#Gangster
.
#পর্ব_১+২
.
#লেখক_Rashmik_Arifin_Asif
.
.
ভার্সিটিতে ঢুকে মাথা নিচু করে হাটছিলো রাসমিক , আর হয়তো নিজের কালো অতীত নিয়ে ভাবছিলো । হঠাৎ কেউ একজন ওকে পিছন থেকে ডাক দিলো , ও পিছনে তাকিয়ে দেখে এক জায়গায় অনেক গুলো ছেলে দাড়িয়ে আছে আর তাদের মধ্যেই একজন ওকে ডাকছে । রাসমিক ধীর পায়ে তাদের দিকে এগিয়ে গেলো ।
.
.
ছেলে,,,এতক্ষন ধরে ডাকছি কথা কানে যায় না ? (রাসমিককে উদ্দেশ্য করে)
.
রাসমিক,,,সরি , শুনতে পাই নি !
.
ছেলে,,,কেন বাবা কান কেটে কি পকেটে রেখে দিয়েছো ? (হাসতে হাসতে)
.
রাসমিক,,,কোন কাজ ছিলো কি ? আমার ক্লাসের দেরি হয়ে যাচ্ছে !
.
ছেলে,,,এহেরে আসছে আমার ক্লাস কারনেওয়ালা ! ভার্সটিতে কি নতুন ?
.
রাসমিক,,,জি !
.
ছেলে,,,ভার্সটিতে বড় ভাই দেখলে যে সালাম দিতে হয় জানো না ?
.
রাসমিক,,,সরি,চিনতে পারিনি !
.
ছেলে,,,ভুল যখন করেছো , তখন তার খেশারত তো দিতেই হবে ! (হাসতে হাসতে)
.
রাসমিক,,,মানে ? (কিছুটা অবাক হয়ে)
.
ছেলে,,,মানে হলো , ওই যে একটা মেয়েকে দেখতে পাচ্ছিস , ওকে গিয়ে এই চিঠিটা দিবি ! (একটা মেয়েকে দেখিয়ে)
.
রাসমিক,,,আচ্ছা ঠিকাছে , চিঠিটা দিন !
.
.
ছেলেটার থেকে চিঠিটা নিয়ে রাসমিক ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে মেয়েটার দিকে ! মেয়েটার কাছে গিয়ে ও তাকে পিছন থেকে ডাক দিলো !
.
.
রাসমিক,,,হ্যালো আপু শুনছেন ?
.
মেয়ে,,,হ্যা বলুন ! (রাসমিকের দিকে তাকিয়ে)
.
রাসমিক,,,এই নিন ! (চিঠিটা এগিয়ে দিয়ে)
.
.
মেয়েটি রাসমিকের হাত থেকে কাগজটা নিয়ে পড়তে শুরু করলো এবং পড়া শেষ হবার সাথে সাথে ও রাসমিকের গালে সজোরে দুটো থাপ্পড় মারলো ।
.
.
মেয়েটি,,,তোর সাহস কি করে হয় আমাকে এইসব কথা বলার ? তুই চিনিস আমি কে ? পুরো শহর যার ভয়ে কাপে তাকে তুই এই সব কথা বলিস ! দাড়া আজকে তো তোকে আমি মেরেই ফেলবো !
.
.
মেয়েটি পকেট থেকে ওর ফোনটা বের করে কাকে যেন কল করলো , আর রাসমিক মেয়েটার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে ক্লাসে চলে গেলো !
.
ক্লাসে অন্যমনস্ক হয়ে বসে আছে রাসমিক । কখন যে স্যার ক্লাসে এলো সেটা ও বুঝতেই পারে নি ! হঠাৎ স্যার এর ডাকে ধ্যান ভাঙলো রাসমিকের ।
.
.
স্যার,,,এই ছেলে এই তুমি দাড়াও ! (রাসমিকের দিকে হাত দিয়ে ইশারা করে)
.
রাসমিক,,,জি স্যার । (বসা থেকে দাড়িয়ে)
.
স্যার,,,তোমাকে আজ প্রথম দেখলাম ক্লাসে , ভার্সিটিতে কি নতুন নাকি ?
