#Real_Love♥
#Oniya_Chowdhury
part:07+8
.
.
এরকম রাত আগে কখনো আমার লাইফে আসে নি।আমি সবসময় ঘড়ির টাইম ধরে রাত এগারোটায় ঘুমাতাম আর সকাল সাতটায় উঠতাম।কিন্তু আজ রাতে আমি এতো বেশি পরিমানে এক্সাইটেড আর নার্ভাস ফিল করছিলাম যে পাক্কা রাত তিনটায় আমি চোখের পাতা এক করতে পেরেছি।আর ফজরের আজান শুনে ঘুম ভেঙ্গেছে।মানে মাত্র দেড় ঘন্টার মতো ঘুমিয়েছিলাম রাতে।ফজর নামাজটা আমার প্রায় সময়ই কাযা হয়ে যেতো।কিন্তু আজ ফজর নামাজটা ঠিক টাইমে পড়তে পেরেছি।
.
আব্বুকে কাল রাতেই আম্মু ইফাজের আসার ব্যাপারটা বলেছে।আব্বু নাকি শুনে অনেক খুশি হয়েছে।আজ আমি কলেজ অফ দিয়েছি দেখেও আব্বু একবারও কথা শোনায় নি।শোনাবে কিভাবে? নিজের মেয়ে জামাই আসছে সেখানে মেয়েকেই যদি কলেজে পাঠায় তাহলে জামাই এসে কি করবে।আহ্!আমি তো আজ মহাখুশি।উনি আসছে!সেই ফার্স্ট একবার দেখেছিলাম।ফার্স্টের দিনই উনি যা করেছিলেন!এইবার আসলে কি করবেন?
.
নাফিসা আজ স্কুলে যেতে চায় নি।কিন্তু আম্মু আব্বুর ভয় দেখিয়ে অনেক কষ্টে স্কুলে পাঠাতে পেরেছে।
.
আমি নয়টার দিকে ব্রেকফাস্ট করে ইফাজকে ফোন দিলাম।বাট উনি ফোনটা না ধরে কেটে দিলেন।আমি আবার কল দিলাম।এবারও কেটে দিলেন।আমার তো খুব রাগ হলো।আমি ছোট্ট করে একটা ম্যাসেজ দিলাম,
– কেটে দিচ্ছেন কেনো বার বার?
কিছুক্ষণ ওয়েট করার পর রিপ্লাই দিলো,
– ড্রাইভিং করছি তারজন্য।
– ওহ্ ওকে।এখন কথা বলতে হবে না,থাক।
– হুম!আমি পৌছিয়ে কল দিবো।
– ওকে।….বলেই ফোনটা বেডের রেখে আলমারি থেকে উনার দেওয়া জামদানি শাড়িটা বের করলাম।আয়নার সামনে দাড়িয়ে কিছুক্ষণ নিজেকে ঘুরে ঘুরে দেখলাম।কেমন যেনো একটা ফিলিংস্ কাজ করছে।
আজ এই শাড়িটা পরে উনাকে সারপ্রাইজ দিবো।ফার্স্ট এভাবে সামনাসামনি আমাকে শাড়ি পরা অবস্থায় দেখলে উনি কি করবেন!দূর থেকে দাড়িয়ে দাড়িয়ে শুধু দেখবেন নাকি কাছে এসে গভীরভাবে জড়িয়ে ধরবেন?উফ্!ভাবতে পারছি না এসব!আবেশে সারা শরীর অবশ হওয়ার উপক্রম!শাড়িটা কোনোরকমে ভাজঁ করে আলমারিতে আবার রেখে দিলাম।আম্মুর কাছে যেয়ে টুকটাক রান্নায় সাহায্য করলাম।
.
সাড়ে বারোটার দিকে কলিংবেল বাজতেই বুকের ভেতর ধুক করে উঠলো।এই টাইমে তো আব্বু অফিস থেকে ফিরে না।নাফিসারও স্কুল ছুটি হতে অনেক দেরি।তাহলে কি উনি এসেছে?আমি ওড়নাটা ঠিক করে মাথায় কাপড় দিয়ে আমি কোনোরকমে যেয়ে দরজা খুলে দেখলাম নাফিসা দাড়িয়ে আছে।ওকে দেখেই মুখে বিরক্ত ভাব নিয়ে জিঙ্গেস করলাম,
– এই সময়ে ক্যান?তোর না আরো পরে আসার কথা?
– স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে এসেছি।ভাইয়া কি আসছে?
– নাহ্।
বলেই মাথা থেকে ওড়নাটা ফেলে দিয়ে আমি রুমে চলে আসলাম।ভাবলাম কি আর হলো কি!ধ্যাৎ!অপেক্ষা জিনিসটা সত্যিই খুব বাজে।
.
নাফিসা রুমে ঢুকে বললো,
– অপেক্ষা!অপেক্ষা!অপেক্ষা!ভালোই লাগে কারোর জন্য অপেক্ষা করতে।
কথাগুলো ও হাসতে হাসতে গা হেলিয়ে দুলিয়ে বলল।
আমি ওর কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,
– সমস্যা কি?এরকম করছিস কেনো?
