#Real_Love♥
#Oniya_Chowdhury
Part: 52+53
.
.
ফোন বাঁজতেই স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখলাম ইফাজ কল করেছে!আমি রিসিভ করার সাথে সাথেই উনি জিজ্ঞেস করলেন,
– কি করছো?
– এই নিয়ে কতবার হলো?
– গুঁনে দেখি নি!কি করছো?
আমি দ্রুত বেডের উপর বসে বললাম,
– বসে আছি!
– গুড!আমি না থাকা অবস্থায় হাঁটাহাঁটি একদম করবে না!মনে থাকবে?
– হুম!
– আচ্ছা রাখছি!কিছুক্ষণ পর আবার কল দিবো ফোনের কাছাকাছি থেকো!
– হুম!
উনি কল কেটে দিলেন!এই নিয়ে পনেরোবার কল দিলেন!একঘন্টাও হয়নি!ফোনটা দেখছি গলার সাথে ঝুলিয়ে রাখতে হবে!
.
পুরো ফ্লাট ফাঁকা।আমি ছাড়া আর কেউ নেই।বিরক্ত লাগছে খুব।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম দশ’টা বেঁজে পনেরো মিনিট!বাড়িতে থাকলে অন্তত আন্টি,মনির সাথে গল্প করে সময় কাটানো যেতো।কিচেনও পুরো ফাঁকা।রান্না করারও সুযোগ নেই।শুঁয়ে টিভিটা অন করে একের পর এক চ্যানেল পাল্টাতে লাগলাম।কোনো চ্যানেলেই ভালো কিছু হচ্ছে না।কার্টুনের চ্যানেল বের করে শুঁয়ে শুঁয়ে কার্টুন দেখতে লাগলাম।
কি মনে করে যেনো পেটে হাত দিলাম!কালরাতে উনি স্ট্রিপ এনেছিলেন শিওর হওয়ার জন্য আমি প্রেগন্যান্ট কিনা এন্ড রেজাল্ট পজেটিভ দেখিয়েছিলো!দুজনের সেকি আনন্দ!সেইমুহূর্তে দুজনের চোখ ছলছল করছিলো!উফ্…কি অদ্ভুত মুহূর্ত!উনি সাথে সাথেই এক প্যাকেট মিষ্টি কিনে এনে সবাইকে নিজের হাতে খাইয়ে দিয়েছিলেন!কিন্তু একবারও মুখফুঁটে কাউকে বলেননি এটা কিসের মিষ্টি!
.
কালরাতের কথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পরেছিলাম খেয়ালই করিনি!হঠাৎ কারোর ডাকে ঘুম ভেঙ্গে গেলো!চোখ মেলে তাকাতেই দেখলাম উনি তাকিয়ে আছেন!চোখ-মুখ সম্পূর্ন লাল!চোখে পানি টলমল করছে!আমি দ্রুত শোঁয়া থেকে উঠে বসলাম!সাথে সাথেই উনি আমাকে একটানে জড়িয়ে ধরলেন!স্বপ্ন দেখছি নাকি আমি?উনি এইটাইমে?
উনাকে একটা চিমটি দিলাম!উনি “উহ্!আহ্!” কোনো শব্দ করলেন না!আমি ভয়ে এক ঝটকায় উনার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে বেডের অপজিট সাইডে চলে গেলাম!কম্পিত স্বরে বললাম,
– কে আপনি?
উনি ভ্রু কুচঁকে আমাকে কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করলেন!আমি আঙ্গুল দেখিয়ে বললাম,
– বের হোন বলছি!আমি একদম ভূতে ভয় পাই না!
– টিয়াপাখি….আমি!এরকম অদ্ভুত বিহেভ কেনো করছো?
– তখন চিমটি দিলাম কোনো রেসপন্স কেনো করলেন না?
– তোমাকে পেয়ে সবকিছু ভুলে গিয়েছিলাম!ফোনে তোমাকে না পেয়ে কতটা টেনশনে ছিলাম,জানো তুমি?ইভেন যখন মেইনডোর খুলছিলে না তখন তো আমার ভয় আরো বেড়ে গিয়েছিলো!ডুব্লিকেট চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখলাম আমাকে অশান্তিতে রেখে তুমি শান্তিতে ঘুমাচ্ছো!
