#Gangster
.
#পর্ব_১৯+২০
.
#লেখক_Rashmik_Arifin_Asif
.
.
১৮তম পর্বের পর থেকে…!!
.
.
তাফসিরের ইশারা পেয়ে রাত্রি মই বেয়ে রাসমিকের রুমের বারান্দায় প্রবেশ করলো!বারান্দায় দরজা হিসেবে স্বচ্ছ কাচের গ্লাস থাকায় এবং বাহির থেকে ভিতরের সবকিছু স্পষ্ট দেখায় বিধায় রাত্রি বারান্দা থেকে দেখতে পেলো যে রাসমিক ঘুমাচ্ছে!রাত্রির হাতে থাকা সুপার গ্লু দিয়ে ও বারান্দার দরজার লকে লাগিয়ে দিলো যাতে রাসমিক চাইলেও দরজাটা না খুলতে পারে।আর এই ফাকে তাফসির ওর ফোনটা বের করে রাসমিকের নাম্বারে একটা কল দিলো,কিছুক্ষন রিং হবার পরে রাসমিক কলটা রিসিভ করলো!
.
.
তাফসির,,,হ্যালো,ভাই?(উত্তেজিত কন্ঠে)
.
রাসমিক,,,কিরে এতো রাতে কল দিয়েছিস কেন?(ঘুম জড়ানো কন্ঠে)
.
তাফসির,,,ভাই,তুমি ঠিক আছো তো?
.
রাসমিক,,,আমি ঠিক আছি কিনা সেটা জানার জন্য তুই এতো রাতে কল দিছিস?
.
তাফসির,,,আসলে ভাই আমার ফোনে অপরিচিত একটা নাম্বার দিয়ে ম্যাসেজ আসছে যে,আজ রাতে নাকি তোমার অনেক বড় একটা ক্ষতি হবে তাই তোমাকে কল দিলাম তুমি ঠিক আছো কিনা সেটা জানার জন্য!
.
রাসমিক,,,একটা অপরিচিত নাম্বারের ম্যাসেজের জন্য তুই আমার এতো সুন্দর ঘুমটা নষ্ট করলি?
.
তাফসির,,,আসলে ভাই তোমার জন্য টেনশন হচ্ছিলো তো তাই কল দিলাম!
.
রাসমিক,,,আমার কিছু হয়নি,আমি একদম ঠিক আছি,এখন ফোন রাখ একটু ঘুমাতে দে,সকালে কথা বলবো নে!
.
তাফসির,,,আচ্ছা ভাই,সাবধানে থেকো!
.
রাসমিক,,,হুম!
.
.
রাসমিক কলটা কেটে দিয়ে আবার ঘুমের দেশে পাড়ি জমাতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো!তখনই রাত্রি নিজের কাজ শুরু করলো!
.
.
রাত্রি,,,কিরে অন্যের ঘুম কেড়ে নিয়ে নিজে খুব শান্তিতে ঘুমাচ্ছিস?(বারান্দায় দাড়িয়ে,রাসমিককে উদ্দেশ্য করে)
.
.
রাত্রির গলার আওয়াজ পেয়ে রাসমিক ধরফরিয়ে ঘুম থেকে উঠে পড়লো!রাসমিক ঘুম থেকে উঠে আবিস্কার করার চেষ্টা করছে এখানে কি হলো?কার গলার আওয়াজ পেলো সে?হঠাৎ রাসমিকের চোখ আটকে গেলো বারান্দায় সাদা শাড়ি পড়ে দাড়িয়ে থাকা রাত্রির দিকে!
.
.
রাসমিক,,,নওরিন এখানে কি করে এলো?ওকে তো আমি রাসমিকের সাথে আটকে রেখেছি!তবে কি আমি ভুল দেখছি?আমি তো রাত্রেও দেখে এলাম যে নওরিন রাসমিকের সাথেই আছে!তাহলে ও এখানে?কি করে সম্ভব এটা?(মনে মনে)
.
.
রাসমিক হাত দিয়ে নিজের চোখে কিছুক্ষন ডলা দিয়ে আবার বারান্দার দিকে তাকিয়ে দেখে রাত্রি ওখানেই দাড়িয়ে আছে!
.
.
রাত্রি,,,কিরে অবাক হচ্ছিস?আমি এখানে কি করে এলাম?(হাসতে হাসতে)
.
রাসমিক,,,নওরিন,তুই এখানে কি করে এলি হ্যা?তোকে তো আমি…
.
