুন্দর লাগছে দেখতে! হিয়া…..
আমি উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
– হুম!
– তুমি চাইলে মুখ বের করতে পারো! সমস্যা নেই!
– দরকার নেই!আমি ঠিক আছি!
– ওকে!
.
ইয়াশ হাতমোজাটা খুলে আমার হাতে পরিয়ে দিয়ে আমার সাথে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করলো!হয়তোবা ঘুম পেয়েছে!
আমি ইয়াশকে আস্তে করে জিঙ্গেস করলাম,
– ঘুম পেয়েছে?
– হুম!আজ জানো সেই পাচঁটায় ঘুম থেকে উঠেছি!
ইয়াশের কথা শুনে আমি অবাক হয়ে জিঙ্গেস করলাম,
– এতো সকালে কেনো উঠেছো?
– কাল রাতে ভাইয়া বলেছিলো আজ নাকি আমাকে নিয়ে তোমাকে নিতে আসবে!তারজন্যই তো রাতে ঘুম হয়নি!
ইয়াশের কথা শুনে আমি ইয়াশকে একটা চুমো দিয়ে বললাম,
– অনেক ভালোবাসো ভাবিকে!তাই না?
– হুম!
.
.
(চলবে)