উনার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে উনার দিকে তাকালাম!উনি আমার ফোনটা ওপেন করে কললিষ্টে যেয়ে ফোনের স্ক্রিন আমার দিকে ধরে বললেন,
– লুক!বিশবার কল করেছি ধরো নি!ভয়ে আমার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছিলো!দশমিনিটে গাড়ি ড্রাইভ করে এসেছি!ভাবতে পারো ইয়াশের স্কুল থেকে ফ্লাটের দুরত্ব মিনিমাম ত্রিশমিনিটের!সেই রাস্তা আমি দশমিনিটে শেষ করেছি!কতটা টেনশন হচ্ছিলো,জানো তুমি?
– সরি!ঘুমিয়ে পরেছিলাম!
– তোমার সরি তোমার কাছেই রাখো!
– টিভি দেখতে দেখতে কখন ঘুমিয়ে পরেছিলাম খেয়ালই করিনি!সরি….
– এই ওয়ার্ড আমার সামনে ইউজ করবে না,প্লিজ!
– স….ওকে আর হবে না!
বলেই আমি উনার কাছে এসে উনাকে জড়িয়ে ধরলাম!উনার বুকে মাথা রেখে বললাম,
– ইয়াশ এখন কিভাবে আসবে?
– আম্মুকে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছি!।আম্মু গিয়ে নিয়ে আসবে।
– কিহ্!!!
উনি কেঁশে উঠলেন!আমি উনার শার্টের কলার ধরে বললাম,
– কালরাতের শর্তটা মনে নেই?বারবার বলেছিলাম ইয়াশ না থাকলে আমিও থাকবো না!এইমুহূর্তে ইয়াশকে নিয়ে আসবেন নয়তো আমাকে বাড়িতে নিয়ে যাবেন!চুজ করুন!
– পাগলামি করো না!তোমার জন্যই তো সব হলো…
আমি উনাকে আর বলতে দিলাম না!উনার কলার টেনে উনাকে একদম কাছে এনে বললাম,
– আমি থাকবো না এখানে!আপনি থাকুন!যত্তসব….দেখি সড়ুন!
বলেই আমি বেড থেকে নামতে নিলাম।উনি আমার হাত টেনে ধরে বেডে বসিয়ে বললেন,
– এভাবে চিৎকার করছো কেনো?প্রবলেম হলে তখ….
– হোক প্রবলেম!আমি আর কোনো কথাই শুনতে চাচ্ছি না আমাকে এক্ষুনি বাড়ি নিয়ে যাবেন!চুপ…আমি কোনো কথাই শুনবো না!আমার পেট এখনো ওতো বড় হয়নি যে মা টের পেয়ে যাবে!আর টের পেলে পাক….আমার কিচ্ছু যায় আসে না!আমি একা এই ফ্লাটে থাকতে পারবো না,ব্যস্!
– এরকম করো না,প্লিজ!কেলেঙ্কারি হয়ে….
– কিসের কেলেঙ্কারি?এরকম লজিক ছাড়া কথা বলা কবে থেকে শুরু করলেন আপনি?আমি মেরিড…আমরা হাজবেন্ড-ওয়াইফ!
বিয়ের পর আমি প্রেগন্যান্ট হবো এটা ন্যাচারাল!এখানে উনারা জেনে গেলে কেলেঙ্কারির কি আছে?এমন তো নয় যে আমি আনমেরিড!আপনি টেনশনে টেনশনে পাগল হয়ে গিয়েছেন!আনলজিক্যাল কথাবার্তা!
– দুই ফেমিলি থেকে বারবার নিষেধ করা হয়েছে!এখন যদি উনারা জানতে…..
– উফ্!অসহ্য….
আমি রুম থেকে বেরিয়ে এলাম!উনি দুইহাত মুষ্টিবদ্ধ করে মুখের সামনে ধরে ছিলেন!আটকালেন না আমাকে!আমি গেস্টরুমে ঢুকে বেডের উপর গুঁটিশুঁটি মেরে শুঁয়ে কান্না করে দিলাম!অনবরত চোখের পানি মুঁছে যাচ্ছি!
.
হঠাৎ কোমড়ে কারোর স্পর্শ পেয়ে কেঁপে উঠলাম!উনি পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে শুঁয়ে পরলেন!চুলে মুখ গুঁজে বললেন,
– শাড়ি চেঞ্জ করবে নাকি এটা পরেই যাবে?