.
রাসমিক,,,জি স্যার , আমি নতুন ।
.
স্যার,,,আগে কোন ভার্সিটিতে ছিলে ?
.
রাসমিক,,,ঢাকা ভার্সিটিতে !
.
স্যার,,,ঢাকা ভার্সিটি ছেড়ে এই ভার্সিটিতে এলে যে ? (কিছুটা অবাক হয়ে)
.
রাসমিক,,,কিছু ব্যাক্তিগত সমস্যার কারনে !
.
স্যার,,,আচ্ছা ঠিকাছে বসো , আর ক্লাসে মনযোগ দাও !
.
রাসমিক,,,জি স্যার ।
.
.
ক্লাস শেষ হলে রুম থেকে বেড়িয়ে মাথা নিচু করে হেটে চলেছে রাসমিক , গন্তব্য তার বাসা ! হঠাৎ কেউ একজন এসে রাসমিক এর কলার চেপে ধরলো , রাসমিক সামনে দিকে তাকিয়ে দেখে তখনকার সেই মেয়েটা দাঁড়িয়ে আছে ! হঠাৎ করে অনেকগুলো ছেলে এসে রাসমিককে ঘিরে ধরলো । সবার হাতেই একটা একটা করে হকিস্টিক আছে , আবার কারো কারো কাছে আছে সুইচ গিয়ার । কিন্তু তা নিয়ে রাসমিকের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই !
.
.
মেয়েটি,,,এই তোর এত সাহস আসে কোথা থেকে , হ্যা ? তখন আমার অনুমতি না নিয়েই তুই চলে গেছিলি কেন ?
.
রাসমিক,,,আমার ক্লাসের জন্য দেরি হয়ে যাচ্ছিলো তাই চলে গেছিলাম !
.
মেয়েটি,,,রাখ তোর ক্লাস , চিনিস আমি কে?
.
রাসমিক,,,না চিনি না ! কে আপনি ? (মুচকি হেসে)
.
মেয়েটি,,,ডার্ক কুইন এর নাম শুনেছিস , কখনো ?
.
রাসমিক,,,হ্যা , শুনেছি কেন ?
.
মেয়েটি,,,আমিই সেই ডার্ক কুইন , নওরিন !
.
রাসমিক,,,তো ? আমি কি করতে পারি ? (মুচকি হেসে)
.
নওরিন,,,তুই কি করবি তাই না ? দাড়া বলতেছি তুই কি করবি , রাকিব স্টিক টা দে তো ! (একটা ছেলের দিকে নিজের হাত বাড়িয়ে)
.
.
নওরিন ছেলেটার থেকে স্টিকটা নিয়ে অনবরত মারতে থাকে রাসমিক এর গায়ে । ভার্সিটির সবাই করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রাসমিকের দিকে , হয়তো সবার মায়া হচ্ছে ওর জন্য ! কিন্তু কেউ যে চাইলেও তাকে সাহায্য করতে পারবে না,কারন কেউ সাহায্য করতে এলে যে তার অবস্থাও রাসমিকের মতোই হবে !
.
তবে অবাক করা বিষয় হলো , নওরিন মারতে মারতে হাপিয়ে গেছে কিন্তু রাসমিক এর ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসি এখনো ফুটে আছে ।
.
.
নওরিন,,,কিরে তোকে আমি মারতেছি আর তুই হাসতাছোছ কেন ? ব্যাথা পাছ না নাকি ? (কিছুটা অবাক হয়ে)
.
.
নওরিনের কথার কোন জবাব না দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলো রাসমিক । নওরিনের সাথে থাকা ছেলেগুলো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রাসমিকের দিকে!একটু পরে নওরিনকে পাশ কাটিয়ে হাসতে হাসতে হেটে চলে যায় রাসমিক!
.
.
নওরিন,,,১ ঘন্টার মধ্যে ওর সব খবর আমার চাই!কি ওর পরিচয়,কোথায় থাকে,কি করে,বাসায় কে কে আছে ? সব ! (রাকিবকে উদ্দেশ্য করে)
.
