Real_Love♥
Oniya_Chowdhury
Part: 48+49
.
.
ডিনার শেষে আমি ইয়াশের রুমে চলে গেলাম।ইয়াশ ঘুমোচ্ছিলো।কিছুক্ষণ ওর কাছেই শুয়ে ছিলাম।আন্টির সাথে কিছুক্ষণ গল্প করে রুমে চলে এলাম।উনি বারান্দায় দাড়িয়ে গুনগুন করে গান গাচ্ছিলেন।আমি চুপিচুপি উনার পেছনে যেয়ে দাড়িয়ে পরলাম।
.
অনুরাগে ঝড়ে চাঁদোয়া
এ লগনেও এলে না;
অনুভব নিশ্চুপ আজ
কথা যে বলে না;
.
– টিয়াপাখি!দেখি পেছন থেকে জড়িয়ে ধরো তো আমায়!
হুট করে কথাটা বলে ওঠাতে আমি ভয়ে পেছন দিকে সরে গেলাম।উনি পেছন ফিরে আমার দিকে ঘুরে এক কদম বাড়াতেই আমি ভয়ার্ত দৃষ্টিতে উনার দিকে তাকালাম।
– ভয় পাচ্ছো কেনো?
– আপনি জানলেন কিভাবে আমি পেছনে দাড়িয়ে ছিলাম?
– প্রতিটা সেকেন্ড আমি তোমার অপেক্ষাতে কাঁটায়!তোমার নিরবতাও তোমার এই কলিজাটার চেনা!
– ওহ্!তারমানে কখনো ইচ্ছা থাকলেও আপনাকে ভয় দেখাতে পারবো না?
আমার কথা শুনে উনি হো হো করে হেসে উঠলেন।
আমি রুমে আসার জন্য পা বাড়াতেই পেছন থেকে উনি আমার চুল ধরে টান দিলেন!আমি ব্যাথা পেয়ে “আহ্” বলে উঠলাম!উনি হাতের সাথে লম্বা চুল পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে একদম উনার বুকের সাথে আমাকে লাগিয়ে কোমড়ে একটা হাত রেখে ফিসফিস করে বললেন,
– মনে পড়ে!আমাদের প্রথম কাছাকাছি আসার কথা?
সেই প্রথম দিনের মতো আজও আমার বুক কেঁপে উঠলো! উনি আবার বললেন,
– যখন গাড়িতে তোমাকে গিফ্ট দিয়েছিলাম,খুশীতে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলে!জাস্ট কয়েক ঘন্টার পরিচয়েই তুমি ওই অদ্ভূত কাজটা করেছিলে!তোমার উচ্ছ্বোসিত কন্ঠে বলা “থ্যাংক ইউ!থ্যাংক ইউ সো মাচ!!!” পাগল করে দিয়েছিলো আমাকে,টিয়াপাখি!
উনি দুইহাতে আমার কোমড় চেঁপে ধরে ঘাড়ে থুতনী রেখে বললেন,
– তোমার এই পাগলটা তোমাকে ভীষন ভালোবাসে!ভীষন!!!
বলেই আঁচমোকা আমাকে কোলে তুলে নিয়ে রুমের দিকে পা বাড়ালেন!ভয়ে আমি উনার টিশার্টের কলার আঁকড়ে ধরলাম!
.
উনি কপালে একটা চুমু দিয়ে বেডে শুঁইয়ে দিলেন!লাইট অফ করে আমার পাশে শুঁয়ে বললেন,
– আজ আমি ঘুমাবো না!তোমাকে পাহারা দিবো!
– মানে?
– ওইসব উদ্ভট স্বপ্নগুলোকে তোমার কাছে আজ আসতে দেবো না!
বলেই উনি আমার বুকে মাথা রাখলেন!
.
– টিয়াপাখি!
– হুম!
– তুমি অলওয়েজ বেবিদের কথা ভাবো,তাই না?
হঠাৎ উনার এরকম কথা শুনে বুকের ভেতর কেঁপে উঠলো!
– চুপ কেনো?
– আমি ওইসব আর ভাবি না!ছেড়ে দিয়েছি একদম!
– জানি!
– তাহলে জিজ্ঞেস করলেন কেনো?