রাত্রি,,,আমাকে তো তুই কি?আটকে রেখেছিলি তাই তো?কিন্তু আত্নাকে কি কেউ আটকে রাখতে পারে?(হাসতে হাসতে)
.
রাসমিক,,,আ আ আত্না মানে?তুই আত্না হতে যাবি কেন?তুই তো বেচে আছিস!(ভয়ে ভয়ে)
.
রাত্রি,,,বেচে ছিলাম কিন্তু এখন আর নেই,তুই আমাকে অনেক কষ্ট দিছিস!তবে তুই যদি শুধু আমাকে কষ্ট দিতিস তাহলে হয়তো আমি তোকে মাফ করে দিতাম কিন্তু না তুই আমার কলিজায় আঘাত করেছিস,তুই রাসের গায়ে হাত তুলছিস,এখন তো তোকে মরতে হবে!
.
রাসমিক,,,তুই মারবি আমাকে?হা হা হা…দাড়া তোকে তো আমি এক্ষুনি শেষ করে দিবো!
.
.
কথাটি বলেই রাসমিক তড়িঘড়ি করে বিছানা থেকে নেমে ওর বেড সাইড টেবিলের ড্রয়ারে রাখা ওর গানটা বের করে বারন্দার দিকে তাক করে দেখে যে বারান্দা ফাকা ওখানে কেউ নেই!রাসমিক দৌড়ে চলে এলো বারান্দার দরজার কাছে,দরজাটা খুলার চেষ্টা করছে ও কিন্তু কিছুতেই খুলতে পারছে না!দরজা খুলতে না পারায় রাসমিক গিয়ে বিছানায় বসে পড়লো,আর হঠাৎ করে ও জোরে জোরে হাসতে শুরু করলো।
.
.
রাসমিক,,,ধুর আমিও কেমন বোকা,নওরিন এখানে কি করে আসবে,ওকে তো আমি আটকে রেখেছি!
.
.
কিন্তু তাও রাসমিকের মনের সন্দেহ না যাওয়ায় ও তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লো রাসমিক আর নওরিনকে যেখানে আটকে রেখেছে সেখানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে।
.
.
অন্যদিকে…
.
.
রাত্রি,,,ও আল্লাহ গো আমার কোমরটা ভেঙে গেলো রে!(নিজের কোমরে হাত দিয়ে)
.
তাফসির,,,চুপ,বজ্জাত মাইয়া,তোরে ঐ ভাবে কেউ নামতে কইছে?
.
রাত্রি,,,আরে আমার কি দোষ ঐ লোকটাই তো ড্রয়ার থেকে নিজের পিস্তল বার করতেছিলো,যদি আমাকে মেরে দিতো তখন?আমি এখনো বিয়ে করিনি!আমি মরে গেলে আমার বাচ্চা গুলা কাকে আম্মু বলে ডাকতো বল?(ন্যাকা কান্না করতে করতে)
.
তাফসির,,,এই চুপ,একদম ন্যাকা কান্না করবি না!ঐ গ্লাসটা বুলেট প্রুফ ছিলো যদি ও তোকে একশটা গুলি ও করতো তাও তোর কিছু হতো না,বোকা মেয়ে।
.
রাত্রি,,,ও বুলেটপ্রুফ?আমি কি সেটা জানতাম নাকি?হে হে হে…
.
.
রাত্রির সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে তাফসির খেয়াল করলো যে রাসমিক বাসা থেকে বেড়িয়ে নিজের গাড়িতে উঠছে কোথাও যাওয়ার জন্য,আর তাফসির খুব ভালো করেই জানে যে রাসমিক এখন কোথায় যাবে।তাফসিরের তাকিয়ে থাকা দেখে রাত্রি ও ঐ দিকে তাকিয়ে দেখে যে রাসমিক গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে।
.
.
রাত্রি,,,ঐ লোকটা তো বেড়িয়ে যাচ্ছে তাড়াতাড়ি চল ওকে ফলো করতে হবে,নাহলে আবার হারিয়ে ফেলবো!
.
.
কথাটা বলে রাত্রি যখন বসা থেকে উঠতে গেলো তখনই আবার কোমরের ব্যাথায় ঠাস করে মাটিতে বসে পড়লো!
.
.
রাত্রি,,,ও মা গো,কি ব্যাথা।(হাত দিয়ে কোমর চেপে ধরে)
.
তাফসির,,,খুব বেশি ব্যাথা করতেছে?
.
