#Gangster_Husband
#Writer_Fariha_Jannat_Oriddhi
#Part_15
সময় ও স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না। সময়ের মূল্য অনেক। সময় থাকতে সময়ের মুল্য দিতে হয় ও দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝতে হয় এতে সবার জন্য মঙ্গল কিন্ত যারা বুজে না তাদের জন্য দুঃখ ছাড়া আর কিছুই নেই।।।
গাড়িতে বসা সবাই স্তব্ধ!! কি থেকে কি হয়ে গেলো বিন্দু ত পাপা বলে চিৎকার দিয়ে সেন্স হাড়িয়ে ফেলছে।বিন্দু মনিমার কোলে মাথা দিয়ে আছে তার কোন জ্ঞান নেই। কোন মেয়েই তার বাবার এরকম একটা খবর পেয়ে চুপ থাকতে পারে না ,সে জায়গায় বিন্দু কি করে থাকবে?
মায়ের আদর ত পায় নি সে, বাবাই তার কাছে সব ছিলো অথচ সে বাবাও আজ চলে গেলো তাকে একা ফেলে। ও কেমন মেয়ে যে তার বাবার শেষ সময়েও তার পাশে থাকতে পারে নি।
হ্যাঁ!! ঠিক শুনেছেন বিন্দুর বাবা আর নেই।
মানুষ নির্দিষ্ট সময় নিয়ে পৃথিবীতে আসে ও নির্দিষ্ট সময় শেষ হয়ে গেলে চলে যায় সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে। সৃষ্টি যেহেতু আছে তেমনি ধ্বংস ও আছে।
প্রকৃতির নিয়মে মানুষ পৃথিবীতে আসে আবার প্রকৃতির নিয়মে চলে যায় কেউ চাইলে তাকে ধরে রাখতে পারে না। সব চলে যাওয়ার পেছনে কোন না কোন কারণ থাকে বিন্দুর বাবা মারা যাওয়ার পিছনেও কারণ আছে তা হলো সত্য ঢাকতে কেউ একজন বিন্দুর বাবাকে নৃশংস ভাবে খুন করে। কে খুন করেছে তা পুলিশ তদন্ত করছে আশা করা যায় খুব তাড়াতাড়ি বেলাল জামিনের খুনের কারণ ও খুনী ধরা পরবে।।।
গাড়ি থেকে নেমে সবাই ক্লিনিকে যায়। বর্ণ বিন্দুকে কোলে নিয়ে আছে। বাকিরা সবাই আছে এখন এর মধ্যে ডক্টর এসে বর্ণকে বলে
—মি. চৌধুরী বেলাল জামানের হার্ট থেকে তিনটি গুলি পাওয়া গেছে। এই গুলি গুলো আমি পুলিশকে দিয়েছি আর লাশের অবস্থা ভালো ছিলো না । মনে হচ্ছে কেউ তার মনের অনেক বছর জমে রাখা রাগ লাশের উপর মিটিয়েছে।
লাশ মর্গে রাখা আছে আপনারা নিয়ে যেতে পারেন। আমি সব রকম সাহায্য করবো আপনাদের।
—ধন্যবাদ ডক্টর।
মনিমা প্রচুর কাঁদছে বেলা কোথায় গেলি বাবা। আমি আর কখনো তোর সাথে খারাপ ব্যবহার করবো না। তুই শুধু একবার ফিরে আয় আমার কাছে।
এটাই দুনিয়ার নিয়ম যে চলে গেছে সে কি আর ফিরে আসে? কখনো আসে না।
পরিবেশটা অন্যরকম। সবাই এখন গ্রামের বাসাই। এখানেই বিন্দুর বাবাকে কবর দেওয়া হবে। সবাই দেখতে এসেছে শুধু একমাত্র মেয়েটার সেন্স এখনো ফিরে নি। তাকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়ছে।
হুজুর এসে বললো—
আর দেরি করা ঠিক না লাশ এখন দাফন করতে হবে, কিন্তু সবাই ত ওয়েট করছে বিন্দুর জন্য সে একনজরে তার বাবাকে শেষ দেখা দেখার জন্য।
আর ত চাইলেও দেখতে পারবে না। বলতে পারবে না পাপা আমার গিফট কোথায়?
আর কেউ প্রিন্সেস করে ডাকবে না!!
মৃত মানুষকে ত এভাবে এতো সময় রাখা ঠিক না।
হুজুরের কথা অনুযায়ী বর্ণ ও শ্রাবণ খাটনির দুপাশে সামনে দুজন ধরে ও বাকি রা পেছে ধরে তুলতে নেই
এর মধ্যে ঘর থেকে কারো আর্তনাদ ভেসে আসে, সেটা আর কেউ না, এই আর্তনাদ হলো বিন্দুর ওর বাবার প্রতি করা আর্তনাদ।
—পাপা ও পাপা!! তোমরা আমার পাপাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো ?ছেড়ে দাও বলছি।।।
ও পাপা তুমি আমায় ছেড়ে ত একা থাকো না। তাহলে আমায় রেখে কোথায় যাচ্ছো? আমায় নিয়ে যাও না।
তুমি ত জানো পাপা আমার এই পৃথিবীতে কেউ নেই!! আমায় একা করে চলে যাচ্ছো তুমি। আমি কি নিয়ে থাকবো?