ও আমার কাছে এসে পাশ থেকে আমার ফোনটা নিয়ে বলল,
– ভাইয়ার নাম্বারটা কি নামে সেভ করা?
ওর কথা শুনে আমি অবাক হয়ে বললাম,
– উনার নাম্বার দিয়ে কি করবি?
– বল না।কল দিবো।
– থাপ্পড়….
হঠাৎ আম্মু রুমে ঢুকে বললো,
– ইফাজ চলে এসেছে।তোর আব্বু একটু আগে ফোন করে জানালো উনি গেইটে যাচ্ছে ইফাজকে আনতে।
ইফাজ চলে এসেছে শুনে আমার হার্টবিট প্রচন্ড বেগে কাঁপতে কাঁপতে শুরু করলো।বুকে হাত দিয়ে স্পষ্ট বুঝতে পারছি এক সেকেন্ডে আমার হার্টবিট চারবার করে ওঠানামা করছে।
.
আম্মু চলে গেলো।নাফিসা কয়েক স্টেপ নেচে নিলো।আমি অদ্ভুত অনুভূতি নিয়ে ভয়ে সেখানে চুপচাপ বসে থাকলাম।আমাকে নাফিসা এক সেকেন্ডের জন্য জড়িয়ে ধরে টাওয়াল নিয়ে ওয়াশরুমে গেলো।পাচঁ মিনিটে ও গোসল করে বের হলো।যেই নাফিসা এক ঘন্টার আগে ওয়াশরুম থেকে বের হয় না সে কিনা আজ পাচঁমিনিটে গোসল শেষ করলো।ভাবা যায়!
আমাকে এভাবে বসে থাকতে দেখে নাফিসা আমাকে সামান্য ধাক্কা দিয়ে বলল,
– বসে আছিস যে?তাড়াতাড়ি উঠ।
আমি উঠে কালো কালারের একটা সেলোয়ার কামিজ বের করে ওয়াশরুমে ঢুকলাম।ওয়াশরুমে এসে আয়নায় অনেক্ষণ নিজেকে দেখলাম।মুখটা এরকম লাগছে কেনো?আমার দিকে কেউ তাকালে নিমিষেই টের পাবে এই মুহূর্তে আমি ঠিক কতটা নার্ভাস!হাত পা কাপছে!নিজেকে কোনোভাবেই শান্ত করতে পারছি না।কোনোরকমে ড্রেস চেন্ঞ্জ করে বের হলাম।নাফিসাকে রুমে দেখলাম না।আমি যেয়ে রুমের দরজাটা লাগিয়ে দিলাম।
আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখে নিজেই লজ্জা পাচ্ছি।কোনোরকমে চুলগুলো একসাইডে সিথিঁ করে হাতখোঁপা করলাম।আমার ঠোটঁ এমনিতেই পিংক।তারপরও হালকা পিংক কালারের একটা লিপস্টিক লাগালাম।আয়নায় নিজেকে দেখে নিজেই ক্রাশ খাচ্ছি।কিছুই তো করলাম না তারপরও এতো সুন্দর কিভাবে লাগছে।নিজের অজান্তেই হাসলাম।হাসলে আমাকে দুইসাইডের উচু দাতগুলোর জন্য নাকি বেশি সুন্দর লাগে।এরকম দাতের অধিকারিনী মেয়েগুলোকে আমার বেশী ভালো লাগে।বিশেষ করে মেহজাবিনকে।
.
আমি ওড়নাটা বিছানা থেকে নিতে যাবো সেই মুহূর্তে নাফিসা রুমের দরজায় নক করে বললো,
– আপু,ভাইয়া চলে এসেছে।
নাফিসার কথা শুনে আমি তাড়াতাড়ি ওড়নাটা গায়ে জড়িয়ে দরজা খুলে নাফিসাকে ভেতরে ঢুকিয়ে আবার দরজা লাগালাম।আমার এরকম আচরণ দেখে নাফিসা বললো,
– কি হলো?এভাবে দরজা লাগালে কেনো?
আমি নাফিসাকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
– আমি আর থাকতে পারছি নারে বোন।এখনই বোধহয় জ্ঞান হারাবো।
– উফ্!আপু এতো নার্ভাস হলে চলে?এখনই এরকম করলে একটু পর যখন একা কথা বলতে আসবে তখন কি করবা?
– প্লিজ,বলিস না ওসব কথা!
নাফিসা আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললো,
– জানো,ভাইয়াকে যে কি সুন্দর লাগছে!যখন ভেতরে ঢুকলো!উফ!অস্থির একটা লুক নিয়ে ভেতরে ঢুকলো then আম্মুকে সালাম দেওয়া,আমার সাথে হেসে হেসে কথা বলা!ওহ্ মাই গড!