রাকিব,,,আচ্ছা আপু আমি এক্ষুনি যাচ্ছি !
.
.
রাসমিক চলে এসেছে ওর বাসায়,ও বাসায় একাই থাকে।বাসাটা অবশ্য ভার্সটির খুব কাছেই,ওর বাসা থেকে ভার্সিটিতে যেতে সময় লাগে ১০ মিনিট।বাসায় এসে গা থেকে শার্টটা খুলে দেখে অনেক জায়গায় কেটে গেছে আর রক্ত ও বেরচ্ছে!রাসমিক ওর বাসায় থাকা ফাস্ট এইড বক্সটা বের করে কাটা জায়গা গুলো স্যাভলন দিয়ে ওয়াশ করে সেখানে মলম লাগিয়ে নেয়।
.
.
রাসমিক,,,আজ যদি আম্মু বেচে থাকতো তাহলে হয়তো অনেক যত্ন করে আমার কাটা জায়গায় মলম লাগিয়ে দিত!কিন্তু আজ আমার দোষেই তো আমার আম্মু আমার থেকে অনেক দূরে!
.
.
এসব কথা ভাবতেই রাসমিকের চোখ দিয়ে দুফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।নিজেকে তার আজকে অনেক বড় অপরাধী মনে হচ্ছে!
.
.
রাসমিক,,,জানো আম্মু তোমার সেই খারাপ ছেলেটা এখন আর খারাপ নেই,এখন সে অনেক ভালো,সে আর কাউকে বিরক্ত করে না,কারো গায়ে হাত তুলে না!সে এখন ভালোবাসতে পারে।কিন্তু আম্মু জানো দুনিয়ার মানুষ না অনেক খারাপ,তারা শুধু শুধু অন্যের ক্ষতি করে।এখন তুমি হয়তো বলবে যে আমিও তো একসময় এটাই করতাম!কিন্তু আমি কি কখনো ভালোদের কোন ক্ষতি করতাম?তুমিই বলো?জানো আম্মু আজকে না একটা মেয়ে আমাকে অনেক মেরেছে কিন্তু আমি তাকে কিচ্ছু বলি নি!হয়তো কখনো বলবোও না কারন আমি যে নওরিনকে ভালোবাসি ! হয়তো কোন গভীর অন্ধকারে চাপা পড়ে যাবে আমার দীর্ঘশ্বাস গুলি!
.
.
অন্যদিকে…!!
.
.
রাকিব,,,আপু ওই ছেলেটার খবর পাইছি!
.
নওরিন,,,কি খবর বল!
.
রাকিব,,,আপু ছেলেটার নাম রাসমিক,ভার্সিটির পাশেই একটা ফ্লাট কিনছে সেখানেই থাকে,আগে ঢাকা ভার্সিটিতে পড়তো,আমাদের ভার্সিটিতে নতুন ভর্তি হয়েছে অনার্স ২য় বর্ষে।ছেলেটা এতিম,আত্নীয় স্বজন নাকি কেউ নেই।কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো ঢাকা ভার্সিটির কেউ নাকি ওকে চেনে না আর কখনো দেখেও নাই!
.
নওরিন,,,আরে সেটা কি করে সম্ভব ? ওতো ঢাকা ভার্সটিতেই পড়তো , তাই না ? তাহলে ওকে তো সবার চিনার কথা , আর সবাই না চিনুক ওর ক্লাসমেটরা তো অন্তত চিনবে !
.
রাকিব,,,না আপু কেউ চিনেনা , ওকে নাকি কেউ কখনো ভার্সিটিতে দেখেই নি !
.
নওরিন,,,আচ্ছা ঠিকাছে , ওকে কালকে ভার্সিটিতে দেখে নিবো ! এখন চল একটা মিশন আছে , আর সবাইকে ফোন দিয়ে আসতে বল !
.
রাকিব,,,আচ্ছা আপু !
.
.
পরের দিনও ভার্সিটিতে ঢুকে মাথা নিচু করে হেটে চলেছে রাসমিক ! হঠাৎ পিছন থেকে কে যেন ওকে ডাক দিলো , ও পিছনে তাকাতেই দেখে…!!