রাত্রি,,,হুম রে,আমি মনে হয়না এখন কোথাও যেতে পারবো!আমি বরং এখানে থাকি,আর তুই যা ঐ লোকটার পিছু নে।
.
তাফসির,,,তোকে এখানে একা রেখে আমি কোথাও যেতে পারবো না!
.
রাত্রি,,,কিন্তু তুই না গেলে যে আমরা জানতে পারবো না বোন আর রাসকে ও কোথায় আটকে রেখেছে!
.
তাফসির,,,পারবো,সমস্যা নেই।
.
রাত্রি,,,আরে বুদ্ধু তুই না গেলে আমরা কিভাবে জানতে পারবো হ্যা?
.
.
তাফসির তখন পকেট থেকে নিজের ফোনটা বের করে রাত্রির সামনে ধরলো!যেখানে দেখা যাচ্ছে একটা লাল বৃত্ত ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে!
.
.
রাত্রি,,,ঐ বেটা বলদ,এখন কি গেম খেলার সময় নাকি?(তাফসিরের দিকে রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
.
তাফসির,,,এটা কোন গেম না!
.
রাত্রি,,,আমার কপালে কি বলদ লেখা আছে কোথাও?(নিজের কপালে হাত দিয়ে)
.
তাফসির,,,কই না তো,কেন?
.
রাত্রি,,,তাহলে,আগে বল এতো সিরিয়াস একটা মোমেন্টে তুই এখন গেম খেলছিস কেন?
.
তাফসির,,,আরে এটা গেম না,আমার লোকেরা ওর গাড়িতে একটা ট্রান্সমিটার লাগিয়ে ছিলো,এইটা সেটার রিডার।এখন ঐ লোকটা গাড়ি নিয়ে যেখানে যেখানে যাবে আমি আমার মোবাইল দিয়ে সেটা দেখতে পারবো,বুঝলি?
.
রাত্রি,,,ও সেটা আগে বলবি না?আমি তো ভাবছি যে তুই গেম খেলছিস,হে হে হে…(মাথা চুলকাতে চুলকাতে)
.
তাফসির,,,থাক বইন,তোর আর কিছু ভাবতে হবে না।এবার আমাকে একটু দেখতে দে যে লোকটা কোথায় যাচ্ছে!
.
রাত্রি,,,হুম!
.
.
অতঃপর তাফসির ওর মোবাইলের দিকে নজর দিলো,প্রায় ৪০ মিনিট পরে তাফসির লক্ষ্য করলো যে গাড়িটা এক জায়গায় গিয়ে থেমে গেছে।কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো গাড়িটা যেখানে থামলো সেই জায়গাটা তাফসিরের খুব পরিচিত।কারন জায়গাটা হলো ওদের পুরাতন অফিস,ব্লাস্টের পর যেখানে শ্রাবন ওদের ম্যাসেজ করে যেতে বলেছিলো!
.
.
তাফসির,,,তার মানে ভাইকে আর নওরিনকে ও ঐখানে আটকে রেখেছিলো,আর আমরা সেটা বুঝতেই পারিনি!(মনে মনে)
.
রাত্রি,,,কিরে কি হলো কি ভাবছিস?
.
তাফসির,,,ভাইকে আর নওরিনকে ও যেখানে আটকে রেখেছিলো সেই ঠিকানা পেয়ে গেছি!তুই কি এখন যেতে পারবি?
.
রাত্রি,,,হুম,পারবো চল!
.
.
অতঃপর তাফসির আর রাত্রি রওনা দিলো রাসমিকের পুরাতন অফিসের উদ্দেশ্যে।প্রায় ১ ঘন্টা পর ওরা সেখানে গিয়ে পৌছালো,তাফসির আর রাত্রি তড়িঘড়ি করে গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে ভিতরে চলে গেলো,ওরা ভিতরে গিয়ে দেখলো যে একটি চেয়ারে নওরিনের দেহ অচেতন অবস্থায় বাধা আছে এবং তার পাশের চেয়ারেই রাসমিকের নিথর দেহ পড়ে আছে আর রাসমিকের কপালের ঠিক মাঝ বরাবর একটা গুলির চিহ্ন!রাসমিকের কপালে গুলির চিহ্নটা দেখে তাফসির ধপ করে মাটিতে বসে পড়লো,ওর চোখ দিয়ে অনবরত পানি গড়িয়ে পড়ছে…!!
.
.
চলবে…!!
.
.#Gangster
.
#পর্ব_২০
.