কথাটা শোনামাত্রই আমি খুশিতে পাশফিরে উনার দিকে ঘুরে উনাকে জড়িয়ে ধরলাম!উনার চোখে পানি!আমি হাত দিয়ে উনার চোখের পানি মুঁছে দিয়ে বললাম,
– কাঁদছেন কেনো?
উনিও আমার চোখের পানি মুঁছে দিয়ে বললেন,
– তুমি কেনো কাঁদছো?
– আমি তো একা একা ফ্লাটে থাকতে পারবো না,তাই কাঁদছি!আপনি কেনো কাঁদছেন?
– ভয়ে!
বলেই উনি শক্ত করে উনার বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বললেন,
– একটা চুঁমু দাও না এই বুকে!
উনি খুব অসহায়ভাবে আমাকে কথাটা বললেন!আমি একমুহূর্তও অপেক্ষা না করে শার্টের বোতাম খুলে উনার বুক উন্মুক্ত করে চুমোয় ভরিয়ে দিলাম!
.
.
ফ্লাট থেকে বের হতে হতে প্রায় একটার মতো বেঁজে গেলো!গাড়িতে বসতেই উনি সিটবেল্ট লাগিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বললেন,
– বাড়িতে গেলে সবাই আমাকে পাগল বলবে!এভাবে হুটহাট ডিসিশান নেওয়া,হুটহাট ডিসিশান চেঞ্জ করা,ছিঃ!এতোবড় হয়েছি তবুও ডিসিশানই ঠিকমতো নিতে পারি না!সে কিনা হবে বাচ্চার বাবা,ভাবা যায়!!!
উনার কথা শুনে আমি শব্দ করে হেসে ফেললাম!
– একদম শব্দ করে হাসবে না!সবসময় মুঁচকি হাসবে!মুঁচকি হাসিতে তোমাকে অসম্ভব সুন্দর লাগে!
সাথে সাথেই আমার হাসি থেমে গেলো!উনি বললেন,
– কাল এতো কষ্ট করে সবাইকে ম্যানেজ করে আসলাম আজ আবার ব্যাক করছি!বাড়িতে যেয়ে আম্মুকে কি বলবো,বলো তো?
আমি উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
– এতোকিছু থাকতে কি বলবেন ভেবে পাচ্ছেন না?মা জিজ্ঞেস করলে বললেন “হিয়া ইয়াশকে ছাড়া একা একা ফ্লাটে থাকতে পারবে না।বসে বসে কান্না করছিলো তারজন্য নিয়ে আসলাম।”
লাষ্টে মা’কে একটা হাগ করে বলবেন “সরি,আম্মু!”
.
.
#Real_Love♥
#Oniya_Chowdhury
Part: 53
.
.
মাত্র আমাদের গাড়ি মেইনগেইট ভেদ করে মেইনরোডে নামলো সাথে সাথেই অন্য একটা গাড়ি আমাদের পাশ কাঁটিয়ে গেইট দিয়ে ঢুকলো!
– ইয়াশ না!!!
– ইয়াশ না!!!
দু’জন একসাথে কথাটা বলে উঠলাম!ওই গাড়িটা পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় আমরা দুইজনই এক ঝলক ড্রাইভারের পাশের সিটে বসে থাকা ইয়াশকে দেখেছি!উনি দ্রুত গাড়ি ঘুরিয়ে ওই গাড়িকে ফলো করলো!গাড়িটা আমাদের ফ্লাটের সামনেই থামলো আর গাড়ি থেকে ইয়াশ নামলো!সাথে সাথে ড্রাইভার আঙ্কেলও নামলো!
মাই গুডনেস!!!যার জন্য আমি এতো কান্ড করে উনাকে রাজি করিয়ে আবার বাড়িতে ব্যাক করতে যাচ্ছিলাম সেই ইয়াশ কিনা নিজেই হুট্ করে চলে এলো!উনাকে কতকিছু শিখিয়ে পড়িয়ে দিলাম,বাড়িতে গিয়ে মা’কে এই বলবেন সেই বলবেন!যাক ভালোই হলো এসবের কিছুই বলতে হবে না!
.