আমি আর পারছি না পাপা! হঠাৎ বর্ণের দিকে চোখ যায় বিন্দুর ও কাঁদতে কাঁদতে বর্ণের হাত ধরে টান দিয়ে ওর কাছে নিয়ে আসে, ঠাসসস করে একটা থাপ্পড় লাগিয়ে দেয় বর্ণের গালে। উপস্থিত সবাই বকা বনে যায়। বর্ণের চোখ মুখ লাল হয়ে যায়। এভাবে সে এতো গুলো মানুষের মধ্যে থাপ্পড় খাওয়াতে। বিন্দু তবুও থামে না সে বর্ণের কলার ধরে বলতে থাকে —
“কেন করলি তুই আমাদের সাথে এমন। তোর কখনো ভালো হবে না গুন্ডা! তোর জন্য আমার পাপা মারা গেছে আমি সব বুঝি। আমি এতোটা অবুঝ না। তুই আমাদের সাথে অন্যায় করেছি তোকে আমি পুলিশে দিবো।
—বিন্দু তুমি ওকে ভুল বুজছো একটু শান্ত হও তুমি! ও তোমার স্বামী হয় ওর সাথে এভাবে কথা বলছো কেন,,,,?
–আপনি চুপ করুন মনিমা। আপনি সব জানেন। আপনিও আমার পাপাকে অপমান করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন আমি সব দেখেছি। কিসের প্রতিশোধ নিচ্ছেন আপনারা আমার থেকে পাপা ত মারা গেছে এখন আমার মেরে ফেলুন। আমি বাঁচতে চাই না এই নরকে। আমি মুক্তি চাই। চলে যেতে চাই এই স্বার্থপর পৃথিবী থেকে ।
কথা গুলে বলে বিন্দু মাটিতে লুটিয়ে পরে।
–বর্ণ বিন্দিকে ধর ও অসুস্থ।।।
—বর্ণ বিন্দুকে তুলতে গিয়ে দেখে ওর সেন্স নেই, সে রুমে নিয়ে শুয়ে দেয় ,বর্ষা ও মনিমাকে খেয়াল রাখতে।
বেলাল জামানের দাফন কাজ সম্পন্ন হলো।
আজ আকশের অবস্থা ও ভালো না। পরিবেশটা বেশ থমথমে। বাতাশের সাথে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে। সন্ধ্যা নেমে এসেছে একে একে সবাই চলে গেছে কবর জিয়ারত করে। বিন্দুর বাবাকে পারিবারিক কবরস্থান এ দাফন করা হয়েছে বিন্দুর মায়ের পাশে। সেখানে রয়েছে বিন্দুর মা, দাদা ,দাদি, ফুপি, চাচা যাদের মৃত্যু একিদিনেই হয়েছে।
বর্ণ এতোক্ষণ কবরের সামনে বসে ছিলো সে নিজেকে অপরাধী মনে করছে। নিজের মনকে শান্ত করতে পারছে না তার জন্য এসব হয়ে গেলো।
যে যত বড় অন্যায় করুক না কেন সে ত কারো মৃত্যু কামনা করতে পারে না কিন্তু আজ বেলাল জামানের মৃত্যুর কার বর্ণ নিজেই। ও তার সর্বশ কেড়ে নিয়েছে পথে বসিয়েছে লোকটিকে।
–বর্ণ বাড়ি চল অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে, কাধে হাত দিয়ে শ্রাবণ বলে।
বর্ণ ত এক ধ্যনে বিন্দুর বাবার কবরের দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু বলছে না। শ্রাবণ জোর করে বর্ণকে বাসায় নিয়ে আসে। রাত দশটায় সবাই খাবার টেবিলে বসে শুধু বিন্দু ছাড়া। কারো গলা দিয়ে খাবার নামছে না।
রাহিমা খালা সবাইকে খাবার বেরে দিচ্ছে।
বর্ণ খাবার নাড়াচাড়া করতে বলে উঠে
—মনিমা বিন্দু কোথায়?
—ঘরে আছে। ঘুমের ইনজেকশন দিয়েছে ডক্টর।
–ওহ্!!
—বর্ষা ওকে দেখে আয় ত একবার।
–যাচ্ছি দা।
—বর্ষা একটু পর গম্ভীর হয়ে ফিরে আসে ।
–কি হলো?
—মনিমা সর্বনাশ হয়ে গেছে। বৌমনি ঘরে নেই !!!
মনিমা সহ সবাই বলে উঠে কি বলিস? ভালো করে দেখছিস?
–হ্যাঁ।
সবাই খাবার টেবিল থেকে উঠে পুড়ো বাড়ি গ্রামের সব জায়গায় খুজে কিন্তু কোথাও পায় না। চারিদিকে লোক লাগায় এর মধ্যে বর্ণের ফোন আসে হসপিটাল থেকে।
বর্ণ রিসিভ করে।
ওপারে থেকে ডক্টর বলে আপনি এখনি আসেন রোগীর অবস্থা ভালো না। মনিমা ও আপনাকে রোগী কিছু বলতে চায়।
বর্ণ ফোন রেখে মনিমা সহ সবাই কে নিয়ে হসপিটালের উদ্দেশ্যে গ্রাম থেকে রওনা দেয়।
কথায় আছে না বিপদ আসে সব একসাথে আসে।।।
দেখাযাক আকবর কি বলে মনিমা ও বর্ণকে।।
.
.
.
চলবে,,,,,,
বিঃদ্রঃ ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।✔️আমি অসুস্থ তাই আমি Edit করতে পারি নি
❗️আশা করি আমার সমস্যা বুজবেন। একটা গল্প লিখতে অনেক কষ্ট হয় সো নাইছ নেক্সট কমেন্টের কোন প্রয়োজন নেই।।।