#লেখক_Rashmik_Arifin_Asif
.
.
১৯তম পর্বের পর থেকে…!!
.
.
তাফসির আর রাত্রি তড়িঘড়ি করে গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে ভিতরে চলে গেলো,ওরা ভিতরে গিয়ে দেখলো যে একটি চেয়ারে নওরিনের দেহ অচেতন অবস্থায় বাঁধা আছে আর অন্য একটি চেয়ারে রাসমিকের নিথর দেহ পরে আছে আর রাসমিকের কপালের ঠিক মাঝ বরাবর একটি গুলির চিহ্ন।রাসমিকের কপালে গুলির চিহ্ন দেখে তাফসিরের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো,ও ধপ করে মাটিতে বসে পড়লো,ওর চোখ দিয়ে অনবরত পনি গড়িয়ে পড়ছে!রাত্রি তাফসিরের পাশে বসে ওকে সান্তনা দিবার চেষ্টা করছে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে।কিন্তু তাতে যেন তাফসিরের কান্নার পরিমান আরো বেড়ে যাচ্ছে।তাফসির হঠাৎ করে রাত্রিকে জড়িয়ে ধরলো…
.
.
তাফসির,,,রাত্রি এটা কি হয়ে গেলো?ভাই এভাবে….???
.
রাত্রি,,,তাফসির তুই সান্ত হ!তুই এভাবে ভেঙে পড়লে কিভাবে হবে বল??আর আমরা যাকে রাসমিক ভাবছি সে তো আসল রাসমিক নাও হতে পারে তাই না??আমরা এখানে যাকে দেখছি সে হয়তো নকল রাসমিক,আর আসল রাসমিক হয়তো এখনো বেচে আছ..!(তাফসিরের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)
.
তাফসির,,,এটা যদি ওই বহুরুপী টার লাশ হয় তাহলে ভাই এখানে নেই কেন?আর ওই বহুরুপী টাকে মারলোই বা কে??(রাত্রির দিকে জিজ্ঞাসুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে)
.
রাত্রি,,,আচ্ছা তুই এতো নেগেটিভ ভাবছিস কেন??রাসমিকের কিচ্ছু হবে না তুই দেখে নিস!আর নওরিন তো এখানেই ছিলো,ও হয়তো সবকিছু জানে আর আমরা ওর কাছ থেকেই সব জানতে পারবো কিন্তু তার আগে ওকে হাসপাতালে নিতে হবে,ওর শারীরিক অবস্থা বেশি ভালো না।(তাফসিরের কাছ থেকে উঠে গিয়ে নওরিনের পাশে দাড়িয়ে)
.
তাফসির,,,হুম,এটা তো আমি ভেবে দেখিনি!নওরিন তো এখানেই ছিলো আর ও হয়তো সবকিছু জানে!(চোখের পানি মুছতে মুছতে)
.
রাত্রি,,,হুম,বাকি ভাবাভাবির কাজ নাহয় নওরিনের থেকে সবটা শুনার পরে করবো নে।এখন চল ওকে হাসপাতালে নিতে হবে।
.
তাফসির,,,হুম,চল!
.
.
অতঃপর তাফসির আর রাত্রি নওরিনকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দিলো,প্রায় ৫০ মিনিট পর ওরা হাসপাতালে গিয়ে পৌছালো!হাসপাতালে পৌছানোর পরে ডক্তাররা নওরিনকে ও.টি. তে নিয়ে গেলো।৩০ মিনিট পরে একজন ডাক্তার ও.টি.থেকে বেড়িয়ে তাফসির আর রাত্রির কাছে গেলো…
.
.
তাফসির,,,ডক্টর,সবকিছু ঠিক আছে তো?আপনি হঠাৎ বেড়িয়ে এলেন যে?নওরিনের কিছু হয় নি তো??(একটু বিচলিত হয়ে)
.
ডাক্তার,,,আরে আরে আপনারা এতো বিচলিত হবেন না।উনি একদম ঠিক আছে ওনার কিছু হয় নি!তবে ওনার শরীর অনেক দূর্বল,অনেক ধকল গেছে ওনার উপর দিয়ে।ওনাকে যদি এক ব্যাগ রক্ত দেওয়া যেতো তাহলে ওনার শরীরের পক্ষে অনেক ভালো হতো!
.
তাফসির,,,রক্তের গ্রুপ কি ডক্টর?
.