ওহ্,আরেকটা কথা উনি এতো লম্বা কেনো?উনার দিকে তাকিয়ে কথা বলার সময় তো আমার ঘাড় ব্যাথা হয়ে যাবে।
– কে বলেছে তাকিয়ে থেকে কথা বলতে?
কথাটা বলেই আমি বিছানার উপর বসে পা নাড়াতে লাগলাম।নাফিসা আমার পাশে বসে আমার হাত ধরে আঙ্গুলের দিকে তাকিয়ে বললো,
– আপু,নেইলপলিশ দিয়ে দেই?কেমন খালি খালি লাগছে।ফর্সা হাতে ব্ল্যাকটা মানাবে ভালো।নিয়ে আসি?
আমি নাফিসার কাছ থেকে হাতটা সরিয়ে বললাম,
– খবরদার, ওইসব দিবি না।
– আচ্ছা।
.
আমার বুকের ভেতর ধুকধুক করছে।উনাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।কিন্তু দেখার জন্য তো উনার সামনে যেতে হবে।সেই সাহসটা মনের মধ্যে আনতেই পারছি না।বসে বসে বিছানার চাদর খামচাচ্ছি।
.
হঠাৎ নাফিসা পাশ থেকে উঠে চলে গেলো।আমি ওর দিকে তাকিয়ে আবার আগের ন্যায় ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে বিছানার চাদর খামচাচ্ছি।হঠাৎ দরজা লক করার শব্দে দরজার দিকে তাকাতেই আমার পায়ের নিচের মাটি কাপা শুরু করল।কিছুক্ষণ পর খেয়াল করলাম মাটি কাপঁছে না,আমার পা গুলোই কাঁপছে।
.
উনি হোয়াইট শার্ট ইন করে পরা,হাতা ফোল্ড করা,ব্ল্যাক জিন্সের প্যান্ট পরে দুইহাত প্যান্টের পকেটে দিয়ে দাড়িয়ে আছে।ঠোটেঁ দুষ্টু হাসি।আমি উনার থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলাম।কিছুক্ষণ পর আবার তাকালাম ততক্ষণে উনি আমার খুব কাছে চলে এসেছেন।আমি চোখ সরিয়ে নিলাম।আমার বুকের ভেতর প্রচন্ড বেগে কাপঁছে।গলাও কাঁপছে।আমি কাপাঁ কাপাঁ কন্ঠে আস্তে করে জিঙ্গেস করলাম,
– কেমন আছেন?
উনি কোনো উত্তর না দিয়ে ফুঁ দিয়ে আমার সামনের চুলগুলো সরিয়ে দিলেন।আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম।
.
আমি ওড়না একবার আঙ্গুলে পেচাচ্ছি আবার খুলছি।উনি হঠাৎ আমার হাত শক্ত করে ধরে ওড়নার কোণা আঙ্গুল থেকে ছাড়িয়ে বললেন,
– এভাবে হাত ঘামছে কেনো?কাপছেও দেখছি।
– কই?নাতো।
– সত্যিই তো!
– হুম।
– ওকে….বলেই উনি আমার একদম কাছে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন।আমি তো রীতিমতো কেপে উঠলাম।সারা শরীর অবশ হয়ে এলো।উনার বুকে আমার মাথা।আমি এখন কি করবো?এই মুহূর্তে আমার কি করা উচিৎ?আমিও কি জড়িয়ে ধরবো?নাহ,থাক।কিন্তু মন মানছে না।আমি আমার দুহাত আস্তে করে উনার পিঠে রাখলাম।নিজের ভেতরে অদ্ভুত শিহরণ খেলে গেলো।এই ফার্স্ট কেউ আমাকে এভাবে জড়িয়ে ধরলো।এতো শান্তি লাগছে কেনো!
.
উনি আমার কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললেন,
– কাল সারারাত একটুও ঘুম হয়নি।বারবার তোমার কথা মনে পরেছে।রাত দুটোর সময় একবার কল দিতে চেয়েছিলাম।কিন্তু পরে ভাবলাম থাক,তুমি হয়তোবা ঘুমাচ্ছো।সকাল হওয়ার সাথে সাথেই গাড়ী নিয়ে বের হয়েছি।ড্রাইভার আংকেল সাথে আসতে চেয়েছিলো।আমি মানা করে দিয়েছি।আমি কল্পনাও করিনি ঢাকা থেকে চিটাগাং এতো দূর।এই মুহূর্তে আমি প্রচুর টায়ার্ড।….কথাটা বলেই ধপাস্ করে উনি আমাকে নিয়েই বিছানায় শুয়ে পরলেন।আমি ভয় পেয়ে চিৎকার দিলাম।উনি মাথা তুলে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
– করছো কি?আন্টি আংকেল কি ভাববে?
