#Gangster_Husband
#Part_11
#Writer_Fariha_Jannat_Oriddhi
রাতের আকাশে শতো শতো তারা,,, সেই তারা গুলোর মাঝে উঠে এক ফালি চাঁদ
চাঁদ দূর থেকে দেখতেই সুন্দর কিন্তু ধরা ছোঁয়া যায় না,,,
আকাশে সব মেঘ কেটে যেমন রোদ উকি দেয় ঠিক তেমনি রাতের সব অন্ধকার কেটে নতুন সকালের আগমন জানান দেয়
এই সকাল কারো জন্য খুশি নিয়ে আসে আবার কারো জীবন রাতের অন্ধকারের মতো রয়ে যায়,,,,,
ঠিক তেমনি আরো একটি রাত কেটে সকালের জানান দিচ্ছে,,,,
চারদিকে পাখির কলরব,,, কিন্তু জান্নাত মঞ্জিল এ সব জেন থেকেও নেই,,, কি করে থাকবে,,,
বাড়ির সকলের মধ্যমণি যে আজ অন্যের বাড়িতে,,,,
বিন্দু চলে যাওয়ার পর থেকে এ বাড়ির সব সুখ চলে গেছে,,,,
,
বেলাল জামান আক্কাসকে ডেকে এককাপ চা দিতে বললো,,,,
আক্কাস এসে এক কাপ চা বেলাল জামানের হাতে ধরে দিয়ে বলে
-সাহেস মামনী চলে যাওয়ার পর থেকে আপনি কিচ্ছুটি মুখে দেন নি,,,
এভাবে চললে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন,,,
আপনার তো পেশার হার্ট এর সমস্যা আছে সাহেব,,, ঔষধ গুলো নিয়মিত না খেলে আপনি অসুস্থ হয়ে পরবেন সাহেব,,,, কথা গুলো বলে আক্কাস ঘাড়ে রাখা গামছা দিয়ে নিজের চোখ মুছে নিলো,, আক্কাস এ বাড়ির বহু আগের গৃহ কর্মী,,,,
,
বেলাল জামান এবার কেঁদে দিয়ে বলে
-আক্কাস আমি কিভাবে ভালো থাকি
আমার আদরের মেয়েটা আজ আমার শত্রুর বাড়ি,, আমি কিছুই করতে পারছি না। জানি না আমার মেয়েটা কেমন আছে। আমি কি করে ভালো থাকি আক্কাস? আমার ভালো থাকার ওষুধ ইইই যে অন্য বাড়িতে।জানি না কিভাবে রেখেছে আমার ছোট্ট প্রিন্সেস কে,,,,
-সব ঠিক হইবো সাহেব,,, আপনি কাঁদেন না
,
চৌধুরী নিবাসে
কাল থেকে বিন্দুর জ্ঞান ফেরে নি। আর বর্ণ ও বাড়ি ফিরে নি কাল থেকে সব মিলিয়ে বর্ষা ও মনিমা খুব টেনশনে আছে,,, ছেলেটাকে ও ভাবে বলা ঠিক হয় নি,,, কিন্তু কি করবে একটা নিষ্পাপ মেয়ের জীবন নিয়ে এভাবে খেলছে না বলেও উপায় ছিলো না,,, মেয়েটার অবস্থা এখনো বিপদমুক্ত না,,, ডক্টর বার বার এসে দেখে যাচ্ছে। মেয়েটার কিছু হলে তার বাবাকে কি জবাব দিবে
আনোয়ারা চৌধুরী মাথায় হাত দিয়ে বিন্দুর কাছে বসে আছে,,,
কি নিষ্পাপ লাগছে মেয়েটা কে একদম ছোট্ট পুতুল,,,,
,
মনিমা আজ না শ্রাবণ স্যার এর আহার কথা ছিলো
,
মনিমার চোখটা লেগে যায় । কাল সারারাত জেগে বিন্দুর সেবা করছে। কুসুমের ডাকে চোখ খুলে বলতে থাকে
আমি তো ভুলেই গেছলাম ছেলেটা আজকে কতো বছর পর দেশে ফিরছে
কুসুম তুই ভোলাকে বাজার এ দিয়ে পাঠা ছেলেটা কি কি পছন্দ করে সব রান্না হবে আর তোর ছোট সাহেব কি এসেছে?
না মনিমা এহোন ও আহে নি
বর্ষা কি করে রে,,,??