.
.
.
চলবে….!!
.#Gangster
.
#পর্ব_২
.
#লেখক_Rashmik_Arifin_Asif
.
.
১ম পর্বের পর থেকে…!!
.
.
পরের দিনও ভার্সিটিতে ঢুকে মাথা নিচু করে হেটে চলেছে রাসমিক।হঠাৎ পিছন থেকে কে যেন ওকে ডাক দিলো!ও পিছনে তাকাতেই দেখে একটা ছেলে ওর দিকে দৌড়ে আসছে আর ঐ ছেলেটার পিছনে আছে আরো ১০/১২ টা ছেলে।ঐ ছেলেটা রাসমিকের পায়ের সামনে এসে হোচট খেয়ে পড়ে যায়,রাসমিক ছেলেটাকে টেনে তোলার আগেই ছেলেটি তাড়াতাড়ি মাটি থেকে উঠে রাসমিকের পিছনে গিয়ে লুকায়!পুরো ভার্সিটি তাকিয়ে আছে ওদের দিকে,আবার কেউ কেউ তো বলাবলি ও করছে যে আজ হয়তো ওদের কে কেউ বাঁচাতে পারবে না!
.
.
ছেলেটি,,,ভাই প্লিজ আমাকে বাঁচান নইলে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে!
.
ছেলেগুলো,,,ও কি কোন গ্যাংস্টার নাকি যে তোকে বাচাবে?আমরা মাফিয়া কিং এর লোক আমাদের আটকানোর সাহস কারো নেই!এই শহরে শুধু মাফিয়া কিং আর ডার্ক কুইন এর রাজ চলে বুঝচ্ছিস?
.
রাসমিক,,,ওদের কথা শুনে রাসমিক একটু মুচকি হেসে ওখান থেকে চলে আসে!
.
.
রাসমিকের চলে যাওয়া দেখে ছেলেগুলো অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে।
.
.
ছেলেগুলো,,,কিরে তোর গ্যাংস্টার তো চলে গেলো।এখন তোকে কে বাচাবে?হা হা হা…!!
.
.
হঠাৎ ছেলেগুলোর মধ্যে একজনের মোবাইলে একটা কল আসে,স্ক্রীনে ভেসে ওঠা নাম্বারটা দেখে ছেলটা তাড়াতাড়ি কলটা রিসিভ করে।নাম্বার টা ছিলো মাফিয়া কিং গ্যাং লিডার নিহানের।
.
.
ছেলেটা,,,হ্যা ভাই বলেন!
.
নিহান,,,তোরা কাকে মারতে গেছিস সিলেট ভার্সিটিতে?
.
ছেলেটা,,,ভাই ওর নাম এলমি!
.
নিহান,,,প্রানে বাচতে চাইলে তাড়াতাড়ি চলে আয় ওই খান থেকে!
.
ছেলেটা,,,আচ্ছা ভাই।
.
.
নিহানের কথা শুনে ছেলেটা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ঐ ছেলেটার দিকে।একটু পরে ঐ ছেলেগুলো চলে যায় ভার্সিটি থেকে ।ভার্সিটির সবাই আশ্চর্য,এই ভার্সিটিতে এমন আজ প্রথম বার হলো যে ওরা কাউকে মারতে এসেও না মেরে চলে গেছে!
.
রাসমিক ক্লাসে এসে বসে আছে আনমনা হয়ে।হয়তো কোন গভীর চিন্তায় নিমজ্জিত আছে।হঠাৎ ওর ধ্যান ভাঙলো একটা মেয়েলি কন্ঠস্বরে!রাসমিক মেয়েটির দিকে তাকিয়ে দেখে মেয়েটি ওর দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
.
.
মেয়ে,,,ওই মি.এতক্ষন ধরে ডাকছি কথা কি শুনতে পান না?আপনাকে দেখে তো কবি মনে হয় না তাহলে কি এতো ভাবেন হু?
.