আমি চোখ বন্ধ করে বললাম,
– ভয়ে মুখ ফসকে বের হয়ে গেছে,সরি।
উনি হঠাৎ আমার কপালে একটা কিস করলেন।আমি সাথে সাথে চোখ খুললাম।কি করলেন এটা?চোখ বড় বড় করে উনার দিকে তাকালাম।আমাকে এভাবে তাকাতে দেখে উনি ভ্রু উঠিয়ে জিঙ্গেস করলেন”কি”।আমি কিছু না বলে অন্যদিকে ফিরে উঠার চেষ্টা করতেই উনি আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললেন,
– কোথায় যাচ্ছো?আমি না বলা পর্যন্ত উঠবে না।
এই মুহূর্তে আমার শরীরের ভেতর ভূমিকম্প হচ্ছে ।যেটা অন্যকেউ অনুভব করতে পারছে না।আমার গলা ভারী হয়ে আসছে।
আমি ভারী গলায় আস্তে করে বললাম,
– এতক্ষণ এভাবে দরজা লাগিয়ে রাখলে আব্বু আম্মু নাফিসা অন্যকিছু ভাববে।
– কেউ কিচ্ছু ভাববে না।……বলেই উনি আমার ঘাড়ে মুখ গুজঁলেন।
হঠাৎ ঘাড়ে উনার খোচাঁখোচাঁ দাড়ির স্পর্শ পেতেই আমি কেপেঁ উঠলাম।অদ্ভুত ফিলিংস হচ্ছে!পুরো শরীর অবশ হয়ে যাচ্ছে!আবেশে চোখ বন্ধ হয়ে আসছে!আমি আবেশে চোখ বন্ধ করে মুহূর্তটা উপভোগ করলাম।
.
আমি সামান্য নড়ে উঠলাম।উনি আস্তে করে বললেন”নড়বে না একদম।পাচঁমিনিট শান্তিতে থাকতে চায়।”
.
.#Real_Love♥
#Oniya_Chowdhury
part:08
.
.
হঠাৎ দরজায় নক করায় আমি ভয় পেয়ে চোখ খুললাম।উনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম উনি নিরালায় চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছেন।আমি ওঠার চেষ্টা করলাম।উনি আরো জোরে চেপে ধরলেন।আমি যত ছাড়ানোর চেষ্টা করছি উনি ঠিক ততটাই জোরে চেপে ধরছেন।যতবার উনি এই কাজটা করলেন ততবারই আমি কেপেঁ কেপেঁ উঠলাম।
.
আবার দরজায় নক করল।দরজার বাহির থেকে নাফিসার গলার আওয়াজ ভেসে এলো।ও জোরে জোরে আমাদের উদ্দেশ্য করে বলছে,
– আপু,ভাইয়াকে আম্মু ফ্রেশ হতে বললো।লান্স রেডি।
ছি!এতক্ষণ দরজা লাগানো দেখে নাফিসা কি ভাবছে!ওর সামনে যেতেই তো লজ্জা লাগবে।
.
আমি উনাকে আস্তে করে বললাম,
– ছাড়ুন,আম্মু ডাকছে।ফ্রেশ হতে বললো আপনাকে।
– ফ্রেশ ই তো হচ্ছি।
আমি অবাক হয়ে বললাম,
– মানে?
উনি মাথা উচু করে বললেন,
– কিছু না।……বলেই আবার উনি আমার ঘাড়ে মুখ গুঁজতে নিলেই আমি একটু সরে গিয়ে বললাম,
– আপনার পাঁচমিনিট অলরেডী শেষ।এখন ছাড়ুন।
– ওহ্!সিরিয়াসলি!আমি তো ভেবেছিলাম এখনও চারমিনিট বাকি আছে।
– উফ্!অলওয়েজ ফান!দেখি সড়ুন।
বলেই আমি উঠে বসলাম।উনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে চিৎ হয়ে দুইহাত দুইপাশে ছড়িয়ে শুয়ে রইলেন।আমি উনার দিকে তাকাতেই উনি হাসলেন।
.
আমি চুপচাপ দরজার কাছে এসে দরজা খুললাম।দরজার বাহিরে কাউকে দেখতে পেলাম না।আমি দরজা পুরোপুরি না লাগিয়ে সামান্য চাপিয়ে দিয়ে উনার পাশে এসে বসলাম।উনি এভাবে আমাকে ফিরে আসতে দেখে অবাক হয়ে বললেন,
– আবার ঘুমানোর প্লান করছো নাকি?
আমি উনার কথা শুনে চোখ বড় বড় করে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
– কোনো ইচ্ছা নেই।
তারপর উঠে চলে আসলাম।আসার সময় টাওয়ালটা উনার বুকের উপর ছুঁড়ে দিয়ে আসলাম।
.
নাফিসা দেখলাম আম্মুকে সাহায্য করছে।ইস্!নিজের মা বোনের কাছে কি লজ্জায় ই না ফেললেন উনি!যেখানে এই মুহূর্তে আম্মুকে আমার সাহায্য করার কথা,সেখানে নাফিসা সাহায্য করছে।আমি এখন ওদের সামনে মুখ দেখাবো কি করে?