আফামনি তো তার ঘরেই আছে,,, সকালে কফি ঘরের পাঠাইছিলাম
,
ও তুই এখন যা এখান থেকে সব ব্যবস্থা কর গিয়ে,,,,
,
[শ্রাবণ হলো বর্ণ ও বর্ষার কাজিন। ছোট বেলায় তার বাবা মা মারা যায়। নিজের বলে চৌধুরী বাড়ির মানুষ ছাড়া কেউ নেই । লেখাপড়ার জন্য ছোট থাকতেই ইউএসএ চলে যায়। আজকে লেখাপড়া শেষ করে দেশে ফিরছে। মনিমা শ্রাবণ কে খুব ভালোবাসে কখনো বর্ণ বর্ষা ও শ্রবণ কে আলাদা চোখে দেখে নি ]
,
বিন্দুর জ্ঞান ফিরেছে কিন্তু এখনো অসুস্থ । ভালো ভাবে চোখ খুলে তাকাতে পারছে না। ডাক্তার বলছে ঠিক ভাবে পেশেন্টের ঔষধ ও কেয়ার নিলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে।
মনিমা বিন্দুকে স্যুপ খাইয়ে দিলো,,,বিন্দু চুপ চাপ খেয়ে নেয় কোন কথা বলে না,,, মেয়েটা বড্ড অবুঝ ও অভিমানী
হবেই না কেন বয়স ত খুব কম ধরতে গেলে বর্ষা ও বিন্দু সমবয়সী,,,
ছোট বেলায় দুটোতে একসাথে কতো খেলা করতো। বর্ষা ও বিন্দু তো খুব ছোট ছিলো আর সবাই তখন এক বাড়িতে থাকতো। এদিকে বর্ণ, অর্ণ আর শ্রাবণ তখন ওরা এইট এ পড়তো
ওরা তিনজন সব সময় এদের পিছে লাগতো আর বর্ষা ও বিন্দু শুধু কাদতো,,,
এসব ভাবতে ভাবতে মনিমা হেসে ফেলে কিন্তু বেলাল জামানের কথা মনে পড়ে মুখের হাসি বিষ হয়ে যায়
এর মধ্যে ডাক পড়ে কুসুমের
,
মনিমা আহেন শ্রাবণ স্যার আইসা পড়ছে,, কোথায় আপনে
মনিমা স্যুপ এর বাটি টা বেড সাইডে রেখে বিন্দুর মুখ মুছে দিয়ে ও কে শুয়ে দেয় আর ঘুমাতে বলে,,,
,
বিন্দু কিছুই বুজতেছে না,, প্রশ্ন ও করে নি,, ও ওর ভাগ্য মেনে নিয়েছে,,, হয়তো বা ওর ভাগ্যে এই নরক ইইই লেখা ছিলো
কিন্তু ও বর্ণকে স্বামী হিসাবে মেনে নিতে পারবে না,,,,
,
মনিমা খুশি হয়ে নিচে চলে যায়,,,,
শ্রাবণ এসে মনিমাকে জড়িয়ে ধরে বলে
-আমার জুলিয়েট কেমন আছে
-রোমিও কি তার জুলিয়েট এর খবর নিয়েছে মুখ গোমড়া করে
-রোমিও ত তাহলে ভারী অন্যায় করছে
-শয়তান ছেলে নিজের অন্যায় নিজেই স্বীকার করছিস,,, এতো দিন পর মনে পড়লো এই বুড়ির কথা,,, দেশে একবার ও আসার প্রয়োজন মনে করলি না,,,শ্রাবণের কান ধরে বলে মনিমা
-সরি মনিমা,,,, তুমি ত জানো আমি বিদেশে কেন পড়ে থাকতাম
-শ্রাবণ আগের কথা মনে করিস না দাদুভাই। কুসুম আমার দাদুভাইকে নিয়ে যা ওর রুম দেখে দে ।
-মনিমা কাউকে দেখছি না যে,,,,
-বর্ণ বাসায় নেই,,, বর্ষা ঘরেই আছে । আর বর্ণের বৌ তার ঘরে
-মনিমা কি বলো বর্ণ বিয়ে করছে আর আমি জানি না,, ও আগে আসুক বাসাই,,, বৌমনি কোথায় আমি দেখা করবো,,,
-সে অনেক কাহিনী আমি পরে সব বলবো,,, আগে ফ্রেশ হয়ে ডিনার করে নে,,, ওর বৌ অসুস্থ,,,,,
,
শ্রাবণ তার রুমে গেলো কিন্তু আশেপাশে একজন কে খুঁজছিল
,
রাতে মনিমা আর শ্রাবণ একসাথে ডিনার করলো । বিন্দু অসুস্থ তার রুমে কিন্তু বর্ষা?