ডাক্তার,,,ওনার রক্তের গ্রুপ ও নেগেটিভ!অবশ্য এই গ্রুপের রক্ত আমাদের ব্লাড ব্যাংকে আছে কিন্তু আপনারা তো জানেনই যে ব্লাড ব্যাংকে কারা রক্ত দেয়!তাই আমরা ওনাকে ব্লাড ব্যাংকের রক্ত দিতে চাচ্ছি না,তাই আপনাদের মাঝে কারো ও নেগেটিভ রক্ত থাকলে আমাকে জানাবেন!
.
রাত্রি,,,ডক্টর,আমার রক্ত ও নেগেটিভ!আমি রক্ত দিবো আমার বোনকে।
.
ডক্টর,,,ওহ,দেটস্ গ্রেট!তাহলে আপনি আসুন আমার সাথে।
.
.
রাত্রি ডক্তারের সাথে চলে গেলো নওরিনকে রক্ত দিবার জন্য আর আবির ওখনেই অপেক্ষা করতে থাকলো।
.
২০ মিনিট পরে রক্ত নেওয়া শেষ হলে..
.
.
ডাক্তার,,,আপনি বরং একটু রেস্ট নেন আমার আবার ভিজিটে যেতে হবে।
.
রাত্রি,,আচ্ছা ডক্টর নওরিনের জ্ঞান কখন ফিরবে?
.
ডাক্তার,,,আশা করছি অল্প কিছুক্ষণের মাঝেই ওনার জ্ঞান ফিরবে,বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।
.
রাত্রি,,,ওকে,আর যদি একটু তাফসিরকে ডেকে দিতেন তাহলে অনেক ভালো হতো,আসলে একা একা বোর হবো তো তাই ও থাকলে একটু কথা বলতে পারতাম আরকি!
.
ডাক্তার,,,আচ্ছা আমি বলে দিচ্ছি,আপনি যেন আবার এখান থেকে উঠবেন না আপনার শরীর কিন্তু দূর্বল আর নার্স একটু পরে আপনার জন্য খাবার নিয়ে আসবে ওইগুলা খেয়ে নিবেন তাহলে দূর্বলতা একটু কমবে!
.
রাত্রি,,,থ্যাংক ইউ সো মাচ,ডক্টর!
.
ডাক্তার,,,ওহ প্লিজ,ইটস মাই ডিউটি।
.
.
ডাক্তার রুম থকে বড়িয়ে গেলো কথাটা বলে,রুম থেকে বেড়িয়ে তিনি তাফসিরের কাছে গিয়ে আবিরকে রাত্রির কাছে যেতে বললো এবং ডাক্তার নিজের কাজে চলে গেলো।
.
তাফসিরর রুমে ঢুকে দেখে যে রাত্রি বিছানায় শুয়ে আছে অন্যদিকে তাকিয়ে।
.
.
তাফসির,,,কিরে ওই দিকে কি দেখিস?
.
রাত্রি,,,ও তুই চলে এসেছিস?(শুয়া থেকে উঠতে উঠতে)
.
তাফসির,,,আরে আরে কি করছিস?একটু আগে তুই রক্ত দিয়েছিস।তোর শরীর এখন দূর্বল!উঠার দরকার নেই তুই শুয়ে থাক তাহলে তোর একটু ভালো লাগবে!
.
রাত্রি,,,হুম!
.
.
ওদের কথা বলার মাঝখানেই কেবিনের দরজায় নক পড়লো!আবির আর রাত্রি তাকিয়ে দেখে যে একজন বয়স্ক নার্স হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে দাড়িয়ে আছে!
.
.
নার্স,,,স্যার আসবো!
.
তাফসির,,,আরে প্লিজ আমাকে স্যার বলবেন না,আমার নাম তাফসির,আপনি আমাকে তাফসির বলে ডাকলেই আমি খুশি হবো!(বসা থেকে দাড়িয়ে নার্সের কাছে গিয়ে)
.
নার্স,,,আরে না না এটা আমার জব আর আমাকে এখানে এভাবেই কথা বলতে হয়!
.
তাফসির,,,কিন্তু আমাকে বলার প্রোয়োজন নেই,আমি আপনার ছেলের মতো তাই আপনি আমাকে নাম ধরেই ডাকবেন!
.
নার্স,,,আচ্ছা ডাকবো!(হাসতে হাসতে)
.
তাফসির,,,হুম,এবার প্লেটটা আমার কাছে দিন।
.
নার্স,,,আরে না না আমি পারবো সমস্যা নেই!
.