– আমি ওটার জন্য “জানি” বলিনি।মাত্র যেই মিথ্যাটা বললে সেটা জানি।
উনার কথা শোনামাত্রই আমি উনাকে সরিয়ে দিয়ে পাশফিরে শুয়ে পরলাম।উনি পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
– তুমি এইমুহূর্তে বেবিদের নিয়ে ভাবছো,তাইনা?কাল এইটাইমে তুমি ঘুমের মধ্যে বলছিলে “আমি কালই আপনাকে বাবু এনে দিবো!কারোর কথা শুনবো না!” এরকম আরো অনেক কথা ঘুমের ঘোরে বিড়বিড় করছিলে!এবং সৌভাগ্যক্রমে আমি সবটাই শুনে নিয়েছি!রাতের স্বপ্নটা এমনি এমনি দেখোনি তুমি!সারাদিন বসে বসে এইসব ভাবো দেখেই তো রাতে ওদের নিয়ে স্বপ্ন দেখো!মানুষ যেই জিনিসটা নিয়ে বেশি ভাবে,সেটাই বারবার স্বপ্নে দেখে।আমি বারবার তোমাকে মানা করছি ফ্যামিলি প্লানিং নিয়ে ভাবা আপাতত অফ রাখো!চারবছরের আগে তো নয়-ই!বাট তুমি আমার কথার কোনো গুরত্বই দিচ্ছো না।
আমি ভয়ার্ত দৃষ্টিতে উনার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
– আর কি কি বলেছি?
– দেখেছো,এদিকে আমি বুঝাচ্ছি এইসব ভাবা বন্ধ করো ওদিকে তুমি ভয়ে আছো আমি কি কি শুনে ফেলেছি!
– বলুন না!
– কথাটা তুলেই ভুল করেছি!অনেক রাত হয়ে গিয়েছে ঘুমিয়ে পড়ো!
– প্লিজ,বলু….
আমাকে আর বলতে দিলেন না!সাথে সাথেই মুখ চেঁপে ধরলেন!
.
.
সকালে ঘুম থেকে উঠে উনাকে ঘুমন্ত অবস্থায় পাশে পেলাম!আমি সময় নষ্ট না করে দ্রুত উনার মুখের কাছে চলে গেলাম!হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল দিয়ে উনার ঠোঁটজোড়ায় আলতোভাবে একবার স্লাইড করেই চুঁমু খেলাম!সাথে সাথেই উনি আমার নিচের ঠোটঁ কাঁমড়ে ধরলেন!আমি ভয়ে চোখ বড় বড় করে উনার দিকে তাকাতেই উনি ভ্রু নাঁচিয়ে ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে বললেন,
– এভাবে কেউ শীতের সকালের মিষ্টি খায় নাকি!মিষ্টি খেতে হয় কামড় দিয়ে!এই যে এভাবে……বলেই উনি আমাকে শুঁইয়ে দিয়ে মিষ্টি খাওয়া শিখিয়ে দিলেন!
.
.
ইয়াশ,ইফাজ,আন্টি আর আমি চারজন একসাথে ব্রেকফাস্ট করলাম।আঙ্কেল সকালের দিকেই ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে গেছেন।
.
ব্রেকফাস্ট শেষে উনি অফিসে চলে গেলেন।আন্টির সাথে কিছুক্ষণ গল্প করে আমি ইয়াশকে নিয়ে ইয়াশের রুমে চলে এলাম।ইয়াশের পুরো বেডের উপর খেলনা ছড়িয়ে পড়ে আছে।আমি খেলনাগুলো একসাইড করে বেডের একপাশে শুঁয়ে পরলাম।ইয়াশ আমার কোমড়ের সাথে হেলান দিয়ে খেলায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো মুখে কথার ঝুলি নিয়ে।
.
.
দুপুরের দিকে উনি ইয়াশকে একটা চকলেট বক্স দিয়ে ইয়াশকে বললেন,
– ভাই আমার!তোমার ভাবীর সাথে ইম্পরট্যান্ট একটা কথা আছে!রুমে নিয়ে যাই?
ইয়াশ মাথা নেড়ে অনুমতি দিয়ে বললো,
– তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দিবে কিন্তু!
– ওকে!
আমাকে একপ্রকার টানতে টানতে আমাকে নিয়ে রুমের দিকে হাঁটা দিলেন!উনি অফিস থেকে কখন এলেন?পরনে একটা টি-শার্ট!তারমানে অনেক আগেই এসেছেন!উনি আমাকে রুমে এনে সরাসরি ওয়াশরুমে ঢুকিয়ে বললেন,
– আজ একসাথে শাওয়ার নিবো!
উনার কথাটা শুনেই আমার আত্নার পানি শুঁকিয়ে গেলো।আমি ভাবলাম সিরিয়াস কোনো কথা বলার জন্য এভাবে রুমে আনলেন!আমি চোখ বড় বড় করে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
– অসম্ভব!!!
