#Gangster_Husband
#Part_17
#Writer_Fariha_Jannat_Oriddhi
অতি কষ্টে মানুষ হিতাহিত জ্ঞান ভুলে যায়। ঠিক বিন্দুর ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। বিন্দু মেইন রোডের সামনে পিছনে না তাকিয়ে দৌড়াতেই আছে। তার পাশে দিয়ে বড় বড় গাড়ি যায় তবুও তার কোন খেয়াল নেই ।পিছন থেকে বর্ণ ডাক দিচ্ছে তবুও শুনে না। সে আজ তার জীবণে সবচেয়ে বড় সত্যি জানতে পেরেছে। সে এতোটাই শক পায় যে, সে এখন নিজের কন্ট্রোল এ নেই। বিন্দু ভাবছে তার সাথে এমন কেন হলো? এসব ভাবতে ভাবতে যখনি রাস্তার ঐ পাশে যাবে তখন কোথায় থেকে বড় একটা মাইক্রো এসে তা থেকে একটি লোক বিন্দুকে তুলে নেয়।
এদিকে কিছুক্ষণ পর বর্ণ এসে দেখে বিন্দু নেই। অনেক খুঁজে ও, বিন্দুকে পায় না।
চার দিকে পুলিশ লাগিয়ে দেয় বিন্দু ও তাদের একমাত্র শত্রু আলতাফ মির্জা কে ধরতে কিন্তু কোথাও পায় না বর্ণ।
এভাবে দেখতে দেখতে তিন মাস কেটে যায় তবুও বিন্দুর কোন খোঁজ নেই। বর্ণ এখন সেই আগে বর্ণ নেই। বর্ণ ত তার প্রিয়তমা স্ত্রী কে হাড়িয়ে পাগল প্রায়। সবাই তাকে বুজানোর চেষ্টা করে কিন্তু বার বার ব্যর্থ হয়ে ফিয়ে আসে। বর্ণ একা অন্ধকার ঘরে নিজেকে বন্দি করে রেখেছে।যে রুমে বিন্দুর নানান স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। বিন্দুকে এখানেই নানান ভাবে শারিরীক ও মানসিক অত্যাচার করতো বর্ণ। বিন্দুর আর্তনাদ জেন এ ঘরে ভাসে এখনো। ঠিক মত খাবার খায় না সবার সাথে কথা বলে না।নিজের যত্নও নেয় না ।পুলিশ সব আশা ছেড়ে দিয়েছে কিন্তু বর্ণ ছাড়ে নি। বর্ণ বিশ্বাস করে সে একদিন তার পিচ্চি বউ কে নিজের কাছে পাবেই। তাই ত সে দেশ বিদেশে লোক লাগিয়ে দেয়। তার যে প্রিয়তমাকে অনেক কিছু বলার রয়েছে, ক্ষমা চাওয়া ত এখনো বাকি আছে।
আজ বর্ষা ও শ্রাবণের বিয়ে।যদিও এ নিয়ে বর্ণের কোন মাথা ব্যাথা নেই কারণ ও সব দিক থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে। চৌধুরী মঞ্জিল আজকে খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। পুরো বাড়ি লাইটিং। হবে না কেন চৌধুরী বাড়ির মেয়ের বিয়ে বলে কথা। চারিদিকে আত্মীয় স্বজনের হৈ হৈ আনন্দ চিৎকার সব মিলিয়ে উৎসব মুখর। শুধু একজনের মনেই আনন্দ নেই তা হলো বর্ণের।
রাত 12 টার সময় শ্রাবণ বাহিরে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে। খুব নার্ভাস ভিতরে যেতে পারছে না।
এদিকে বর্ষা লাল টুকটুকে বেনারসী শাড়ি, হালকা সাজ, শরীরে ফুলের গহনা পড়ে মাথায় ঘুমটা দিয়ে ফুল দিয়ে সাজানো বেডে বসে আছে।রুমে লাইট অফ করা চারদিকে মোমের আলো ও বিভিন্ন ফুলের সুবাস ।হুম !!আজকেই ত তার ফুলসজ্জা!!! আজকেই সেই রাত যে রাত নিয়ে প্রত্যেক মেয়েই স্বপ্ন দেখে তার ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে। বর্ষাও তার ভালোবাসার মানুষকে পেয়েছে কিন্তু শ্রাবণ ত অন্য মেয়ে কে ভালোবাসে ।শ্রাবণ বিদেশ যাওয়ার আগেই বর্ষাকে বলে গেছে সে কাউকে ভালোবাসে এবং তা নিজের জীবনের চেয়েও বেশি!!!
তাহলে শ্রাবণ কি বর্ষাকে মেনে নিতে পারবে?
এসব ভাবতে ভাবতে দরজার আওয়াজ পেয়ে তাকিয়ে দেখে শ্রাবণ আসে ।বর্ষা শ্রাবণকে প্রথা অনুযায়ী সালাম করে কিন্তু শ্রাবণ কোন কথা না বলে ওয়াশ রুমে যায়। বর্ষার মন খারাপ হয়ে যায় কারণ সে ত তার বরের থেকে এতটুকু কথা শোনার ও যোগ্যতা রাখে না?