রাসমিক,,,নাহ কিছু না!কে আপনি?কিছু বলবেন?
.
মেয়ে,,,আমার নাম নিতু,আর আপনার নাম কি?
.
রাসমিক,,,আমার নাম রাসমিক!
.
নিতু,,,আচ্ছা আমরা কি বন্ধু হতে পারি?
.
রাসমিক,,,নাহ!
.
নিতু,,,ওই এভাবে কেউ মুখের উপরে না বলে?আর বন্ধু হলে কি সমস্যা?
.
রাসমিক,,,দেখুন আমি মেয়েদের সাথে কথা বলতে পছন্দ করিনা!আপনি এবার আসুন।
.
নিতু,,,আমিও তো চাই যে তুমি মেয়েদের সাথে কথা না বলো!তুমি শুধু আমার সাথে কথা বলবে।(মনে মনে)
.
.
অন্যদিকে রাসমিক ক্লাস রুম থেকে বেরিয়ে ভার্সিটির এক কোনায় গিয়ে বসে আছে!আজকে আর ক্লাস করবে না ও!ক্লাস করার মন মানসিকতাই যে ওর নেই।
.
.
রাসমিক,,,কেন হচ্ছে আমার সাথে এমন?আমি তো আর ঐ সব কাজের সাথে নিজেকে জড়াতে চাই না।তাবে কেন নিজের অনিচ্ছা থাকা স্বত্তেও বার বার জড়িয়ে যাই!
.
নিতু,,,সবসময় এত কি ভাবেন মি.?
.
রাসমিক,,,আপনি আবার এসেছেন?
.
নিতু,,,আরে এমন করছেন কেন?শুধু বন্ধুইতো হতে চেয়েছি,বউ তো আর হতে চাই নি!প্লিজ প্লিজ না করবেন না!
.
রাসমিক,,,আচ্ছা ঠিক আছে!
.
নিতু,,,ধন্যবাদ।আমি কি এখানে বসতে পারি?
.
রাসমিক,,,হ্যা সিউর বসুন প্লিজ।
.
নিতু,,,বন্ধুদের মাঝে আপনি কিসের হ্যা?তুমি তুমি করে বলবে বুঝচ্ছ?
.
রাসমিক,,,আচ্ছা চেষ্টা করবো!
.
নিতু,,,ধন্যবাদ,আচ্ছা তখন ঐ ছেলেটাকে না বাচিয়ে চলে এলে কেন?
.
রাসমিক,,,কেন ছেলেটাকে কি ওরা মেরে ফেলেছে নাকি?
.
নিতু,,,আরে নাহ,ওরা চলে গেছে।কিন্তু জানো এই ভার্সটিতে আজ এমন প্রথম বার হলো যে ওরা কাউকে মারতেও এসেও না মেরে চলে গেছে!
.
.
নিতুর কথায় রাসমিকের মুখে একটা মুচকি একটা হাসি ফুটে উঠলো।তবে এটা কোন সাধারন হাসি নয়,এই হাসিতে লুকানো আছে হাজারো অব্যক্ত কথা যা একজন সাধারন মনুষের ক্ষেত্রে বুঝা হয়তো কিছুটা কষ্টসাধ্য।
.
.
নিতু,,,এই ছেলে এই তুমি একটু পর পর এমনভাবে হাসো কেন হ্যা?
.
রাসমিক,,,হাসি পেলো তাই হাসলাম!
.
নিতু,,,জানো তুমি না অনেক রহস্য জনক একটা ছেলে!
.
রাসমিক,,,থাক না কিছু রহস্য অজানা হয়েই,থাক না কিছু রহস্য মানুষের অগচরে,সব রহস্য সবসময় ভেদ করতে হয়না।
.
.
কথাটি বলেই সেখান থেকে উঠে চলে আসে রাসমিক।কিন্তু ভার্সিটি থেকে বের হবার আগেই কে যেন ডাক দিলো ওকে,ও সেদিকে দৃষ্টি ফিরাতেই দেখে আবির,মাহিম আর তাফসির দাড়িয়ে আছে।ওদেরকে দেখে কিছু পুরনো স্মৃতি আবারো তাজা হয়ে গেলো রাসমিকের।
.