– অসম্ভব বলে কোনো ওয়ার্ড এই পৃথিবীতে নেই!চেষ্টা করলে সবই সম্ভব!
বলেই উনি শাওয়ার ছেড়ে দিয়ে জোর করে আমাকে টেনে শাওয়ারের নিচে দাড়িয়ে পরলেন!
.
আমি কাঁপা কাঁপা পায়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে বেডের উপর বসে পরলাম।পরনে উনার শার্ট-প্যান্ট!উনি কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে আমার সামনে দাড়িয়ে টাওয়াল দিয়ে আমার চুল মুছে দিলেন।আমার থুতনী ধরে মুখ উপরে তুলে বললেন,
– এখন থেকে প্রতিদিন একসাথে শাওয়ার নিবো!ওকে?
আমি ভারীকন্ঠে বললাম,
– ইম্পসিবল!!!
উনি দুষ্টুহাসি হেসে বললেন,
– সবই পসিবল!
বলেই আমার সামনে ফ্লোরে বসে টাওয়ালটা আমার হাতে দিয়ে বললেন,
– নাও…এখন আমার চুল মুছে দাও!বাই দ্য ওয়ে,তোমাকে শার্ট-টা পরে ভালোই লাগছে!
আমি উঠে আসতে নিলেই উনি আমার কোমড় ধরে বসিয়ে দিয়ে বললেন,
– আগে মুছে দাও!তারপর চেঞ্জ করতে যাবে!এতক্ষণ আমি আমার শার্টওয়ালীকে দেখি!
.
.
#Real_Love♥
#Oniya_Chowdhury
Part: 49
.
.
ইয়াশ হাতে চকলেট বক্স নিয়ে রুমে ঢুকে বক্সটা আমার পাশে রেখে বেডের উপর থেকে একটা বালিশ নিয়ে এলোপাথারি ইফাজকে মারতে শুরু করলো।উনি এমনভাব করছেন দেখে মনে হচ্ছে অনেক ব্যাথা পাচ্ছেন।আসলে উনি বিন্দু পরিমানও ব্যাথা পাচ্ছেন না।আমি চুপচাপ দু’জনের কান্ড দেখছি।উনি ইয়াশকে থামতে বললেন।ইয়াশ থামলো না।ইয়াশ রেগে বললো,
– তখন বললে কিছুক্ষণের মধ্যেই ভাবিকে পাঠিয়ে দিবে।একঘন্টা হয়ে গেলো তুমি পাঠাও নি।কোথায় লুকিয়ে রেখেছিলে ভাবিকে?একটু আগে রুমে এসে কাউকে যে দেখতে পেলাম না।
– তোমার ভাবি ওয়াশরুমে পড়ে গিয়েছিলো দেখো কি অবস্থা হয়েছে!
ইয়াশ এতক্ষণে আমার দিকে ভালোভাবে তাকালো।ইয়াশ বালিশ ঢিল মেরে ফেলে দিয়ে আমার কাছে এসে বললো,
– এটা কেনো পরেছো?
আমি ইয়াশকে কোলে বসিয়ে বললাম,
– ওয়াশরুমে পড়ে গিয়েছিলাম।শাড়ি একেবারে ভিঁজে গিয়েছিলো।তোমার ভাইয়ার শার্ট-প্যান্ট ওয়াশরুমে আগে থেকেই রাখাছিলো,তাই সেগুলো পরেই বেরিয়ে এসেছি!
ইয়াশ খিলখিল করে হাঁসছে।হাসতে হাসতে বললো,
– তোমাকে কেমন কেমন যেনো লাগছে!ভাইয়া-ভাইয়া টাইপ!
বলেই ইয়াশ বেড থেকে নেমে আমার হাত টেনে বললো,
– আম্মুর রুমে চলো!আম্মুকে দেখাবো!
ইয়াশের কথা শুনে আমি চোখ বড় বড় করে কেঁশে উঠলাম।ইফাজ ইয়াশকে একপ্রকার জোর করে কোলে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।যাওয়ার সময় ইশারায় আমাকে তাড়াতাড়ি চেঞ্জ করে নিতে বললো!ইয়াশ একবার কিছু মুখ দিয়ে বের করলে সেটা করেই ছাড়ে!উনি সেই ভয়েই হয়তোবা এভাবে জোর করে কোলে তুলে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন!
.
রাতের দিকে আমি কিচেনে আন্টিকে হেল্প করছিলাম!উনি ডাইনিং-এ বসে ইয়াশের সাথে ইয়াশের ফ্রেন্ডের নিয়ে গল্প করছে।
.