.
আমি কোনোরকমে আস্তে আস্তে আম্মুর পাশে গিয়ে দাড়িয়ে জোরে জোরে বললাম,
– সেই কখন ওয়াশরুমে গেছেন।এখনও বের হওয়ারই নাম নেই।রুমের দরজা লাগিয়ে আমাকে বিছানায় বসিয়ে রেখে বললেন”একটু বসো,আমি একটু ওয়াশরুম থেকে ঘুরে আসি।সেই যে ঢুকলেন তারপর আর বের হচ্ছিলেন না দেখে আমি চুপচাপ চলে আসলাম।
আমার কথা শুনে আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
– মানে?পেট খারাপ হলো নাকি?
আম্মুর কথা শুনে আমি সামান্য কেশে জবাব দিলাম,
– হবে হয়তোবা।
আমি আর কোনো কথা না বাড়িয়ে ডাইনিং এ এসে নাফিসাকে সরিয়ে দিয়ে আমি ডাইনিংটা টুকটাক গোছালাম।আগে থেকেই অবশ্য গোছানো ছিলো।তারপরও একটু হাত লাগালাম যেনো সামান্য ক্রেডিটটা আমিও পাই।।উনাকে বাইরে আসতে দেখে আমি আস্তে করে কিচেনে ঢুকে পরলাম।আম্মুকে বললাম”উনি ফ্রেশ হয়েছে।তাড়তাড়ি খেতে দাও।”আমার কথা শুনে আম্মু ডাইনিং এ চলে গেলো।আমি চুপচাপ কিচেনে দাড়িয়ে থেকে উনাদের কথোপকথন শুনছিলাম।
.
আম্মু ইফাজকে বসতে বলে বললো,
– ইফাজ!এক গ্লাস স্যালাইন পানি দিবো?
হঠাৎ করে আম্মুর এরকম কথা শোনার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।কথাটা শোনার সাথে সাথে আমি জিহ্বায় কামঁড় দিলাম।
এই কথাটা শোনার পর উনার চেহারার কি রিয়েকশন হলো সেটা দেখতে পেলাম না।শুধু শুনতে পেলাম,
– স্যালাইন পানি কেনো আন্টি?
– হিয়া যে বললো তোমার পেট খারাপ নাকি?
ইস্!লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাচ্ছে।”যেই বুদ্ধিতে বাচিঁ,সেই বুদ্ধিতেই মরি”টাইপের অবস্থা হয়েছে এখন আমার।
ইফাজ আম্মুকে জিঙ্গেস করলো,
– হিয়া কই?
– ও তো কিচেনে।
– আর আঙ্কেল?
– রুমে।তুমি বসো আমি ডেকে আনছি।
– হুম।
.
আম্মু আব্বুকে ডাকতে গেলো।নাফিসা কিচেনে এসে বললো,
– ভাইয়া ডাকছে।
– কেনো?
– আমি জানি?
– চল।
নাফিসার সাথে আমিও ডাইনিং এ চলে আসলাম।উনি বসে ছিলো।আমাকে দেখেই পাশের চেয়ার টান দিয়ে বললো,
– বসো,তাড়াতাড়ি খেয়ে উঠো।টাইম নেই একটু পরই বের হতে হবে।
আমার সাথে নাফিসাকেও বসতে বললো।নাফিসা যেয়ে ইফাজের অন্য পাশের চেয়ারটাতে বসে ইফাজের সাথে গল্প জুড়ে দিলো।আমি সেখান থেকে রুমে চলে আসতে নিলেই আব্বু আম্মুর সম্মুখীন হলাম।আম্মু আমাকে রুমে যাওয়া দেখে বললো,
– তুই কোথায় যাচ্ছিস?তুইও বোস।একসাথে খাবি।
– ক্ষিধে নেই।তোমরা খেয়ে নাও।
– গোসলও তো মনে হয় করিস নি।যা গোসলটা সেরে আয়।পরে তুই আর আমি একসাথে খাবো।
– হুম।
বলেই আমি রুমে চলে আসলাম।কিছুক্ষণ হাটাহাটি করার পর আলমারি থেকে ড্রেস বের করে ওয়াশরুমে ঢুকলাম।
.
পনেরো মিনিট পর ওয়াশরুম থেকে বের হলাম।রুমে নাফিসাকে বসে থাকতে দেখে জিঙ্গেস করলাম,
– কিরে তুই এখানে? সবার লান্স করা শেষ?
– হুম।
– উনি এখন কি করে?
নাফিসা ঢং করে বললো,
– তোমার উনি এখন আব্বুর সাথে বসে বসে গল্প করছে আর টিভিতে নিউজ দেখছে।
ওর এরকম ঢং করে কথা বলা দেখে আমি টাওয়ালটা ওর মুখের উপর ঢিল মেরে আম্মুর কাছে চলে আসলাম।
আম্মু ডাইনিং এর সব পরিষ্কার করছিলো।আমাকে দেখেই বললো,
– তাড়াতাড়ি বোস।ইফাজ নাকি এখনই চলে যাবে?