উনি গাড়ি থামালেন!আমি দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে ইয়াশকে পিছু ডাকলাম।ইয়াশ পেছন ফিরে তাকাতেই আমাকে দেখতে পেয়ে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো!চোখ-মুখ-নাক সব লাল হয়ে আছে!নির্ঘাত কান্না করেছে! উনি গাড়ি থেকে নেমে ড্রাইভার আঙ্কেলের কাছে গেলেন!আমি হাঁটুগেড়ে বসে ইয়াশের গালে হাত রেখে বললাম,
– ইশ্!কি অবস্থা করেছো চেহারার?
– ভাইয়া আমাকে না বলে স্কুলে রেখে এসেছিলো আর আম্মু মিথ্যা বলে আমাকে ওই বাড়িতে নিয়ে গিয়েছে।বাসার সবকিছু ভেঙ্গে রেখে এসেছি… হুম!
আমি ইয়াশের চোখের পানি মুঁছে দিয়ে ইয়াশকে জড়িয়ে ধরলাম।উনি ড্রাইভার আঙ্কেলকে নিয়ে আমাদের কাছে আসলেন।ড্রাইভার আঙ্কেল ইয়াশের মাথার চুলগুলো ঝাকিয়ে বললেন,
– ওর নাম ভূমিকম্প রাখা উচিৎ ছিলো।বাপরে বাপ….পুরো বাড়ি মাথায় তুলে নিয়েছিলো।সেকি ভাঙ্গচুর!একবার দেখে আসো বাড়ির কি হাল করে এসেছে।বাড়ির প্রত্যেকটা জিনিস আবার নতুন করে কিনতে হবে।
আমি আর ইফাজ অবাক হয়ে ড্রাইভার আঙ্কেলের কথা শুনছি!আমার থেকে উনিই বেশি অবাক হয়েছেন।আমি জানতাম ইয়াশ এরকম একটা কিছুই করবে!
.
আমি ইয়াশকে নিয়ে ফ্লাটে চলে এলাম।ইয়াশ ভেতরে ঢুকেই ফিসফিস করে আমাকে বললো,
– ভাবি,ভাইয়াকে মানা করে দিবে আমাকে যেনো না মারে!
আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
– মারবে কেনো?
– ভাইয়ার রুমের ভাইয়ার পছন্দের সবকিছু নষ্ট করে ফেলেছি!
– মানে?
– ভাইয়া আমাকে রেখে এসেছিলো কেনো?তারজন্যই ওর সব জিনিস আমি নষ্ট করেছি!
আমি নিজেকে কিছুটা কঠিন করে বললাম,
– কাজটা একদম ঠিক করোনি!
ইয়াশ আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
– সরি…আর করবো না ওরকম।
– সত্যিই তো?
– হুম সত্যি!
ইয়াশকে বেডের উপর বসিয়ে নিজেও বসলাম ইয়াশের পাশে।দু’জন মিলে গল্প শুরু করে দিলাম!আজ ইয়াশ স্কুলে কি কি করেছে,বাসায় কি কি ভেঙ্গেছে, আন্টি কি কি বলে ইয়াশকে বোকা দিয়েছে সব বললো ইয়াশ আমাকে!
.
.
রাত ন’টা বাঁজে!উনি দুপুরের পর একবারও বাসায় আসেননি।এতক্ষণ বাহিরে বসে বসে কি করছেন কে জানে?কল দিলেও ধরছেন না!ইয়াশ আর আমি বসে বসে কার্টুন দেখছিলাম!ইয়াশ কার্টুন দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পরেছে!হঠাৎ ফোনের ভাইব্রেশনে ফোন হাতে নিতেই দেখলাম উনি কল করেছেন!আমি রিসিভ করেই বললাম,
– এতোবার কল দিচ্ছি ধরছেন না কেনো?
– সরি…সরি!আমার আসতে একটু লেইট হবে!তোমাদের জন্য খাবার পাঠিয়ে দিয়েছি খেয়ে নিও!
– মানে?আপনি এখন কোথায়?
– আমি আছি একটা জায়গায়!তুমি আর ইয়াশ তাড়াতাড়ি ডিনার করে নিও!এতক্ষণে তো খাবার পৌছে যাওয়ার কথা!শোনো….না দেখে কখনো দরজা খুলবে না,মনে থাকবে?