শ্রাবণ ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে আসে, সে এখন সাদা রঙের পাঞ্জাবি পরেছে। বর্ষার দিকে এগিয়ে এসে বলে–শুয়ে পড় অনেক রাত হয়েছে। তুমি ও পাশে শুয়ে পড়ো আমি এপাশে শুয়ে পড়ি মাঝখানে বালিশ থাক।
বর্ষা অবাক হয়ে যায় কারণ সে বান্ধবী দের থেকে শুনেছে বাসর রাতে সকল স্বামী স্ত্রী গল্প করে একে অন্যকে চিনে। এ রাত তো দুটি মন, দুটি মানুষ এক হয়ে যাওয়ার রাত আর তার বর কিনা এসে শুয়ে পড়তে বলেছে তাও আবার মাঝখানে বালিশ!!!
ভাবা যায়? আমি ত জানি সে অন্য কাউকে ভালোবাসে তাই বলে এমন ব্যবহার!!! আমি ত বিয়ে করতে চাই নি। তাহলে কেন ও আমায় বিয়ে করলো। নাহ্ এ অপমান সহ্য করা যায় না।
শুনছেন?
শ্রাবণ মাথায় হাত রাখা অবস্থায় বললো
—বলো
—আমি জানি আপনি আমায় ভালোবাসেন না তাহলে বিয়ে করছেন কেন?
—উওরটা কি আজকেই লাগবে?
–অবশ্যই আজ এবং এখনি।
—যদি বলি আমি বাধ্য না।
—তা বললে হবে না। আপনাকে বলতেই হবে। বিয়েটা কোন ছেলে খেলা নাহ্। আমি জানি আপনি অন্য একজনকে ভালোবাসেন। আপনি আমার ফ্যামিলি কে না করতে পারেন নি বলে তাদের মতামত আপনি গ্রহণ করেছেন। সমস্যা নেই আমাকে আপনার যদি নাই পছন্দ হয় আপনি আমায় বলতে পারেন ।
–পছন্দ না হলে কি করবে?
–আমি আপনাকে মুক্তি দিয়ে দিবো। আমি ডির্ভস দি,,,,,,
বর্ষা কথাটা পুরো বলতেই পারে না তার আগেই শ্রাবণ তার ঠোঁট দিয়ে বর্ষার ঠোট গ্রাস করতে শুরু করে।ঘটনাটা আকস্মিক হওয়াই বর্ষার বুজতে বেশ সময় লাগলে ততক্ষণে শ্রাবণ বহুদিনের তৃষ্ণা মেটানোর কাজে ব্যস্ত। 10 মিনিট পরে শ্রাবণ ঠোট থেকে নেমে বর্ষার গলার নিচে লালচে তিলে কিস করতে থাকে তখন বর্ষা নিজের থেকে শ্রাবণকে বেশ জোরে ধাক্কা দেয়। শ্রাবণ রাগী চোখে তাকায় তার চোখ লাল হয়ে গেছে।
শ্রাবণ বলতে শুরু করে
–আমার থেকে মুক্তি এতোটা সহজ নয় মিসেস শ্রাবণ। আজকের দিনে তুমি এই মুখে ডির্ভসের কথা আনো কিভাবে আজকে আমাদের পবিত্র রাত, আর তুমি কি না!!! হ্যাঁ আমি একজনকে ভালবাসি। খুব ভালোবাসি তাকে। নিজের জীবণের চেয়েও বেশী। সেইটা তুমি!!! ঠিক শুনেছো সেইটা তুমি মিসেস শ্রাবণ। আমি ভাবছিলাম বিয়েটা তাড়াহুড়া করে হয়ে গেলো তোমায় একটু টাইম দিবো। এখন ভাবছি আমি ভুল!! তোমাকে আর টাইম দেওয়া যাবে না আজকের রাতেই তোমার ডানা ছেটে দিবো।
শ্রাবণের কথা শুনে বর্ষা জমে গেছে সে কি করে পারলো শ্রাবণকে ভুল বুঝতে। শ্রাবণ তাকে এতো ভালোবাসে আর সে কিনা এই রাতে তাকে এভাবে হার্ট করেছে? ওর গাল বেয়ে নোনা জল পরছে। এদিকে শ্রাবণের চোখেও পানি যার জন্য এতো দিন ওয়েট করছে এই রাতটার জন্য আর সে কিনা মুক্তি দিবে না আর না!!
অনেক হয়ছে। আজ শুধু তার মায়াপরীকে মন ভরে আদর করবে।
বর্ষা শ্রাবণের দিকে তাকিয়ে ক্ষমা চাইতে নেয় কিন্তু পারে না তার আগেই শ্রাবণ বর্ষাকে আলিঙ্গন করে ও গভীর ভালোবাসায় ডুব দেয়। যেখানে দুটি মানুষ সব কিছু ভুলে একে অপরকে উজার করে দেয় সমস্ত ভালোবাসা।
এদিকে বর্ণের মনটা আজ বেশ খারাপ তার কেন জানি খুব কষ্ট হচ্ছে যদিও কষ্টটা তার নিত্যদিনের সঙ্গী তবুও আজ কেন জানি তার কাছের মানুষকে হারানোর ভয় করছে মনের ভিতর।
বিন্দুর কি কনো বিপদ?
নাহ!! তা হতে পারে না এসব কি ভাবছি আমি। আল্লাহ তুমি আমার বিন্দুকে রক্ষা করো। তুমি ওকে আমার কাছে ফিরিয়ে দাও।
হঠাৎ বর্ণের ফোন আসে।
—হ্যালো

—সরি!! চিনলাম না।

—what… আমার বাচ্চা ?
.
.
.
বিঃদ্রঃ ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here