– হুম,তখন তো সেটাই বললো।
– বিকেলের দিকে রওনা দিলে ভালো হতো না?
– আমি কি জানি?উনাকে বলো।
– আচ্ছা থাক।ও যেটা ভালো মনে করেছে সেটাই করেছে।বোস।
– হুম।
.
খাওয়ার সময় আমি আর আম্মু টুকটাক কথা বললাম।আম্মু আমাকে শিখিয়ে শিখিয়ে দিলো কিভাবে সবার সাথে কথা বলতে হবে।কোনটা ভালো,কোনটা মন্দ।এটা করবি না,সেটা করবি না।সবসময় ইফাজের সাথে থাকবি।হাসিমুখে সবার সাথে কথা বলবি।
আম্মুর কথাগুলো আমার কান ঠিকই শুনছিলো কিন্তু আমার মন ছিলো অন্যদিকে।আমি কোনোরকমে খেয়ে উঠে আসলাম।আমার গলা দিয়ে খাবার অনেক কষ্টে ঢুকাচ্ছিলাম আজ।
.
রুমে আসার সময় দেখলাম আব্বু ইফাজ কেউ ড্রয়িংরুমে নেই।আব্বুর রুমের সামনে যেয়ে সামান্য উঁকি দিয়ে যাস্ট দেখে আসলাম আব্বু কি করে?আব্বু ফ্লোরের উপর আজকের পুরো পেপার বিছিয়ে সেটা পড়ছিলো।আব্বুর কাজই এইটা।পেপার নাকি আব্বু হাতে ভাজঁ করে নিয়ে পড়তে পারে না।ওভাবে পড়তে নাকি আব্বুর বিরক্ত লাগে।
.
আমি আমার রুমে এসে দেখলাম ইফাজ আর নাফিসা বসে বসে গল্প করছে।আমি ওদের দেখিনি এরকম একটা ভাব নিয়ে আলমারি থেকে একটা শপিং ব্যাগ নিয়ে চলে আসলাম।আসার সময় নাফিসা অবশ্য বলেছিলো,
– আপু বোস,গল্প করি।
“আমার টাইম নেই” বলে আমি রুম থেকে চলে আসি।
আম্মুর কাছে এসে বললাম,
– আম্মু,আমি পাশের বাংলোর শফিক আন্টির কাছে যাচ্ছি।আন্টি অনেক সুন্দর করে সাজাতে পারে।ওখানে ইফাজকে একটু পর পাঠিয়ে দিবে।ওখান থেকে সরাসরি ইফাজের সাথে চলে যাবো।তাই এখন তোমার আর আব্বুর কাছ থেকে একেবারে বিদায় নিতে এসেছি।
আম্মু তো আমার কথা শুনে থ্।আম্মু সামান্য চিৎকার দিয়ে কিছু কথা শুনালো।যেই চিৎকারটা শুধু আমার আর আম্মুর কানেই ঢুকলো।অনেক
বুঝানোর পর আম্মু বললো,
– যা,দেখ তোর আব্বু কি বলে?
– হুম,যাচ্ছি।…বলে সেখান থেকে চলে আসলাম।
আমি কিছুদূর আসার পর ভাবলাম,এভাবে আব্বু কখনোই যেতে দেবে না।থাক,উনার সাথে একবারেই বের হই।
.
আমি আমার রুমে এসে শপিং ব্যাগটা সোফার উপর রেখে বিছানায় আধশোয়া অবস্থায় শুয়ে পরলাম।এমন ভাব করলাম যে আমাকে দেখে মনে হবে আমি এখন রেস্ট করবো।
আমাকে এভাবে শুতে দেখে ইফাজ বলে উঠলো,
– কি ব্যাপার?এখন ঘুমাবা নাকি?তাড়াতাড়ি রেডি হও।তোমার জন্যই ওয়েট করছি।
ইয়েস্!আমি এটাই চাচ্ছিলাম যে উনি নিজে থেকে আমাকে তাড়াতাড়ি রেডি হতে বলুক।আমি বললে তো সবাই ভাববে আমার তোড় সইছে না।
.
আমি মুখে ঢং করে বিরক্তি ভাব ফুটিয়ে তুলে বললাম,
– এখনই?
উনি বললেন,
– হুম,তাড়াতাড়ি করো।এদিকে লেট করলে ওদিকে যেতে যেতে অনেক রাত হয়ে যাবে।
নাফিসা বললো,
– ভাইয়া,আর একটু থাকেন না।আমার কেমন যেনো মনে হচ্ছে।মনে হচ্ছে আপুকে একবারে নিয়ে চলে যাবেন আজ।
ইফাজ বললো,
– তুমিও চলো।একসাথে অনেক মজা করবো।
– আব্বু ঠ্যাং ভেঙ্গে দেবে।কয়েকদিন আগেই বিয়ে খেয়ে আসলাম।পড়াশোনার কত লজ হইছে।এখন আবার ঘুরতে যাবো শুনলে ঘরে আটকে রাখবে।
.