– হুম!আসবেন কখন?
– একটু রাত হবে!আমি চেষ্টা করবো তাড়াতাড়ি আসার!ওকে….রাখছি তাহলে!
– ভয় হচ্ছে কিন্তু আমার!
উনি হেসে বললেন,
– টিয়াপাখি!আমি একদম ঠিক আছি!টেনশন করো না!
– যতক্ষণ না আসবেন ততক্ষণই আমি টেনশন করবো!তাড়াতাড়ি আসুন!
– এখন তো আমার মিষ্টি বউটার জন্য আমাকে তাড়াতাড়ি আসতেই হবে!
– হুম!আমি ওয়েট করছি….
– এখন রাখি?
– হুম!
.
– রাখো!
– হুম…
বলেই কেটে দিলাম!কেনো যেনো খুব ভয় করছে!অস্থিরও লাগছে খুব!পানি খাওয়া দরকার!বেড থেকে নেমে ডাইনিং-এর দিকে পা বাড়ালাম!ড্রইংরুমে পা রাখতেই কলিংবেল বেঁজে উঠলো!আমি দ্রুত মেইনডোরের কাছে গিয়ে ম্যাজিক আই-এ চোখ রাখলাম!একটা ছেলে দুইহাতে খাবারের প্যাকেট নিয়ে উল্টো দাড়িয়ে আছে!উল্টো কেনো দাড়িয়ে আছে ছেলেটা?খারাপ মতলব নয়তো?আমি একটা ঢোক গিললাম!তাড়াতাড়ি বেডরুমে এসে মোবাইল নিয়ে ব্যাক করলাম!আবার কলিংবেল বেঁজে উঠলো!আমি দ্রুত উনাকে ফোন দিলাম!সাথে সাথেই রিসিভ করলেন,
– হুম,বলো!
– একটা ছেলে খাবার প্যাকেট হাতে নিয়ে উল্টো দাড়িয়ে আছে!ভয় করছে!দরজা কি খুলবো?
আমার কথা শুনে উনি হেসে উঠলেন।হাসতে হাসতে বললেন,
– পরনে নেভি ব্লু শার্ট আছে নাকি দেখো?
– হ্যা…হ্যা…নেভি ব্লু শার্ট আর কালো প্যান্ট!
– হুম….পলক-ই!খোলো দরজা!
আমি ফোন না কেটে মাথায় ওড়না দিয়ে দরজা খুললাম!ছেলেটা হেসে আমার দিকে খাবারের প্যাকেটগুলো এগিয়ে দিয়ে বললো,
– ইফাজ ভাই পাঠিয়েছে!
আমি সামান্য হেসে হাত বাড়িয়ে প্যাকেটগুলো নিলাম!উনি ফোনটা পলককে দিতে বললেন।আমি ফোনটা পলকের দিকে ধরে বললাম,
– আপনার ভাই…..কথা বলুন!
পলক আমার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে কানে ধরেই বললো,
– জ্বী ভাই,বলেন।
– ……
– ইশ্!ভুল হয়ে গেছে ভাই।এখন থেকে আর উল্টো ঘুরে দাড়াবো না,সরি ভাই!
ছিঃ!উনি বলে দিলেন আমি যে পলককে ভয় পেয়েছি!ছিঃ ছিঃ…কি ভাবছে পলক আমাকে?ভীতুর ডিম?
– আচ্ছা ভাই!
বলেই পলক আমার দিকে ফোন এগিয়ে দিলো!আমি পলকের হাত থেকে ফোনটা নিতেই পলক বললো,
– সরি….ভাবি!উল্টো ঘুরে দাড়ানো আমার একদম উচিৎ হয়নি!শুধু শুধু ভয় পাইয়ে দিয়েছি আপনাকে!
পলকের কথা শুনে আমি শুকনো গলায় ঢোক গিললাম!এখন আমার কি বলা উচিৎ?উনার পলককে কথাটা না জানালেই কি চলছিলো না?
আমি প্রতিত্ত্যুরে হেসে বললাম,
– ইট’স ওকে!ভেতরে আসুন….
– না ভাবি।অন্য একদিন…আজ আসি।
পলক সালাম দিয়ে চলে গেলো!আমি দ্রুত দরজা লাগিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম!
.
.
(চলবে)