ও কেন আসে নি,,, শ্রবণের মনে প্রশ্ন ।রাতে ডিনার ছেড়ে সবাই উঠে গেলে যে যার রুমে
বর্ণ এখনো আসে নি ফোনে ট্রাই করছে বাট অফ। মনিমা শুয়ার আগে বিন্দুকে দেখে গেলো,,,গায়ে একটু জ্বর আছে ঔষুধ খাইয়ে দিয়ে চলে গেলো মনিমা তার ঘরে
মনিমার শরীর ও তেমন ভালো না কসুমকে বললো বর্ণ এলে খাবার দিতে আর বিন্দুকে একটু মাঝে মাঝে এসে দেখে যেতে,,,,
রাত 2 টা
বর্ণ মাতল হয়ে বাসাই আসে। এসে সোজা তার রুমে যায় কোন দিকে না তাকিয়ে টি শার্ট আর ট্রাওজার নিয়ে ওয়াশরুমে যায়,,,
ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে চোখ যায় বেডে শুয়ে থাকা পরীর দিকে
রোগা পাতলা গড়নের গায়ে বাসন্তী ও কলাপাতা রঙের শাড়ী কি সুন্দর ইই না লাগছে দেখতে ডিম লাইট এর আলোয় আরো বেশী ভালো লাগছে,,,, চোখ দুটো টানা টানা গায়ের রঙ দুধে আলতা লম্বা চুল গুলো মুখের উপরে পরে আছে
গোলাপি ঠোঁট জেন বর্ণকে টানছে বিন্দুর দিকে,,,
বর্ণ নেশাগ্রস্ত হয়ে বিন্দুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিন্দুর জ্বর এসেছে কিন্তু ও সব দেখছে
বর্ণ বিন্দুর খুব কাছে যায়
বিন্দু চোখ খুলে তাকায় কিছু বলতে যেয়েও বলতে পারে না কারণ সে অসুস্থ ছিলো কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলো না
বর্ণ বিন্দুর এতোটা কাছে গেছে যতোটা কাছে গেলে দুজন মানুষের নিশ্বাস এক হয়ে যায়
বর্ণ বিন্দুর গোলাপি ঠোট দুটো নিজের ঠোঁটে ভরে নিলো,,, বর্ণ বিন্দুর হাত দুটো নিজের হাতের মাঝে নিয়ে নেয়,,, বিন্দুর পা দুটো বর্ণের পা দিয়ে আটকিয়ে দেয়,, বিন্দু চাইলেও আটকাতে পারলো না,,, বর্ণের ছোঁয়া বিন্দু কেপে উঠছে। বর্ণের ঠোঁট জোড়া বিন্দুর গলার নিচে তিলের উপরে যায়,,,, এক সময় বিন্দু ও বর্ণের সাথে তাল মিলালো,,, বর্ণের ঠোটের ছোঁয়া বিন্দুকে পাগল করে দিচ্ছে,,,,
জানালা দিয়ে চাঁদের আলো এসে পড়ছে বেডে,,, আকাশে পূর্ণ চাঁদ,,, দুজন মানুষ মেতে গেছে তাদের অপূর্ণ ভালোবাসায়
পাওয়া না পাওয়া প্রতিশোধ সব একদিকে রেখে মেতে উঠেছে তাদের এক হয়ে যাওয়ার লড়াইয়ে
পরম আবেশে দু জন দু জনের কাছে ধরা দিচ্ছে। কেউবা নেশাগ্রস্ত হয়ে কাছে টেনে নিয়েছে আবার কেউ বিবেকের কাছে হার মেনে অন্যের ভালোবাসার ছোঁয়ায় সাড়া না দিয়ে থাকতে পারছে না বলে তার কাছে ধরা দিয়েছে,,,,
সব মিলে এই চন্দ্রিমায় হার মেনে গেলো দুজন দুজনের কাছে
,
,
,
চলবে,,,,,,,,???
[ ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আর হ্যা আগামীকাল ছুটির দিন সো কেউ গল্প চেয়ে লজ্জা দিবেন না ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here