তাফসির,,,আমি জানি আপনি পারবেন,তাও আমাকে দিন।(খাবারের প্লেটটা নিজের কাছে নিয়ে)
.
নার্স,,,তোমার মা সত্যিই অনেক ভাগ্যবতী যে তোমার মতো ছেলে পেয়েছেন!
.
তাফসির,,,হয়তো!
.
নার্স,,,হয়তো মানে??
.
তাফসির,,,আমার মা বেচে নেই!(মাথা নিচু করে)
.
নার্স,,,আরে কে বলছে তোমার মা বেচে নেই?আমি তো আছি,তোমার যখন মন চাইবে তখনই এই মায়ের কাছে চলে আসবে কেমন??(তাফসিরের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে একটা মিস্টি হাসি দিয়ে)
.
তাফসির,,,হুম!(মাথা নাড়িয়ে)
.
রাত্রি,,,তোমাদের মা ছেলের ভালোবাসা যদি শেষ হয়ে থাকে তাহলে আামকে কি একটু খেতে দিবে??আমার অনেক ক্ষুধা পেয়েছে!(হাসতে হাসতে)
.
তাফসির,,,মা ছেলের ভালোবাসা দেখেও তোর হিংসে হয় তাই না??
.
রাত্রি,,,কি করবো বল??আমারও তো মা নেই!(মন খারাপ করে)
.
নার্স,,,আরে বোকা মেয়ে আমি তো তোমার ও মা,আজকে আমি দুইটা ছেলে মেয়ে পেলাম!(একটা মুচকি হাসি দিয়ে)
.
রাত্রি,,,আচ্ছা মেয়ে যখন পেয়েছো তাহলে মেয়েকে একটু খায়িয়ে দাও,তোমার মেয়ের অনেক ক্ষুধা পেয়েছে!(পেটে হাত দিয়ে)
.
নার্স,,,হা হা হা…আচ্ছা দিচ্ছি!
.
.
অতঃপর নার্স তাফসিরের হাত থেকে খাবারের প্লেটটা নিয়ে রাত্রিকে খাওয়াতে শুরু করলো।
.
.
তাফসির,,,বাহ,কি সুন্দর!এখন মেয়ে পেয়ে আমাকে ভুলে গেলো!আমার ও যে ক্ষুধা লাগতে পারে সে খেয়াল তো কারোর নেই!
.
রাত্রি,,,হুহ্,এখন কে হিংসা করছে তুই না আমি??
.
তাফসির,,,তুই চুপ কর!
.
রাত্রি,,,আমি কেন চুপ করবো?চুপ তো করবি তুই??
.
নার্স,,,আচ্ছা বাবা থাম তোরা,আয় তোদের দুজনকেই আমি খায়িয়ে দিচ্ছি।
.
.
তাফসির আর রাত্রির খাওয়ার মাঝে ডাক্তার এসে রুমে প্রবেশ করলো!
.
.
ডাক্তার,,,বাহ,আপনার তাহলে সন্তানের অভাবটা ঘুচলো বলুন??মিসেস শিউলি!(নার্সের নাম)
.
মিসেস শিউলি,,,হুম স্যার,একসাথে দুইটা সন্তানের মা হলাম আজকে!(হাসতে হাসতে)
.
.
ওদের কথা বলার এক পর্য়ায়ে রুমে অন্য একজন নার্স এসে প্রবেশ করলো!
.
.
নার্স,,,স্যার প্লিজ তাড়াতাড়ি চলুন,আজকে যে নিউ পেসেন্টটা ভর্তি হয়েছে ওনার জ্ঞান ফিরেছে!আর জ্ঞান ফিরার পর থেকে কেমন পাগলের মতো করছেন উনি,ওনাকে কিছুতেই কন্ট্রোল করা যাচ্ছে না!
.
ডাক্তার,,,ও মাই গড কি বলছেন কি??তাড়াতাড়ি চলুন!
.
.
ডাক্তার এবং নার্স তড়িঘড়ি করে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো আর ওদের পিছন পিছন তাফসির,রাত্রি আর মিসেস শিউলি ও গেল!ওরা নওরিনের কেবিনে গিয়ে দেখে যে নওরিন পাগলের মতো ছটফট করছে আর ওর মুখ দিয়ে শুধু একটা কথাই বেরোচ্ছে আর সেটা হলো….!!
.
.
নওরিন,,,নাহ,আমার রাসের কিছু হতে পারে না।আমার রাস একদম ঠিক আছে…!!
.
.
চলবে…!!
.
.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here