আন্টি আঙ্কেলকে ডাকতে উপরে চলে গেলো!মনি কিচেন থেকে তরকারি নিয়ে ডাইনিং-এ রেখে আসলো।আমি হাত মুছে ইয়াশের পাশের চেয়ারে বসে পরলাম।উনি আমার অপজিট চেয়ারে বসা।আন্টি আঙ্কেল দুজনে ডাইনিং-এ এসে চেয়ার টেনে বসলেন।মনি কিচেন থেকে দু’টো দুধের গ্লাস আনলো।একটা গ্লাস আমার সামনে রাখলো আরেকটা ইয়াশের সামনে।মনি আন্টির পাশে বসলো।এই দুধ জিনিসটা দেখলেই মুখ তেঁতো হয়ে যায়।প্রতিটা দিন এই জিনিসটা খেতে হয়।
.
ডিনার শেষে রুমে এসে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে শুঁয়ে পরলাম।কখন ঘুমিয়ে পরেছি খেয়াল-ই করি নি।উনার ডাকে মিটমিট করে চোখ খুলে তাকাতেই উনি বললেন,
– কাল যেই পেনড্রাইভ-টা দিয়েছিলাম কোথায় রেখেছো সেটা?
আমি ঘুম চোখে উঠে হেলেদুলে আলমারি থেকে পেনড্রাইভ-টা বের করে দিলাম।উনি পেনড্রাইভ-টা নিয়ে বেডের উপর লেপটপ নিয়ে বসে পরলেন।এখন নিশ্চয় মধ্যরাত পর্যন্ত অফিসের কাজ করবেন।আমি চুপচাপ শুঁয়ে পরলাম।কাঁচা ঘুমটা ভেঙ্গে দিয়েছেন উনি।আর ঘুম আসছে না।উনাকে কিক মেরে এইমুহূর্তে অফিসে পাঠিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে!কি দরকার ছিলো আমার ঘুমটা ভাঙ্গানোর।একটু খুঁজলেই পেনড্রাইভটা পেয়ে যেতো।বিরক্তিকর….
ইদানিং বেশি ঘুম পায়।শোয়ামাত্রই ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমাই।কিন্তু এইমুহূর্তে আর ঘুম আসছে না।তবুও চোখ বন্ধ করে রাখলাম।অনেকক্ষণ হয়ে গেলো।তারপরও যখন ঘুম এলো না আমি সরাসরি উঠে উনার লেপটপটা ঠাস্ করে বন্ধ করে দিলাম।উনি চমকে উঠলেন!চোখ বড় বড় করে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
– টিয়াপাখি! আর ইউ ওকে?আবার কোনো দুঃস্বপ্ন দেখলে নাকি?
আমি উনার কলার চেঁপে ধরে বললাম,
– আমার কাঁচাঘুম এভাবে নষ্ট করলেন কেনো?আমার আর ঘুম আসছে না!কিন্তু এইমুহূর্তে আমি ঘুমাতে চাই!যেভাবেই হোক আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিন।
– ওহ্!এই কথা!দেখি শুঁয়ে পড়ো আমি ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছি!
উনার কথা শুনে আমি উনার কলার ছেড়ে শুঁয়ে পরলাম।উনি লেপটপটা রেখে আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন।কঁপালে একটা চুঁমু দিয়ে বললেন,
– সরি!
আমি কোনো কথা বললাম না।উনি আবার বললেন,
– সরি!
আমি উনার বুকে চুঁমু দিয়ে বুঝিয়ে দিলাম “ইট’স ওকে!”
আমার কান্ড দেখে উনি আমাকে আগের থেকেও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন!
.
.
সকালে উঠে রুমের সবকিছু ঠিকঠাক করে গুঁছিয়ে রাখছিলাম আর গুনগুন করে গান গাচ্ছিলাম!
আসবে আমার ঘরে
আমার ছোট্ট সোনা;
ভরিয়ে দেবে খুশীর আলোয়
তার জোছনা;
আসবে আমার ঘরে…..
.
– কে আসবে?
আমি চঁমকে উঠে পেছনে তাকালাম!উনি টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে কথাটা বললেন!আমি বুকে থুঁথুঁ দিয়ে বললাম,
– কে আসবে?
– আমি কিভাবে বলবো?তুমিই তো মাত্র বললে!
– কই?আমি ওরকম কিছুই বলি নি!ছড়া পরছিলাম!