.
আবির,,,ভাই আমাদেরকে এভাবে পর করে দিলে?
.
মাহিম,,,ভাই আমরা কি কখনো তোমার কাছে কিছু চেয়েছি বলো?
.
তাফসির,,,আমরা তো সবসময় শুধু তোমার পাশে থাকতে চেয়েছি!তোমার ছায়া হয়ে।
.
রাসমিক,,,তোরা এখানে কি করছিস?আর তোরা জানলি কিভাবে যে আমি এখানে আছি?
.
মাহিম,,,ভাই তোমার সাথে অনেক জরুরি কথা আছে,কিন্তু এখানে বলতে পারবো না!চারদিকে অনেক মানুষ অনেকে হয়তো আমাদের চিনেও ফেলেছে,তোমার সাথে কথা বলতে দেখলে হয়তো আবার তোমাকেও সন্দেহ করবে।তাই চলো অন্য কোথাও গিয়ে কথা বলি!
.
রাসমিক,,,আচ্ছা বাসায় চল।আর একসাথে আসার দরকার নাই,আমি আগে যাচ্ছি তারপর তোরা আয়।
.
মাহিম,,,আচ্ছা।
.
.
অতঃপর ওরা ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে পড়ে বাসার উদ্দেশ্যে।রাসমিক আগে আগে হাটছে আর ওর থেকে কিছুটা দূরে আবির,মাহিম আর তাফসির।কিছুক্ষন পরে ওরা বাসায় পৌছে যায়।
.
.
রাসমিক,,,এবার বল কি বলবি?
.
মাহিম,,,ভাই আম্মু আত্নহত্যা করেনি।তাকে খুন করা হয়েছিলো!
.
রাসমিক,,,কি সব যা তা বলছিস তুই?
.
মাহিম,,,আমি সত্যি বলছি ভাই।আর মাফিয়া কিং গ্যাং এর কেউ আম্মুকে খুন করেছে!এই যে এইটা শুনো তাহলেই বুঝতে পারবে।
.
.
মাহিম ওর ফোন থেকে একটা রেকডিং বের করে রাখে রাসমিকের সামনে!
.
.
রেকডিং,,,,,আরে বেটা জোকার কিং গ্যাং লিডারের মা তো খাল্লাস।তবে গেমটা এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে রাসমিক মনে করবে ওর মা ওর জন্যে আত্নহত্যা করছে।হা হা হা…!!
.
.
রাসমিক,,,এটা তুই কোথায় পেলি?
.
মাহিম,,,ভাই মাফিয়া কিং গ্যাং এ আমাদের একটা ইনফরমার ছিলো ও ই আমাকে এইটা দিছে।
.
রাসমিক,,,কিন্তু আমাদের তো কোন গ্যাং এ কোন ইনফরমার ছিলো না,তাহলে?
.
মাহিম,,,ভাই তুমি তো জানো আমরা তিনজন তোমাকে কতটা ভালোবাসি,আর সব গ্যাং এই তো চায় তোমার ক্ষতি করতে,তাই আমরা তোমার থেকে লুকিয়ে প্রত্যেক গ্যাং এ একটা করে ইনফরমার রেখেছি।
.
রাসমিক,,,যদি এটা মিথ্যা হয়?
.
আবির,,,না ভাই আমাদের ইনফরমার অনেক বিশ্বস্ত।ও আমাদের ফলস খবর দিবে না।
.
রাসমিক,,,চেয়েছিলাম একটু ভালো হয়ে থাকবো,কিন্তু এই দুনিয়াটা এতটাই খারাপ,দিলো না আর ভালো হতে।তবে আমার আবার ফিরে আসাটা যে ওদের জন্য শুভ হবে না,সেটা কি ওরা বুঝেনা।আমার মাকে খুন করার জন্যে যে ওদেরকে অনেক ভারি মূল্য চোকাতে হবে।
.
.
কথাটা বলেই একটা মুচকি হাসি দিলো রাসমিক….!!
.
.
চলবে…!!
.