আমি ইফাজের সামনে যেয়ে বললাম,
– আমি রেডি।চলুন বের হই।
উনি আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে বললেন,
– এই ড্রেসেই?
– হুম,কেনো?
– না,কিছু না।চলো।
.
আমি উনাকে নিয়ে ড্রইংরুমে আসলাম।পেছন পেছন নাফিসাও আসলো।আব্বু আম্মুকে ডেকে আমাদের বিদায় দিতে বললাম।আম্মু তো আমাকে এই অবস্থায় দেখে বললো,
– ড্রেসটা অন্তত চেন্জ করতি।
– লাগবে না।এটাই ঠিক আছে।
আমার এরকম কেয়ারলেস দেখে আম্মু প্রচুর রেগে গেলো কিন্তু মুখে হাসি হাসি ভাব ফুটিয়ে তুললো।
.
আসার সময় ইফাজ আম্মুকে সালাম করলো।আব্বুকে জড়িয়ে ধরলো।নাফিসার সাথে হ্যান্ডশ্যাক করে বললো”আসি বস্”।নাফিসা হেসে উত্তর দিলো”আবার আসবেন”।
আসার সময় নাফিসা আমাকে জড়িয়ে ধরলো।আম্মুও দেখি জড়িয়ে ধরলো।আব্বু মাথায় হাত দিয়ে আদর করলো।আহ্!সবাই এরকম বিহেভ করছে,মনে হচ্ছে আমাকে চিরকালের জন্য বিদায় দিচ্ছে।
.
আব্বু আমাদের সাথেই নিচ পর্যন্ত আসলো।আমার হঠাৎ মনে পড়লো একটা জিনিস ভুলে রেখে এসেছি।
আমি দৌড়ে আমার রুমে যেয়ে শপিং ব্যাগটা নিয়ে আবার দৌড়ে চলে আসলাম।হঠাৎ করে এরকম বাসায় ব্যাক করাতে আম্মু নাফিসা দুজনই অবাক হয়ে জিঙ্গেস করলো”কি হয়েছে?”
আমি “কিছু হয়নি” বলে চলে আসলাম।
আব্বু ইফাজও একই প্রশ্ন করলো।আমি শপিং ব্যাগটা দেখিয়ে বললাম”এটা আনতে ভুলে গেছিলাম।”
আব্বু বললো”কি এরমধ্যে?”
আমি “কিছু না” বলে গাড়ীতে বসলাম।
ইফাজও গাড়িতে উঠে বসলো।তারপর আব্বু আমাদের বিদায় দিয়ে বাসায় গেলো।
.
উনি গাড়ি স্টার্ট দিলেন।আমি বললাম,
– সামনের বাংলোতে গাড়িটা থামাবেন।
উনি আমার কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
– কেনো?
– এমনি।
উনি আর কিছু জিঙ্গেস না করে সামনে তাকিয়ে গাড়ি চালানো শুরু করলেন।
.
বাংলোর কাছাকাছি আসতেই উনি গাড়ি থামালেন।আমি উনাকে নিয়ে গাড়ি থেকে নামলাম।
.
বাংলোর কাছে যেয়ে কলিংবেল বাজালাম।কলিংবেল বাজার কিছুক্ষণ পরই আন্টি মেইন ডোর খুললেন।হঠাৎ এভাবে আমাকে দেখে তিনি চমকে গেলেন।আমাকে জড়িয়ে ধরে কয়েকবার চুমো খেলেন।ইফাজের দিকে তাকিয়ে জিঙ্গেস করলেন,
– কে?
আমি হাসি হাসি মুখে উত্তর দিলাম,
– তোমার মেয়েজামাই।
কথাটা বলেই আমি উনার দিকে তাকালাম।উনি চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে তারপর আন্টির দিকে তাকিয়ে সালাম দিলেন।
আন্টি সালামের উত্তর নিয়ে আমাদের ভেতরে নিয়ে গিয়ে বললেন,
– বসো তোমরা।আমি একটু আসছি।
আমি আন্টির হাত টেনে ধরে বললাম,
– আন্টি প্লিজ,আমরা বেশিক্ষণ ওয়েট করতে পারবো না।আমি একটা ইম্পরট্যান্ট কাজের জন্য তোমার কাছে এসেছি।
– মানে?কি কাজ?
– তোমার রুমে চলো,তারপর বলছি।
– কোনো সমস্যা?