আমার কথা শুনে উনি চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
– সিরিয়াসলি!!!
– হুম…
– আমাকে শোনাও তো একটা!
আমি জানতাম উনি এখন এই কথাটাই বলবে!আমি ফুঁরফুঁরে মনে বলতে শুরু করলাম,
হাট্টিমাটিম টিম
তারা মাঠে পাড়ে ডিম;
তাদের খাঁড়া দু’টো শিং
তারা হাট্টিমাটিম টিম;
.
উনি হাসতে হাসতে বেডের উপর গড়াগড়ি খাচ্ছেন!আমি সেদিকে ভ্রুঁক্ষেপ না করে রুম থেকে বেরিয়ে এলাম।উনি নিশ্চয় ভাবতে পারেন নি আমি সত্যি সত্যিই ছড়া বলতে শুরু করবো!মজা পেয়েছেন ভীষন!মাঝে মাঝে এরকম দু’একটা ছড়া শোনানো উচিৎ!ব্যাপারটা মন্দ হবে না!
.
আন্টির রুমে চলে আসলাম!রুমে কাউকে দেখতে পেলাম না।না আন্টি আর না আঙ্কেল!কিচেনে এসেও আন্টিকে পেলাম না।মনিকে জিজ্ঞেস করতেই মনি বললো ইয়াশকে নিয়ে স্কুলে গিয়েছে।আমি আর কথা না বাড়িয়ে শাড়ির আঁচল কোমড়ে গুঁজে মনির সাথে আমিও রান্নায় লেগে পরলাম।উনি রুম থেকে চিৎকার করে আমাকে ডাকছেন।অনেকক্ষণ ডাকার পরও যখন আমি কোনো সাড়া দিচ্ছিলাম না তখন মনি কিছুটা রেগে গিয়ে বললো,
– ভাইজান যে ডাকতেছে আপনের কানে কি ঢুকতেছে না?
– ঢুকছে তো!
– তাইলে যাইতেছেন না ক্যা?
আমি মনির দিকে তাকিয়ে বললাম,
– আচ্ছা!বলো তো….তোমার ভাইজান আমাকে কোনো কাজে ডাকছে নাকি অকাজে?
আমার কথা শুনে মনি ভ্রু কুঁচকে বললো,
– আপনের কি হয়ছে?এরকম উল্টাপাল্টা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতেছেন ক্যা?
– আমার কিচ্ছু হয়নি।এমনি জিজ্ঞেস করলাম।থাক বলতে হবে না…
বলেই আমি কিচেন থেকে বেরিয়ে এলাম!উপরে উঠে রুমে উঁকি দিলাম দেখতে যে উনি কি করেন?উনি খালি গায়ে একটা প্যান্ট পরে বেডের উপর বসে আছেন।আমি রুমে ঢুকে উনার সামনে দাড়িয়ে বললাম,
– ডেকেছিলেন আমাকে?
উনি আমাকে আপাদমস্তক দেখে বললেন,
– গিন্নি লুক!
উনার কথা শুনে আমি ভ্রুঁ কুঁচকে আমার দিকে তাকাতেই দেখলাম কোমড়ে শাড়ির আঁচল গুঁজে রাখা!আমি দ্রুত আঁচলটা ছেড়ে দিলাম!আমার কান্ড দেখে উনি হেসে আমার কোমড় ধরে কাছে টেনে নিয়ে বললেন,
– ভালোই তো লাগছিলো!
বলেই আঁচলটা নিয়ে কোমড়ে গুঁজে দিলেন!আমি অপ্রস্তুতভাবে বললাম,
– কিচেনে ছিলাম তাই আচঁ….
উনি আর বলতে দিলেন না!আমার মুখ চেঁপে ধরে উঠে দাড়ালেন!আমি ভয়ে চোখের পলক ফেলার আগেই উনি কিছু একটা করে বসলেন!যেটার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম!আমি চোখ বড় বড় করে উনার দিকে তাকালাম।উনি ঠোঁটে দুষ্টুহাসির রেখা ফুঁটিয়ে তুলে বললেন,
– এতক্ষণ আমাকে অপেক্ষা করানোর মিষ্টি একটা শাস্তি!
আমি উনার বুকে কয়েকটা কিলঘুষি মেরে চলে আসতে নিচ্ছিলাম উনি পেছন থেকে হাত টেনে ধরে বললেন,
– এখন কোথাও যাওয়া চলবে না!এখন আমি রেডি হবো!যতক্ষণ রেডি হবো চুপচাপ আমার সামনে দাড়িয়ে থাকবে!
.
.
(চলবে)