আমি আর কোনো উত্তর না দিয়ে আন্টিকে নিয়ে সোজা আন্টির রুমে চলে আসলাম।আসার সময় ইফাজকে বসতে বলে চলে আসলাম।
আমি শপিং ব্যাগ থেকে জামদানি শাড়ীটা বের করে আন্টির হাতে দিয়ে বললাম,
– তাড়াতাড়ি পরিয়ে দাও।
আন্টিতো আমার এরকম কান্ড দেখে রীতিমতো অবাক।অবাক হয়েই বললেন,
– তোর মাকে বললেই তো পরিয়ে দিতো।
– আম্মুকে বলতে লজ্জা করে।আর বাসায় আব্বুও ছিলো।বেশি কথা বলে সময় নষ্ট করো না।একদম টাইম নেই।
– আচ্ছা, ওয়াশরুম থেকে বাকি জিনিসগুলো পরে আয় আমি শাড়িটা পরিয়ে দিচ্ছি।
.
আমি ওয়াশরুম গিয়ে পাচঁমিনিটে সবকিছু পরে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দ্রুত আন্টির সামনে দড়ালাম।আন্টি শাড়ির আচঁলটা আমার কাধে রেখে পুরো শাড়িটা সুন্দর করে পরিয়ে দিলো।আন্টি শাড়িটা এতো সুন্দর করে পরালো যে মনে হচ্ছে তার মেয়েকে আজ স্বামীর সাথে শ্বশুরবাড়ি পাঠাচ্ছে।
.
শাড়ি পরানো শেষে আন্টি আয়নার সামনে দাড় করালো।
আমি নিজেকে দেখে নিজেই অবাক হচ্ছি।এত্ত সুন্দর লাগছে আমাকে!প্রথমদিনের থেকে আজ বেশি সুন্দর লাগছে!ভীষন লজ্জা লাগছে! এই অবস্থায় উনার সামনে যাবো কিভাবে! উনি তো এভাবে দেখলে রীতিমতো চমকে যাবেন!
আন্টি পাশে দাড়িয়ে আমাকে দেখে মুচকি মুচকি হাসছেন।আমি আন্টির এরকম হাসি দেখে লজ্জায় নিচের দিকে তাকালাম।
হাসি হাসি মুখে বললেন,
– কিরে?লজ্জা লাগছে খুব?
আমি মাথা নাড়িয়ে”হ্যা”বললাম।আন্টি আমাকে আচঁমোকা জড়িয়ে ধরে বললেন,
– লজ্জা পাওয়ার কিচ্ছু নেই।ওর কাছে গেলে সব লজ্জা চলে যাবে।
আমাকে আন্টিকে ছেড়ে বললাম,
– না আন্টি, ওর কাছাকাছি গেলে আমার আরো বেশি লজ্জা করে।
– ওলে বাবালে…..বলেই আন্টি আমার থুতনীতে ধরে চুমো খেলেন।
.
আন্টি আমার হাত ধরে বললো,
– চল,এখন দেরি হচ্ছে না?
আমি বুকে হাত দিয়ে কিছুক্ষণ জোরে জোরে নিশ্বাস নিয়ে বললাম,
– হুম,চল।
.
আন্টির রুম থেকে বের হলেই ড্রয়িংরুমের পুরোটুকু দেখা যায়।
আমি রুম থেকে বের হয়েই উনাকে দেখতে পেলাম।উনি সোফায় হেলান দিয়ে পা দুটো টান টান করে লম্বা করে বসে বসে ফোন টিপছিলেন।
আন্টি আমার হাত ধরে উনার সামনে নিয়ে যেতেই উনি ফোন থেকে চোখ তুলে তাকালেন!
হঠাৎ উনার হাত থেকে ফোনটা সোফায় পড়ে গেলো!এভাবে আমাকে দেখে উনি চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে সোফা ছেড়ে উঠে দাড়ালেন!
উনার দাড়ানো দেখে আমি শেষ!
আমি উনার থেকে চোখ ফিরিয়ে নিচের দিকে তাকালাম।
হঠাৎ আন্টি আমাকে ছেড়ে দিয়ে ইফাজকে বললেন,
– অনেক লজ্জা পাচ্ছিলো।কোনোরকমে নিয়ে এলাম।
উনি হ্যান্ডওয়াচের দিকে তাকিয়ে আন্টিকে বললেন,
– আজ তাহলে আসি আন্টি।অনেক লেট হয়ে গেছে।……কথাটা বলেই উনি শক্ত করে আমার হাত ধরলেন।আমি স্পষ্ট অনুভব করছি উনার হাত কাঁপছে।
উনি ফোনটা পকেটে রেখে আন্টিকে সালাম দিয়ে আমাকে নিয়ে বেরিয়ে এলেন।আমিও আন্টিকে বিদায় জানিয়ে চলে এলাম।
উনি আমাকে গাড়িতে বসিয়ে নিজে গাড়িতে বসলেন।আমি লজ্জায় কুকঁড়ে যাচ্ছি।শাড়ির আচঁলের কোনা ধরে টানাটানি করছি।
হঠাৎ উনি আমাকে টান দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন।এমনভাবে ধরেছেন যে উনার সম্পূর্ণ শরীরের ভার আমার উপর।কিন্তু আমার সম্পুর্ণ শরীরের ভার উনার দুইহাতের উপর।
.
.
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here